৮. অন্তর্বর্তীকালীন উত্তেজনা
ক্রিপস-দৌত্য বিফল হবার পরে (অর্থাৎ ক্রিপসের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হবার পরে) সারা ভারত জুড়ে এক হতাশা ও ক্রোধের সঞ্চার হয়। দেশবাসীদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন, আমেরিকা এবং চীনের চাপের ফলেই চার্চিল এক লোক-দেখানো প্রস্তাবসহ স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসকে ভারতে পাঠিয়েছিলেন। আসলে ভারতকে স্বাধীনতা দেবার কোনোরকম ইচ্ছাই তার ছিলো না। ভারতের বহুসংখ্যক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সুদীর্ঘ আলোচনা করে ইংরেজরা বিশ্ববাসীকে বোঝাতে চেয়েছিলো কংগ্রেসই ভারতীয় জনগণের একমাত্র প্রতিনিধিস্থানীয় প্রতিষ্ঠান নয়। তারা আরো বোঝাতে চেয়েছিলো ভারতীয়দের মধ্যে একতার অভাবের জন্যই তারা ভারতবাসীর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেনি। তাদের এই ধরনের প্রচারের ফলে কিছুসংখ্যক কংগ্রেস কর্মীর মনেও এইরকম একটা সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছিলো। তাঁদের এই সন্দেহ নিরসন করবার জন্যে আমি নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির এক সভা আহ্বান করি। এই সভা ২৯শে এপ্রিল থেকে ২রা মে পর্যন্ত চলে। ২৭শে এপ্রিল থেকে ১লা মে পর্যন্ত ওয়ার্কিং কমিটির সভাও চলে।
নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির সভা উদ্বোধন করতে উঠে আমি যে উদ্বোধনী ভাষণ দিই তার সারমর্ম হলো: দেড় মাস আগে আমরা যখন ওয়ার্ধায় মিলিত হয়েছিলাম সেই সময় মনে হয়েছিলো, ইংরেজ সরকার ভারতের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে নতুন করে চেষ্টা করছে। ইংরেজ সরকার ঘোষণা করেছিলো যে ইংলণ্ডের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসের নেতৃত্বে একটি রাজনৈতিক মিশন সরকারের কাছ থেকে এক নতুন প্রস্তাব নিয়ে ভারত অভিমুখে রওনা হচ্ছে। ওয়ার্ধায় অনুষ্ঠিত ওয়ার্কিং কমিটির সভায় তখন স্থির হয়, কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে আমি কংগ্রেসের তরফ থেকে স্যার স্ট্যাফোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করবো। ওয়ার্কিং কমিটির এই সিদ্ধান্ত অনুসারে আমি স্যার স্ট্যাফোর্ডের সঙ্গে তাঁর প্রস্তাব সম্পর্কে সুদীর্ঘ আলোচনা করি। আলোচনার সময় আমি তাঁকে বলি, তিনি যে ঘোষণাবাণীর খসড়াটি সঙ্গে নিয়ে এসেছেন তা নিতান্তই হতাশাব্যঞ্জক। ওতে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের একটা কাল্পনিক চিত্র দেওয়া ছাড়া বর্তমান অবস্থা সম্বন্ধে বিশেষ কিছু বলা হয়নি। বর্তমান অবস্থা সম্বন্ধে প্রস্তাবে যা বলা হয়েছে তার কোনো অর্থই হয় না। ভারতীয়দের দ্বারা শাসনব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা সম্বন্ধে কোনো কথাই ওতে বলা হয়নি। ওতে যা বলা হয়েছে তা হলো, ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ইংরেজ সরকারের হাতেই থাকবে। এর ফলে ভারতীয়দের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথাটা একেবারেই অর্থহীন হয়ে দাঁড়ায়, কারণ যুদ্ধের সময় অসামরিক শাসন ব্যবস্থা সর্ববিষয়ে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অধীনে চলতে বাধ্য।
এরপর সভার সামনে আমি আমার সহকর্মীদের পূর্ণ সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বলি, আমাদের প্রতিটি সিদ্ধান্তই সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছিলো। আমি আরো বলি, সাম্প্রদায়িক সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আমাদের একটা বিশেষ চিন্তাধারা থাকলেও ক্রিপস প্রস্তাব সম্পর্কে আলোচনার সময় সেই চিন্তাধারা কোনোক্রমেই আমাদের প্রভাবিত করতে পারেনি। প্রস্তাবের দোষ গুণ বিবেচনার জন্য আমরা শুধু একটি মাত্র পন্থাই গ্রহণ করেছিলাম। তা হলো, ভারতের স্বাধীনতার ব্যাপারে প্রস্তাবে কী বলা হয়েছে, অর্থাৎ ইংরেজরা সত্যি সত্যিই ভারতীয়দের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে প্রস্তুত আছে কিনা। আমার মনে কোনো সন্দেহই নেই, রাজনৈতিক ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি যদি সুষ্ঠুভাবে স্থিরীকৃত হতো তাহলে সাম্প্রদায়িক সমস্যার সমাধান আমরা সহজেই করতে পারতাম। কিন্তু ইংরেজ সরকারের প্রস্তাবে আমরা যা দেখতে পাই তাতে সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারি, যুদ্ধের সময় প্রতিরক্ষার ব্যাপারে ভারতীয়দের কোনো বক্তব্যই তারা শুনতে প্রস্তুত নয়।
এরপর আমি আমাদের দু-একজন সহকর্মীর ভিন্নতর মতামতের কথা উল্লেখ করি। তাঁরা বলেছেন, ক্রিপস মিশন ভারতীয় সমস্যার কোনো সমাধান করতে না পারলেও একটি বিষয়ে মিশন সাফল্যলাভ করেছে। তাঁদের মতে, এই বিষয়টা হলো, যুদ্ধের প্রতি ভারতীয়দের মনোভাবের পরিবর্তন। তাদের এই অভিমতকে আমি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত বলে মনে করি। আমার মতে, ক্রিপস মিশন ইঙ্গ-ভারতীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক অপূরণীয় ক্ষতি ছাড়া আর কিছু করতে পারেনি; অর্থাৎ, ক্রিপস মিশন ভারতবাসীদের সম্পূর্ণভাবে হতাশ করেছে। মিশনের বক্তব্য হলো, প্রতিরক্ষার ব্যাপারে পরাধীন ভারতের কিছুই করণীয় নেই। কিন্তু আমার অভিমত হলো, একমাত্র স্বাধীন ভারতই তার প্রতিরক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারে। স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস এখন বলতে শুরু করেছেন, ভারতীয় সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব এখন আর ইংরেজ সরকারের নয়, এ দায়িত্ব এখন পুরোপুরি ভারতীয় নেতাদের নিতে হবে। এর উত্তরে আমি বলেছি, কংগ্রেস যথাসাধ্য চেষ্টা করেও ইংরেজ সরকারের মতিগতির পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি, সুতরাং কংগ্রেসের পক্ষে নতুন করে কিছু করা আর সম্ভব নয়।
এরপর আমি জাপান কর্তৃক ভারত আক্রমণের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করি। আমি বলি, যারা মনে করেছেন জাপান আমাদের স্বাধীনতা দেবে, তাঁদের এই মনোভাবের সঙ্গে আমার তীব্র বিরোধ রয়েছে। আমার মতে, প্রভু পরিবর্তনের কথাটা চিন্তা করাও জাতীয় মর্যাদার পক্ষে হানিকর। ইংরেজদের সঙ্গে আমাদের যতোই মতবিরোধ থাকুক না কেন, তবুও জাপানকে আমরা স্বাগত জানাতে পারি না। আমরা সর্ববিধ উপায়ে জাপানীদের প্রতিরোধ করতে কৃতসঙ্কল্প। সুতরাং সক্রিয়ভাবেই হোক, অথবা নিষ্ক্রিয়ভাবেই হোক, আমরা এমন কিছু করবো না যাতে জাপানীরা মনে করতে পারে যে ভারতীয়রা তাদের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন। আমরা যদি স্বাধীন হতাম তাহলে আক্রমণকারীর বিরুদ্ধে অন্যত্র যুদ্ধে অবতীর্ণ হতাম। কিন্তু আমাদের হাতে অস্ত্র না থাকায় সশস্ত্র প্রতিরোধের ক্ষমতা আমাদের নেই। কিন্তু আগ্নেয়াস্ত্র না থাকলেও অহিংসার অস্ত্র আমাদের হাতে আছে। এ অস্ত্র আমাদের হাত থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারে না।
আমার বক্তব্য শোনবার পর নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটি ওয়ার্কিং কমিটির প্রস্তাবকে পুরোপুরিভাবে অনুমোদন করে। কমিটি আরো সিদ্ধান্ত নেয়, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সঠিক পথে চালিত করবার জন্য ওয়ার্কিং কমিটি যে-কোনো পন্থা গ্রহণ করতে পারবে।
.
এলাহাবাদ থেকে কলকাতায় ফিরে এসে আমি জনগণের মনোভাব দেখে রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। আমি দেখতে পাই, কলকাতার বেশির ভাগ লোকই মনে করছে ইংরেজরা এ যুদ্ধে পরাজিত হবে। ইংরেজের বিরুদ্ধে জনমত এতোই প্রবল হয়ে উঠেছে যে জাপান কর্তৃক ভারত আক্রমণের সম্ভাব্য বিপদের কথাও তারা বিবেচনা করছে না। শুধু তাই নয়, জাপানের প্রতি সহানুভূতির মনোভাবও লক্ষ্য করি অনেকের মধ্যে।
ক্রিপস ভারত থেকে চলে যাবার পর গান্ধীজীর মনোভাবের বেশ কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করি। আগেই বলেছি, গান্ধীজী যুদ্ধের সময় কোনোরকম আন্দোলন করার পক্ষপাতী ছিলেন না। তিনি বলতেন, অহিংসার পথ থেকে আমরা কোনোক্রমেই বিচ্যুত হবো না। তার মতে, এ সময় কোনো গণ-আন্দোলন শুরু হলে জনসাধারণ অহিংস থাকবে না। এই অভিমত তিনি এতো দৃঢ়ভাবে পোষণ করতেন যে আমি বহুবার চেষ্টা করেও আন্দোলন শুরু করার ব্যাপারে তাঁকে সম্মত করতে পারিনি। এমন কি, ব্যক্তিগত সত্যাগ্রহেও তিনি সম্মতি দেননি।
কিন্তু বর্তমানে গান্ধীজী তাঁর পূর্ব অভিমত থেকে অনেকটা সরে এসেছেন। এবার তিনি গণ-আন্দোলনের কথা চিন্তা করছেন। তাঁর মনোভাবের এই পরিবর্তন হয়তো কিছুদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছিলো। তবে এটা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসের ভারত ত্যাগের পরে। ১৯৪২-এর জুন মাসে আমি যখন ওয়ার্ধায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করি তখন আমি বুঝতে পারি, যুদ্ধের প্রথমদিকে তিনি যে অভিমত পোষণ করতেন তা থেকে এখন অনেকটা সরে এসেছেন।
এই সময় নানা সূত্র থেকে আমি যেসব খবর পেতে থাকি তাতে আমার মনে হয়, জাপানীরা ভারত আক্রমণ করবে বলে সরকার মনে করছে। সরকার হয়তো মনে করছে, জাপানীরা সারা ভারতে আক্রমণ না চালালেও বাংলা অধিকার করবার চেষ্টা করবে। তারা মনে করছে, জাপানীরা সমুদ্রপথে আক্রমণ চালিয়ে ডায়মণ্ড হারবার থেকে কলকাতা অভিমুখে অগ্রসর হবে। আমি আরো জানতে পারি, এই অবস্থার সৃষ্টি হলে সরকার কলকাতা থেকে পশ্চাদপসরণ করবে। সরকার এক গোপনীয় সারকুলার মারফত তাদের এই গোপন পরিকল্পনার কথা নির্দিষ্ট সংখ্যক অফিসারকে জানিয়ে দিয়েছে এবং কিভাবে এবং কোন্ পথে পর্যায়ক্রমে কলকাতা, হাওড়া এবং ২৪ পরগণা থেকে পশ্চাদপসরণ করা হবে সে সম্বন্ধে নির্দেশ দিয়েছে। তারা কিছু কিছু প্রতিরোধ ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে। প্রতিরোধের ব্যাপারে তারা একটি পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছিলো। এতে পশ্চাদপসরণের সময় কোন্ কোন্ জায়গায় প্রতিরোধ করা হবে এবং কিভাবে পশ্চাদপসরণ করা হবে সে সম্বন্ধে একটা সাময়িক নির্দেশও জারি করেছিল। এই ব্যাপারে তারা স্থির করেছিলো, প্রথম প্রতিরোধ লাইন হবে পদ্মানদীর তীর বরাবর, দ্বিতীয় লাইন হবে আসানসোল ও রাঁচির মধ্যবর্তী অঞ্চল এবং সর্বশেষ লাইন হবে এলাহাবাদের কাছে। সরকার আরো স্থির করে, পশ্চাদপসরণের সময় তারা পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করবে এবং যাবার পথে গুরুত্বপূর্ণ সেতুগুলোকে এবং বড় বড় কল-কারখানাগুলোকে ধ্বংস করে যাবে। জামসেদপুরের লোহার কারখানাটাও তারা ধ্বংস করবে বলে স্থির করে। তাদের এই মতলবের কথাটা কোনো সূত্রে ফাস হয়ে যাওয়ায় সমগ্র এলাকায় একটা নিদারুণ দুশ্চিন্তা এবং চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছিলো।
উপরোক্ত সব কথাই আমি গান্ধীজীকে জানিয়ে দিই। আমি তাকে আরো বলি, জাপানীরা যদি ভারতভূমিতে পদার্পণ করে তাহলে আমাদের পবিত্র কর্তব্য হবে, যে-কোনো উপায়ে তাদের প্রতিরোধ করা। আমার মতে পুরনো প্রভুর বদলে নতুন প্রভুকে স্থান দেবার কথা চিন্তা করা বাতুলতা। নতুন বিজেতা যদি পুরনো সরকারকে উচ্ছেদ করতে পারে তাহলে আমাদের বিপদ আরো বাড়বে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, জাপানীদের মতো একটি নতুন সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে হঠানো আরো কঠিন হয়ে পড়বে।
জাপানের সম্ভাব্য আক্রমণের কথা চিন্তা করে আমি প্রতিরোধের ব্যাপারেও কিছু কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করি। কংগ্রেস প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমি নির্দেশ দিই, তারা যেন জাপানীদের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করে। কলকাতা শহরকে আমি কয়েকটি অঞ্চলে বিভক্ত করি এবং স্বেচ্ছা-সৈনিক সংগ্রহ করে আঞ্চলিক প্রতিরোধবাহিনী গঠন করি। স্বেচ্ছা-সৈনিকদের আমি নির্দেশ দিই তারা যেন সর্ব উপায়ে জাপানীদের অগ্রগতিতে বাধার সৃষ্টি করে। আমি যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলাম, তা হলো, জাপানীরা যখনই বাংলায় উপস্থিত হবে এবং ইংরেজবাহিনী বিহার অভিমুখে পশ্চাদপসরণ করবে, তখনই কংগ্রেস এগিয়ে এসে দেশের নিয়ন্ত্রণভার নিজের হাতে তুলে নেবে। আমাদের স্বেচ্ছা-সৈনিকদের সাহায্যে জাপানীরা প্রতিষ্ঠিত হবার আগেই ক্ষমতা দখল করে নেবো এবং এইভাবেই আমরা নতুন শত্রুর মোকাবিলা করে স্বাধীনতা অর্জন করবো। প্রকৃতপক্ষে মে এবং জুন মাসের বেশির ভাগ সময় আমি এই নতুন পরিকল্পনাকে কার্যকর করার জন্য ব্যয় করি।
আমি বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করি, গান্ধীজী এ ব্যাপারে আমার সঙ্গে একমত হতে পারেন না। তিনি দৃঢ় প্রত্যয়ের সুরে আমাকে বলেন, জাপানীরা যদি সত্যি সত্যিই ভারতভূমিতে পদার্পণ করে তাহলেও তারা ভারতবাসীর শত্রু হিসেবে আসবে না, তারা আসবে ইংরেজের শত্রু হিসেবে। তিনি বলেন, ইংরেজরা যদি অবিলম্বে ভারত পরিত্যাগ করে তাহলে জাপানীরা ভারত আক্রমণ করবে না। গান্ধীজীর এই অভিমতকে মেনে নিতে না পেরে আমি এ ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করি। কিন্তু তিনি তাঁর অভিমতে অটল থাকেন, শত চেষ্টা করেও আমি তাঁর মত পরিবর্তন করতে সক্ষম হই না। এই সময় আমি আরো দেখতে পাই, সর্দার প্যাটেলও গান্ধীজীর মতো একই অভিমত পোষণ করছেন। আমার তাই মনে হয়, সর্দার প্যাটেলই হয়তো গান্ধীজীকে এ ব্যাপারে প্রভাবিত করেছেন। অবশেষে গান্ধীজীর সঙ্গে মতানৈক্য নিয়েই আমি তার কাছ থেকে বিদায় নিই।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন