রাস্কিন বন্ড
সে অনেককাল আগের এক রাক্ষসরাজ্যের গল্প। একদিন তাঁর বাড়ির বারান্দায় বসে হুকো টানতে টানতে বিবিজি আমায় শুনিয়েছিলেন সে-গল্প। তিনি আমার প্রতিবেশি ছিলেন এককালে। বিবিজি এসেছিলেন হিমালয়ের পাদদেশে ছোটো ছোটো যে পাহাড়ি গ্রাম আছে তারই একটা থেকে, ওইসব অঞ্চলে ভূত, প্রেত, রাক্ষস-খোক্ষস, ত্রিশ-চল্লিশ ফুট উঁচু ইচ্ছেধারী অতিকায় দত্যি-দানো এখনও নাকি হামেশাই দেখা যায়। তিনি আবার এই গল্প শুনেছিলেন তঁার ঠাকুরদার কাছে, সত্যবাদী হিসেবে গ্রামে সে-বুড়োর যথেষ্ট সুনাম ছিল, তাই গল্পের সত্যতা সম্বন্ধে সন্দেহের অবকাশ নেই।
গল্পটি ছিল এরকম—
বিবিজি যে স্থান থেকে এসেছেন তেমনই একটি পাহাড়ি গ্রামে একসময় বাস করত সাতজন স্বর্ণকার, চমৎকার শিল্পনৈপুণ্যের জন্য দিকে দিকে নাম ছড়িয়ে পড়েছিল তাদের। একদিন পড়শি রাজ্যের এক দোর্দণ্ডপ্রতাপ রাজা তাদের চিঠি দিয়ে ডেকে পাঠালেন, উদ্দেশ্য তাঁর স্ত্রীর জন্য বেশ কিছু অভিনব গয়না গড়াবেন। এই সাত স্বর্ণকার ছিল পরস্পরের খুব ভালো বন্ধু, চিঠি পেয়ে তারা একসঙ্গে ওই রাজার প্রাসাদের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করল। সে-যাত্রাপথ বড়োই দুরূহ, সাত সাতটা খাড়া পাহাড় ডিঙিয়ে তবে তারা পৌঁছোল সেই প্রাসাদে। দেখা গেল রাজা বেশ গোমড়ামুখো, আর ঘরকুনো স্বভাবের। তাঁর উপরের ঠোঁটটা নিষ্ঠুরভাবে চেরা, সেই ফাঁক দিয়ে গোলাপি মাড়ি দেখা যাচ্ছে। সাত স্বর্ণকার রাজার সামনে জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। তবে যেই না বড়োসড়ো পুরস্কারের কথা বলা হল অমনি তারা কাজটি করতে রাজি হয়ে গেল।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন