বিষাদবৃক্ষ – ১০

মিহির সেনগুপ্ত

দশ

এইসব ঘটনার আগেই অথবা পরে, আজ আর ঠিক মনে নেই একজন ভবঘুরে মানুষ আমাদের বাড়িতে এসে হাজির হয়েছিলেন। ধুতি-পাঞ্জাবি পরনে, রোগা লম্বাটে চেহারা। স্বভাবে একটু খ্যাপাটে। নাম সুরেন্দ্রনাথ বোস। বাড়ির অপোগণ্ডদের জন্য জ্যাঠামশাই তাঁকে গৃহশিক্ষক করে রাখলেন। তাঁর বোধহয় আশ্রয়ের প্রয়োজন ছিল। তিনি কোত্থেকে এসেছিলেন, কেন এসেছিলেন, কিছুই পরিষ্কার বোঝা যায়নি। তাঁর পরিধানের ধুতি-পাঞ্জাবির হাল খুবই শোচনীয়। জ্যাঠামশাইয়ের কী খেয়াল হলো, তিনি ভাবলেন এ খুব উত্তম শিক্ষক হবে। তাঁকে দেখলে মনে হতো তিনি অনেক পথ হেঁটে, অনেক ধুলো মেখে এখানে এসে হাজির হয়েছেন। ওই মলিন পোশাক, একটি ক্যাম্বিসের ব্যাগ, পায়ে ক্যাম্বিসের জুতো, এই তাঁর সম্বল। ধুতি-পাঞ্জাবির স্থানে স্থানে অসাধারণ রিফুকর্ম, কোথাও লেবুকাঁটা, কোথাও-বা বাবলাকাঁটার সহায়তায়। দেখলেই বোঝা যায় বহুদিন ধরে বহু কৃচ্ছ্রসাধনার এই বস্ত্রের বস্ত্রত্ব বজায় রেখেছেন তিনি। চেহারায় বহু-প্রব্রজ্যার চিহ্ন 1 অতএব বাড়িতে অচিরেই তিনি পাগলামাস্টার বলে প্রতিষ্ঠা পেলেন। বাড়ির মহিলামহল এই আবড় মনুষ্যটিকে বড়ই কৃপার নেত্রে দেখলেন। কিন্তু সেসব কৃপা মহাশয় ভ্রুক্ষেপমাত্র করলেন না।

পাগলামাস্টার প্রতিদিন সকাল-সন্ধেয় আমাদের পড়াতে বসাতেন। পড়ানোর ব্যাপারে তার একটিই কৃতকর্ম ছিল। সবাই বসলে তিনি আদেশ করতেন—পড়ো, পড়ে যাও। খানিকক্ষণ পরে আমরা যখন বলতাম যে পড়া হয়েছে, তিনিও দ্বিতীয় বাক্যটি উচ্চারণ করতেন লেখো, লিখে যাও। আমরা লেখা শেষ করলে মাস্টারমশাই খাতাগুলো দেখে তলায় সই করতেন এস এন বোস এবং তৎসহ তারিখ। তারপর তৃতীয় বাক্য, এবার সব যাও, খেলাধুলা করো। কিছু বুঝতেনও না, পড়াতেনও না।

আমাদের পড়ার মধ্যেই মাঝে মাঝে বিড়বিড় করে কীসব যেন বলতেন। আমরা কেউ তার কিছু বুঝতাম না। আমার বয়স তখন হয়তো পাঁচ-ছ বছর হবে। অন্য দাদারা, যাঁরা একটু বয়স্ক, মুখ টিপে হাসতেন। তাঁর কথাবার্তাগুলো ছিল নিতান্তই ছেঁড়া ফাটা। তার দু-একটা ক্ষীণ স্মৃতি এখনও আছে। হঠাৎ করে হয়তো আমার হাত থেকে শ্লেটটা নিয়ে তার ওপর আঁকিবুকি কাটতেন। তারপর বিড়বিড় করে বলতেন, এদিকে রাস্তা কই? এদিকে যাওয়া যাবে না। আবার বলতেন, কোহিমায় ঝান্ডা পুঁতলে আন্ডা হবে। এত সোজা? এ পথে চাটগাঁ যেতে পারলে হয়তো কিছু হতো। আবার আমাদের দিকে বুড়ো আঙুলটা বাড়িয়ে দিয়ে বলতেন, কিসসু হবে না। দাঙ্গা হবে দাঙ্গা। ভুল খবর দিয়েছে সবাই। সর্বাধিনায়ককে ধোকা দেয়া হয়েছে। উঃ এতদিন হয়ে গেল, তবু তাঁর একটা খবর কেউ দিতে পারছে না। এরকম সব কথা একা একা বলতেন তিনি। আমরা ভাবতাম পাগলামি। একদিন ভোরবেলায় শুনলাম মাস্টারমশাই নেই। কোথায় চলে গেছেন।

পরে বড়দের কানাকানিতে শুনলাম, মাস্টারমশাই নাকি সুভাষচন্দ্রের সেনাবাহিনীর লোক। বর্মার লড়াইয়ের পর যারা এদিক-ওদিক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন, তিনিও তাঁদেরই একজন। এসব শুনে আমাদের দারুণ রোমাঞ্চকর লাগছিল ব্যাপারটা। বাবাও মাকে একদিন বলেছিলেন, ‘ও একজন পলাতক সৈনিক, দাদায় ঠিক বোজতে পারে নায়। ওই যে নেতাজি আইছেলেন ও-বছর। ও হ্যার দলের লোক।’ বাবা হরহামেশা মাকে এ ধরনের গুরুগম্ভীর কথা বলতেন। মা যদিও প্রচলিত অর্থে প্রায় অশিক্ষিত, কিন্তু বাবা তাঁকে সেরকম মনে করতেন না। অনেক গম্ভীর কথাই তিনি মায়ের সঙ্গে বলতেন। শুনেছি আমাদের এক জেঠিমা ছিলেন দেশবন্ধুর নাতনি। মা নাকি তাঁর খুব ন্যাওটা ছিলেন। বদ্যিদের আত্মীয়তা, তাদের বংশলতার সব গলতায়। কে যে কার মামা, আর কে যে কার মেসো, এর হদিস সহজ নয়। নচেৎ যে জেঠিমার কথা বললাম, তার দেশবন্ধুর নাতনি হওয়া বা হলেও আমাদের পরিবারের বধূ হওয়া আদৌ উচিত নয়। কেননা, জেঠিমার শ্বশুর অর্থাৎ আমাদের সম্পর্কে বড় দাদু ছিলেন রায়বাহাদুর। রায়বাহাদুরেরা আর যে কারণেই স্মরণীয় হোন, তাঁদের ব্রিটিশবিরোধিতার কোনো প্রমাণ ইতিহাসগতভাবে আমাদের জানা নেই। বিশেষত সে ক্ষেত্রে তাদের রায়বাহাদুরত্ব থাকে না। তথাপি জেঠিমা ছিলেন তাঁর পুত্রবধূ। মা বলতেন, রক্ত কথা কয়। জেঠিমার সন্তান এবং বাবাদের খোকামণি, একদা নাকি মেছোবাজার বোমা মামলার অন্যতম আসামি হয়ে দেশবন্ধুর রক্তঋণ শোধ করার চেষ্টা করেছিলেন। মহাশয় শুনেছি পরবর্তী জীবনে কম্যুনিস্ট পার্টিতে আজীবন সদস্য ছিলেন। সত্যব্রত সেনের কথা পুরনো কমরেডদের অনেকেই হয়তো জানেন।

মায়ের কাছে পরবর্তীকালে শুনেছি, আমাদের ওই বাড়িতে স্বাধীনতার আগে এবং পরবর্তীকালে অনেক নেতা এসেছেন। আমাদের বৈঠকখানায় তাদের সভাসমিতি হয়েছে, মা তাদের পঞ্চব্যঞ্জনে রান্না করে খাইয়েছেন। মা বলতেন, ‘এইসব মাইনষেরা এহানে আইতেন সতীনদার লগে। হেনায় যহন-তহন আইয়া কইতেন, আইজ এহানে সভা আছে, এতজোন খাইবে।’ মা বলতেন, ‘হে একজন এমন মানুষ য্যারে কেউ তুইচ্ছ করতে পারত না।’ তখন নাকি দেশভাগ যাতে না হয় তার জন্য এইসব সভা-মিটিং করতেন তাঁরা। তারপর দেশভাগ যখন হলোই সেই নেতারা সবাই ওপারে চলে গেলেন। এ ক্ষেত্রে মায়ের স্মৃতিই আমার স্মৃতি। মা বলতেন, ‘বেয়াকেই গেলেন। সতীনদায় গেলেন না। হেনায় কইছেলেন, দ্যাশ ছাড়ইয়া যাইও না কেউ, একদিন আবার সব ঠিক অইয়া যাইবে।’ এই সময় আমাদের বুড়িপিসিমা নাকি প্রায়ই স্বপ্ন দেখতেন। স্বপ্ন দেখা তাঁর একটা বিশেষ ‘বাই’ ছিল, তা আমরাও দেখেছি। তিনি বলতেন, ও বড় নসু, ও ছোডো নসু। কাইল রাত্তিরে এট্টা স্বপ্পন দ্যাখলাম। বাবা বলতেন, তয় তো সোমোস্যা মিডইয়া গ্যালে। কী দ্যাখলা?

: না দেহিকি, বৈঠকখানার ঘরে সতীন আর কেডা কেডা যেন আইয়া আমারে ডাইক্যা কয়, পিসিমা, তোমার আর কোনো চিন্তা নাই। সব ঝামেলার শ্যাষ।

: কী রহম?

: না, হিন্দুস্থান-পাকিস্তান এক অইয়া গেছে। ক্যারোর মধ্যে কোনো বিভেদ নাই আর। আবার বেয়াক আগের মতন অইয়া গেছে।

বুড়িপিসিমা এরকম ‘খোয়াব’ পরেও অনেক দেখেছেন। কিন্তু কোনো কিছুই আর আগের মতো হয়নি, হওয়া সম্ভবও ছিল না। স্বদেশিদের একটা ব্যাপক প্রভাব আমাদের বাড়িতে যে পড়েছিল তা ছোটবেলায় অনুভব করেছি, যদিও আমাদের বাড়ির কর্তাদের মধ্যে স্বদেশি আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বিশেষ কেউ ছিলেন না। সত্যব্রত সেনের এক দাদু ছিলেন যদুনাথ সেন, তিনি আমাদেরও দাদু। তিনি ক্ষুদিরাম এবং প্রফুল্ল চাকীর বিষয়ে খানিকটা জড়িত ছিলেন এরকম জেনেছি। ক্ষুদিরামের সৎকারকার্যে নাকি তিনি শ্মশানযাত্রী ছিলেন এবং তার চিতার একখানা জ্বলন্ত কাষ্ঠ ছিটকে এসে তার কপালের একপাশে লেগেছিল। সেই দাগটিকে নাকি তিনি রাজটিকা হিসেবে সম্মান করতেন। মায়ের কাছেই শোনা এসব গল্প। মা ক্ষুদিরামের ফাঁসির গল্প বলার সময় অবশ্যই ওই গানটা গেয়ে নিতেন—

একবার বিদায় দে মা
ঘুরে আসি
হাসি হাসি পরব ফাঁসি
দেখবে ইংলন্ডবাসী।

আমাদের ছোটবেলায় একজন অন্ধ ভিখিরি প্রায়ই ভিক্ষে করতে আসত আমাদের বাড়িতে, আর এই গানটা বড় করুণ করে গাইত। মা তাকে অনেক ভিক্ষে দিতেন। তখনও আমাদের সাধারণ আহার্যের অভাব ছিল না।

আমার বাবা-জ্যাঠার জীবনচর্যায় স্বদেশিয়ানার বিশেষ কিছুই আমরা দেখিনি একমাত্র খদ্দরের পাঞ্জাবি, ধুতি পরা এবং কংগ্রেসকে ভোট দেয়া ছাড়া। বাবা স্বদেশি রোমান্টিকতার নাটুকে মানুষ ছিলেন। ঠিক রাজনীতিগতভাবে কোনো বিশেষ ভূমিকায় তাঁকে দেখিনি। কিন্তু মায়ের মধ্যে স্বদেশি ভাবের যে প্রকাশ আমার জ্ঞানতকালে লক্ষ করেছি, তা তুচ্ছ করার মতো নয়। এ ক্ষেত্রে বাবার রোমান্টিকতা যে তাঁকে প্রভাবিত করেছিল তাতেও সন্দেহ নেই। বাবা সেকালের তুলনায় একজন বেশ সুশিক্ষিত মানুষ, এ কথা বলতে হবে। গ্রামীণ সমাজে, বাইরের শ্রোতাদের সাহচর্য তাঁর তেমন আকর্ষণীয় বোধ হতো না বলে, আমার ওই অর্ধশিক্ষিতা মায়ের সঙ্গেই ছিল তাঁর এইসব আলোচনার স্থান। দেখেছি, এ ব্যাপারে বাবা মায়ের কাছে যথার্থ আরাম পেতেন। কিন্তু মায়ের মধ্যে ছিল এক স্বাভাবিক স্বাদেশিকতার স্পন্দন। মা খুব ভালো গান করতেন। এই কথাটি হয়তো আমাকে বারবার প্রসঙ্গক্রমে বলতে হবে। সম্ভবত তিনি আমাদের ওই জেঠিমার কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখেছিলেন। আমি যখন মায়ের কাছে সেসব কাহিনি শুনতাম, তা তাঁর অতীতচারণাই ছিল। তথাপি, এখনও মনে হয়, কী যে আনন্দময় সেইসব। যখন মা আমাদের সামনের বারান্দার সিঁড়ি-পোস্তায় অর্থাৎ একতলার প্রলম্বিত উঁচু দলুজে বসে চাঁদনি রাতে গাইতেন—

সেথা গিয়াছেন তিনি,
সমর আনিতে
মায়েরও চরণে
প্রাণবলিদানে–

বাবা তখন তাঁর রোমান্টিক স্বভাববশত খুবই নস্টালজিক হয়ে পড়তেন। বলতেন—করো তো, গানটা পুরাই করো।—মা গাইতেন—

হয়তো ফিরিয়া আসিবে না আর
হয়তো মরিয়া হইবে অমর
সেথা যে তাঁহার মরণ সিন্ধু
সেথা গিয়াছেন তিনি।

মা বাবার একটু আসকারা পেলেই যেন বাবার তিনগুণ বেশি নস্টালজিক হতেন। তখন তাঁর মনে পড়ত ওইসব স্বদেশি মানুষদের কথা, যাঁদের গল্প তিনি বাবার কাছে শুনেছেন, অথবা যাঁদের একদিন তিনি নিজের হাতে রান্না করে খাইয়েছেন সেই সতীনদা, বিপিনদা, দেবেন ঘোষ এঁদের। কে জানে তাঁরা তখন কোথায়? মা গেয়ে যেতেন—

সধবা অধবা বিধবা তোমার
রহিবে উচ্চশির
ওঠো বীরজায়া বাঁধো কুন্তল
মোছায়ে অশ্রুনীর।

আমাদের ওই প্রায় প্রাগৈতিহাসিক অট্টালিকার দক্ষিণ আলসের কিনার ঘেঁষে তৃতীয়বার না পঞ্চমীর একফালি চাঁদ ঢলে পড়ত পশ্চিমের আড়ালে। সামনের বিশালকায় আমগাছটার ছায়া সারা উঠোনে সেই চাঁদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে একটা আলোআঁধারি এমন কৌশলে তৈরি করত, তা দেখে মনে হতো সব ফাঁসি যাওয়া স্বদেশিরা তাদের দেহ-বিমুক্ত মূর্তি নিয়ে যেন মায়ের গান শুনছেন। বাবা এই সময় পুরনো দিনের সব গল্প বলতেন স্বদেশি আন্দোলন বিষয়ে। মা তন্ময়ভাবে গেয়ে যেতেন–

জেগে আছি একা
জেগে আছি কারাগারে—

এখানে একটা বাস্তব কথা বলা দরকার যে, আমরা পিছারার খালের সংখ্যালঘুদের সন্তানেরা যখন স্বাদেশিকতা বা দেশাত্মবোধের এরকম এক পারম্পর্যে ছিলাম, তখন মুসলমান পরিবারের সন্তানদের এমতো কোনো আদর্শের কথা কেউ বলেনি। বলা হয়তো তখন সম্ভবও ছিল না। আমাদের পূর্ববর্তী প্রজন্মে মুসলমান প্রতিবেশীরা যদিও এই ধারায় খানিকটা সমৃদ্ধ ছিলেন, আমাদের সমকালীন প্রজন্ম সম্পূর্ণ অন্য শিক্ষা লাভ করছিল। একটা সময় ছিল যখন মুসলমানেরা একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডকে তাঁদের মাতৃভূমি হিসেবে বিচার করতেন না। তামাম পৃথিবীই তাঁদের ভূমি, তাঁদের জাতীয়তা ইসলাম। ইসলাম পথানুসারী একজন মানুষও যেখানে থাকবে, সেটা তাঁদেরই ভূমি। এরকম একটা বিশ্বাস তাঁদের ধর্মগত। জাতীয়তার অন্য কোনো বিচার তাঁদের কাছে গ্রাহ্য ছিল না। অতএব, আমার মায়ের কাছ থেকে স্বদেশি গল্প ও গানের মাধ্যমে যে শিক্ষা আমি স্বাদেশিকতা বিষয়ে লাভ করেছিলাম, তার সঙ্গে পাকিস্তানি স্বাদেশিকতার কোনো মিলই ছিল না। কার্যত প্রতি পদে পদে আমাকে পরবর্তীকালে সাবধানতার সঙ্গে এগোতে হচ্ছিল।

কিন্তু আমার ওই কিশোর সময়টিতে সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে স্থানীয় মুসলমানদের একটা দ্বিধারার টানাপোড়েনই আমি দেখেছি। তখন মায়ের শিক্ষা এবং গান—

সেথা গিয়াছেন তিনি সমর আনিতে
মায়ের চরণে প্রাণবলিদানে–

ইত্যাদির সঙ্গে ‘নারায়ে তকবির’, ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি সহযোগে মালাউন বা কাফেরদের উচ্ছেদ করার কোনো কার্যকারণ খুঁজে পেতাম না। অথচ এই ধ্বনি কোনো অন্যায় ধ্বনি নয়। বরং ধর্মপ্রাণ মানুষেরা এর মধ্যে শান্তির বাণীই শুনতে চায়। অথচ, এই ধ্বনি তখন আমাদের সংখ্যালঘুদের কাছে কতই না বিভীষিকাময় ছিল। অনেক পরে জেনেছি, হিন্দুরাও ভারতের অনেক স্থানেই দাঙ্গার ধ্বনি হিসেবে ‘বন্দেমাতরম’ এবং ‘হর হর মহাদেও’ ইত্যাদি ধ্বনি সহকারে মুসলমান নিধনে ঝাঁপিয়ে পড়ত এবং এখনও পড়ে।

আমার পিছারার খালের পারের প্রতিবেশী মুসলমান সাধারণজন বা আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের মহালের থেকে আগত মাহিন্দরেরা মায়ের খুব অনুরক্ত ছিল। তারা মায়ের গাওয়া স্বদেশি সংগীত খুবই তন্ময়তায় আমাদের উঠোনে বা দরদালানে বসে শুনত। আমাদের মায়ের প্রজাদের সামনে কোনো সংকোচ করতেন না।

যতদিন মধ্যস্বত্ব ব্যাপারটি ছিল, তারা আমাদের বাড়ির আত্মীয়ই ছিল, এমনই আমি দেখেছি।

সকল অধ্যায়

১. বিষাদবৃক্ষ – ১
২. বিষাদবৃক্ষ – ২
৩. বিষাদবৃক্ষ – ৩
৪. বিষাদবৃক্ষ – ৪
৫. বিষাদবৃক্ষ – ৫
৬. বিষাদবৃক্ষ – ৬
৭. বিষাদবৃক্ষ – ৭
৮. বিষাদবৃক্ষ – ৮
৯. বিষাদবৃক্ষ – ৯
১০. বিষাদবৃক্ষ – ১০
১১. বিষাদবৃক্ষ – ১১
১২. বিষাদবৃক্ষ – ১২
১৩. বিষাদবৃক্ষ – ১৩
১৪. বিষাদবৃক্ষ – ১৪
১৫. বিষাদবৃক্ষ – ১৫
১৬. বিষাদবৃক্ষ – ১৬
১৭. বিষাদবৃক্ষ – ১৭
১৮. বিষাদবৃক্ষ – ১৮
১৯. বিষাদবৃক্ষ – ১৯
২০. বিষাদবৃক্ষ – ২০
২১. বিষাদবৃক্ষ – ২১
২২. বিষাদবৃক্ষ – ২২
২৩. বিষাদবৃক্ষ – ২৩
২৪. বিষাদবৃক্ষ – ২৪
২৫. বিষাদবৃক্ষ – ২৫
২৬. বিষাদবৃক্ষ – ২৬
২৭. বিষাদবৃক্ষ – ২৭
২৮. বিষাদবৃক্ষ – ২৮
২৯. বিষাদবৃক্ষ – ২৯
৩০. বিষাদবৃক্ষ – ৩০
৩১. বিষাদবৃক্ষ – ৩১
৩২. বিষাদবৃক্ষ – ৩২
৩৩. বিষাদবৃক্ষ – ৩৩
৩৪. বিষাদবৃক্ষ – ৩৪
৩৫. বিষাদবৃক্ষ – ৩৫
৩৬. বিষাদবৃক্ষ – ৩৬
৩৭. বিষাদবৃক্ষ – ৩৭
৩৮. বিষাদবৃক্ষ – ৩৮
৩৯. বিষাদবৃক্ষ – ৩৯
৪০. বিষাদবৃক্ষ – ৪০
৪১. বিষাদবৃক্ষ – ৪১
৪২. বিষাদবৃক্ষ – ৪২
৪৩. বিষাদবৃক্ষ – ৪৩
৪৪. বিষাদবৃক্ষ – ৪৪
৪৫. বিষাদবৃক্ষ – ৪৫
৪৬. বিষাদবৃক্ষ – ৪৬

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন