৬. অন্তর্বর্তী নাট্যে চৈনিক ভূমিকা
যুদ্ধে ভারতবর্ষের অংশগ্রহণ সম্বন্ধে প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের অভিমতের কথা আমি আগেই বলেছি। চীনের রাষ্ট্রনায়ক জেনারেলিসিমো চিয়াং কাই-শেকও একই অভিমত পোষণ করতেন। তিনি তার অভিমত বহুবার ব্যক্ত করেছেন। যুদ্ধ শুরু হবার পর থেকেই তিনি জোরের সঙ্গে একটি মীমাংসা করে নেওয়ার জন্য ব্রিটিশদের পরামর্শ দিচ্ছিলেন। পরবর্তীকালে জাপান যখন পার্ল হারবার আক্রমণ করে তখন তিনি আরো জোরের সঙ্গে তার অভিমত ব্যক্ত করতে থাকেন। জাপানের অগ্রগতি এবং যুদ্ধে তার বিস্ময়কর সাফল্যের জন্য স্বাভাবিক কারণেই জেনারেলিসিমো এবং চীন সরকারের গুরুত্ব বিশেষভাবে বেড়ে যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংলন্ড এবং সোভিয়েত রাশিয়ার মতো চীনকেও তখন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শক্তিশালীরূপে গণ্য করা হতে থাকে। চিয়াং কাই-শেক প্রথম থেকেই ব্রিটিশ সরকারকে ভারতের স্বাধীনতা স্বীকার করে নেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে এসেছেন। তিনি এই অভিমত পোষণ করতেন যে ভারতবর্ষ স্বেচ্ছায় যুদ্ধের ব্যাপারে সহযোগিতা না করলে তার কাছ থেকে যথোপযুক্ত সাহায্য পাওয়া যাবে না।
যুদ্ধ শুরু হবার কিছুদিন আগে জওহরলাল নেহরু দক্ষিণ চীন পরিভ্রমণ করে এসেছিলেন। সে সময় তিনি ছিলেন চিয়াং কাই-শেকের সম্মানিত অতিথি। ফলে তার সঙ্গে জওহরলালের একটি নিকট-সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল। চিয়াং কাই-শেকও সেই সময়ই ভারতের রাজনৈতিক অবস্থাটা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিলেন। এখানে আরো একটি কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা দরকার, জওহরলালের চীনভ্রমণের ফলেই জেনারেলিসিমো ভারতে একটি মিশন প্রেরণ করেছিলেন এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে আমার কাছে একটি চিঠি লিখেছিলেন। তার সেই চিঠিতে তিনি ভারতের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি পূর্ণ সহানুভূতি জ্ঞাপন করে ভারতের প্রতি তার সদিচ্ছার কথা ব্যক্ত করেছিলেন। এখন তিনি স্থির করেন তিনি নিজেই ভারতে আসবেন এবং ভাইসরয় ও কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে উভয়পক্ষের মধ্যে একটি আপস করানো যায় কিনা সে বিষয়ে তিনি চেষ্টা করবেন। তিনি আশা করেন, এর ফলে ভারতবর্ষের জাতীয় নেতৃবৃন্দ যুদ্ধে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসবে।
আমি যখন দিল্লীতে মিঃ আসফ আলীর গৃহে অবস্থান করছিলাম, সেই সময়ই আমি খবর পাই যে চিয়াং কাই-শেক ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ভারতভ্রমণে আসছেন। এই সময় মাদাম চিয়াং কাই-শেকের কাছ থেকেও আমি একখানা চিঠি পাই। চিঠিতে তিনি আমাকে জানিয়ে দেন, জেনারেলিসিমোর সঙ্গে তিনিও ভারতে আসছেন। আরো কয়েকদিন পরে একটি সরকারি ঘোষণা প্রচারিত হয়। তা থেকে জানা যায়, জেনারেলিসিমো চিয়াং কাই-শেক এবং মাদাম চিয়াং কাই-শেক সরকারি অতিথি হিসেবে দিল্লীতে আসছেন।
জেনারেলিসিমো এবং মাদাম চিয়াং কাই-শেক ১৯৪২ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে পদার্পণ করেন। এর দু’দিন পরে জওহরলাল এবং আমি জেনারেলিসিমোর সঙ্গে দেখা করি। কিন্তু তাঁর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে আমরা বেশ কিছুটা অসুবিধার সম্মুখীন হই। এর কারণ হলো, তিনি কোনো বিদেশি ভাষা জানতেন না। কথাবার্তা তাই দোভাষীর মাধ্যমে চলতে থাকে। এর ফলে আলোচনা বিলম্বিত হয় এবং খোলাখুলিভাবে সে ব্যাপারেও অসুবিধার সৃষ্টি হয়। দোভাষীর উপস্থিতির জন্য আলোচনা চলে আনুষ্ঠানিক ধরনে। জেনারেলিসিমো প্রথমেই এক দীর্ঘ বক্তৃতার মাধ্যমে তাঁর মতামত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, পরাধীন জাতির স্বাধীনতা লাভের জন্য দুটি মাত্র পথ আছে। একটি হলো সশস্ত্র বিপ্লবের পথ এবং অপরটি হলো আলাপ-আলোচনার পথ। সশস্ত্র বিপ্লবের পথে স্বাধীনতা অর্জন করতে হলে দেশ দখলকারী বিদেশি শক্তির সঙ্গে যুদ্ধ করে দেশ থেকে তাদের বিতাড়িত করতে হয়। কিন্তু আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করতে হলে প্রথমেই পূর্ণ স্বাধীনতার আশা করা যায় না। এই পদ্ধতিতে ধাপে ধাপে এগোতে হয়। অর্থাৎ, ধাপে ধাপে স্বায়ত্তশাসনের পথে এগোতে এগোতে শেষ পর্যন্ত পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করা যায়। এই ব্যাপারে তিনি চীনের স্বাধীনতা লাভের উদাহরণ দেন। তিনি বলেন, চীনদেশে স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু হয় ১৯১১ সালে এবং তারপর অনেকগুলো স্তর অতিক্রম করে অবশেষে সে পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করে। তিনি বলেন, ভারতেরও এই পন্থা অনুসরণ করা উচিত বলেই তিনি মনে করেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি এ কথাও বলেন, ভারত এ ব্যাপারে কোন পন্থা অবলম্বন করবে তা ভারতীয়রাই স্থির করবে। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধের পথ পরিহার করা হলে আলাপ-আলোচনার পথই হলো একমাত্র বিকল্প উপায়। এরপর তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বলেন, ব্রিটিশ গভর্নমেন্টের সঙ্গে তিনি সবসময় এ ব্যাপারে মতবিনিময় করে চলেছেন। শুধু তাই নয়, তাদের কাছে এ ব্যাপারে একটা বিস্তৃত বিবরণও দাখিল করেছেন এবং তাদের উত্তরও তিনি পেয়েছেন। এইভাবে মতবিনিময়ের ফলে তিনি স্থিরনিশ্চয় হয়েছেন যে, ভারতীয়রা যদি যুদ্ধের সুযোগটা সঠিকভাবে গ্রহণ করতে পারে তাহলে ভারতের স্বাধীনতা “আর দূরের বস্তু হয়ে থাকবে না।”
এরপর তিনি সরাসরি আমাকে একটি প্রশ্ন করেন। ভারত কোন্ শিবিরের প্রতি সহানুভূতি পোষণ করে,––নাৎসি শিবিরের প্রতি, না, গণতান্ত্রিক শিবিরের প্রতি?
এই প্রশ্নের উত্তরে আমি বলি, আমাদের সামনের বাধা যদি অপসারিত হয় তাহলে আমি বিনা দ্বিধায় বলতে পারি, ভারত যাতে গণতান্ত্রিক শিবিরে যোগদান করে তার জন্য আমি সর্বতোভাবে চেষ্টা করব।
এরপর জেনারেলিসিমো আমাদের কাছে আর একটি প্রশ্ন উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, বর্তমান যুদ্ধটা যেহেতু গণতন্ত্র রক্ষার জন্য এবং বিশ্বের পরাধীন মানবগোষ্ঠীর দাসত্ব মোচনের জন্য অনুষ্ঠিত হচ্ছে তখন শর্তহীনভাবে ইংল্যান্ড এবং চীনের পক্ষে যোগদান করাটাই কি আপনাদের উচিত নয়?
এর উত্তরে আমি বলি, গণতান্ত্রিক শিবিরে যোগ দেবার জন্য আমরা সব সময়ই আগ্রহান্বিত; তবে যতদিন পরাধীনতার শিকলে আমাদের হাত-পা বাঁধা থাকবে ততদিন আমরা কীভাবে আমাদের ইচ্ছামতো কাজ করি।
জেনারেলিসিমো এরপর বলেন, ঔপনিবেশিক স্বায়ত্তশাসন এবং পূর্ণ স্বাধীনতার মধ্যে বিশেষ কিছু ব্যবধান আছে বলে তিনি মনে করেন না। সুতরাং ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট যখন ভারতবর্ষকে ঔপনিবেশিক স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দিতে চাইছেন তখন তা গ্রহণ করাটাই ভারতের পক্ষে উচিত হবে। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে জওহরলাল তাঁর সঙ্গে একমত নন; তিনি চান পূর্ণ স্বাধীনতা। এই কথাটা উল্লেখ করবার পর তিনি বলেন, “ভারতের একজন শুভানুধ্যায়ী হিসেবে আমি বলতে চাই, ব্রিটিশ গভর্নমেন্টের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করাটা মোটেই উচিত কাজ হবে না।”
এই সময় জওহরলাল উর্দু ভাষায় আমাকে বলেন, কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট হিসেবে এ কথার উত্তর আমারই দেওয়া উচিত। আমি তখন জেনারেলিসিমোকে বলি, যুদ্ধ চলাকালে ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট যদি ভারতকে ঔপনিবেশিক স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দেয় এবং শাসনকার্যে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় প্রতিনিধিদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয় তাহলে কংগ্রেস অবশ্যই ব্রিটিশ গভর্নমেন্টের প্রস্তাব মেনে নেবে।
এই সময় মাদাম চিয়াং কাই-শেক এসে আমাদের চা পানের আমন্ত্রণ জানান এবং এরপর থেকে তিনি নিজেও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। মাদাম চিয়াং যোগ দেবার ফলে আলোচনাটা সহজ হয়ে আসে। তিনি ইংল্যান্ডে শিক্ষাপ্রাপ্তা এবং ইংরেজি ভাষার ওপরে তাঁর চমৎকার দখল থাকার জন্যই আলোচনাটা সহজ হয়ে ওঠে।
এবারের আলোচনার সময় জেনারেলিসিমো বলেন, যুদ্ধের দায়িত্ব যখন প্রধানত ব্রিটিশ গভর্নমেন্টকেই বহন করতে হচ্ছে এবং হবে, সে অবস্থায় তারা শতকরা একশো ভাগ দায়িত্ব ভারতীয়দের হাতে ছেড়ে দেবেন বলে মনে হয় না।
এর উত্তরে আমি বলি, তাহলে এমন কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে যা কংগ্রেস এবং ব্রিটিশ সরকার উভয়ের পক্ষেই গ্রহণযোগ্য হয়। আমি আরো বলি, ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট যদি যুদ্ধের পরে ভারতকে স্বাধীনতা দেবার কথা স্বীকার করে তাহলে আমরা নিশ্চয়ই তাদের সঙ্গে সর্বব্যাপারে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি।
এই সময় মাদাম চিয়াং কাই-শেক আমার কাছ থেকে জানতে চান, এই আলোচনার কথা ব্রিটিশ গভর্নমেন্টকে জানাতে আমার কোনো আপত্তি আছে কিনা। তাঁর প্রশ্নের উত্তরে আমি বলি, কংগ্রেস যেহেতু তার মতামত প্রকাশ্যভাবেই ঘোষণা করেছে এবং বর্তমান আলোচনাতেও সে কোনো রকম গোপনীয়তার আশ্রয় নেয়নি, সে অবস্থায় আলোচনার বিষয়বস্তু যেকোনো ব্যক্তিকেই জানানো যেতে পারে।
জেনারেলিসিমোর ভারত ভ্রমণের সময় ভারত সরকার বেশ কিছুটা বিব্রত হয়ে পড়েছিল। কংগ্রেস নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশাটা ভারত সরকার সুনজরে দেখতে পারছিল না। সরকার হয়তো মনে করেছিল, এর ফলে সারা পৃথিবীতে এমন একটি ধারণার সৃষ্টি হবে যে জেনারেলিসিমো কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে দেখা করবার জন্যই ভারতে এসেছেন। সরকারের এই অস্বস্তির কথা তারা জেনারেলিসিমোকে জানিয়ে দিয়েছিল কিনা তা আমার জানা নেই, তবে জেনারেলিসিমো যে তাঁর ভারত সফরের উদ্দেশ্যের কথা সুস্পষ্টভাবে ভারত সরকারকে জানিয়ে দিয়েছিলেন সে কথা কারোরই অজ্ঞাত নেই। তিনি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি শুধু ভাইসরয় এবং কমাণ্ডার-ইন-চীফ-এর সঙ্গে আলোচনা করবার জন্যই ভারতে আসেননি; ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করাও তার অন্যতম উদ্দেশ্য। তাঁর এই সুস্পষ্ট বক্তব্যের পরে ভারত সরকার আমাদের সঙ্গে আলোচনা ব্যাপারে আর কোনো বাধা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয় না।
এরপর জেনারেলিসিমো তাজমহল দেখার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সঙ্গে সঙ্গে ভারত সরকার তাঁর সফরসূচি তৈরি করেন। সেই সফরসূচিতে কেবলমাত্র সরকারের অনুমোদিত ব্যক্তিদেরই জেনারেলিসিমোর সঙ্গী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু মাদাম চিয়াং কাই-শেক যখন বলেন, তাজমহল যাবার সময় জওহরলাল নেহরু তাঁদের সঙ্গে থাকবেন তখন অনিচ্ছাসত্ত্বেও সরকার তা মেনে নিতে বাধ্য হয়।
দিল্লি সফর শেষ করে জেনারেলিসিমো কলকাতায় যাবেন বলে স্থির করেন। বাংলা সরকারকে একথা জানানো হলে তারা ব্যারাকপুরের পুরোনো লাটপ্রাসাদে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করে। জেনারেলিসিমো তখন তাঁর কলকাতার সফরসূচি জওহরলালকে জানিয়ে দিয়ে তাকেও কলকাতায় যাবার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেন। জেনারেলিসিমোর অনুরোধে জওহরলাল কলকাতায় যান এবং তাঁর সঙ্গে নানা বিষয়ে আলোচনা করেন।
গান্ধীজী এই সময় কলকাতার বিড়লা পার্কে অবস্থান করছিলেন। জেনারেলিসিমো সেখানে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। প্রায় দু’ ঘণ্টা আলাপ-আলোচনা চলে তাঁদের মধ্যে। আলোচনার সময় জেনারেলিসিমো গান্ধীজীর কাছ থেকে তাঁর সত্যাগ্রহ ও অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের ব্যাখ্যা জানতে চান। গান্ধীজী বলেন, সত্যাগ্রহ আন্দোলন তিনি সর্বপ্রথম শুরু করেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। সেখানে আন্দোলনের কোনো নিয়মকানুন ছিল না। পরবর্তীকালে ভারতবর্ষে তিনি যখন সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু করেন তখন তা ধাপে ধাপে অগ্রসর হয়ে একটি সুনির্দিষ্ট রূপ নেয়। এই সত্যাগ্রহ আন্দোলনেরই পরিণত চেহারা হলো অহিংস অসহযোগ আন্দোলন।
জেনারেলিসিমো যখন গান্ধীজীর সঙ্গে দেখা করেন আমি তখন কলকাতায় ছিলাম না। গান্ধীজীর সঙ্গে তাঁর আলোচনার বিষয়বস্তু আমি জওহরলালের কাছ থেকে পরে শুনতে পাই। জওহরলাল আমাকে বলেন, ওঁদের মধ্যে আলোচনা এমনই নিষ্প্রাণ ছিল যে জেনারেলিসিমোর মনে তা কোনো রকম রেখাপাত করতে পারেনি। আমার কিন্তু মনে হয়, জেনারেলিসিমো গান্ধীজীর বক্তব্য সম্যকভাবে উপলব্ধি করতে পারেননি। যার প্রবল ব্যক্তিত্ব এবং ক্ষুরধার বক্তব্যের জন্য বিদেশিরা চুম্বকের মতো আকৃষ্ট হন সেই গান্ধীজী জেনারেলিসিমোকে প্রভাবিত করতে না পারার আর কী কারণ থাকতে পারে? যাইহোক, এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য প্রকাশ করা আমার পক্ষে সহজ হবে বলে মনে হয় না।
ভারত পরিত্যাগের পূর্বে জেনারেলিসিমো ব্রিটিশ গভর্নমেন্টের কাছে আর একবার আন্তরিকভাবে আবেদন করেন। উক্ত আবেদনে তিনি যত শীঘ্র সম্ভব ভারতীয়দের হাতে রাজনৈতিক ক্ষমতা হস্তান্তর করবার জন্য অনুরোধ জ্ঞাপন করেন। কিন্তু সুস্পষ্টভাবেই বুঝতে পারা যায়, ভারতীয়দের হাতে অবিলম্বে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে তিনি ভাইসরয় অথবা ব্রিটিশ গভর্নমেন্টকে আদৌ প্রভাবিত করতে পারেননি।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন