১০. পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে হারে

“পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে
পাগল আমার মন জেগে ওঠে”

কবিগুরুর প্রিয় ঋতু ছিল বর্ষা। প্রায় সব বাঙালীরই বোধকরি প্রিয় ঋতু বর্ষা। কিন্তু সেই বর্ষা যখন মারাত্মক বিধ্বংসী রূপ ধারণ করে, তখন কি আর ভাল লাগে কারো। ঝর ঝর মুখর বাদর দিনে’ একটা চমৎকার আবহ সৃষ্টি করে অবশ্যই, কিন্তু ঝর ঝর করতে করতে যখন প্রবল আকার ধারণ করে বৃষ্টি আর বানের রূপ নিয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সবকিছু দিক থেকে দিগন্ত, তখন বৃষ্টিকে অভিশাপ দিতে কার্পণ্য করে না এই বাঙালীই।

আমরা পৃথিবীর এমন এক অংশে বাস করি যার সৌন্দর্যই হচ্ছে ঋতুবৈচিত্র। ছ’টা ঋতু আর কোথাও নেই। কাগজে কলমে যদিও দু’মাস বর্ষা, কিন্তু বাস্তবে তিনটি ঋতুতে বিস্তৃত এর পরিসর। ছোট্টবেলা থেকে বাস করেছি চট্টগ্রামে। সুন্দরী চট্টলা, পাহাড় আর সমুদ্রের মাঝে প্রকৃতির এক উদার দান এই চট্টলাভূমি। কিন্তু এর বর্ষা সম্পর্কে যাদের ধারণা নেই তাঁরা বুঝতে পারবেন না এর বর্ষার রূপ। শুরু হলে যেন আর থামাথামি নেই। আম্মাদের কাছে শুনতাম-মঙ্গলবার যদি বর্ষণ শুরু হয় তো সর্বনাশ— চৌদ্দদিনের আগে আর এর শেষ দেখা যাবে না। পাহাড়ী অঞ্চল বিধায় পানি সরে যেতে সময় লাগতো না (এখন নাকি ভিন্ন চিত্র) তাই রক্ষে। ঢাকার বর্ষার সাথে তুলনাই করা যায় না। এখানে বৃষ্টি হয় থেমে যায়। মানুষকে সুযোগ দেয় চলা ফেরার। কিন্তু ওখানে-উঁহু! তা হবার নয়।

তো সেখানেই দীর্ঘদিনের বাস ছিল আমার। স্কুলে যেতাম প্রায় ভিজতে ভিজতে। কারণ বাসায় ছাতা একটিই ছিল। যদিও আব্বা আমাকেই দিতে চাইতেন কিন্তু বেশ ক’টি হারাবার পর আর আমিই সাহস করে চাইতে পারিনি। আমার রেকর্ড এরকম ছিল— একটি ছাতা একবারই আমি স্কুলে নিয়ে যেতে পেরেছি। ফিরে আনার রেকর্ড শূন্যের কোঠায়। বন্ধুদের কারো সাথে শেয়ার করে চলে যেতাম স্কুলে। স্বাভাবিক কারণেই ভিজতে হতো কিছুটা। আর যেদিন ‘রেইনী ডে’-র হুজুগ উঠতো সেদিন তো জোর করে পুরোপুরি ভিজিয়ে দিতো সহপাঠিরা। সেটাও ছিল আনন্দের।

বৃষ্টি আসলে আমাদের মনের সব ভাব প্রকাশে সহায়ক। আনন্দে যেমন, বর্ষার গান মনটাকে উত্তাল করে তোলে, তেমনি ‘ঝর ঝর ঝরিছে শ্রাবণ ধারা’– নজরুলের এই গানটা দুঃখী মনটাকে কোথায় গিয়ে যেন একটা প্রশান্তির প্রলেপ দেয়।

শহরের মানুষ বিধায় গ্রামের বর্ষা খুব একটা দেখা হয়নি। মনে পড়ে ১৯৫৪-তে মুর্শিদাবাদ গেলাম, আমরা পুরো পরিবার। সেই সাতচল্লিশে চলে আসার পর প্রথম। সেটা ছিল জৈষ্ঠ-আষাঢ় মাস। প্রায় মাস খানেক ছিলাম। তখন দেখতাম ‘বর্ষার কাদা’ কাহাকে বলে। আমার নানির বাড়ির সামনেই রাস্তা। বাড়িটা একটা বাঁকে। ছুটাছুটি করতে গিয়ে কতবার যে আছাড় খেয়েছি তার হিসেব নেই-আমাকে নিয়ে ‘শহরের ছেলে’ বলে আমার খালাতো ভাইরা খুব মজা করতো তখন।

‘ইদানীং অবশ্য নাটকের কাজ করতে গিয়ে প্রায়শই গ্রামের বর্ষার রূপ দেখা সম্ভব হয়, তবে সেই কাদা যাকে এখানে বলে ‘প্যাক’ তা আর নজরে পড়ে না।

পানি আমি ভয় পাই, কারণ সাঁতার শেখা হয়নি। সে গল্প ইতিমধ্যে বলা হয়েছে। ঢাকায় আসলাম ১৯৬২তে। কোথায় পুকুর? কোথায় নদী? হলে থাকি! বাথরুমে ঝরণায় গোসল। আজও আমি পুলে নামার ইচ্ছা দমন করেই চলেছি। নৌকায় শুটিং করতে দশবার ভেবে নিই। বিপদে পড়লে সাহায্য করার মত কেউ আছে কিনা! তৌকিরের ‘জয়যাত্রা’-য় নদীতে গোসলের দৃশ্যে ফোর্স রেডি ছিল আমাকে উদ্ধারের জন্য, তবেই নেমেছি।

তারপরও বলবো জলকে ভালোবাসি। সমুদ্র আমার ভীষণ প্রিয়। নদীতে ভ্রমণ আনন্দদায়ক (শ্বশুরবাড়ি যেতে হয়েছে কত বার)। পুকুরের সৌন্দর্য অতুলনীয়। সুইমিং পুল বড়ই মেকি। প্রাকৃতিক জলাধারের মহিমা কোথায় সেখানে! শ্বশুরবাড়ির বেরাইদ গ্রাম। এক সময় ছিল বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। এখন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (উত্তর) এর আওতায়। আগে শীতকালে ধানক্ষেত দিয়ে পায়ে হেঁটে অথবা ড্যামরা ঘাট থেকে শীতলক্ষ্যা কিংবা রামপুরা থেকে হাতিরঝিল বেয়ে বালু নদীতে নৌকায় যাওয়া যেত। তবে বর্ষায় ছিল আনন্দ। গোটা ঢাকার চতুর্পাশ থৈ থৈ করতো পানি আর পানি। প্রতি বছর এই পানি চলে আসে বর্ষায়। তখন রামপুরা থেকে সোজা ৪৫-৫০ মিনিটে যেতে পারতাম বেরাইদ। তখনই দেখেছি— নৌকায় বসে-বর্ষার ঘনঘটা আর প্রবল বৃষ্টি— চমৎকার সে আবহ। ভয়ে প্রাণ কাঁপতো তারপরেও গাইতাম ‘নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে’। স্ত্রী শিরিন আমার সহায় এসব ক্ষেত্রে। সে খুলনায় ভাইয়ের বাসায় থাকতে বাড়ির আঙিনায় পুকুর পেয়েছে। শিখে নিয়েছে সাঁতার। খুব ভাল পারে সে সাঁতার। শুধু বলতো-‘নাও ডুবলে আমার পা-টা ছুয়ে থাকবে। ব্যাস। খবরদার জোরে ধরবে না। ইনশাআল্লাহ, কিছু হবে না।’ সিনেমা হলে চোখের ওপর দুই আঙ্গুল রেখে যেমন হরর সিনেমা উপভোগ করে অনেকে আমিও ঠিক সেই রকমভাবে অথৈ জলরাশির ওপর টলটলায়মান নৌকায় বসে প্রবল বৃষ্টি আর মেঘ গর্জন উপভোগ করতাম।

এখন আর সেসব সম্ভব নয়। হার্ট-এর জোর কমে গেছে না। কদিন আগে পরিচালক দীপংকর দীপনকে ফিরিয়ে দিলাম অপারেশন সুন্দরবন ছবিতে অভিনয়ের অফার। খুবই পছন্দ হয়েছিল চরিত্র, কিন্তু ওই যে, সুন্দরবনে শুটিং করতে হবে। পশুর নদী দিয়ে স্পিডবোটে যেতে হবে— ১০-১২ ঘণ্টার জার্নি। শুনেই বুক কেঁপে উঠেছে আমার। দুঃখিত দীপন 1 কী কথা বলতে গিয়ে কোথায় চলে এলাম। ফিরে যাই চট্টগ্রামে। কলেজে ভর্তি হয়েই পেলাম একটা সাইকেল। আমার আব্বা, যাকে জীবনে কোনোদিন দেখিনি সাইকেল চালাতে, তিনি হঠাৎ এক সাইকেল চালিয়ে একদিন বাসায় এসে হাজির-‘নাও তোমার সাইকেল। কি যে আনন্দ হয়েছিল সেদিন। ওটাই তখন থেকে হলো আমার সার্বক্ষণিক সখা। বৃষ্টি হালকা হলে যত জোরে সম্ভব তত জোরে চালিয়ে চলে যেতাম কলেজে। একটু বেশি বৃষ্টিতে বর্ষাতি ব্যবহার কদাচিৎ করতে হতো। আর প্রবল বর্ষণে বেরুতাম না।

এমনি এক প্রবল বর্ষণের কালের কথা। ওই যে, মঙ্গলবার শুরু হয়েছিল বৃষ্টি। চলছে তো চলছে। থামাথামি নেই, কখনো হালকা, কখন মাঝারি আবার কখন প্রবল বৃষ্টি। এর মাঝেই এক বৃহস্পতিবার (১৯৬১ সনে) চলে গেলাম কলেজে, দুপুরের পর ছিল একটি ক্লাস। ফাঁকি দেয়ার ইচ্ছা প্রবল হলো। চলে গেলাম ম্যাটিনি শো দেখতে খুরশীদ মহলে। সিনেমা-খাইবার মেইল। ইন্টার ক্লাসের টিকেট কিনলাম। স্টুডেন্ট কনশেসনে হয়ে গেল সেকেন্ড ক্লাস। আয়ুব খানের আমলে ছাত্রদের এই এক সুবিধা ছিল সিনেমা দেখতে-আইডি কার্ড দেখালেই এক ক্লাসের উন্নতি হয়ে যেত টিকেটে।

হলে যখন ঢুকি হালকা ঝড় শুরু হয়েছে। বৃষ্টি তো অবিরাম চলছিলই। আমার সাথে ছিল আমার এক বন্ধু সম্ভবত ‘ডিপটি’। হলের পাশেই একটু টিলার ওপর চায়ের ঝুপড়ি দোকানে সাইকেল জমা দিয়ে ঢুকে গেলাম হলে।

সিনেমার নায়িকা তখনকার সেক্সবোম নিলো। সিনেমা প্রায় হাফ টাইমের কাছাকাছি, নিলোর এক উন্মাদনাময় নৃত্য শুরু হলো। আর চতুর্দিক থেকে শুরু হয়ে গেল হুইসেল আর হাততালি। যেন নিলো হলের মাঝখানেই নাচছে। উত্তেজনা যখন চরমে— হলের বিদ্যুত গেল চলে। ব্যাস আর যায় কোথায়, শুরু হয়ে গেল চিৎকার, হৈ হল্লা, অশ্লীল গালাগালি, হল এবং বিদ্যুত সরবরাহের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার হতে লাগলো।

এত গালাগালি আর টিটকারী হল-এর কর্মচারী বেচারারা সহ্য করতে না পেরে সব দরজা খুলে দিলো হলের। উরে বাপরে? কী তাণ্ডব চলছে তখন বাইরে, যেন এক একটা দানব ছুটে এসে আছড়ে পড়ছে সিনেমা হলের গায়ে। সেই সাথে মানুষজনের আতচীৎকার। বিভিন্ন দিক থেকে টিনের চাল উড়ে এসে পড়ছে সিনেমা হলের গায়ে, সেই শব্দ কী মারাত্মক! এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলছে তখন, যা ভেতর থেকে কেউ বুঝতেই পারিনি। এই দেখে মুহূর্তে হলের ভেতরের মানুষগুলোর চেহারা গেল বদলে। আল্লা-রাসুলের নামে দোয়া পড়তে লাগলো চিৎকার করে। কেউ কেউ চিৎকার করে বলছিল— ‘ওডা মুসলমানের পোয়াঅক্কল আল্লার নাম ল’। আবার নিজেরা শুরু করলো আজান দিতে। এক সময় হলের চালটাও উড়ে গেল। বেড়ে গেল আজানের সংখ্যা।

সে যে প্রকৃতির কী তাণ্ডব আর মানুষের কী প্রকার আহাজারী চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। কতক্ষণ পরে থেমেছিল সাইক্লোন বলতে পারবো না। এক সময় সব ঠান্ডা। প্রকৃতি যেন হঠাৎ করে হয়ে গেল শান্ত-ভদ্র। আকাশে ঝকঝকে চাঁদ বেরিয়ে পড়লো। বোঝা গেল সে রাত ছিল পূর্নিমার। রাত নটার দিকে বেরোলাম আমি আর বন্ধুটি। প্রথমেই খুঁজতে বেরোলাম সাইকেল। রাস্তায় প্রায় সব গাছ উল্টে পড়ে আছে। এখানে ওখানে ভাঙ্গা টিন, ইলেকট্রিক তার, ফোনের খুঁটিও উপড়ে পড়ে আছে। রাস্তা সুনসান। অন্ধকার। ভাবলাম আজ হারালাম সাইকেল। কারণ এর মধ্যে লুটপাটও চলেছে শুনলাম।

টিলার ওপর ঝুপড়িটা খুঁজে পেলাম। একটু ঝড়ের আড়ালে পড়ায় সেটি বেঁচে গেছে— তবে চাল নেই। অন্ধকার। দোকানের ছেলেটি আমাদের দেখে ছুটে এল কাছে। ‘অনেরার লাই বই রইয়ি এডে’।

সে আমাদের জন্য অপেক্ষায়। সাইকেল অটুট এবং নিরাপদেই আছে। তাকে ধন্যবাদ দিয়ে বাড়ির পথে রওয়ানা হলাম। ডিপটি যাবে আগ্রাবাদ, আমি টাইগারপাস।

কিন্তু হায় সব রাস্তা গাছ আর পোল পড়ে বন্ধ। সুতরাং সাইকেল কাঁধে নিয়েই যাত্ৰা করতে হলো।

এদিকে বাড়িতে আম্মা তো জুড়ে দিয়েছিলেন মড়াকান্না। আব্বা লোকজন নিয়ে ঝড়ের পর বেরিয়েছিলেন আমাকে খুঁজতে। নেভি ব্যারাকের ওখানে দেখা হলো আব্বার সাথে। ভাবলাম আজ কপালে প্রচুর বকাঝকা!

কিন্তু না। এক ছেলের অনেক সুবিধা তো। আব্বা শুধু বললেন-সিনেমা দেখতে যাবে, তো বলে গেলেই হতো।

ব্যাস। কেস খতম।

বহু লোকের মৃত্যু হয়েছিল সেই সাইক্লোনে চট্টগ্রাম আর নোয়াখালিতে।

এরপর আর না বলে সিনেমায় যাইনি। তার কিছুদিন পরই টেস্ট পরীক্ষা, তারপর ফাইনাল, তারপর ঢাকায় প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। হল জীবন শুরু। স্বাধীন আবুল হায়াত। সেদিনের ঝড়-তুফানের কথা মনে পড়লে আমার মনে রবি ঠাকুরের একটি গান খুব মনে আসে।

আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার
পরান সখা বন্ধু হে আমার ॥

সকল অধ্যায়

১. ১. দিনগুলি মোর সোনার খাচায় রইল না
২. ২. তেলের শিশি ভাঙলো বলে খুকুর পরে রাগ করো
৩. ৩. জীবন যখন শুকায়ে যায়
৪. ৪. মোরা ভোরের বেলা ফুল তুলেছি
৫. ৫. আসা-যাওয়ার পথ চলেছে
৬. ৬. শৈশব হারিয়ে গেছে সময়ের স্রোতে
৭. ৭. নদী বহে যায় নূতন নূতন বাঁকে
৮. ৮. আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো
৯. ৯. রেলগাড়ি ঝমাঝম, পা পিছলে আলুর দম
১০. ১০. পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে হারে
১১. ১১. দিগবলয়ে নব শশী লেখা
১২. ১২. ছেলে আমার মস্ত মানুষ মস্ত অফিসার
১৩. ১৩. নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়
১৪. ১৪. দূর কোন পরবাসে তুমি চলে যাইবারে
১৫. ১৫. এলেম নতুন দেশে
১৬. ১৬. নীড়ে ফেরা পাখি
১৭. ১৭. মিলিটারি ॥ আপকা নাম কিয়া?
১৮. ১৮. চল চল চল ভাই আজি শুভদিনে পিতার ভবনে
১৯. ১৯. মাগো মা ওগো মা আমারে বানাইলা তুমি দিওয়ানা
২০. ২০. আছে দুঃখ আছে মৃত্যু বিরহ দহন লাগে
২১. ২১. একজন অভিনেতা হবে ভাল এবং সৎ মানুষ
২২. ২২. মার্কনীর বেতার তরঙ্গে আমি
২৩. ২৩. আমি সিনেমা নির্মাণ করি গল্প বলার জন্য-সত্যজিৎ রায়
২৪. ২৪. বোকার বাক্স
২৫. ২৫. বিজ্ঞাপন একটি সৃজনশীল শিল্পকলা
২৬. ২৬. আমি কি লেখক?
২৭. ২৭. পুরস্কার
২৮. ২৮. মাঠে প্রান্তরে
২৯. ২৯. আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ
৩০. ৩০. ছানাপোনার কাহিনি
৩১. ৩১. সারমেয় সমাচার
৩২. ৩২. পায়ের তলায় সর্ষে
৩৩. ৩৩. কোন আলো লাগলো চোখে
৩৪. ৩৪. সুন্দরের কোন মন্ত্রে মেঘে মায়া ঢালে
৩৫. ৩৫. তামাম শোধ

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন