সৈকত মুখোপাধ্যায়
যুদ্ধের আগুনে জার্মানি জ্বলতে শুরু করল। বাবা ব্রিটিশ-ভারতের নাগরিক, হিটলারের শত্রুপক্ষ। স্বাভাবিকভাবেই নাৎসি-সরকারের রোষে পড়লেন। ম্যাজিক-শো শিকেয় উঠল। বাবাকে প্রাণ বাঁচানোর জন্যে লুকিয়ে পড়তে হল।
কোথায় লুকিয়ে ছিলেন জানেন? সেই ইম্প্রেশারিও মার্টিন জিগলারের গ্রামের বাড়িতে। উনি যে বাবাকে কী চোখে দেখেছিলেন জানি না। ছেলের মতন ভালোবাসতেন ওনাকে। এমনকী বললে বিশ্বাস করবেন না, স্টেজে ইলিউশনের ম্যাজিক দেখানোর জন্যে যেসব দামি দামি যন্ত্রপাতি, সাজ-সরঞ্জাম লাগে, তার মধ্যে অনেকগুলোই উনি নিজের সংগ্রহ থেকে বাবাকে ব্যবহারের জন্যে দিয়ে দিয়েছিলেন। এক ফ্র্যাঙ্কও ভাড়া নেননি তার জন্যে।
বুধোদা জিগ্যেস করল, এসব কথাও কি আপনার বাবা ওনার চিঠিতে লিখেছিলেন নাকি?
অবশ্যই না, বললেন প্রতাপ রক্ষিত। প্রতিটি চিঠিই তখন ওয়ার-ডিপার্টমেন্ট থেকে খুলে পড়া হত। চিঠিতে নয়। এসব কথা আমি শুনেছি মায়ের মুখে আর মা শুনেছিলেন তারাপদ মুস্তাফির মুখে।
তারাপদ মুস্তাফি কে?
তারাপদ মুস্তাফি ছিলেন বাবার সেই একমাত্র সহকারী, যাকে সঙ্গে নিয়ে বাবা বিদেশে গিয়েছিলেন। তারাপদকাকা ছিলেন বাবার চেয়েও বয়সে দশবছরের ছোট। তার মানে, ওনার বয়স ছিল তখন মাত্র আঠেরো। সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড-ওয়ার শেষ হওয়ার পরে তারাপদকাকা দেশে ফিরে এসেছিলেন। ওনার আর বাবার পালিয়ে বেড়ানোর দিনগুলোর কথা তখনই মা জানতে পেরেছিলেন। বাবার মৃত্যুর কথাও।
প্রতাপবাবু একবার কথা থামিয়ে এক-চুমুকে বাকি চা-টুকু শেষ করে, কাপটা টেবিলের ওপর নামিয়ে রাখলেন। তারপর ভারী গলায় বললেন, বাবার মৃত্যুর পেছনেও একটা মহৎ কারণ ছিল, জানেন মিস্টার মজুমদার? সে কথা ভাবলে ছেলে হিসেবে গর্ব হয়। হয়েছিল কি, ওই গ্রামের যুবকদের মধ্যেই ছিল নাৎসি-দলের কিছু সমর্থক। তারা ধরে ফেলেছিল যে, মার্টিন জিগলার একজন রাষ্ট্রদ্রোহী। শুধু যে বাবা আর তারাপদকাকাকেই উনি লুকিয়ে রেখেছিলেন তা তো নয়। ওনার পরিচিত দুটো ইহুদি ফ্যামিলিকে ওনার ওই গ্রামের বাড়ির মাটির নীচের সেলারে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তা না হলে নাৎসিদের হাতে তারা খুন হয়ে যেত।
জিগলাররা ছিল ওই গ্রামের জমিদার। তাই বুঝতে পেরেও প্রথমদিকটায় গ্রামের ছেলেগুলো কিছু করার সাহস দেখায়নি। কিন্তু সারা জার্মানিতেই যখন ইহুদি-নিধন যজ্ঞ শুরু হয়ে গেল, তখন তাদের আর থামায় কে? তখন শাস্তির ভয় তো আর ছিলই না, উল্টে দুটো ইহুদি ফ্যামিলি আর দুজন ইন্ডিয়ানকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্যে পুরস্কারও মিলে যেতে পারত। ফলে যা হবার তাই হল। একদিন গভীর রাতে জিগলারের সেই খামারবাড়ির কাঠের দরজায় দুমদাম লাথি পড়ল।
সেলারের মধ্যে লুকিয়ে থাকা মানুষগুলোর বুঝতে অসুবিধে হল না, কারা এসেছে। মৃত্যুভয়ে কেঁপে উঠল আটজন ইহুদি নারীপুরুষ, যার মধ্যে চারজন শিশু। বাবা, তারাপদকাকা আর ওই দুটি ইহুদি-পরিবারের আটজন ছাড়া তখন খামার-বাড়িতে আর কেউ ছিল না।
বাবা দরজায় লাথির আওয়াজ শুনে তারাপদকাকাকে বললেন, আমি দরজা খুলছি।
তারাপদকাকা বাবার হাত চেপে ধরে বললেন, তারপর? ওরা তো আমাদের সবাইকে খুন করবে।
বাবা বললেন, না, করতে পারবে না। সে দায়িত্ব আমার। ওরা অন্তত আধঘণ্টার মধ্যে এই বাড়িতে ঢুকবে না। তোমার দায়িত্ব, সেই আধঘণ্টার মধ্যে বাকি সবাইকে নিয়ে পালানো। এরকম পরিস্থিতির কথা ভেবেই মিস্টার জিগলার ওই পপলারগাছের জঙ্গলের মধ্যে ছাউনির নীচে একটা গাড়িকে রেখে গেছেন জানো নিশ্চয়?
তারাপদকাকা ভয়ার্তমুখে বললেন, জানি। কিন্তু আপনি?
একমুহূর্ত চুপ করে থেকে বাবা উত্তর দিলেন, যদি বেঁচে থাকি তোমাদের সঙ্গে পরে আবার দেখা হবে তারাপদ। এই বলে বাবা দরজার দিকে এগিয়ে গেলেন।
দরজা খোলামাত্র বাবার মুখের ওপর একটা ঘুষি এসে পড়ল। সঙ্গে প্রশ্ন—শিগগিরি বল, নোংরা জানোয়ার জিগলারটা কোথায়?
ওরা নিশ্চয় বাবার উত্তরের জন্যে অপেক্ষা করত না। নিজেরাই বাড়ির ভেতরে ঢুকে দেখে নিত সব। সেলারটাও তল্লাশির হাত থেকে বাদ যেত না। কিন্তু তার দরকার পড়ল না। মূল খামারবাড়ির লাগোয়া যে মালির ঘরটা ছিল, সেখান থেকে পরিষ্কার জার্মান ভাষায় মার্টিন জিগলারের উত্তর ভেসে এলো, ওকে মেরো না। ক্ষমতা থাকলে এই ঘরের ভেতর থেকে আমাকে নিয়ে যাও।
নাৎসি যুবকেরা সংখ্যায় ছিল চারজন। জিগলারের গলার আওয়াজ পাওয়ামাত্র খ্যাপা কুকুরের মতন চারজনেই দৌড়ে চলে গেল ওই ঘরটার দিকে। পেছন পেছন বাবা। ওরা যখন হাতের টর্চের আলো ফেলে ঘরের ভেতরটা দেখবার চেষ্টা করছে, তখন আরেকবার সেই ঘরের ভেতর থেকে জিগলারের গলার আওয়াজ ভেসে এলো—আঃ! আলোটা নেভাও। চোখে লাগছে।
ছেলে চারটে আর অপেক্ষা না করে লাঠি ছোরা উঁচিয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ল। ঢোকার পরেই তারা একসঙ্গে দুটো জিনিস বুঝতে পারল। এক, ঘরের ভেতরে কেউ নেই। ঘরটা শূন্য। আর দুই, ওদের পেছনে মালির ঘরের ভারী দরজাটা শব্দ করে বন্ধ হয়ে গেল। বাইরে থেকে হ্যাচবোল্ট টেনে দেওয়ার শব্দটাও ওরা পরিষ্কার শুনতে পেল।
শব্দটা তারাপদকাকাও শুনেছিলেন। তিনি তখন সেই ইহুদি পরিবারদুটির সদস্যদের নিয়ে মাঠ ভেঙে দৌড়ে যাচ্ছিলেন পপলার-বনের দিকে। দৌড়তে দৌড়তেই শুনলেন ছেলেগুলোর ক্রুদ্ধ গালিগালাজ। দরজায় ধাক্কা মারার শব্দ। এই অবধি ঠিকই ছিল। তারাপদকাকা মনে-মনে বাবার বুদ্ধির তারিফ করছিলেন কারণ, একমাত্র তিনিই জানতেন, বাবা ছিলেন একজন অসামান্য ভেন্ট্রিলোকুইস্ট। ঠোঁট না নাড়িয়ে তিনি যে কথাগুলো ছুঁড়ে দিয়েছিলেন, সেই কথাগুলোই মালির ঘরের দিক থেকে ফিরে এসেছিল। ছেলেগুলো ভেবেছিল মার্টিন জিগলার কথা বলছেন। ভাবতেই পারেনি, আসল মার্টিন জিগলার তখন বসে আছেন সত্তর-মাইল দূরে, মিউনিখের একটা গোপন আস্তানায়।
গন্ডগোলটা হল এর ঠিক পরেই। তারাপদকাকা দেখলেন বাবা পালাবার জন্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। উনি তারাপদকাকাদের সঙ্গ ধরার জন্যে দৌড়তেও শুরু করেছিলেন। কিন্তু ঠিক তখনই মালির ঘরের ভেতর থেকে একটা গুলির আওয়াজ ভেসে এল। ওই ছেলেগুলোর মধ্যে কারুর কাছে শটগান ধরনের কিছু একটা ছিল। মানুষ মারার জন্যে নয়, দরজার লকটা ভাঙবার জন্যেই নিশ্চয় সেই শটগানটা দিয়ে ওরা ভেতর থেকে গুলি চালিয়েছিল। কিন্তু এমনই কপাল, সেই গুলি লাগল সরাসরি বাবার মাথায়। তারাপদকাকার চোখের সামনে বাবা লুটিয়ে পড়লেন মাটিতে। উনি বাবাকে সরিয়ে আনার জন্যে সেদিকে দৌড়ে যেতে গিয়েও থেমে গেলেন। কারণ, ততক্ষণে উনি দেখতে পেয়েছেন মালির ঘরের দরজার হ্যাচবোল্ট, যেটা বাবা বাইরে থেকে টেনে দিয়েছিলেন, সেটা প্রায় খুলে এসেছে।
বাবা মারা গিয়েছিলেন, কিন্তু বাবার জন্যেই সেই দুই ইহুদি পরিবার আর তারাপদকাকা সেদিন নাৎসিদের হাত এড়িয়ে পালাতে পেরেছিলেন। তারাপদকাকা দেশে ফেরার সুযোগ পেয়েছিলেন আরও প্রায় একবছর পরে। তার মুখেই মা বাবার মৃত্যু-সংবাদ পেয়েছিলেন। মা তার পরেও আরও অনেকবছর বেঁচেছিলেন। ভালো ছবি আঁকতেন, তাই একটা মেয়েদের স্কুলে ড্রইং টিচারের চাকরি পেয়েছিলেন। সেই চাকরির সামান্য মাইনেতেই আমাকে পড়াশোনা শিখিয়ে বড় করেছিলেন।
এই অবধি বলে প্রতাপবাবু হঠাৎই চুপ করে গেলেন। আমি আর বুধোদাও চুপ করে বসে রইলাম। আমরা দুজনেই নিশ্চয় এক অসাধারণ প্রতিভার অকালমৃত্যুর কথা ভাবছিলাম। কিছুক্ষণ পরে বুধোদা বলল, আপনি আমাকে বলেছিলেন অ্যান্টিক নিয়ে আপনার কিছু সমস্যা হচ্ছে। সেটা কীরকম যদি একটু বলেন।
প্রতাপবাবু বললেন, সমস্যাটার পেছনে যে কোনো অ্যান্টিক-গুডস থাকতে পারে এটা আমার আন্দাজ মাত্র। নির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ দিতে পারব না। তবে যুক্তি বলছে সেরকমই কিছু হবে।
দেখুন মিস্টার মজুমদার, আমার সন্তানাদি নেই। চারবছর আগে আমার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে এই পৃথিবীতে আমি একদম নিঃসঙ্গ। এদিকে বয়স হচ্ছে। ক্রমশ একটার পর একটা অসুখ মাথা চাড়া দিচ্ছে। এই অবস্থায় ওই দোতলা বাড়িটায় একা বাস করা খুবই অসুবিধাজনক। একটা বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবছিলাম, কিন্তু ঠিক দিশা পাচ্ছিলাম না। এমন সময় মাস ছয়েক আগে সুবিনয় একটা প্রস্তাব নিয়ে এল।
বুধোদা বলল, সুবিনয় নামটা আপনি আগেও দুয়েকবার বলেছিলেন। ইনি কে? আপনার বন্ধু?
হুঃ, বন্ধু! ঘৃণা আর তাচ্ছিল্য মেশানো একটা মুখভঙ্গি করলেন প্রতাপবাবু। ওটা একটা লোফার, শয়তান। আমি চিরকাল শিক্ষকতা করেছি। অজস্র ছোট-ছোট ছেলেমেয়েকে কুসংস্কার আর ধর্মীয় ধাপ্পাবাজির এগেইনস্টে হাঁটতে শিখিয়েছি। আর সুবিনয়ের জীবিকাই ওই—কুসংস্কার আর ধাপ্পাবাজি ভাঙিয়ে খাওয়া।
তার মানে?
মানে ছেলেটা তান্ত্রিকের ভেখ ধরে লোক ঠকিয়ে খায়। নেহাত তারাপদকাকার নাতি, মন্টুর ছেলে, তাই সেদিন ওকে বাড়িতে ঢুকতে দিয়েছিলাম। নাহলে দরজা থেকেই বলে দিতাম, তুমি আমার বাড়িতে ঢুকো না।
বুধোদা বলল, ও! সুবিনয়বাবু তাহলে তারাপদ মুস্তাফির নাতি? সুবিনয় মুস্তাফি? ঠিক ঠিক। যাতায়াতের পথে হাতিবাগানের মোড়ে ওনার ছবিওলা একটা ব্যানার দেখেছি—ঘাড় অবধি বাবরি চুল, লাল আলখাল্লা, কপালে রক্তচন্দনের তিলক। নামের আগে তন্ত্রাচার্য না কি যেন একটা উপাধিও লাগানো আছে, তাই না?
একদম ঠিক। উনিই সেই অবতার। বললেন প্রতাপ রক্ষিত।
বুধোদা জিগ্যেস করল, ব্যবসাটা কি বংশগত?
প্রবলবেগে দু-হাত নেড়ে আপত্তি জানালেন প্রতাপবাবু। বললেন, একেবারেই না। তারাপদকাকা ভারতে ফিরে এসে ম্যাজিককেই জীবিকা করে নিয়েছিলেন। সারা জীবন মেলায় আর ছোটখাটো অনুষ্ঠানে ম্যাজিক দেখিয়েই কাটিয়েছেন। তেমন বড় ম্যাজিশিয়ান হতে পারেননি, কারণ ওনার মধ্যে সেই প্রতিভা ছিল না। কিন্তু মানুষটা ছিলেন আদ্যোপান্ত সৎ। প্রত্যেক শোয়ের আগে মাইকে ঘোষণা করে দিতেন—এখন যে খেলাগুলো আপনারা দেখতে চলেছেন, সেগুলো হয় হাতসাফাইয়ের নয় যন্ত্রপাতির কৌশল। এগুলোর মধ্যে অলৌকিক কিছুই নেই।
আমিও ছোটবেলায় ওনার অনেক শো দেখেছি। খুব ভালোবাসতেন আমাকে। মা-এর স্ট্রাগল-এর দিনগুলোতে তারাপদকাকাই ছিলেন মায়ের সবচেয়ে বড় সহায়।
তারাপদকাকার ছেলে সমীরণ, মানে মন্টু ছিল আমার ছোটবেলার খেলার সঙ্গী। ছোটবেলাই বা বলি কেন? যতদিন ও বেঁচেছিল ততদিনই আমাদের বন্ধুত্ব অটুট ছিল। মন্টু তারাপদকাকার কাছেই ম্যাজিক শিখেছিল কিন্তু সেটাকে প্রফেশন হিসেবে নেয়নি। ও পড়াশোনায় ভালো ছিল। বেশ কমবয়সেই চাকরির পরীক্ষা দিয়ে ব্যাঙ্কে চাকরি পেয়ে গিয়েছিল। আমাদের দুর্ভাগ্য, মন্টু মাত্র পঞ্চান্ন বছর বয়সে একটা বাস-অ্যাকসিডেন্টে মারা গেল। এই সুবিনয়ের বয়স তখন পঁচিশ। একেবারেই অকর্মা ভ্যাগাবন্ড। হায়ারসেকেন্ডারিটা অবধি পাশ করতে পারেনি। বাবার কাছে কিছু বেসিক হাতসাফাইয়ের খেলা শিখেছিল। কিন্তু সেগুলোকে ও চুরি-চামারি করতে কাজে লাগাত।
কীরকম? বুধোদা দেখলাম প্রতাপবাবুর গল্পে বেশ ইন্টারেস্ট পেয়ে গেছে। আমিও পাইনি বললে মিথ্যে বলা হবে।
প্রতাপবাবু আমাদের উৎসাহ দেখে খুশি হলেন। বললেন, ধরুন ও কোনো সরল কিন্তু লোভি লোককে পাকড়াও করে তাকে পকেটের টাকা ডবল করে দেখাল। বাবুঘাটের বাস-স্ট্যান্ডে যেখান থেকে উড়িষ্যা-বিহারের বাসগুলো ছাড়ে, সেখানে আজও আপনি ওরকম লোকেদের দেখা পাবেন। ওইসব জায়গাগুলোই ছিল সুবিনয়ের অপারেশনের ঘাঁটি। আপনার তো ম্যাজিক নিয়ে পড়াশোনা আছে। বুঝতেই পারছেন, সত্যিকারে কোনো টাকাই ডবল হত না। যেটা হত, সুবিনয়ের হাতের তালুতে লুকিয়ে রাখা টাকা মিশে যেত সেই বোকা লোকটির টাকার সঙ্গে। এইভাবে লোকটাকে ইমপ্রেস করে, তারপর ও একটা বড়সড় অঙ্কের টাকা তার কাছ থেকে ডবল করবে বলে চেয়ে নিত।
এবং চোখের পলকে ভিড়ের মধ্যে মিশে যেতেন, তাই তো?
একদম ঠিক। তারপর ধরুন কোনো দোকানের শোকেস থেকে দামি জিনিস উঠিয়ে নেওয়া—যাকে বলে ‘শপ-লিফটিং’। সেই ধরনের চুরিতেও ওর বাবার কাছ থেকে শেখা কনজিওরিং-এর ট্রিকগুলো কাজে লাগত।
তবে পুলিশের নজর এড়িয়ে এসব দুষ্কর্ম তো বেশিদিন চালানো যায় না। চল্লিশ বছর বয়স হবার আগেই সুবিনয় বারতিনেক জেল খেটে এল। ওইসময়েই ও আমাদের পাড়া থেকে পাত্তাড়ি গুটিয়েছিল। তারাপদকাকার বাড়িটা বিক্রি করে দিয়ে কোথায় যে চলে গেল, বেশ কয়েকবছর জানতেও পারিনি। তারপর ঠিক তিনদিন আগে, মানে গত পাঁচই সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ করেই সুবিনয় আমার বাড়িতে এল। দেখলাম শুঁয়োপোকা ভোল পালটে প্রজাপতি হয়ে গিয়েছে।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন