৬২. মহাত্মা গান্ধীজী (১৮৬৯-১৯৪৮)

মাইকেল এইচ. হার্ট

গুজরাটের পোরবন্দরে এক মধ্যবিত্তপরিবারে মহাত্মা গান্ধীর জন্ম (১৮৬৯ সালের ২ অক্টোবর)। বাবার নাম করমচাঁদ গান্ধী। তার কনিষ্ঠ পুত্র গান্ধী। তার নাম ছিল মোহনদাস। গুজরাটি প্রথা অনুসারে পুরো নাম হল মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। মায়ের নাম পুতলীবাঈ।

গান্ধী ছেলেবেলায় বাবা-মায়ের সাথে পোরবন্দরে ছিলেন। সেখানকার স্থানীয় পাঠশালায় তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়। যখন তার সাত বছর বয়েস, বাবা রাজকোটের বিচারপতি হয়ে গেলেন। প্রথমে রাজকোটের এক পাঠশালায় এবং পরে হাই স্কুলে ভর্তি হলেন।

মাত্র তেরো বছর বয়েসে গান্ধীর বিবাহ হয়। গান্ধীর কাছে সেই সময় স্ত্রী কস্তুরীরাঈ বা করা ছিলেন এক খেলার সাথী। কস্তুরীরা ছিলেন সম্পূর্ণ নিরক্ষর, গান্ধীর আন্তরিক চেষ্টায় সামান্য পড়াশুনা শিখেছিলেন।

বিবাহের তিন বৎসরের মধ্যেই গান্ধীজির পিতা মারা গেলেন। ১৮৮৭ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে স্থানীয় কলেজে ভর্তি হলেন। এই সময় তাঁর বিলাতে গিয়ে ব্যারিস্টারি পড়বার ইচ্ছা প্রবল হয়ে ওঠে।

গান্ধীর পরিবারের সকলেই ছিলেন নিরামিষভোজী এবং রক্ষণশীল মনোভাবের। ছেলে বিলাতে গিয়ে বংশের নিয়ম-কানুন সম্পূর্ণভাবে ভুলে যাবে এই আশঙ্কায় কেউই তাঁকে প্রথমে যাবার অনুমতি দিতে চায় না। শেষ পর্যন্ত গান্ধীর বড় ভাই তাকে বিলাতে গিয়ে ব্যারিস্টারি পড়বার অনুমতি দিলেন। ১৮৮৮ সালে তিনি ইংল্যান্ডের পথে রওনা হলেন।

অল্পদিনের মধ্যেই তিনি নিজের অভ্যস্ত জীবন শুরু করলেন।

১৮৯১ সালে গান্ধী ব্যারিস্টারি পাস করে ভারতে ফিরে এলেন। কয়েক মাস পরিবারের সকলের সাথে রাজকোটে থাকার পর বোম্বাই গেলেন। উদ্দেশ্য ব্যারিস্টারি করা। কিন্তু চার মাসের মধ্যে অর্থ উপার্জনে তেমন কোন সুবিধা করতে পারলেন না।

এই সময় দক্ষিণ আফ্রিকার আবদুল্লা কোম্পানির একটি মামলা পরিচালনা করার ব্যাপারে গান্ধীর ভাইয়ের কাছে সংবাদ পাঠালেন, তবে তার সমস্ত খরচ ছাড়াও মাসে একশো পাঁচ পাউন্ড দেবেন। গান্ধী এই প্রস্তাব মেনে নিলেন এবং ১৮৯৩ সালের এপ্রিল মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার পথে রওনা হলেন।

এই সময় দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার একটি ঘোষণায় ভারতীয়দের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করবার হুকুম জারি করে। এই অবিচারের বিরুদ্ধে গান্ধী তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তিনি স্থির করলেন এই অন্যায় আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করবেন।

গান্ধীর এই আন্দোলন সাধারণ ভারতীয়দের মধ্যে অভূতপূর্ব উদ্দীপনার সৃষ্টি করল এবং প্রায় দশ হাজার ভারতীয়ের স্বাক্ষর দেওয়ার এক দরখাস্ত উপনিবেশ মন্ত্রী লর্ড রিপনের কাছে পাঠানো হল।

মূলত তাঁরই চেষ্টায় ১৮৯৪ সালের ২২শে মে জন্ম হল নাটাল ভারতীয় কংগ্রেসের। গান্ধী হলেন তার প্রথম সম্পাদক।

এর পর তিনি কয়েক মাসের জন্য ভারতবর্ষে ফিরে এসে নিজের পরিবারের লোকজনকে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার রওনা হলেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রান্সভাল ও অরেঞ্জিয়া প্রদেশে বুয়র সম্প্রদায়ের প্রভুত্ব ছিল। এই বুয়রদের সাথে সোনার খনির কর্তৃত্ব নিয়ে ১৮৯৯ সালে ইংরেজদের যুদ্ধ হল। গান্ধী বুয়রদের সমর্থন না করে রাজভক্ত প্রজা হিসাবে ইংরেজদের সেবা করবার জন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী তৈরি করলেন। এই বাহিনী আহত ইংরেজ সৈন্যদের সেবা করে যথেষ্ট প্রশংসা অর্জন করেছিল।

এই যুদ্ধের পরবর্তীকাল থেকে গান্ধীর জীবনে এক পরিবর্তন দেখা দিল। তিনি সরল সাদাসিদা জীবন যাপন করতে আরম্ভ করলেন।

১৯০৬ সালে ট্রান্সলে এক অর্ডিনান্স জারি করে আট বছরের উপরে সব ভারতীয় নারী-পুরুষকে নাম রেজিস্ট্রী করার আদেশ দেওয়া হয় এবং সকলকে দশ আঙুলের ছাপ দিতে হবে বলে নতুন আইনে ঘোষণা করা হয়।

এত গান্ধী তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ করেন। এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিকার করার জন্য ভারতীয়দের ঐক্যবদ্ধ করে প্রথম সত্যাগ্রহ আন্দোলন আরম্ভ করেন। গান্ধী আরো বহু ভারতীয়দের সাথে বন্দী হলেন। বিচারে তার দু মাস কারাদণ্ড হল। এই প্রথম কারাবরণ করলেন গান্ধী।

১৫ দিন পর সরকার কিছুটা নরম হলেন। গান্ধীর সাথে চুক্তি হল যে ভারতীয়রা যদি স্বেচ্ছায় নাম রেজিস্ট্রি করে তবে এই আইন তুলে নেওয়া হবে। অনেক সম্প্রদায় এই আইন মেনে নিলেও পাঠানেরা তা মেনে নিল না, তাদের ধারণা হল গান্ধীজি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।

গান্ধীর আন্তরিক চেষ্টা সত্ত্বেও ইংরেজরা তার কোন দাবি মেনে নেয় না। সত্যাগ্রহ আন্দোলন ক্রমশই বেড়ে চলে। গান্ধী সত্যাগ্রহ আশ্রম প্রতিষ্ঠা করলেন।

গান্ধী দক্ষিণ আফ্রিকার আন্দোলনের ভার অন্যদের হাতে তুলে দিয়ে প্রথমে ইংল্যান্ডে যান কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ায় ভারতে ফিরে এলেন। ১৯১৫ সালে আহমেদাবাদের কাছে কোচরার নামে এক জায়গায় সত্যাগ্রহ আশ্রম প্রতিষ্ঠিত করলেন।

সে সময় ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণে শ্রমিক দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠানো হত। এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবারে সোচ্চার হয়ে উঠলেন গান্ধী। কিছুদিনের মধ্যেই এই আন্দোলন প্রবল আকার ধারণ করল। এর ফলশ্রুতিতে ১৯১৭ সালের ৩১শে জুলাই ভারত থেকে শ্রমিক পাঠানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল।

১৯১৮ সাল, ইউরোপের বুকে তখন চলেছে বিশ্বযুদ্ধ। ইংরেজরাও এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। বড়লাট লর্ড চেমসফোর্ড দিল্লীতে গান্ধীকে ডেকে পাঠালেন। তিনি এই যুদ্ধে ভারতীয়দের ইংরেজ পক্ষ সমর্থনের জন্য অনুরোধ করলেন।

গান্ধীর ধারণা হয়েছিল ভারতবাসী যদি ইংরেজদের সাহায্য করে। অচিরে সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছিল। ইংরেজদের প্রতি তাঁর এক মোহ ছিল যা থেকে তিনি কোনদিনই মুক্ত হতে পরেননি।

যুদ্ধের পর সকলেই আশা করেছিল ভারতবাসী স্বায়ত্তশাসন পাবে। কিন্তু তার পরিবর্তে বড়লাট রাউলাট আইন নামে এক দমনমূলক আইন পাস করলেন। এতে বলা হল কেউ সামান্যতম সরকারি-বিরোধী কাজকর্ম করলে তাকে বিনা বিচারের বন্দী করা হবে।

১৩ এপ্রিল রামনবমীর মেলা উপলক্ষে জালিয়ানওয়ালাবাগ নামে এক জায়গায় কয়েক হাজার মানুষ জড় হল। জায়গাটার চারদিকে উঁচু পাঁচিল বার হবার একটি মাত্র পথ। ডায়ারের নির্দেশ সেই নিরীহ জনগণের উপর নির্মম ভাবে গুলি চালান হল। কয়েক হাজার মানুষ হতাহত হল।

এই ঘটনায় সমস্ত দেশ ক্ষোভে বিক্ষোভে ফেটে পড়ল। বহু জায়গায় হিংসাত্মক আন্দোলন শুরু হল। গান্ধীর সত্যাগ্রহ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হল। তিনি নিজেই তার ভুল স্বীকার করলেন।

নাগপুরে কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনে (১৯২০) গান্ধীজির অসহযোগ আন্দেলনের প্রস্তাব সমর্থিত হল।

গান্ধী ইংরেজ সরকারের সাথে সহযোগিতা করতে নিষেধ করলেন। তিনি বললেন, সব সরকারী স্কুল-কলেজ, আইন-আদালতের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। ব্যবস্থাপক সভা বর্জন করতে হবে। বিদেশী দ্রব্য বর্জন করতে হবে। স্বাবলম্বী হওয়ার জন্যে চরকা ও তাত প্রচলন করতে হবে।

গান্ধীর এই ডাকে দেশ জুড়ে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া গেল। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদেশী বস্ত্র পোড়ানো শুরু হল। লোকে চরকায় বোনা কাপড় পরতে আরম্ভ করল।

১৯২২ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি উত্তর প্রদেশের চৌরিচৌরা নামক স্থানে উত্তেজিত জনতা কিছু পুলিশকে হত্যা করল। এর প্রতিবাদে তিনি আন্দোলন বন্ধ করে দিলেন। গান্ধীকে গ্রেফতার করা হল। দেশব্যাপী আন্দোলনের দায় গান্ধীজি নিজেই স্বীকার করে নিলেন। বিচারে তার ছয় বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হল।

জেলে তিনি চরকা কাটতে চাইলেন। কিন্তু তাকে সে অনুমতি দেওয়া হল না। তিনি উপবাস শুরু করলেন। শেষ পর্যন্ত তাঁর সব দাবি মেনে নেওয়া হল। কিন্তু কিছুদিন পূর্বেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এই অসুস্থতার জন্যেই তাকে ১৯২৪ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি মুক্তি দেওয়া হল।

১৯২৫, ২৬,২৭ সালে গান্ধীজি কংগ্রেসের অধিবেশনে উপস্থিত থাকলেও তাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেননি। সুভাষচন্দ্র ও জহরলাল পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি তুলে একটি প্রস্তাব আনতে চান। এতে গান্ধীজি ক্ষুব্ধ হন। তিনি চেয়েছিলেন আপোষ আলোচনায় মাধ্যমে স্বায়ত্ত শাসন।

তখন নিয়ম ছিল ভারতবাসী লবণ তৈরি করতে পারবে না। এমনকি যারা সমুদ্রের ধারে থাকে তারাও লবণ প্রস্তুত করতে পারবে না। সকলকেই ব্রিটিশ সরকারের লবণ কিনতে হবে।

অল্পদিনের মধ্যেই সমগ্র ভারত জুড়ে শুরু হল লবণ আইন অমান্য আন্দোলন। গ্রাম-শহরে মানুষ লবণ তৈরি করতে আরম্ভ করল। হাজার হাজার মানুষকে বন্দী করা হল। দেশ জুড়ে সাধারণ মানুষের উপর শুরু হল অকথ্য অত্যাচার। সেই সময় কম বেশি প্রায় এক লক্ষ সত্যাগ্রহী কারারুদ্ধ হল। বাধ্য হয়ে লর্ড ডারউইন গান্ধীর সাথে বৈঠকে বসলেন এবং তাদের মধ্যে চুক্তি হল সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলের মানুষ লবণ তৈরি করতে এবং বিক্রি করতে পারবে এবং দেশের সমস্ত রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার জন্যে গান্ধীকে আমন্ত্রণ জানানো হল।

১৯৩১ সালের ১৫ই আগস্ট তিনি বিলাতযাত্রা করলেন। ইংল্যান্ডে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী, সম্রাট পঞ্চম জর্জ ও সম্রাজ্ঞীর সাথে আলোচনা করলেন। পরনে অর্ধনগ ফকিরের পোশাক। সেই সময় ইংল্যান্ডের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিরা তার সাথে সাক্ষাৎ করতে আসতেন এদের মধ্যে ছিলেন জর্জনার্ড শ, চার্লি চ্যাপলিন, হারল্ড ল্যাস্কি। কিন্তু সমস্ত আলাপ আলোচনা ব্যর্থ হল।

গান্ধী যখন দেশে ফিরলেন, দেশ জুড়ে তখন চলেছে নির্যাতন আর নিপীড়ন। নেতৃস্থানীয় সকলেই বন্দী। গান্ধীকেও বন্দী করা হল।

গান্ধী বুঝতে পারছিলেন কংগ্রেসের অধিকাংশ সদস্য তাকে শ্রদ্ধা করলেও তার নীতি আদর্শ মেনে চলে না, সূতা কাটে না, সত্যাগ্রহের আদর্শ অনুসরণ করে চলে না। তাই তিনি কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করলেন।

১৯৪০ সালে গান্ধীজি শান্তিনিতনের এলেন। কবিগুরুর সাথে ছিল তার মধুর এবং আন্তরিক সম্পর্ক। শান্তিনিকেতনের কাজে গান্ধী নানাভাবে রবীন্দ্রনাথকে সাহায্য করেছেন।

এই বছরেই রামগড়ে কংগ্রেস অধিবেশন বসল। মৌলানা আবুল কালাম আজাদ সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হলেন। এই অধিবেশনে ঘোষণা কর হল একমাত্র পূর্ণ স্বাধীনতাই ভারতের কাম্য। গান্ধীকে পুনরায় দলের নেতা হিসাবে নির্বাচিত করা হল। শুরু হল সত্যাগ্রহ আন্দোলন।

৯ই আগস্ট ১৯৪২ সালে বোম্বাইতে নিখিল ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতির সভায় ভারত ছাড়ো প্রস্তাব গৃহীত হল। সাথে সাথে কংগ্রেসের সমস্ত নেতাকে গ্রেফতার করা হল। গান্ধী, সরোজিনী নাইডু, মহাদেব দেশাই, মীরাবেনকে বন্দী করে আগা খা প্রাসাদে রাখা হল।

সমস্ত ভারতবর্ষ উত্তাল হয়ে উঠল। শুরু হল গণবিক্ষোভ। পুলিশের হাতে প্রায় ১০০০ লোক মারা পড়ল।

গান্ধীর শরীরের অবস্থাও ক্রমশই খারাপের দিকে যেতে থাকে। ইংরেজ সরকার অনুভব করতে পারল কারাগারের গান্ধীর কোন ক্ষতি হলে সমস্ত বিশ্বের কাছে তাদের কৈফিয়ৎ দিতে হবে তাই বিনা শর্তে গান্ধীকে মুক্তি দেওয়া হল।

১৯৪৫ সালে বিশ্বযুদ্ধ শেষ হল ইংল্যান্ডে সাধারণ নির্বাচনে শ্রমিকদল জয়ী হল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ইংল্যান্ডকে এতখানি বিপর্যস্ত করে দিয়েছিল তারা উপলব্ধি করতে পারছিল ভারতের স্বাধীনতার দাবিকে ঠেকিয়ে রাখা সম্ভবপর নয়।

এদিকে দেশের মধ্যে হিন্দু-মুসলমানদের বিভেদ ক্রমশই প্রবল আকার ধারণ করতে থাকে। শুরু হল ভয়াবহ দাঙ্গা।

পরস্পরিক এই দাঙ্গাবিভেদে গান্ধী গভীর দুঃখিত হয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন হিন্দু-মুসলমানের ঐক্য, পরস্পরের প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষ নয়। কিন্তু তিনি বেদনাহত হলেন। দেশ বিভাগের মধ্যে দিয়ে ভারতবর্ষ স্বাধীনতা অর্জন করল।

দিল্লীতেও তখন নানান সমস্যা। একদিকে দাঙ্গাপীড়িত মানুষ, মন্ত্রিসভায় মতানৈক্য, খাদ্য-বস্ত্রের সমস্যা। দিল্লীতে মুসলমানদের নিরাপত্তার জন্য তিনি অনশন করলেন এবং এই তাঁর শেষ অনশন। সম্মিলিত সকলের অনুরোধে ১৮ই জানুয়ারি অনশন ভঙ্গ করলেন।

এই সময় গান্ধী নিয়মিত প্রার্থনাসভায় যোগ দিতেন। ৩০শে জানুয়ারি তিনি প্রার্থনাসভায় যোগ দিতে চলেছেন এমন সময় ভিড় ঠেলে তার সামনে এগিয়ে এল এক যুবক। সকলের মনে হল সে বোধ হয় গান্ধীকে প্রণাম করবে। কিন্তু কাছে এসেই সে সামনে ঝুঁকে পড়ে পর পর তিনবার পিস্তলের গুলি চালাল। দুটি গুলি পেটে, একটি বুকে বিধল। সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন গান্ধী। তার মুখ থেকে শুধু দুটি শব্দ বার হল “হে রাম”। তারপরই সব নিস্তব্ধ হয়ে গেল।

সমস্ত দেশ শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়ল। পরদিন যমুনার তীরে চিতার আগুনে তার পার্থিব দেহ ভস্মীভূত হয়ে গেল। দেশ-বিদেশ থেকে মানুষেরা শ্রদ্ধঞ্জলী পাঠালেন। তাদের মধ্যে ছিলেন দেশবরেণ্য মানুষেরা। তাদের সকলের কাছে গান্ধী ছিলেন বিপন্ন মানব সভ্যতার সামনের একমাত্র আশার আলো।

সকল অধ্যায়

১. ১. বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) (৫৭০-৬৩২ খ্রি:)
২. ২. হযরত ঈসা (খ্রীষ্ট পূর্ব ৬-৩০)
৩. ৩. হযরত মুসা (খ্রীষ্ট পূর্ব ত্রয়োদশ শতাব্দী)
৪. ৪. ইমাম আবু হানিফা (রঃ) (৭০২–৭৭২ খ্রি:)
৫. ৫. জাবির ইবনে হাইয়ান (৭২২-৮০৩ খ্রি:)
৬. ৬. ইমাম বোখারী (রঃ) (৮১০-৮৭০ খ্রি:)
৭. ৭. আল বাত্তানী (৮৫৮–৯২৯ খ্রি:)
৮. ৮. আল ফারাবী (৮৭০-৯৬৬ খ্রি:)
৯. ৯. মহাকবি ফেরদৌসী (৯৪১–১০২০ খ্রি:)
১০. ১০. আল বেরুনী (৯৭৩–১০৪৮ খ্রি:)
১১. ১১. ইবনে সিনা (৯৮০-১০৩৭ খ্রি:)
১২. ১২. ওমর খৈয়াম (১০৪৪-১১২৩ খ্রি:)
১৩. ১৩. ইমাম গাজ্জালী (রঃ) (১০৫৮–১১১১ খ্রি:)
১৪. ১৪. ইবনে রুশদ (১১২৬১১৯৯ খ্রি:)
১৫. ১৫. আল্লামা শেখ সা’দী (রঃ) (১১৭৫–১২৯৫ খ্রি:)
১৬. ১৬. মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমী (রঃ) (১২০৭-১২৭৩ খ্রি:)
১৭. ১৭. ইবনুন নাফিস (১২০৮-১২৮৮ খ্রি:)
১৮. ১৮. ইবনে খালদুন (১৩২২–১৪০৬ খ্রীঃ)
১৯. ১৯. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬ খ্রীঃ)
২০. ২০. মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক পাশা (১৮৮১-১৯৩৮)
২১. ২১. গৌতম বুদ্ধ (খ্রি: পূ: ৫৬৩ খ্রি: পূ: ৪৮৩)
২২. ২২. শ্রীরামকৃষ্ণ (১৮৩৩-১৮৮৬)
২৩. ২৩. শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩)
২৪. ২৪. স্বামী বিবেকানন্দ (১৮৬৩-১৯০২)
২৫. ২৫. যোহান উলফগ্যঙ ভন গ্যেটে (১৭৪৯–১৮৩২)
২৬. ২৬. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১-১৯৫৫)
২৭. ২৭. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২)
২৮. ২৮. ফিওদর মিখাইলভিচ দস্তয়ভস্কি (১৮২১-১৮৮১)
২৯. ২৯. আলেকজান্ডার দি গ্রেট (৩৫৬ খ্রিস্ট পূর্ব-৩২৩ খ্রিস্ট পূর্ব)
৩০. ৩০. লেনিন (১৮৭০-১৯২৪)
৩১. ৩১. মাও সে তুং (১৮৯৩-১৯৭৬)
৩২. ৩২. কনফুসিয়াস (খ্রি: পূর্ব ৫৫১ খ্রি: পূর্ব ৪৭৯)
৩৩. ৩৩. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২-১৯৭০)
৩৪. ৩৪. পাবলো পিকাসো (১৮৮১-১৯৭৩)
৩৫. ৩৫. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (১৪৫১-১৫০৬)
৩৬. ৩৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮)
৩৭. ৩৭. বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন (১৭০৬-১৭৯০)
৩৮. ৩৮. কার্ল মার্কস (১৮১৮-১৮৮৩)
৩৯. ৩৯. হ্যানিম্যান (১৭৫৫-১৮৪৩)
৪০. ৪০. ত্যাগরাজ (১৭৬৭–১৮৪৭)
৪১. ৪১. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১)
৪২. ৪২. ভাস্করাচার্য (১১১৪-১১৮৫)
৪৩. ৪৩. পার্সি বিশী শেলী (১৭৯২-১৮২২)
৪৪. ৪৪. জোহন কেপলার (১৫৭১-১৬৩০)
৪৫. ৪৫. জোহান্স গুটেনবার্গ (১৪০০–১৪৬৮)
৪৬. ৪৬ জুলিয়াস সিজার (খ্রি: পূ: ১০০খ্রি: পূ: ৪৪)
৪৭. ৪৭. গুলিয়েলমো মার্কোনি (১৮৭৪-১৯৩৭)
৪৮. ৪৮. রাণী এলিজাবেথ (১৫৩৩-১৬০৩)
৪৯. ৪৯. জোসেফ স্টালিন (১৮৮২-১৯৫৩)
৫০. ৫০. ফ্রান্সিস বেকন (খ্রি: ১৫৬১ খ্রি: ১৬২৬)
৫১. ৫১. জেমস ওয়াট (১৭৩৬-১৮১৯)
৫২. ৫২. চেঙ্গিস খান (১১৬২–১২২৭)
৫৩. ৫৩. এডলফ হিটলার (১৮৮৯-১৯৪৫)
৫৪. ৫৪. লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি (১৪৫২-১৫১৯)
৫৫. ৫৫. অশোক (আনুমানিক খ্রি: পূ: ৩০০–২৩২ খ্রি: পূর্ব)
৫৬. ৫৬. সিগমুন্ড ফ্রয়েড (১৮৫৬-১৯৩৯)
৫৭. ৫৭. আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল (১৮৪৭-১৯২২)
৫৮. ৫৮. যোহান সেবাস্তিয়ান বাখ (১৬৮৫–১৭৫০)
৫৯. ৫৯. জন. এফ. কেনেডি (১৯১৭-১৯৬৩)
৬০. ৬০. গ্যালিলিও গ্যালিলাই (১৫৬৪-১৬৪২)
৬১. ৬১. হো চি মিন (১৮৯০–১৯৬৯)
৬২. ৬২. মহাত্মা গান্ধীজী (১৮৬৯-১৯৪৮)
৬৩. ৬৩. লেভ তলস্তয় (১৮২৮–১৯১০)
৬৪. ৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১)
৬৫. ৬৫. হিপোক্রেটস (৪৬০-৩৭০)
৬৬. ৬৬. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৮–১৯৩৭)
৬৭. ৬৭. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯-১৯৫৫)
৬৮. ৬৮. উইলিয়ম শেকস্‌পীয়র (১৫৬৪-১৬১৬)
৬৯. ৬৯. জন মিলটন (১৬০৮–১৬৭৪)
৭০. ৭০. সক্রেটিস (৪৬৯-৩৯৯ খৃঃ পূ:)
৭১. ৭১. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২-১৭৯৯)
৭২. ৭২. উইলিয়াম হার্ভে (১৫৭৮-১৬৫৭)
৭৩. ৭৩. পিথাগোরাস (৫৮০–৫০০)
৭৪. ৭৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩)
৭৫. ৭৫. লুই পাস্তুর (১৮২২-১৮৯৫)
৭৬. ৭৬. নিকোলাস কোপার্নিকাস (১৪৭৩-১৫৪৩)
৭৭. ৭৭. এন্টনি লরেন্ট ল্যাভোশিঁয়ে (১৭৪৩-১৭৯৪)
৭৮. ৭৮. এডওয়ার্ড জেনার (১৭৪৯–১৮২৩)
৭৯. ৭৯. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০-১৯১০)
৮০. ৮০. হেনরিক ইবসেন (১৮২৮-১৯০৬)
৮১. ৮১. টমাস আলভা এডিসন (১৮৪৭-১৯৩১)
৮২. ৮২. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৬৫-১৯৫০)
৮৩. ৮৩. মার্টিন লুথার কিং (১৯২৯–১৯৬৮)
৮৪. ৮৪. সত্যজিৎ রায় (১৯২১-১৯৯২)
৮৫. ৮৫. রম্যাঁ রোলাঁ (১৮৬৬-১৯৪৪)
৮৬. ৮৬. পাবলো নেরুদা (১৯০৪–১৯৭৩)
৮৭. ৮৭. আর্কিমিডিস (২৮৭-২১২খৃ. অব্দ)
৮৮. ৮৮. অ্যারিস্টটল (৩৮৫-৩২২খৃ. পূ.)
৮৯. ৮৯. মেরি কুরি (১৮৬৭-১৯৩৪)
৯০. ৯০. জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল (১৮৩১-১৮৭৯)
৯১. ৯১. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২)
৯২. ৯২. উইলবার রাইট ও অরভিল রাইট (১৮৭১-১৯৪৮) (১৮৬৭-১৯১২)
৯৩. ৯৩. চার্লি চ্যাপলিন (১৮৮৯-১৯৭৭)
৯৪. ৯৪. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২-১৮৭০)
৯৫. ৯৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮-১৯৩২)
৯৬. ৯৬. আব্রাহাম লিঙ্কন (১৮০৯-১৮৬৫)
৯৭. ৯৭. জন কিটস (১৭৯৫-১৮২১)
৯৮. ৯৮. প্লেটো (খ্রীস্টপূর্ব ৩২৭-খ্রীস্টপূর্ব ৩৪)
৯৯. ৯৯. মাইকেলেঞ্জেলো (১৪৭৫-১৫৬৪)
১০০. ১০০. স্যার আইজ্যাক নিউটন (১৬৪২-১৭২৭)

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন