গুজরাত মডেল ২০১৪

ইমানুল হক

১৷ গুজরাতে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৪০ জন দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে৷ প্রসঙ্গত, গুজরাতে দিনে ১০ টাকা ৮০ পয়সা রোজগার করলে তাকে গরিব বলে মানে না মোদি সরকার৷ সারা দেশে এই মাপকাঠি গ্রামে ২৮ টাকা, শহরে ৩২ টাকা৷ গুজরাটে ২০০১ খ্রিস্টাব্দে ৩% ছিল দারিদ্য সীমার নীচে৷ এখন ৩৯-%৷ (সূত্র : এন এস ও রিপোর্ট অন পভার্টি ২০১৩-১৩)

২৷ বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুজরাত দেশের মধ্যে ৫ নম্বর৷ (সূত্র : অর্থ ও পরিসংখ্যান বিভাগ, গুজরাত সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া প্রতিবেদন)

৩৷ গুজরাতে সারের ওপর ৫% ভ্যাট৷ দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ৷ (কৃষি মন্ত্রক, গুজরাত সরকার)

৪৷ ৪,৫৫,৮৮৫ জন চাষী কৃষিকাজে বিদ্যুতের জন্য ১০ বছর ধরে আবেদন করে বসে আছেন৷ (কৃষি মন্ত্রক, গুজরাত, মার্চ ২০১১)

৫৷ দেশে সবচেয়ে মাথা পিছু ঋণ বেশি গুজরাতে৷ ১৯৯৫-এ বিজেপি ক্ষমতায় আসার সময় ঋণের পরিমাণ ছিল ১০০০০ কোটি টাকা৷ ২০০১-০২ এ মোদি ক্ষমতায় আসার সময় ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৫,৩০১ কোটি টাকা৷ মোদির কুশাসন আর প্রচারের খরচ মেটাতে এই ঋণের পরিমাণ ২০১৪-য় হয় ১,৩৮,৯৭৮ কোটি টাকা৷ ২০১৫-১৬য় ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ২,০৭,৬৯৫ কোটি টাকা৷ (সূত্র : অর্থ ও পরিসখ্যান বিভাগ, গুজরাত সরকার, বিধানসভায় প্রশ্নোত্তরের জবাবে)।

৬৷ গুজরাতে শিক্ষিত বেকার বাড়ছে৷ ১৩০০ ছোট চাকরির জন্য আবেদন করেছে ১৫ লাখ তরুণ৷

৭৷ খাদ্যহীনতায় ৪৪% শিশুদের অপুষ্টি তীব্র৷ দেশের মধ্যে ১৫ তম রাজ্য মোদীর গুজরাত৷ (সূত্র : মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন, ২০১১-১২)।

৮৷ মহিলাদের মধ্যে রক্তাপ্লতা বাড়ছে৷ এক্ষেত্রে দেশের ২০টি রাজ্যের মধ্যে গুজরাত ২০তম৷ (মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন, ২০১১-১২)।

৯৷ শিশুদের রক্তাল্পতাও বাড়ছে৷ এক্ষেত্রে দেশের ২০টি রাজ্যের মধ্যে গুজরাত ২০তম৷ (মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন, ২০১১-১২)।

১০৷ গুজরাতে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বরাদ্দ কমছে৷ ৪২% কমেছে৷ এক্ষেত্রে দেশের পিছিয়ে রাজ্যের মধ্যে নিচের দিক থেকে দ্বিতীয়৷ (জাতীয় স্বাস্থ্য চিত্র, পরিকল্পনা কমিশনের প্রতিবেদন ২০১১-১২)।

১১৷ ২% পরিবার অপরিশোধিত পানীয় জল ব্যবহারে বাধ্য হয়৷ ১কোটি ৭৫ লাখ পরিষ্কার জল পায় না৷ (ন্যাশন্যাল স্যাম্পেল সার্ভে)।

১২৷ গুজরাতের ৫% গৃহে শৌচাগার নেই৷

১৩৷ গুজরাত সরকার ৩৭১৬ এমপ্লয়মেন্ট ফেস্টিভ্যাল করেছে৷ সরকারের তথ্য অনুযায়ী শিক্ষিত বেকার ১০,০০০,০০ আর মোট ৩০ লাখের কোন কাজ নেই৷ বেকার৷ (সূত্র : এন এস এস ও)

১৪৷ গুজরাতে মোদি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হারীণ পাণ্ডিয়া খুন হয়ে যান ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে সকালবেলায়৷ তাঁর স্ত্রী খুনের জন্য মোদির দিকে আঙুল তোলেন৷ আজও বিচার পায়নি তাঁর পরিবার৷

১৫৷ গুজরাতে প্রতি তিন দিনে একটি ধর্ষণ হয়৷

১৬৷ সুপ্রিম কোর্টের আদেশে গুজরাত গণহত্যায় হত্যা সংক্রান্ত ১,৯৫৮৯টি মামলা চালু হয়৷ এর মধ্যে মাত্র ১১৭টি মামলায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে৷ আর মাত্র ৫টির নিষ্পত্তি হয়েছে৷

১৭৷ গুজরাতে কৃষি বৃদ্ধির হার কখনো ১% ছাড়ায়নি৷

১৮৷ গুজরাতে ২৬ জেলার ২২৫ ব্লকের মধ্যে ৫৭টি রাজ্য কৃষি মন্ত্রকের বিচারে ‘ডার্ক জোন’৷

১৯৷ গুজরাতে ১০ বছর ধরে কোনও ‘ডেপুটি স্পিকার’ পদ নেই৷

২০৷ বছরে মাত্র ৩০-৩২ দিন বিধানসভার অধিবেশন বসে৷

২১৷ গুজরাতে কোনও লোকায়ুক্ত পদ নেই৷

২২৷ গুজরাত ক্যাগ রিপোট অনুযায়ী ১৬,৭০৬-৯৯ কোটি টাকার আর্থিক ও জমি সংক্রান্ত অনিয়ম হয়েছে৷ (ক্যাগ রিপোর্ট ২০১১-১২)।

অধ্যায় ২২ / ২২

সকল অধ্যায়

১. মিথ ও মিথ্যা নির্মাণ— ইতিহাসের সচেতন ভাষা ও ভাষ্য
২. মিথ ও মিথ্যা : মুসলিম সমাজ ও ইতিহাস
৩. সোভিয়েত বিপ্লব কী দিয়েছিল দুনিয়াকে?
৪. নির্বাচিত যুদ্ধ : বাংলা ও আসাম
৫. ওরা তো জব্দ হবে!
৬. রেপাবলিক
৭. অদৃশ্য জেলখানার উল্লাস
৮. ক্ষুধাতুর চাঁদের গল্প
৯. গো-রক্ষা না গো-সন্ত্রাস?
১০. কত শত সুগান্তি, রূপান্তি মরলে তবে?
১১. নামের ফেরে
১২. ছি
১৩. আদালত ও বিচারহত্যা : সঞ্জীব ভাট
১৪. ক্ষমতার বিচিত্র মহিমা
১৫. সুপ্রিম ও সুপ্রিমো
১৬. কমিশন নয় অমিশন ক্লিন চিট (Cheat) কোম্পানি
১৭. খারাপ চালের দোকান ও আমাদের চালবাজি
১৮. প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় : কিছু জরুরি প্রশ্ন
১৯. ‘সব খেলার সেরা…’
২০. কম্পিউটার, মোবাইল স্মৃতিহত্যা করছে
২১. বাঙালির জাতীয় উৎসব পয়লা বৈশাখ
২২. গুজরাত মডেল ২০১৪

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন