ব্ল্যাক লিস্ট – ৪

কাজী আনোয়ার হোসেন

চার

ক্যালিফোর্নিয়ার পশ্চাদ্দেশে লেজের মত যে জায়গা, কে যেন ওটার নাম দিয়েছিল বাজা ক্যালিফোর্নিয়া। কোন একসময়ে আমেরিকা ও মেক্সিকোর ভেতরে মরুময় এ-এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেখা দিল চরম তিক্ততা। এরপর বহু মাস দরাদরি করার পর শেষমেশ ওটা আমেরিকার সরকারের কাছ থেকে বুঝে নিল মেক্সিকান সরকার।

বিসিআই চিফের দেয়া ই-মেইলের তথ্য পড়ে নেয়ার পর কখন যেন ঘুমিয়ে পড়েছিল রানা। বিমানের ঝাঁকুনিতে চোখ মেলে জানালা দিয়ে দেখল; ছোট্ট জেলে-শহর, এনসেনাডার একপ্রান্তে এয়ারপোর্টের ধুলোভরা এয়ারস্ট্রিপে নেমে এসেছে অ্যাওরোমেক্সিকোর ছোট্ট বিমান।

মিনিটখানেক পর একতলা দালানের কাছে বিমান থেমে যেতেই ভেতর থেকে খোলা হলো পাঁচ ধাপের ধাতব সিঁড়ি। সবার শেষে বিমান থেকে নেমে সূর্যের আলোর প্রখরতা আর মারাত্মক তাপ টের পেয়ে চমকে গেল রানা। হাতব্যাগ থেকে নিয়ে চোখে পরল রে-ব্যান সানগ্লাস। এদিকে-ওদিকে চেয়ে ভাবল, মহাসাগরের এত কাছে কীভাবে বালির রাজ্য হয়ে উঠেছে এই মরু এলাকা!

রেইডার টাওয়ারের কাছে নতুন এক মাস্ট্যাং ট্যাক্সি- ক্যাব দেখে হাতের ইশারায় ড্রাইভারকে ডাকল রানা। বাদামি রঙের যুবক শহরে যাবে সেটা জানার পর খুশিমনে রাজি হয়ে গেল ড্রাইভার। ব্যাক ডালায় ব্যাগ রেখে পেছনের সিটে উঠে পড়ল রানা। শুরু হলো ভাঙাচোরা রাস্তায় ঝাঁকি খেয়ে এগিয়ে চলা। দু’দিকে সেব্রাশ আর গ্রিসউডে ভরা সাভানা।

মিনিট পাঁচেক পর এবড়োখেবড়ো রাস্তার ধারে লাল এক সুজুকি গাড়ি দেখতে পেল রানা। বনেটে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক লোক। রানার গাড়ি দেখে ডানহাত তুলে থামতে- ইশারা করল সে। ইতস্তত করে লাল সুজুকির পাশে ট্যাক্সি- ক্যাব থামাল ড্রাইভার। ভুরু নাচিয়ে লোকটার কাছে জিজ্ঞেস করল, ‘গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে?’

মাথা নাড়ল লোকটা। ট্যাক্সি-ক্যাবের পেছনের জানালায় ঝুঁকে এল সে। হাতে ছোট একটা নীল পাউচ। ‘মিস্টার সাহা? এটা আপনার জন্যে। কাজ শেষে ভেতরের জিনিসটা বিসিআই সেফহাউসের কিপারের হাতে দিয়ে দেবেন।’

চামড়ার পাউচের ভেতরে আছে শক্ত কিছু। দৈর্ঘ্যে বড়জোর দশ ইঞ্চি। চওড়ায় চার বা পাঁচ ইঞ্চি।

‘আপনার পছন্দের জিনিস, স্যর,’ বলল লোকটা।

জবাবে একবার মাথা দোলাল রানা। বুঝে গেছে, বিসিআই থেকে পৌঁছে দেয়া হলো ওয়ালথার পিপিকে পিস্তল।

দ্বিতীয়বার না চেয়ে নিজের গাড়িতে উঠল লোকটা। রওনা হয়ে গেল এয়ারপোর্টের দিকে। নতুন করে শহরের দিকে চলল রানার ট্যাক্সি।

ছুটন্ত গাড়িতে কিছুক্ষণ বসে থাকার পর শহরের প্রধান সড়কে পৌঁছে গেল রানা। ওর ভুল না হলে স্প্যানিশ ভাষায় লা ক্যাসা ভার্দের অর্থ ‘সবুজালয়’। অথচ রাস্তার শেষমাথায় গিরগিটির মত হরেক রঙা চুনামাটি আর একতলা মোটেলের কোথাও সবুজ গাছের চিহ্নমাত্র দেখতে পেল না।

ট্যাক্সি থেকে নেমে ব্যাগ সংগ্রহ করল রানা। ড্রাইভারকে বকশিশ সহ ভাড়া বুঝিয়ে দিয়ে দরজা পেরিয়ে ঢুকে পড়ল মোটেলের লবিতে। ঝলমলে রোদ থেকে এসে মোটেলের ভেতরটা ঘুটঘুটে আঁধার বলে মনে হলো ওর। অবশ্য কয়েক পলকে ফিরে পেল দৃষ্টিশক্তি।

লবির কাউন্টারে বসে আছে কাঠবিড়ালির লেজের মত মোটা গোঁফের এক যুবক। আগ্রহ নিয়ে দেখছে রানাকে। ভেবেছে পেয়ে গেছে নতুন গেস্ট। তার সামনে গিয়ে দাঁড়াল রানা। একবার হাতের ইশারা করে যুবককে পাত্তা না দিয়ে তুলে নিল হাউস ফোন। পাঁচ নম্বর বাটন টিপে দিতেই ওদিক থেকে কল রিসিভ করল এক মেয়ে। সে কিছু বলার আগেই তাকে জানাল রানা, ‘মারিয়া, ডার্লিং? আমি পৌঁছে গেছি!’

‘রানা?’ একটু কাঁপল মেয়েটার গলা।

‘তা হলে আমার বদলে আর কে আসবে, ডার্লিং?’

‘তুমি সত্যিই আমার ডার্লিং হলে বলো দেখি, বছরের এগারোতম মাস কখন হবে অক্টোবর?’

‘যখন পেকে গাছ থেকে খসে পড়বে আপেল।’

‘তুমি তা হলে সত্যিই রানা? এখন কোথায় আছ?’

‘মোটেলের লবিতে অধীর হয়ে তোমার জন্যে অপেক্ষা করছি। তুমি আসবে, নাকি আমিই তোমার রুমে হাজির হব?’

‘না-না, আমিই আসছি,’ দ্রুত বলল মেয়েটা।

‘তো দেখা করো বারে,’ বলল রানা। লবির শেষমাথায় বারকাউন্টারের ওদিকে ব্যস্ত হয়ে তোয়ালে দিয়ে গ্লাস মুছছে এক লোক। জায়গাটা অন্ধকারময়। কাউন্টারের সামনে রানা গিয়ে থামতেই ওর দিকে তাকাল বারটেণ্ডার। ‘সেনোর?’

‘পিসকো সৌর,’ বলল রানা।

ঘুরে সিট্রাস দেয়া কনিয়্যাক মিক্স করতে লাগল লোকটা। পেছনে বাতাসের মৃদু আলোড়ন টের পেয়ে ঘুরে দাঁড়াল রানা। এগিয়ে আসছে হালকা গড়নের এক মেয়ে। চারপাশে ছড়িয়ে দিয়েছে তাজা লেবুর মিষ্টি সুবাস। মারিয়া হ্যারল্ডের মণিদুটো রাতের মত কালো। কালো চুল কোমর পর্যন্ত দীর্ঘ। বয়স হবে বড়জোর পঁচিশ। ত্বক শাপলা ফুলের মত ফ্যাকাসে সাদা।

‘রানা?’ কেমন যেন অনিশ্চিত সুরে বলল সে।

‘হাউ আর ইউ, মাই ডার্লিং মারিয়া?’ জবাবে বলল রানা। ওর দিকে ডানহাত বাড়িয়ে দিল মেয়েটা। নরম হাতটা ধরে ঝাঁকিয়ে দিল রানা। একদিকের দেয়ালের কাছে একটা টেবিল দেখাল। ‘আমরা বরং ওখানে গিয়ে বসি।’

মারিয়া হ্যারল্ডকে এগোতে দিয়ে পিছু নিল রানা। এই সুযোগে দেখে নিল মেয়েটার দেহের গড়ন। রসিক প্রকৃতি দু’হাতে অঢেল যৌবন দিয়েছে মারিয়াকে। যেন কোন সুপার মডেল। বিশেষ করে উরু দুটো কলাগাছের কাণ্ডের মত পুরু।

টেবিলে মুখোমুখি চেয়ারে বসল ওরা।

নিজের জন্যে আইস টি চাইল মারিয়া, তারপর সামনে ঝুঁকে চকচকে চোখে দেখল রানাকে। ‘হ্যাঁ, এবার আলাপ করা যাক।’

‘বলার তো কিছু নেই, বলল রানা, ‘আমাকে বলা হয়েছে, লণ্ডনে যাওয়ার পর আমাদের দু’জনকে ব্রিফ করা হবে।

‘আমরা কখন রওনা হব?’

‘আজ বিকেলেই।’

‘কিন্তু… তা হলে তো এখনই রওনা হতে হবে!’

‘ঠিকই ধরেছ,’ বলল রানা। ট্রে হাতে এসে ওর সামনে হার্ড ড্রিঙ্কের গ্লাস নামিয়ে দিল এক বয়। এবার ট্রে থেকে নিয়ে মারিয়ার সামনে রাখল আইস দেয়া চা। গ্লাস তুলে এক চুমুক কনিয়্যাক গিলে বলল রানা, ‘চা শেষ করে ঘরে গিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে নাও। পরের ফ্লাইটে রওনা হব আমরা।’

‘কিন্তু এখানে তো আমার মিশন শেষ হয়নি…..’

‘রিপোর্ট পড়ে সেটাই জেনেছি আমি। তবে যাদেরকে খুঁজছিলে তোমরা, সেইসব ড্রাগ লর্ড উড়াল দিয়েছে মেক্সিকো ছেড়ে উরুগুয়েতে।’

‘তো এখন আমাকে কী করতে হবে?’ তিক্ত কণ্ঠে বলল মারিয়া।

‘আমার সঙ্গে যেতে হবে স্পেনে। আরও জরুরি কাজে।’

‘ও, তাই?’ বরফখণ্ড দেয়া চায়ে চুমুক দিল মারিয়া।

‘হ্যাঁ। আমরা হয়তো দু’জন মিলে ওখানে স্কি করব।’

ঝিলিক দিল মেয়েটার দু’চোখ। ‘সত্যিই? তার মানে সিয়েরা নেভাডায় যেতে হবে? ওখানে তো গ্রানাডার সামান্য দূরেই দুনিয়ার সেরা স্কি রিসোর্ট!’

চুপ করে মেয়েটাকে দেখছে রানা।

‘তুমি কি স্কিয়িং পারো, রানা?’ জানতে চাইল মারিয়া।

‘একটু-আধটু,’ বলল রানা। ‘তুমি পারো তো?’

‘শুধু পারি বললে মিথ্যা বলা হবে, খুবই ভাল পারি,’ খুশি হয়ে হাসল মারিয়া।

রানার দিকে চেয়ে আছে বারটোর। তবে তাকে পাত্তা না দিয়ে মারিয়ার উদ্দেশে চোখ টিপল রানা।

জবাবে ওকে পাল্টা চোখ টিপে হাসল মারিয়া-তারুণ্যে ভরা ব্রিটিশ এক সুন্দরী মেয়ে।

মিনিটখানেক পর চা শেষ না করেই নিজের ঘরে ফিরল মারিয়া। লবিতে রয়ে গেল রানা।

দশ মিনিট পর মাঝারি এক হ্যাভারস্যাক হাতে লবিতে এল মেয়েটা। ওর ভাব দেখে রানার মনে হলো, মারিয়া আশা করছে ভদ্রতা করে হ্যাভারস্যাক বয়ে বেড়াবে ও।

মেয়েটার ব্যাগের দিকে হাত বাড়াল না রানা। বিরস চেহারায় ক্লার্কের কাছে বিল মিটিয়ে ওর পিছু নিল মারিয়া। মোটেল থেকে বেরিয়ে এল ওরা। আর তখনই সূর্যের সোনালি আলো ঠিকরে যেতেই রাস্তার ওদিকে ড্রাই ফুডের দোকানের ছাতে তাকাল রানা। ওর বুঝতে দেরি হলো না, রাইফেলের স্কোপের ক্রস-হেয়ার এখন চেয়ে আছে ওর কপাল লক্ষ্য করে!

এক সেকেণ্ডের দশ ভাগের এক ভাগ সময়ে নড়ে উঠল রানা। খপ করে কাঁধ ধরে মারিয়াকে ঠেলে দিল বামদিকে, নিজে ঝাঁপিয়ে পড়ল ডানে। যদিও দরজার আড়াল নেয়ার আগেই প্রচণ্ড আওয়াজে গর্জে উঠল রাইফেল।

‘মারিয়া, মাটিতে শুয়ে থাকো!’ গলা উঁচিয়ে বলল রানা।

‘কিন্তু, রানা…’

‘একদম নড়বে না!’ চাপা স্বরে সতর্ক করল রানা। একদৌড়ে লবির জানালার কাছে পৌঁছে লাফ দিয়ে টপকে গেল চৌকাঠ। আড়াল থেকে জানালা দিয়ে দেখল রাইফেলের নলে রোদের সোনালি ঝিলিক। শুকনো খাবারের দোকানের ছাতে এখনও রয়ে গেছে আততায়ী।

রানা ওয়ালথার পিপিকে বের করার আগেই আবারও গর্জে উঠল রাইফেল। মারিয়ার মাথার তিন ইঞ্চি ওপরে কাঠের দেয়ালে বিধল বুলেট। ক্রল করে দরজার দিকে চলল মেয়েটা। মনে মনে খুশি হলো রানা, সঠিক কাজই করছে মারিয়া।

চোখ সরিয়ে দোকানের হাতের দিকে চেয়ে লোকটাকে আর দেখতে পেল না রানা। যদিও কানে এল কার যেন ছুটে চলার ধুপ-ধাপ আওয়াজ। দোকানের ধুলোভরা জানালার ওদিকে কালো স্যুট পরা এক লোক। দোকান থেকে বেরিয়ে রাস্তায় পড়ল সে। দৌড়ের গতি কালবৈশাখী ঝড়ের মত। দেখতে না দেখতে রাস্তার বাঁক ঘুরে হারিয়ে গেল লোকটা।

মারিয়া যেন মোটেল থেকে না বেরোয়, সেজন্যে হাতের ইশারা করে ছুটে রাস্তায় চলে এল রানা। শুকনো খাবারের দোকানে ঢুকে দেখতে পেল একদিকে সরু সিঁড়ি। একেকবারে তিনটে করে ধাপ ডিঙিয়ে উঠে এল ছাতে। বুঝতে দেরি হলো না যে, পলাতক আততায়ীকে গুলি করার সুযোগ হারিয়ে গেছে। এখন আর ছাতে কেউ নেই। ফাঁকা পড়ে আছে নিচে রাস্তা। ছাতে একগাদা মেক্সিকান সিগারেটের ফিল্টার আর একটা সমব্রেরো হ্যাট। রোদে চকচক করছে তামার গুলির কিছু খোসা।

সিঁড়ি বেয়ে নেমে এল রানা। ওর দিকে চেয়ে চওড়া হাসি দিল দোকানের মালিক। থরথর করে কাঁপছে তার বিশাল ভুঁড়ি। ‘আপনার মতই ট্যুরিস্ট! দু’দিন হলো আমার দোকানের ছাত ভাড়া নিয়েছিল!’

‘ট্যুরিস্ট?’ তিক্ত সুরে বলল রানা।

‘সি।’

‘চেহারার বর্ণনা দিতে পারবেন?’

ঢালু দু’কাঁধ ঝাঁকাল দোকানের মালিক। ‘আপনার চেয়ে বেশ কম হবে লম্বায়। কালো চুল। কালো চোখ। তবে চিকন গড়নের লোক। কেমন যেন ঘাবড়ে যাওয়া চেহারা।’

এই বর্ণনা থেকে কাউকে চেনার উপায় নেই। দোকান থেকে বেরিয়ে মারিয়াকে নিয়ে আবার মোটেলের লবিতে ঢুকল রানা। ক্লার্ককে জানাতেই ট্যাক্সি-ক্যাবের কোম্পানিতে ফোন দিল সে। ওদিকের লোকটাকে জানাল, একবার মাঝে বিরতি নিয়ে সেনোর রানা ও তাঁর স্ত্রী সোজা যাবেন এয়ারপোর্টে।

লবির আরেকপ্রান্তে মারিয়াকে নিয়ে এল রানা। চেয়ার টেনে বসল ওরা। ‘লোকটা এসেছে দু’দিন আগে,’ বলল রানা।

‘তো?’ ওর চোখে তাকাল মারিয়া।

‘তুমি নিজে এখানে কবে এসেছ?’

‘চারদিন হলো।’

‘তোমার কি মনে হয় তোমাকে চিনে গিয়েছিল সে?’ চোখ সরু করে কী যেন ভাবল মারিয়া। রানার কথায় বিব্রত বোধ করছে। কয়েক সেকেণ্ড পর মাথা নাড়ল। ‘আমার তা মনে হয় না।’

‘নতুন মিশন পাওয়ার আগে কী ধরনের কাজ করছিলে?’ জানতে চাইল রানা।

‘যারা ব্রিটেনে মেক্সিকান ড্রাগ পাচার করছে, তাদের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ করছিলাম আমরা। পুলিশের সাহায্য নিয়ে কয়েকজন ড্রাগ লর্ডের ক্ষতি করে দিই। তবে আমাদের দলের চারজন মারা গেলে আমাকে লুকিয়ে পড়তে হয়েছে।’

‘অর্থাৎ ড্রাগ লর্ডদের র‍্যাকেট তোমরা ভাঙতে পারোনি।’ চোখ নিচু করে মাথা দোলাল মারিয়া। ‘মেক্সিকান ড্রাগ লর্ডদের দলে আছে শত শত লোক।’

জানালা দিয়ে শুকনো খাবারের দোকান দেখল রানা। ‘সব মিলিয়ে এ-মিশনে তোমাদের, কতজনকে পাঠানো হয়েছিল?’

‘আমাকে নিয়ে পাঁচজন।’

‘অবাক না হয়ে পারলাম না,’ বিরক্তি চেপে বলল রানা।

‘বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। নার্কোটিক ডিভিশন থেকে বলা হয়েছিল তথ্য সংগ্রহ করার জন্যে। লড়তে নয়।’

‘কিন্তু তোমরা ধরা পড়ে গেলে শত্রুপক্ষের চোখে।’

রেগে গিয়ে রানার চোখে তাকাল মারিয়া। ‘এমনটা তো যে-কোন দলের ভাগ্যেই ঘটতে পারে।’

কনুই ধরে ওকে চেয়ার থেকে টেনে তুলল রানা। জানালা দিয়ে দেখেছে, এইমাত্র এসে থেমেছে ট্যাক্সি-ক্যাব। ‘চলো, এখানে আর নয়। একবার একজনের সঙ্গে দেখা করব। কিছু জিনিস ফিরিয়ে দেব। তারপর কয়েক দফা বিমান পাল্টে পৌঁছে যাব লণ্ডনে।’

রানার কণ্ঠস্বরে কঠোরতা বুঝে আপত্তি তুলল না মারিয়া হ্যারল্ড। ভেজা বেড়ালের মত চুপচাপ মোটেল ত্যাগ করে গিয়ে উঠল ট্যাক্সি-ক্যাবে। স্কার্ট সরে যাওয়ায় ওর লোভনীয় ফর্সা উরু বেরিয়ে আছে, তবে এখন আর ওদিকে মন নেই বেরসিক রানার।

সকল অধ্যায়

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন