সৈকত মুখোপাধ্যায়
ডাম্পি চারিদিকে একবার তাকাল, যেন কেউ ওর কথা শুনছে কিনা সেটা দেখে নিল। তারপর একটা ছোট মোড়া টেনে নিয়ে বসে বলল, ওই টিলার সঙ্গে একটা গল্প জড়িয়ে আছে স্যার। বড় ভয়ঙ্কর গল্প। সেই গল্প আমি আমার বাবার কাছে শুনেছি। তিনি আবার শুনেছিলেন তার বাপ-দাদাদের কাছ থেকে।
সেটা উনিশশো সাল। এই কুকড়াঝোরার চা-বাগান তখন সবে জমে উঠেছে। লেবারদের সাহেবরা ‘কুলি’ বলতেন। চা-বাগানে কুলি লাগবে অনেক। কোথা থেকে পাওয়া যাবে অত কুলি?
আপনারা শিক্ষিত লোক স্যার। নিশ্চয় জানেন, তখন শুধু কুকড়াঝোরায় নয়, ডুয়ার্স, আসাম, রংপুরের সমস্ত চা-বাগানেই দালাল লাগিয়ে কুলি ধরে আনা হত। সেই দালালরা মধ্যপ্রদেশ, ছত্রিশগড়, ছোটনাগপুর, ঝাড়খন্ড কিম্বা বিহার থেকে দলে দলে আদিবাসী মেয়ে-পুরুষদের নানান লোভ দেখিয়ে ভুলিয়ে নিয়ে এসে চা-বাগানের চৌহদ্দির মধ্যে ঢুকিয়ে দিত। তারপর শুরু হত তাদের ক্রীতদাসের জীবন। আমার পূর্বপুরুষরাও সেইভাবেই ছোটনাগপুর থেকে এই বাগানে এসেছিলেন।
চা-শ্রমিকদের মজুরি ছিল কম। খাটুনি ছিল হাড়ভাঙা। তার ওপর নিয়ম মতে তাদের যা মজুরি পাওনা হয়, তার থেকেও বাগানের বাবু, মানে ক্লার্ক আর কুলি-সর্দাররা অনেক পয়সা কেটে নিত। অশিক্ষিত লোকগুলো টাকাপয়সার হিসেব ভালো বুঝত না।
এখানেই তাদের যন্ত্রণার শেষ নয়। ছিল কলেরা, ম্যালেরিয়ার মতন সাঙ্ঘাতিক সব এপিডেমিক। অসুখবিসুখে যখন চোখের সামনে মা দেখত বাচ্চাকে মারা যেতে কিম্বা বোন ভাইকে, তখন তাদের প্রাণটা পালাই পালাই করত। তারা ভাবত, এই নরকের মতন কুলি-মহল্লা ছেড়ে আবার শাল-মহুয়ার জঙ্গলে ঘেরা নিজেদের গ্রামগুলোয় ফিরে যায়।
কিন্তু ফিরতে চাইলেই তো আর ফেরা যেত না।
বুধোদা বলল, জানি। নিজেদের দেশ থেকে তারা এত দূরে এসে পড়ত যে আর ফেরার রাস্তা চিনতে পারত না। তাছাড়া চারিদিকে তাদের কড়া পাহারা ছিল। তবু তার মধ্যেই কেউ কেউ পালিয়ে যাবার চেষ্টা করত।
ডাম্পিভাই বলল, ওই যে একশো বছর আগে কুকড়াঝোরার পুরোনো চার্চ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তার পিছনেও এরকমই এক পালানোর ঘটনা ছিল স্যার। পালাচ্ছিল সুবেশ তির্কে বলে সাতাশ-আঠাশ বছরের একটা আদিবাসী ছেলে। তার দেশ ছিল মধ্যপ্রদেশের কোন একটা গ্রামে।
সবেমাত্র তার ক’দিন আগেই সুবেশের গ্রাম থেকে নতুন একটা দল চা-বাগানে চাকরির লোভে কুকড়াঝোরায় এসে পৌঁছেছিল। তাদের মুখেই সুবেশ শুনল, তার ছোট মেয়েটার খুব অসুখ। সুবেশ চা-বাগানের সর্দার থেকে শুরু করে সাহেব ম্যানেজার, সবার হাতে পায়ে ধরল কয়েকদিনের ছুটির জন্যে। বলল, সে একবার মেয়েকে দেখেই আবার ফিরে আসবে। কিন্তু তখন ছিল পাতা তোলার পিক-সিজন। সুবেশের ছুটি মঞ্জুর হল না।
সুবেশ রাতের অন্ধকারে পালাতে গিয়ে পাহারাদারদের নজরে পড়ে গেল।
একজন কুলি পালালে এমনিতে বাগানের কাজের খুব একটা ক্ষতি হত না। কিন্তু তখনকার ম্যানেজার গ্যাবন উইলিয়াম লোকটা ছিল খুবই শয়তান। সে বলত, আজকে যদি একজন পালাতে পারে, তাহলে কালকে দশজন পালাবার চেষ্টা করবে। তার পরদিন একশোজন। এইভাবে বাগান ফাঁকা হয়ে যাবে। তাই উইলিয়াম সাহেব নিজেই বন্দুক নিয়ে সুবেশের পেছনে ধাওয়া করলেন।
তাড়া খেয়ে সুবেশ দৌড়েছিল ওই টিলাটার দিকে, যেদিক থেকে একটু আগে আমরা ঘুরে এলাম। ওটা কোনোরকমে পেরোতে পারলেই সে জঙ্গলের আড়াল পেয়ে যেত। ওদিকটায় কিরকম ঘন পাইনের বন দেখে এলেন তো। সেই আড়াল ধরে সে পৌঁছে যেতে পারত কোনো একটা রেল-স্টেশনে।
সেই দিনটাও ছিল আজকের মতনই মেঘলা আর অন্ধকার। ঠিক এইরকমই তোড়ে বৃষ্টি পড়ছিল আর তার সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। যারা সুবেশের পিছু নিয়েছিল তারা কিছুক্ষণের মধ্যেই বুঝতে পারল সুবেশকে ধরা কঠিন হবে। ওই অন্ধকারের আড়াল নিয়ে, জঙ্গলের ছেলে সুবেশ জঙ্গলে মিশে গিয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
উইলিয়াম সাহেবের হাতে শুধু বন্দুকই ছিল না, তার সঙ্গে ছিল বাঘের মতন বিশাল একটা কুকুর। সেটাকে উনি বিলেত থেকে নিয়ে এসেছিলেন। একেবারে আসল কিলার-ডগ—খুনে কুকুর। সেই কুকুরটাই গন্ধ শুঁকে শুঁকে সুবেশকে খুঁজে বার করে, তার ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ল।
হয়তো ইচ্ছে করলে উইলিয়াম সাহেব তখনও সুবেশকে বাঁচাতে পারতেন। কিন্তু তিনি চাইলেন বাগানের বাকি কুলিদের বুঝিয়ে দিতে যে, পালানোর চেষ্টা করলে কী হতে পারে। তার একটা ইশারায় কুকুরটা সুবেশকে টুঁটি কামড়ে মেরে ফেলল।
অন্য আরো অনেক আদিবাসী শ্রমিকদের মতন সুবেশকেও বাগানে চাকরি নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খৃস্টান করে দেওয়া হয়েছিল। খৃস্টান কুলিদের জন্যে টিলার মাথায় ছোট একটা চার্চও বানানো হয়েছিল। সাহেব-মেমরা অবশ্য যতদিন এখানে ছিলেন কার্শিয়াং-এর গির্জাতেই যেতেন। কালোদের সঙ্গে এক গির্জা তারা শেয়ার করবেন কেন? সুবেশের মৃতদেহ ওই চার্চের গোরস্থানেই কবর দেওয়া হল।
তারপর? আমি জিগ্যেস করলাম।
তারপর সুবেশ নেকড়ে-মানুষ হয়ে গেল।
অ্যাঁ! আমি আর বুধোদা দুজনেই আঁতকে উঠলাম। ভাবলাম ভুল শুনেছি বোধহয়। তাই আবার জিগ্যেস করলাম—সুবেশ কী হয়ে গেল?
নেকড়ে-মানুষ স্যার। কবর দেওয়ার পরেও সুবেশ গোর থেকে বেরিয়ে আসত। তবে মানুষ নয়, বিরাট একটা কালো নেকড়ের চেহারায়।
বেরিয়ে আসছে যে সেটা কেমন করে বোঝা গেল?—বুধোদার গলায় পরিষ্কার ব্যঙ্গের সুর।
ডাম্পিভাই কিন্তু সেই ব্যঙ্গ গায়ে মাখল না। সিরিয়াস গলায় বলে চলল—সুবেশ মারা যাওয়ার পরে পরপর তিনজন মারা পড়ল স্যার। প্রথমে মরল উইলিয়াম সাহেবের সেই কুকুরটা। কুকুরটা ম্যানেজারের বাংলোর, মানে আমাদের এই বাংলোর পেছনের বারান্দায় শুয়েছিল। সকালে দেখা গেল, বারান্দার ওই জায়গাটায় অনেকটা রক্ত পড়ে আছে, কুকুর নেই। আর হ্যাঁ, একটা রক্তমাখা থাবার ছাপ চলে গেছে চার্চের দিকে। সেটা কুকুরের থাবা নয় স্যার। কুকুরের থাবা কখনো অত বড় হয় না।
উইলিয়াম সাহেব রাগে পাগল হয়ে গেলেন। তখনই রাইফেল নিয়ে ছুটলেন চার্চের দিকে, একা। গেলেন তো গেলেন, আর তার দেখা নেই। বিকেল অবধি যখন সাহেব ফিরলেন না, তখন অন্য দুজন সাহেব কয়েকজন কুলিকে সঙ্গে নিয়ে উইলিয়াম সাহেবকে খুঁজবার জন্যে ওইদিকে গেলেন।
তারপর? বুধোদার গলায় দেখলাম আর ব্যঙ্গের সুর নেই। আমারও গা-টা কেমন যেন শিরশির করছিল।
ডাম্পিভাই বলে চলল — সার্চ-পার্টি উইলিয়াম সাহেব আর তার কুকুরকে একই জায়গায় খুঁজে পেল। জায়গাটা ছিল সুবেশ তির্কের কবরের খুব কাছেই একটা ঝোপের আড়ালে। কুকরটার শরীরের বিশেষ কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। পুরোটাই প্রায় নেকড়ে-মানুষের পেটে চলে গিয়েছিল। উইলিয়াম সাহেবের মৃতদেহটা ঠিক পাশেই পড়েছিল। ওনার গলায় ছিল চারটে দাঁতের গভীর দাগ আর বুক থেকে পেট অবধি নখের আঁচড়ে ফালা ফালা হয়ে গিয়েছিল।
বুধোদা জিগ্যেস করল, ওনার মাংস নেকড়ে-মানুষ খায়নি?
প্রশ্নটা আমার কানে বড্ড রুড শোনাল। একজন মৃত মানুষের সম্বন্ধে বুধোদা এমন প্রশ্ন করে কীভাবে?
ডাম্পিভাইয়ের ভুরু দুটোও দেখলাম কুঁচকে গেল। বলল, যদ্দুর জানি, না।
বুধোদার অবশ্য ওসব দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। একগুঁয়ের মতন পরের প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিল—আর তিন নম্বর?
তিন-নম্বর ভিকটিম সেই পাহারাদার, যে প্রথম সুবেশ পালিয়ে গেছে বলে হল্লা বাঁধিয়েছিল। উইলিয়াম সাহেব খুন হওয়ার মাস দুয়েক বাদে এক রাতে সে টহল দিতে দিতে ওই চার্চের রাস্তায় গিয়ে পড়েছিল। নেকড়ে-মানুষ তার গলাটা কামড়ে ছিঁড়ে ফেলেছিল।
ওই ঘটনার পর থেকেই বাগানের অনেকে সেই নেকড়েকে দেখেছে। তারা বলেছিল, ওটা এই পৃথিবীর কোনো নেকড়ে ছিল না। ওরকম বিরাট শরীর, কুচকুচে কালো লোম আর সবুজ আগুনের মতন চোখ কোনো রক্তমাংসের নেকড়ের হয় না। ওটা প্রেত-নেকড়ে স্যার। সুবেশ তির্কের দুঃখী আত্মা নেকড়ে হয়ে প্রতিশোধ নেবার জন্যে ঘুরে বেড়াত।
বুধোদা জিগ্যেস করল, এসব ঘটনার কোনো এনকোয়ারি হয়নি?
পুলিশ-এনকোয়ারি হয়েছিল। কিন্তু বন্যপ্রাণীর আক্রমণ বলেই কেস গুলো ক্লোজ করে দেওয়া হয়েছিল বলে শুনেছি। পুলিশ বলতেই পারে বন্যপ্রাণীর আক্রমণ। কিন্তু স্যার, বাগানের লেবার-রা সে কথা মানবে কেন? তারা অনেকেই যে সেই নেকড়ে-মানুষকে দেখেছে।
তারপর?
কুলিদের অনেককেই ধরে ধরে খৃষ্টান বানিয়েছিল সাহেব পাদ্রিরা। তাদের জন্যেই চা-বাগানের সাহেবরা ওই টিলার মাথায় গির্জা বানিয়ে দিয়েছিল। ওখানেই লেবাররা প্রেয়ার করত। মারা গেলে ওখানকার কবরখানাতেই তাদের গোর দেওয়া হত। কিন্তু সুবেশ মারা যাওয়ার দু-মাসের মধ্যে যখন এমন হরিবল তিনটে ঘটনা ঘটে গেল, তখন লেবার-রা বেঁকে বসল—বলল, প্রাণ গেলেও তারা আর ওই গির্জায় যাবে না। কারণ, ওইখানেই ছিল সুবেশের কবর আর সেই কবর থেকেই নাকি বেরিয়ে আসত নেকড়ে-মানুষ।
তাদের জন্যে তখন তৈরি করা হল নতুন চার্চ আর কবরখানা। তারপর থেকেই টিলার মাথায় ওই পুরনো চার্চ খালি পড়ে রয়েছে। একশো বছরের বেশি হয়ে গেল। কিন্তু স্যার, সুবেশের আত্মা ওই পুরনো চার্চ ছেড়ে কোথাও যায়নি।
বুধোদা বলল, শেষ কবে দেখা গেছে সেই প্রেত-নেকড়েকে?
ডাম্পি মাহাতো বলল, একশো বছরেরও বেশি সময় সে ঘুমিয়ে ছিল। আমার জন্ম এই কুকড়াঝোরায়। আমার বাবারও জন্ম এখানে। আমরা কেউ তাকে দেখিনি। অন্য কেউ দেখেছে বলে শুনিওনি। সত্যি কথা বলতে কি, আমরা জ্বালানি কাঠ কুড়োতে কিম্বা ফল পাড়তে ওই চার্চের জমিতে প্রায়ই যেতাম। কিন্তু আজ একশো-পনেরোবছর বাদে আবার তার ঘুম ভেঙেছে।
বুধোদা বলল, কার? নেকড়ে-মানুষের?
হ্যাঁ স্যার। মাস্টারসাব তাকে নিজের চোখে দেখেছেন।
মাস্টারসাব মানে?
তিনিও আমার মতন এই চা-বাগানের লেবারেরই ছেলে। তবে আমার চাইতে অনেক উঁচু মাপের মানুষ। আর্মির অফিসার ছিলেন। রিটায়ার করার পর আবার এখানে ফিরে এসেছেন। সেও প্রায় বিশবছর হয়ে গেল। খুব ভালো লোক স্যার, খুব মহান লোক। উনি না থাকলে আমাদের ছেলেমেয়েগুলো লেখাপড়া শিখত না। উনি ছোট বাচ্চাগুলোকে লেখাপড়া শেখান। একটু বড় হলে উনিই ওদের বাইরে হস্টেলে রেখে পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দেন। আমাদের তো অত লেখাপড়া শেখাবার মতন টাকাপয়সা নেই।
মাস্টারসাব বলেছেন যে, নেকড়ে-মানুষ আবার ফিরে এসেছে?
হ্যাঁ, স্যার। উনি নিজের চোখে দেখেছেন। উনি তো প্রায়ই ওই গির্জায় গিয়ে বসে থাকেন। তখনই দেখেছেন বিশাল একটা নেকড়ে বিদ্যুতের মতন এক কবরের আড়াল থেকে আরেক কবরের আড়ালে মিলিয়ে গেল।
বুধোদা গম্ভীর গলায় বলল, কেমন করে জানলে ওটা প্রেত নেকড়ে? সত্যিকারের নেকড়েবাঘও তো হতে পারে।
ডাম্পি বলল, আমাদের এদিকের জঙ্গলে নেকড়ে পাওয়া যায় না স্যার। কখনো শুনিনি নেকড়েবাঘের কথা।
ওয়াইল্ড-লাইফ নিয়ে বুধোদার পড়াশোনা কম নয়। ও বলল, তা ঠিক। ডুয়ার্সের ঘন জঙ্গলে নেকড়ে থাকে না। ওরা থাকে কাশ্মীর তিব্বতের মালভূমি কিম্বা মরুভূমিতে।
ডাম্পি বলল, আর তাছাড়া স্যার, আজ সকালেই একটা খবর শুনে আমরা আরো ভয় পেয়ে গিয়েছি।
কী খবর?
গতকাল রাতে পাশের ডরোথি টি-গার্ডেনের কুলিবস্তি থেকে একটা ছ’মাসের বাচ্চা চুরি গিয়েছে। এরকম আগে কখনো হয়নি। বাচ্চাটাকে যে দাওয়ায় শোয়ানো ছিল, তার আশেপাশে থাবার দাগ দেখা গেছে।
বুধোদা এতক্ষণ সামনে ঝুঁকে পড়ে ডাম্পিভাইয়ের কথা শুনছিল। এবার সোফায় গাটা এলিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করল, তোমরা তাহলে এখন কী করবে ডাম্পি?
কী আর করব স্যার? এমনিতেই মাস্টারসাবের মুখ থেকে ওইকথা শোনার পরে আমরা যে কুড়ি-ঘর লোক এখানে আছি তারা ওই টিলার দিকে যেতাম না। এখন থেকে বেশি রাত হয়ে গেলে এই কুলিমহল্লার রাস্তাতেও বেরোবো না।
কিছুক্ষণ কী নিয়ে যেন ভাবনাচিন্তা করার পর বুধোদা হঠাৎ বলল, ডাম্পি, একটা কথা আমাকে বল তো। ওই গির্জায় কোনো দামি জিনিস আছে?
ডাম্পি হেসে ফেলল। বলল, একি সাহেবদের গির্জা স্যার, যে ঝাড়বাতি, রুপোর মোমদান, কার্পেট আর অয়েল-পেন্টিং থাকবে? আদিবাসী কুলিদের জন্যে যেমন তেমন করে একটা চূড়োওলা বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাবার কাছে শুনেছি, কাঠের বেঞ্চ অবধি ছিল না। আমাদের পূর্বপুরুষেরা ছেঁড়া মাদুরের ওপর বসে প্রেয়ার করতেন।
তারপরেই ডাম্পি হঠাৎ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে ভারি ব্যস্ত হয়ে বলল, না স্যার, আমি এবার যাই। অনেক রাত হয়ে গেল। বুঝতেই পারছেন, একা হেঁটে যেতে ভয় লাগে।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন