বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় (বনফুল)
কিন্তু হঠাৎ সব শেষ হয়ে গেল একদিন। গভীর রাত্রে সদাশিবের ঘুম ভেঙে গেল কুকুরের ডাকে। কুকুরটা গেটের কাছে দাঁড়িয়ে খুব ডাকছিল। রামলক্ষ্মণ ঠাকুর, গীতিয়া, গীতিয়ার স্বামী সবাই উঠেছিল। সদাশিব উঠে আলোটা জ্বাললেন। রামলক্ষ্মণ এসে বলল যে ছিপলীর স্বামী এসে ডাকাডাকি করছে। তাদের বাড়িতে নাকি ডাকাতি হচ্ছে। ডাকাতি হচ্ছে? ছিপলীর স্বামীকে ডাকতে বললেন। সে এসে ভয়ে ঠক্ঠক্ করে কাঁপতে লাগল। তারপর তাঁর পায়ের উপর আছড়ে পড়ে একটি কাতরোক্তিই সে করলে-“বাঁচাইয়ে হুজুর!” অনেক জেবার পর জানা গেল ছবিলালের ছেলেটি দলবল জুটিয়ে তাদের বাড়িতে হানা দিয়েছে, আর ছিপলীর উপর বলাৎকার করেছে। জিতু বাধা দিতে গিয়েছিল, পারেনি। সে তাই ছুটতে ছুটতে এখানে এসেছে।
আলী সাধারণত রাত্রে নিজের বাড়ি চলে যায়। সদাশিব নিজেই গাড়ি বের করে বেরিয়ে পড়লেন। তার সঙ্গে রইল রামলক্ষ্মণ ঠাকুর; গীতিয়ার স্বামী আর জিতু। রিভলবারটাও সঙ্গে নিলেন।
সদাশিব যখন পৌঁছলেন তখন যা হবার হয়ে গেছে। চতুর্দিক নিস্তব্ধ। টর্চ ফেলতে ফেলতে সদাশিব ঘরে ঢুকলেন। গিয়ে দেখলেন মেঝের উপর বিস্রস্তবাসা ছিপলী পড়ে আছে। ঘরের কোণে আর একটা লোক দাঁড়িয়ে ছিল। তার হাতে ছিল একটা লাঠি। সদাশিবকে দেখেই সে লাঠি চালাল। লাঠিটা সজোরে এসে লাগল সদাশিবের মাথায়। সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন