মহাপ্রস্থান – সৌভিক চক্রবর্তী

সৌভিক চক্রবর্তী

চাপা গলায় সন্তোষ ডাকছে, ‘বিষ্ণু৷ এই বিষ্ণু৷’

বিষ্ণু বাসন ধুচ্ছিল৷ এর মধ্যেই সে প্রায় গোটা চল্লিশ থালা ধুয়েছে৷ এখনও অনেকগুলো গ্লাস ধোয়া বাকি৷ সন্তোষের ডাক শুনে বিষ্ণুর গা পিত্তি জ্বলে গেল৷ অসহ্য এই লোকটা৷ তবু সে শান্ত গলায় বলল, ‘কী সন্তোষদা? ডাকছ কেন?’

‘টপ করে একটু উঠে আয় দিকি৷ চুপিচুপি একটু খেয়ে নে৷’

খাবারের কথা শুনেই বিষ্ণুর মনে পড়ল, অনেকক্ষণ থেকে তার পাগলের মতো খিদে পেয়েছে৷ খিদেতে পেট গুলিয়ে উঠছে৷ কিন্তু সন্তোষের দেওয়া খাবার খেলেই মুশকিল৷ এ দিকে এখন সবে সাড়ে ন’টা৷ এখানে বারোটার আগে কর্মচারীদেরই খাওয়ার নিয়ম নেই সেখানে বিষ্ণু তো নেহাতই ফালতু৷

মাসখানেক আগে বিষ্ণুকে ট্যাঁকে করে তার বাবা সটান হাজির হয়েছিল বিশ্বপতি দাসের এই হোটেলে৷ বিশ্বপতির সামনে মাটিতে বসে বিষ্ণুর বাবা বলেছিল, ‘বাবু, ছেলেটারে আপনার চরণে রেখে গেলাম৷ আপনি ভগবান৷ ছেলেটারে একটু দেখবেন৷’

স্যান্ডো গেঞ্জিটা ভুঁড়ির ওপর তুলে বিশ্বপতি বলেছিল, ‘বাচ্চা একটা ছেলে আমার লাগবে বটে৷ কিন্তু সে খবর তোমায় কে দিলে?’

‘আজ্ঞে টেম্পু চালায় পটল৷ সেই বলল, বাবু স্বয়ং শিব৷ তাঁর চরণে যদি ছেলেটাকে সঁপে দিতে পারো তা হলে ছেলেটার একটা হিল্লে হয়ে যাবে৷’

‘থাক আর বলতে হবে না৷ বুঝেছি৷ ক-টা ছেলেমেয়ে তোমার?’

‘আজ্ঞে ছয়টা৷ এইটা চার নম্বর৷’

‘নাম কী?’

‘আজ্ঞে বিষ্ণু৷ আমি ঠাকুর দেবতার নামেই ছেলেমেয়ের নাম রেখেছি৷ বড়টা মহেশ্বর৷ মেজো মেয়ে গৌরী…’

‘আর বলতে হবে না৷ বয়স কত এই ছেলের?’

‘আজ্ঞে দশ৷’

‘লেখাপড়া কিছু শিখিয়েছ?’

‘এইটা কী বললেন বাবু? ভাত দিতে পারি না, লেখাপড়া শেখাব কী করে? তবে এই ছেলের মাথা খুব পরিষ্কার৷ ক’দিন ফ্রি ইশকুলে গেছিল, নিজে নিজেই লিখতে পড়তে শিখে গেছে৷ হিসেব কষতে পারে৷’

‘হুম৷ ঠিক আছে৷ তুমি ছেলেকে রেখে যাও৷ দু’ বেলা খাওয়া আর মাসে পাঁচশো টাকা পাবে৷ টাকাটা তুমি এসে নিয়ে যেও৷’

‘আজ্ঞে পাঁচশো টাকাটা বড় কম হয়ে গেল না বাবু?’

বিষ্ণুর বাবার কথা শুনে সোজা হয়ে বসেছিল বিশ্বপতি৷ চোখ কপালে তুলে বলেছিল, ‘বল কী? এই তো একফোঁটা ছেলে৷ তার জন্য পাঁচশো টাকা কম হল? একে কাজ শেখাতেই তো হাজার টাকার সময় চলে যাবে৷ হাজার যোগ পাঁচশো মানে পনেরোশো খরচ এই ছেলের জন্য৷ না না পাঁচশো অনেক বেশি বলেছি৷ তিনশো বলা উচিত ছিল৷ কিন্তু বলে ফেলেছি যখন পাঁচশোই পাবে৷ না পোষায় তো অন্য জায়গায় দ্যাখো৷’

বিষ্ণুকে রেখে তার বাবা চলে গেল৷ সেই থেকে বিশ্বপতি দাসের হোটেলে বাসন ধোয়ার লোক হিসেবে বহাল হল বিষ্ণু৷ খুব চালু দোকানটা৷ পাশেই বাসস্ট্যান্ড, কিছুটা দূরে ইউনিভার্সিটি৷ খাবার ভাল বলে সারাদিনই মাছির মতো ভনভন করে খদ্দের৷ মা লক্ষ্মী দু’ হাত ভরে দিচ্ছেন বিশ্বপতিকে৷ তাতে অবশ্য বিষ্ণুদের কোনও উপকার নেই৷ সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে রান্নার জোগাড় শুরু হয়ে যায়৷ দশটা থেকে ভাত খেতে আসে লোকজন৷ সেই তিনটে সাড়ে তিনটে নাগাদ একটু ফুরসত মেলে৷ ফের বিকেল পাঁচটা থেকে কাজ শুরু৷ রাতের খাবার খেতে খেতে বারোটা৷ তাও যদি তেমন খাওয়া হত৷ এই হোটেলে কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ ভাত, ডাল আর একটা ঘ্যাঁট৷ সে রান্নাও এত খারাপ যে মুখে তোলা যায় না৷

বিষ্ণুর থাকার জায়গা ঠিক হয়েছিল হোটেলের পেছনের খুপরিতে, সন্তোষ বলে লোকটার সঙ্গে৷ একদিন বিষ্ণুর থালায় চুপিচুপি একটা মাছের টুকরো তুলে দিয়েছিল সন্তোষ৷ কৃতজ্ঞতায় চোখে জল এসে গেছিল বিষ্ণুর৷ তার মনে হয়েছিল, বিদেশ-বিভুঁইয়ে তাও একটা আপনার লোক পাওয়া গেল৷ কিন্তু সেই মাছ হজম হওয়ার আগেই ভুল ভেঙে গেছিল বিষ্ণুর৷ মাঝরাতে তাকে জাপটে ধরেছিল সন্তোষ৷ বিষ্ণুর খুব কষ্ট হয়েছিল সেদিন৷

তার পর থেকে প্রায়ই বিষ্ণুকে এটা ওটা খেতে দিতে চায় সন্তোষ৷ বিষ্ণু বোঝে, এগুলো ঘুষ৷ যদিও আজ খুবই খিদে পেয়েছে তবু তার মনে হল, খাবার খেলেই সন্তোষ সুযোগ পেয়ে যাবে৷ সে চুপ করে এক মনে বাসন ধুতে লাগল৷

পেছন থেকে ভাঙা ফ্যাসফ্যাসে গলায় সন্তোষ ডেকেই চলেছে, ‘বিষ্ণু৷ এই বিষ্ণু৷’

দুই.

মূর্তিটার চারপাশ রেলিং দিয়ে ঘেরা৷ ছোটখাটো একজন মানুষ অনায়াসে শুয়ে পড়তে পারে সেখানে৷ মাথার ওপরে একটা ছাউনিও আছে৷ বিষ্ণুর আগেই পছন্দ হয়েছিল জায়গাটা৷ সে রেলিঙে ভর দিয়ে মূর্তিটার কাছে উঠে এল৷

খাওয়ার পরই সন্তোষের নজর এড়িয়ে পালিয়ে এসেছে বিষ্ণু৷ সে কিছুতেই ওই নোংরা লোকটার সঙ্গে শোবে না৷ রাতটা কোথায় কাটাবে ভাবতে ভাবতেই তার মনে পড়ে গেছিল জায়গাটার কথা৷ বড় নির্জন এই জায়গাটা৷ সামনেই একটা কদম গাছ৷ বর্ষার জল পেয়ে ফুলে ভরে গেছে গাছটা৷ বাতাসে ভাসছে কদম ফুলের গম্ভীর বিষণ্ণ সুবাস৷ দিন কয়েক আগে একটা বৃষ্টির বিকেলে বিষ্ণু কয়েকটা কদম ফুল এনে মূর্তিটার সামনে রেখেছিল৷ ফুলগুলো এখনও আছে৷ তবে শুকিয়ে গেছে৷ জামাটা পেতে মূর্তির পাশেই শুয়ে পড়ল সে৷

খুব জ্যোৎস্না হয়েছে আজ৷ আকাশটা যেন ফেটে পড়ছে একেবারে৷ বিষ্ণুর মনে হল, মূর্তির চোখ দু’টো যেন হঠাৎ জ্যান্ত হয়ে গেছে৷ সে ভাবছিল, পাথরের চোখ তো এতটা জ্বলজ্বল করার কথা নয়৷ সে কি ভুল দেখছে জ্যোৎস্নায়? ঠিক তখনই মূর্তি বলে উঠল, ‘আমার কপালের বাঁ দিকটা একটু চুলকে দাও তো খোকা৷’

এই ঘটনায় প্রচণ্ড ভয় পাওয়া স্বাভাবিক৷ বিষ্ণুর মনে হল, তারও ভয় পেয়ে দাঁত কপাটি লেগে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া উচিত৷ কিন্তু সে অবাক হয়ে দেখল, তার এতটুকুও ভয় লাগছে না!

মূর্তি আবারও বলল, ‘কপালের বাঁ দিকটা৷’

বিষ্ণু খুব যত্ন করে চুলকে দিল৷ মূর্তি বলল, ‘এরা কেমন ননসেন্স দেখেছ? মূর্তি বানিয়েছে বুক অবধি৷ হাত পা রাখেনি৷ অবশ্য ওরাই বা কী করে জানবে যে মূর্তিরও গাল কিংবা কপাল চুলকোতে পারে?’

বিষ্ণু বলল, ‘আমি কি আর একটু চুলকে দেব?’

‘না থাক৷ তোমাকে দেখছি কয়েক দিন ধরেই৷ তোমাকে বেশ পছন্দ হয়েছে আমার৷ কী নাম তোমার খোকা? কোথায় থাকো?’

বিষ্ণু অনেকক্ষণ ধরে নিজের ব্যাপারে সব কিছু বলল৷ মূর্তি মন দিয়ে শুনল৷ তার পর বলল, ‘এ সব শুনলে আমার বড় অসহায় লাগে৷ আমি তো খুব বড়লোক বাড়ির ছেলে ছিলাম৷ দারিদ্র ব্যাপারটা বুঝিনি কখনও৷ তবে আমি চেষ্টা করেছিলাম আমার সাধ্যমতো করতে৷ শিলাইদহে যখন জমিদারি দেখতে গেছিলাম সে সময় আমি বাংলার সাধারণ মানুষকে খুব কাছ থেকে দেখেছিলাম৷ থাক সে কথা৷ কিন্তু তুমি তো বেশ আরাম করে বসে আছ দেখছি৷ মূর্তি কথা বলছে দেখে অবাক হচ্ছ না?’

‘হচ্ছি তো৷’

‘এর জন্য কিন্তু তুমিই দায়ী৷’

‘আমি?’

‘হ্যাঁ৷ তোমার মনে আছে তুমি আমাকে কদম ফুল এনে দিয়েছিলে? সেটা ছিল মরসুমের প্রথম বৃষ্টির দিন৷ প্রথম বর্ষার দিনে কদম ফুল উপহার দিলে পাথরেও প্রাণ সঞ্চার হয়৷ প্রথম বর্ষার কদম ফুল বড় মারাত্মক৷ সে জন্যই তো কেউ কাউকে কদম ফুল উপহার দেয় না৷ মানুষ অবশ্য এত কিছু জানে না৷ প্রকৃতি চায় না তার নিয়মের অন্যথা হোক৷ সে চায় না পাথর কথা বলুক৷ তাই সে কদম ফুলকে উপহার হয়ে ওঠার মতো রূপ দেয়নি৷ মানুষ রূপের কাঙাল৷ যা বললাম কিছু বুঝলে খোকা?’

বিষ্ণু মাথা নাড়ে৷ মূর্তি বলে, ‘তবে কী জানো প্রাণ পেয়ে আমার খুব একটা আনন্দ হচ্ছে না৷’

‘কেন?’

‘চারদিকটা বড্ড নকল লাগছে৷ সবাই কেমন যেন ওপর ওপর৷ কেউই গভীরে যেতে চায় না৷ কোনও উৎসব নেই৷ আনন্দ নেই৷’

কথাগুলো মন মতো হয় না বিষ্ণুর৷ সে বলে, ‘এ রকম বলছ কেন? তোমাকে নিয়ে তো কত হইচই করে সবাই৷ লোকজন সব সময়ই তোমার কথা বলে৷ আমাদের হোটেলে ভাত খেতে আসে ইউনিভার্সিটির ছেলেমেয়েরা৷ তারা তোমাকে নিয়ে সারা দিন নিজেদের মধ্যে তর্ক করে৷ তোমাকে ওরা ঠাকুর বলে মানে৷’

‘সব বদমাইশি৷ প্যাঁচ কষে আমাকে ঠাকুর বানিয়ে দিয়েছে৷ আসলে ঠাকুর বানিয়ে দিলেই তো ল্যাঠা চুকে গেল৷ ঠাকুরকে নৈবেদ্য দিলেই মিটে যায় কিন্তু মানুষকে তো ভালোবাসা দিতে হয়৷ শ্রদ্ধা, ভক্তি, স্নেহ, মায়া, মমতা দিতে হয়৷ তাতে অনেক হাঙ্গামা৷ বুঝলে খোকা? নাহ! মাথাটা বেশ ধরেছে৷ ক্লান্ত লাগছে৷ বয়েসটা তো কম হল না৷ তুমি ঘুমোও৷’

‘আমি কি তোমার মাথা ম্যাসেজ করে দেব? আমাদের গ্রামের প্রীতম নাপিতের কাছে শিখেছি৷ খুব ভাল লাগবে৷ দেব?’

‘দেবে? তা দাও৷’

বিষ্ণু মন দিয়ে মূর্তির মাথা টিপতে থাকে৷ জ্যোৎস্নায় চার দিক ভেসে যাচ্ছে৷ সব কেমন যেন ভূতুড়ে লাগে তার৷

মূর্তির সঙ্গে এ ক’ দিনে খুব জমে উঠেছে বিষ্ণুর৷ রোজ রাতে সে মূর্তির কাছে গল্প শোনে৷ মূর্তি বেশ কয়েকটা কবিতাও শিখিয়েছে বিষ্ণুকে৷ বাসন মাজতে মাজতে তারই একটা গুনগুন করছিল সে,

‘অঞ্জনা নদী তীরে খঞ্জনি গাঁয়

ভাঙ্গা মন্দিরখানা গঞ্জের বাঁয়

জীর্ণ ফাটলধরা এক কোণে তারি

অন্ধ নিয়েছে বাসা কুঞ্জবিহারী…’

বিষ্ণু যেখানে বসে বাসন মাজে তার পাশেই একটা জানলা৷ জানলার পাশে টেবিলে বসে তিনটে লোক খুব নিচু গলায় কথা বলছিল৷ তাদের কথা কানে আসায় সে চুপ করে গেল৷ সব কথা বুঝতে পারল না বিষ্ণু, তবে যেটুকু বুঝল তাতেই তার অন্তরাত্মা অবধি শিউরে উঠল৷

দোকানের কাজ শেষ হতেই ছুট লাগাল বিষ্ণু৷ রেলিং বেয়ে ওপরে উঠতেই মূর্তি বলল, ‘কী হল খোকা? হাঁফাচ্ছ কেন?’

বিষ্ণু বলল, ‘খুব বিপদ৷’

মূর্তি অবাক হয়ে গেল, ‘কীসের বিপদ খোকা?’

‘আচ্ছা ওই মিউজিয়ামের ভেতরে তোমার কোনও সোনার মেডেল আছে? খুব দামি?’

‘হ্যাঁ আছে তো৷ নোবেল প্রাইজটা আছে৷ ওটা পাওয়ার আগে বাঙালি আমায় পাত্তা দেয়নি জানো? তবে ওটা পেলাম বলে ইয়েটস আবার আমার ওপর খুব রেগে গেল৷’

‘এত বকরবকর কেন করো বলো তো? বলছি বিপদ, তা না তুমি আগড়ম বাগড়ম বকেই চলেছ৷’

বিষ্ণুর ধমক খেয়ে মূর্তি একটু থতিয়ে গেল৷ বলল, ‘রাগ করো কেন? বয়সকালে মানুষ একটু বেশি কথা কয়৷ তা বলো কী বিপদ?’

‘তোমার ওই মেডেলটা কাল রাতে ওরা চুরি করে নেবে৷’

মূর্তি চমকে উঠল, ‘চুরি করে নেবে? আমার নোবেল? কারা চুরি করবে?’

‘সে আমি চিনি না কি ওদের? কিন্তু করবে এটুকু জেনে রেখো৷ ওদের সব ঠিক করা আছে৷ আমি শুনে ফেলেছি৷’

বিষ্ণু দেখে, মূর্তির চোখ দু’টো জ্বলে ওঠে৷ ধীর গলায় মূর্তি বলে, ‘এত নীচে নেমে গেছে সবাই? আমার নোবেল কোনও কোটিপতি বিদেশির বসার ঘরে দোল খাবে? সেটা আমি কিছুতেই হতে দেব না৷ আমার জিনিস যদি কাউকে দিতেই হয় সে আমি নিজের হাতে দেব৷’

মূর্তি কেমন একটা অস্থির অস্থির করতে থাকে৷ মূর্তির হাবভাব দেখে এই প্রথম বড় ভয় পায় বিষ্ণু৷

তিন.

সকাল থেকেই পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ৷ রবি ঠাকুরের একটা আবক্ষ মূর্তি কারা যেন একেবারে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে গেছে৷ চার দিকে ফিসফাস শোনা যাচ্ছে, ফের বুঝি নকশাল এল! বেলা বাড়তেই আবার একটা দুঃসংবাদ৷ কবির নোবেল পুরস্কারটা খোয়া গেছে মিউজিয়াম থেকে৷ পাহারাদারেরা বলছে, তারা অস্বাভাবিক কিছু দেখেনি৷ শুধু গভীর রাতে ভীষণ কদম ফুলের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল৷

সিআইডি, সিবিআইয়ের কর্তারা গম্ভীর মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছেন৷ কৌতূহলী মানুষের ভিড় জমেছে৷ হঠাৎই সেই ভিড়ের মধ্যে থেকে বদি পাগলা চেঁচাতে লাগল, ‘কাল রাতে আমি দেখলাম গুরুপল্লির রাস্তা দিয়ে একটা বাচ্চা ছেলে একা একা হেঁটে যাচ্ছে৷ তার গলায় অ্যাত্তোবড় একটা সোনার মেডেল৷ আমি মেডেলটা কেড়ে নিতে যাব তখনই লম্বা মতো দাড়িওলা এক বুড়ো লোক এসে আমার গালে এক থাবড়া দিয়ে হাওয়ায় মিলিয়ে গেল৷’

লোকে বদির কথা শুনে হাসতে লাগল৷ পাগলদের কথায় অনেক অসঙ্গতি থাকে৷ তাদের কথা কেউ বিশ্বাস করে না৷ তবে বদিপাগলা জানে, সে যা দেখেছে তা একেবারে নির্জলা সত্য৷ তার প্রমাণও আছে৷ বুড়োর হাতে বেশ জোর৷ চড় খেয়ে বদির কষের একটা দাঁত নড়ে গেছে৷ এখনও টনটন করছে জায়গাটা৷

অধ্যায় ১ / ১৪

সকল অধ্যায়

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন