৫. আছিয়া (আ)

৫. আছিয়া (আ)

মারইয়াম বিনতে ইমরান, ফাতেমা বিনতে মুহাম্মদ, রাসূলুল্লাহ স্ত্রী খাদীজা ও ফেরাউনের স্ত্রী আছিয়া জান্নাতী রমণীদের সরদার হবে।

سيدات نساء أهل الجنة عن جابر (رض) قال قال رسول الله بعد مریم بنت عمران فاطمه وخديجة واستي امرأة فرعون .

জাবের (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন : জান্নাতী রমণীদের সরদার মারইয়াম বিনতে ইমরান এর পরে ফাতেমা, খাদীজা ও ফেরাউনের স্ত্রী আছিয়া।

(তাবরানী : সিলসিলা আহাদিস সহীহা লি আলবানী; হাদীস নং-১৪৩৪))

পরিচিতি

আছিয়া (রা) ফিরআউন-এর স্ত্রী, তিনি একজন পূত চরিত্রের অধিকারিণী ছিলেন। বনী ইসরাঈল-এর সাথে তার আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত আছে যে, আছিয়া (রা) সম্পর্কে মূসা (আ:)-এর চাচী অথবা ফুফী ছিলেন। কুরআন কারীমে আছিয়া (রা)-এর নাম উল্লেখ নাই। অবশ্য ইমরাআতু ফিরআউন (অর্থাৎ ফিরআউনের স্ত্রী) শব্দাকারে দুই স্থানে উল্লেখ রয়েছে : ২৮ : ৯ ও ৬৬ : ১১। হাদীসে ফির’আউনের স্ত্রী আছিয়া (রা)-র নাম উল্লেখ রয়েছে আল-খাতীব আত-তাবরীযী, মিশকাত, দিল্লী, পৃ. ৫৭৩)। বনী ইসরাঈলকে দূর্বল করে দমানোর উদ্দেশ্যে একদা ফির’আউন পরিকল্পনা করল যে, ভবিষ্যতে তাদের মধ্যে ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করলে তাদেরকে হত্যা করা হবে এবং কন্যা সন্তানদেরকে জীবিত রাখা হবে।

ইতিমধ্যে মূসা (আ:) জন্মগ্রহণ করলে তাঁর মাতা চিন্তিত হয়ে পড়লেন। আল্লাহ তা’আলার আদেশক্রমে তার মাতা তাঁকে (কাঠের তৈরি বাক্সে রেখে) নদীতে ভাসিয়ে দেন। এ বাক্সটি ফির’আউন পরিবারের হস্তগত হয়েছিল। শিশুটির প্রতি তাদের দয়া হল এবং ফিরআউনের স্ত্রী (ইমরাআতু ফিরআউন) বললেন, “এ শিশুটি আমাদের চক্ষুর প্রশান্তিদায়ক হবে, তাকে হত্যা করবে না। এভাবে এসে মূসা (আ:)-কে শুধু ফির’আউনের ব্যক্তিবর্গের হাত হতেই রক্ষা করেন নাই, বরং তাঁকে ফির’আউনের প্রাসাদে লালন-পালনেরও ব্যবস্থা করেন।

সূরাতুত-তাহরীমায় আছিয়া (রা)-এর ঈমানের বিবরণ রয়েছে। মুফাসসিরগণ বলেন যে, যখন মূসা (আ:) ফির’আউনের যাদুকরদেরকে পরাস্ত করেছেন তখন আছিয়া তাঁর প্রতি ঈমান আনেন। এতে ফির’আউনকে তাকে বিভিন্ন উপায়ে নির্যাতন করতে থাকে। ফিরআউনের নির্দেশে তাকে ভারী পাথরচাপা দিয়ে রাখা হয়। এ অবস্থায় তিনি দু’আ করেন।

قالت رب ابني لي عندك بينا في الجثة وتجني من فرعون وعمله وتجني من القوم الظلمين.

“হে পালনকর্তা! তোমার জান্নাতে আমার জন্য একটি ঘর তৈরি করিও এবং আমাকে উদ্ধার কর ফিরআউন ও তার দুষ্কৃতি হতে, আমাকে উদ্ধার কর সীমালংঘনকারী সম্প্রদায় থেকে।” (সূরা-৬৬ তাহরীম : আয়াত-১১)

সঙ্গে সঙ্গেই আল্লাহ তা’আলা আছিয়া (রা)-এর রূহকে তার নিজের নিকট তুলে নিলেন। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত আছে যে, একদা ফির’আউন এসে আছিয়া (রা)-এর প্রতি নির্যাতন চালাচ্ছিল তখন মূসা (আ:) পার্শ্ববর্তী রাস্তা দিয়ে গমন করছিলেন। এ নির্যাতন প্রত্যক্ষ করে মূসা (আ:) দুআ করলেন, “হে আল্লাহ! আপনি আছিয়া (রা)-এর জ্বালা-যন্ত্রণা দূর করে দিন।” অতঃপর আল্লাহ তা’আলা আছিয়া (রা)-কে জান্নাতে তার জন্য নির্ধারিত বাসস্থান দেখিয়ে দেন, এতে তিনি স্মিত হাস্য করলেন। (দ্র. মুহাম্মদ বাকির মাজলিসী, হায়াতুল-কুব, পৃ. ৩৭৯)।

আছিয়া (রা) জান্নাতের সর্বশ্রেষ্ঠা নারীদের অন্যতম।

সকল অধ্যায়

১. ১. উম্মুল মু’মিনীন খাদীজা (রা)
২. ২. উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা (রা)
৩. ৩. উম্মুল মুমিনীন হাফসা (রা)
৪. ৪. মারইয়াম (আ)
৫. ৫. আছিয়া (আ)
৬. ৬. উম্মু সুলাইম (রা)
৭. ৭. যয়নব বিনত রাসূলুল্লাহ
৮. ৮. রুকাইয়া বিনত মুহাম্মদ
৯. ৯. উম্মু কুলছুম বিনত নবী করীম (ﷺ)
১০. ১০. ফাতিমা বিনত রাসূলিল্লাহ
১১. ১১. সুমাইয়া (রা)
১২. ১২. উম্মুল মুমিনীন সাদা বিনতে যামআ (রা)
১৩. ১৩. উম্মুল মুমিনীন যয়নব বিনতে খুযাইমা (রা)
১৪. ১৪. উম্মুল মু’মিনীন উম্মু সালামা (রা)
১৫. ১৫. উম্মুল মুমিনীন যয়নব বিনতে জাহাশ (রা)
১৬. ১৬. উম্মুল মু’মিনীন জুয়াইরিয়া (রা)
১৭. ১৭. উম্মুল মুমিনীন উম্মু হাবীবা (রা)
১৮. ১৮. উম্মুল মু’মিনীন সফিয়্যা (রা)
১৯. ১৯. উম্মুল মুমিনীন মায়মূনা (রা)
২০. ২০. উম্মুল মুমিনীন রায়হানা (রা)
২১. ২১. উম্মুল মু’মিনীন মারিয়া কিবতিয়া (রা)
২২. ২২. হালীমা (রা)
২৩. নবী করীম (ﷺ)-এর বহু বিবাহের সমালোচনার প্রতিবাদ

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন