৭১. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২-১৭৯৯)

মাইকেল এইচ. হার্ট

জর্জ ওয়াশিংটনের জন্য আমেরিকায় ভার্জিনিয়াতে। জন্ম তারিখ ২২.২.১৭৩২। তাঁর পূর্বপুরুষেরা ছিলেন ইংল্যণ্ডের নর্দম্পটনসায়ারের অধিবাসী। জর্জের বাবা নিজের চেষ্টায় বেশ কিছু বিরাট বিরাট খামার গড়ে তুলেছিলেন।

জর্জের বাবা প্রথম স্ত্রী মারা যাবার পর দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর একটি মাত্র ছেলে ছিল। দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রথম সন্তান জর্জ। ছেলেবেলায় বাড়িতেই পড়াশুনা করতেন জর্জ।

আর বাকি সময়ে খামার ঘুরে ঘুরে চাষবাস দেখাশুনা করতেন। যখন তাঁর এগারো বছর বয়স, অপ্রত্যাশিতভাবেই বাবা মারা গেলেন।

জর্জের বৈমাত্রেয় ভাই লরেন্স শ্বশুরবাড়িতে থাকত। লরেন্সের শ্বশুর লর্ড ফেয়ারফ্যাক্স ছিলেন ভার্জিনিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। লরেন্স জর্জকে নিয়ে এলেন নিজের কাছে। তিনিই জর্জের শিক্ষার বন্দোবস্ত করলেন। পাঁচ বছর ফেয়ারফ্যাক্স (FairFax} পরিবারেই রয়ে গেলেন জর্জ।

এই সময় সেনানডোয়া নামে এক উপত্যাকায় ষাট লক্ষ একর জমি কিনলেন লর্ড ফেয়ারফ্যাক্স। এই জমির মাপ করবার জন্য একদল সার্ভেয়ারকে সেখানে পাঠানো হল। জর্জ ওয়াশিংটনকে একজন সহকারী সার্ভেয়ার হিসাবে কাজে নিলেন ফেয়ারফ্যাক্স।

প্রতিকূলতা অসুবিধা সত্ত্বেও নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করলেন ওয়াশিংটন। যথাসময়ে কাজ শেষ হল। জর্জের কাজে খুশি হয়ে ফেয়ারফ্যাক্স তাঁকে প্রধান সার্ভেয়ারের পদে নিযুক্ত করলেন। তখন ওয়াশিংটনের বয়স মাত্র ১৭। দু’বছর প্রধান সার্ভেয়ার হিসাবে কাজ করলেন।

এই সময় ভাই লরেন্স ব্যবসায়ের কাজে ওয়েস্ট ইণ্ডিজের বার্বাডোজে গেলেন। ভার্জিনিয়ার ফেরবার পর অসুস্থ হয়ে পড়ল লরেন্স। সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে মারা গেল লরেন্স।

লরেন্সের মৃত্যুর পর তার বিধবা স্ত্রী হল সমস্ত সম্পত্তির মালিক। একা তার পক্ষে এতবড় সম্পত্তি দেখাশুনা করা সম্ভব ছিল না বলে জর্জের উপর দেখাশুনার ভার পড়ল।

কয়েক বছর পরেই মারা গেল লরেন্সের স্ত্রী। তার কোন সন্তান-সন্ততি ছিল না। তাই বিশাল সম্পত্তির অধিকারী হলেন ওয়াশিংটন।

যে সব জমিতে চাষবাস হত না, তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করলেন সেই সব জমিতে কিভাবে চাষ-আবাদ করা সম্ভব। শুধু তাই নয়, উৎপাদনের পরিমাণ কি করে বাড়ান যায় তার জন্যে চাষবাসের উপর বই পড়তেন, ইংল্যাণ্ডের কৃষি বিশেষজ্ঞদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। নতুন নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করতেন। এর সাথে তিনি চিন্তা-ভাবনা শুরু করলেন পশুপালন ব্যবসার কিভাবে শ্রীবৃদ্ধি ঘটানো যায়। তার এই প্রচেষ্টায় আশাতীত সাফল্য দেখা গেল।

ভেরন উপত্যাকার বন্ধুর অঞ্চলে গড়ে উঠল এক আদর্শ খামার। মোট প্রায় আট হাজার একর জমি ছিল, তার মধ্যে সাড়ে তিন হাজার একর জমিকে কৃষির অন্তর্ভুক্ত করতে পারলেন। এখানে প্রায় দুশো জন চাকর কাজ করত। তারা শুধু চাষ করত না, তারা নানা ধরনের মদ তৈরি করত, শস্য পেষাই করত। অন্য আরেক দল লোক ছিল যারা পশুপালন করত, মেষ চরাত, তার লোম থেকে উল তৈরি করে বাজারে বিক্রি করত। এতবড় জমিদারির সব কিছু নিজেই তত্ত্ববধান করতেন ওয়াশিংটন।

ছেলেবেলায় তার মনে হত বড় সৈনিক হবেন। সেই সময় ভার্জিনিয়ার সৈন্যবাহিনীতে যোগ দেবার জন্য যুবকদের আহ্বান করা হচ্ছিল।

ওয়াশিংটন ভার্জিনিয়ার গভর্নরকে লিখলেন, আমি সৈনিক হিসাবে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চাই, আপনি আমার যোগ্যতার পরীক্ষা গ্রহণ করতে পারেন।

গভর্নর ওয়াশিংটনকে বিশেষ কাজের জন্য ডেকে পাঠালেন।

ভার্জিনিয়ার ওহিও নদীর তীরবর্তী বিরাট অঞ্চল ছিল ফরাসীদের অধিকারে। গভর্নর আদেশ দিলেন ফরাসীদের অবিলম্বে এই অঞ্চল ছেড়ে যেতে হবে।

গভর্নর ওয়াশিংটনকে আদেশ দিলেন সৈন্যবাহিনী নিয়ে ফরাসীদের ঐ অঞ্চল থেকে হটিয়ে দিতে। ওয়াশিংটনকে লেফটেনান্ট কর্নেল পদে নিযুক্ত করা হল। ছশো সৈনিকের এক বাহিনী নিয়ে বিতর্কিত এলাকার দিকে রওনা হলেন ওয়াশিংটন। ফরাসীরা একটি দুর্গে আশ্রয় নিয়েছিল। সুকৌশলে দুর্গ অধিকার করে ফরাসীদের বিতাড়ন করলেন ওয়াশিংটন। যুদ্ধে মারা গেলেন ফরাসী সেনাপতি।

প্রথম যুদ্ধে জয়লাভের পর তাকে আর একটি অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত করা হল। এই অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন ইংরেজ সেনাপতি ব্রাডক। ওয়াশিংটনকে তাঁর অধীনের দায়িত্বভার দেওয়া হল।

রেড ইন্ডিয়ান এবং ফরাসী বাহিনী সম্মিলিতভাবে ইংরেজদের আক্রমণ করল। জেনারেল ব্রাডক ইউরোপিয়ান পদ্ধতিতে যুদ্ধ পরিচালনা করতে থাকেন। কিন্তু ওয়াশিংটন তাঁর তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও বাস্তববাচিত দৃষ্টিভঙ্গির সাহায্যে উপলব্ধি করলেন এইভাবে যুদ্ধ করলে জয় অসম্ভব। যুদ্ধে অসম সাহসিকতা প্রদর্শন করেও মৃত্যুবরণ করতে হল ব্রাডককে। বিরাট সংখ্যক ইংরেজ সৈন্য মারা পড়ল। আশ্চর্যজনকভাবে রক্ষা পেলেন ওয়াশিংটন। স্বপক্ষের সৈন্যদের এই বিপর্যয় দেখে সুকৌশলে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে এলেন ওয়াশিংটন। কিছু ঐতিহাসিকের ধারণা ওয়াশিংটনের ধারণা ওয়াশিংটনের কৃতিত্বের জন্য নয়, যুদ্ধক্লান্ত ফরাসী সৈনিকরা ইংরেজ সৈন্যদের অনুসরণ করতে চায়নি। সেই সুযোগে তারা রক্ষা পেয়েছিল। যে কারণেই হোক, এই যুদ্ধের ফলে ওয়াশিংটনের অসাধারণ শৌর্য, বীরত্ব, সাহস, তীক্ষ্ণ বুদ্ধির কথা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ল।

১৭৫৫ সালে ভার্জিনিয়ার গভর্নর ব্রাডকের শূন্য পদে ওয়াশিংটনকে নিযুক্ত করলেন। সমগ্র ভার্জিনিয়ার সৈন্যবাহিনীর প্রদান হলেন ওয়াশিংটন।

সেনাপতি হিসাবে তিনি অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা ও রণকুশলতার পরিচয় দিয়েছেন। সেই জন্যে তাঁকে বলা হত ধূর্ত শেয়াল। শত্রুরা কখনো তার পরিকল্পনা সম্বন্ধে সামান্যতম আঁচ করতে পারত না। কখন কিভাবে আক্রমণ করবেন সে সম্বন্ধেও শত্রুদের নানাভাবে বিভ্রান্ত করতেন। শত্রুদের বিপথে চালিত করবার জন্য মাঝে মাঝেই তিনি ভুল তথ্য এমনভাবে পাঠাতেন, সহজেই তা শত্রুদের হাতে গিয়ে পড়ত এবং সেই সংবাদ বিশ্বাস করে বহুবার ব্রিটিশ বাহিনী পরাজিত হয়েছে।

ভার্জিনিয়ার সেনাপতি হিসাবে তিনি মাত্র তিন বছর ছিলেন। তারপর স্বাস্থ্যের কারণে পদত্যাগ করে ফিরে এলেন নিজের জমিদারি মাউন্ট ভার্ননে। এই সময় পরিচয় হল মার্থা ড্রানড্রিজের সাথে। ড্রানড্রিজ ছিলেন বিধবা, বিরাট জমিদারির মালিক। মার্থা আকৃষ্ট হলেন ওয়াশিংটনের ব্যক্তিত্বে বিয়ে হল দুজনের। এই বিবাহিত জীবনে দুজনেই সুখী হয়েছিলেন। এর পরের সতেরো বছর তিনি জামিদারির কাজকর্ম নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। ১৭৭৪ সালে ফিলাডেলফিয়া শহরে তেরোটি মার্কিন উপনিবেশের প্রতিনিধিদের প্রথম সম্মেলন বসল। জর্জ ওয়াশিংটন ছিলেন ভার্জিনিয়ার সবচেয়ে ধনী ও সম্মানীয় ব্যক্তি। তাঁকে ভার্জিনিয়ার প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত করা হল। এই অধিবেশনেই সমস্ত সদস্যদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়ে উঠল ইংল্যন্ডের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ।

পরের বছর দ্বিতীয় অধিবেশন বসল। এই অধিবেশনে সর্বসম্মতভাবে ওয়াশিংটনকে সমগ্র উপনিবেশের সেনাপ্রধান হিসাবে নিযুক্ত করা হল। ওয়াশিংটন স্ত্রীকে লিখলেন, “আমার ভাগ্য আমাকে এই পদ দিয়েছে।”

অবশেষে ৭ জুন ১৭৭৬ তেরোটি প্রদেশের প্রতিনিধিরা সম্মিলিতভাবে আমেরিকার। স্বাধীনতা ঘোষণা করল। পাঁচজনের এক পরিচালনা গোষ্ঠী তৈরি হল। এর প্রধান হলেন টমাস জেফারেসন।

৪ জুলাই (4 July) ১৭৭৬ স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচার করা হল। এতে স্বাধীনতা ঐক্যের কথা প্রচারিত হল।

দেশের বিভিন্ন প্রদেশে শুরু হয়ে গেল ব্রিটিশ বাহিনীর সাথে আমেরিকানদের যুদ্ধ। নানান প্রতিকূলতার মধ্যে ওয়াশিংটনকে তার সৈন্যবহিনী সংগঠিত করতে হয়েছিল। তার সৈন্যদের মধ্যে খুব কমই ছিল নিয়মিত সৈন্য। তাদের যুদ্ধের অভিজ্ঞতাও ছিল না। উন্নত মানের অস্ত্রশস্ত্রও ছিল না।

ওয়াশিংটন জানতেন তার সেনাদলের সামর্থ্য নিতান্তই কম। তারা অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্টের মধ্যে যুদ্ধ করে চলেছে। তাই পদমর্যাদার কথা ভুলে গিয়ে তাদের সাথে একাত্ম হয়ে গেলেন। ওয়াশিংটনের সৈনিকরা তাঁকে বলত “দরকারী মানুষ”। অথচ নিজের জীবনকে তিনি কখনো দরকারী বলে মনে করতেন না। একদিন অন্য সব সামরিক অফিসারদের সাথে খেতে বসেছেন, এমন সময় একটি রেড ইন্ডিয়ান ঘরে ঢুকে পড়ল। টেবিলের উপর রাখা মাংসের পুরো রোস্টটা তুলে নিয়ে খেতে আরম্ভ করল। তখন খাবারের ভীষণ অভাব। সকলে রেড ইন্ডিয়ানকে শাস্তি দেবার জন্য উঠে দাঁড়িতেই ওয়াশিংটন বাধা দিলেন। তিনি বললেন, ওকে ছেড়ে দাও, দেখে মনে হচ্ছে অনেকদিন ওর কিছু খাওয়া হয়নি।

তাঁর দলের সৈনিকদের সুযোগ-সুবিধার দিকে তাঁর ছিল তীক্ষ্ণ নজর। একদিন কোন একটি ক্যাম্পে একজন সৈনিক ঠাণ্ডা লেগে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। সমস্ত রাত ধরে কাশছিল। শেষ রাতে হঠাৎ দেখতে পেল কেউ তার তাবুতে ঢুকছে। কাছে আসতেই চমকে উঠল, স্বয়ং ওয়াশিংটন তার কষ্ট দেখে চা নিয়ে এসেছেন।

প্রথম দিকে ইংরেজ বাহিনী সাফল্যলাভ করলেও শেষ পর্যন্ত তারা পিছু হটতে বাধ্য হল। দীর্ঘ পাঁচ বছর মরণপণ সংগ্রামের পর অবশেষে ইংরেজ সেনাপতি কর্ণওয়ালিশ ১৭৮১ সালে আত্মসমর্পণ করলেন। যুদ্ধে জয়ী হল আমেরিকানরা। এই যুদ্ধ জয়ের পেছনে ওয়শিংটনের ভূমিকার ছিল সবেচেয়ে বেশি। তাঁর ইচ্ছাশক্তি, সৈনিকদের প্রতি ভালবাসা এবং শৃঙ্খলাবোধ এই যুদ্ধে তাঁকে বিজয়ী নায়কের গৌরব দিয়েছিল।

আমেরিকায় স্বাধীনতা যুদ্ধের নায়ক হয়েও তার কোন উচ্চাশা ছিল না। তিনি নিজের কর্তব্য শেষ করে প্রধান সেনাপতির পদ ত্যাগ করলেন। ফিরে এলেন নিজের জমিদারিতে। কিন্তু আমেরিকার মানুষ চাইছিল তাঁর অসামান্য কর্মকুশলতাকে কাজে লাগাতে। ১৭৮৭ সালে দেশের সংবিধান তৈরি করার জন্য সমস্ত প্রদেশের প্রতিনিধিরা সম্মিলিত হলেন। ওয়াশিংটনও সেখানে যোগ দিলেন নতুন সংবিধানের রূপরেখা বর্ণনা করে সদস্যরা ঐক্যবদ্ধভাবে জর্জ ওয়াশিংটনকে রাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্বাচিত করলেন। তিনি হলেন আমেরিকার প্রথম রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি পদের দায়িত্বভার গ্রহণ করে প্রথমেই তিনি দেশ ও সমস্ত জাতিকে শান্তিপূর্ণভাবে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানালেন।

তিনি জানতেন দেশের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন মত ও বিরোধী পক্ষ। সকলে সাহায্য ছাড়া এই শিশু রাষ্ট্রকে কখনোই গড়ে তোলা সম্ভবপর নয়। তাই তিনি তাঁর মন্ত্রিসভায় দুটি বিরোধী পক্ষকে একত্রিত করবার চেষ্টা করলেন। আলেকজাণ্ডার হ্যাঁমিলটন ছিলেন রক্ষণশীল দলের প্রধান এবং ধনতন্ত্রের জোরালো সমর্থক। তাঁকে দেশের রাজস্ব বিভাগের ভার দেওয়া হল এবং টমাস জেফারসন ছিলেন গণতন্ত্রের সমর্থক, তাকে স্বরাষ্ট্র বিভাগের দায়িত্ব দিলেন।

ওয়াশিংটন জানতেন দেশের সামনে এখন সমস্যা। একমাত্র যোগ্যতম ব্যক্তিরাই এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। তাই সমস্ত দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে জেফারসন ও হ্যাঁমিলটনকে রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বভার অর্পণ করেছিলেন। তার এই সিদ্ধান্ত ছিল সঠিক। হ্যাঁমিলটন ছিলেন সুদক্ষ সেনাপতি, দার্শনিক, আইনজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ। তিনি নানান কর বসিয়ে ইউনিয়ন সরকারের আয় বৃদ্ধির দিকে নজর দিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যে ঋণ হয়েছিল। সেই ঋণভার রাজ্য সরকারের হাত থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে তুলে দিলেন। জাতীয় ব্যাঙ্ক স্থাপন করা হল।

অভ্যন্তরীণ উন্নতির সাথে সাথে বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলবার দিকে নজর দিলেন ওয়াশিংটন। এমনকি ব্রিটেনের সাথেও তিনি চেষ্টা করতে লাগলেন নতুন কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে।

১৭৯৩ সালে যখন ফরাসী বিপ্লব শুরু হল, তিনি বিপ্লবীদের সমর্থন করলেও নিরপেক্ষতার নীতি গ্রহণ করলেন। এর ফলে আমেরিকা প্রতিটি বিবদমান দেশেই বাণিজ্য করবার সুযোগ পেল।

দেশের রাষ্ট্রপতি হিসাবে অসাধারণ যোগ্যতা প্রদর্শনের জন্য ১৭৯২ সালে তাঁকে দ্বিতীয়বারের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্বাচিত করা হল।

দ্বিতীয় বারে নির্বাচন কাল শেষ হল। তাঁকে সকলেই অনুরোধ জানালে তৃতীয় বারের জন্য নির্বাচিত হতে। তিনি সবিনয়ে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বললেন, “ঈশ্বরকে ধন্যবাদ আমি কর্মক্ষম স্বাস্থ্যবান রয়েছি…শুধুমাত্র সেই কারণেই আমি এই পদ চাইনা এটা শুধু অযৌক্তিক নয়, অপরাধ হবে যদি আমি পদ আঁকড়ে থাকি। হয়ত অপর কেউ আমার চেয়েও আরো ভালভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারবে।”

তিনি ইংল্যান্ডের ক্রমওয়েলের মতই এক নতুন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা, কিন্তু ক্রমওয়েলের মত তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল না। তাঁকে যে মহান দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়েছিল। তিনি সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছিলেন। তার পর সেই দায়িত্ব অন্যের উপর তুলে দিয়ে নিঃশব্দে বিদায় নিয়েছিলেন।

সকল অধ্যায়

১. ১. বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) (৫৭০-৬৩২ খ্রি:)
২. ২. হযরত ঈসা (খ্রীষ্ট পূর্ব ৬-৩০)
৩. ৩. হযরত মুসা (খ্রীষ্ট পূর্ব ত্রয়োদশ শতাব্দী)
৪. ৪. ইমাম আবু হানিফা (রঃ) (৭০২–৭৭২ খ্রি:)
৫. ৫. জাবির ইবনে হাইয়ান (৭২২-৮০৩ খ্রি:)
৬. ৬. ইমাম বোখারী (রঃ) (৮১০-৮৭০ খ্রি:)
৭. ৭. আল বাত্তানী (৮৫৮–৯২৯ খ্রি:)
৮. ৮. আল ফারাবী (৮৭০-৯৬৬ খ্রি:)
৯. ৯. মহাকবি ফেরদৌসী (৯৪১–১০২০ খ্রি:)
১০. ১০. আল বেরুনী (৯৭৩–১০৪৮ খ্রি:)
১১. ১১. ইবনে সিনা (৯৮০-১০৩৭ খ্রি:)
১২. ১২. ওমর খৈয়াম (১০৪৪-১১২৩ খ্রি:)
১৩. ১৩. ইমাম গাজ্জালী (রঃ) (১০৫৮–১১১১ খ্রি:)
১৪. ১৪. ইবনে রুশদ (১১২৬১১৯৯ খ্রি:)
১৫. ১৫. আল্লামা শেখ সা’দী (রঃ) (১১৭৫–১২৯৫ খ্রি:)
১৬. ১৬. মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমী (রঃ) (১২০৭-১২৭৩ খ্রি:)
১৭. ১৭. ইবনুন নাফিস (১২০৮-১২৮৮ খ্রি:)
১৮. ১৮. ইবনে খালদুন (১৩২২–১৪০৬ খ্রীঃ)
১৯. ১৯. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬ খ্রীঃ)
২০. ২০. মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক পাশা (১৮৮১-১৯৩৮)
২১. ২১. গৌতম বুদ্ধ (খ্রি: পূ: ৫৬৩ খ্রি: পূ: ৪৮৩)
২২. ২২. শ্রীরামকৃষ্ণ (১৮৩৩-১৮৮৬)
২৩. ২৩. শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩)
২৪. ২৪. স্বামী বিবেকানন্দ (১৮৬৩-১৯০২)
২৫. ২৫. যোহান উলফগ্যঙ ভন গ্যেটে (১৭৪৯–১৮৩২)
২৬. ২৬. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১-১৯৫৫)
২৭. ২৭. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২)
২৮. ২৮. ফিওদর মিখাইলভিচ দস্তয়ভস্কি (১৮২১-১৮৮১)
২৯. ২৯. আলেকজান্ডার দি গ্রেট (৩৫৬ খ্রিস্ট পূর্ব-৩২৩ খ্রিস্ট পূর্ব)
৩০. ৩০. লেনিন (১৮৭০-১৯২৪)
৩১. ৩১. মাও সে তুং (১৮৯৩-১৯৭৬)
৩২. ৩২. কনফুসিয়াস (খ্রি: পূর্ব ৫৫১ খ্রি: পূর্ব ৪৭৯)
৩৩. ৩৩. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২-১৯৭০)
৩৪. ৩৪. পাবলো পিকাসো (১৮৮১-১৯৭৩)
৩৫. ৩৫. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (১৪৫১-১৫০৬)
৩৬. ৩৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮)
৩৭. ৩৭. বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন (১৭০৬-১৭৯০)
৩৮. ৩৮. কার্ল মার্কস (১৮১৮-১৮৮৩)
৩৯. ৩৯. হ্যানিম্যান (১৭৫৫-১৮৪৩)
৪০. ৪০. ত্যাগরাজ (১৭৬৭–১৮৪৭)
৪১. ৪১. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১)
৪২. ৪২. ভাস্করাচার্য (১১১৪-১১৮৫)
৪৩. ৪৩. পার্সি বিশী শেলী (১৭৯২-১৮২২)
৪৪. ৪৪. জোহন কেপলার (১৫৭১-১৬৩০)
৪৫. ৪৫. জোহান্স গুটেনবার্গ (১৪০০–১৪৬৮)
৪৬. ৪৬ জুলিয়াস সিজার (খ্রি: পূ: ১০০খ্রি: পূ: ৪৪)
৪৭. ৪৭. গুলিয়েলমো মার্কোনি (১৮৭৪-১৯৩৭)
৪৮. ৪৮. রাণী এলিজাবেথ (১৫৩৩-১৬০৩)
৪৯. ৪৯. জোসেফ স্টালিন (১৮৮২-১৯৫৩)
৫০. ৫০. ফ্রান্সিস বেকন (খ্রি: ১৫৬১ খ্রি: ১৬২৬)
৫১. ৫১. জেমস ওয়াট (১৭৩৬-১৮১৯)
৫২. ৫২. চেঙ্গিস খান (১১৬২–১২২৭)
৫৩. ৫৩. এডলফ হিটলার (১৮৮৯-১৯৪৫)
৫৪. ৫৪. লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি (১৪৫২-১৫১৯)
৫৫. ৫৫. অশোক (আনুমানিক খ্রি: পূ: ৩০০–২৩২ খ্রি: পূর্ব)
৫৬. ৫৬. সিগমুন্ড ফ্রয়েড (১৮৫৬-১৯৩৯)
৫৭. ৫৭. আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল (১৮৪৭-১৯২২)
৫৮. ৫৮. যোহান সেবাস্তিয়ান বাখ (১৬৮৫–১৭৫০)
৫৯. ৫৯. জন. এফ. কেনেডি (১৯১৭-১৯৬৩)
৬০. ৬০. গ্যালিলিও গ্যালিলাই (১৫৬৪-১৬৪২)
৬১. ৬১. হো চি মিন (১৮৯০–১৯৬৯)
৬২. ৬২. মহাত্মা গান্ধীজী (১৮৬৯-১৯৪৮)
৬৩. ৬৩. লেভ তলস্তয় (১৮২৮–১৯১০)
৬৪. ৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১)
৬৫. ৬৫. হিপোক্রেটস (৪৬০-৩৭০)
৬৬. ৬৬. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৮–১৯৩৭)
৬৭. ৬৭. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯-১৯৫৫)
৬৮. ৬৮. উইলিয়ম শেকস্‌পীয়র (১৫৬৪-১৬১৬)
৬৯. ৬৯. জন মিলটন (১৬০৮–১৬৭৪)
৭০. ৭০. সক্রেটিস (৪৬৯-৩৯৯ খৃঃ পূ:)
৭১. ৭১. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২-১৭৯৯)
৭২. ৭২. উইলিয়াম হার্ভে (১৫৭৮-১৬৫৭)
৭৩. ৭৩. পিথাগোরাস (৫৮০–৫০০)
৭৪. ৭৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩)
৭৫. ৭৫. লুই পাস্তুর (১৮২২-১৮৯৫)
৭৬. ৭৬. নিকোলাস কোপার্নিকাস (১৪৭৩-১৫৪৩)
৭৭. ৭৭. এন্টনি লরেন্ট ল্যাভোশিঁয়ে (১৭৪৩-১৭৯৪)
৭৮. ৭৮. এডওয়ার্ড জেনার (১৭৪৯–১৮২৩)
৭৯. ৭৯. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০-১৯১০)
৮০. ৮০. হেনরিক ইবসেন (১৮২৮-১৯০৬)
৮১. ৮১. টমাস আলভা এডিসন (১৮৪৭-১৯৩১)
৮২. ৮২. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৬৫-১৯৫০)
৮৩. ৮৩. মার্টিন লুথার কিং (১৯২৯–১৯৬৮)
৮৪. ৮৪. সত্যজিৎ রায় (১৯২১-১৯৯২)
৮৫. ৮৫. রম্যাঁ রোলাঁ (১৮৬৬-১৯৪৪)
৮৬. ৮৬. পাবলো নেরুদা (১৯০৪–১৯৭৩)
৮৭. ৮৭. আর্কিমিডিস (২৮৭-২১২খৃ. অব্দ)
৮৮. ৮৮. অ্যারিস্টটল (৩৮৫-৩২২খৃ. পূ.)
৮৯. ৮৯. মেরি কুরি (১৮৬৭-১৯৩৪)
৯০. ৯০. জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল (১৮৩১-১৮৭৯)
৯১. ৯১. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২)
৯২. ৯২. উইলবার রাইট ও অরভিল রাইট (১৮৭১-১৯৪৮) (১৮৬৭-১৯১২)
৯৩. ৯৩. চার্লি চ্যাপলিন (১৮৮৯-১৯৭৭)
৯৪. ৯৪. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২-১৮৭০)
৯৫. ৯৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮-১৯৩২)
৯৬. ৯৬. আব্রাহাম লিঙ্কন (১৮০৯-১৮৬৫)
৯৭. ৯৭. জন কিটস (১৭৯৫-১৮২১)
৯৮. ৯৮. প্লেটো (খ্রীস্টপূর্ব ৩২৭-খ্রীস্টপূর্ব ৩৪)
৯৯. ৯৯. মাইকেলেঞ্জেলো (১৪৭৫-১৫৬৪)
১০০. ১০০. স্যার আইজ্যাক নিউটন (১৬৪২-১৭২৭)

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন