সম্পাদকীয়-১

রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ

অন্য চোখ আছে বোলেই অনামিকা তোর বুকের উত্তপ্ত সোঁদা ঘ্রানে চিরকাল বুনবো প্রেমের বীজ আমি তুখোড় তুমুল জারজ।

একুশ তুই আর আসিস না

ক্যানো আসবি, কার কাছে আসবি? তোর বুকের গরোম রক্তের স্পর্শে একদিন নিষিদ্ধ বিক্ষোভ হোয়েছি। অপ্রতিরোধ্য ব্যারিকেড গোড়েছি। কৃষ্ণচুড়ার বিক্ষুব্ধ লাল ছুঁড়ে দিয়েছি.তোর সুনিল করতলে। কিন্তু আজ তোর খোঁপায় রজনীগন্ধা অথবা স্মিত হাসি ভালো লাগে না আর। আমরা তোর অন্তর্বাসে হাত দিয়েছি। কী কোরবো বল কিছুই পাই নি যে আমরা। মেনড্রাক্স আজ একমাত্র সংগী— সম্বল এক বুক জারজ স্মৃতির বিষ। তোর মর্যাদা দেবার মতো কিছুই নেই।

আর আসিস নে হতভাগী। সত্যি বোলছি এবার এলে নিশ্চয়ই তুই সতীত্ব হারাবি।

উপলব্ধির সাদা কালো

নিশ্চয়ই। যদি কিছু ভুল দৃষ্ট হয় তীব্র সমালোচনা করুন। উৎসাহ পাবো উদ্দীপনা বাড়বে। অনর্থক শিশুসুলভ স্নেহের প্রত্যাশী নই। নিশ্চয়ই চোখে পোড়বে অনেক স্থানেই অশ্লীল’ শব্দ ব্যবহৃত হোয়েছে। কী কোরবো বলুন। আমরা সকলেই যে ভদ্রবেশী অশ্লীলতার পরোম পূজারী। অস্বীকার কোরতে পারবেন? সাহিত্যে অশ্লীলতা অনাবশ্যক বোলে তর্কো কোরতে পারেন কিন্তু জাগতিক জীবনে কি অশ্লীলতা নিষিদ্ধ কোরতে পারবেন? যেহেতু জীবন এবং জগৎ বাদ দিয়ে সাহিত্য অসম্ভব তাই সাহিত্যে অশ্লীলতা অনাবশ্যক নয় বরং জীবনকে বেঁধে রাখার নিপুন প্রয়াস।

হয়তো প্রতিবাদ কোরবেন অনাবশ্যক দুঃশ্চিন্তায় নরোকগামী হোচ্ছি। তবে স্বীকার আপনাকে কোরতেই হবে যে গতানুগতিকতার চিরশত্রু ব্যতিক্রমধর্মী আমরা স্পষ্টতই অসম্ভব দুঃসাহসী।

আবহমান এই বাংলায় একদিন স্বাচ্ছন্দ্যের স্বচ্ছ বাতাস ছিলো। সোনালী সম্ভবনার সবুজ পাল তুলে ভেসে যেতো দৈনন্দিন জীবন আশার রূপোলী নদীতে। শালিকের ধুসর চোখ কাকের মসৃন পালোক আশ্বিনের ভরা ক্ষেত বৈশাখের মাতাল বাতাস আর অনংগ বধুর সিঁথির সিঁদুর নিয়ে একটি নিবিড় সংসার পেতেছিলো আজীবন দুঃখিনী এক মা।

হঠাৎ একদিন আকাশে মেঘ উঠলো সমস্ত সবুজ ওরা কেড়ে নিতে চাইলো। আমরা চিৎকার কোরলাম নিজস্ব কণ্ঠে। ওরা শেকল দ্যাখালো। আমরা কারাগার চিনলাম। বিক্ষোভের লাল ঠোঁটে চুমু খেলাম। মৃত্যুর সাথে সংগম কোরলাম আজন্ম সম্পর্কে তাই মেঘ গাঢ় কালো হোলো। আর মেঘের ভেতোর সঞ্চিত হোতে থাকলো বিক্ষুব্ধ বজ্ৰ। আসন্ন ভাংগোনের সম্ভাবনা।

মেঘে ঢাকা সূর্য মুক্ত হোলো। কিন্তু তখোন সমস্ত সবুজগুলো পুড়ে গ্যাছে। সে নিবিড় সংসারে অভাবের টর্নেডো সমস্যার মহামারী আর যন্ত্রনার শ্মশান হোলো। বুকের কাছাকাছি কবর শিয়রে জেগে আছে।

অনামিকার অন্য চোখ এবং চুয়াত্তোরের প্রসব যনত্রনা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪

সকল অধ্যায়

১. মৌলিক মুখোশ (১৯৯০)
২. রচনাকাল : ১৯৭৪
৩. এক গ্লাস অন্ধকার (১৯৯২)
৪. উপদ্রুত উপকূল (১৯৭৯)
৫. ফিরে চাই স্বর্নগ্রাম (১৯৮১)
৬. মানুষের মানচিত্র (১৯৮৪)
৭. ছোবল (১৯৮৬)
৮. গল্প (১৯৮৭)
৯. দিয়েছিলে সকল আকাশ (১৯৮৮)
১০. আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে
১১. দিন গ্যালো দিন গ্যালো রে
১২. আমরা পাড়ি দেবো
১৩. ছিঁড়িতে না পারি দড়াদড়ি
১৪. ঢোলক বাজাও দোতারা বাজাও
১৫. মাঠে কিষান সুর তুলেছে
১৬. শৃংখল মুক্তির জন্যে কবিতা আজ
১৭. নূর হোসেনের রক্তে লেখা
১৮. ভাঙাচোরা মন, বল
১৯. যদি চোখে আর চোখ রাখা না-ই হয়
২০. ইতর
২১. সোনালি শিশির
২২. উপন্যাসের খসড়া
২৩. নিজস্ব লড়াই
২৪. নিসঙ্গতা
২৫. কৃষ্ণচুড়ার মৃতদেহে একখানি রঙিন ইনভেলাপ
২৬. যেখানে নরকে গোলাপ
২৭. সিগারেট এবং কতিপয় ব্যক্তিগত স্কেচ
২৮. শিরোনামহীন (অসম্পূর্ণ গল্প)
২৯. চলচ্চিত্র কাহিনী
৩০. চিত্রনাট্য
৩১. সম্পাদকীয়-১
৩২. সম্পাদকীয়-২ : উপলিকা সম্পর্কিত উপস্থাপনা
৩৩. সম্পাদকীয়-৩ : প্রবেশক
৩৪. এক দশকের কবিতা
৩৫. সাহিত্যচিন্তা
৩৬. নব্য জসীমিজম ও বহমান লোককাব্যধারা
৩৭. প্রতিক্রিয়া
৩৮. জাতীয় কবিতা পরিষদের ভূমিকা
৩৯. ভিন্নস্বর অন্যমত
৪০. বাংলাদেশের কবিতা সংকলন প্রসঙ্গে
৪১. কাফের লেখকদের সম্পর্কে
৪২. অগ্রদূত ক্রীড়া চক্র : ঘোষনাপত্র
৪৩. অন্যান্য গদ্য
৪৪. উপদ্রুত উপকূল গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে স্বাগত ভাষন
৪৫. নবীন বরন উপলক্ষে
৪৬. শুভেচ্ছা বক্তব্য
৪৭. সাক্ষাৎকার-১
৪৮. সাক্ষাৎকার-২
৪৯. সাক্ষাৎকার-৩
৫০. সাক্ষাৎকার-৪
৫১. সাক্ষাৎকার-৫
৫২. সাক্ষাৎকার-৬
৫৩. সাক্ষাৎকার-৭
৫৪. সাক্ষাৎকার-৮
৫৫. পত্র-০১
৫৬. পত্র-০২
৫৭. পত্র-০৩
৫৮. পত্র-০৪
৫৯. পত্র-০৫
৬০. পত্র-০৬
৬১. পত্র-০৭
৬২. পত্র-০৮
৬৩. পত্ৰ-০৯
৬৪. পত্র-১০
৬৫. পত্র-১১
৬৬. পত্র-১২
৬৭. পত্র-১৩
৬৮. পত্র-১৪
৬৯. পত্র-১৫
৭০. পত্র-১৬
৭১. পত্ৰ-১৭
৭২. প্রস্তুতি পর্বের রচনা (কবিতা)
৭৩. প্রস্তুতি পর্বের রচনা (গল্প)
৭৪. প্রস্তুতি পর্বের রচনা (গদ্য)
৭৫. রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ : জীবনপঞ্জি
৭৬. রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ : গ্রন্থপঞ্জি
৭৭. গ্রন্থ ও রচনাপরিচয়
৭৮. রুদ্র বিষয়ক রচনাপঞ্জি
৭৯. প্রস্তুতি পর্বের রচনা (নাটিকা)
৮০. খুটিনাটি খুনশুটি ও অন্যান্য কবিতা (১৯৯১)

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন