সংযোগিনী স্বয়ম্বর বর্ণন

কৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস

।। সংযোগিনী স্বয়ম্বর বর্ণন।।

একদা রত্ন ভানুর্হি মহীরাজেন পালিতাম্। দিশং যাম্যাং স বৈ জিত্বা তেষাং কোশানুপাহরৎ।।১। মহীরাজস্তু তচ্ছ্বত্বা পরং বিষময়মাগতঃ। রত্নভানোশ্চ তিলকো বভূব বহুবিস্তারঃ।।২।। তিলকা নাম বিখ্যাত যা তু বীরবর্তী শুভা। শ্রেষ্ঠা দ্বাদথারাজীনাং জননীং লক্ষণস্য বৈ।।৩।। জয়চন্দ্রস্য ভূপস্য যোষিতঃ ষোড়শাভবৎ। তাসাং ন তনয়ো হ্যাসীৎ পূর্ব কর্মবিপাবতঃ।।৪।। গৌড়ভূপস্য দুহিতা নান্মা দিব্যবিভাবরী। জয়চন্দ্রস্য মহিসী তদ্দাসী সুর ভানবী।।৫।। রূপযৌবন সংযুক্তা রতি কেলি বিশারদা। দৃষ্ট্বা তাং সনৃপঃ কামী বুভুজে লস্মরপী ড়িতঃ।।৬।। তস্যাং জাতা সুতা দেবী নান্না সংযোগিনী শুভা। দ্বাদশব্দয়ঃ প্রাপ্তা সা বভূব বরাংগনা।।৭।। তস্যা স্বয়ং বরে রাজাহ্বয়ম্ভু পান্মহা শুভান্ ভূমিরাজস্তু বলবাচ্ছ্বত্বা তদ্রূপমুতমম্।।৮।। বিবাহার্থে মহশ্চসীচ্চন্দ্ৰভট্ট মচোদয়কে। মনিত্রবর ভো মিত্র চন্দ্ৰভট মম প্রিয়।।৯।। কান্য কুকাপুরীং প্রাপ্য মমূর্তি স্বৰ্গনির্মিতাম্। স্থাপয়ত্বং সভামধ্যে মদবৃত্তন্তিং তু সেবদ।।১০।।

।। সংযোগিনী স্বয়ম্বর বর্ণনা।।

এই অধ্যায়ে সংযোগিত স্বয়ম্বর বর্ণনা প্রসঙ্গে পৃথ্বীরাজ প্রতিমা সংযোগিনী বর্ণন করা হয়েছে।

সূতজী বললেন–একবার রত্নভানু মহীরাজের দ্বারা পালিত মান্যদেশ জয় করে তার সমস্ত কোশ হরণ করেছিলেন। মহারাজ একথা শুনে বিস্মিত হলেন। রত্নভানুর জয়তিলক বিস্তৃত হয়ে গিয়েছিল। শুভবারবর্তীনগরী তিলকা নামে বিখ্যাত ছিল। সেখানে বারজন রাণী ছিল। তারমধ্যে লক্ষণের মাতা ছিলেন শ্রেষ্ঠ। রাজা জয়চন্দ্রের ষোড়শ রাণী ছিল। তারমধ্যে কেউই পূর্বকর্ষ দোষে পুত্রবতী ছিলেন না। গৌড় দেশের রাজকন্যা বিভাবতী ছিলেন রাজ মহিষী। তাঁর দাসী সুরভানবী রূপ যৌবন সম্পন্না ছিলেন। তিনি কামকলাতেও পারদর্শী ছিলেন। রাজা জয়চন্দ্র তার প্রতি আসক্ত হন। রাজা তাকে উপভোগ করলে তিনি সংযোগিনী নামক পুত্রীর জন্ম দেন। সেই কন্যা দ্বাদশ বর্ষে পদার্পণ করলে রাজা স্বয়ংবরের জন্য শ্রেষ্ঠ রাজগণকে ভূমিরাজ মহাবলবা ছিলেন। তিনি সংযোগিনীর রূপ বৃত্তান্ত জানতেন। সেই রাজা তাঁর চন্দ্রভট্টকে বললেন–হে মন্ত্রী প্রবর, তুমি সেই রাজ্যে গমন করে সভামধ্যে আমার স্বর্ণময় মূর্তি স্থাপন কর এবং সেখানে কি হল তা আমাকে বলুন।।১-১০।।

ইতি শ্রুত্বা চন্দ্ৰভট্টো ভবানীভক্তিতৎপরঃ। গত্বা তত্র ভৃগুশ্রেষ্ঠ যথা প্রোগস্তথঅকরোৎ।।১১।। স্বয়ম্বরে চ ভূপাশ্চ নানা দেশ্যাঃ সমাগতাঃ। ত্যক্ত্বা সংযোগিনী তাথৈ নৃপমূৰ্তিবিমোহিতা।।১২।। পিতরাং প্রাহ কামাক্ষী যস্য মূর্তিরিয়ং নৃপ। ভবিষ্যতি স মে ভর্তা স্বলক্ষণলক্ষিতঃ।।১৩।। জয়চন্দ্ৰস্তু তচ্ছ্বত্বা চন্দ্র ভট্টমুবাচতম্। যদিতে ভূপতিশ্চৈব স্বং সৈন্যসমন্বিতঃ।।১৪।। সঞ্জয়েদ্যোগিনীমেতাং তহি মেহতি প্ৰিয়ো ভবেৎ। চন্দ্ৰভট্টস্ত তচ্ছ্বত্বা তত্ত্ব সৰ্বমবৰ্ণয়ক।।১৫।। পৃথিবীরাজ এবাসৌ শ্রুত্বা সৈন্যমচোদযৎ। একলক্ষ্যা গজাস্তস্য সপ্তলক্ষাস্থরং গমা।।১৬।। রথা পঞ্চসহস্রাশ্চ ধনুর্বাণবিশারদাঃ। লক্ষ পদাতয়ো জ্ঞেয়া দ্বাদশেব মহাবলাঃ।। ১৭।। রাজানস্ত্রিশতান্যে মন্থীরাজপদানুগাঃ। সার্দ্ধং দ্বাভ্যাং চ বন্ধুভ্যাং কান্য কুবেদ নৃপোহ বামৎ।।১৮।। ধুন্ধকারশ্চ তদবধুর্গর্জানীকপতিসদা। হয়ানীবাপতিঃ কৃষ্ণ কুমারো বলবত্তরঃ।।১৯।।

একথা শ্রবণ করে ভবানী প্রিয় চন্দ্রভট্ট সেখানে গিয়ে রাজার কথা মত কাজ করলেন। স্বয়ংবর সভাতে আগত অনেক রাজা এসেছিলেন, সংযোগিনী সকলকে ত্যাগ করে সেই স্বর্ণমূর্তিতে মোহিত হলেন। তিনি বললেন–এই সর্বলক্ষণ মূর্তি আমার পতি হওয়ার যোগ্য। সে কথা শুনে রাজা চন্দ্রভট্টকে বললেন–তোমার প্রভু সকলকে সেনা সমন্বিত হয় তাহলে আমাকে তা জানাও। সেনা সহ তিনি যদি সংযোগিনীকে জয় করলে আমি প্রীত হতাম। চন্দ্রভট্ট সেকথা রাজাকে জানালেন। রাজা পৃথ্বীরাজ তখন একলক্ষ হাতী, সাতলাখ অশ্ব পাঁচ হাজার রথ, বারলক্ষ ধনুর্ধাকী ও তিনশত অনুযায়ী রাজাদের নিয়ে এবং নিজ ভ্রাতাদ্বয়কে সঙ্গে নিয়ে কান্যকুব্জে গেলেন। গজারোহী সেনাপতি ধুন্ধুকার, অশ্বারোহী সেনাপতি কৃষ্ণ কুমার ও পদাতিক সৈন্যদের অধিপতি সেখানে গিয়ে মহাকোলাহলে স্থলীশূন্য করলেন।।১১-২০।

পদাতীণাং নৃপতয়ঃ পতয়স্তত্র চা ভবন্। মহান্ কোলাহলো জাতঃ স্থলীং শূন্যামকারয়ন।।২০। বিংশৎ কোশ প্রমানৈন স্থিতং তস্য মহাবলম্। জয়চন্দ্রস্তু সংজ্ঞায় মহীরাজস্য চাগত্মম্।।২১। স্বসৈন্যং কল্পয়ামাম্ লক্ষষোড়শসম্মিতম্। একলক্ষা গজাস্তস্য সপ্তলক্ষাঃ পদাতয়ঃ।।২২।। বাজিনশ্চাষ্টলফাশ্চ সর্বযুদ্ধবিশারদাঃ। দ্বিশতান্যেব রাজানঃ প্রাপ্তাস্তুত্র সমাগত্মে।।২৩।। আগস্কৃতং মহীরাজং মত্বা তে শুক্লবংশিনঃ। যুদ্ধার্থিনঃ স্থিতাস্তত্র পুঃমাপস্কৃতং হ্যভূতত্।।২৪।। ইশনদ্যাঃ পরে কুলে তদ্দোলা স্থাপিতা তদা। নানা বাদ্যানি রম্যানি তত্র চক্রমহারবম্।।২৫।। রত্ন ভানুগর্জানীকে রূপানীকে হি লক্ষণঃ। তাভ্যাং সেনাপতিম্যাং তৌ সাংগুপ্তৌ বলঞ্চরৌ।।২৬ প্রদ্যোতশ্চেব বিদ্যোতো রত্নভানুং বরযাতুঃ। ভীষমঃ পরিমলশ্চৈব লক্ষণং চন্দ্রবাশজঃ।।২৭।।

সেই মহা সৈন্যদল তিন ক্রোশ জুড়ে ছিল। জয়চন্দ্র তখন বুঝতে পারলেন মহীরাজ এসে উপস্থিত হয়েছে। তিনি নিজের ১৬লক্ষ সেনা যথা একলক্ষ হাতী, আটলক্ষ অশ্ব, সাতলক্ষ পদাতিক সৈন্য নিয়ে উপস্থিত হলেন। এরসাথে দুইশত অনুগত রাজা সেখানে সমাগত হলেন। পৃথ্বীরাজকে অপরাধী মনে করে যুদ্ধ করার ইচ্ছাতে সেখানে উপস্থিত হলেন। ঈশানদী অপর তীরে দোলাস্থাপিত করে সুন্দর বাদ্যধ্বনি করে পৃথ্বীরাজও অগ্রসর হলেন।

ভূপাঃ দাতিসৈন্যে চ সংস্থিতা মদবিহ্বলাঃ। ততোশাসীন্ মহদ্যুদ্ধং দারুণং সৈন্য সংক্ষয়ম্।।২৮।। হয়া হয়েমূৰ্তা জাতা গজাস্বৈব গজৈস্তথা। পদাতয়র পদাতৈশ্চ মৃত্তাশ্চান্যে ক্রযাদ্ৰনৈ।।২৯।। ভূপৈশ্চ রক্ষিতাঃ সর্বৈ নির্ভয়ারণ মায়ায়ু। মাবৎ সূর্যঃ স্থিতো ব্যোন্মি তাবদ্যুদ্ধবৰ্ত্তন।।৩০।। এবং পঞ্চদিনং জাতং যুদ্ধং বীরজনথায়ম্। গজা দশাসহস্রানি হয়া লক্ষানি সংক্ষিতা।।৩১।। পঞ্চলক্ষ্যং মহীভতুহতা স্তত্ৰ পদাতয়ঃ। রাজানো দ্বে শতে তত্র রথাশ্চ ত্রিশতং তথা।।৩২।। কান্য কৃদাধিপস্যৈব গজা নবসহস্ৰকাঃ। সহস্রেবাং রথাজ্ঞেযাস্ত্রি লক্ষং চ পদাতয়ঃ।।৩৩।। একলক্ষং হয়াস্তত্র মৃতাঃ স্কার্পুরং যয়ুঃ। ষষ্ঠা হে সমনুপ্রাপ্তে পৃথিবী রাজ এব সঃ।।৩৪।। দুঃখিতো মনসাদেবা রুদ্রং তুষ্টাব ভক্তিমান্। সন্তুষ্টস্থ মহাদেবো মোহয়া মাস তদ্বলম্।।৩৫।।

গজসেনাকে রত্নভানু ও রূপানীক নেতৃত্বে দিলেন। প্রদ্যোত ও বিদ্যোত রত্নভানুকে রক্ষা করেছিলেন। চন্দ্রবংশীয় ভীষ্ম ও পরিমল লক্ষণকে রক্ষা করেছিলেন। পদাতিক সেনাদলের মধ্যে মদগর্বিত নৃপ ছিলেন। এরপর যখন দুইদল সেনা একত্রিত হল তখন দারুণ যুদ্ধ শুরু হল।।২১-২৯।।

প্রসন্নস্তু মহীরাজো গতঃ সংযোগিনীং প্রাতঃ। দৃষ্ট্বা তৎসুন্দয়ং রূপং মুমোহ বসুধাদিপঃ।।৩৬।। সংযোগিনী নৃপং দৃষ্ট্বা মুচ্ছিত্বা বাভৎক্ষণাঃ। এতস্মিন্নন্তরে রাজা তদ্দোলামনয়দ্বলাজা।।৩৭।। জগামদেহলীং ভূপঃ স্বসৈন্যসমন্বিতঃ। যোজনান্তে গতে তস্থিন্ বোধিতাস্তে মর্দোদ্ভটাঃ।।৩৮। দৃষ্টানৈব তদা দোলাং প্রজগুবেগবত্তরাঃ। শ্রুত্বা কোলাহলং তেষাং মহীরাজো নৃপোত্তমঃ।।৩৯। অৰ্দ্ধৈসৈন্যং চ সংস্থাপ্য স্বয়ং গেহমুপাগম‍। উভৌ দদভ্রাতরৌ বীরো চাদ্ধসৈন্যসমন্বিত্তৌ।।৪০।। সুকরক্ষেত্রমাসাদ্য যুদ্ধায় সযুপস্থিতৌ। এতস্মিন্নস্তরে সর্বৈ প্রদ্যোতাদিমহাবলাঃ।।৪১।। স্বসৈয্যৈঃ সহ সংপ্রাপ্য মহদ্যুদ্ধমবারমন। হয়াহয়ৈসশ্চ সংজণ্মসর্গ অথ গজৈর সহ।।৪২।।

পাঁচদিন ধরে সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত যুদ্ধ চলতে লাগল। অশ্বের দ্বারা অশ্ব, গজের দ্বারা গজ, পদাতিক সৈন্যের দ্বারা পদাতিক সৈন্য মারা যেতে লাগল। এই ভাবে লোকক্ষয় হতে হতে যুদ্ধ সমান সমান হতে লাগল। দশসহস্ৰ হাতী, একলক্ষ ঘোড়া যুদ্ধে মারা গেল। পৃথ্বীরাজের পাঁচলক্ষ পদাতিক সৈন্য মারা গেল দুইশত রাজা, তিনশত রথ মারা গেল। কান্যকুব্জের রাজারও নয় হাজার হাতী, এক হাজার রথ, তিনলক্ষ পদাতিক ও একলক্ষ অশ্ব মারা গিয়েছিল। ষষ্ঠদিনে দুঃখিত হৃদয়ে পৃথ্বীরাজ রুদ্রদেবের স্তুতি করেছিলেন। সেই স্তুতিতে সন্তুষ্ট হয়ে মহাদেব বিপক্ষ রাজার সেনাদেরকে মোহিত করলেন। পৃথ্বীরাজ তখন প্রসন্নচিত্তে সংযোগিনীর কাছে গিয়ে তার পরম সুন্দর রূপ লাবণ্য দেখে মোহিত হলেন। সংযোগিনীও রাজাকে দেখে মূর্ছিত হলেন। রাজা নিজ শক্তিতে দোলা এনে সমস্ত সেনাদের নিয়ে দিল্লী চলে গেলে কান্যকুব্জ সেনার বোধ হল। তারা সংযোগিনীর দোলা দেখে অত্যন্ত বেগে পশ্চাতে চলতে লাগল। মহীরাজ ও তার দুই ভাই নিজেদের অর্ধেক সেনা সমন্বিত হয়ে যুদ্ধ করতে উদ্যত হল। শূকল ক্ষেত্রে প্রদ্যোত নিজ সেনাদের নিয়ে এলেন এবং মহাযুদ্ধ শুরু হল।।৩০-৪২।।

বাংকুলশ মহানাসীদ্দারুণো লোহহর্ষনঃ। দিনাস্তে সংক্ষয়ং যাতাং তয়োশ্বৈব মহদ্বলম্।।৪৩।। ভলভীতা পরৈ তত্র জ্ঞাতা রাত্রিং তমো বৃতাম্। প্রদুদুবুর্ভয়াদ্বীরা হয় শেষাস্ত চেহলীম্।।৪৪।। প্রদ্যোতাদ্যাশ্চ তেবীরা দেহলীং প্রতি সংযঃ। পুনস্তরোমহদ্যুদ্ধং হ্যভবল্লোমহর্ষনম্।।৪৫।। ধুন্ধুকারশ্চ প্রদ্যোতং হৃদি বানৈরতাড়য়ৎ। ত্রিভিশ বিযনিধূর্তৈ মূর্ছিতর য মমার চ।।৪৬।। ভ্রাতরং নিহতং দৃষ্ট্বা বিদ্যোতশ্চ মহাবলঃ। অজগাম গজারুঢ়ো ধুন্ধকারমতাড়য়ৎ।।৪৭।। ত্রিভিশ্চ তোমরেঃ সোহপি মূৰ্চ্ছিতো ভূমি মাগতম্। মূৰ্চ্ছিতং ভ্রাতরং দৃষ্ট্বা ধুন্ধুকারং মহাবলম্।।৪৮।। তদা কৃষ্ণ কুমারোহসৌ গজসহস্ত্বরিতো যযৌ। রূপাবিষ্টশ্চতং বীরং ভল্লেনৈবমতাড়য়ৎ।।।৪৯।। ভল্লেন তেন সংভিন্নো মৃতঃ স্বর্গ পুরং যযৌ। বিদ্যোত নিহতে তস্মিন্ সর্বসৈন্যচভূপতৌ।।৫০ ।। রত্নাভানুমহাবীরোহয়ুধ্যত্তেন সমান্বিতঃ। এতস্থিন্নন্তরে রাজা সহস্ৰ গজসংযুতঃ।।৫১।। লক্ষণং সহিতং তাভ্যাং ক্রুদ্ধং তং সমসুধ্যত। শিবদত্তবরো রাজা ভীষ্মং পরিমলং রুষা।। ৫২।। রুদ্রাস্ত্রৈমোহয়ামাস লক্ষণং বলবত্তরম্। মুৰ্চ্ছিতাংস্তান্ মালোক্য রত্নভানু শরৈনিজৈঃ।।৫৩।। ধুন্ধুকারং মহীরাজাং বৈষ্ণবৈঃ সমমোহয়ন্। কৃষ্ণকো রত্নভানুশ্চ যযুদাতে পরস্পরম্।।৫৪।। বভৌ সমবলৌ বীরৌ গজপৃষ্ঠস্থিতৌ রণে। অন্যোন্যনিহতৌ নাগৌ খংগহস্তৌ মহীহবলে।।৫৫।। যুযুধাতে বহু মাগান কৃতবন্তৌ সুদুর্জয়ৌ। প্রহরান্তং রণং কৃত্বা মরণায়োপজন্মতুঃ।।৫৬।। হতে তস্মিন মহাবীর্যে কান্যকুব্জা ভয়াতুরাঃ। মূর্ছিতান্ স্ত্রী সমাদায় পঞ্চলফবলৈতাঃ।।৫৭।। রণং ত্যক্ত্বা গৃহং জনৃপশোকপরায়নাঃ। রত্নভানৌ চ নিহতে হতোৎ সাহাশ্চ ভূমিপাঃ।।৫৮।। স্বং স্বং নিবেশানং জগ্মমহারাজ ভয়াতুরাং। দেবানারাধয়ামাসূর্যভেষ্টং তে গৃহে গৃহে।।৫৯।। মহীরাজস্তু বলবান সপ্তলক্ষবলান্বিতঃ। ধুন্ধুকারেণ সহিতো বন্ধুকৃত্যোধ্বমাচরৎ।।৬০।। তথাভীষ্ম পরিমলো লক্ষণঃ পিতরং স্বকম্। গংগাকূলে সমাগম্য বোধদৈহিকমাচরৎ।।৬১।। ভূমিরাজস্ব বিজয়ো জয়চক্রয়শো রণে। প্রসিদ্ধমভবস্তুযৌ গেহে গেহে জনে জনে।।৬২।। জয়চন্দ্রঃ কান্যকুব্জে দেহল্যাং পৃথিবী পতিঃ। উৎসবং কারয়িত্বা তু পরমানন্দমাযযৌ।।৬৩।।

দিনান্তে অন্ধকার শুরু হলে সেনাদল ভীত হয়ে দিল্লী নগরীতে ফিরে এলেন। হত শেষ বীরগণ নিজেদের মধ্যে এবার মহাযুদ্ধ শুরু করলেন। ধুন্দুকার প্রদ্যোতের হৃদয়ে বাণ বিদ্ধ করলেন। বিদ্যোত ভাইকে মুচ্ছিত দেখে তিনি তিনটি শরের দ্বারা ধুন্ধুকারকে মূর্ছিত করলেন। তা দেখে কৃষ্ণকুমার অগ্রসর হলে রূপাবিষ্ট তাকে ভল্লের দ্বারা তাড়িত করলেন। এর ফলে তিনি মারা গেলেন। বিদ্যোতের মৃত্যুর পর রত্নভানু সেনাদের নেতৃত্ব দিয়ে যুদ্ধ করতে লাগলেন। ভগবান্ শিবের কাছে বরদান প্রাপ্তকারী রাজা ভীষ্ম, পরিমল ও লক্ষণকে মোহিত করে দিল। এই দেখে রত্নভানু নিজ বৈষ্ণব শরের দ্বারা ধুন্ধুকার মহীরাজকে মোহিত করে কৃষ্ণকুমারের সঙ্গে যুদ্ধ করতে লাগলেন।।৪৩-৫৪।।

এই দুই বীর গজারূঢ় হয়ে যুদ্ধ করছিলেন, নিজের হাতী মারা গেলে তারা খর্গ হাতে নিয়ে ভূমিতলে যুদ্ধ করতে লাগলেন। পরিশেষে মৃত্যুবরণ করলেন।।৫৫-৫৬।।

সেই দুই মহাবীর মারা গেলে কান্যকুব্জের রাজা ভয়াতুর হয়ে রণভূমি ত্যাগ করলেন। রত্নভানুর মৃত্যুর পর মহীরাজ নিজ রাজ্যে ফিরে এসে দেবারাধনা করতে লাগলেন। সাতলক্ষ মহা বলবান্ সেনা নায়ক মহীরাজ ধুন্ধুকারের প্রতি বন্ধুকৃত্য করলেন। এইভাবে ভীষ্ম, পরিমল ও লক্ষণ নিজ নিজ পিতার পারলৌকিক ক্রিয়া গঙ্গাতটে সম্পন্ন করলেন। ভূমিরাজের বিজয় জনমধ্যে প্রচারিত হল। কান্যকুব্জে জয়চন্দ্র ও পৃথ্বীরাজ দিল্লীতে উৎসব করে পরমানন্দ লাভ করলেন।।৫৭-৬৩।।

সকল অধ্যায়

১. কথা প্রস্তাবনা
২. সৃষ্টি বর্ণন
৩. সর্বসংস্কার বর্ণন
৪. সাবিত্রী মাহাত্ম্য
৫. স্ত্রী শুভাশুভ লক্ষণ
৬. তৃতীয়া কল্প বিধি বর্ণন
৭. চতুর্থী কল্প বর্ণন
৮. পঞ্চমী কল্পে নাগপঞ্চমী ব্ৰত বৰ্ণন
৯. ধাতুগত বিষ লক্ষণ সমূহ
১০. ষষ্ঠীকল্পে কাৰ্ত্তিক ষষ্ঠীতে স্কন্দ পূজা
১১. ষষ্ঠীকল্পে ব্রাহ্মণ্য বিবেক বর্ণন
১২. সপ্তমী কল্প ব্ৰত বৰ্ণন
১৩. সপ্তমী কল্প বর্ণনে কৃষ্ণ-সাম্ব সংবাদ
১৪. আদিত্য নিত্যারাধনবিধি বর্ণন
১৫. রথ সপ্তমী মাহাত্ম্য বর্ণন
১৬. সূর্যযোগ মাহাত্ম্য বর্ণন
১৭. সূর্যের বিরাট রূপ বর্ণন
১৮. আদিত্যবার মাহাত্ম্য বর্ণন
১৯. সৌরধর্ম মাহাত্ম্য বর্ণন
২০. ব্রহ্মকৃত সূর্যস্তুতি বর্ণন
২১. বিবাহ বিধি বর্ণন
২২. স্ত্রীগণের গৃহধর্ম বর্ণন
২৩. স্ত্রীধর্ম বর্ণন
২৪. ধর্ম স্বরূপ বর্ণন
২৫. ব্রহ্মাণ্ডোৎপত্তি বিস্তার বর্ণন
২৬. পুরাণ ইতিহাস শ্রবণ মাহাত্ম্য
২৭. পূর্তকর্ম তথা বৃক্ষ রোপণ
২৮. বিবিধ বিধিকুণ্ড নির্ণয়
২৯. হোমাবসানে ষোড়শোপচার বর্ণন
৩০. যজ্ঞ ভেদে বহ্নিনাম বর্ণন
৩১. স্রুবাদর্বী পাত্র নির্মাণ
৩২. ব্রাহ্মণ লক্ষণ তথা ব্রাহ্মণ কর্তব্য বর্ণন
৩৩. গুরুজন মাহাত্ম্য বর্ণন
৩৪. আহুতি হোম সংখ্যা বর্ণন
৩৫. কুন্ড সংস্কার বর্ণন
৩৬. বিবিধ মন্ডল নিৰ্মাণ বৰ্ণন
৩৭. সুদর্শনান্ত নরপতি রাজ্যকাল বৃত্তান্ত
৩৮. ত্রেতাযুগীয়ভূপ বৃত্তান্ত বর্ণন
৩৯. দ্বাপরযুগীয় ভূপ বৃত্তান্ত বর্ণন
৪০. ম্লেচ্ছযজ্ঞ বৃত্তান্ত তথা কলিকৃত বিষ্ণু স্তুতি বর্ণন
৪১. ম্লেচ্ছবংশ বর্ণন
৪২. আর্যাবর্তে ম্লেচ্ছগণের আগমন
৪৩. কলিঞ্জর অজমেরপুরাদি বর্ণন
৪৪. পদ্মাবতী কথা বর্ণন
৪৫. মধুমতী বরনির্ণয় কথা বর্ণন
৪৬. সত্যনারায়ণ কথা বর্ণন
৪৭. সত্যনারায়ণ ব্রতে চন্দ্রচূড় নৃপকথা বর্ণন
৪৮. সত্যনারায়ণ ব্ৰতে ভিন্ন কথা বর্ণন
৪৯. শতানন্দ ব্রাহ্মণ কথা বর্ণন
৫০. সাধু বণিক কথা বর্ণন
৫১. সাধু বণিক কারাগার মুক্তি
৫২. পাণিনি মহর্ষি বৃত্তান্ত বর্ণন
৫৩. তোতাদরীস্থ বোপদেব বৃত্তান্ত বর্ণন
৫৪. পতঞ্জলি বৃত্তান্ত বর্ণন
৫৫. জায়মান ঐতিহাসিক বৃত্তান্ত বর্ণন
৫৬. ভরতখন্ডের অষ্টাদশ রাজ্যস্থান বর্ণন
৫৭. শালিবাহন বংশীয় নৃপতি বৰ্ণন
৫৮. ভোজরাজ বংশের অনেক ভূপাল রাজ্য বর্ণন
৫৯. জয়চন্দ্র তথা পৃথ্বীরাজের উৎপত্তি
৬০. সংযোগিনী স্বয়ম্বর বর্ণন
৬১. ইন্দ্রের ঘোটকীদান
৬২. কৃষ্ণাংশ চরিত্র বর্ণন
৬৩. মহীরাজ পরাজয়াদি বৃত্তান্ত বর্ণন
৬৪. কৃষ্ণাংশের কাছে রাজগণের আগমন
৬৫. পৃথ্বীরাজ দ্বারা গুর্জর রাজ্য গ্রহণ
৬৬. জয়ন্তাবতারবৃত্তান্ত বর্ণন
৬৭. চন্ডিকা দেবী বাক্য বর্ণন
৬৮. বলখানি বিবাহ বৃত্তান্তবর্ণন
৬৯. ব্রাহ্মণদের বিবাহ বৃত্তান্ত
৭০. হংসপদ্মিনী বর্ণন
৭১. ইন্দুল পদ্মিনীর বিবাহ
৭২. চন্দ্র ভট্টের ভাষা গ্ৰন্থ
৭৩. মহাবতীর যুদ্ধ বর্ণন
৭৪. কৃষ্ণাংশের – শোভা সংবাদ
৭৫. সমস্ত নৃপের সংগ্রাম এবং নাশ
৭৬. ব্যাস দ্বারা ভবিষ্য কথন
৭৭. অজমের তোমর নরেশ কর্ম বর্ণন
৭৮. শুক্ল বংশ চরিত্র
৭৯. পরিহর ভূপ বংশ বর্ণন
৮০. ভগবতারাদিবৃত্তান্ত
৮১. দিল্লীর ম্লেচ্ছ রাজা
৮২. চৈতন্য এবং শংকরাচার্য্য উৎপত্তি
৮৩. রামানুজোৎপত্তিবর্ণন
৮৪. কবীর – নরশ্রী – পীপা – নানক-বৃত্তান্ত
৮৫. চৈতন্য বর্ণনে জগন্নাথ মাহাত্ম্য
৮৬. আকবর বাদশাহ বৰ্ণন
৮৭. কিল্কিলার শাসক বর্ণন
৮৮. মঙ্গলাচরণ
৮৯. ব্রহ্মান্ড উৎপত্তি এবং বর্ণন
৯০. সাংসারিক জীবনের দোষ
৯১. অনন্তচতুর্দশী ব্রত মাহাত্ম্য
৯২. অধর্ম ও পাপের ভেদ
৯৩. শুভাশুভ গতি ও যমযাতনা
৯৪. শকট ব্রত মাহাত্ম্য
৯৫. তিলক ব্রত মাহাত্ম্য
৯৬. অশোক ব্রত মাহাত্ম্য
৯৭. বৃহৎ তপো ব্রত মাহাত্ম্য
৯৮. যমদ্বিতীয়া ব্রত মাহাত্ম্য
৯৯. অশূন্যশয়ন ব্রত মাহাত্ম্য
১০০. গোষ্পদ তৃতীয় ব্রত মাহাত্ম্য
১০১. হরিতালী তৃতীয়া ব্ৰত মাহাত্ম্য
১০২. ললিতা তৃতীয়া ব্রত মাহাত্ম্য
১০৩. অক্ষয় তৃতীয়া ব্রত মাহাত্ম্য
১০৪. বিনায়ক চতুর্থী ব্রত মাহাত্ম্য ও বিধান
১০৫. গ্রন্থ পরিচয় ও সমাপ্তি

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন