১৭. উম্মুল মুমিনীন উম্মু হাবীবা (রা)

১৭. উম্মুল মুমিনীন উম্মু হাবীবা (রা)

রাসূল (ﷺ)-এর পবিত্র স্ত্রীগণ হলেন মুমিনদের জন্য মাতৃতুল্য। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন

النبى أولى بالمؤمنين من أنفسهم وأزواجة أنهاهم.

নবী মু’মিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ আর তার স্ত্রীগণ তাদের মাতা (সূরা-৩ আহযাব : আয়াত-৬)।

তাই মুমিনদের মাতা ও রাসূল (ﷺ)-এর পবিত্র স্ত্রীগণ জান্নাতে যাবে এটাই স্বাভাবিক। যাদের সাথে রাসূল (ﷺ)-এর দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত হয়েছে তারা জাহান্নামে যাবে আর রাসূল (ﷺ) জান্নাতে থাকবেন এটা অসম্ভব কথাও বটে। তাই রাসূল (ﷺ)-এর সাথে তাদের সম্পর্কের কারণেই তারা জান্নাতে যাবেন, এটাই দলিল তাদের জান্নাতে যাওয়ার। ইবনে আব্বাস (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ যখন উম্মু হাবীবা (রা)-কে বিয়ে করেন তখন নিম্নের এ আয়াতটি নাযিল হয়

عسى الله أن يجعل بينكم وبين الذين عاديتم بثهم مودة .

অর্থ : যারা তোমাদের শত্র আল্লাহ তাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সম্ভবতঃ বন্ধুত্ব সৃষ্টি করে দেবেন। (সূরা-৬০ মুমতাহিনা : আয়াত-৭)।

নাম ও পরিচয়

তার আসল নাম রামলা। কারো কারো মতে হিন্দ। ডাক নাম উম্মু হাবীবা । পিতার নাম আবু সুফিয়ান। মাতার নাম সুফিয়া বিনতে আবুল আস। তিনি ওসমান (রা)-এর ফুফু ছিলেন। অর্থাৎ ওসমান (রা) ছিলেন উম্মু হাবীবা (রা)-এর আপন ফুফাতো ভাই। উম্মু হাবীবাহ নবুওয়াতের ১৭ বছর পূর্বে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন।

বংশ

তার বংশ তালিকা হল, রামলা বিনতে আবু সুফিয়ান সখর ইবনে হারব ইবনে উমাইয়া ইবনে আবদে শামস। পিতা-মাতা উভয়েই কুরাইশ বংশের লোক ছিলেন। পিতা আবু সুফিয়ান তো ছিলেন ইসলামের প্রধান শত্রু এবং বিখ্যাত কুরাইশ নেতা।

প্রথম বিবাহ

তিনি মক্কার শ্রেষ্ঠ সুন্দরীদের অন্যতম ছিলেন। যে কারণে পিতা আবু সুফিয়ান গর্ব করে বলতেন, আমার নিকট রয়েছে সারা আরবের শ্রেষ্ঠ সুন্দরী লাবণ্যময়ী নারী (উম্মু হাবীবা)। আবু সুফিয়ান তাই অনেক দেখাশোনা, খোজ খবরের পর বনু আসাদ গোত্রের সুদর্শন পুরুষ ওবায়দুল্লাহ বিন জাহাশের সাথে উম্মু হাবীবার বিয়ে দেন। ওবায়দুল্লাহ বিন জাহাশ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তিনি উম্মুল মু’মিনীন যয়নব বিনতে জাহাশ (রা)-এর ভাই ছিলেন।

ইসলাম গ্রহণ

নবুওয়াতের প্রথম যুগেই উম্মু হাবীবাহ ও স্বামী ওবায়দুহ ইসলাম কবুল করেন। মক্কায় কাফেরদের অত্যাচারে টিকতে না পেরে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে হাবশায় হিজরত করেন। এই হাবশাতেই তাদের কন্যা হাবীবা জন্মগ্রহণ করেন। এ হাবীবার নামেই তাকে উম্মু হাবীবা বলা হয় এবং এ নামেই তিনি পরিচিত হয়ে আছেন।

প্রথম স্বামীর মৃত্যুবরণ

হাবশাতে আসার পর স্বামী ওবায়দুল্লাহর ভেতর ধীরে ধীরে পরিবর্তন দেখা দেয়। ইসলাম গ্রহণের আগে ওবায়দুল্লাহ ছিলেন প্রচণ্ড মদ্যপায়ী। মদ নিষিদ্ধ হলে অন্যান্যদের মত তিনি তা ত্যাগ করেন। কিন্তু হাবশা আসার পর ওবায়দুল্লাহ আবার মদ পান শুরু করেন। উম্মু হাবীবা স্ত্রী হিসেবে তাকে এ পথ থেকে ফেরানোর প্রাণপণ চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এক রাতে উম্মু হাবীবা তার স্বামীকে বিভৎস অবস্থায় স্বপ্নে দেখেন। এরপর তিনি স্বামীকে ভয় দেখিয়ে সাবধান করার চেষ্টা করেন কিন্তু উল্টো ওবায়দুল্লাহ তাকে বলেন, “উম্মু হাৰীবা, ধর্মের ব্যাপারে চিন্তা করে বুঝলাম, ব্রিটবাদের চেয়ে উত্তম কোনো ধর্ম নেই। আমি ইতোপূর্বে মুসলমান হলেও এখন পুনরায় খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছি। এরপর উষ্ম হাবীবা তাকে তিরস্কার করলেন কিন্তু কিছুই হলো না, সে খ্রিষ্টান হয়ে গেল এবং একদিন মাত্রাতিরিক্ত মদ পান করার কারণে মৃত্যুবরণ করে।

নিঃস্ব উম্মু হাবীবা

ওবায়দুল্লাহর মৃত্যুর পর থেকে উম্মু হাবীবা সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ হয়ে যান এবং মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকেন। এ সংবাদ রাসূল (ﷺ)-এর নিকট পৌছলে, ইসলামের জন্য উন্মু হাবীবার ত্যাগের কথা চিন্তা করে তিনি খুবই বিচলিত হন।

রাসূল (ﷺ)-এর প্রস্তাব

পরে সব দিক বিবেচনা করে বিয়ের প্রস্তাবসহ আমর ইবনে উমাইয়া যাসিরীকে হাবশার বাদশাহ নাজ্জাশীর কাছে পাঠান। বাদশাহ নাজ্জাশী নিজের দাসী আবরাহার মাধ্যমে এ প্রস্তাব উম্মু হাবীবার নিকট পৌছান। প্রস্তাব পেয়ে উম্মু হাবীবা এতই খুশি হন যে, তিনি আবরাহাকে দুটি রূপার চুড়ি, পায়ের দুটি মল এবং দুটি রূপার আংটি উপহার দেন। উম্মু হাবীবা নিজের পক্ষ থেকে খালিদ ইবনে সাঈদকে উকিল নিয়োগ করেন।

বিবাহ সম্পন্ন

বাদশাহ নাজ্জাশী সন্ধ্যায় স্থানীয় সকল মুসলমান এবং জাফর ইবনে আবু তালিবকে ডেকে বিবাহ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করেন। বাদশাহর পক্ষ থেকে মোহরানা হিসেবে ৪০০ দেরহাম বা দীনার আদায় করা হয়। উল্লেখ্য যে, এরপর বাদশাহ নাজ্জাশী নিজেই বিয়ে পড়ান। এই বিয়েতে কিছু খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। হিজরী ৬ অথবা ৭ সালে এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বিয়ের সময় উম্মু হাবীব (রা)-এর বয়স হয়েছিল ৩৬/৩৭ বছর। বিয়ের পর উম্মু হাবীবা জাহাজ যোগে মদীনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। জাহাজ যখন মদীনায় পৌছে তখন রাসূল খায়বার অভিযানে ব্যস্ত ছিলেন এবং সেখানে অবস্থান করছিলেন।

বিয়ে করার কারণ

রাসূল উম্মু হাবীবাকে মূলত দুটো কারণে বিয়ে করেছিলেন।

প্রথমত স্বামীর মৃত্যু হওয়ার পর বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে উম্মু হাবীবা প্রচণ্ড কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করছিলেন। তার কষ্ট ছিল ইসলামের প্রতি মহব্বতের কারণে। তিনি স্বামীর মতই পুনরায় খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করতে পারতেন কিন্তু তিনি তা করেন নি। বরং স্বামীর এ ধরনের প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তার এ ত্যাগের পুরস্কার হিসেবে রাসূল (ﷺ) তাকে বিয়ে করেন।

দ্বিতীয়ত আবু সুফিয়ান ছিলেন সে কুরাইশ নেতা যিনি আবু জেহেলের মৃত্যুর পর ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। নবুওয়াতের সে প্রথম দিন থেকেই আবু সুফিয়ান রাসূল ও মুসলমানদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন ও জুলুমের বন্যা প্রবাহিত করেছে। বলা যায়, মানুষের পক্ষে যত প্রকার পন্থা অবলম্বন করা সম্ভব আবু সুফিয়ান তার কোনটিই ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে ছাড়েনি।

বিয়ের ফলাফল

ইসলাম ও মুসলমানদের এ জাত শক্ররই কন্যা ছিলেন উম্মু হাবীবা (রা)। এ জন্য রাসূল (ﷺ) রাজনৈতিক কারণে সুদূর প্রসারী চিন্তা-ভাবনা করেই উম্মু হাবীবাকে বিয়ে করেন। ঐতিহাসিক ফলও পাওয়া যায়। আবু সুফিয়ান ক্রমে নরম হতে থাকেন এবং মক্কা বিজয়ের দিন ইসলাম কবুল করেন।

তার ঈমানের বলিষ্ঠতা

উম্মু হাবীবার চরিত্র মাধুর্যে উম্মু হাবীবা (রা) ছিলেন নেককার ও বলিষ্ঠ ঈমানের অধিকারিণী। তিনি ঈমান ও ইসলামের ব্যাপারে কারো সাথে সমঝোতা করতে বা সামান্য দুর্বলতা দেখাতেও রাজি ছিলেন না। এর প্রমাণ তো আমরা তার স্বামী ওবায়দুল্লাহ যখন পুনরায় খ্রিস্টান হন তখনই পেয়েছি।

অন্যদিকে তাঁর পিতা আবু সুফিয়ান একবার মদীনায় আসেন হুদায়বিয়ার সন্ধির সময়সীমা বাড়ানোর জন্য। তিনি ইচ্ছে পোষণ করছিলেন যে, তার কন্যা উম্মু হাবীবাকে দিয়েই রাসূল (ﷺ)-এর কাছে আবেদন পেশ করবেন, যাতে সহজেই তা পাস হয়। এ উদ্দেশ্যে তিনি উম্মু হাবীবার গৃহে পদার্পণ করেন।

একদা আবু সুফিয়ান যখন মেয়ের গৃহে প্রবেশ করে বিছানায় বসতে যান তখন উম্মু হাবীবা তা উল্টে দেন। ঘটনার আকস্মিকতায় আবু সুফিয়ান খুব অপমানবোধ করেন এবং বলেন, “তুমি এ বিছানায় নিজের পিতাকেও বসতে দিবে না? উম্মু হাবীবা বললেন, ‘একজন মুশরিক রাসূল (ﷺ)-এর বিছানায় বসুক অবশ্যই আমি তা পছন্দ করি না। কন্যার কথা শুনে আবু সুফিয়ান ক্ষিপ্ত হয়ে বললেন, “তুমি আমার বিরুদ্ধে খুব বেশি বিগড়ে গেছ।

উম্মু হাবীবা নিজের পিতার সাথে যে রূঢ় আচরণ করেছিলেন তা শুধুমাত্র ঈমানের তাকিদে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে। তিনি ছোট খাট ব্যাপারেও খুব গুরুত্ব দিতেন এবং অন্যদেরকেও সে ব্যাপারে উৎসাহিত করতেন ও তাকিদ দিতেন। একবার তার ভাগিনা আবূ সুফিয়ান ইবনে সাঈদ ছাতু খেয়ে কুলি না করলে তিনি বললেন, “তোমার কুলি করা উচিৎ ছিল। কারণ, নবীজী বলেছেন, আগুনে পাকানো জিনিস খেলে অযু করতে হয়। একবার তিনি রাসূলকে বলতে শুনেছেন যে, প্রতিদিন যে ১২ রাকাআত করে নফল সালাত পড়লে জান্নাতে তার জন্য ঘর তৈরি করা হবে। এরপর থেকে তিনি আর এ সালাত ছাড়েন নি। তিনি নিজেই বলেছেন, অত:পর আমি নিয়মিত বার রাকা’আত সালাত পড়তাম। তার পিতা আবু সুফিয়ান ইন্তেকাল করলে তিনদিন পর তিনি খোশবু চেয়ে নিয়ে হাতে মুখে মাখেন এবং বলেন, ঈমানদার নারীর জন্য তিনদিনের বেশি শোক করা জায়েয নেই, অবশ্য স্বামী ছাড়া। স্বামীর জন্য স্ত্রীর শোক করার মেয়াদ হচ্ছে চার মাস দশ দিন। নবীজীকে একথা বলতে না শুনলে এ ব্যাপারে আমার কোনো খবরই ছিল না।’ প্রথম স্বামী ওবায়দুল্লাহর ঔরসে তাঁর দু’জন সন্তান আবদুল্লাহ ও হাবীবার জন্ম হয়। যতদূর জানা যায় তার আর কোনো সন্তান হয়নি।

হাদীস শিক্ষা ও সম্প্রসারণে তার অবদান

উম্মুল মু’মিনীন উম্মু হাবীবা (রা) রাসূলুল্লাহ ও যয়নব বিনতে জাহাশ (রা) থেকে হাদীস শিক্ষা লাভ করেন এবং পরে তা বর্ণনা করেন। তাঁর থেকে ৬৫টি হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে দু’টি মুত্তাফাকুন আলাইহি এবং দু’টি ইমাম মুসলিম এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইবনে উতবা, সালেম ইবনে সেওয়ার হাবীবা, মুআবিয়া ওত্বা, আবু সুফিয়ান, আবদুল্লাহ বিন ওহ্বা, সালিম বিন সাওয়াব, আবুল জিরাহ, যয়নব বিনতে আবু সালামা, সুফিয়া বিনতে সায়বা, ওরওয়া বিন যুবায়ের, শাহার বিন হাওশাব, আবু সালেহ আস সামান প্রমুখ তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আমাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী তার থেকে বর্ণিত হাদীস পুনরুক্তিসহ সহীহ আল-বুখারীতে ৮টি, সহীহ মুসলিমে ৯টি, জামে আত তিরমিযীতে ৪টি, সুনান আবু দাউদে ৮টি, নাসাঈতে ৩৪টি এবং ইবনে মাজায় ৮টি সংকলিত হয়েছে। তার থেকে বর্ণিত হাদীসের কয়েকটি প্রামাণ্য হাদীস গ্রন্থ হতে নিম্নে উল্লেখ করা হলো

1. عن أم حبيبة بنت ابی سفیان (رضی کیا جانا نثي أبيها دعت بطيب مسحت ذراعيها، وقالت : ما لي بالطيب من حاجة، لولااني سيث رسول الله * تقول : لا يحل لامراة تؤمن بالله واليوم الأخير تعد على من قوق تلاث الا على زوج أربعة أشهر وعشرا.

১. উহ্ হাবীবা বিনতে আবু সুফিয়ান (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেন : যখন তার পিতার মৃত্যু সংবাদ তাঁর কাছে আসলো, তিনি সুগন্ধি আনতে বললেন। অতঃপর তা স্বীয় বাজুতে মাখলেন এবং বললেন : আমার কোন সুগন্ধির প্রয়োজন হতো না, যদি না আমি রাসূলুল্লাহকে বলতে শুনতাম, তিনি বলেছেন, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন নারীর জন্য বৈধ নয় কোন মৃতের জন্য তিন দিনের অধিক শোক প্রকাশ করা। তবে স্বামীর মৃত্যুতে চারমাস দশ দিন শোক প্রকাশ করা যায়। (বুখারী ২য় খণ্ড, পৃ.-৮০৪-৮০৫)।

يقول : ۲. عن أم حبيبة (رضی) تقول سمعت رسول الله من صلى اثني عشرة ركعة في يوم ولبلة بينى كه به بيا في الجنة. نالت أم حبيبة ما تركه ممثله عنه من رسول الله

৩. উম্মু হাবীবা (রা) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি দিবা-রাত্রী বার (১২) রাকআত সালাত (নফল) পড়বে, জান্নাতে তার জন্য একটি ঘর বানানো হবে। উম্মু হাবীবা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ এক থেকে এ হাদীস শুনার পর আমি কখনও এ সালাত ত্যাগ করিনি। (মুসলিম ১ম খণ্ড, পৃ.-২৫১)

3. عن معاوية بن أبي سفيان اثه أن أخته أم حبيبة صلى في من كان رسول الله رضی) زوج النبي الثوب الذي يجابها نب؛ نتائث : تم اذا لم يرفت أني . و 

৩. মু’আবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (রা) তাঁর বোন উম্ম হাবীবা (রা) কে জিজ্ঞেস ৫ করলেন, যে কাপড় পড়ে নবী কারীম (ﷺ) স্ত্রী সহবাস করেন, সেই কাপড় পরেই কি তিনি সালাত পড়তেন? উত্ম হাবীবা (রা) বললেন : হ্যা, যখন ঐ কাপড়ে নাপাকীর কোন চিহ্ন দেখা না যেতো। (আবু দাউদ, ১ম খণ্ড, পৃ-৫৩)

.. عن صفية بنت شببة عن أم حبيبة (رضی) زوج النبي و قال : گل گلام ابني أدم عليه لا له الا أثر بها بمعروف أو نهى عن المثگير أو ذكر الله.

৪. সাফিয়্যা বিনতে শায়বা (রা) উম্মু হাবীবা (রা) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নবীনবলেছেন : বনু আদমের প্রতিটি কথাই তার বিপক্ষে যাবে তবে সৎকাজে আদেশ, অসৎ কাজে নিষেধ এবং যিকরুল্লাহ বা আল্লাহর স্মরণ ব্যতীত। (মুসলিম)

.. عن أم حبيبة (رضی) آنها ئثه قال : سمعت رسول يقول : لولا أن أشق على أمتي لأمرتهم بالتواك الله

৫. উম্মু হাবীবা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, যদি আমার উম্মতের জন্য কষ্টকর না হতো তবে আমি তাদেরকে আদেশ দিতাম প্রতি সালাতে মিসওয়াক করার জন্য। (মুসলিম :হাদীস নং-৫৮৯)

ওফাত

আপন ভাই আমীর মু’আবিয়ার শাসন আমলে হিজরী ৪৪ সালে ৭৩ বছর বয়সে উম্মু হাবীবা (রা) ইন্তেকাল করেন। মদীনায় তাকে দাফন করা হয়। অন্য এক বর্ণনা থেকে জানা যায়, তাঁকে আলী (রা)-এর গৃহে দাফন করা হয়। এর প্রমাণ হলো জয়নুল আবেদীন (রা) তার গৃহ খননকালে একটি শিলা লিপি পান, তাতে লেখা ছিল, এটা রামলা বিনতে সাখর-এর কবর।

মৃত্যুর আগে তিনি আয়েশাকে (রা) ডেকে বলেন, ‘আমার এবং আপনার মধ্যে সতীনের মতো সম্পর্ক ছিল। কোনো ভুলত্রুটি হয়ে থাকলে মাফ করে দেবেন এবং আমার মাগফেরাতের জন্য দুআ করবেন। আয়েশা দু’আ করলে তিনি পুনরায় বললেন, আপনি আমাকে খুশি করেছেন, আল্লাহ আপনাকে খুশি করুন।

সকল অধ্যায়

১. ১. উম্মুল মু’মিনীন খাদীজা (রা)
২. ২. উম্মুল মু’মিনীন আয়েশা (রা)
৩. ৩. উম্মুল মুমিনীন হাফসা (রা)
৪. ৪. মারইয়াম (আ)
৫. ৫. আছিয়া (আ)
৬. ৬. উম্মু সুলাইম (রা)
৭. ৭. যয়নব বিনত রাসূলুল্লাহ
৮. ৮. রুকাইয়া বিনত মুহাম্মদ
৯. ৯. উম্মু কুলছুম বিনত নবী করীম (ﷺ)
১০. ১০. ফাতিমা বিনত রাসূলিল্লাহ
১১. ১১. সুমাইয়া (রা)
১২. ১২. উম্মুল মুমিনীন সাদা বিনতে যামআ (রা)
১৩. ১৩. উম্মুল মুমিনীন যয়নব বিনতে খুযাইমা (রা)
১৪. ১৪. উম্মুল মু’মিনীন উম্মু সালামা (রা)
১৫. ১৫. উম্মুল মুমিনীন যয়নব বিনতে জাহাশ (রা)
১৬. ১৬. উম্মুল মু’মিনীন জুয়াইরিয়া (রা)
১৭. ১৭. উম্মুল মুমিনীন উম্মু হাবীবা (রা)
১৮. ১৮. উম্মুল মু’মিনীন সফিয়্যা (রা)
১৯. ১৯. উম্মুল মুমিনীন মায়মূনা (রা)
২০. ২০. উম্মুল মুমিনীন রায়হানা (রা)
২১. ২১. উম্মুল মু’মিনীন মারিয়া কিবতিয়া (রা)
২২. ২২. হালীমা (রা)
২৩. নবী করীম (ﷺ)-এর বহু বিবাহের সমালোচনার প্রতিবাদ

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন