পটমঞ্জরী – ২

অভীক সরকার

৭০০ খ্রিস্টাব্দ৷ কর্মান্তবাসক, বঙ্গদেশ৷

.

রাত্রি তৃতীয় প্রহরের শেষ। শরতের নির্মেঘ আকাশে নিঃসঙ্গ পথিকের মতো চেয়ে আছে ধ্রুবতারা। নিজের ভদ্রাসনের আঙিনায় দাঁড়িয়ে সেইদিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিলেন এক মধ্যবয়সি পুরুষ। শীতল বাতাস বয়ে যাচ্ছে তাঁর সুঠাম শরীরটি ঘিরে। তাঁর ব্যক্তিত্বে প্রখর দৃঢ়তার ছাপ৷

চিন্তিত মুখে উত্তরদিকে চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর ভাবনায় ধরা পড়ছিল আসন্ন ঝড়ের পূর্বাভাস। তিনি এও জানেন—উত্তরাকাশে যে মেঘ ঘনিয়ে এসেছে, যে-কোনওদিন সেই মেঘ সর্বধ্বংসী কালবৈশাখীর রূপ নিতে পারে। এই মহা-সর্বনাশের উৎস উত্তরের কামরূপ নয়, কাশ্মীর নয়, এই বিপদের উৎস আরও উত্তরে, তার কেন্দ্রবিন্দু আরেক মহাশক্তি৷

তিব্বত।

খানিকক্ষণের জন্যে চক্ষু বন্ধ করলেন তিনি। সেই তীব্র ঝড় কী করে সামলাবে ছিন্ন, দীর্ণ এই বঙ্গভূমি?

সহসা ম্লান হাসি খেলে গেল তাঁর ওষ্ঠে৷ সত্যই কি ভালো আছে তাঁর স্বদেশ? মহাবলী শশাঙ্কের মৃত্যুর পর থেকেই কি বার বার বহিঃশত্রুর আক্রমণে নির্জীব ও দুর্বল হয়ে পড়েনি বঙ্গভূমি?

তাঁর চোখদুটি জলে ভরে এল৷ গতকাল সন্ধ্যায় তিনি সংবাদ পেয়েছেন, তাঁর আশৈশব বন্ধু এবং একান্ত অনুরাগী সুবুদ্ধি আত্মঘাতী হয়েছে। একা নয়, যুবতী স্ত্রী আর দুটি দুগ্ধপোষ্য শিশুসহ সপরিবারে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে সে। তার দোষ নেই; সুবুদ্ধির গ্রামপ্রধানটি জোর করে কেড়ে নিয়েছিলেন তার চার কুল্যব্যাপ পরিমাণ ভূমি, সঙ্গে তার সমৎস্য দিঘিটি। তা দান করা হয়েছিল স্থানীয় বৌদ্ধবিহারটিতে, ভূস্বামীটির ধর্মানুগত্যের একনিষ্ঠ প্রমাণ হিসেবে। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছিল, সম্পন্ন কৃষক সহসা পরিণত হয়েছিল পথের ভিক্ষুকে।

সেই সদ্য দুধের দাঁত ওঠা শিশুদুটির অমলিন হাসির স্মৃতি যেন মধ্যবয়সি পুরুষটির বুকে জ্বলন্ত শূল গেঁথে দিল। আহা রে, ক্ষুধার্ত হওয়া ছাড়া আর কীই বা অপরাধ ছিল ওই নিষ্পাপ শিশুদুটির? হায় তথাগত, তুমি নাকি করুণানিধান? তুমি নাকি বহুজনহিতায়, বহুজনসুখায় প্রবর্তন করেছিলে সদ্ধর্ম চক্র? সত্য বলো প্রভু—এই অবোধ শিশুদুটি ছাড়া আর কোনও অর্ঘ্যই কি তোমার পূজার যোগ্য ছিল না?

আকাশের দিকে অশ্রুভরা চক্ষুদুটি তুলে যেন সেই উত্তরই খুঁজতে লাগলেন তিনি। বোঝাও প্রভু, এই শরণাগতকে বুঝিয়ে দাও—কাকে বলে ধর্ম? দরিদ্রের মুখের গ্রাস কেড়ে নেওয়ার থেকে বড় অধর্ম আর কী? নিঃসহায়, নিরাশ্রয় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর থেকেও বড় পুণ্য আর কীসে হয় নাথ? দেশমাতৃকার থেকে বড় মা কে? দেশের মানুষের থেকে বড় ঈশ্বর কে?

সহসা তাঁর পিঠে নেমে এল একটি শীতল হাতের ছোঁয়া৷ তাঁর চমকে যাওয়ার কথা, অথচ চুপ করে রইলেন। কারণ এই হাতটি বড় চেনা। এ তাঁর গৃহিণী—ভদ্রকল্যাণীদেবীর স্পর্শ৷ এই স্পর্শ তাঁর কাছে দৈব ঔষধের কাজ করে। তাঁর স্নায়ুগুলি শান্ত হয়ে এল।

আজ কি আপনি কোনও কারণবশত বিশেষ উত্তেজিত, স্বামী?’

ম্লান হাসলেন পুরুষটি, ‘হ্যাঁ, প্রিয়ে। আজ আমি মানসিকভাবে কিঞ্চিত বিপর্যস্ত। সান্ধ্যাহ্নিকের সময় তোমার প্রতি অকারণে কিছু রূঢ় বাক্য ব্যবহার করে ফেলেছি। আমি ক্ষমাপ্রার্থী৷’

শ্যামাঙ্গী নারীটি তাঁর কোমল মুখখানি স্থাপন করলেন স্বামীর প্রশস্ত পিঠে। তারপর সেখানে একটি সপ্রেম ও সস্নেহ চুম্বন এঁকে দিলেন। দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন তাঁর একান্ত মানুষটির বুকখানি।

এইভাবে কিছুক্ষণ কেটে গেল। হঠাৎ ভদ্রকল্যাণী অনুভব করলেন, তাঁর হাতের ওপর ঝরে পড়ল কয়েকটি জলের ফোঁটা।

শুধু জল নয়৷ চোখের জল৷ অশ্রুবিন্দু!

খুবই আশ্চর্য হলেন ভদ্রকল্যাণী। স্বামীকে কঠিন ব্যক্তিত্বের মানুষ বলেই চেনেন তিনি। স্নেহশীল কিন্তু কঠোর নীতিবাদী মানুষটিকে তিনি সাক্ষাৎ দেবতাজ্ঞানে পূজা করেন। তাঁর স্বামীর পাণ্ডিত্য তথা ন্যায়শাস্ত্রজ্ঞানের খ্যাতি বহুধাবিস্তৃত। শুধু সম্রাটই নন, রাজ্যের অন্যান্য বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর স্বামীর কাছে পরামর্শ নিতে আসেন। সেই দৃঢ়চরিত্র মানুষটির চক্ষে আজ পর্যন্ত কখনও জল দেখেননি তিনি!

‘স্বামী, আপনি কাঁদছেন? কী হয়েছে আপনার? আপনাকে তো এর আগে কখনও কাঁদতে দেখেছি বলে মনে পড়ে না। এমন কী ঘটেছে, যা আপনার মতো মানুষকেও বিচলিত করেছে?’

‘সুবুদ্ধিকে মনে পড়ে কল্যাণী? তার সেই শিশুকন্যাদুটি?’ বলতে বলতে চোখের জল সামলাতে পারলেন না সেই প্রশস্তহৃদয় মানুষটি।

মুহূর্তে ম্লান হয়ে গেল ভদ্রকল্যাণীর মুখখানি। সুবুদ্ধি তাঁর স্বামীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। স্বামীর থেকে বয়সে অনেকখানিই ছোট, প্রায় তাঁরই সমবয়সি এই মানুষটিকে তিনি নিজের দেবর জ্ঞান করতেন। সুবুদ্ধির স্ত্রী কাঞ্চনা তাঁর বোনের মতো ছিল, তাঁদের শিশুকন্যাদুটিকে ভদ্রকল্যাণী নিজের সন্তানের মতো স্নেহ করতেন৷

সুবুদ্ধির সপরিবারে আত্মহত্যার সংবাদ গতকাল রাতেই এসে পৌঁছেছে। তাঁর স্বামী তাঁকে জানাননি, তিনি জেনেছেন অন্য সূত্রে। শিশুদুটির ক্ষুধার্ত মুখ মনে পড়লেই অসহ্য জ্বালায় জ্বলে যাচ্ছে তাঁর অন্তর।

কাঁদতে কাঁদতে স্বামীকে আরও নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরলেন তিনি। তিনি জানেন—কেন এই মৃত্যু এতটা বিচলিত করেছে এই মানুষটিকে। তিনি জানেন যে, এই দেশের বুকে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী নিয়ে ঠিক কতটা উদ্বিগ্ন তাঁর স্বামী।

অনেক অশ্রু বয়ে যাওয়ার পর দুজনেই একটু স্থির হলেন। ধরা গলায় প্রশ্ন করলেন ভদ্রকল্যাণী, ‘শুনেছি স্বামী। আপনার নিষেধ সত্ত্বেও কেউই আমার কাছে গোপন করতে পারেনি৷ কাঞ্চনা তাদেরও বড় প্রিয়পাত্রী ছিল! আজ সারাদিন ধরে শুধু তাদের কথাই মনে পড়েছে। সেই হতভাগী তো একবার আমার কাছে এসে দাঁড়াতে পারত। সুবুদ্ধি তো পারত আপনার কাছে আশ্রয় চাইতে৷’

‘না কল্যাণী, পারত না। সুবুদ্ধিকে আমি আজন্ম চিনি। তার আত্মসম্মানবোধ ছিল অত্যন্ত প্রখর। কারও কাছে সাহায্যভিক্ষা করার মতো মানুষই ছিল না সে। তার এই গভীর মর্যাদাবোধই আমাদের কাছাকাছি এনেছিল। নইলে কে কবে দেখেছে ব্রাহ্মণ আর কৃষকসন্তানের মধ্যে এমন গভীর বন্ধুত্ব?’

মুহূর্তে উদগত অশ্রু আবার ঝাঁপিয়ে এল ভদ্রকল্যাণীর গাল বেয়ে, ‘আমাদের কি কিছুই করার ছিল না, নাথ?’

‘চারিদিকে তাকিয়ে দেখো কল্যাণী! কত সহস্র সুবুদ্ধিকে বাঁচাবে তুমি? কত কাঞ্চনার মুখে তুলে দেবে করুণার অন্ন? গ্রামে গ্রামে, পল্লীতে পল্লীতে প্রতিদিন ঘটে চলেছে এই ঘোর অন্যায়। সর্বাণীদেবীর মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার পথে দেখোনি কল্যাণী—কীভাবে দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে ভিক্ষুকের দল? ভেবে দেখেছ—এরা কারা?’

ভদ্রকল্যাণী কিছু বলতে পারলেন না, মাথা নাড়লেন৷

‘এরা সব বঙ্গদেশের ভূমিহীন কৃষক কল্যাণী, সব-খোয়ানো হতভাগ্যের দল। কঙ্কালসার দেহ একটুকরো ছেঁড়া কাপড়ে ঢেকে দু-চোখ ভরা খিদে নিয়ে কী অসহায় দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে তারা! একদিন যে শক্ত হাতে লাঙল ধরে তারা আমাদের জন্য ফসল ফলিয়েছে, দেখো—আজ সেই হাতই কত লজ্জায় আমাদের সামনে পেতেছে তারা! অপেক্ষা করছে—কখন কোন পুণ্যার্থী সামান্য করুণা করবে তাদের৷ দুধের বাছাদের দেখেছি পথের ধারে ফেলে দেওয়া উচ্ছিষ্ট থেকে খাবার খুঁটে খেতে৷ যে কৃষক-বউটি জীবনে শুধুমাত্র একটি ছোট সংসার ছাড়া আর কিছুই চায়নি, তাকে দেখেছি সামান্য কাপড়ে কোনওমতে লজ্জা ঢেকে ক্ষুধার্ত সন্তানের জন্যে গৃহস্থের দরজায় দরজায় দু’মুঠো অন্ন ভিক্ষা করতে। আমার দুচোখ জ্বলে যায় কল্যাণী, এ যে আমি আর দেখতে পারি না! হা ঈশ্বর, আপনি আমাকে অন্ধ করে দেন না কেন?’

বাঁধভঙা অশ্রু ভিজিয়ে দিচ্ছিল ভদ্রকল্যাণীদেবীর বুক। স্খলিতস্বরে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘সম্রাট কিছু করেন না কেন স্বামী? এসব তো তাঁর অগোচরে থাকার কথা নয়৷’

বড় কষ্টে ম্লান হাসলেন পুরুষটি, ‘আমরা সম্মান দেখাতে সম্রাট বলি বটে, কিন্তু ভেবে বলো তো কল্যাণী, কত বড় এই রাজত্ব? কতটুকু প্রভাবশালী এই রাজবংশ? আসলে এঁরা একটি বৃহৎ ভূখণ্ডের ভূস্বামী ব্যতীত আর কিছু নন। এত বড় সামাজিক পরিবর্তন আনা কি ছোট ছোট রাজাদের কাজ!’

‘তাহলে কে করবে, স্বামী?’

‘এই কাজ একমাত্র একজন রাজচক্রবর্তী সম্রাটই পারেন৷ এমন সম্রাট, যিনি লৌহিত্যদেশ থেকে দণ্ডভুক্তি, অঙ্গ থেকে হরিকেল অবধি সসাগরা গৌড়বঙ্গের সার্বভৌম অধীশ্বর হবেন। শক্ত হাতে ন্যায়ের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন। যিনি প্রভাবে আর প্রতিপত্তিতে দ্বিতীয় শশাঙ্ক হবেন। শশাঙ্কের পর দেশে আর সম্রাট কই? টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে গেছে আমাদের মাতৃভূমি৷ প্রতিটি ভূস্বামী নিজেরাই রাজা হয়ে বসেছেন। কে বাঁধবেন এঁদের ঐক্যসূত্রে? এমন প্রবল পরাক্রান্ত পুরুষ কই?’

‘কিন্তু স্বামী, ইনি তো এই বঙ্গভূমির সার্বভৌম সম্রাট৷ অন্ততপক্ষে তাঁর রাজ্যে তো…’

‘সার্বভৌম বড় কঠিন শব্দ, কল্যাণী৷ রাজা রাজাসনে বসেন বটে, কিন্তু রাজ্য চলে অনন্তসামন্তচক্রের ওপর নির্ভর করে৷ সেই চন্দ্রগুপ্ত আর সমুদ্রগুপ্তের সময় আর নেই কল্যাণী। এখন যিনি যত বড় সম্রাটই হোন না কেন, তাঁকে এই সামন্তদের ওপর নির্ভর করেই রাজ্যশাসন করতে হয়৷ এই সামন্তচক্রের প্রতাপ বিপুল, এরা রাজস্ব দেয় বলে রাজত্ব চলে, এরাই সৈন্যের যোগান দেয় বলে রাজা যুদ্ধ করেন। আমাদের রাষ্ট্রনীতিবিদ অনেক আছেন কল্যাণী, কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রনায়ক কই?’

কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন ভদ্রকল্যাণী৷ তারপর প্রশ্ন করলেন, ‘স্বামী, কাল আমাদের নবীন সম্রাটের অভিষেক, এক পক্ষকাল পরে প্রথম অধিবেশন। আপনার কী মনে হয়, ইনি পারবেন এই যুক্তগৌড়বঙ্গের অধীশ্বর হতে?’

কিছু সময় নীরব রইলেন সেই পুরুষটি৷ তারপর বললেন, ‘আমার মনে হয় না, কল্যাণী। অসীমসাহসী কর্মের জন্যে প্রয়োজন উদ্যমী পুরুষসিংহের, মহৎ উদ্দেশ্য সফল করার জন্যে চাই মহত্তর হৃদয়। ধৈর্য, স্থৈর্য, বিনয়, ধী এবং করুণা—এই হল মহৎ ও বিক্রমশালী পুরুষের পাঁচটি লক্ষণ৷ নতুন সম্রাটকে তুমি আর আমি, দুজনেই শিশুবয়স থেকে চিনি। যত বয়স বাড়ছে, ততই ইনি হিংস্র, অহংকারী এবং উদ্ধত হয়ে উঠছেন। ওনার ব্যবহারও ইদানীং বড় অদ্ভুত লাগে আমার৷’

‘কেন স্বামী?’

‘তোমাকে আজ অবধি বলিনি কল্যাণী৷ কিন্তু আজ বোধহয় বলার সময় এসেছে৷ আমাদের রাজপুত্রকে আজকাল ঠিক প্রকৃতিস্থ লাগে না, জানো? মাঝে মাঝেই ইনি উন্মাদের মতো অত্যন্ত অসংলগ্ন আচরণ করতে থাকেন৷ যাকে তাকে ইতরভাষায় অপমান করে বসেন৷ তখন তাঁর মুখের নীচ ও কুৎসিত ভাষা শুনলে আমার বমি পায় কল্যাণী৷ সম্রাট বড়ই দুশ্চিন্তায় ছিলেন রাজকুমারকে নিয়ে, সেই শোকেই বোধহয় বেশিদিন বেঁচে রইলেন না৷ আমার আশঙ্কা এই নতুন সম্রাট বঙ্গদেশে নিয়ে আসবেন আরও গভীর অরাজকতা। আকাশের নক্ষত্রমণ্ডলীতে সেই লেখাই পড়ছিলাম কল্যাণী৷’

‘কিন্তু কেন প্রভু?’ ব্যাকুল হলেন ভদ্রকল্যাণী, ‘ইনি তো সম্রাট রাজভটের সন্তান বটে। সম্রাট বঙ্গদেশের উন্নতির জন্য…’

‘ভুল করলে প্রিয়ে৷ এঁর পিতৃপরিচয়টুকুই দেখলে, মাতুলবংশ দেখলে না?’

‘তাতে কী অসুবিধা নাথ?’

ঘুরে দাঁড়ালেন সেই ব্রাহ্মণ। তাঁর প্রশস্ত বুক ছুঁয়ে গেল কল্যাণীদেবীর কমনীয় মুখ। অপলক চোখে স্বামীর উজ্জ্বল চক্ষের দিকে তাকালেন কল্যাণী।

‘শোনো কল্যাণী। আজ তোমাকে এক গভীর আর গোপন ষড়যন্ত্রের কথা জানাই। বহুদিন ধরে অতি গোপনে, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে অনেক চাঞ্চল্যকর সংবাদ জোগাড় করেছি৷ জানতে পেরেছি এই রাজবংশের বিরুদ্ধে, এই দেশের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়েছে কে বা কারা৷ আজ সেই ষড়যন্ত্রের কথা সবিস্তারে জানাব তোমাকে৷ প্রতিজ্ঞা করো, তুমি ষড়যন্ত্রের গোপনীয়তা রক্ষা করবে?’

মাথা একপাশে হেলালেন ভদ্রকল্যাণী, বুকখানি দুরুদুরু করছিল তাঁর৷ অস্ফূটে বললেন, ‘হ্যাঁ স্বামী৷’

‘তাহলে শোনো৷’ এই বলে আরও ঘন হয়ে এলেন সেই বিশালদেহী ব্রাহ্মণ।

.

সকল অধ্যায়

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন