ইমানুল হক
‘কোনও ভাবে সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শকে হেয় করা, এর থেকে বিন্দু মাত্র সরে আসার অর্থ বুর্জোয়া মতাদর্শকে শক্তিশালী করা।’
‘কমিউনিস্ট লিগের উদ্দেশ্য হল—বুর্জোয়া শ্রেণির উচ্ছেদ, প্রলেতারিয়েত শাসন, শ্রেণিবিরোধের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত পুরোনো বুর্জোয়া সমাজের বিলোপ আর শ্রেণিহীন ও ব্যক্তিগত সম্পত্তিবিহীন এক নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠা।’
—এঙ্গেলস
১
১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথম কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের ১৯ জন সদস্যের মধ্যে ৯ জন ছিলেন শ্রমিক। আর ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে মার্ক্স-এঙ্গলেস এর কমিউনিস্ট লিগ প্রতিষ্ঠার পিছনেও ছিল শ্রমিকদের অসামান্য অবদান। সি পি আই (এম)-এর পলিটব্যুরোতে একজনও শ্রমিক নেই। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতেও একই দশা। শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি একজন আছেন, কিন্তু তিনি বরাবর-ই দলের সর্বক্ষণের কর্মী। কার্যত কৃষকও কেউ নেই। একজন বাদে প্রায় সবাই ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে এসেছেন। গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কারো রাজনীতিতে উত্থান নয়।
উত্তরবঙ্গের কোনো প্রতিনিধি রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে ছিল না। নেই আদিবাসী সমাজের কোন মানুষ। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া জেলার মত পিছিয়ে পড়া জেলার মানুষের কোন প্রতিনিধিত্ব ছিল না। মাধ্যমিক পরীক্ষায় ২০ জনের তালিকা আর সরকারি নয়, কিন্তু সি পি এম-এ ১৫ জনের বেশি সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হতে পারবে না, মার্কস সাহেবের দিব্যি আছে বোধ হয়। পার্টির সদস্য যতই বাড়ুক নেতার কোটা ‘বাড়বেনি’। এরকম সামন্ততান্ত্রিক মনোভাব নিয়ে কমিউনিস্ট পার্টি কখনো চলতে পারে?
২
প্রলেতারিয়েত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ না করে নিজেদের মধ্যবিত্ত ধ্যান-ধারণা পার্টির ওপর চাপিয়ে দিয়েছে নেতারা। নিজেরা বদলাননি উল্টে শ্রমিক-কৃষকদের মধ্যবিত্ত মানসিকতার বানিয়ে তুলেছেন।
৩
ইতিহাসের সত্যকার নায়ক জনগণ, কোনো ব্যক্তি নন। নৈরাজ্যবাদী রাশিয়ান নারদনিকরা (লেনিনের নিজের দাদাও এদের দলে ছিলেন) বিশ্বাস করতেন, সমাজের বিকাশ হয় নায়কদের দ্বারা। জনগণ ও জনতা বীরদের অন্ধভাবে অনুসরণ করে মাত্র। লেনিন ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে ‘জনগণের বন্ধু কারা এবং সোশ্যাল ডোমোক্রাটদের সঙ্গে তাদের লড়াই কীভাবে’ গ্রন্থে লেনিন লিখেছেন, ‘ইতিহাসের সত্যকার নায়ক হচ্ছে জনগণ। ব্যক্তির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয় যখন সে ব্যক্তি এসে দাঁড়ান সবচেয়ে অগ্রণী সারিতে ও তাঁদের স্বার্থের পক্ষে।’ এ-রাজ্যে ও দেশে বাজারি প্রচারমাধ্যম ব্যক্তি বন্দনা করে। বিক্রি ও ব্যবসার স্বার্থে। একজন খুব ভালো ও খুব খারাপ লোকের দরকার হয় তাদের। মি. ক্লিন বা মি. ডার্টি—বানানো হয় একই ব্যক্তিকে। উদাহরণ ১৯৮৪-র রাজীব ও ১৯৮৯-র রাজীব। ব্রান্ড বা ম্যাজিকের আশ্রয়—একই কারণে।
৪
বামপন্থী দলের নেতাও এই মোহে আটকা পড়েছে। যার ফল রাজ্য বা জনগণ—কারও পক্ষে ভালো হয়নি—হবেও না। মুশকিল হচ্ছে, বামপন্থী বলে যাদের জন্য বিলাপ, তাদের একটা অংশ বামপন্থী ছিলেন না আর—আচারে, ব্যবহারে, চিন্তায়, দর্শনে হয়ে উঠেছিলেন সমাজতান্ত্রিক বুর্জোয়া। সোভিয়েত রাশিয়ায় সমাজতন্ত্রের বিপর্যয় নিয়ে দিস্তে দিস্তে কাগজ খরচ হয়েছে, কিন্তু নিজেরা শিক্ষা নেননি। ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছায় চলেছে পার্টি। পার্টি ক্লাস উঠেছে শিকেয়। কমনসেন্স নামক আপনা সেন্স ব্যবহার করে গরিবের বদলে মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্তের সেবা করা হয়ে উঠল পরম ধর্ম।
৫
দম্ভ, দুর্ব্যবহার, দুর্নীতি—এই তিন ‘দ’ রোগের লক্ষণ। রোগ নয়। রোগের নাম—বড়োলোকিপনা। বড়োলোকিপনার অঙ্গ হিসেবে এসেছে—তোষামুদে, চাটুকার, দালাল, ঠিকাদার, প্রোমোটারদের আস্কারা দান। পার্টি দপ্তরকে ঝাঁ চকচকে করে তোলায়, সেখানে সাধারণ পার্টি সদস্য, কর্মী, সমর্থক বা আমজনতা—নিজেদের অচ্ছুৎ বলে মনে করবে বা করেছেন।
কিছু নেতাদের চাল-চলন, ভাবভঙ্গি গেছে বদলে। ভালো জিনিসটা চাই, যে কোনো মূল্যে। অনেক নেতার বউ নেতার চেয়ে বড় নেতা বা আমলা হয়ে ওঠেন। ক্ষমতা, তুচ্ছতা ও ঈর্ষাজনিত কারণে বহু নেতার পারস্পরিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকে। সি পি এম গত ১৪ বছর যত না অন্য দলের সঙ্গে লড়েছে, তার চেয়ে বেশি লড়েছে নিজেদের মধ্যে। যেখানে আন্তপার্টি গত সংগ্রামের জায়গা খুব কম। উপদলীয় ঝোঁক ক্ষতি করেছে দলের।
৬
শুধু বুদ্ধ বা নিরুপম কে গাল দিয়ে লাভ নেই, পার্টির এই উপাদানগুলো তলে তলে আলগা করে দিয়েছিল ভিত। অবশ্য এইসব উপাদান নিয়েই তো দল ছিল ক্ষমতায়। ২০০৬-এও এই উপাদান কম ছিল না। সিঙ্গুরে হঠকারিভাবে জমি নিতে যাওয়া, নির্যাতন, তাকে কেন্দ্র করে মিডিয়া যুগে কিছু নেতার অবিমৃষ্যকারী মন্তব্য দলকে বিপদে ফেলে। আর নন্দীগ্রাম তাতে ঘৃতাহুতি দেয়।
৭
আমাদের গণতন্ত্রের একটা বড় সমস্যা আছে। মাত্র ১৭ শতাংশ ভোটারের ভোট পড়ার পর গরিষ্ঠতা পেয়েও রাজ্য চালানো যায়। পাঞ্জাব আর কাশ্মীর তার প্রমাণ। ২৮ শতাংশ বা ২৯ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েও দেশ চালানো যায়। বাজপেয়ী এবং মনমোহন—তার উদাহরণ। সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব না থাকায় ৫০ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রায় ৮০ শতাংশ (২৩৫) আসন পাওয়া যায়। ৪৯ শতাংশ পেয়ে পাওয়া যায় ৭৭ শতাংশ আসন (২২৭)। আর তাতে ধরা কে সরা জ্ঞান করতে পারে জয়ী যে-কোনও পক্ষই। (বর্তমানে ৩৭ শতাংশ পেয়ে কেন্দ্র ক্ষমতায় শাসক দল।)
আর ধরাধরির এই বসুন্ধরায় ধরাধরি ছাড়া যেখানে কোনও উপায় নেই, সেখানে মানুষের অসহায়ত্ব বাড়বে, বাড়বে দাদাগিরি আর উমেদারি।
অপেক্ষা ছাড়া উপায় নেই। অপেক্ষার সুফল তো দাদারাই রং পালটে ভোগ করে থাকে। তাই সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব চাই। যত শতাংশ ভোট, তত শতাংশ আসন। চাই নির্বাচনী সংস্কার। চাই সরকারি ব্যয়ে নির্বাচন পরিচালনা। তাতে দুর্নীতি কমবে। আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্ব বাড়বে। বাড়বে জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধি। টাকার দাপটের কাছে হার মানতে হবে না মানুষের ইচ্ছাকে।
একটি সংযোজন—
যে এল চষে
যে রইল বসে
নাড়া কাটাকে ভাত দাও সে
থালা ঠেসে ঠেসে
এটি একটি বাংলা প্রবাদ। খাটিয়ে বা পরিশ্রমী লোক নয়, যে মাঠে খেটে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোদে পুড়ে বর্ষায় ভিজে ফসল ফলিয়ে সংসারের অন্ন জোগাচ্ছে সে বসে থাকবে, তার পাতে খাবার জুটবে না, আর যে ল্যাজ কাটা নির্লজ্জ বসে বসে শুধু কত্তার গুণগান গেয়েছে, আর ভালো ভালো মিষ্টি কথা বলে এসেছে, তাকে থালা ভরে অন্ন দিতে হবে।
উনিশ শতক পরবর্তী বাংলা, ইংরেজি শিক্ষিত বাংলা, মুখে শ্রমের মর্যাদার কথা বলেছে আর কায়িক শ্রমকে ঘৃণা করে এসেছে। মুখেন মারিতং জগত—তার আরাধ্য হয়েছে যত বেশি পরিমাণে আর তত সে গুরুত্বহীন করে দিয়েছে খেটে খাওয়া পরিশ্রমী মানুষকে অর যুগপৎ পরীক্ষার প্রশ্নে দ্বিগুণ উৎসাহে শ্রমের মর্যাদা প্রশ্ন দিয়েছে।
ইংরেজি জানা লোক যে নতুন ব্রাহ্মণ শ্রেণি, সেটা বুঝতে সমস্যা হয়নি ব্রাহ্মণকুলে জন্মানো বঙ্কিমের, উনিশ শতকে দাঁড়িয়েই তার এই উপলব্ধি। বাংলায় ‘কমিউনিজম’ শব্দটি প্রথম প্রয়োগ করেন বঙ্কিম। ‘কমলাকান্তের দপ্তর’-এ বিড়াল রচনায় এসেছে সোস্যালিজম এর কথা, ‘সাম্য’ প্রবন্ধে উপস্থিত কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশন্যাল আর কমিউনিস্টদের কথা।
একুশ শতকে জন্মালে বঙ্কিম কে হয়তো লিখতে হত বাংলার নতুন ব্রাহ্মণ—কমিউনিস্ট পার্টির একদল নেতা এতবড় ব্রাহ্মণ্যবাদী ‘মনুসংহিতা’ প্রণেতা হয়তো নিজেও হতে পারতেন না। এরা ৫ মিনিটের হাঁটা পথ-ও পায়ে হেঁটে যান না, আগে সরকার, এখন পার্টির গাড়ি, যার তেল খরচ আসে সদস্যদের দেওয়া লেভি থেকে, যে কমরেড হয়তো এখন এলাকাছাড়া, তার কষ্টের পয়সায় নেতারা এসি গাড়ি চড়ে ঘুরে পূজারী ব্রাহ্মণের ঢং-এ বাণী বিতরণ করেন, এবং হাততালি পান। হয় পদোন্নতি-ও। কারণ পার্টি দপ্তরে এদের-ই দেখা মেলে অনুক্ষণ। এরা ইংরেজি জানেন, ধোপদুরস্ত পোশাক, পার্টি কমরেডদের লেভির পয়সায় তা কাচানো এবং ইস্ত্রি করানো। এরা প্রায় কেউ নিজের গলায় কথা বলেন না, আগে গলা খাঁকিয়ে নিতে হতো ভারি করার জন্য, এখন সেটি নিপুণ অভ্যেস স্বাভাবিকতায় রূপান্তরিত। এদের পদের উন্নতি হবে, আর যাঁরা গ্রামে গঞ্জে শহরে বস্তিতে খেটে মরবেন, বাড়িতে গাল খাবেন, ছেলে মেয়ে অপদার্থ বলবে, তাঁরা ক্যাডারই থেকে যাবেন, কেউ লোকাল, কেউ জোনাল, কেউ জেলা, কেউ বড় জোর রাজ্য কমিটি যাবেন, আর বড় নেতা হবেন তেনারা, মাটিতে যাঁদের ঠেকে না চরণ।
বি টি রণদিভে, সি পি এমের নতুন প্রজন্মের অনেকে হয়তো তার নাম-ই শোনেননি, বাংলার পার্টিকে বলেছিলেন হিন্দুবাদী, আর এখন অনেকের মনে হয় পার্টিটা প্রবল ব্রাহ্মণ্যবাদী।
পার্টির এ রাজ্যে শহিদ তালিকায় নামগুলি দেখুন, শতকরা ৯৮ ভাগ সংখ্যালঘু তপশিলি বা আদিবাসী। আর বড় নেতা বা পলিট-বুড়োর তালিকা দেখুন, শতকরা ১০০ ভাগ উচ্চবর্ণের। এবং উচ্চবর্গের। মহম্মদ আমিনের কথা তুলবেন? না, তিনি এ রাজ্যের প্রতিনিধি নন, সিটু-র (এখন মহম্মদ সালিম। ২০২০)। এদের মধ্যে দু-জন নির্বাচনে গো হারা হেরেছেন। হারতেই পারেন। কিন্তু এরা যে এভাবে হারছেন, সেটা নিজেরাও বোঝেন নি। যদিও সংকেত ছিল। ঘরোয়া সভায় ভিড় হয়নি। রোড শো-তে যদিও জনসমুদ্র, কারণ এতকাল পার্টিতে বঞ্চিত, শোষিত, উপেক্ষিতরা রাস্তায় নেমেছিলেন পরিবার পরিজন নিয়ে, কারণ, ব্রেখটের নাটকের ভাষায়, পার্টির বিপদ। পার্টির বিপদ, তাই বাইরে এসেছেন প্রায় সব সমর্থক ভোটার, দরদী।
অশোক মিত্র থেকে শুরু করে শিলিগুড়ির গৌর চক্রবর্তী। রামা কৈবর্ত বা রহিম সেখরা দলে দলে না এলেও অনেকে ফিরেছেন। তাই ১১ লাখ ভোট বেড়েছে। জেতা ৬২টির মধ্যে ৩৭টি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। এরা ফিরেছেন, শুধু পার্টির বিপদ বলে নয়, নিজেরাও দেখেছেন অশনি সংকেত, ভাঙ্গড় এমনকি নন্দীগ্রামেও। ফিরছে নতুন কায়দা, জরিমানা হচ্ছে। চলছে জুলুম। খাস জমি ফেরানোর ব্যাকুল চেষ্টা হবে, নয়া জমানায়, নতুন কায়দায়।
এসব দেখে শুনে ত্রস্ত তাঁরা ফিরেছেন, আপন কুলায়, না-হলে ২০১১-তে এক কোটি ছিয়ানব্বই লাখ ভোট জুটত না। কিন্তু জুটেই বা কি লাভ? কর্মী সমর্থকদের পাশে প্রায় কেউ নেই। সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। ব্যস্ত, কারণ কমিউনিজমের বদলে কনজিউমারিজম গিলে খেয়েছে অনেককে।
লোকাল ট্রেন বা বাসে চড়েননি বড় নেতারা, ‘পালস’ বোঝেননি শুধু সে কারণে নয়, দলে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নেই। কেউ সাহস করে কিছু বলেন না, ব্যাড বুক-এ চলে যাবেন ভয়ে, কর্পোরেট সেক্টরের দশা, মালিক বা তাঁর প্রিয়জনের মুখের ওপর কেউ কথা বলতে সাহস করেন না। আর তার ফলে সত্যটা থেকে গেছে অজানা।
মানুষ কী ভাবছে, কী ভাববে। আর যা পড়লে বা শুনলে পিছিয়ে পড়ার প্রবল সম্ভবনা, সেই সব পড়ে শুনে বড় নেতাদের মাথা গেছে বিগড়ে। এত মিডিয়া প্রীতি জ্যোতি বসুর ছিল না। আর সে কারণে দলে টাটা ও টাকা প্রীতি বেড়েছে। রেজ্জাক মোল্লার মতো ঠোঁটকাটাদের গুরুত্ব দলে কমেছে পরে তার পরিবর্তন ঘটে। গুরুত্ব বেড়েছে মন জোগানো ভদ্দরলোকদের। গলা ভারি না করে কথা না বললে, চেনা-কে না চেনার ভান না করলে বড় নেতা হওয়া কঠিন ছিল সি পি এমে।
আর বিপরীতে মমতা পরে নিয়েছেন ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দের সি পি এম-এর জুতো। তাতে নির্বাচনী বৈতরণী সবেগে পার। কিন্তু তার অনুগামীদের অনেকে না ১৯৮৭ পরবর্তী সি পি এমের জুতো পরে না ফেলেন! কনজিউমারিজম না গিলে খায় তাদেরও। হাবভাব না বদলে যায় ক্ষমতার প্রতি মমতায়।
পুনশ্চ : বিরোধী নেত্রী মমতার কাছে কিছু জিনিস শিখতে হবে সি পি এম নেতাদের। ছুটতে হবে। ঘরছাড়াদের কথা শুধু মুখে বললে হবে না, তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে হবে। কী খাচ্ছে, কী পড়ছে, কোথায় থাকছে—সব। প্রয়োজনে ব্যবহার করে ভুলে গেলে চলবে না। শহিদদের পরিবারের পাশে থাকতে হবে।
আর কোনও দল, কীসের দল, কাদের জন্য দল মতাদর্শ কী বোঝাতে হবে। রাজনৈতিক শিক্ষা দিতে ও নিতে হবে। তরুণদের ঠাঁই দিতে হবে, গরিব দরদী তরুণদের কাজে লাগাতে হবে প্রবীণদের শিক্ষাকে।
এতকাল মানুষ এসেছে, ঘরে দপ্তরে, এবারে যেতে হবে তাঁদের ঘরে, জনতার দরবারে। কাটাতে হবে ভয়, আনতে হবে পরিবর্তন—নেতৃত্বে নীতিতে।
২০২০-র সংযোজন! এখন ভোট নেমে এসেছে। ৪৪ শতাংশ ছিল ২০১১-য়। ৭ শতাংশ। বিজেপি-র দিকে ঢলেছে সিংহভাগ। একদিকে মুসলিম বিদ্বেষ, অন্যদিকে তৃণমূলকে জব্দ করব—এই মনোভাব। তার সঙ্গে কেন্দ্রের শাসকশ্রেণির সঙ্গে থাকার আকাঙ্ক্ষা।
কিন্তু তা তো একদিনে হয়নি। কেন হল?
শুনে নেওয়া যাক কিছু অ-হিসেবি কথা।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন