ধর্ম স্বরূপ বর্ণন

কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস

।। ধর্মস্বরূপ বর্ণনম্।।

।। ধর্ম স্বরূপ বর্ণন।।

এই অধ্যায়ের প্রথমে মঙ্গলাচরণ এবং পুনরায় ভবিষ্যপুরাণের প্রশংসা পূর্বক ধর্মস্বরূপ আলোচিত হয়েছে।

স্বচ্ছং চন্দ্রাবদান্ত কবিকরমকরক্ষোভ সজ্ঞাত ফেনম্। ব্রহ্মোস্তুতিপ্ৰসুক্তৈব্ৰত নিয়মপরৈঃ সেবিত বিপ্রমুখৈঃ। ওংকারালংকৃতেন ত্রিভূবনগুরুণাং ব্রহ্মণা দৃষ্টপূতম্। সম্ভোগাভোগগম্যং জনকলুষহরং পৌষ্করং বঃ পুনাতু।।১।। নমস্কৃত্য জগদযোনিং ব্রহ্মরূপধরং হরিম্। বক্ষ্যে পৌরানিকীং দিব্যাং কথাং পাপপ্ৰণাশিনীম্।।২। যজ্জু ত্বা পাপকর্মণি স গচ্ছেৎপরামং গতিম্। পুণ্যং পবিত্রমায়ুষ্যমিদানীং শৃণুন দ্বিজাঃ।।৩।।

স্বচ্ছ চন্দ্রমার ন্যায় শুভ্র, কবিকর মকর ক্ষোভসজ্ঞাত ফেনকের ন্যায়, ব্রহ্মোদ্ভূতি প্রমুক্ত, ব্রতনিয়ম পরায়ণ বিপ্রমুখে ধর্মতত্ত্ব শ্রবণ করা উচিৎ। ওঁকার অলংকৃত ত্রিভুবনগুরু ব্রহ্মা যা পূর্বে দেখেছিলেন জনকলুষহারী পুষ্কর তীর্থ তোমাদের রক্ষা করুক।।১।।

শ্রী সূতজী বললেন, ব্রহ্মরূপধারী জগৎযোনি শ্রীহরিকে প্রণাম করে পাপনাশী এই দিব্য পৌরাণিক কথা বর্ণনা করছি।। যা শ্রবণ করে পাপকর্মত্যাগ করে মানব পরমগতি প্রাপ্ত হয়। সে কথা পরম, পুণ্য, পবিত্ৰ এবং আয়ু বৃদ্ধিকারী। হে দ্বিজগণ, এখন তোমরা এই কথা শ্রবণ কর।।২-৩।।

ভবিষ্য পুরাণমখিলং যজ্জগাদ গদাধরঃ। মধ্যপর্ব হাথো বক্ষে প্রতিষ্ঠাদিবিনির্ণয়ম্।।৪।। ধর্মপ্রশং সনং চাত্র ব্রাহ্মাণাদিপ্রশং সনম্। আপদধমস্য কথনং বিদ্যামাহাত্ম্যবর্ধনম্।।৫।। প্রতিমাকরনং চৈব স্থাপনাচিত্রলক্ষণম্। কালব্যবস্থাসগাদিপ্রতিসর্গদিলক্ষণম্।।৬।। পুরাণলক্ষণং চৈব ভূগোলস্য চ নির্ণয়ম্। নিরূপণং তিথীনাং চ শ্রাদ্ধসংকল্পমন্তরম্।।৭।। মুমূষোরপি যৎকর্ম দানমাহাত্যমেব চ। ভূতং ভব্যং ভবিষ্যং চ যুগধর্মানুশাসনম্।।৮।। এয়ানামাশ্রমাণাং চ গৃহস্থো যোনিরূচ্যতে। অন্যেঽপি সুপজীবন্তি তস্মাৎ শ্রেষ্ঠো গৃহাশ্রমী।।৯।।

গদাধর–যে সম্পূর্ণ ভবিষ্যপুরাণ বর্ণনা করেছিলেন, তার মধ্যপর্বে প্রতিষ্ঠাদি বিশেষ নির্ণয়ের কথা বলা হয়েছে।।৪।।

এই পর্বে ধর্মের প্রশংসা ও ব্রাহ্মণাদির প্রশংসা করা হয়েছে, এই পর্বে আপদ্ধর্মের কথন এবং বিদ্যামাহাত্ম্য বর্ণন করা হয়েছে।।৫।।

প্রতিমাকরণ, স্থাপনাচিত্রের লক্ষণ, কাল ব্যবস্থা এবং সর্গাদি প্রতিসর্গাদি লক্ষণ বর্ণনা করা হয়েছে।।৬।।

পুরাণের লক্ষণ, ভূগোল বিশেষ নির্ণয়, তিথি নিরূপণ, শ্রাদ্ধ সংকল্পা অন্তর বর্ণিত হয়েছে।।৭।।

মুমূর্ষ ব্যক্তির কর্ম ও দান মাহাত্ম তথা ভূত, ভব্য ও ভবিষ্যযুগধর্ম অনুশাসন এই পুরাণে বলা হয়েছে।।৮।।

তিনপ্রকার আশ্রমের উৎপত্তিস্থান ‘গৃহস্থ’ বলা হয়। গৃহস্থের সহায়তায় অন্য সকল আশ্রম উপজীবিত হয়। এই কারণে গৃহাশ্রমীকে সর্বশ্রেষ্ঠ বলা হয়।।৯।।

একাশ্রমং গৃহস্থস্য এয়াণাং সূতিদশনম্। তস্মাদ্রার্হস্থ্যমেবৈকং বিজ্ঞেয়ং ধর্মশাসনম্।।১০।। পরিত্যজেদর্থকামৌ যৌ স্যাতাং ধর্মবর্জিতৌ। সর্বলোকবিরুদ্ধং চ ধর্মমপ্যচরেন্ন তু।।১১।। তড়াগস্য চ সন্নিধ্যে তড়াগং পরিবর্জয়েৎ। প্রপাস্থানে প্রপা বজ্যা মঠস্থানে মঠংত্যজেৎ।।১২।। ধর্মাৎ সজ্ঞায়তে হ্যার্থো ধর্মাৎ কমোহ ভিজায়তে। ধর্মাদেবাপবগোহয়ং তস্মাদ্ধর্মং সমাশ্রয়েৎ।। ১৩।। ধর্মশ্চার্থশ্চ কামশ্চ ত্রিবর্গস্ত্রিগুণো মতঃ। সত্ত্বং রজস্তমশ্চেতি সস্মান্ধর্মং সমাশ্রয়েৎ।।১৪।। উর্দ্ধং গচ্ছন্তি সত্ত্বস্থা মধ্যে তিষ্ঠন্তি রাজসাঃ। জঘন্য গুণবৃতিস্থা অধো গচ্ছত্নি তামসা।।১৫।।

এক গৃহস্থাশ্রমই অন্য সকল আশ্রমের সূতিদর্শন বা উৎপত্তিস্থল। সুতরাং গার্হস্থ্য আশ্রমকেই ধর্মশাসন মনে করা উচিত।।১০।।

যা ধর্মরহিত, অর্থ ও কাম সংযুক্ত তা ত্যাগ করা উচিত। যা কিছু সমস্ত লোক বিরুদ্ধ ধর্ম, সেটিও কদাপি আচরণ করা উচিত নয়।।১১।।

তড়াগের সান্নিধ্যেই তড়াগকে ত্যাগ করা উচিত। প্রপাস্থানে প্রপা এবং মঠের স্থানে মঠ ত্যাগ করা উচিত।।১২।।

ধর্ম থেকে অর্থের উৎপত্তি হয় এবং ধর্ম থেকে কাম উৎপন্ন হয়। ধর্ম থেকেই অপবর্গের উদ্ভব। সুতরাং ধর্মের সমাশ্রয় অবশ্য কর্তব্য।।১৩।।

ধর্ম, অর্থ এবং কাম এদের ত্রিবর্গ বলা হয়। এই ত্রিবর্গ ক্রমান্বয়ে সত্ত্ব, রজ এবং তম–এই তিনগুণ। তাই ধর্মের মধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করা উচিত।। ১৪।।

যিনি সত্ত্বগুণ আশ্রয় করেন, তিনি উর্দ্ধে গমন করেন। রজঃ গুণ অবলম্বনকারী মধ্যভাগে থাকেন এবং জঘন্য গুণবৃত্তি অবলম্বনকারী বা তমোগুণাশ্রয়ী তামসব্যক্তি অধোভাগে গমন করেন।।১৫।।

যস্মিন্ ধর্মঃ সমাযুক্তো হ্যর্থকামৌ ব্যবস্থিতৌ। ইহলোকে সুখী ভূত্বা প্রেত্যানন্ত্যায় কল্পতে।।১৬।। তস্মাদর্থং চ কামং চ যুক্ত্বা ধর্মং সমাশ্রয়েৎ। ধর্মাৎ সজ্ঞায়তে কামো ধর্মাদথোভিজায়তে।। ১৭।।

যে মানব ধর্মসংযুক্ত অর্থ ও কাম স্বয়ং তাঁর কাছে উপস্থিত হয়। সেই মানব এই লোকে সুখোপভোগ করে মৃত্যুর পর আনন্ত্যে কল্পিত হন।। ১৬।। সুতরাং মানবের ধর্ম, অর্থ ও কামকে যুক্ত করে ধর্মের স,মাশ্রয় করা উচিত। ধর্ম থেকে কাম ও অর্থের সমাশ্রয় হয়েই যায়।। ১৭।।

সকল অধ্যায়

১. কথা প্রস্তাবনা
২. সৃষ্টি বর্ণন
৩. সর্বসংস্কার বর্ণন
৪. সাবিত্রী মাহাত্ম্য
৫. স্ত্রী শুভাশুভ লক্ষণ
৬. তৃতীয়া কল্প বিধি বর্ণন
৭. চতুর্থী কল্প বর্ণন
৮. পঞ্চমী কল্পে নাগপঞ্চমী ব্ৰত বৰ্ণন
৯. ধাতুগত বিষ লক্ষণ সমূহ
১০. ষষ্ঠীকল্পে কাৰ্ত্তিক ষষ্ঠীতে স্কন্দ পূজা
১১. ষষ্ঠীকল্পে ব্রাহ্মণ্য বিবেক বর্ণন
১২. সপ্তমী কল্প ব্ৰত বৰ্ণন
১৩. সপ্তমী কল্প বর্ণনে কৃষ্ণ-সাম্ব সংবাদ
১৪. আদিত্য নিত্যারাধনবিধি বর্ণন
১৫. রথ সপ্তমী মাহাত্ম্য বর্ণন
১৬. সূর্যযোগ মাহাত্ম্য বর্ণন
১৭. সূর্যের বিরাট রূপ বর্ণন
১৮. আদিত্যবার মাহাত্ম্য বর্ণন
১৯. সৌরধর্ম মাহাত্ম্য বর্ণন
২০. ব্রহ্মকৃত সূর্যস্তুতি বর্ণন
২১. বিবাহ বিধি বর্ণন
২২. স্ত্রীগণের গৃহধর্ম বর্ণন
২৩. স্ত্রীধর্ম বর্ণন
২৪. ধর্ম স্বরূপ বর্ণন
২৫. ব্রহ্মাণ্ডোৎপত্তি বিস্তার বর্ণন
২৬. পুরাণ ইতিহাস শ্রবণ মাহাত্ম্য
২৭. পূর্তকর্ম তথা বৃক্ষ রোপণ
২৮. বিবিধ বিধিকুণ্ড নির্ণয়
২৯. হোমাবসানে ষোড়শোপচার বর্ণন
৩০. যজ্ঞ ভেদে বহ্নিনাম বর্ণন
৩১. স্রুবাদর্বী পাত্র নির্মাণ
৩২. ব্রাহ্মণ লক্ষণ তথা ব্রাহ্মণ কর্তব্য বর্ণন
৩৩. গুরুজন মাহাত্ম্য বর্ণন
৩৪. আহুতি হোম সংখ্যা বর্ণন
৩৫. কুন্ড সংস্কার বর্ণন
৩৬. বিবিধ মন্ডল নিৰ্মাণ বৰ্ণন
৩৭. সুদর্শনান্ত নরপতি রাজ্যকাল বৃত্তান্ত
৩৮. ত্রেতাযুগীয়ভূপ বৃত্তান্ত বর্ণন
৩৯. দ্বাপরযুগীয় ভূপ বৃত্তান্ত বর্ণন
৪০. ম্লেচ্ছযজ্ঞ বৃত্তান্ত তথা কলিকৃত বিষ্ণু স্তুতি বর্ণন
৪১. ম্লেচ্ছবংশ বর্ণন
৪২. আর্যাবর্তে ম্লেচ্ছগণের আগমন
৪৩. কলিঞ্জর অজমেরপুরাদি বর্ণন
৪৪. পদ্মাবতী কথা বর্ণন
৪৫. মধুমতী বরনির্ণয় কথা বর্ণন
৪৬. সত্যনারায়ণ কথা বর্ণন
৪৭. সত্যনারায়ণ ব্রতে চন্দ্রচূড় নৃপকথা বর্ণন
৪৮. সত্যনারায়ণ ব্ৰতে ভিন্ন কথা বর্ণন
৪৯. শতানন্দ ব্রাহ্মণ কথা বর্ণন
৫০. সাধু বণিক কথা বর্ণন
৫১. সাধু বণিক কারাগার মুক্তি
৫২. পাণিনি মহর্ষি বৃত্তান্ত বর্ণন
৫৩. তোতাদরীস্থ বোপদেব বৃত্তান্ত বর্ণন
৫৪. পতঞ্জলি বৃত্তান্ত বর্ণন
৫৫. জায়মান ঐতিহাসিক বৃত্তান্ত বর্ণন
৫৬. ভরতখন্ডের অষ্টাদশ রাজ্যস্থান বর্ণন
৫৭. শালিবাহন বংশীয় নৃপতি বৰ্ণন
৫৮. ভোজরাজ বংশের অনেক ভূপাল রাজ্য বর্ণন
৫৯. জয়চন্দ্র তথা পৃথ্বীরাজের উৎপত্তি
৬০. সংযোগিনী স্বয়ম্বর বর্ণন
৬১. ইন্দ্রের ঘোটকীদান
৬২. কৃষ্ণাংশ চরিত্র বর্ণন
৬৩. মহীরাজ পরাজয়াদি বৃত্তান্ত বর্ণন
৬৪. কৃষ্ণাংশের কাছে রাজগণের আগমন
৬৫. পৃথ্বীরাজ দ্বারা গুর্জর রাজ্য গ্রহণ
৬৬. জয়ন্তাবতারবৃত্তান্ত বর্ণন
৬৭. চন্ডিকা দেবী বাক্য বর্ণন
৬৮. বলখানি বিবাহ বৃত্তান্তবর্ণন
৬৯. ব্রাহ্মণদের বিবাহ বৃত্তান্ত
৭০. হংসপদ্মিনী বর্ণন
৭১. ইন্দুল পদ্মিনীর বিবাহ
৭২. চন্দ্র ভট্টের ভাষা গ্ৰন্থ
৭৩. মহাবতীর যুদ্ধ বর্ণন
৭৪. কৃষ্ণাংশের – শোভা সংবাদ
৭৫. সমস্ত নৃপের সংগ্রাম এবং নাশ
৭৬. ব্যাস দ্বারা ভবিষ্য কথন
৭৭. অজমের তোমর নরেশ কর্ম বর্ণন
৭৮. শুক্ল বংশ চরিত্র
৭৯. পরিহর ভূপ বংশ বর্ণন
৮০. ভগবতারাদিবৃত্তান্ত
৮১. দিল্লীর ম্লেচ্ছ রাজা
৮২. চৈতন্য এবং শংকরাচার্য্য উৎপত্তি
৮৩. রামানুজোৎপত্তিবর্ণন
৮৪. কবীর – নরশ্রী – পীপা – নানক-বৃত্তান্ত
৮৫. চৈতন্য বর্ণনে জগন্নাথ মাহাত্ম্য
৮৬. আকবর বাদশাহ বৰ্ণন
৮৭. কিল্কিলার শাসক বর্ণন
৮৮. মঙ্গলাচরণ
৮৯. ব্রহ্মান্ড উৎপত্তি এবং বর্ণন
৯০. সাংসারিক জীবনের দোষ
৯১. অনন্তচতুর্দশী ব্রত মাহাত্ম্য
৯২. অধর্ম ও পাপের ভেদ
৯৩. শুভাশুভ গতি ও যমযাতনা
৯৪. শকট ব্রত মাহাত্ম্য
৯৫. তিলক ব্রত মাহাত্ম্য
৯৬. অশোক ব্রত মাহাত্ম্য
৯৭. বৃহৎ তপো ব্রত মাহাত্ম্য
৯৮. যমদ্বিতীয়া ব্রত মাহাত্ম্য
৯৯. অশূন্যশয়ন ব্রত মাহাত্ম্য
১০০. গোষ্পদ তৃতীয় ব্রত মাহাত্ম্য
১০১. হরিতালী তৃতীয়া ব্ৰত মাহাত্ম্য
১০২. ললিতা তৃতীয়া ব্রত মাহাত্ম্য
১০৩. অক্ষয় তৃতীয়া ব্রত মাহাত্ম্য
১০৪. বিনায়ক চতুর্থী ব্রত মাহাত্ম্য ও বিধান
১০৫. গ্রন্থ পরিচয় ও সমাপ্তি

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন