৯৬. আব্রাহাম লিঙ্কন (১৮০৯-১৮৬৫)

মাইকেল এইচ. হার্ট

পৃথিবীর ইতিহাসে যে কয়জন মানবতাবাদী গণতন্ত্রপ্রেমী মহান রাষ্ট্রনায়ক জন্মগ্রহণ করেছেন তাঁদের মধ্যে বিশিষ্টতম হলেন আব্রাহাম লিঙ্কন।

আমেরিকার কেন্টাকি প্রদেশের অখ্যাত এক গ্রামের ছুতোর পরিবারে ১৮০৯ খ্রি: জন্ম হয় লিঙ্কনের। তাঁর পিতা টমাস লিঙ্কন ছিলেন পেশায় ছুতোর মিস্ত্রী। লেখাপড়া তিনি কিছুই জানতেন না। হাতের কাজ করে কোন রকমে সংসার প্রতিপালন করতেন।

লিঙ্কনের যখন মাত্র চার বছর বয়স, সেই সময় তাঁর বাবা ইন্ডিয়ানা প্রদেশের অরণ্যময় অঞ্চলে এসে সপরিবারে বাস করতে থাকেন। এখানেই জনবিরল পরিবেশে প্রকৃতির কোলে লিঙ্কনের শৈশব ও কৈশোর অতিবাহিত হয়।

অরণ্যের একপ্রান্তে বড় বড় কাঠের গুঁড়ি দিয়ে ঘর বানিয়েছিলেন লিঙ্কনের বাবা। কাঠের কাজ আর শিকার করে কোন প্রকারে সংসার চালাতেন। বাবার সঙ্গে কাজ করে লিঙ্কনও ছেলেবেলা থেকেই হয়ে উঠেছিলেন পরিশ্রমী। কাঠ চেরাই, মাছ ধরা ও চাষের কাজে তিনি বাবাকে সমানভাবে সাহায্য করতেন।

ছয় বছর বয়সে লিঙ্কন মাতৃহারা হন। তারপর থেকে তিনি আর ছোট বোন মিলে বাড়ির কাজকর্ম করতেন।

লিঙ্কনের বাবার পূর্বপরিচিত এক মহিলা তিনটি শিশু সন্তান নিয়ে অকালে বিধবা হয়েছিলেন। সংসারে একজন মহিলার প্রয়োজন বিবেচনা করে তিনি সেই মহিলাকেই বিয়ে করে সংসারে নিয়ে এলেন। হাসিখুশি স্বাস্থ্যবতী এই মহিলা ছিলেন যেমন পরিশ্রণী তেমনিই বুদ্ধিমতী। অল্পদিনেই তিনি সংসারের চেহারা ফিরিয়ে নিলেন।

লিঙ্কনের বাবা নিজে লেখাপড়া জানতেন না। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ব্যাপারেও তাই তার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু তার সৎ মায়ের উৎসাহ ছিল এই বিষয়ে। সেই অঞ্চলের কিছু শিক্ষিত লোকের চেষ্টায় একটা প্রাথমিক স্কুল খোলা হয়েছিল। সম্মায়ের আগ্রহে লিঙ্কন সেই স্কুলে ভর্তি হলেন।

মাত্র একবছর এই স্কুলে পড়াশুনার সুযোগ পেয়েছিলেন লিঙ্কন। তার মধ্যেই পড়াশুনার প্রতি গভীর আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিল তার মধ্যে। শহরের দোকান থেকে লোকজনদের ধরে বই কিনিয়ে আনতেন তিনি। মাঠে কাজ করতে করতে সেই বই পড়তেন। রাতে কাঠের আগুনের আলোয় বসে শ্লেটে অঙ্ক কষতেন। কিশোর বয়সে তার প্রিয় বই ছিল বাইবেল ঘুরে ফিরে অসংখ্যবার তিনি এই পবিত্রগ্রন্থ পাঠ করেছেন।

তাঁর জীবনে বাইবেলের প্রভাব ছিল অতীব গভীর। উত্তরকালে তাঁর লেখায় ও বক্তৃতার মধ্যেও এই প্রভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

উনিশ বছর বয়স পর্যন্ত নিজেদের গ্রামের আশপাশের অঞ্চল ছাড়া অন্য কোথাও যান নি লিঙ্কন। এই সময়ে এক ব্যবসায়ীর অধীনে কাজ নিয়ে কিছু পণ্য বিক্রয় করবার জন্য নিউ অর্লিয়েন্স বন্দরে যেতে হয়। একটি বড় নৌকায় চেপে বন্দরে পৌঁছে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখলেন লিঙ্কন।

এক জায়গায় নিগ্রো শিশু নারী পুরুষদের দাস হিসেব বিক্রি করা হচ্ছিল। নিলাম ডেকে যে সব চেয়ে বেশি দাম দিতে পারছিল তার হাতেই তুলে দেওয়া হচ্ছিল দাসদের।

যারা যেতে রাজি হচ্ছে না কিংবা কিছু মাত্র অবাধ্যতা করছে তাদের নির্মমভাবে চাবুক মেরে শায়েস্তা করা হচ্ছিল।

এই অমানবিক দৃশ্য আর দাস-ব্যবস্থার রীতি জীবনে প্রথম দেখতে পেলেন লিঙ্কন। বেদনায় তার মন ভরে উঠল। তিনি সেদিন এতটাই অভিভূত হয়ে পড়েছিলেন যে মনে মনে শপথ নিয়েছিলেন, যদি কোনদিন সুযোগ পান তাহলে এই জঘন্য প্রথার উচ্ছেদের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করবেন।

সেবার নিউ অর্লিয়েন্সে পণ্য বিক্রয় করে প্রচুর লাভ করেছিলেন লিঙ্কন। পণ্যের মালিক ব্যবসায়ী খুশি হয়ে লিঙ্কনকে তাঁর নিউ সালেমের গুদামের ম্যানেজারের পদে চাকরিতে নিয়োগ করলেন।

কর্মজীবনে প্রবেশ করে অবসর সময়টুকু লিঙ্কন কাজে লাগালেন নানা বিষয়ের বইপত্র পড়াশুনা করে। মধুর ব্যবহারের জন্য এখানে সকলেরই প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সেই সুবাদে প্রাদেশিক নির্বাচনের সময় নির্বাচন কেন্দ্রে কাজকর্ম দেখাশুনার দায়িত্ব পান।

নিজের অজ্ঞাতেই এভাবে রাজনীতির জগতের সঙ্গে লিঙ্কনের পরিচয়ের সুযোগ ঘটে। ক্রমে তিনি রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন।

সেইকালে নিউসালেমে মুষ্টিমেয় লেখাপড়া জানা মানুষের মধ্যে লিঙ্কন ছিলেন অন্যতম। মধুর ব্যক্তিত্ব, জ্ঞান, স্পষ্টবাদিতা এবং সহযোগিতামূলক আচরণের জন্য তিনি এখানেও অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

নিউসালেমে এক সরাইখানার মালিক হলেন জেমস রুটলেজ। লিঙ্কনের তিনি ছিলেন সবচেয়ে বড় সমর্থক। স্থানীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণের জন্য তিনিই লিঙ্কনকে প্রথম উৎসাহিত করেন।

সরাইখানায় যাতায়াতের সূত্রে জেমসের মেয়ে অ্যানির প্রতি আকৃষ্ট হন লিঙ্কন। প্রথম পরিচয়েই তিনি মুগ্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পরে যখন জানতে পারেন অ্যানি এক যুবকের বাগদত্তা,তখন জীবনে প্রথম নারীর সংস্পর্শে এসে আঘাত পেয়েছিলেন লিঙ্কন। তবে অল্পসময়ের মধ্যেই তিনি সে আঘাত সামলে উঠেছিলেন।

যে ব্যবসায়ীর অধীনে লিঙ্কন কাজ করতেন, তার ব্যবসা পড়ে এসেছিল। লিঙ্কন চাকরি ছেড়ে দিয়ে একজন সঙ্গীর সঙ্গে ব্যবসা শুরু করলেন। সঙ্গীটির ছিল মদের নেশা। কাজেই অল্পদিনের মধ্যেই ব্যবসা উঠে গেল।

এই সময় কয়েকজন অনুরাগী বন্ধুর উৎসাহে ইলিয়া প্রদেশের প্রাদেশিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন লিঙ্কন। কিন্তু রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার অভাবে নির্বাচনে পরাজিত হতে হয়।

নির্বাচনের ব্যর্থতার পর লিঙ্কন নিউসালেমে বাড়ি বাড়ি চিঠিপত্র খবরের কাগজ বিলি করার পিওনের চাকরি নিলেন। এই সুযোগটাকে ভালভাবেই কাজে লাগিয়েছিলেন তিনি এবং এবাবেই বৃহত্তর জগতের সঙ্গে তার যোগাযোগ তৈরি হয়েছিল।

মালিকের বাড়ি পৌঁছে দেবার আগে তিনি কোথাও বসে খবরে কাগজগুলো খুঁটিয়ে পড়ে নিতেন। দিনের বেশিরভাগ সময়টা কাজের মধ্যে এইভাবে কেটে যেতো তার।

রাতে বাড়ি ফিরে বসতেন নিজের বইপত্তর নিয়ে। সমস্ত রকম ব্যস্ততার মধ্যেও নিয়মিত পড়াশুনার কাজে তার কখনো বিঘ্ন ঘটত না।

প্রথম বারে ব্যর্থ হলেও ১৮৩৪ খ্রি: নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে লিঙ্কন জয় লাভ করলেন। এবারে নির্বাচন পতিনিধি হিসাবে তাঁকে আসতে হল ইলিনয়ে। পরিষদের কাজের অবসরে তিনি লাইব্রেরী থেকে বই এনে পড়াশুনা করতে লাগলেন। এই সময়েই আইন পরীক্ষা পাশ করে আইন ব্যবসা করার সঙ্কল্প তাঁর মনে জাগে।

ইতিমধ্যে ইলিনয়ে প্রদেশের রাজধানী স্থানান্তরিত হল স্প্রিংফিল্ডে। ফলে পরিষদ সদস্য হিসাবে কাজকর্মের প্রয়োজনে লিঙ্কনকেও যেতে হল সেখানে।

আইন বিষয়ে পড়াশুনা করে পরীক্ষা দিলেন লিঙ্কন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৮৩৬ খ্রি: আইন ব্যবসায় আরম্ভ করলেন। অসাধারণ মেধা ও কর্মকুশলতার গুণে আইনজীবী হিসেবে অল্পসময়ের মধ্যেই খ্যাতি অর্জন করলেন লিঙ্কন। তাঁর বলিষ্ঠ যুক্তি ও জ্ঞানের কাছে প্রতিপক্ষকে সহজেই হার স্বীকার করতে হত। লিঙ্কন স্বভাবতই ছিলেন ন্যায়ের পক্ষপাতী। কোন অবস্থাতেই তিনি অন্যায়কে মেনে নিতেন না। সেই কারণে কোন মিথ্যা মামলা হাতে এলে সঙ্গে সঙ্গে তা ফিরিয়ে দিতেন।

আইন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠালাভের সঙ্গে সঙ্গে লিঙ্কন রাজনীতির সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত হয়ে পড়লেন। ১৮৩৮, ১৮৪০ খ্রি: দুবার তিনি ব্যবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হলেন।

ব্যবস্থাপক সভার এক সদস্য ছিলেন স্টিফেন ডগলাস। ভাগ্যচক্রে এক নারীকে কেন্দ্র করে তার সঙ্গে এসময়ে লিঙ্কনের যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল তার পরিণতি গড়িয়েছিল উত্তরকাল পর্যন্ত, ডগলাস হয়ে উঠেছিলেন লিঙ্কনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।

এক সুন্দরী তরুণী, তাঁর নাম মেরি টড, তার দিদিমার বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। চটপটে স্বভাব ও আকর্ষণীয় কথাবার্তা শুনে যুবকরা তাঁর প্রতি সহজেই আকৃষ্ট হয়ে পড়ল।

একদিন এক নাচের আসরে গেছেন লিঙ্কন আর ডগলাস। মেরিও উপস্থিত ছিলেন সেই আসরে। ডগলাসের আভিজাত্যপূর্ণ ব্যবহার ও ধোপদুরস্ত পোশাক সত্ত্বেও রুক্ষ ঢ্যাঙা চেহারার ঢিলেঢালা পোশাকের লিঙ্কনের প্রতিই আকৃষ্ট হলেন মেরি।

আলাপ পরিচয় কিছুটা গম্ভীর হলে লিঙ্কন বিবাহের প্রস্তাব দেন। প্রথমে অমত করলেও শেষ পর্যন্ত ১৮৪২ খ্রি: লিঙ্কনকেই মেরি বিবাহ করলেন। বলাবাহুল্য, লিঙ্কনের বন্ধুও সহকর্মীদের মধ্যে একমাত্র ডগলাস এই বিয়েতে খুশি হতে পারেন নি।

বিয়ের পর লিঙ্কন উইলিয়ম হানডন নামে এক তরুণ আইনজীবীর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আইন ব্যবসা শুরু করলেন। কিছুদিনের মধ্যেই দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তাঁদের এই সম্পর্ক বজায় ছিল আমৃত্যু। পরবর্তীকালে হানডন লিঙ্কনের জীবনী রচনা করেন।

স্ত্রী মেরীর তাগিদে একসময় স্প্রিংফিল্ডের আইন ব্যবসায় ছেড়ে লিঙ্কন ওয়াশিংটনে এসে পাকাপাকিভাবে বসবাস আরম্ভ করলেন।

মেরীর প্রবল ইচ্ছা লিঙ্কন কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করুন। সেই মত লিঙ্কন পুরোপুরিভাবে রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করলেন এবং অল্পসময়ের মধ্যেই অন্যতম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করলেন।

দলীয় মনোনয়ন পেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপক সভার নির্বাচনে যথাসময়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে লিঙ্কন ১৮৪৭ খ্রি: ওয়াশিংটন পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হলেন।

কিশোর বয়সে নিউ অর্লিয়েন্সের বন্দরে দেখা দাস ব্যবসায়ীদের বাজারের দৃশ্য লিঙ্কনের মনে জাগরুক ছিল। সংসদ সদস্য হবার পর প্রথমেই তাঁর দৃষ্টি পড়ল অনুরূপ একটি দৃশ্যের প্রতি।

ওয়াশিংটনে রাষ্ট্রপতির প্রাসাদ হোয়াইট হাউসের পাশেই গড়ে উঠেছিল নিগ্রোদাসদের একটি খোয়াড়। বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা নিগ্রোদের এই খোয়াড় থেকেই দক্ষিণের বাজারে বিক্রির জন্য পাঠানো হত।

আমেরিকায় দাস ব্যবসা শুরু হয়েছিল যোড়শ শতাব্দীতে কয়েকজন ওলন্দাজ বণিকের মাধ্যমে। তারা আফ্রিকা থেকে কুড়িজন নিগ্রোকে ধরে এনে জেমস টাউনে বিক্রি করে।

আমেরিকায় তখন সবে উপনিবেশ গড়ে উঠতে শুরু করেছে। বিভিন্ন কাজের জন্য শ্রমিকের প্রচণ্ড চাহিদা। এই সুযোগকে কাজ লাগাল ইউরোপের একদল অর্থলোলুপ ব্যবসায়ী। তারা আফ্রিকা থেকে দলে দলে নারী পুরুষ ধরে এনে আমেরিকায় বিক্রি করতে আরম্ভ করল। লাভের লোভে এই ভাবেই এক সময় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল নিগ্রো ক্রীতদাসের ব্যবসা। আমেরিকার সমগ্র দক্ষিণ অঞ্চল জুড়েই ছিল নিগ্রো ক্রীতদাসের চাহিদা।

লিঙ্কন যেই সময়ে ওয়াশিংটন পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হলেন সেই সময় পর্যন্ত আমেরিকায় নিগ্রো ক্রীতদাসের সংখ্যা ছিল কুড়ি লক্ষের কাছাকাছি।

স্বাধীনতা ঘোষণার পরে দাস ব্যবসায়ের বিরুদ্ধে আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে জনমত গড়ে উঠেছিল। ১৮০৮ খ্রি: ক্রীতদাস ব্যবসা নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু এসব সত্ত্বেও দাস ব্যবসা টিকে ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপকভাবে তুলো উৎপাদন হত। ইংলন্ডে শিল্প বিপ্লবের ফলে যখন নতুন নতুন কাপড়ের কল তৈরি হতে লাগল, আমেরিকার তুলো রপ্তানি বেড়ে গেল। ফলে তুলো উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দক্ষিণাঞ্চলে শ্রমিকের প্রয়োজন আগের তুলনায় বেড়ে গেল। অর্থনৈতিক সুবিধার জন্যই স্বাধীনতা লাভের সময় থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ লোক ছিল ক্রীতদাস প্রথার প্রবল সমর্থক।

লিঙ্কন মনেপ্রাণে ছিলেন দাসপথার বিরোধী। তিনি পার্লামেন্টের সভায় কলম্বিয়া প্রদেশে দাস ব্যবসা বন্ধ করবার জন্য একটি বিল উত্থাপন করলেন। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠের বিরোধিতায় সেই বিল অগ্রাহ্য হল।

এরপর রাজনৈতিক জগৎ সম্বন্ধে বিতৃষ্ণ হয়ে উঠলেন লিঙ্কন। তিনি স্প্রিংফিল্ডে এসে আবার আইন ব্যবসায় আরম্ভ করলেন। রাজনীতিতে ফিরে যাবার ইচ্ছা হারিয়ে ফেললেন তিনি। কিন্তু বেশিদিন তিনি রাজনীতির অঙ্গন থেকে দূরে সরে থাকতে পারলেন না।

নিগ্রো ক্রীতদাসদের প্রতি অত্যাচার অবিচার দেখে বিচলিত হয়ে তিনি এই অমানবিক ব্যবসার বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠলেন।

দৃঢ়স্বরে তিনি এই অভিমত প্রকাশ করলেন যে দেশের অর্ধেক মানুষ যখন ক্রীতদাস তখন স্বাধীনতা এক নির্মম রসিকতার নামান্তর। কোন জাতি এভাবে বেঁচে থাকতে পারে না। সংগঠিতভাবে প্রতিবাদ জানাবার উদ্দেশ্যে লিঙ্কন নিজের উদ্যোগে রিপাবলিক পার্টি নামে এক নতুন দল গঠন করলেন। পার্টির সংগঠক হিসাবে তিনি দলের রাজনৈতিক আদর্শের কথা যুক্তিপূর্ণ বলিষ্ঠ বাষায় দেশবাসীর কাছে ব্যাখ্যা করলেন। এই সময় থেকেই লিঙ্কনের নাম চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ল।

ইতিমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের দেশগুলো দাস প্রথার সমর্থনের প্রশ্ন তুলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন হবার দাবি তুলল। ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য ডগলাস দাসপ্রধান সমর্থনে সোচ্চার হলেন। লিঙ্কন তীব্র ভাষায় তার প্রতিবাদ জানালেন।

এইভাবে যৌবনের প্রতিদ্বন্দিতা আবার দেশের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আত্মপ্রকাশ করল। লিঙ্কন ও ডগলাসের বিতর্ক বাদানুবাদ দেশ জুড়ে আলোড়ন তুলল। কিন্তু দুজনেই সমান বাগী। তবে লিঙ্কনের বক্তব্যে থাকত নৈতিকতা, আদর্শবোধ ও দেশপ্রেম। যুক্তির সঙ্গে আবেগ। সহজেই তার বক্তব্য মানুষের হৃদয় স্পর্শ করত।

লিঙ্কন দক্ষিণাঞ্চলের দাবি নস্যাৎ করে ঘোষণা করলেন, আমেরিকা এক এবং ঐক্যবদ্ধ থাকবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।

এরপর রিপাবলিকান দলের হয়ে লিঙ্কন রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন প্রার্থী হলেন। আর ডেমোক্রেটিক দলের হয়ে প্রার্থী হলেন ডগলাস।

নির্বাচনে রাষ্ট্রের নেতৃত্বের দায়িত্ব জনগণ লিঙ্কনের হাতেই তুলে দিল। লিঙ্কন নির্বাচনে জিতলেন। ডগলাস হেরে গেলেন। লিঙ্কন হলেন আমেরিকার ১৬তম প্রেসিডেন্ট।

১৮৬১ খ্রি: লিঙ্কন সস্ত্রীক স্পিফিল্ড ছেড়ে ওয়াশিংটনে চলে এলেন। মার্চ মাসের ৪ তারিখে রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি শপথ নিলেন। সেদিনই তিনি ঘোষণা করলেন, দেশ থেকে দাস প্রথা উৎখাত করতে হবে। কিন্তু কোন অবস্থাতেই দেশ বিভক্ত হবে না।

দক্ষিনের রাষ্ট্রগুলোর টনক নড়ল। তারা বঝতে পারল এবারে দক্ষিণের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সাউথ ক্যারোলিনার নেতৃত্বে আলবামা, ফ্লোরিডা, মিসিসিপি, লুসিয়ানা, টেক্সাস ও জর্জিয়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা এক যুক্তরাষ্ট্র গঠিত হল। এই নবঘোষিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হলেন জেফারসন ডেভিস।

বাধ্য হয়েই দেশকে অখন্ডিত রাখার জন্য লিঙ্কন দক্ষিণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা। করলেন। শুরু হয়ে গেল আমেরিকায় রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ।

এই যুদ্ধের প্রথম লক্ষ ছিল ইউনিয়নের রক্ষা। দ্বিতীয় হল দাসপ্রথা উচ্ছেদ। কিছুদিন যুদ্ধ চলার পর রাজনৈতিক দলাদলির সৃষ্টি হয়ে গেল। চূড়ান্ত বেসামাল অবস্থার মধ্যেও দৃঢ় হাতে হাল ধরে রইলেন লিঙ্কন। তারপর ১৮৩৬ খ্রি: ১লা জানুয়ারী চূড়ান্তভাবে ক্রীতদাসদের মুক্তি ঘোষণা করে আইনত দাসপ্রথার অবসান ঘটালেন তিনি।

এরপর লিঙ্কন দেশের উত্তর অঞ্চলের সৈন্যবাহিনীর দায়িত্ব অর্পন করলেন গ্র্যান্ট নামে এক প্রাক্তন ক্যাপ্টেনের হাতে। গ্রান্টের লৌহকঠিন দৃঢ়তা ও সাহসিকতা মুগ্ধ করেছিল তাঁকে।

গ্র্যান্ট অল্প দিনের মধ্যেই ডোনেলসন দুর্গের অধিকার করায়ত্ত করে ঝটিকা আক্রমণে দক্ষিণের কয়েকটি শহর দখল করে নেন। অবশেষে দক্ষিণের দুর্ধর্ষ সেনাপতি লীকে পরাজিত করে একের পর এক শহর দখল করে নিলেন। লী পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিলেন রীচমন্ড শহরে।

আমেরিকার গৃহযুদ্ধ চলেছিল দীর্ঘ পাঁচ বছর। যুদ্ধ শেষ হলে লী আত্মসম্পণ করেন।

লিঙ্কন সেনাবাহিনীর সঙ্গে রীচমন্ডে এসেছিলেন। এখানে নিগ্রোদের সমাবেশে তিনি উদাত্ত কণ্ঠে ঘোষণা করলেন, “আমরা দুঃখী বন্ধুরা, তোমরা সকলে মুক্ত, বাতাসের মত মুক্ত। দাস’ এই নাম তোমাদের আর কখনো নিতে হবে না। স্বাধীনতা তোমাদের জন্মগত অধিকার।”

ওয়াশিংটনে ফিরে এলে শত শত মানুষ তাকে অভিনন্দন জানিয়ে সংবর্ধিত করল।

মানুষকে মানুষের জন্মগত অধিকার ফিরিয়ে দেবার দীর্ঘ দশ বছরের সংগ্রাম এভাবেই সম্পূর্ণ করে অবশেষে এক দক্ষিণী গুপ্তঘাতকের গুলিতে প্রাণ বিসর্জন দেন মানবতার অবিসংবাদিত পূজারী আব্রাহাম লিঙ্কন।

সকল অধ্যায়

১. ১. বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) (৫৭০-৬৩২ খ্রি:)
২. ২. হযরত ঈসা (খ্রীষ্ট পূর্ব ৬-৩০)
৩. ৩. হযরত মুসা (খ্রীষ্ট পূর্ব ত্রয়োদশ শতাব্দী)
৪. ৪. ইমাম আবু হানিফা (রঃ) (৭০২–৭৭২ খ্রি:)
৫. ৫. জাবির ইবনে হাইয়ান (৭২২-৮০৩ খ্রি:)
৬. ৬. ইমাম বোখারী (রঃ) (৮১০-৮৭০ খ্রি:)
৭. ৭. আল বাত্তানী (৮৫৮–৯২৯ খ্রি:)
৮. ৮. আল ফারাবী (৮৭০-৯৬৬ খ্রি:)
৯. ৯. মহাকবি ফেরদৌসী (৯৪১–১০২০ খ্রি:)
১০. ১০. আল বেরুনী (৯৭৩–১০৪৮ খ্রি:)
১১. ১১. ইবনে সিনা (৯৮০-১০৩৭ খ্রি:)
১২. ১২. ওমর খৈয়াম (১০৪৪-১১২৩ খ্রি:)
১৩. ১৩. ইমাম গাজ্জালী (রঃ) (১০৫৮–১১১১ খ্রি:)
১৪. ১৪. ইবনে রুশদ (১১২৬১১৯৯ খ্রি:)
১৫. ১৫. আল্লামা শেখ সা’দী (রঃ) (১১৭৫–১২৯৫ খ্রি:)
১৬. ১৬. মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমী (রঃ) (১২০৭-১২৭৩ খ্রি:)
১৭. ১৭. ইবনুন নাফিস (১২০৮-১২৮৮ খ্রি:)
১৮. ১৮. ইবনে খালদুন (১৩২২–১৪০৬ খ্রীঃ)
১৯. ১৯. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬ খ্রীঃ)
২০. ২০. মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক পাশা (১৮৮১-১৯৩৮)
২১. ২১. গৌতম বুদ্ধ (খ্রি: পূ: ৫৬৩ খ্রি: পূ: ৪৮৩)
২২. ২২. শ্রীরামকৃষ্ণ (১৮৩৩-১৮৮৬)
২৩. ২৩. শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩)
২৪. ২৪. স্বামী বিবেকানন্দ (১৮৬৩-১৯০২)
২৫. ২৫. যোহান উলফগ্যঙ ভন গ্যেটে (১৭৪৯–১৮৩২)
২৬. ২৬. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১-১৯৫৫)
২৭. ২৭. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২)
২৮. ২৮. ফিওদর মিখাইলভিচ দস্তয়ভস্কি (১৮২১-১৮৮১)
২৯. ২৯. আলেকজান্ডার দি গ্রেট (৩৫৬ খ্রিস্ট পূর্ব-৩২৩ খ্রিস্ট পূর্ব)
৩০. ৩০. লেনিন (১৮৭০-১৯২৪)
৩১. ৩১. মাও সে তুং (১৮৯৩-১৯৭৬)
৩২. ৩২. কনফুসিয়াস (খ্রি: পূর্ব ৫৫১ খ্রি: পূর্ব ৪৭৯)
৩৩. ৩৩. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২-১৯৭০)
৩৪. ৩৪. পাবলো পিকাসো (১৮৮১-১৯৭৩)
৩৫. ৩৫. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (১৪৫১-১৫০৬)
৩৬. ৩৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮)
৩৭. ৩৭. বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন (১৭০৬-১৭৯০)
৩৮. ৩৮. কার্ল মার্কস (১৮১৮-১৮৮৩)
৩৯. ৩৯. হ্যানিম্যান (১৭৫৫-১৮৪৩)
৪০. ৪০. ত্যাগরাজ (১৭৬৭–১৮৪৭)
৪১. ৪১. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১)
৪২. ৪২. ভাস্করাচার্য (১১১৪-১১৮৫)
৪৩. ৪৩. পার্সি বিশী শেলী (১৭৯২-১৮২২)
৪৪. ৪৪. জোহন কেপলার (১৫৭১-১৬৩০)
৪৫. ৪৫. জোহান্স গুটেনবার্গ (১৪০০–১৪৬৮)
৪৬. ৪৬ জুলিয়াস সিজার (খ্রি: পূ: ১০০খ্রি: পূ: ৪৪)
৪৭. ৪৭. গুলিয়েলমো মার্কোনি (১৮৭৪-১৯৩৭)
৪৮. ৪৮. রাণী এলিজাবেথ (১৫৩৩-১৬০৩)
৪৯. ৪৯. জোসেফ স্টালিন (১৮৮২-১৯৫৩)
৫০. ৫০. ফ্রান্সিস বেকন (খ্রি: ১৫৬১ খ্রি: ১৬২৬)
৫১. ৫১. জেমস ওয়াট (১৭৩৬-১৮১৯)
৫২. ৫২. চেঙ্গিস খান (১১৬২–১২২৭)
৫৩. ৫৩. এডলফ হিটলার (১৮৮৯-১৯৪৫)
৫৪. ৫৪. লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি (১৪৫২-১৫১৯)
৫৫. ৫৫. অশোক (আনুমানিক খ্রি: পূ: ৩০০–২৩২ খ্রি: পূর্ব)
৫৬. ৫৬. সিগমুন্ড ফ্রয়েড (১৮৫৬-১৯৩৯)
৫৭. ৫৭. আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল (১৮৪৭-১৯২২)
৫৮. ৫৮. যোহান সেবাস্তিয়ান বাখ (১৬৮৫–১৭৫০)
৫৯. ৫৯. জন. এফ. কেনেডি (১৯১৭-১৯৬৩)
৬০. ৬০. গ্যালিলিও গ্যালিলাই (১৫৬৪-১৬৪২)
৬১. ৬১. হো চি মিন (১৮৯০–১৯৬৯)
৬২. ৬২. মহাত্মা গান্ধীজী (১৮৬৯-১৯৪৮)
৬৩. ৬৩. লেভ তলস্তয় (১৮২৮–১৯১০)
৬৪. ৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১)
৬৫. ৬৫. হিপোক্রেটস (৪৬০-৩৭০)
৬৬. ৬৬. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৮–১৯৩৭)
৬৭. ৬৭. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯-১৯৫৫)
৬৮. ৬৮. উইলিয়ম শেকস্‌পীয়র (১৫৬৪-১৬১৬)
৬৯. ৬৯. জন মিলটন (১৬০৮–১৬৭৪)
৭০. ৭০. সক্রেটিস (৪৬৯-৩৯৯ খৃঃ পূ:)
৭১. ৭১. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২-১৭৯৯)
৭২. ৭২. উইলিয়াম হার্ভে (১৫৭৮-১৬৫৭)
৭৩. ৭৩. পিথাগোরাস (৫৮০–৫০০)
৭৪. ৭৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩)
৭৫. ৭৫. লুই পাস্তুর (১৮২২-১৮৯৫)
৭৬. ৭৬. নিকোলাস কোপার্নিকাস (১৪৭৩-১৫৪৩)
৭৭. ৭৭. এন্টনি লরেন্ট ল্যাভোশিঁয়ে (১৭৪৩-১৭৯৪)
৭৮. ৭৮. এডওয়ার্ড জেনার (১৭৪৯–১৮২৩)
৭৯. ৭৯. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০-১৯১০)
৮০. ৮০. হেনরিক ইবসেন (১৮২৮-১৯০৬)
৮১. ৮১. টমাস আলভা এডিসন (১৮৪৭-১৯৩১)
৮২. ৮২. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৬৫-১৯৫০)
৮৩. ৮৩. মার্টিন লুথার কিং (১৯২৯–১৯৬৮)
৮৪. ৮৪. সত্যজিৎ রায় (১৯২১-১৯৯২)
৮৫. ৮৫. রম্যাঁ রোলাঁ (১৮৬৬-১৯৪৪)
৮৬. ৮৬. পাবলো নেরুদা (১৯০৪–১৯৭৩)
৮৭. ৮৭. আর্কিমিডিস (২৮৭-২১২খৃ. অব্দ)
৮৮. ৮৮. অ্যারিস্টটল (৩৮৫-৩২২খৃ. পূ.)
৮৯. ৮৯. মেরি কুরি (১৮৬৭-১৯৩৪)
৯০. ৯০. জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল (১৮৩১-১৮৭৯)
৯১. ৯১. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২)
৯২. ৯২. উইলবার রাইট ও অরভিল রাইট (১৮৭১-১৯৪৮) (১৮৬৭-১৯১২)
৯৩. ৯৩. চার্লি চ্যাপলিন (১৮৮৯-১৯৭৭)
৯৪. ৯৪. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২-১৮৭০)
৯৫. ৯৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮-১৯৩২)
৯৬. ৯৬. আব্রাহাম লিঙ্কন (১৮০৯-১৮৬৫)
৯৭. ৯৭. জন কিটস (১৭৯৫-১৮২১)
৯৮. ৯৮. প্লেটো (খ্রীস্টপূর্ব ৩২৭-খ্রীস্টপূর্ব ৩৪)
৯৯. ৯৯. মাইকেলেঞ্জেলো (১৪৭৫-১৫৬৪)
১০০. ১০০. স্যার আইজ্যাক নিউটন (১৬৪২-১৭২৭)

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন