৪৯. জোসেফ স্টালিন (১৮৮২-১৯৫৩)

মাইকেল এইচ. হার্ট

রুশ বিপ্লবের পুরোধা পুরুষ ভি. আই লেনিনের পর রুশ বিপ্লবের ইতিহাসে বিশেষ করে প্রথম মহাযুদ্ধোত্তর সোভিয়েট রাশিয়ায় সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যিনি তিনি জোসেফ স্টালিন। লেনিনের প্রধান শিষ্যদের মধ্যে যিনি সর্বাপেক্ষা অধিক খ্যাত তাদের মধ্যেও জোসেফ স্টালিন প্রধান পুরুষ। লেলিনের মন্ত্র শিষ্য বিশ্ববিপ্লবের প্রধান প্রবক্তা ট্রটস্কি আভিজাত্যে, শিক্ষায়, জ্ঞান গরিমায় এবং বাগীতায় হয়ত স্টালিন থেকেও অধিক খ্যাত ছিলেন, পরিচিত ছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও রুশ বিপ্লবের পর সোভিয়েট শাসনকে সমগ্র রাশিয়ায় এবং জারের সাম্রাজ্যের নানা প্রান্তে সুদৃঢ় করণে যিনি লেনিনের প্রধান সহযোগী হিসাবে সফল ভূমিকা পালন করেছেন তিনি জোসেফ স্টালিন।

মার্কসবাদের ও সাম্যবাদের সফল প্রসার ত্বরান্বিত করতে যে দুটি ব্যক্তিত্ব সর্বাপেক্ষা অধিক ক্রিয়াশীল তা লেনিন ও স্টালিন। লেনিনের সহযোগী ট্রটস্কি সাহেব রুশ বিপ্লবে অসাধারণ ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু লেনিনের স্বল্পকালীন জীবনের সায়াহ্ন বেলায় দেখা যায় যে সারা সোভিয়েট রাশিয়ায় রুশ কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ কর্মী ও কৃষক মজদূর সাধারণ মানুষের কাছে স্টালিন, লেনিনের জীবদ্বশায় যথেষ্ট ক্ষমতা অর্জন করেন, বিশেষ করে বিশ্ববিপ্লবের প্রধান পুরোহিত ট্রটস্কি, মার্কসবাদের আন্তর্জাতিকতা নিয়ে যতই বেশি মাথা ঘামিয়েছেন স্টালিন ততই বাস্তববাদী রুশ পার্টির কাছে, কাছের মনুষ হয়েছেন।

লেনিনের মৃত্যুর অব্যবহিত পূর্ব থেকেই স্টালিন তার অন্যান্য প্রতিদ্বন্দী কমিউনিস্ট নেতা, ট্রটস্কি, জেনেভিউ, কামেনেঠ, বুখারিন এদের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী নেতা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।

অনেকের মতে লেনিন মৃত্যুর পূর্বেই বুঝতে পেরেছিলেন যে সোভিয়েট শাসন ব্যবস্থায় তার মৃত্যুর পরই এক বিভীষণ মহানায়কের উত্থান ঘটবে যিনি কমিউনিষ্ট বিপ্লবের গণতান্ত্রিক চরিত্রে একধরনের একনায়কত্বের আবহ সৃষ্টি করবেন। কমিউনিস্ট আন্দোলনে ও জীবনদর্শনে আপোষহীন সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা আছে। ফলে পার্টিতে তথা সোভিয়েট দেশে আস্তে আস্তে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হতে থাকে ক্রেমলিনে এবং সেখানকার অধিশ্বর মহাশক্তিধর মহাবিপ্লবী স্টালিনের হাতে। প্রতিক্রিয়াশীল চক্রান্তের সমূলে নির্মূলকরণের স্টালিনীয় অভিযানে হাজার হাজার বিশ্বস্ত, সৰ্ব্বত্যাগী আদর্শবাদী কমিউনিস্ট পার্টি সদস্যের নিধন ঘটে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পূর্বে রুশ সামরিক বাহিনীতেও যে পার্জ বা ঝারাই বাছাই অভিযান চলে তাতে রুশ সামরিক বাহিনীর প্রধান প্রায় সকল সামরিক নেতাই পদচ্যুত বা নিহত হয়। ফলে স্টালিনের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দখলে সেনাবাহিতেও কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায় নি। কারণ যদিও রুশ বিপ্লবের প্রধান হোতা লেনিন ও ট্রটস্কি রেড আর্মিকে বিপ্লবী চেতনায় ও উন্মাদনায় মাতিয়ে রেখেছিলেন কিন্তু তা সত্ত্বেও স্টালিন তার ক্ষুরধার বুদ্ধি দ্বারা, কঠোর নিষ্ঠাপরায়ণ পার্টি নেতা হিসাবে নিজেকে সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন। লেনিন, স্টালিনের কঠোর স্বভাব, নিষ্ঠুরতা ও একগুয়েমি বিষয়ে অবহিত হলেও তার সাংগঠনিক ক্ষমতাও নিরন্তর কর্ম প্রবাহে লিপ্ত থাকার প্রচেষ্টা স্টালিনকে কমিউনিষ্ট বিপ্লবীদের কাছের মানুষ করে তুলে।

ফলে ক্যামনেভ, বুখারিন, ট্রটস্কি প্রভৃতি নিতাগণ স্টালিন থেকে তাত্ত্বিক আলোচনায়, আগীতায়, রাজনৈতিক সততায় যতই শ্রেয় হন না নে, স্টালিন বাস্তববাদী, জাতীয়তাবাদী পথ অবলম্বন করে মার্কসিয় কমিউনিষ্ট তত্বকে এক নতুন পথে প্রবাহিত করেন। বিশ্ববিপ্লব আগে, না রুশ দেশে রাজনৈতিক বিপ্লব তথা ক্ষমতা সংহত করা আগে, এই প্রশ্নে স্টালিন সাধারণ কৃষক, শ্রমিকদের কাছে বাস্তববাদী রাজনৈতিক চিন্তার প্রমাণ রাখেন। ফলে বড় বড় মার্কসবাদী নেতাকে তিনি পেছনে ফেলে কমিউনিষ্ট পার্টির নেতৃত্বে সর্বময় কৰ্ত্তা হয়ে উঠেন। স্টালিন মূলত রুশ জনগণের কাছের মানুষ। শিক্ষায় দীক্ষায়, আভিজাত্যে, তিনি অতি সাধারণ একজন চর্মকারের সন্তান। মা চেয়েছিলেন ছেলে একজন ভাল ধর্মযাজক হবেন। কিন্তু কৈশোরের কিশোলয় পার না হতেই, স্টালিন দীক্ষা নিলেন বিপ্লবী দলে।

স্টালিন কথার অর্থ লৌহমানব। অর্থাৎ লেনিনের মৃত্যুর পর সোভিয়েট লৌহমানব। অর্থাৎ লেনিনের মৃত্যুর পর সোভিয়েট দেশে যে লৌহ যবনিকার বাতাবরণ রুশ জীবনকে আচ্ছন্ন করে তা লেনিনের নামকরণের সার্থকতায় আভাষিক। স্টালিন জন্মেছেন ককেসাশ পার্বত্য অঞ্চলের অন্যতম রাজ্য জর্জিয়ায়। জর্জিয়ায় ক্ষুদ্র গোরী শহরে এক সাধারণ সার্ফ অর্থাৎ দাসচাষী পরিবারের চর্মকারের পুত্র। জর্জিয়ান মায়ের নাম একাতেরিয়া। জন্মলগ্ন থেকে জোসেকের শরীর মজবুত ছিল। বাল্যে বসন্ত রোগে আক্রান্ত হয়েও জোসেফ জীবনী শক্তিতে স্বাস্থ্যজ্জ্বোল ছিল। জোসেফের পিতা বিসসারিক্ত রাগী, মাতাল প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। ফলে দশ বৎসর বয়সে পিতৃহারা জোসেফ স্টালিন মায়ের ও অনাদারে বেড়ে ওঠেন। বহু সফল মহানায়কের ন্যায় জোসেফ স্টালিন তাঁর মায়ের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন আবাল্য। ব্যক্তিগতভাবে বাল্যকাল থেকে কঠোর মাতৃশাসনে ও অনুশাসনে পাদ্রী না হয়ে বিপ্লবী হলেন। জোসেফের ছেলেকে জার্জিয়ার রাজধানী টিলিসের সেরা বিদ্যালয়ে পড়তে পাঠান। চরিত্র গঠন থেকে পঠন পাঠন সকল বিষয়েই বাল্যে মার প্রভাবে জোসেফ একটু ভিন্ন ধাতুতে গড়ে উঠতে থাকে। ফলে মার স্নেহচ্ছায়া থেকে মুক্ত হয়ে যখন জোসেফ বিপ্লবী দলে সর্বক্ষণের কর্মী হলে তখন তিনি পুরোহিতের নিষ্ঠায় তার বিপ্লবী কর্ম পরিচালনা করতে থাকেন।

জোসেফ স্টানিল পরবর্তীকালে যে লেনিনের দ্বারাও কখন কখনও কিছুটা কম কঠোর হতে আদিষ্ট হন তা সম্ভবতঃ তাঁর মায়ের কঠোর শাসনে গড়ে উঠা নৈষ্ঠিক ও নিষ্ঠুর চারিত্রিক গুণের জন্যই। স্টালিন দৃঢ়চেতা, স্টালিন একগুয়ে, স্টালিন বাস্তববাদী, স্টালিন জাতীয়তাবাদী এই সকল নানা অভিধায় তিনি ভূষিত। তবে স্টালিন লেনিনের মৃত্যুর পর পরই, অত্যন্ত দ্রুততায় সরা সোভিয়েট রাশিয়ায় সে ব্যাপক শিল্পায়ন, বৈদ্যুতিকরণ ও স্বাক্ষরতা অভিযান চালান তা নিঃসন্দেহে লেনিনের উত্তরসূরী হিসাবে, উত্তরাধিকারী হিসাবে তাকে স্মরণীয় করে তাঁর জীবনকালেই। স্টালিন চরম নিষ্ঠুরতায় প্রতিবিপ্লবী চক্রকে নির্মূল করেন। কিন্তু এই প্রতি বিপ্লবী চক্র নিধনের সাথে সাথে আস্তে আস্তে রুশ কমিউনিস্ট পার্টিতে। গণতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক চেতনার বদলে পার্টি কর্তৃত্ব, পার্টির সর্বময় ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে শিক্ষা, সংস্কৃতি, সামরিক বিভাগ সকল বিষয়েই পার্টি তার সর্বাত্মক ও সর্বময় প্রভূত্ব প্রতিষ্ঠিত করে। পার্টির ভিতরে গণতান্ত্রিক চেতনার বদলে বুরোক্র্যাটিক চেতন অধিক ক্রিয়াশীল হয়ে পড়ে। সর্বহারা একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।

স্টালিন ১৯২৯ সালে পঞ্চদশ বর্ষে উপনীত হলে দেখা যায় তিনি রাজনৈতিক ভাবে সোভিয়েট রাশিয়ায় গণতন্ত্রের বদলে পাটিতন্ত্র গড়ে তুলেছেন। ট্রটস্কি, প্লাখনভ, ক্যামেনেভ, জেনোভেব সকলেই অন্তর্হিত, নিহত। এই সকল তাত্ত্বিক মহাপন্ডিত বিশ্ববিপ্লবীগণ লেনিনের মৃত্যুর স্বল্পকালের মধ্যে আস্তে আস্তে কোথায় যেন হারিয়ে গেলেন। কমিউনিষ্ট পার্টি স্টালিনের মোহময় বাস্তবানুগ নীতিগুলো অধিক সমাদরে গ্রহণ করল। বিশ্ববিপ্লবের বদলে রুশ বিপ্লবের সফল রূপান্তর রুশ কমিউনিস্ট পার্টির কাছে অধিক বুদ্ধিগ্রাহ্য মনে হল। ফলে সাম্যবাদী বিপ্লবের আন্তর্জাতিক চেতনায় ছেদ পড়ল। রুশ জাতীয়তাবাদী সমাজতান্ত্রিক সাম্যবাদের পথে সোভিয়েট রাশিয়ার পদযাত্রা বিশ্বকমিউনিস্ট আন্দোলনে এক বিরাট বিপর্যয় সৃষ্টি করল। কিন্তু স্টালিনের নেতৃতে বিশ্বাসী রুশজনগণ শক্তিশালী লালদূর্গ হিসাবে সোভিয়েট প্রজাতন্ত্রকে বিশ্ববিপ্লবের পরিপূরক হিসাবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর হল। রুশসাম্রাজ্যের দূরতম প্রান্তেও সোভিয়েট শাসন প্রতিষ্ঠিত হল। অনেক ক্ষেত্রে বলপ্রয়োগ করেই তা সমাধা করা হল। বিশেষকরে এশিয়াটিক রাজ্যগুলোতে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিশেষ কঠোরতা প্রয়োজন হল। রাশিয়ায় ধর্মান্ধ অর্থভোক্সচার্চ এবং এশিয়ায় মুসলমান উলেমাগণ মরনপণ লড়াই করে পরাস্ত লেন স্টালিনিয় নিষ্ঠুরতার কাছে। এছাড়া সমাজতান্ত্রিক ও সাম্যবাদী চেতনাও জারের সাম্রাজ্যের দূরপ্রান্ত তাজাকিস্থান, কাজাকিস্তান, কির্গিজিয়া, আজারবাইজান, আর্মেনিয়া প্রভৃতি অঞ্চলেও কমবেশি কিছু গড়ে উঠেছিল। স্টালিন নিজেও মস্কো থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে জর্জিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। কৈশোরেই জর্জিয়ায় টিফলিসে স্কুলের পাঠ অসমাপ্ত রেখে যাজকের পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ ছেড়ে বিপ্লবী দলে যোগদান করেন। ফলে বর্তমান শতাব্দীর ত্রিশের দশকে স্টালিন সর্বময় কর্তৃত্ব লাভ করে সোভিয়েট রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবকে সফল করতে ব্রতী হন একনিষ্ঠভাবে যাজকের নিষ্ঠায়, সামরিক নির্মমতায়। ১৯২৮ সালেই সারা সোভিয়েট রাশিয়ায় সপ্তবার্ষিক পরিকল্পনা মাফিক পুনর্গঠন কর্ম, উন্নয়ন কর্ম, পরিচালিত হতে থাকে। স্টালিনের নির্দেশে কমিউনিস্ট পার্টি সৈনিকের শৃঙ্খলায় ও পুরোহিতের নিষ্ঠায় সুদূর

বিস্তৃত বহুধা বিভক্ত বহু ভাষাভাষী সোভিয়েট রাশিয়ায় দেশ গঠন ও সমাজ গঠনের কাজ চলতে থাকে। স্টালিন যে দৃঢ়তায় ও দ্রুততায় সপ্তবার্ষিক পরিকল্পনাগুলোর সফল রূপায়ণ ঘটিয়ে সোভিয়েট দেশে যুগযুগান্তরের পশ্চাৎপদতা থেকে আধুনিকতার আলোকবর্তিকা জ্বালেন তা কেবল হিটলারের নাৎসি পার্টির স্যোস্যাল ডেমক্রাসির সাথে তুলনীয়। কয়েক বছরের ব্যবধানে হিটলার পরাজিত জার্মানিকে ইউরোপের এক মহাশক্তিধর শিল্পোন্নত দেশে রূপান্তরিত করেন। ঠিক একইভাবে সামরিক শৃঙ্খলায় আবদ্ধ কুশ কমিউনিস্ট পার্টি হাজার হাজার মাইল ব্যাপী বিস্তৃত জারের সাম্রাজ্যের দূরতম অঞ্চলও সাম্যবাদের সফল রূপায়ণ অনুভব করান। ফলে মধ্য রাশিয়ায় উষরপ্রান্তর কেঁপে লেনিনগার্ড থেকে ভাডিভষ্টক পর্যন্ত বিশ্বের দীর্ঘতম রেল পথেও বৈদ্যুতিকরণ করা হয়। এছাড়া বাঁধ, খাল খনন, পতিত অহল্যা জমি উদ্ধার করে লক্ষ লক্ষ একর জমি কৃষিযোগ্য করে তোলে। কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত করা সম্ভব হয়। তবে এই সফল গ্রাম উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব করতে গিয়ে মাঝেমাঝে হঠকারী স্টালিনীয় পার্টি সিদ্ধান্ত রুশ জনগণ তথা সারা সোভিয়েট দেশে সাধারণ মানুষের অশেষ দুর্দশার কারণ হয়। অভিজ্ঞতার অভাবে পার্টির আবেগমথিত সিদ্ধান্ত কার্যকরী করতে গিয়ে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির বদলে ব্যহত হয়েছে বার বার। আর হাজার হাজার কৃষক শ্রমিক দুর্ভিক্ষের করালগ্রাসে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে।

সারা সোভিয়েট প্রজাতন্ত্রে স্টেট ফার্ম আর জোত খামার, কৃষি ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেন।

সোভিয়েট রাশিয়ায় উৎপাদন ব্যবস্থায় জোত খামারের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এছাড়া সারাদেশে শিল্পবিপ্লব পরিচালিত হতে থাকে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবে। সাক্ষরতা অভিযান নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে গ্রামীণ জীবনকে কয়েক দশকের মধ্যেই আধুনিক জীবনের স্বাদ এনে দেয়। স্টালিনের সাফল্যের সাথে সাথে তার হঠকারী দ্রুত সপ্তবার্ষিক পরিকল্পনার রূপায়ণ অনেক সময়ই অগ্রগতির গতির চাকায় বুমেরাং হিসাবে সোভিয়েট অর্থনীতিকে পশ্চাৎম্মুখী করেছে বার বার। তবে সামগ্রিকভাবে দেশ এগিয়ে গিয়েছে। পার্টির অগণতান্ত্রিক সৈরাচারী শাসন নিশ্চয় সাম্যবাদের সফল রূপায়ণে অনেক সময় বাধা। কিন্তু তা সত্ত্বেও বহু ভাষাভাষী, বহু ধর্মমতে বিশ্বাসী নিত্য নৈমিত্তিক প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও ভৌগোলিক ভাবে ক্লিষ্ট সোভিয়েট প্রজাতন্ত্রে স্টালিনের নেতৃত্বে যে বিরাট সমাজিক, অর্থনৈতিক পরিবর্তন সূচিত হয় তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখে। আর এই প্রশংসার প্রধান দাবীদার নিশ্চয় বহু নিন্দিত, বহু বন্দিত জোসেফ স্টালিন। স্টালিনের দ্বিতীয় স্ত্রী অ্যালিনিভা স্টালিনের থেকে বয়সে অনেক ছোট হলেও জ্ঞানবুদ্ধি, বিবেক, বিবেচনায় কম ছিলেন না, কিন্তু একদা ভর্শেলভের বাড়িতে তিনিও একসময় প্রকাশ্যভাবে রুশপার্টির কঠোরতা, নিষ্ঠুরতা ও হৃদয়হীনতার তীব্র সমালোচনা করেন স্টালিনের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে। তবে শোনা যায় যে এরপর তারও মৃত্যু ঘণ্টা বিলম্বিত হয়নি। এছাড়া লেনিনের জীবকালেই স্টালিনের একগুয়েমি, একরোখা স্বভাবের জন্য স্টালিন সম্বন্ধে লেনিন সকলকে সচেতন করতেন বলে শোনা যায়। এধারে মহাযুদ্ধের রণদামামা যখন মধ্য ইউরোপে হিটলারের গর্বোদ্ধত সামরিক কর্তৃত্ব বেজে উঠে তখন স্টালিন অভ্যন্তরীণ বিষয় থেকে নিজেকে সরিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অধিক মনোযোগী হন। স্টালিন নির্দেশিত পার্টি আস্তে আস্তে হিটলারের যুদ্ধের হুমকিতে চমকিত হয়ে উঠে। ফলে অভ্যন্তরীণ শিল্পবিপ্লবের সাথে সাথে ত্রিশের দশকের শেষের দিকে স্টালিন জাতীয় নিরাপত্তায় অধিক মনোনিবেশ করেন এবং যুদ্ধ উন্মাদ হিটলারকে সুচতুর স্টালিন ধনতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদী ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেন। ফলে শীঘ্রই স্টালিন গোপনে হিটলারে সাথে অনাক্রমণ চুক্তি সম্পন্ন করে। হিটলারের আক্রমণের সুযোগ স্টালিন সোভিয়েট রাশিয়ার প্রভাব প্রতিপত্তি উত্তরে ফিনল্যান্ড ও পূর্বে পোল্যান্ড পর্যন্ত বিস্তৃত করেন।

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পূর্ব মুহূর্তে ত্রিশের দশকে স্টালিনের নির্দেশে সুদৃঢ় সোভিয়েট কমিউনিস্ট পার্টিতে ও রেড আর্মিতে কারণে অকারণে প্রতিবিপ্লবী প্রবণতার বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে স্টালিন নির্দেশে হজার হাজার নিষ্ঠাবান সৈনিক ও পার্টি কর্মী রাষ্ট্রের হাতে নিহত হয়। ফলে রুশ দেশের সম্বন্ধে পাশ্চাত্য জগতে হিটলারকে রোখবার ক্ষমতার সম্বন্ধে সংশয় দেখা যায়। হিটলার নিজেও রুশ পার্টি ও সামরিক বাহিনী সম্বন্ধে হীন মনোভাব পোষণ করেন। কারণ ত্রিশের দশকের শেষ দিকে প্রায়শই কারণে অকারণে সোভিয়েট দেশে হাজার হাজার মানুষকে নিয়তি তাড়িত সাইবেরিয়ার কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে দাস শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে পাঠান হত। গণতান্ত্রিক বিচার ব্যবস্থার প্রবর্তন তখন সোভিয়েট রাশিয়ার দূরঅস্ত। ফলে সাধারণ মানুষ ছাড়াও সামরিক নেতৃত্ব, সংস্কৃতিক জগতের পুরোধা ব্যক্তিত্ব এমনকি পার্টির বিশ্বস্ত খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বও নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ফলে সামগ্রিকভাবে ত্রিশের দশকে কিছু অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলেও দেশ সামগ্রিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে হিটলার যখন রাশিয়াকে আক্রমণ করে তখন রেড আর্মি কেবল পিছু হটতে থাকে। না। স্টালিন ও হিটলার উভয়েই জাতি গঠনে জাতীয় চরিত্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পরাজিত জার্মানির অভিমানী জার্মান মানুষকে ভালভাবে অনুভব করে, হিটলার আস্তে আস্তে জার্মানিতে সর্বময় ক্ষমতা দখল করেন। আর সোভিয়েট রাশিয়ায় স্টালিন সোভিয়েট কমিউনিস্ট পার্টিকে বিশ্বের বৃহত্তম ভৌগোলিক পরিধিযুক্ত একটি রাষ্ট্রে সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুসংহত করেন। তবে জার্মানির পরাজয়ের পর জার্মানিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে দেখা যায় জার্মান মনন ও মানস হিটলারের ইহুদি হত্যা, গণহত্যা, গণতন্ত্র হত্যাকে ক্ষমা করেনি।

কিন্তু স্টালিন সোভিয়েট রাশিয়া নিষ্ঠুরতায়, নরহত্যায় ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের কণ্ঠ রোধে কোন অংশে হিটলারের থেকে কক্ষ দক্ষ ছিলেন না। সোভিয়েট শাসনে যে পরিমাণ নিষ্ঠাবান কমিউনিস্ট স্টালিনের আমলেও নিহত হন জারের আমলে তার ঠিক দশমাংশও নিহত হয়েছেন কিনা সন্দেহ।

লক্ষ লক্ষ মানুষের উপর স্টালিন জামানায় যে জের জবরদস্তি ও বিবর্তনমূলক আটক আইনে গ্রেপ্তার তা নিঃসন্দেহে ভয়াবহ। সোভিয়েট দেশে কমিউনিজম প্রতিষ্ঠা সফল হয়নি। কিন্তু ডিক্টেটরশিপ অব দ্য প্রলেটারিয়েৎ কথার অন্তরালে যে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা স্টালিন ভোগ করেছেন তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। তার নির্যাতনের হাত থেকে কমিউনিষ্ট পার্টির প্রথমশ্রেণীর আদর্শবাদী নেতৃবর্গ থেকে সামরিক বাহিনীর সৎসাহসী সেনানীকূল কেউই বাদ যাননি। সাইবেরিয়ার কনসেনট্রেশন ক্যাপম্পগুলো লক্ষ লক্ষ দাস বন্দী শ্রমিকের কাতরানির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে থেকেছে। স্টালিনের আমলে সোভিয়েট উৎপাদন ব্যবস্থায় দাস শ্রম ব্যবস্থা প্রায় প্রাচীন গ্রীসের দাসশ্রম ব্যবস্থার সমমর্যাদায় ভূষিত হয়। আব্রাহাম লিঙ্কন, স্টানলিলিভিংষ্টোন থেকে আরম্ভ করে হাজার হাজার পাশ্চাত্যের বুদ্ধিজীবি ও খ্রিস্টিয় মিশনারীগণ উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকেই যে দাস-শ্রম ব্যবস্থা ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়ায় ও আমেরিকায় নিষিদ্ধ করেন। স্টালিনের

আমরে কার্যত সোভিয়েট রাশিয়ার সাইবেরিয়া রশিয়ার উন্নয়ের স্টালিন সেই একই ঘৃনিত ব্যবস্থা চালু করেন। এছাড়া সমগ্র সোভিয়েট রাশিয়ায় কোথাও কোন রাষ্ট্রীয় কল, কারখানা ও যৌথ খামারে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন শ্রমিক শ্রেণীর স্বার্থে সংঘটিত বা সংঘবদ্ধ হতে দেয়নি স্টালিন। ফলে স্টালিন জামানায় যে উন্নয়নের গতি তা যতখানি স্বতস্ফূর্ত তার থেকে অনেক বেশি জোর জবরদস্তি মূলক। কিন্তু একটা বিষয় রাজনীতি বিজ্ঞানের ও ইতিহাসের গবেষকদের কাছে খুবই আশ্চর্যের যে যেখানে হিটলারের মৃত্যুর পর জার্মানীতে হিটলার চিহ্নিত হয়েছেন জার্মান জাতীয় কলঙ্ক হিসাবে; বিকৃত মানসিকতাযুক্ত এক নির্মম মহানায়ক হিসাবে। কিন্তু সোভিয়েট রাশিয়ায় স্টালিনের মৃত্যুর পর এমন কি আজও রুশজনগণ স্টালিনের অত্যাচার ও অনাচারের প্রতিবাদে ততখানি মুখর হয়নি। স্টালিন বন্দনা হয়ত বন্ধ হয়েছে কিন্তু ক্ৰচেঙ ছাড়া আর কোন রুশ রাষ্ট্রপতি বা রাজনৈতিক ব্যক্তিতু এ বিষয়ে খুব পরিষ্কার মতমত প্রকাশ করেন নি। ক্রুশ্চেভ নিজে স্টালিনের আমলে একটু একটু করে রুশ কমিউনিস্ট পার্টিতে নিজের আসন দৃঢ় করেন। বহু দায়িত্বপূর্ণ পদ গ্রহণ করেন। কিন্তু স্টালিনের মৃত্যুর কয়েক বছর পরেই তিনি স্টালিনের ভজনার বদলে স্টালিনীয় সমালোচনায় আত্মনিয়োগ করেন। যদিও জীবনের সায়াহ্ন বেলায় ক্রুশ্চেভকে রুশ জনগণ এজন্য ক্ষমা করেনি। পতনের পর ব্রেজনেভের আগমন আবার সোভিয়েট প্রজাতন্ত্রে স্টালিনীয় লৌহযবনিকার প্রবর্তন ঘটায়। স্টালিন প্রবর্তিত সমাজব্যবস্থা নিঃসন্দেহে রুশ জনগণকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা পশ্চিমী গণতন্ত্রী দেশগুলোর তুলনায় অনেক অনেকগুণে কম ভোগ্যপণ্য, ব্যক্তি স্বাধীনতা ইত্যাদি দান করেছে। তা সত্ত্বেও আজও গর্বাচভ, ইয়েলৎসিন, প্রভৃতি নেতাদের পক্ষেও সোভিয়েট শাসনে স্টালিনীয় নির্যাতনের তখা বেশি ব্যক্ত কর সম্ভব হয় নি। কারণ সোভিয়েট মানুষ স্টালিনের গুণগুলোর কথা আলোচনা করতে যতটা আগ্রহী তার সমালোচনায় তত আগ্রহী নহে। হিটলারের থেকেও দীর্ঘকাল ধরে চরম নিষ্ঠুরতা ও নির্মমতার প্রতিভূ হয়েও স্টালিন কিন্তু আজও সাধারণ সোভিয়েট নাগরিকের কাছের মানুষ। তারা স্টালিনের আমলের কনসেনট্রেশন ক্যাম্প, সাইবেরিয়ার দাসশ্রম ব্যবস্থা, শিক্ষা সংস্কৃতিতে বদ্ধজলাভূমি সৃষ্টি ও লৌহযবনিকার প্রবর্তনের কথা স্বীকার করে কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত দুর্বতায় স্টালিন আজও এক স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। অস্বীকার করা যায় না যে স্টালিনের দৃঢ় নেতৃত্ব সোভিয়েট রাশিয়াকে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর থেকেই সোভিয়েট পররাষ্ট্রনীতি সুচতুর স্টালিনের নির্দেশেই এশিয়ায়, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার পরাধীন বা সদ্যস্বাধীন দেশগুলোতে সফলভাবে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। স্নায়ুযুদ্ধে সোভিয়েট রাশিয়া যে অনেক সময়ই মার্কিনযুক্ত রাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে তা অস্বীকার করা যায় না। ফলে সোভিয়েট জনগণ ঘর্মের স্বাধীনতায় বঞ্চিত হয়েছে। ব্যক্তি স্বাধীনতার স্বাদ পাইনি। কিন্তু সামান্যবাদের সাম্য ও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় স্টালিনীয় কমিউনিস্ট পার্টি নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে সফলভাবে। স্টালিনের আমলে যুদ্ধেবিধ্বস্ত সোভিয়েট রাশিয়ায় যে দেশ গঠন ও নির্মাণকর্ম সপ্তবার্ষিকী পরিকল্পনায় জরুরী ও যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলেছে তা পরবর্তী প্রজন্ম অনেকাংশেই প্রশংসাসূচক সহানুভূতিতে মেনে নিয়েছে। সোভিয়েট সাতসালা পরিকল্পনা ও সপ্তবার্ষিকী উন্নয়ন পর্বগুলো নিঃসন্দেহে স্টালিনের নেতৃত্বের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করে। বিশেষ করে উৎপাদন ব্যবস্থায় ও শিক্ষা প্রসারে সোভিয়েট সরকার। স্টালিনের আমলে জোর-জবরদস্তি মূলক ভাবে কৃষি বিপ্লব ঘটাতে গিয়ে যে লক্ষ লক্ষ কৃষক পরিবার ধ্বংস হয়ে যায় তা সকলেই স্বীকার করেন। এছাড়া কৃষি উৎপাদনে অভিজ্ঞতার অভাবজনিত বহু বিপর্যয় সোভিয়েট রাশিয়াকে খাদ্যাভাব, দুর্ভিক্ষ ইত্যাদিতে পীড়িত করে। লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু, হত্যা, আত্মহত্যার কারণ স্টালিনের নিষ্পেষন। স্টালিন জামানায় যত ভুল হয়েছে তারজন্য সাবেক সোভিয়েট সমাজ কমিউনিস্ট পার্টিকে যতটা সমালোচনা করেছে স্টালিনকে ততখানি নহে। সিক্রেট পুলিশের কর্তা বেড়িয়া সাহেব নিহত হয়েছে, ধিকৃত হয়েছেন তাঁর সিক্রেট পুলিশের সীমাহীন ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য। কিন্তু যে বেড়িয়া স্টালিনের ছায়াসঙ্গী ছিল স্টালিনের জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। তিনি রেহাই পাননি জনরোষ থেকে। তাঁর মৃত্যু যেন সারা সোভিয়েট রাশিয়ায় এমনকি কমিউনিস্ট পার্টিতেও যেন এক স্বস্তি ও শান্তির বায়ু প্রবাহিত করে। কিন্তু যে স্টালিনের নির্দেশে বেড়িয়ার ক্রিসেন্ট পুলিশ পরিচালিত হতে সইে স্টালিন সম্বন্ধে মানুষ কিন্তু ততখানি বিতরাগ নহেন।

সকল অধ্যায়

১. ১. বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) (৫৭০-৬৩২ খ্রি:)
২. ২. হযরত ঈসা (খ্রীষ্ট পূর্ব ৬-৩০)
৩. ৩. হযরত মুসা (খ্রীষ্ট পূর্ব ত্রয়োদশ শতাব্দী)
৪. ৪. ইমাম আবু হানিফা (রঃ) (৭০২–৭৭২ খ্রি:)
৫. ৫. জাবির ইবনে হাইয়ান (৭২২-৮০৩ খ্রি:)
৬. ৬. ইমাম বোখারী (রঃ) (৮১০-৮৭০ খ্রি:)
৭. ৭. আল বাত্তানী (৮৫৮–৯২৯ খ্রি:)
৮. ৮. আল ফারাবী (৮৭০-৯৬৬ খ্রি:)
৯. ৯. মহাকবি ফেরদৌসী (৯৪১–১০২০ খ্রি:)
১০. ১০. আল বেরুনী (৯৭৩–১০৪৮ খ্রি:)
১১. ১১. ইবনে সিনা (৯৮০-১০৩৭ খ্রি:)
১২. ১২. ওমর খৈয়াম (১০৪৪-১১২৩ খ্রি:)
১৩. ১৩. ইমাম গাজ্জালী (রঃ) (১০৫৮–১১১১ খ্রি:)
১৪. ১৪. ইবনে রুশদ (১১২৬১১৯৯ খ্রি:)
১৫. ১৫. আল্লামা শেখ সা’দী (রঃ) (১১৭৫–১২৯৫ খ্রি:)
১৬. ১৬. মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমী (রঃ) (১২০৭-১২৭৩ খ্রি:)
১৭. ১৭. ইবনুন নাফিস (১২০৮-১২৮৮ খ্রি:)
১৮. ১৮. ইবনে খালদুন (১৩২২–১৪০৬ খ্রীঃ)
১৯. ১৯. কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬ খ্রীঃ)
২০. ২০. মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক পাশা (১৮৮১-১৯৩৮)
২১. ২১. গৌতম বুদ্ধ (খ্রি: পূ: ৫৬৩ খ্রি: পূ: ৪৮৩)
২২. ২২. শ্রীরামকৃষ্ণ (১৮৩৩-১৮৮৬)
২৩. ২৩. শ্রীচৈতন্য (১৪৮৬-১৫৩৩)
২৪. ২৪. স্বামী বিবেকানন্দ (১৮৬৩-১৯০২)
২৫. ২৫. যোহান উলফগ্যঙ ভন গ্যেটে (১৭৪৯–১৮৩২)
২৬. ২৬. আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (১৮৮১-১৯৫৫)
২৭. ২৭. ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯-১৮৯২)
২৮. ২৮. ফিওদর মিখাইলভিচ দস্তয়ভস্কি (১৮২১-১৮৮১)
২৯. ২৯. আলেকজান্ডার দি গ্রেট (৩৫৬ খ্রিস্ট পূর্ব-৩২৩ খ্রিস্ট পূর্ব)
৩০. ৩০. লেনিন (১৮৭০-১৯২৪)
৩১. ৩১. মাও সে তুং (১৮৯৩-১৯৭৬)
৩২. ৩২. কনফুসিয়াস (খ্রি: পূর্ব ৫৫১ খ্রি: পূর্ব ৪৭৯)
৩৩. ৩৩. বারট্রান্ড রাসেল (১৮৭২-১৯৭০)
৩৪. ৩৪. পাবলো পিকাসো (১৮৮১-১৯৭৩)
৩৫. ৩৫. ক্রিস্টোফার কলম্বাস (১৪৫১-১৫০৬)
৩৬. ৩৬. হেলেন কেলার (১৮৮০-১৯৬৮)
৩৭. ৩৭. বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন (১৭০৬-১৭৯০)
৩৮. ৩৮. কার্ল মার্কস (১৮১৮-১৮৮৩)
৩৯. ৩৯. হ্যানিম্যান (১৭৫৫-১৮৪৩)
৪০. ৪০. ত্যাগরাজ (১৭৬৭–১৮৪৭)
৪১. ৪১. নেপোলিয়ন বোনাপার্ট (১৭৬৯-১৮২১)
৪২. ৪২. ভাস্করাচার্য (১১১৪-১১৮৫)
৪৩. ৪৩. পার্সি বিশী শেলী (১৭৯২-১৮২২)
৪৪. ৪৪. জোহন কেপলার (১৫৭১-১৬৩০)
৪৫. ৪৫. জোহান্স গুটেনবার্গ (১৪০০–১৪৬৮)
৪৬. ৪৬ জুলিয়াস সিজার (খ্রি: পূ: ১০০খ্রি: পূ: ৪৪)
৪৭. ৪৭. গুলিয়েলমো মার্কোনি (১৮৭৪-১৯৩৭)
৪৮. ৪৮. রাণী এলিজাবেথ (১৫৩৩-১৬০৩)
৪৯. ৪৯. জোসেফ স্টালিন (১৮৮২-১৯৫৩)
৫০. ৫০. ফ্রান্সিস বেকন (খ্রি: ১৫৬১ খ্রি: ১৬২৬)
৫১. ৫১. জেমস ওয়াট (১৭৩৬-১৮১৯)
৫২. ৫২. চেঙ্গিস খান (১১৬২–১২২৭)
৫৩. ৫৩. এডলফ হিটলার (১৮৮৯-১৯৪৫)
৫৪. ৫৪. লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি (১৪৫২-১৫১৯)
৫৫. ৫৫. অশোক (আনুমানিক খ্রি: পূ: ৩০০–২৩২ খ্রি: পূর্ব)
৫৬. ৫৬. সিগমুন্ড ফ্রয়েড (১৮৫৬-১৯৩৯)
৫৭. ৫৭. আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল (১৮৪৭-১৯২২)
৫৮. ৫৮. যোহান সেবাস্তিয়ান বাখ (১৬৮৫–১৭৫০)
৫৯. ৫৯. জন. এফ. কেনেডি (১৯১৭-১৯৬৩)
৬০. ৬০. গ্যালিলিও গ্যালিলাই (১৫৬৪-১৬৪২)
৬১. ৬১. হো চি মিন (১৮৯০–১৯৬৯)
৬২. ৬২. মহাত্মা গান্ধীজী (১৮৬৯-১৯৪৮)
৬৩. ৬৩. লেভ তলস্তয় (১৮২৮–১৯১০)
৬৪. ৬৪. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১)
৬৫. ৬৫. হিপোক্রেটস (৪৬০-৩৭০)
৬৬. ৬৬. জগদীশচন্দ্র বসু (১৮৫৮–১৯৩৭)
৬৭. ৬৭. আলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯-১৯৫৫)
৬৮. ৬৮. উইলিয়ম শেকস্‌পীয়র (১৫৬৪-১৬১৬)
৬৯. ৬৯. জন মিলটন (১৬০৮–১৬৭৪)
৭০. ৭০. সক্রেটিস (৪৬৯-৩৯৯ খৃঃ পূ:)
৭১. ৭১. জর্জ ওয়াশিংটন (১৭৩২-১৭৯৯)
৭২. ৭২. উইলিয়াম হার্ভে (১৫৭৮-১৬৫৭)
৭৩. ৭৩. পিথাগোরাস (৫৮০–৫০০)
৭৪. ৭৪. ডেভিড লিভিংস্টোন (১৮১৩-১৮৭৩)
৭৫. ৭৫. লুই পাস্তুর (১৮২২-১৮৯৫)
৭৬. ৭৬. নিকোলাস কোপার্নিকাস (১৪৭৩-১৫৪৩)
৭৭. ৭৭. এন্টনি লরেন্ট ল্যাভোশিঁয়ে (১৭৪৩-১৭৯৪)
৭৮. ৭৮. এডওয়ার্ড জেনার (১৭৪৯–১৮২৩)
৭৯. ৭৯. ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল (১৮২০-১৯১০)
৮০. ৮০. হেনরিক ইবসেন (১৮২৮-১৯০৬)
৮১. ৮১. টমাস আলভা এডিসন (১৮৪৭-১৯৩১)
৮২. ৮২. জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৬৫-১৯৫০)
৮৩. ৮৩. মার্টিন লুথার কিং (১৯২৯–১৯৬৮)
৮৪. ৮৪. সত্যজিৎ রায় (১৯২১-১৯৯২)
৮৫. ৮৫. রম্যাঁ রোলাঁ (১৮৬৬-১৯৪৪)
৮৬. ৮৬. পাবলো নেরুদা (১৯০৪–১৯৭৩)
৮৭. ৮৭. আর্কিমিডিস (২৮৭-২১২খৃ. অব্দ)
৮৮. ৮৮. অ্যারিস্টটল (৩৮৫-৩২২খৃ. পূ.)
৮৯. ৮৯. মেরি কুরি (১৮৬৭-১৯৩৪)
৯০. ৯০. জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল (১৮৩১-১৮৭৯)
৯১. ৯১. চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২)
৯২. ৯২. উইলবার রাইট ও অরভিল রাইট (১৮৭১-১৯৪৮) (১৮৬৭-১৯১২)
৯৩. ৯৩. চার্লি চ্যাপলিন (১৮৮৯-১৯৭৭)
৯৪. ৯৪. চার্লস ডিকেন্স (১৮১২-১৮৭০)
৯৫. ৯৫. ম্যাক্সিম গোর্কি (১৮৬৮-১৯৩২)
৯৬. ৯৬. আব্রাহাম লিঙ্কন (১৮০৯-১৮৬৫)
৯৭. ৯৭. জন কিটস (১৭৯৫-১৮২১)
৯৮. ৯৮. প্লেটো (খ্রীস্টপূর্ব ৩২৭-খ্রীস্টপূর্ব ৩৪)
৯৯. ৯৯. মাইকেলেঞ্জেলো (১৪৭৫-১৫৬৪)
১০০. ১০০. স্যার আইজ্যাক নিউটন (১৬৪২-১৭২৭)

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন