চতুর্দশ অধিকরণ। প্রকরণ ১৭৭–১৭৯।
ঔপনিষধিক (বিষ, ভেষজ, ঔষধি ও মন্ত্রপ্রয়োগ) নামক চতুর্দশ অধিকরণের তিনটি প্রকরণ বা আলোচ্য বিষয় হলো—
১. পরঘাত প্রয়োগ তথা শত্রু হত্যার জন্য ঔষধি উপাদান প্রয়োগ ২. প্রলম্ভন তথা ঔষধ ও মন্ত্র (ঐন্দ্রজালিক বিদ্যা) প্রয়োগের মাধ্যমে শত্রুকে প্রবঞ্চিতকরণ ৩. রাজার সৈন্যদের উপর শত্রুপক্ষ কর্তৃক প্রয়োগকৃত ঔষধ, বিষ ও মন্ত্রের প্রভাব প্রতিকারকরণ।
এই অধ্যায়ে বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাণীঘাতক উপাদানের বিষয় বিধৃত হয়েছে। বিশেষত বিভিন্ন পর্যায়ে নানাবিধ প্রক্রিয়ায় বিষক্রিয়ার মাধ্যমে শত্রুর নিধন, শত্রু সেনাদের বিতাড়ন বা হত্যার উপর আলোকপাত করা হয়েছে।
১৪-০১-০১ রাজা অধার্মিকদের সৃষ্ট উৎপীড়ন হতে চতুর্বর্ণ তথা সকল শ্রেণির মানুষকে সুরক্ষা প্রদানের জন্য অধার্মিকদের উপর ঔষধি ও মন্ত্র (ঐন্দ্রজালিক বিদ্যা) প্রয়োগ করবেন। শরীর বিষাক্রান্ত করে হত্যা করার জন্য তিনি কুব্জ, বামন, কিরাত, মূক, বধির, মূর্খ, অন্ধ বা স্ত্রীর ছদ্মবেশধারী গুপ্তচরদের দিয়ে শত্রুর পরিধেয় বস্ত্রে বিষমিশিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করাবেন।
শত্রুনৃপতিকে নিধনের জন্য রাজা তার গুপ্তচরদের মাধ্যমে শত্রু কর্তৃক ক্রীড়ায় ব্যবহার্য উপকরণে, ব্যবহার্য দ্রব্যের ভাণ্ডারে এবং অন্যান্য ভোগ্যপণ্য সংরক্ষণের স্থানে মারণাস্ত্র লুকিয়ে রাখবে এবং সুবিধা মতো সময়ে তা শত্রুর উপর প্রয়োগ করিয়ে তাকে হত্যা করাবে। এছাড়াও রাত্রিতে বিচরণকারী সত্রী নামক গুপ্তচর এবং অগ্নিজীবীরা শত্রুর অবস্থান স্থানে আগুন লাগিয়ে তাদের ঘাতিত করবে।
১৪-০১-০২ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দাগযুক্ত ব্যাঙ, মলমূত্রে বিষযুক্ত কীট, বনতিন্তির পাখি, কুষ্ঠবৃক্ষের ফুল-ফল-বাকল-মূল এবং শতপদী প্রাণীর চূর্ণের সাথে অল্পবিষযুক্ত কীট, কম্বলি বা বিশেষ কৃমি, শতমূলি, কন্দ, ইঋ, ও গিরগিটির চূর্ণ এবং টিকটিকি, অন্ধাহিক (এক ধরনের বিষহীন সাপ বা মাছ), জংলি তিতির পাখি, পূতিকীট ও গোমরিকার চূর্ণ মিশিয়ে সেই মিশ্রণ ভল্লাতক ও অবকা বৃক্ষের রসে দ্রবীভূত করা হলে সেই নির্যাস প্রাণসংহারী হয়। তপ্তাবস্থায় এই দ্রবীভূত উপাদানের ধোঁয়াও প্রাণবিনাশকারী হয়। উপরোক্ত কীটসমূহের কোনো একটিকে যদি আগুনে দগ্ধ করিয়ে তার ঘ্রাণ ছড়িয়ে দেওয়া হয় তাতেও প্রাণীর মৃত্যু হতে পারে। অধিকন্তু উক্ত তপ্তকীটের সঙ্গে যদি কৃষ্ণসর্প বা প্রিয়ঙ্কুর সংমিশ্রণ করা হয় তাহলে তার বিষক্রিয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে যে কোনো প্রাণীর মৃত্যু ঘটতে পারে।
১৪-০১-০৩ যদি ধামার্গব ও যাতুধানের মূলের চূর্ণ ভাল্লাতক পুষ্পের সাথে মেশানো হয়, তাহলে সেই মিশ্রণ পনেরো দিনের মধ্যে প্রাণী ঘাতকের ঔষধিতে পরিণত হয়। ব্যাঘাতক বৃক্ষের মূল ও ভল্লাতক পুষ্পের মিশ্রণের সাথে পূর্বেবর্ণিত তপ্ত কীটমিশ্রিত করা হলে তা প্রাণী হন্তারক বিষে পরিণত হয়, নরহত্যার ক্ষেত্রে এই বিষ এক কলা পরিমাণ প্রয়োগযোগ্য, হাতি ও উট হত্যার ক্ষেত্রে এর পরিমাণ চতুর্গুণ বৃদ্ধি করে প্রয়োগ করতে হবে।
১৪-০১-০৪ শতাবরি, যক্ষকদম, উচ্চিদিঙ্গ বা অল্পবিষযুক্ত কীট, করবীর, কটুতুম্বী ও মাছের মিশ্রিত নির্যাসের তপ্ত ধোঁয়া যদি ধুতুরা ও কোদ্রবের কাণ্ডের সাথে অথবা হস্তিকর্ণ ও পলাশের কাণ্ডের গুঁড়ার সাথে মিশিয়ে বাতাসের মাধ্যমে শত্রুর দিকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তার বিষক্রিয়ায় সমস্ত প্রাণী বিনাশিত হবে। দুর্গন্ধযুক্ত পূতিকীট, মৎস্য, কটুতুম্বী, শতাবরি, যক্ষকর্দম, দগ্ধ পলাশের ডাল এবং ইন্দ্রগোপের গুঁড়া অথবা পূতিকীট, ক্ষুদ্রা, অরালা, ধুতুরা ও ইক্ষুগন্ধার গুঁড়া যদি ছাগলের শিং ও খুরের সাথে মিশিয়ে তপ্ত করে ধোঁয়া উদ্গীরণ করা হয়, তাহলে সে ধোঁয়ার বিষক্রিয়ায় প্রাণীদের অন্ধত্ব দেখা দেয়। কাঁটাযুক্ত করমচা, হরিতাল, মনঃশিলা, গুঞ্জা ও রক্তকার্পাসের কাণ্ড যদি আস্ফোট, কাচ (এক ধরনের লবণ), ও গোবরের রসের সাথে মিশিয়ে পিষ্ট করে তপ্ত করা হয়, তাহলে সেই নির্যাস হতে উত্থিত ধোঁয়ার বিষক্রিয়ায় প্রাণীদের অন্ধত্ব দেখা দেয়।
১৪-০১-০৫ কবুতর, ব্যাঙ, ক্রবাদ, শকুন, হাতি, মানুষ এবং শূকরের মূত্র ও মল বা কাসীমধাতু, হিঙ্গু, যবতুষ, কার্পাস, কুটজ, গোমূত্রিকা, ভাণ্ডীর মূল, নিম, শিগ্রু, ফণিজ্জ, সজিনা, পীলু বৃক্ষের বাকল, সাপ ও ছোট মাছের চামড়া, হাতির নখ ও দাঁতের গুঁড়া একত্রে মিশিয়ে আগুনে পুড়িয়ে সেই উদ্গীরিত ধোঁয়ার সাথে ধুতুরা, কোদ্রবের কাণ্ড, হস্তিকর্ণ ও পলাশের কাণ্ডের ধোঁয়া মিশ্রণ করে যতদূর ছড়িয়ে দেওয়া হবে ততদূরের সকল প্রাণী মৃত্যুমুখে পতিত হবে।
১৪-০১-০৬ অন্বষ্ঠা, কুঠ, নল তৃণ ও শতাবরীর মূল অথবা সাপ, ময়ূরপুচ্ছ, কয়ার পাখি, কুঠের বাকল, পাতা, ফুল ও ফলের গুঁড়া, কিছু পরিমাণ আর্দ্র ও শুষ্ক মদন বৃক্ষের কাণ্ডের সাথে মিশিয়ে যদি আগুনে পুড়িয়ে ধোঁয়া উৎপন্ন করা হয় এবং সেই ধোঁয়া যদি আক্রমণকারী শত্রুসেনাদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে তারা তৎক্ষণাৎ অন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া শারিকা, কপোত, বক ও বলাকার বিষ্ঠা যদি অর্ক, বহেড়া, পীলুক ও সমন্তদুগ্ধর সাথে মিশিয়ে পিষ্ট করে তা চোখে প্রয়োগ করা হয়, তাতেও অন্ধত্ব দেখা দেয়, এ ধরনের নির্যাস পানিতে মেশালে পানিও দূষিত হয়ে যায়।
১৪-০১-০৭ যব, শালি ধানের মূল, ধুতুরা, চামেলি বা মালতি ফুলের পাতা মানুষের মূত্রের সাথে মিশিয়ে তার সাথে যদি পিপ্পল ও বিদারীর মূল মিশ্রিত করা হয় অথবা সেই মিশ্রণের সাথে যদি মূক, উদম্বির, মদনবৃক্ষ ও কোদ্রবের ক্বাথ অথবা হস্তিকর্ণ ও পলাশের ক্বাথ মেশানো হয়, তাহলে তা মদনযোগ নামক যোগে পরিণত হয় এবং তা কারো উপর প্রয়োগ করা হলে, সে ব্যক্তি বা প্রাণীর চিত্তবিভ্রম ঘটবে তথা উম্মাদ হয়ে যাবে। আবার শিং মাছ, গৌতম বৃক্ষ, শিমূল ও ময়ূরপদীর যোগ এবং গুঞ্জা, লাঙ্গলি, কালকূটবিষ ও ইঙ্গুদীর যোগ এবং করবীর অক্ষি, পীলুক, অর্ক ও মৃগমারণীর যোগ পূর্বোক্ত ক্বাথের সাথে মিশিয়ে যদি মদনযোগ তৈরি করা হয়, তার প্রভাবে মানুষ উম্মাদ হয়ে যায় এবং গোখাদ্য, জ্বালানি ও জলও বিষাক্ত হয়ে যায়। এছাড়া কাঁকলাস, টিকটিকি ও কুঁচকে মাছ একত্রে পোড়ালে তার উৎপন্ন ধোঁয়ার প্রভাবেও মানুষ অন্ধ ও উম্মাদ হয়। কৃকলাস ও গৃহগোলিকার পোড়ানো উৎপন্ন ধোঁয়ার প্রভাবে কুষ্ঠব্যাধি হয়, এর সাথে মধু মেশানো হলে তার প্রভাবে প্রমেহ রোগ হয়, এই যোগ রক্তে মিশ্রিত হলে মানুষ ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়।
১৪-০১-০৮ দূষীবিষ তথা নেত্রমল বা পিচুটি এবং মদন ও কোদ্রবের গুঁড়ার মিশ্রণে যে যোগ তৈরি হয় তার প্রভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্ততা দেখা দেয়। মাতৃবাহক (পাখি), অঞ্জলিকার, ময়ূরপুচ্ছ, ব্যাঙ, অক্ষি ও পীলুকের গুঁড়ার মিশ্রণে যে যোগ তৈরি হয় তার প্রভাবে কলেরা দেখা দেয়। কুঠবৃক্ষের পাতা, ফল, ফুল, ছাল ও মূলের সাথে কৃমি, পিয়াল ও মহুয়ার মিশ্রণের ফলে যে যোগ উৎপন্ন হয় তার প্রভাবে জ্বর দেখা দেয়। ভাস, নকুল ও জিহ্বার গুঁড়া গর্দভীর দুধের সাথে মিশিয়ে যে যোগ তৈরি করা হয়, তার প্রভাবে মানুষ একমাস বা অর্ধমাসের মধ্যে মূক বা বধির হয়ে পড়ে।
১৪-০১-০৯ শিমুল, বিদারী ও ধানের সাথে সিদ্ধি, পিপ্পলিমূল ও বৎসনা ভ মিশ্রিত করে তার সাথে মুষিকের রক্ত মিশিয়ে সেই মিশ্রণের নির্যাস যদি বানের মাধ্যমে কারো উপর প্রয়োগ করা হয়, তাহলে সে ব্যক্তি কর্তৃক দশজন দংশিত হবে এবং উক্ত দশজনের প্রতিজন কর্তৃক আরো দশজন দংশিত হবে এ প্রক্রিয়ায় বিপুল শত্রু সেনা বিনষ্ট হবে। এছাড়াও ভেলাগাছ, যাতুধান, অপামার্গ ও অর্জুন ফুলের সাথে সিদ্ধি, এলাচ, অক্ষি, গুগুলু, হালাহাল বিষের ক্কাথ ছাগল ও মানুষের রক্তের সাথে মেশানো হলে তাও এক ধরনের দংশনীয় মিশ্রণ হয়। এ ধরনের মিশ্রণের প্রভাবে জলাশয়ের মাছ এবং জলও বিষাক্ত হয়ে পড়ে।
১৪-০১-১০ কোনো মৃতসর্পকে লাল ও সাদা সর্ষের সাথে মিশিয়ে উষ্ট্রাকৃতির ভাণ্ডে ভরে দেড়মাস মাটির নিচে পুঁতে রাখা হলে, বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হবে এবং তা দর্শন করামাত্র দর্শনার্থী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে। বজ্রপাতে প্রজ্বলিত আগুন বা বজ্রপাতে দগ্ধ অঙ্গারে আগুন জ্বালিয়ে তা যদি শত্রুর স্থাপনায় নিক্ষেপ্ত করা হয়, তাহলে সে আগুন কিছুতেই নেভানো সম্ভব হয় না, সেই আগুন সবকিছু পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়।
১৪-০১-১১ কর্মকারের কাছ থেকে আগুন সংগ্রহ করে যোগপ্রয়োগকারী পুরুষ ঐ অগ্নিতে পৃথকভাবে মধুর দ্বারা হবন করাবেন, সুরা বিক্রেতার কাছ থেকে আগুন সংগ্রহ করে সুরা দিয়ে আহুতি করাবেন, লৌহকারের কাছ থেকে আগুন সংগ্রহ করে ঘৃতের মাধ্যমে আহুতি করাবেন। পতিব্রতা রমণীর কাছ থেকে আগুন সংগ্রহ করে পুষ্পমাল্যের মাধ্যমে আহুতি করাবেন। ব্যাভিচারিণীর কাছ থেকে আগুন সংগ্রহ করে সরিষা দিয়ে আগুনে আহুতি করাবেন। সুতিকাগৃহের আগুন সংগ্রহ করে দধি দিয়ে তার আহুতি করাবেন এবং অগ্নিহোতার গৃহের পবিত্রঅগ্নি সংগ্রহ করে আগুনে তণ্ডুল দিয়ে আহুতি করাবেন। চণ্ডালের গৃহ হতে আহরিত আগুন মাংস দিয়ে আহুতি করাবেন। চিতা হতে সংগৃহিত আগুনের আহুতি করাবেন মানুষের মাংস দিয়ে। উপরোক্ত সবগুলো অগ্নি একত্রিত করে ছাগলের চর্বি, মানুষ, মাংস ও অশ্বত্থের শুষ্ক কাঠ দিয়ে আহুতি করাবেন। এইসব অগ্নিতে রাজবৃক্ষ তথা পিয়ালগাছের কাঠ দিয়ে আহুতি করাতে হবে। আহুতির মন্ত্র হলো—’হে অদিতি (ঋগ্বৈদিক দেবী) তোমাকে নমস্কার!) হে অনুমতি (অথববৈদিক দেবী) তোমাকে নমস্কার, হে স্বরস্বতি তোমাকে নমস্কার, হে সবিতৃ তোমাকে নমস্কার। অগ্নির উদ্দেশ্যে স্বাহা, সোমের উদ্দেশ্যে স্বাহা, ভূ-র উদ্দেশ্যে স্বাহা, ভূবর এর উদ্দেশ্যে স্বাহা।’
এই অধ্যায়ে ভেষজ উপাদান এবং মন্ত্রণার মাধ্যমে শত্রুকে প্রতারিত করবার উপায়ের উপর আলোকপাত করা হয়েছে। এছাড়া কোন প্রকৃতির ভেষজ খেয়ে কতদিন উপবাস থাকা যায়, কোন প্রকৃতির ভেষজ শরীরে মালিশ করলে সৌন্দর্য বিকৃতি ঘটতে পারে, শ্বেতরূপ অর্জিত হতে পারে, কোন প্রকৃতির ভেষজ শক্তিসমর্থতার সহায়ক যা রাজার আক্রমণের জন্য সহায়ক এবং শত্রুর জন্য বিপর্যয়কর, ইত্যাকার বিষয়াদিও এ পর্যায়ে আলোচিত হয়েছে।
১৪-০২-০১ শিরীষ, ডুমুর ও শমী’র গুঁড়ার সাথে ঘৃত মিশিয়ে খেলে পনেরোদিনের জন্য ক্ষুধার উদ্রেক হবে না। বৃষ্যকন্দ, উৎপলের কন্দ, ইক্ষুমূল, মৃণাল, দুর্বা, দুগ্ধ, ঘৃত ও মণ্ড একত্রে মিশিয়ে খেলে একমাস ক্ষুধার উদ্রেক হবে না। মাষকলাই, যব, কুলখকলাই, দর্ভমূলের গুঁড়া ঘৃতের সাথে মিশিয়ে ভক্ষণ করা হলে, একমাস উপবাস করার সমর্থতা লাভ করা যায়। বলী, দুগ্ধ ও ঘৃতর সমানুপাতিক দ্রবণ পানের মাধ্যমে একমাস উপবাস থাকার সক্ষমতা অর্জন করা যায়। সালপর্ণী ও পৃশ্নিপর্ণীর মূলের কল্ক দুধের সাথে মিশিয়ে পান করলেও একমাস উপবাস থাকার সমর্থতা অর্জন করা যায়। সালপর্ণী ও পৃশ্নিপর্ণী মূলের কল্কের সাথে জ্বাল দেওয়া দুধ মিশিয়ে তা যদি মধু ও ঘৃত সহযোগে ভক্ষণ করা হয়, তাহলেও একমাস উপবাস থাকার সক্ষমতা অর্জিত হয়।
১৪-০২-০২ সর্ষের তেল সাদা ছাগলের মূত্রের সাথে সাতদিন মিশিয়ে রেখে অতঃপর তা টক লাউয়ের শুকনো খোলে আধামাস বা একমাস সংরক্ষণের পর অঙ্গেমালিশ করা হলে অঙ্গের সৌন্দর্য বিকৃতি ঘটতে পারে। এক নাগাড়ে সাতদিন ঘোল এবং যব ভক্ষিত সাদা গর্দভের বিষ্ঠায় সাদা সর্ষে সংরক্ষণের পর সে সর্ষের উৎপন্ন তেল শরীরে মালিশ করা হলে, শরীরের সৌন্দর্য বিকৃতি দেখা দিতে পারে।
১৪-০২-০৩ সাদা ছাগল বা সাদা গাধার মূত্র ও বিষ্ঠার রসে সিক্ত সরিষা হতে উৎপন্ন তেলের সাথে ধুতুরা, ব্রহ্মকাষ্ঠ ও শালিধানের গুঁড়া মিশ্রিত করে, যে ঔষধি প্রস্তুত করা হয় তা মর্দন করা হলে শরীর শ্বেতবর্ণ ধারণ করে। সাদা মোরগ এবং অজগর সাপের বিষ্ঠা ব্যবহারের ফলেও শরীরের ত্বক শ্বেতবর্ণ ধারণ করতে পারে। এছাড়া সাদা ছাগলের মূত্রে সাতরাত ভিজিয়ে রাখা সাদা সরিষা হতে উৎপাদিত তেলে ঘোল, ধুতুরা, ব্রহ্মকাষ্ঠ, পটোল, মৎস্য ও বিলঙ্গের গুঁড়া পনেরোদিন মিশিয়ে রেখে তা ব্যবহার করা হলেও শরীর শ্বেতরূপ ধারণ করতে পারে।
১৪-০২-০৪ কদলী, সোমরাজী, লবণ, পারদ ও দুর্গন্ধযুক্ত দ্রব্য সুরাতে ভিজিয়ে রেখে যদি তক্র, ধুতুরা, ব্রহ্মকাষ্ঠ, সুহি, লবণ এবং কাঞ্চিকের সাথে পনেরোদিন মিশিয়ে রাখার পর শরীরে মালিশ করা হয়, তাহলেও শ্বেতবর্ণ লাভ করা যায়। শুকনো আদার সাথে সাদা সরিষার গুঁড়া মিশিয়ে সেই মিশ্রণ লতায় সংযুক্ত তাজা টক লাউয়ে পনেরোদিন সংরক্ষণ করার পর শরীরে ব্যবহার করা হলেও শ্বেতবর্ণ লাভ করা যায়।
১৪-০২-০৫ গাব ও নিমের মণ্ড শরীরে লেপনের পর তার উপর যদি ভল্লাতক ও পারদের প্রলেপ দেওয়া হয়, তাহলে একমাসের মধ্যে শরীরে কুষ্ঠরোগ দেখা দিতে পারে। কালো সাপ ও গৃহগোলিকার মুখে সাতরাত রক্ষিত গুঞ্জা খেলেও কুষ্ঠ রোগ দেখা দিতে পারে। শুক পাখির পিত্ত ও ডিমের রস শরীরে মাখালেও কুষ্ঠরোগ হতে পারে। প্রিয়ালবৃক্ষের কল্ক ও কষার মাধ্যমে কুষ্ঠরোগ হতে নিরাময় লাভ করা যায়।
১৪-০২-০৬ মুরগি, পটোল বা ঝিঙ্গা ও শতাবরীর মূল গুঁড়া করে ভক্ষণ করলে একমাসের মধ্যে শ্বেতবর্ণধারণ করা যায়। বটের কষের সাথে স্নাত ও কুরবক গাছের বাকল থেকে নিসৃত ক্কাথ শরীরে লেপন করা হলে, বর্ণ কালো হয়ে যায়। শকুনের চর্বি ও প্রিয়ঙ্গুর তেলের সাথে হরিতাল ও মনঃশিলার মিশ্রণের মাধ্যমে যে ঔষধি প্রস্তুত হয়, তা শরীরে মাখানো হলে ত্বক কালো বর্ণ হয়ে যায়। খদ্যোত বা জোনাকির গুঁড়া সর্ষের তেলের সাথে মেশানো হলে তা রাত্রিকে আলোকিত করে।
১৪-০২-০৭ জোনাকি ও ছোট কেঁচোর গুঁড়া, সমুদ্রের বিশেষ প্ৰাণী ও কলিঙ্গ নামক পাখির মস্তকের গুঁড়া, খদিরবৃক্ষ ও কর্ণিকাবৃক্ষের ফুলের গুঁড়া শকুন ও প্রিয়ঙ্গুর তেলের সাথে মিশিয়ে লেপন করা হলে শরীর প্রজ্বলিত হয় কিন্তু তা শরীরকে দগ্ধ করে না। নিম বৃক্ষের বাকলজাত কালির সাথে ব্যাঙের চর্বিমিশ্রিত নির্যাস শরীরে লেপন করা হলে অগ্নিপ্রজ্বলিত হয় কিন্তু তা শরীরকে দগ্ধ করে না। এছাড়াও নিমের ছাল, বজ্র, কদলী ও তিলকের মণ্ড শরীরে লেপন করা হলে তা শরীরকে না পুড়িয়েই অগ্নি প্রজ্বালন করতে পারে।
১৪-০২-০৮ পীলুবৃক্ষের বাকল থেকে প্রস্তুত কালির দ্বারা যুক্ত পিণ্ড তথা বোল নামক ভেষজ হাতের তালুতে রাখা হলে তা অগ্নিসংযোগ ছাড়াই জ্বলতে পারে। এছাড়া ব্যাঙের চর্বি দ্বারা লিপ্ত পিণ্ড হাতের তালুতে রেখে অগ্নিসংযোগ করা হলেও তা হাতের ক্ষতি না করে জ্বলতে পারে। সেই পিণ্ডের মাধ্যমে লেপনকৃত অঙ্গে যদি কুশ ও আম ফলের তেল দেওয়া হয় অথবা সামুদ্রিক স্ত্রী জাতীয় ব্যাঙ, সমুদ্রের ফেনা বা শালবৃক্ষের গুঁড়া মেশানো হয়, তাহলে তা অঙ্গের ক্ষতি না করেও জ্বলতে পারে। চর্বির সাথে সেদ্ধ দুধ এবং কাঁকড়ার সাথে সমপরিমাণ তেল মিশিয়ে যদি শরীরে মালিশ করা হয়, তাহলে শরীরের কোনো ক্ষতি না করেও তা থেকে আগুন জ্বলতে পারে। ব্যাঙের চর্বির দ্বারা লিপ্ত শরীরও শরীরকে না জ্বালিয়ে আলোকিত করতে পারে।
১৪-০২-০৯ বাঁশের মূল ও শেওলার দ্বারা লেপনকৃত অঙ্গ ব্যাঙের চর্বি দিয়ে প্রতিলিপ্ত হলে, তা শরীরের ক্ষতি না করেও প্রজ্বলিত হতে পারে। নিম, প্রতিবলা, বেত, তিলফুল ও কদলীর মূলের সমন্বয়ে প্রস্তুতকৃত কল্কের সাথে ব্যাঙের চর্বি মিশিয়ে তা যদি কোনো ব্যক্তির পায়ে লেপন করা হয়, তাহলে সে ব্যক্তি নির্বিঘ্নে জ্বলন্ত অঙ্গারের উপর দিয়ে হেঁটে যেতে পারে। পুঁইশাক, প্ৰতিবলা, বেত ও নিমের মূল দিয়ে প্রস্তুতকৃত কল্কের সাথে ব্যাঙের চর্বি মেশানো নির্যাস কারো পায়ে লেপন করা হলে, সে ব্যক্তি পুষ্পের উপর দিয়ে হেঁটে যাবার অনুভূতি নিয়ে জ্বলন্ত অঙ্গারের উপর দিয়ে হেঁটে যেতে সক্ষম হবে।
১৪-০২-১০ হাঁস, ক্রৌঞ্চ, ময়ূর বা এ জাতীয় পাখির পুচ্ছেনলনামক তৃণ সংযুক্ত করা হলে রাত্রিতে তা নক্ষত্রের মতো দৃশ্যমান হয় এবং তা দেখে সাধারণ জনারণ্যে ভীতি উৎপন্ন হয়। স্ত্রীলোকের রাজোদ্বারা মিশ্রিত মাষকলাই ব্যাঙের চর্বির সাথে মিশিয়ে তা প্রজ্বলিত চুলায় রাখলেও সে আগুন দিয়ে রান্না করা সম্ভব হয় না।
১৪-০২-১১ আম ও কুশের তেলের প্রজ্বলিত আগুন বৃষ্টি বা প্রবল বাতাসের তোড়েও জ্বলতে পারে। তেলযুক্ত সমুদ্রের ফেনা পানিতে ভাসমান অবস্থাতেও জ্বলতে পারে। পানিতে ভাসমান পাখির অস্থিতে বিচিত্রবর্ণের বাঁশের মন্থনে উৎপাদিত অগ্নিজলের সিঞ্চনেও নির্বাপিত হয় না, বরং জলের স্পর্শে তা আরও বেশি প্রজ্বলিত হয়।
১৪-০২-১২ অস্ত্রের আঘাতে হত বা শূলে আরোপিত দেহের বামপার্শ্বস্থিত পর্শকা নামক অস্থিতে বিচিত্রবর্ণের বাঁশের মন্থনের মাধ্যমে অগ্নিউৎপাদন করা হলে সেখানে আর কোনো আগুন জ্বলবে না। গন্ধগোকুলা, খঞ্জন ও খারকীট পিষে অশ্বমূত্রের সাথে মিশিয়ে পুনরায় পিষা হলে সেই নির্যাস তা দিয়ে শৃঙ্খল ভাঙা যায়।
১৪-০২-১৩ কাঁকড়ার ডিম, ব্যাঙ ও খারকীটের চর্বি দিয়ে লেপনকৃত পাথর দ্বিগুণ শক্তিসম্পন্ন হয় এবং তা দিয়ে শেকল ভাঙা যায়। শূকরের গর্ভ, সদ্যপ্রসূত গোবৎসের গর্ভ যদি সারসপাখি ও শকুনের পার্শ্বদেশে, নীলপদ্ম ও পানির সাথে পিষ্ট হয় এবং উক্তরূপ মিশ্রণ যদি চতুষ্পদ ও দ্বিপদ প্রাণীর পায়ে লেপন করা হয়, তাহলে সে প্রাণীর চলার গতি কখনো রুদ্ধ হয় না। উটের চামড়ায় প্রস্তুতকৃত পাদুকায় যদি উলুক ও শকুনের চর্বি লিপ্ত করা হয়, তাহলে উক্ত পাদুকাধারী বিনাশ্রমে ৫০ যোজন পথ পাড়ি দিতে পারে।
বাজপাখি, বক, শকুন, হাঁস, ক্রৌঞ্চ, বীচিরল পাখির মজ্জা অথবা বীর্য যদি কারো পায়ে বা পাদুকায় লেপন করা হয়, তাহলে সে ব্যক্তি বিনাশ্রমে শত যোজন পথ অতিক্রম করতে সক্ষম হবে। অথবা সিংঘ, বাঘ, চিতা, কাক, ও উলুকের মজ্জা বা বীর্য পায়ে বা পাদুকায় লেপন করা হলেও একই ফল পাওয়া যাবে। উচ্চবর্ণের স্ত্রী লোকের গর্ভপাত হলে উটাকৃতির মৃৎপাত্রে রেখে তা নিঙড়িয়ে বা স্থিত করে অথবা মৃত শিশুকে শ্মশানে নিয়ে নিঙড়িয়ে তা হতে আহরিত চর্বি দিয়ে যদি পূর্বোক্তভাবে কারো পা বা পাদুকা লেপন করা যায় তাহলে একই ফলপ্রাপ্ত হবে।
বিজয়াকাঙ্ক্ষী রাজা রাজ্যের মঙ্গল ও প্রজাদের হিতার্থে উপরোক্ত অনিষ্টকারী ও প্রতারণামূলক উপাদান প্রয়োগ করে শত্রুর উদ্বেগ উৎপাদন করবেন, এর প্রভাবে শত্রু রাজ্যে অরাজকতা দেখা দিতে পারে, যা রাজার জন্য প্রকারান্তরে আক্রমণের সহায়ক হবে। নিন্দনীয় হলেও শত্রু বিনাশে এবং বিদ্রোহ দমনার্থে রাজাকে এ ধরনের তরিকা অবলম্বন করে অভীষ্ট অর্জন করতে হবে।
এই অধ্যায়ে বিভিন্ন ধরনের ভেষজঔষধি ও মন্ত্র প্রয়োগের মাধ্যমে শত্রুকে প্রতারিত করবার কৌশলের উপর আলোকপাত করা হয়েছে।
১৪-০৩-০১ কোনো ব্যক্তি যদি বিড়াল, উট, নেকড়ে বাঘ, শূকর, সজারু, বাগুলি, নতা, কাক, পেঁচা ও অন্যান্য নিশাচর প্রাণীর বাম ও ডান চোখ আলাদাভাবে গুঁড়া করে বাম চোখের গুঁড়া নিজের ডান চোখে এবং ডান চোখের গুঁড়া বাম চোখে লেপন করেন, তাহলে তিনি রাতের অন্ধকারেও সবকিছু স্পষ্ট দেখতে পাবেন। এছাড়া তেঁতুল, শূকরের চোখ, জোনাকি ও কালশারিবার চূর্ণের মিশ্রণ চোখে লেপন করা হলেও রাতের অন্ধকারে সবকিছু দর্শনীয় হবে।
১৪-০৩-০২ তিনদিন তিনরাত্রি উপোস করে কেউ যদি অস্ত্রাঘাতে বা শূলারোপে ঘাতিত কোনো ব্যক্তির মাথার খুলিতে মাটি রেখে তাতে ভেড়ার দুধের সেচন দিয়ে যব উৎপাদন করত সেই যবাঙ্কুরের মালা পরিধান করে বিচরণ করে, তাহলে অন্যদের কাছে তার উপস্থিতি অদৃশ্যমান হবে। তিনদিন তিনরাত্রি উপোস করার পর কেউ যদি পুষ্যনক্ষত্রযুক্ত কালে কোনো কুকুর, বিড়াল, পেঁচা ও বাগুলি পাখির ডান ও বাম চোখ স্বতন্ত্রভাবে গুঁড়া করে তাদের ডান চোখের চূর্ণ নিজের ডান চোখে এবং বাম চোখের চূর্ণ নিজের বাম চোখে লেপন করেন, তাহলেও তিনি অন্যদের কাছে অদৃশ্যমান হবেন। এছাড়াও তিনদিন তিনরাত্রি উপোস করার পর কোনো পুরুষ মানুষ যদি পুষ্যনক্ষত্রযুক্তকালে কোনো পুরুষ হত্যাকারী ব্যক্তির উরু বা বাহুর হাড় দিয়ে শলাকা বা অঞ্জনদানি প্রস্তুত করে পূর্বোক্ত প্রাণীদের চোখের চূর্ণ সেই অঞ্জনদানিতে রেখে সেই শলাকা দিয়ে তা চোখে লেপন করে, তাহলে তিনি ও তার ছায়াও অন্যদের কাছে অদৃশ্যমান বলে মনে হবে।
১৪-০৩-০৩ তিনদিন তিনরাত্রি উপোস করার পর কোনো পুরুষ যদি পুষ্যনক্ষত্রযুক্ত কালে পুরুষ হত্যাকারী ব্যক্তির উরুর অস্থি দ্বারা অঞ্জন শলাকা ও অঞ্জন পাত্র প্রস্তুতের পর কোনো এক নিশাচর প্রাণীর খুলিতে অঞ্জনপূর্ণ করে তা মৃতা নারীর যোনিতে প্রবিষ্টের মাধ্যমে তপ্ত করে ওই অঞ্জন পাত্রে রেখে চোখে লেপন করে, তাহলে তিনিও অন্যদের কাছে অদৃশ্যমান বলে প্রতিপন্ন হবেন।
১৪-০৩-০৪ কোনো ব্যক্তি যদি কোনো ব্রাহ্মণকে দাহ্যমান অবস্থায় দেখে তিনদিন তিনরাত্রি উপোস করে পুষ্যনক্ষত্রযুক্ত কালে আত্মহননকারী ব্যক্তির পরিধেয় বস্ত্র দিয়ে থলি প্রস্তুত করিয়ে তার চিতাভস্মে ওই থলি পূর্ণ করে তা নিজের শরীরে ধারণ করেন, তাহলে তিনিও লোক সমক্ষে অদৃশ্যমান বলে প্রতিপন্ন হবেন। ব্রাহ্মণের শ্রাদ্ধকার্যে হত্যাকৃত গাভীর অস্তি ও মজ্জার গুঁড়া সাপের চামড়ায় প্রস্তুতকৃত থলিতে রেখে কোনো পশুর সাথে সংযুক্ত করা হলে উক্ত পশু অন্যদের কাছে অদৃশ্যমান বলে প্রতিপন্ন হবে অর্থাৎ সে পশুকে কেউ দেখতে পাবে না। এভাবে পেঁচা ও বাণ্ডলীর পুচ্ছ এবং পুরীষ ও জানুর অস্থির গুঁড়া সাপের চামড়ার থলিতে ভরে পাখিদের অঙ্গে সংযুক্ত করা হলে ওই পাখিরাও অদৃশ্যমান হয়ে যায়।
১৪-০৩-০৫ এ পর্যায়ে মন্ত্রের মাধ্যমে মানুষকে নিদ্রামগ্ন করার কথা বলা হয়েছে। এ সমস্ত মন্ত্রের মাধ্যমে গৃহস্থকে ঘুম পাড়িয়ে মূলত চোরেরা চৌর্যকার্যে প্রবৃত্ত হয়ে থাকে। এ ধরনের একটি মন্ত্র হলো, ‘আমি দেবল, দেবর্ষি নারদ ও সাবর্ণি গালবের বন্দনা করি। এই সব দেবতা, অসুর ও ঋষির অনুযোগের দ্বারা আমি গৃহস্থের মহানিদ্রা বিধান করি।’ অন্য মন্ত্রে বলা হয়েছে, ‘অজগর সাপেরা যেমন নিদ্রা যায়, দুষ্টু সৈনিকরা যেমন নিদ্রা যায় তেমনি গ্রামস্থ কৌতূহলি পুরুষেরাও নিদ্রাগ্রস্ত হোক। অন্য এক মন্ত্রে বলা হয়েছে, ‘অধ্যয়নে পারঙ্গত ব্যক্তিগণকে, সিদ্ধগণকে এবং কৈলাস পর্বতবাসী তপস্বীগণকে নমস্কার করে এইসব সিদ্ধগণের কাছ থেকে শক্তি লাভ করে আমি গৃহস্থের ঘোর নিদ্রা বিধান করছি।’
১৪-০৩-০৬ অন্য এক মন্ত্রে বলা হয়েছে, কোনো এক ব্যক্তি তিনদিন তিনরাত্রি উপোস করার পর পুষ্যনক্ষত্রযুক্ত কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে চণ্ডালীর কাছ থেকে মৃত ইঁদুরের মাংস খণ্ড ক্রয় করবে, অতঃপর সেই মাংসখণ্ড মাষ কলাইয়ের সাথে মিশিয়ে ছোট একটি পেটারাতে রেখে তা শ্মশান ভূমিতে পুঁতে রাখবে, এরপর পরবর্তী চতুর্দশী তিথিতে পেটারাটি মাটি থেকে তুলে কোনো কুমারীকে দিয়ে ওতে রক্ষিত মাংসপিণ্ড ও মাষকলাই পিষ্ট করিয়ে কয়েকটি বটিকা তৈয়ার করাবে। এরপর পূর্বোক্ত মন্ত্র পাঠপূর্বক উক্ত প্রকৃতির বটিকা যে স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, সেখানকার সমস্ত প্রাণী নিদ্রামগ্ন হয়ে পড়বে।
১৪-০৩-০৭ তিনস্থানে কালোবর্ণের ও সাদা বর্ণের রেখাযুক্ত সজারুর কাঁটা জনহীন শ্মশানে পুঁতে রেখে, দ্বিতীয় চতুর্দশীতে তা তুলে শ্মশানের মাটি দিয়ে লেপন করে মন্ত্রপাঠপূর্বক কোথাও নিক্ষেপ করা হলে সেখানকার প্রাণীরা নিদ্রামগ্ন হয়ে পড়বে।
১৪-০৩-০৮ এ সংক্রান্ত কিছু মন্ত্ৰ –’আমি সুবর্ণপুষ্পদেবীকে, ব্রাহ্মণীকে, ব্রহ্মাকে ও কুশধ্বজকে, অন্যান্য সব দেবতাকে এবং সকল তপস্বীকে বন্দনা করি।’ ‘ব্রাহ্মণ এবং ক্ষত্রিয় রাজারা আমার বশবর্তী হোন এবং সকল বৈশ্য ও শূদ্রও সর্বদা আমার বশবর্তী হোন্।’ ‘স্বাহা! হে অমিলা, হে কিমিলা, হে বসুজারা, হে প্রয়োগা, হে ফক্কা, হে বায়ুহা, হে বিহালা, হে দন্তকটকা, স্বাহা।’
অন্য মন্ত্র, ‘গ্রামের কুকুরেরা সুখে নিদ্রা যাক, গ্রামের কৌতূহলী ব্যক্তিরা সুখে নিদ্রা যাক, সজারুর এই ত্রিশ্বেত কাঁটা ব্রহ্মার দ্বারা নির্মিত হয়েছে, সমস্ত সিদ্ধপুরুষ নিদ্রিত হয়েছে, তোমার এই যে স্বাপন বিহিত হয়েছে তার প্রভাব গ্রামের বিস্তৃত সীমানা অবধি সূর্যোদয় পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।’
১৪-০৩-০৯ সাতদিন সাতরাত্রি উপোস থেকে কোনো ব্যক্তি মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে খদিরবৃক্ষের কাঁটা দিয়ে আগুনে একশ আটবার মধু ও ঘৃতসহযোগে হোম করে মন্ত্র উচ্চারণপূর্বক সজারুর কাঁটা কোনো গৃহস্থের গৃহদ্বারে সংস্থাপিত করলে উক্ত গৃহের সকলেই নিদ্রিত হয়ে পড়বে।
১৪-০৩-১০ মন্ত্র—’বিরোচন পুত্র বলিকে নমস্কার করি। শতপ্রকার মায়া বিদ্যায় অভিজ্ঞ শম্বর, নিকুম্ভ, নরক, কুম্ভ, মহাসুর, তন্তুকচ্ছ, অর্মালব, প্ৰমীল, মণ্ডোলূক ও ঘটোবলকে নমস্কার করি। কৃষ্ণ ও কংসের ক্রিয়াদি ও যশস্বিনী পৌলোমীকে নমস্কার করি।’ ‘নিজের কার্যসিদ্ধির জন্য মন্ত্রোচ্চারণপূর্বক আমি মৃত শারিকা পাখি গ্রহণ করেছি, জয় হোক, জয় হবেই, কণ্টকযুক্ত সকল প্রাণীকে নমস্কার, স্বাহা।’
১৪-০৩-১১ উপরোক্ত মন্ত্রের প্রয়োগ—কৃষ্ণ চতুর্দশীতে জনশূন্য শ্মশানে বলি নিবেদন করে উক্ত মন্ত্র উচ্চারণপূর্বক একটি মৃত শারিকা গ্রহণ করে সেটিকে একটি ছোট পুটুলিতে বেধে পুটুলিতে সজারুর কাঁটা বিঁধিয়ে মন্ত্রসহযোগে তা কোথাও স্থাপন করা হলে, সেখানকার সকল প্রাণী নিদ্ৰায়মগ্ন হবে। দ্বার উন্মোচনের মন্ত্র—’আমি অগ্নিদেবতার আশ্রয়গ্রহণ করেছি, দশ দিকের সকল দেবতার আশ্রয়গ্রহণ করেছি, সকল প্রকার বিঘ্ন দূর হোক এবং সকলেই সর্বদা আমার বশীভূত হোক, স্বাহা।’
১৪-০৩-১২ উপরোক্ত মন্ত্র প্রয়োগের ক্ষেত্র তিনদিন তিনরাত্রি উপোসকারী ব্যক্তি পুষ্যনক্ষত্রযুক্তকালে কিছু শিলাখণ্ড একত্র করে তার উপর মধু ও ঘৃত ঢেলে একুশবার আহুতি দিবে, তারপর সুগন্ধি ও মাল্য দিয়ে পূজা করে তা মাটিতে পুঁতে রাখবে, অতঃপর পরবর্তী পুষ্যনক্ষত্রকালে শিলাখণ্ডগুলো মাটি থেকে তুলে এর কোনো একটি দিয়ে আঘাত করা হলে আবদ্ধ দরজার কপাটে শিলাখণ্ডের অনুরূপ চারটি ছিদ্রের সৃষ্টি হবে, যার মাধ্যমে দরজা সহজে উন্মোচিত হবে। উপরোক্ত মন্ত্রের অন্যপ্রকার প্রয়োগ—চারবার আহার গ্রহণকারী পুরুষ কর্তৃক কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে মৃত পুরুষের অস্থির দ্বারা ষাঁড়ের মূর্তি তৈরি করে তা উপরোক্ত মন্ত্রের মাধ্যমে অভিমন্ত্রিত হলে দুটি ঋষভযুক্ত গো-যান উপস্থিত হবে—যা দিয়ে আকাশে বিচরণ করা যাবে।
১৪-০৩-১৩ তিনদিন তিনরাত্রি উপোসকারী কোনো ব্যক্তি পুষ্যনক্ষত্রযুক্তকালে অস্ত্রের আঘাতে নিহত বা শূলারোপের ফলে নিহত ব্যক্তির মুণ্ডে মৃত্তিকাপূর্ণ করে তুবরীর বীজ বপন করবে, অতঃপর তাতে জলসিঞ্চন করে শস্য ফলিয়ে তা দিয়ে রজ্জু প্রস্তুত করাবে, অতঃপর সে রজ্জু শত্রুর অস্ত্রের সম্মুখে স্থাপন করা হলে তদ্বারা সহজে শত্রুর অস্ত্র বা যন্ত্র ছেদন করা যাবে।
১৪-০৩-১৪ কোনো স্ত্রী বা পুরুষের চিতাসংলগ্ন মৃত্তিকার দ্বারা একটি জল সাপের খোলস পূর্ণ করতে হবে, অতঃপর তা কারো সম্মুখে সংস্থাপন করা হলে, উক্ত ব্যক্তির কথা রুদ্ধ হয়ে যাবে। একইভাবে উপরোক্ত ধরনের মৃত্তিকা বরাহের চামড়া নির্মিত পুটুলিতে পূর্ণ করে কোনো ব্যক্তির সম্মুখে রাখা হলে, তার মলমূত্র অবরুদ্ধ হয়ে যাবে। কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশ তিথিতে অস্ত্রাঘাতে নিহত কোনো রঙিন গরুর পিত্তের রস পিয়াল বৃক্ষের কাষ্ঠনির্মিত প্রতিমার চোখে লেপন করা হলে, যার আদলে প্রতিমাটি নির্মিত হবে সে ব্যক্তি অন্ধ হয়ে যাবে।
১৪-০৩-১৫ কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে ভূতবলিদান করত শূলারোপে ঘাতিত ব্যক্তির অস্থি দিয়ে দুদিন উপবাসী পুরুষ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত গজাল কোনো শত্রুর মল মূত্রে গেঁথে দেওয়া হলে উক্ত শত্রুর মল মূত্র অবরুদ্ধ হবে, এ ধরনের গজাল কারো পদচিহ্নে গেঁথে দেওয়া হলে সে ব্যক্তি শুকিয়ে মারা যাবে, কারো দোকানে বা ফসলের জমিতে গেঁথে রাখা হলে সে ব্যক্তির বৃত্তি বা পেশার বিপর্যয় ঘটবে। বজ্রপাতে দগ্ধ কাঠ দিয়ে প্রস্তুতকৃত গজালও উপরোক্তভাবে কার্যকর হবে।
১৪-০৩-১৬ কোনো শত্রুর বাড়িতে যদি অধোমুখ পুনকে শাক বা ফুল, কাকের প্রিয় নিমফল, বানরের লোম ও মানুষের হাড়-হাড্ডি মৃতব্যক্তির বস্ত্রে বেঁধে পুঁতে রাখা হয় অথবা কোনো ব্যক্তিকে যদি এ সমস্ত উপাদান গুঁড়া করে খাওয়ানো হয়, তাহলে উক্ত ব্যক্তি দেড় মাসের মধ্যে সপরিবারে নিপাতিত হবে।
১৪-০৩-১৭ একইভাবে অধোমুখ পুনকে শাক বা ফুল, কাকের প্রিয় নিমফল, কচ্ছুরা নামক ঔষধি ও মানুষের হাড়-হাড্ডির মিশ্রণ যদি কোনো শত্রুর পদচিহ্নে, গৃহদ্বারে, সেনাশিবিরের প্রবেশ পথে বা নগর দ্বারে গেঁথে রাখা হয়, তাহলেও সেই শত্রু দেড় মাসের মধ্যে ধন সম্পদ ও পরিজনসহ ধ্বংস হয়ে যাবে।
১৪-০৩-১৮ ছাগল, বানর, বিড়াল, বেজি, ব্রাহ্মণ, চণ্ডাল, কাক ও পেঁচার লোমের গুঁড়া শত্রুর বিষ্ঠার সাথে মিশিয়ে শরীরে লেপন করা হলে, উক্ত শত্রু তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুমুখে নিপতিত হবে। মৃতব্যক্তির মালা, সুরার বীজ, বেজির লোম, বৃশ্চিক, অলি ও সাপের চামড়া একত্রে মিশিয়ে কারো বাড়ির সামনে পুঁতে রাখলে উক্ত ব্যক্তি নপুংশকে পরিণত হবে, পুঁতে রাখা মিশ্রণ উৎপাটিত করা হলে সে ব্যক্তি তার পুরুষত্ব পুনরায় ফিরে পাবে।
১৪-০৩-১৯ তিনদিন তিনরাত উপবাসকারী পুরুষ পুষ্যনক্ষত্রযুক্তকালে অস্ত্রের আঘাতে বা শূলারোপিত হয়ে ঘাতিত ব্যক্তির মাথার খুলি মাটিতে পূর্ণ করে গুঞ্জার বীজ বপন করে তৎসৃষ্ট গুঞ্জালতা পরবর্তী পুষ্যনক্ষত্রযুক্ত অমাবশ্যা বা পূর্ণিমা তিথিতে তুলে তা দিয়ে গৃহ সীমানায় বৃত্ত রচনা করা হলে ঐ বৃত্তস্থ অন্নপানের পাত্র কখনো ক্ষয়প্রাপ্ত হবে না।
১৪-০৩-২০ রাত্রিকালীন নাটক বা নৃত্যগীতের উৎসবের প্রজ্বলিত আগুনে মৃত গাভীর স্তনদগ্ধ করিয়ে সে স্তনবৃষের মূত্রের সাথে মিশিয়ে তা দিয়ে কোনো কলস লেপন করানো হলে, সেই কলস গ্রামের বাম থেকে ডান দিকে পরিক্রমকালে গ্রামস্থ সমস্ত মাখন তাতে সঞ্চিত হবে। পুষ্যনক্ষত্রযুক্ত কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতিথিতে কামমত্ত কুকুরের লিঙ্গে কালো বর্ণের লোহার আংটি পরিয়ে দেওয়ার পর তা আপনা আপনি খসে পড়লে সেই আংটি হাতে নিয়ে কেউ মনে মনে কোনো বৃক্ষের ফল যাচ্ঞা করলে, সেই ফল তৎক্ষণাৎ সম্মুখে পতিত হবে বা প্রাপ্ত হবে। মন্ত্র, ঔষধিগুণসম্পন্ন ভেষজ এবং মায়ার সহযোগে কৃত এ সমস্ত উপাচারের মাধ্যমে রাজা তার শত্রুদের বিপর্যস্ত করাবেন এবং নিজ প্রজাদের কল্যাণ সাধন করবেন।
এই অধ্যায়ে নিজ সেনাবাহিনীর উপর প্রযুক্ত উপঘাত প্রতিকারের বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। এছাড়াও শত্রু কর্তৃক প্রয়োগকৃত বিষের প্রভাব নস্যাৎ করণের বিবিধ বিষয়ও এ পর্যায়ে আলোচিত হয়েছে।
১৪-০৪-০১ শত্রুর মাধ্যমে রাজার জলাধার ও সৈনিকেরা বিষাক্রান্ত হলে শেম্মাতক, কপিত্থ, ডুমুর পাতা, জম্বীর, গোজিহ্বা, শিরীষ, পাটলি, বলা, শোনাগাছ, পুনর্নবা, শ্বেতা, ও বরণ বৃক্ষের ক্কাথের সাথে চন্দনরস ও শালা কীর রক্তের মিশ্রণে পরিশোধক তৈরি করে তা বিষ শোধনের নিমিত্ত প্রয়োগ করতে হবে। এই পরিশোধক দিয়ে বিষাক্রান্ত নারীদের গুহ্যাঙ্গ প্রক্ষালন করানো হলে তা বিষমুক্ত হবে এবং রাজার জন্য তা উপভোগের যোগ্য হবে। একইভাবে বিষাক্রান্ত সৈনিকদের গুহ্যস্থান ধৌত করালে তারা বিষমুক্ত হবে।
১৪-০৪-০২ পৃষতমৃগ, বেজি, ময়ূর ও গোধার পিত্তরসের সাথে নীল শেফালিকা ও রাজসর্ষের গুঁড়া মিশিয়ে ব্যবহার করা হলে তা মদ মত্ততা বা মাতলামি দূরীভূত করে। সিন্ধুবারবৃক্ষ, বরণ, দুর্বা, তণ্ডুলীয়ক, শতপর্ব ও পিণ্ডীতকের ক্কাথও মাদকতার প্রভাব দূরীভূত করে থাকে। সৃগালবিন্না, ধুতুরা, সিন্ধুবারবৃক্ষ, বরণ ও গজপিপ্পলীর পৃথক পৃথক মূল বা সবগুলোর মিশ্রণ দুধের সাথে মিশিয়ে পান করালে মাদকের প্রভাব লোপ পায়।
১৪-০৪-০৩ কট্ফল, পৃতিকরঞ্জ ও তিলের মিশ্রণে উৎপন্ন তেল নাক দিয়ে টেনে নিলে উম্মাদনার প্রভাব হতে মুক্তি লাভ করা যায়। প্রিয়ঙ্গু ও চিরিবিল্বের মিশ্রণ ব্যবহার করে কুষ্ঠরোগ হতে আরোগ্য লাভ করা যায়। কুষ্ঠ ঔষধি ও লোধ্রের মিশ্রণ ব্যবহার করে ক্ষয়রোগ ও কেশের পক্কতা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। কটফল, দ্রবন্তী ও বিলঙ্গের গুঁড়া নাসিকা দিয়ে গ্রহণ করা হলে মাথাব্যথা হতে প্রতিকার পাওয়া যায়। পিয়ঙ্গু, মঞ্জিষ্ঠা, তগর, লাক্ষারস, মহুয়া, হলুদ ও মধুর মিশ্রণে প্রস্তুতকৃত ঔষধি ব্যবহার করে রজ্জুবন্ধন, জল নিমজ্জন, বিষবেগ, প্রহার এবং উচ্চস্থান হতে পতনজনিত কারণে বিলুপ্ত জ্ঞান পুনঃজাগ্রত হয়। উপরোক্ত ঔষধিসমূহ মানুষের জন্য ষোল মাষক পরিমিতি পরিমাণ গ্রহণ করা বিধেয়, গরু ও অশ্বের ক্ষেত্রে এই মাত্রা দ্বিগুণ এবং হাতি ও উটের ক্ষেত্রে তা চতুর্গুণ পরিমাণ প্রয়োগ করা বিধেয়। পূর্বোক্ত ঔষধিসমূহের বটিকায় যদি স্বর্ণচূর্ণ যুক্ত করা হয়, তাহলে তা সর্বপ্রকার বিষনাশের জন্য কার্যকর হবে।
১৪-০৪-০৪ গুলুচী, শঙ্খিনী, মোক্ষকবৃক্ষ, পুষ্প ও বান্দাকার মিশ্রণে প্রস্তুতকৃত বটিকা এবং মহানিম বৃক্ষের উপর জন্মানো অশ্বত্থের বৃক্ষাংশ গুঁড়া করে বটিকা তৈরি করে ব্যবহার করলেও সকল প্রকার বিষক্রিয়া হতে আরোগ্য লাভ করা যায়। জীবন্তীর দ্বারা প্রস্তুতকৃত ঔষধি বাদ্যযন্ত্রে মাখিয়ে শব্দ উৎপাদন করা হলে সেই শব্দের প্রভাবে প্রাণীকুলের বিষক্রিয়া দূরীভূত হয়। পতাকাতে এ ধরনের ঔষধির প্রলেপ দেওয়া হলে তা দর্শন করে বিষাক্রান্ত প্রাণীর বিষ দূরীভূত হয়। এ সমস্ত ঔষধি উপাদান প্রয়োগ করে রাজা তার প্রজাদের বিষের প্রভাব থেকে রক্ষা করে তাদের কল্যাণ সাধন করবেন এবং শত্রুর উপর এগুলো প্রয়োগ করে তাদের বিপর্যস্ত করবেন।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন