৪. মারইয়াম (আ)

৪. মারইয়াম (আ)

মারইয়াম বিনতে ইমরান, ফাতেমা বিনতে মুহাম্মদ, রাসূলুল্লাহ স্ত্রী খাদীজা ও ফেরাউনের স্ত্রী আছিয়া জান্নাতী রমণীদের সরদার হবে-

سيدات نساء أهل الجنة عن جابر (رض) قال قال رسول الله بعد مریم بنت عمران فاطمة وخديجة واسبة امرأة فرعون .

জাবের (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূলুল্লাহ ইরশাদ করেছেন : জান্নাতী রমণীদের সরদার মারইয়াম বিনতে ইমরান এর পরে ফাতেমা, খাদীজা ও ফেরাউনের স্ত্রী আছিয়া।

(তাবরানী : সিলসিলা আহাদিস সহীহা লি আলবানী; হাদীস নং-১৪৩৪))

নাম ও পরিচয়

মারইয়াম (আ) ছিলেন ঈসা (আ)-এর মাতা। বাইবেলের ইংরেজি অনুবাদে তাঁকে Mary নামে উল্লেখ করা হয়েছে এবং উর্দু ও আরবী বঙ্গানুবাদে সাধারণত কুরআন কারীম-এর অনুসরণ করে মারইয়ামন্না শব্দই ব্যবহার করা হয়েছে। ইয়াহুদীদের ধর্মীয় সাহিত্যে মারইয়াম মূসা (আ) ও হারুন (আ)-এর বোনের নাম কুরআন কারীমে মারইয়াম বিনতে ইমরান (ইমরানের কন্যা) (যা সূরা তাহরীমের ১২ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে : ১২) এবং উত্থত হারূন (হারুনের ভগ্নী) (সূরা মারইয়ামের ২৮ নং আয়াতে) নামেও উল্লেখ করা হয়েছে। তার জন্ম ও প্রাথমিক অবস্থার বিবরণ সূরা আলে ইমরানে বর্ণিত হয়েছে এবং পরবর্তী অবস্থা, বিশেষত ঈসা (আ)-এর জন্মের বিশদ বর্ণনা এসেছে সূরা মারইয়ামেই। আল্লামা ইবন কাছীর মারইয়াম (আ)-কে সুলায়মান (আ)-এর বংশধর বলে উল্লেখ করেছেন এবং ইহাও উল্লেখ করেছেন যে, কুরআন মাজীদে আল্লাহর বাণী

إن الله اشطفي أدم وثوقا واد ابرهيم وأن عثران على العلمين.

“আদমকে, নূহকে ও ইবরাহীম (আ)-এর বংশধর এবং ইমান-এর বংশধরকে আল্লাহ বিশ্বজগতে মনোনীত করেছেন” (সূরা আলে ইমরান : ৩৩)

আয়াতে ইমরান শব্দটি দ্বারা মারইয়াম (আ)-এর পিতাকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে। ইন কাহীর মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক ইন ইয়াসার-এর বর্ণনায়, ইমরান- এর বংশ তালিকা নিম্নরূপ বর্ণনা করেছেন।

মারইয়াম (আ)-এর জন্ম

উল্লেখিত ইমরান মূসা (আ)-এর পিতা এবং দ্বিতীয় ইমরান মারইয়াম (আ)-এর পিতা। আর উভয়ের মধ্যে প্রায় ১৮০০ বৎসরের ব্যবধান- এর কোনও সন্তান ছিল না। তার স্ত্রী হান্না বিবৃত ফাকু তিনি ছিলেন বন্ধ্যা যিনি পরবর্তী সময়ে মারইয়াম (আ)-এর মা হন। একদিন হান্না একটি পাখিকে ঠোটের সাহায্যে তার বাচ্চাকে আহার করতে দেখলেন। তখন তাঁর অন্তরে খুব আঘাত লাগল এবং সন্তানের কামনায় তিনি অস্থির হয়ে পড়লেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবে তিনি আল্লাহর নিকট হাত তুলে দু’আ করলেন। আল্লাহ তা’আলা তার দু’আ কবুল করলেন এবং কিছুদিন পরেই তিনি আশান্বিত হলেন। এ আশান্বিত অবস্থায়ই তিনি মানত করলেন যে, ভাবী সন্তানকে তিনি বায়তুল মাকদাস এর খিদমতে উৎসর্গ করবেন। যেমন কুরআন মাজীদে উল্লিখিত হয়েছে

وقالت اشرا عمران رب إني نذرت لك ماني بطني مجرا نتمنى انك انت السميع العليم. قلما وضعتها قالت رب إني وضعنا أثني والله أعلم ما وضعت ولبس الذكر كائى واى سبها مريم وإنی أبا بك ونريتها من الشيطان الرجيم.

যখন ইমরানের স্ত্রী বলেছিল : হে আমার রব! আমার গর্ভে যা আছে তা একান্ত তোমার জন্য আমি উৎসর্গ করলাম। অতএব তুমি আমার নিকট থেকে তা কবুল কর, তুমি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। অতঃপর যখন সে উহাকে প্রসব করল, তখন সে বলল : হে আমার রব! আমি তো কন্যা প্রসব করেছি। সে যা প্রসব করেছে আল্লাহ তা ভাল করেই জানেন। ছেলে সন্তান কন্যা সন্তানের মত নয়! আমি উহার নাম মারইয়াম রেখেছি এবং অভিশপ্ত শয়তান থেকে তার ও তার বংশধরদের জন্য তোমার আশ্রয় নিচ্ছি। (সূরা আলে ইমরান : ৩৫-৫৬)

আল্লামা ইবনে কাসীর লিখেছেন যে, মারইয়াম-এর মা কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ায় এ জন্য আক্ষেপ করেছিলেন যে, তখনকার সময়ে ইয়াহুদীগণ বায়তুল মাকদাস এর খেদমতের জন্য তাদের পুত্র সন্তানদেরকে উৎসর্গ করত। হান্না তার মানতের নিয়্যত পরিবর্তন করলেন না, অবশ্য মারইয়াম-এর পক্ষে যেহেতু পুরুষ খাদিম ও পুরোহিতদের ন্যায় দায়িত্ব পালন করা অসম্ভব ছিল, এজন্য তাকে ইবাদত বন্দেগীর জন্য উৎসর্গ করে দেন এবং এ শিশুর জন্য ও তার পরবর্তী বংশধরদের জন্য আল্লাহর নিকট এ দুআ করলেন, “হে আল্লাহ! তুমি তাকে অভিশপ্ত শয়তান থেকে রক্ষা কর।” একজন মা তার কলিজার টুকরা সন্তানের জন্য যে হাদিয়া ও উপঢৌকন পেশ করতো, তন্মধ্যে এ দু’আ সর্বশ্রেষ্ঠ উপঢৌকন। সায়্যিদ কুতুব- এর ভাষায় এ হৃদয়-নিঃসৃত বাণী এবং অন্তরের আবেগ ও আকুতি- আপন সন্তানকে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে সোপর্দ করে দেয়া ইহা অপেক্ষা উত্তম ও কল্যাণকর আর কোন জিনিসই ছিল না। আল্লাহ তাআলা মারইয়ামের মাতার এ অন্তর-নিঃসৃত দু’আ কবুল করেছিলেন। আবু হুরায়রা (রা) নবী করীম (ﷺ) হতে নিম্নোক্ত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন

مابین مولود وله من الشيطان حين يولد نبتهل ابراین مته إياه الأ مريم وابنتها.

সকল শিশুই জন্মগ্রহণের সময় শয়তান তাকে স্পর্শ করে। অতঃপর তার সে স্পর্শের ফলে শিশু চীৎকার করে কেঁদে উঠে। কিন্তু মারইয়াম ও তার পুত্র শয়তানের এ স্পর্শ থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। ইবন কাসীর এ বিষয়-বস্তুর ওপর কতিপয় হাদীস উল্লেখ করেছেন (তাফসীরুল কুরআনিল আজীম, ১ম, ৩৫৯০)

মারইয়াম (আ:) প্রতিপালন

কুরআন মাজীদে মারইয়াম (আ:)-এর মায়ের দুআ কবুল হওয়া এবং তার উত্তম হাতে প্রতিপালিত হওয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে নিম্নোক্ত আয়াতে

ئا, گنتها ني و اثبتا ئائا تتبته رئها بتبول

“তার পালনকর্তা তাকে সাগ্রহে কবুল করলেন এবং তাকে উত্তমরূপে লালন-পালন করলেন এবং তিনি তাকে যাকারিয়ার তত্ত্বাবধানে রেখেছিলেন।” (সূরা আলে ইমরান : ৩৭)

ইবন কাছীর ইবন ইসহাক এর সূত্রে লিখেছেন যে, শৈশবেই মারইয়াম-এর পিতা ইন্তেকাল করেন এবং তিনি এতীম হয়ে যান। অন্য আর একজনের সূত্রে এ কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ঐ সময়ে বনী ইসরাঈল গোত্রের মধ্যে ভীষণ দূর্তি চলেছিল, এজন্য তার তত্ত্বাবধানের প্রশ্ন দেখা দিল। কারণ যা-ই হউক না কেন, এটাই সঠিক ঘটনা যে, তাঁর তত্ত্বাবধানের প্রশ্নটি অবশ্যই উঠেছিল। এ পরিপ্রেক্ষিতে কুরআন মাজীদের আলোকে এ কথা আমাদের স্মরণ রাখা উচিত যে, মারইয়াম-এর মা তাকে উপাসনালয়ে সোপর্দ করে দেয়ার মানত করেছিলেন, যাতে গোটা জীবন তিনি ইবাদত বন্দেগীতে কাটাতে পারেন। আর যেহেতু তিনি কন্যা সন্তান ছিলেন সেহেতু এটা খুবই জটিল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে, উপাসনালয়ের বিভিন্ন পুরোহিতের মধ্যে কে তার অভিভাবক নিযুক্ত হবেন। সকল পুরোহিতই তার নিজের তত্ত্বাবধানে রাখার আগ্রহী ছিলেন। কুরআন মাজীদের বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, মারইয়াম এর তত্ত্বাবধানের বিষয়টি নিয়ে তুমুল বাক-বিতণ্ডা হয় এবং অবশেষে পুরোহিতগণের মধ্যে লটারী করে ইহার শান্তিপূর্ণ মীমাংসা বলে স্থিরীকৃত হল। এ বিষয়ে কুরআন মাজীদের ঘোষণা

ذلك من أنباء القبب وجيه اليك . وما گنت لديهم إث يثقون أثنهم انهم يثئ مريم – وما ثت لديهم إذ و

ইহা অদৃশ্য বিষয়ের খবর যা তোমাকে ঐশী বাণী দ্বারা অবহিত করছি। ও মারইয়াম-এর তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব তাদের মধ্যে কে গ্রহণ করবে, এর জন্য যখন তারা (উপসনালয়ের পুরোহিতগণ) তাদের কলম নিক্ষেপ করতে ছিল তুমি তুন তাদের নিকট ছিলে না এবং তারা যখন বাদানুবাদ করছিল, তৰনও তুমি তাদের নিকট ছিলে না’ (সূরা আলে ইমরান : ৪৪)।

আবু বকর ইবনুল আরাবী এর বর্ণনা এভাবে দিয়েছেন, যাকারিয়া বললেন : মারইয়াম-এর তত্ত্বাবধানের আমিই বেশী হকদার, কারণ তার খালা হল আমার স্ত্রী। বনী ইসরাঈল গোত্রের ব্যক্তিবর্গ বলল : আমাদেরই বেশী হক, কারণ সে আমাদের আলিম-এর কন্যা। অতএব লটারী করার সিদ্ধান্ত হল এবং এ শর্ত আরোপ করা হল যে, প্রত্যেকে প্রবাহমান পানিতে তার কলম ফেলবে। যার, কলম স্থির থাকবে এবং স্রোতের সাথে ভেসে যাবে না, সে-ই তত্ত্বাবধায়ক হবে। এরপর ইবনুল আরাবী নবী করীম (ﷺ)-এর নিম্নোক্ত হাদীসটি উদ্ধৃত করেছেন

قال النبي ل تجرت الآثم وعان قلم زكريا وكانت أية لأنه تبي تجرى الأيات عليهم.

সকলের কলমই ভেসে গেল শুধু যাকারিয়ার কলম স্থির রইল। এটা ছিল একটি মুজিযা, কারণ তিনি নবী ছিলেন। অতএব তাদের ওপর তার মুজিযা কার্যকর হল’ (আহকামুল কুরআন, কায়রো ১৩৩১ হি. ১ খ. ১১৪ আরও দ্র. আল-বিদায়া : ওয়ান-নিহায়া : ২য় খ, ৫৮) ।

যা হউক, কুরআন মাজীদে এ বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, উপাসনালয়ের এ পবিত্র আমানাত অর্থাৎ মারইয়াম (আ:) যাকারিয়া (আ:)-এর তত্ত্বাবধানে আসলেন। ইব্ন কাছীর ইবন ইসহাক ইবন জারীর এবং অন্যান্য মুফাসসির এ অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন যে, যাকারিয়া মারইয়াম এর খালু ছিলেন,কারো কারো মতে এ মতটিও উল্লেখ করেছেন যে, তিনি মারইয়াম এর ভগ্নীপতি ছিলেন। কারণ হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে, সেখানে তিনি ইয়াহইয়া ও ঈসা (ﷺ) র সাক্ষাত পেলেন, তারা ছিলেন পরস্পর খালাতো ভাই। কিন্তু স্বয়ং ইবনে কাছীরে আর একটি উত্তম ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আর তা হলো (যাকারিয়াকে তাঁর তত্ত্বাবধায়ক করলেন)। এর সহিহ অধিক সঙ্গতিপূর্ণ। তা হল- আল্লাহ তাআলা যাকারিয়াকে তার তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করলেন তার নেক আমল ও কল্যাণের কারণে, যাতে তিনি যাকারিয়ার অগাধ ইলম ও আমাল-ই সালিহ (নেক কাজ) আয়ত্ত করতে পারেন দলীল-প্রমাণের দ্বারা এটাই প্রমাণিত করার চেষ্টা করেছেন যে, যাকারিয়া (আ:) এর মারইয়াম (আ:)-এর খালার স্বামী ছিলেন। এ মতটিই অধিক গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়। কারণ পূর্বেই উল্লেখিত হয়েছে যে, মারইয়াম এর অ পূর্বে বন্ধ্যা ও নিঃসন্তান ছিলেন। আল্লাহর নিকট তার প্রার্থনায় একমাত্র কন্যা মারইয়াম -এর জন্ম হয়।

পরিণত বয়সে মারইয়াম (আ:)

মারইয়াম (আ:) যখন পরিণত বয়সে পৌছলেন তখন বাইতুল মাকদাস-এর উপাসনালয়ে একটি কক্ষে ইয়াহুদীগণ (যাকে মিহরাব বলে থাকে) দিবারাত্র ইবাদতে লিপ্ত থাকতে লাগলেন। আর যখনই যাকারিয়া (আ:) খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য তাঁর নিকট গমন করতেন তখনই তার কক্ষে আল্লাহর নি’আমত (ফল-ফলাদি) দেখতে পেতেন। কুরআন মাজীদে উল্লেখিত হয়েছে

ما دخل عليها زكريا الخراب و وجد عندها رژئا، قال بمريم أنى لك هذا ، قالت هو من عند الله إن الله يرزق

“যখনই যাকারিয়া (আ:) কক্ষে তার সাথে সাক্ষাত করতে যেত, তখনই তার নিকট খাবার সামগ্রী দেখতে পেত। সে বলত, হে মারইয়াম! এসব তুমি কোথা থেকে পাও। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত রিযিক দান করেন। (সূরা আলে ইমরান : ৩৭)

যাকারিয়া (আ:) তাঁর নিকট শীতকালে গ্রীষ্মকালীন ফল এবং গ্রীষ্মকালে শীতকালীন ফল দেখতে পেতেন’ (তাফসীরুল কুরআনিল আজীম ১ম ৩৬০ আরও দ্র, আল-বিদায়া ; ওয়ান-নিহায়া, ২, ৫৮)

এরই সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ঘটনা ফাতিমাতুয যাহরা (রা) প্রসঙ্গে বর্ণনা করা হয়ে থাকে যে, নবী করীম (ﷺ) যখন তাকে জিজ্ঞেস করলেন, বেটী তুমি এটা কোথায় গেয়েছে? তিনি বললেন, হে পিতা! উহা আল্লাহর পক্ষ থেকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত রিযিক দান করেন। তখন রাসূল (ﷺ) ফাতিমা (রা)-কে মারইয়াম (আ:)- এর সাথে সামঞ্জসশীল বলে আখ্যায়িত করলেন এবং সে খাবারে এতই বরকত হল যে, নবী করীম (ﷺ) তাঁর সকল পত্নী, আলী, ফাতিমা ও হাসান হুসাইন (রা) সকলেই তৃপ্তিসহকারে পেট ভর্তি করে ভক্ষণ করলেন ও বাকী খাবার প্রতিবেশীদের মধ্যে ভাগ করে দেয় হল। (দ্র. উল্লিখিত গ্রন্থ, ১৩, ৩৬০)।

মহতি নারী মারইয়াম (আ:)

কুরআন মাজীদে মারইয়াম (আ:)-কে সতী-সাধ্বী, নেককার এবং তখনকার সময়ে বিশ্বের নারী নেত্রী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর তাকওয়া, পরহেযগার ও ইবাদতের কথা উল্লেখ করত তার উচ্চ মর্যাদা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে, ফেরেশতা তার নিকট আগমন করে

وا نالت المليك بمريم إن الله اصطنك وطهرك واضطتك على نساء العليين. مریم اثني ليك واسجدی وارکین مع الركعب.

“আর যখন ফেরেশতাগণ বলেছিল হে মারইয়াম! আল্লাহ তোমাকে মনোনীত ও পবিত্র করেছেন এবং বিশ্বের নারীদের মধ্যে তোমাকে মনোনীত করেছেন। হে মারইয়াম! তোমার পালনকর্তার অনুগত হও ও সিজদা কর এবং যারা রুকূ করে তাদের সাথে রুকূ কর। (সূরা আলে ইমরান : ৪২-৪৩)।

ঈসা (আ:)-এর জন্মের সুসংবাদ

কুরআন মাজীদে সে সময়ের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে যখন কুমারী মারইয়ামকে ফেরেশতা এসে একটি পুত্র সন্তানের সুসংবাদ জানালেন তখন তিনি যারপর সে বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে গেলেন

إذ قالت المليئة بمريم إن الله يبرك بكلتة نه، اس المسبع عيسى ابن مريم وجبها في الدنيا الأخرة ومن النقيب . ويعلم الناس في المهد وكه سن اليه. قالت رب الی بگو لى ولد ولم يستنی بشر، قال ذلك الله بثل مایا د إذا قضى أثرا نائما ټول له كن

“আর, যখন ফেরেশতাগণ বলল, হে মারইয়াম! আল্লাহ তোমাকে তার পক্ষ থেকে একটি কথার সুসংবাদ দিচ্ছেন। তার নাম মাসীহ মারইয়াম তনয় ঈসা, সে দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত এবং সান্নিধ্যপ্রাপ্তগণের অন্যতম হবে। সে দোলনায় থাকা অবস্থায় ও পরিণত বয়সে মানুষের সাথে কথা বলবে এবং সে হবে নেককারদের একজন। সে বলল, হে আমার পালনকর্তা। আমাকে তো কোন পুরুষ স্পর্শ করে নি। আমার সন্তান হবে কিভাবে? তিনি বললেন, এভাবেই আল্লাহ যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন। তিনি যখন কিছু স্থির করেন তখন বলেন, দুও” এবং তা হয়ে যায়” (সূরা আলে ইমরান : ৪৫-৪৭)।

ঈসা মাসীহ-এর অলৌকিক জন্মের বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে সূরা মারইয়ামে। কুরআন মাজীদে এত স্পষ্টভাবে এ অলৌকিক জন্মের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে যে, তাতে আর কোনও প্রকার সন্দেহের সুযোগ থাকে না। ইয়াহুদী ও খৃষ্টানগণ যেহেতু মাসীহ – এর জন্ম প্রসঙ্গে বহু অলীক কল্প-কাহিনী প্রসিদ্ধ করে রেখেছিল, সেহেতু সূরা মারইয়াম-এ ঈসা (আ:)-এর জন্মের উল্লেখ করে বলা হয়েছে : (হে রাসূল!) বর্ণনা কর এ গ্রন্থে উল্লিখিত মারইয়ামের কথা, যখন সে তার পরিবারবর্গ থেকে আলাদা হয়ে নিরালায় পূর্বদিকে একস্থানে আশ্রয় নিল, অতঃপর তাদের থেকে নিজকে আড়াল করবার জন্য সে পর্দা করল। অতঃপর আমি তার নিকট আমার রূহ (জিবরাঈল)- কে পাঠালাম, সে তার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করল। মারইয়াম বলল, তুমি যদি আল্লাহকে ভয় কর তবে আমি তোমার থেকে দয়াময়ের আশ্রয় নিচ্ছি। সে বলল, আমি তো কেবল তোমার প্রতিপালক-প্রেরিত। তোমাকে এক পবিত্র পুত্র হওয়ার সুসংবাদ দিচ্ছি। সে বলল কীভাবে আমার পুত্র হবে যখন আমাকে কোন পুরুষ স্পর্শ করে নাই এবং আমি ব্যভিচারিণীও নই?” সে বলল, এমনিতেই হবে। তোমার পালনকর্তা বলেছেন, এটা আমার জন্য সহজসাধ্য এবং আমি তাকে এজন্য সৃষ্টি করব যেন সে হয় মানুষের জন্য এক নিদর্শন ও আমার নিকট থেকে এক অনুগ্রহ। এতে এক স্থিরীকৃত বিষয়। তৎপর সে গর্ভে উহাকে ধারণ করল। অতঃপর তাসহ এক দূরবর্তী স্থানে চলে গেল। প্রসব-বেদনা তাকে এক খেজুর গাছের নীচে আশ্রয় নিতে বাধ্য করল। সে বলল, হায়, তার পূর্বে আমি যদি মৃত্যুবরণ করতাম ও লোকে স্মৃতি থেকে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হতাম। ফেরেশতা তার পার্শ্ব থেকে ডেকে তাকে বলল, তুমি দুঃখ করো না, তোমার পাদদেশে তোমার পালনকর্তা এক নহর সৃষ্টি করেছেন, তুমি হোমার দিকে খেজুর গাছের ডালা নাড়া দাও, উহা তোমাকে তাজা খেজুর দান করবে, সুতরাং আহার কর, পান কর ও চক্ষু জুড়াও। মানুষের মধ্যে কাউকে যদি তুমি দেখ তখন বলিও, আমি দয়াময়ের উদ্দেশ্যে মৌনতা অবলম্বনের মানত করেছি। অতএব আজ ‘আমি কিছুতেই কোন মানুষের সাথে বাক্যালাপ করব না। অতঃপর সে সস্তানকে নিয়ে তার সম্প্রদায়ের নিকট উপস্থিত হল। তারা বলল, হে মারইয়াম! তুমি এক আশ্চর্য কাণ্ড করে বসেছ। হে হারুন- ভগ্নী তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিল না এবং তোমার মাও ছিল না ব্যভিচারিণী। অতঃপর মারইয়াম সন্তানের প্রতি ইঙ্গিত করল। তারা বলল, যে কোলের শিশু তার সাথে আমরা কেমন করে কথা বলব? সে বলল, আমিতো আল্লাহর বান্দা তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন, আমাকে নবী নির্বাচন করেছেন, যেখানেই আমি থাকি না কেন, তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যতদিন জীবিত আছি ততদিন সালাত ও যাকাত আদায় করতে- আর আমাকে আমার মায়ের প্রতি অনুগত করেছেন এবং তিনি আমাকে করেন নাই উদ্ধত ও হতভাগ্য। আমার প্রতি শান্তি যেদিন আমি জন্ম লাভ করেছি। যেদিন আমার মৃত্যু হবে এবং যেদিন আমি জীবিত অবস্থায় পুনরুথিত হবো। ইবুন কাছীর ঈসা (আ:)-এর অলৌকিক জন্ম প্রসঙ্গে বর্ণনা দিতে গিয়ে এ রহস্য বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহ তা’আলা”— (মারইয়াম-তনয়) বলে ঈসা (আ:)- কে তাঁর মায়ের সাথে সম্পর্কিত করেছেন এজন্য যে তাঁর কোন পিতা ছিল না। (তাফসীরুল কুরআনিল আজীম, ১ খ, ৩৬৪)।

ইবনুল আরাবী (মৃ. ৫৪২ হি.) লিখেছেন যে, তিনি ৪৮৫ হি. বায়ত লাহাম- এ খৃষ্টানদের গির্জার একটি গুহা দেখলেন, সেখানে একটি মস্ক খেজুর ডালা ছিল এবং সেখানকার পাদ্রীগণ সর্বসম্মতভাবে উহাকে বা মারইয়াম- এর খেজুর ডালা বলে অভিহিত করত। তাবারী ঈসা (আ:)-এর অলৌকিক জন্ম প্রসঙ্গে বর্ণনা দিতে গিয়ে সেখানে এ কথা প্রমাণ করেছেন যে, মু’জিযা : কেবল যে নবীগণ হতেই প্রকাশিত হবে তা নয়, বরং নবী নন এমন ব্যক্তি হতেও উহা প্রকাশ হতে পারে (আর তখন এ অলৌকিক ঘটনাকে কারামাত বলা হয়। সেখানে এ বিষয়টিও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, মারইয়াম নবী ছিলেন না (মাজমাউল বায়ান ফী তাফসীরিল করআন, বৈরুত ১৯৫৬ . ১৬ খ. ৩৬)।

মাওলানা হিফজুর রাহমান সীউহারবী মারইয়াম (ﷺ) -এর নবী হওয়া না হওয়া প্রসঙ্গে বিস্তারিত ও তথ্যবহুল আলোচনা করেছেন এবং পক্ষ-বিপক্ষ উভয় দলের দলিল-প্রমাণ বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন (কাসাসুল কুরআন, করাচী ১৯৭২ খৃ. ৪ খ, ২২-২৩)। আল্লামা কুরতবী উল্লেখ করেছেন যে, খ্রিস্টানদের ধারণা অনুযায়ী মারইয়াম (আ:)-এর বয়স ছিল ৫০ বৎসরের কিছু ওপরে। কেহ কেহ ৫৬ বসর বলে উল্লেখ করেছেন।

এখানে মারইয়াম (আ:) প্রসঙ্গে ইয়াহুদী খৃষ্টানদের ধারণার সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা করা সমীচীন হবে। সূরা নিসায় ইয়াহুদীদের ঘৃণ্য কর্মকারে উল্লেখ করে কুরআনে কারীমে বলা হয়েছে যে, তারা অন্যান্য জঘন্য অপরাধের পাশাপাশি মারইয়াম (আ:)-এর ওপর অপবাদ আরোপের জঘন্য অপরাধও করেছিল

وبگثرهم قولهم على بريمبهتانا عظيما.

ইয়াহুদীগণ (লা’নতপ্রাপ্ত হয়েছিল) তাদের কুফুরীর কারণে এবং মারইয়ামকে জন্য অপবাদ দেয়ার কারণে। (সূরা নিসা : ১৫৬)।

যেমন সূরা মারইয়াম- এ উল্লেখিত হয়েছে- ইয়াহুদীগণ প্রথমে মারইয়াম প্রসঙ্গে সন্দেহ পোষণ করে। কিন্তু ঈসা (আ:)- এর অলৌকিক জন্মের প্রমাণ যখন তার দোলনা থেকে মু’জিযাসুলভ কথা বলার মাধ্যমে পেল তখন হতবাককারী এ মহান ব্যক্তিত্ব প্রসঙ্গে ইয়াহুদীদের আর কোনরূপ সন্দেহ রইল না। অতঃপর তারা সতী-সাধ্বী মারইয়াম (আ:)-কে পরবর্তী ত্রিশ বৎসর পর্যন্ত কোন অপবাদ দেয় নাই, আর ঈসা (আ:)- কেও কখনও অবৈধ সন্তান বলে তিরস্কার করে নি। ঈসা (রা)-এর বয়স যখন ত্রিশ বৎসর হল এবং তিনি নবুওয়াতের কাজ আরম্ভ করলেন এবং চারিত্রিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা পেশ করলেন, তখন ইয়াহুদীগণ যারা প্রতীক্ষিত ঈসা মাসীহ-এর সাথে সামরিক সংঘর্ষে মাশগুল হবে বলে পূর্বেই স্থির করে রেখেছিল- তাই তাঁর বিরোধী হয়ে গেল। তারা কেবল ঈসা (আ:) প্রসঙ্গে কটুক্তি ও নিন্দাবাদ করেই ক্ষান্ত হল না, বরং তার সতী-সাধ্বী মাকে গুরুতর অপবাদ দিতে শুরু করে তখন থেকেই ইয়াহুদী সাহিত্যে মারইয়াম (আ:)-এর গর্ভে ঈসা (আ:)-এর অলৌকিক জন্ম অস্বীকার করা হয়।

সুতরাং নিবন্ধে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এবং সুসমাচারসমূহের সূত্রে এ কথা প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়েছে যে, ঈসা (আ)-এর জন্ম অলৌকিক ছিল না। যেমন লুকের সুসমাচারের সূত্রে বর্ণনা করা হয়েছে : “We are able, however, to advance a step further, whole sections of the first two chapters of L. K. bear witness against the virgin birth” Encyclopaedia Biblica ofa, o, ৩৯৫)। উপরন্ত Orgin of virgin theory_

এর বিভিন্ন কারণ চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়েছে আর এ কথাও প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে যে, মারইয়াম (আ:) কোন উচ্চ পর্যায়ের আধ্যাত্মিক মর্যাদার অধিকারিণী ছিলেন না, বরং তিনিও ওয়ারিসী সূত্রে প্রাপ্ত পাপের কলংক থেকে বেঁচে থাকতে পারেন নি। খৃষ্টানগণ মারইয়াম (আ:)- কে সম্মান প্রদর্শনের ক্ষেত্রে অতিশয় বাড়াবাড়ি করে থাকে। তাদের শিল্প সঙ্গীত ও সাহিত্যে মারইয়াম (আ:) একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছেন। খৃষ্টানদের নিকট মারইয়াম (Mary) এর ব্যক্তিত্ব ও মর্যাদা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে যা তাকে প্রদত্ত বিভিন্ন সময়ের উপাধি থেকে আঁচ করা যায়। যথা কুমারী মাতা (Virgin Imother), দ্বিতীয় হাওয়া ‘ (Second Eve) প্রভু মাতা (Mother of God) চির কুমারী (Ever Virgin) প্রভৃতি। বিস্তারিত ollalla G 5. The New Encyclopaedia Britannica fecom ১৯৭৪ খৃ. ৬২, ৬৬২)। এ বিষয়ে একটি বিশেষ কথা উল্লেখযোগ্য যে, খোদ সুসমাচার- সমূহে মারইয়াম (আ:) প্রসঙ্গে এ আদব ও সম্মানের উল্লেখ অনুপস্থিত। যথা: মথি লিখিত সুসমাচারে আছে, যখন তিনি জনঅর নিকট এ সকল কথা বলেছেন এমন সময়ে দেখল, তাঁর মাতা ও ভাই বাহিরে দাঁড়িয়েছিলেন এবং তাঁর সাথে কথা বলতে চেয়েছিলেন। কেহ তাঁকে বলল : আপনার মা ও ভ্রাতারা বাহিরে দণ্ডায়মান আছেন এবং আপনার সাথে আলাপ আলোচনা করতে চেয়েছেন। জবাবে তিনি সংবাদ দাতাকে বুললেন : আমার মাতা কে? আমার ভ্রাতারাই বা কারা? পরে তিনি তাঁর অনুসারীদের দিকে হাত বাড়িয়ে বললেন : এই দেখ, আমার মাতা ও আমার ভ্রাতারা, কেননা যে কেহ আমার স্বর্গ পিতার ইচ্ছা পালন করে সে আমার ভ্রাতা, ভগিনী ও মাতা। কুরআন কারীম, যা আল্লাহ তা’আলার সংরক্ষিত ও শাশ্বত বাণী এবং যার পদ্ধতি সাময়িক ও রাজনৈতিক।

কল্যাণের ঊর্ধ্বে, ইয়াহুদীদের পদ্ধতি ও খৃষ্টানদের মতামতের স্পষ্ট বিরোধিতা করে, ইয়াহুদী ও খৃস্টান উভয় দলের ভুলগুলো চিহ্নিতও করে দেয়। তাতে মারইয়াম (আ:) একজন পুণ্যাত্মা, পরহেযগার, সতী-সাধ্বী, ইবাদতকারিণী, বিশ্ব-নারীদের নেত্রী, ফেরেশতার সাথে বাক্যালাপকারিণী এবং আল্লাহ তা’আলার নিকট মুনাজাতকারিণী, অতি উচ্চ পর্যায়ের আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বের অধিকারিণী নারী বলে বর্ণিত হয়েছে (দ্র. ৩ : ৩৬-৩৭,৪২, ৪৫)। সুরা মায়েদায় তাঁকে সিদ্দীকা (অতি সত্যবাদিনী) বলা হয়েছে। সূরা, আল-আম্বিয়ায় মারইয়াম (আ:) -এর উজ্জ্বল চরিত্রের কথা এভাবে উল্লেখ করা হয়েছে

و التي أحصنت فرجها فنفخنا فيها من روحنا وعنها وابنها أي بلعلمين.

আর স্মরণ কর সে নারীকে, যে নিজ সতীত্বকে রক্ষা করেছিল, অতঃপর তার মধ্যে আমি আমার রূহ আত্মা ঠুকে দিয়েছিলাম, এবং তাকে ও তার পুত্রকে করেছিলাম বিশ্ববাসীর জন্য এক নিদর্শন” (সূরা আল আম্বিয়া :৯১)।

ومريم ابنت عمرة التي أحصنت فرجها فتحتانیومن روحنا وصدقت بگلمت ربها وكتبه وكانت من الفيتين.

(আল্লাহ তা’আলা আরও দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন) ইমরান-তনয়া মারইয়াম এর- যে তার সতীত্ব রক্ষা করেছিল। ফলে আমি তার মধ্যে রূহ ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং সে তার পালনকর্তার বাণী ও তার কিতাবসমূহ সত্য বলে গ্রহণ করেছিল। সে ছিল অনুগতদের একজন। (সূরা তাহরীম :১২)

সকল অধ্যায়

১. ১. উম্মুল মু’মিনীন খাদীজা (রা)
২. ২. উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা (রা)
৩. ৩. উম্মুল মুমিনীন হাফসা (রা)
৪. ৪. মারইয়াম (আ)
৫. ৫. আছিয়া (আ)
৬. ৬. উম্মু সুলাইম (রা)
৭. ৭. যয়নব বিনত রাসূলুল্লাহ
৮. ৮. রুকাইয়া বিনত মুহাম্মদ
৯. ৯. উম্মু কুলছুম বিনত নবী করীম (ﷺ)
১০. ১০. ফাতিমা বিনত রাসূলিল্লাহ
১১. ১১. সুমাইয়া (রা)
১২. ১২. উম্মুল মুমিনীন সাদা বিনতে যামআ (রা)
১৩. ১৩. উম্মুল মুমিনীন যয়নব বিনতে খুযাইমা (রা)
১৪. ১৪. উম্মুল মু’মিনীন উম্মু সালামা (রা)
১৫. ১৫. উম্মুল মুমিনীন যয়নব বিনতে জাহাশ (রা)
১৬. ১৬. উম্মুল মু’মিনীন জুয়াইরিয়া (রা)
১৭. ১৭. উম্মুল মুমিনীন উম্মু হাবীবা (রা)
১৮. ১৮. উম্মুল মু’মিনীন সফিয়্যা (রা)
১৯. ১৯. উম্মুল মুমিনীন মায়মূনা (রা)
২০. ২০. উম্মুল মুমিনীন রায়হানা (রা)
২১. ২১. উম্মুল মু’মিনীন মারিয়া কিবতিয়া (রা)
২২. ২২. হালীমা (রা)
২৩. নবী করীম (ﷺ)-এর বহু বিবাহের সমালোচনার প্রতিবাদ

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন