১১১. মুতার যুদ্ধঃ ৮ম হিজরী সনঃ জামাদিউল উলা

যুহাজ্জের বাকী অংশ এবং রবিউস্ সানী পর্যন্ত তিনি মদীনাতেই কাটালেন। এ বৎসর মুশরিকরা হজ্জে নেতৃত্ব ও তত্ত্বাবধান করলো। যায়িদ ইবনে হারিসার নেতৃত্বে জামাদিউল আউয়াল মাসে তিনি মুসলমানদের একটি বাহিনীকে সিরিয়া অভিানে পাঠান। এই বাহিনী মূতা নামক স্থানে যুদ্ধের সম্মীখীন হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ ছিল যে, যায়িদ যদি শহীদ কিংবা আহত হন তাহলে জাফর এবং জাফর শহীদ কিংবা আহত হলে আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা সেনাপতির দায়িত্ব নিয়োজিত হবেন।

তিন হাজার মুসলমান যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নিলেন। মুসলমানগণ তাদের বিদায় ও সালাম জানাতে এলে আবদুল্লাহ ইবনে রওয়াহা কেঁদে ফেললেন। লোকেরা জিজ্ঞাসা করলো, “আপনি কাঁদছেন কেন?” তিনি বললেন “দুনিয়ার মোহে কিংবা তোমাদের মায়ায় কাঁদছি না। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওাসালাল্লামকে কুরআনের একটি আাত পড়তে শুনেছি। সে আয়াতে দোযখের উল্লেখ করে বলা হয়েছেঃ

“তোদমাদের প্রত্যেককে ঐ জাহান্নামের কাছে আসতে হবে। এটা তোমার প্রতিপালকের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।’ (মরিয়ম) আমি বুঝতে পারছি না জাহান্নামের পার্শ্বে যাওয়ার পর আমি কিবাবে তা থেকে উদ্ধার পাবো?” মুসলমানগণ তাঁকে সান্ত¦না দিয়ে বললেন, “আল্লাহ তোমাদের সঙ্গী হোন! তেনি তোমাদেরকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করুন এবং আমাদের বাছে সহী সালামতে ফিরিয়ে আনুন।”

জবাবে আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা এই কবিতা আবৃত্তি করলেনঃ

“আমি পরম করুণাময়ের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি আর কামনা করছি যেন

(কাফিরদের) রক্তক্ষয়কারী ব্যপিক আঘাত হানতে সক্ষম হই।

অথবা আমার (রক্ত) পিপাসু হাত দিয়ে বর্শার এমন আাঘাত হানতে পারি

যা (শত্রুকে) দ্রুত মৃত্যুর মুখে নিক্ষিপ্ত করবে ও তার কলিজা ও নাড়িভুঁড়ি

ছিন্নভিন্ন করে দেবে।

যেন আমার কবরের কাছে দেিয় অতিক্রমকারীরা বলতে পার যে, এই ব্যক্তিকে

আল্লাহ হিদায়াতের পথে চালিত করে গাজী বানিয়ে দিয়েছিলেন এবং সে

সুপথে চালিত হয়েছিল।”

অতঃপর বাহিনী রওনা হলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তাদের সাথে কিছুদুর গেলেন, কিছুদুর গিয়ে তিনি তাদেরকে বিদায় দিয়ে যখন ফিরে এলেন তখন আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা এই কবিতা আবৃত্তি করলেনঃ

“যে (মহান) ব্যক্তিকে বিদায় জানালাম,

আল্লাহ সেই শ্রেষ্ঠ বন্ধু ও সর্বোত্তম বিদায়কারীকে খেজুরের বীথিতে সুখে শান্তিতে রাখুন।” অতঃপর মুসলিম বাহিনী যাত্রা শুরু করলো। শামের (সিরিয়া) মায়ান নামক স্থানে পৌছে তারা যাত্রাবিরতি করলেন। সেখানে তারা জানতে পারলেন যে,, রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াস এক লক্ষ সৈন্য নিয়ে বালকা এলাকার মায়াব নামক স্থানে শিবির স্থাপন করেছে। লাখাম, জুযাম, বাহরা ও বালী গোত্রের আরো এক লাখ লোক তাদের সাথে যোগ দিয়েছে। তাদের নেতৃত্বে রয়েছে বালী গোত্রের এক ব্যক্তি এবং ইরাশ গোত্রের আর একজনস তার সহকর্মী। তার নাম মালিক ইবনে রাফেলা। মুসলিম বাহিনী এসব খবর জেনে মায়ানে দু’দিন অবস্থান করলো এবং তাদের করনীয় সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করলো। অবশেষে তারা সিদ্ধান্ত নিলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে পত্র পাঠিয়ে শত্রুর লোক লস্করের সংখ্যা জানাবেন। তিনি হয় আরো সৈন্য পাঠিয়ে তাদের সাহায্য করবেন, নচেত যা ভাল মনে করেন নির্দেশ দেবেন এবং সেই মুতাবিক তারা কাজ করবেন।

আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা মুসলমানদেরকে উৎসাহিত করে বললেন, “হে মুসলিমগণ! আজ তোমরা যা অপছন্দ করছ সেটাই তোমরা কামনা করছিলে। আর তা হলো শাহাদাত। আমরা সংখ্যা-শক্তি বা সংখ্যধিক্যের জোরে লড়াই করি না। যে জীবনব্যবস্থার দ্বারা আল্লাহ আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন তার জন্য আমরা লড়াই করি। অতএব এগিয়ে যাও, বিজয় বা শাহাদাত এ দুটো উত্তম জিনিসের যেকোন একটা অবশ্যই আমাদের জন্য নির্ধারিত আছে।”

মুসলমানগণ সবাই বললেন, “আল্লাহর শপথ, ইবনে রাওয়াহা হক কথা বলেছে।”

অতঃপর মুসলমানগণ অগ্রসর হলেন। বালকা সীমান্তের কাছে পৌছতেই তারা হিরাক্লিয়াসের সম্মিলিত রোমক ও আরব বাহিনীর মুখোমুখি হলেন। বালকার সেই স্থানটির নাম মাশারিফ। শত্রুরা নিকটবর্তী হলো। মুসলমানরা একদিকে সরে গিয়ে মৃতা নামক একটি গ্রামে অবস্থান নিলেন্ বাহিনীর দক্ষিণ ভাগে বনু উযরাব কুতবা ইবনে কাতাদাকে (রা) এবং বাম অংশে আনসারী উবায়া ইবনে মালিককে (রা) দায়িত্ব দিয়ে মুসলমানগণ রণপ্রস্তুতি নিলেন। অতঃপর উভয় পক্ষে তুমুল যুদ্ধ শুরু হলো। প্রধান সেনাপতি যায়িদ ইবনে হারিসা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পতাকা বহন করে প্রাণপণ যুদ্ধ করে শাহাদাত বরণ করলেন। তারপর পতাকা হাতে নিলেন জাফর ইবনে আবু তালিব। তিনি ঘোড়া থেকে নেমে ঘোড়ার পা কেটে ফেললেন এবং যুদ্ধ করে শহীদ হলেন। শাহাদাত বরণের প্রাক্কালে তিনি এই কবিতা আবৃত্তি করলেনঃ

“আহ! কি চমৎকার জান্নাত এবং তার সান্নিধ্য লাভ!

জান্নাত যেমন অতি উত্তম ও পবিত্র, তার পানীয়ও তেমনি।

রোমকদের আযাব ঘনিয়ে এসেছে, তারা কাফির এবং

আমার তুলনায় লনেক নিকৃষ্ট যদিও তাদের আঘাত খেয়েছি।”

ইবনে হিশাম বলেনঃ

নির্ভরযোগ্য সূত্রে আমি জানতে পেরেছি যে, জাফর ইবনে আবু তালিব প্রথমে ডান হাতে পতাকা তুলে ধরলেন। শত্রুর তরবারীতে ডান হাত কাটা গেলে বাম হাতে পতাকা তুলে ধরলেন। সে হাতও কাটা গেল। তখন তিনি তা দুই ডানা াদয়ে চেপে ধরলেন্ এরপর শত্রুর আঘাতে শাহাদাত বরণ করলেন। আল্লাহ তাঁর ওপর সন্তুষ্ট হোন। এ সময় তাঁর বয়স ছিল তেত্রিশ বছর। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে জান্নাতে দুইখানা ডানা দেন যা দিয়ে তিনি যেখানে খুশী উড়ে বেড়াতে থাকেন। কথিত আছে যে, একজন রোমক সৈন্য তাঁকে তরবারীর আঘাতে দ্বিখন্ডিত করে ফেলেছিল।

ইবনে ইসহাক বলেনঃ জা’ফর শহীদ হওয়ার পর আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা পতাকা তুলে ধরলেন এবং ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে সামনে অগ্রসর হলেন। তিনি ঘোড়া থেকে নেমে লড়াইতে অংশ নেবেন কিনা ভাবতে ও কিছুটা ইতস্ততঃ করতে লাগলেন। অতঃপর স্বগতভাবে বললেন,

“কসম খেয়ে বলছি, হে ইবনে রাওয়অহা, এই ময়দানে তোমাকে নামতেই হবে,

হয় তোমাকে নমাতেই হবে নচেত তোমাকে তা অপছন্দ করতে হবে।

সকল মানুষ যদি রণহংিকার দিয়ে জমায়েত হয়ে থাকে এবং তাদের মধ্যে

কান্নার রোলও পড়ে থাকে,

তোমাকে কেন জান্নাত সম্পর্কে নিস্পৃহ দেখছি?

সুখে শান্তিতে অনেকদিন তো কাটিয়ে দিয়েছো,

অথচ তুমি তো আসলে একটি পুরনো পাত্রে

এক ফোটা পানি ছাড়া আর কিছুই ছিলে না।

হে আমার আত্মা, আজ যদি নিহত না হও তাহলেও তোমাকে

একদিন মরতে হবে।

এটা (রণাঙ্গন) মৃত্যুর ঘর যাতে তুমি প্রবেশ করেছো।

তুমি এ যাবত যা চেয়েছো পেয়েছো।

এখন যদি ঐ দু’জনের মত (যয়িদ ও জাফর) কাজ কর

তাহলে সঠিক পথে চালিত হবে।”

অতঃপর তিনি ঘোড়ার পিঠ থেকে নামলেন। তখন তাঁর এক চাচাতো ভাই এক চুকরো হাড্ডি জড়িত গোশত এনে তাঁকে দিয়ে বললেন “নাও, এটা খেয়ে একটু শক্তি অর্জন কর। কেননা তুমি এই ক’দিনে অত্যধিক কষ্ট করেছো।” তিনি গোশতের টুকরোটা নিয়ে দাঁত দিয়ে কিছুটা ছিড়ে নিয়েছেন এমন সময় এক পাশে লোকজনের ভীষণ মারামারি হুড়োহুড়ির শব্দ শুনতে পেলেন। তখন তিনি বললেন “আমি বেঁচে থাকতে?” তিনি গোশতের টুকরোটা ছুড়ে ফেললেন। তরবারী হাতে অগ্রসর হলেন এবং যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়ে গেলেন।

এরপর বনু আজলান গোত্রের সাবিত ইবনে আকরাম পতাকা হাতে নিলেন। তিনি বললেন, “হে মুসলমানগণ! তোমরা সর্বসম্মতভাবে একজন সেনাপতি বানাও।” সবাই বললো “আপনিই আমাদের সেনাপতি।” তিনি বললেন, “আমি এ দয়িত্ব পালনে সক্ষম নই।” তখন মুসলমানগণ খালিদ ইবনে ওয়ালীদকে সেনাপতি বানালেন। তিনি পতাকা হাতে নিয়ে বীর বিক্রমে লড়াই করতে লাগলেন। সেনাবাহিনীকে নিয়ে একবার এক কিনারে চলে যান আবার এগিয়ে আসেন। এভাবে লড়াই চালাতে লাগলেন। একবার তিনি যেই এক কিনারে গিয়েছেন অমনি রোমক বাহিনীও কিনারে চলে গেল এবং রণেভঙ্গ দিল। পরে তিনি মুসলিম সেনাবাহিনীকে নিয়ে মদীনায় ফিরে গেলেন। বর্নিত আছে যে, মুসলিম বাহিনী যখন শত্রু কর্তক আক্রান্ত হচ্ছিল তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছিলেন, “যয়িদ ইবনে হারিসা পতাকা তুলে ধরেছিল এবং যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়েছে। এরপর জা’ফর পতাকা তুলে ধরেছিল এবং যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়েছে।” অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়াসাল্লাম নীরব রইলেন। এতে আনসারদের মুখ বিবর্ণ হয়ে গেল। তারা ভাবলেন, আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহার একটা অপ্রীতিকর কিছু ঘটেছে হয়তো। কিছুক্ষণ পর তিনি বললেন, “জাফরের পর আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা পতাকা তুলে ধরেছিল এবং যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়েছে।” অতঃপর বললেন “আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, এই তিনজনকে জান্নাতে সোনার পালংকে আরোহণ করানো হয়েছে। আমি দেখলাম আবদুল্লাহ৯ ইবনে রাওয়াহার পালংক খানিকটা বাঁকা। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কি কারণে হয়ে?ে আমাকে জবাব গেওয়া হলো যে, যায়িদ ও জা’ফর মুহুর্তে মাত্র বিলম্ব না করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।”

খালিদ লোক লস্কর নিয়ে মদীনায় ফিরে চললেন। মদীনার নিকটবর্তী হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাধারণ মুসলমানরা তাঁদেরকে অভ্যর্থনা জানাতে এগিয়ে গেলেন। বিশেষত শিশু ও বালক-বালিকারা অধিকতর দ্রুতগতিতে দৌড়ে এগুতে লাগলো। রাসূলুল।লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি জন্তুর পিঠে সওয়ার হয়ে মুসলিম জনসাধারণের সাথে এগিয়ে চলেছেন। তিনি বললেন, “তোমরা শিশুদেরকে নিজ নিজ সওয়ারীর পিঠে তুলে নাও। আর জাফরের ছেলেকে আমার কাছে দাও। আবদুল্লাহ ইবনে জা’ফরকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আনা হলো। তিনি তাকে সওয়ারীর ওপর নিজের সামনে বসালেন।

এ সময় মদীনার মুসলমানগণ এই বাহিনীর দিকে মাটি ছুড়ে মারছিল আর বলছিল, “ওহে পলাতকের দল! তোমরা আল্লাহর পথে জিহাদে গিয়ে পালিয়েছো।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলরেন, “না তারা ভাগেন। বরং তারা নতুন করে হামলা চালবে ইনশাআল্লাহ।”

এই সময় হাস্সান ইবনে সাবিতের কবিতা শুনে মূতার যুদ্ধ-ফেরত সাহাবীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। কবিতাটির মর্ম নিম্নরুপঃ

“মদীনাতে আমি কাটিয়াছি অপেক্ষকৃত কষ্টদায়ক রজনী

সকল মানুষ যখন ঘুমিয়েছে তখন আমি ঘুমাতে পারিনি।

বন্ধুর স্মুতি আমার চোখে অশ্রুর বন্যা বইয়ে দিয়েছে,

বস্তুতঃ স্মৃতিই হলো কান্নার প্রধান উদ্দীপক।

সত্যিই বন্ধুকে হারানো একটা বিরাট পরীক্ষ,

তবে অনেক মহৎ ব্যক্তি আছেন যারা পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে

ধৈর্য ধারণ করেন।

সর্বোত্তম মুসলমানদের দেখলাম একের পর এক দলে দলে

যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লো এবং তাদের পরপরই ঝাঁপিয়ে পড়লো তাদের উত্তর পুরুষগণ।

মূতায় একের পর এক শাহাদাত বরণকারী এই লোকদেরকে

আল্লাহ কখনো নৈকট্য লাভে বঞ্চিত করবেন না,

তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি হলো দুই ডানাধারী জাফর,

যায়িদ ও আবদুল্লাহ। বস্তুতঃ মৃত্যুর কারণগুয/েলা ছিল বড়ই ভয়াবহ।

একদা সকালে তারা মু’মিনদের নিয়ে যুদ্ধে যাত্রা করলো জনৈক ভাগ্যবান

ব্যক্তি ছিল তাদের অধিনায়ক।

বনু হাশিম গোষ্ঠির মধ্যে যিনি পূর্নিমার চা^ঁদের মত দীপ্ত,

যুলুমকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছিলেন যেই দুঃসাহসী বীর।

তারপর তিনি প্রচন্ড আক্রমণ চালালেন রণাঙ্গনের পরাজেয় পৌত্তলিকের ওপর।

অবশেষে এক সময় তিনি বেসালভাবে নুয়ে পড়ে গেলেন।

আর শহীদদের দলভুক্ত হলেন যার পুরস্কার জান্নাত

এবং সবুজ নিবিড় কাননসমুহ।

আমরা জা’ফরের মদ্যে লক্ষ্য করতাম মুহাম্মাদের অকুণ্ঠ আনুগত্য এবং

নির্দেশ প্রদানের বেলায় সুদৃড় অধিনায়কত্ব।

বনু হশিম বংশে মর্যাদা ও পৌরবের স্তম্ভ এখনো বিদ্যমান।

তারা ইসলামের পর্বত সদৃশ আর তাদের সহচরগণ

সেই সৌম্য দর্শন মহৎ সজ্জনদের মদ্যে রয়েছেন জা’ফর, আলী,

সর্বজনমন্য মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, হামযা, আব্বাস ও আকীল।

বস্তুতঃ চন্দন বৃক্ষের যেখানেই নিংড়ানো হোক সেখান থেকে

চন্দনের (অর্থাৎ সুগন্ধিযুক্ত) নির্যাসই বেরুতে বাধ্য।

(অর্থাৎ বনু হামিমের বংশের যে পরিবারেই কোন সন্তান ভুমিষ্ঠ হোক

সে উল্লিখিত সন্তানদের মতই হবে। উক্ত বংশের যে পরিবারেই

সে জন্মলাভ করুক না কেন।)

কোন কঠিন সমস্যায় যখন লোকেরা নিরুপায় ও সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে,

তখন তাদের দ্বারাই সংকটের সুরাহা হয়।

তাঁরা সব আল্লহর আপনজন, তাঁদের ওপর আল্লাহ

তাঁর বিধান নাযিল করেছেন এবং

তাঁদের কাছেই সুরক্ষিত রয়েছে সেই পবিত্র গ্রন্থ।”

সকল অধ্যায়

১. ০০৪. সীরাতে ইবনে ইসহাক
২. ০০৫. সীরাতে ইবনে হিশাম
৩. ০০৬. সীরাতে ইবনে হিশামের মর্যাদা
৪. ০০৭. সীরাতে ইবনে হিশামের বক্ষ্যমাণ সংক্ষিপত রূপ
৫. ০০৮. মুহাম্মদ (সা) থেকে আদম (আ) পর্যন্ত উর্ধতন বংশ পরম্পরা
৬. ০০৯. ইসমাঈর (আ) এর অধস্তন পুরুষদের বংশ পরম্পরা
৭. ০১০. রাবিয়া ইবনে নসরের স্বপ্ন
৮. ০১১. আবু কারব হাসসান ইবনে তুব্বান আস’আদ কর্তৃক ইয়ামতান রাজ্য অধিকার এবং ইয়াসরিব আক্রমণ
৯. ০১২. হাবশীদের দখলে ইয়ামান
১০. ০১৩. আরিয়াত ও আবরাহা দ্বন্দ্ব
১১. ০১৪. আসহাবুল ফীলের ঘটনা
১২. ০১৫. নিযার ইবনে মা’আদের বংশধর
১৩. ০১৬. আবদুল মুত্তালিব বিন হাশিমের সন্তান-সন্ততি
১৪. ০১৭. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিতামাতা
১৫. ০১৮. যমযাম কূপ খনন ও সে বিষয়ে সৃষ্ট মতবিরোধ
১৬. ০১৯. আবদুল মুত্তালিব কর্তৃক তার পুত্রকে কুরবানীর মানত
১৭. ০২০. মহানবীর (সা) আমিনার গর্ভে থাকাকালের ঘটনাবলী
১৮. ০২১. রাসূলুল্লাহর (সা) জন্ম
১৯. ০২২. হালীমার কথা
২০. ০২৩. বক্ষ বিদারণের ঘটনা
২১. ০২৪. দাদার অভিভাবকত্বে
২২. ০২৫. চাচা আবু তালিবের অভিভাবকত্বে
২৩. ০২৬. পাদ্রী বাহীরার ঘটনা
২৪. ০২৭. ফিজারের যুদ্ধ
২৫. ০২৮. খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহার সাথে বিয়ে
২৬. ০২৯. ওয়ারাকা বিন নাওফেলের ভাষ্য
২৭. ০৩০. পবিত্র কাবার পুনর্নির্মাণ
২৮. ০৩১. আরব গণক, ইহুদী পুরেহিত ও খৃস্টান ধর্মযাজকদের ভবিষ্যদ্বাণী
২৯. ০৩২. রাসূলুল্লাহর (সা) দৈহিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য
৩০. ০৩৩. ইনজীলে রাসূল্লাহর বিবরণ
৩১. ০৩৪. নবুওয়াত লাভ
৩২. ০৩৫. কুরআন নাযিলের সূচনা
৩৩. ০৩৬. খাদীজা বিনতে খুয়াইলিদের ইসলাম গ্রহণ
৩৪. ০৩৭. ওহীর বিরতি
৩৫. ০৩৮. প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী
৩৬. ০৩৯. প্রকাশ্য দাওয়াত
৩৭. ০৪০. কুরআন সম্পর্কে ওয়ালীদ ইবনে মুগীরার মন্তব্য
৩৮. ০৪১. রাসূলুল্লাহর (সা) ওপও উৎপীড়নের বিবরণ
৩৯. ০৪২. হামযার ইসলাম গ্রহণ
৪০. ০৪৩. রাসূল্লাহর (সা) আন্দেলন প্রতিরোধে উতবার ফন্দি
৪১. ০৪৪. কুরাইশ নেতাদের সাথে রাসূলুল্লাহর (সা) কথোপকথন
৪২. ০৪৫. আবু জাহলের আচরণ
৪৩. ০৪৬. নাদার ইবনে হারেনের বিবরণ
৪৪. ০৪৭. দুর্বল মুসলমানদের ওপর মুশরিকদের অত্যাচার
৪৫. ০৪৮. আবিসিনিয়ায় মুসলমানদের প্রথম হিজরাত
৪৬. ০৪৯. মুহাজিরদের ফিরিয়ে আনার জন্য আবিসিনিয়ায় কুরাইশদের দূত প্রেরণ
৪৭. ০৫০. উমার ইবনুল খাত্তাবের ইসলাম গ্রহণ
৪৮. ০৫১. চুক্তিনামার বিবরণ
৪৯. ০৫২. রাসূলুল্লাহর (সা) ওপর কুরাইশদের নির্যাতন
৫০. ০৫৩. আবিসিনিয়া থেকে মক্কার লোকদের ইসলাম গ্রহণের খবর শুনে মুহাজিরদের প্রত্যাবর্তন
৫১. ০৫৪. চুক্তি বাতির হওয়ার কাহিনী
৫২. ০৫৫. ইরাশ গোত্রের এক ব্যক্তির আবু জাহলের নিকট উট বিক্রির ঘটনা
৫৩. ০৫৬. ইসরা বা রাত্রীকালীন সফর
৫৪. ০৫৭. মিরাজের ঘটনা
৫৫. ০৫৮. আবু তালিব ও খাদীজার ইন্তিকাল
৫৬. ০৫৯. সাহায্য লাভের আশায় বনু সাকীফ গোত্রের শরণাপন্ন হওয়া
৫৭. ০৬০. নাসীবীনের জ্বীনদের ঘটনা
৫৮. ০৬১. ইসলামের দাওয়াত পৌঁছতে রাসূলুল্লাহ (সা) সব গোত্রের কাছে হাজির হলেন
৫৯. ০৬২. মদীনায় ইসলাম বিস্তারের সূচনা
৬০. ০৬৩. মদীনায় প্রথম বাইয়াত
৬১. ০৬৪. আকাবার দ্বিতীয় বাইয়াত
৬২. ০৬৫. আকাবার শেষ বাইয়াত ও তার শর্তাবলী
৬৩. ০৬৬. সশস্ত্র যুদ্ধের নির্দেশ লাভ
৬৪. ০৬৭. মুসলমানদের মদীনায় হিজরাত করার অনুমতি লাভ
৬৫. ০৬৮. মদীনায় হিজরাতকারী মুসলমানদের বিবরণ
৬৬. ০৬৯. রাসূলুল্লাহর (সা) হিজরাত
৬৭. ০৭০. কুবায় উপস্থিতি
৬৮. ০৭১. মদীনায় উপস্থিতি
৬৯. ০৭২. মদীনাতে ভাষণ দান ও চুক্তি সম্পাদন
৭০. ০৭৩. আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে ভ্রাতৃ সম্পর্ক স্থাপন
৭১. ০৭৪. আযানের সূচনা
৭২. ০৭৫. কতিপয় সাহাবীর রোগাক্রান্ত হওয়ার বিবরণ
৭৩. ০৭৬. হিজরাতের তারিখ
৭৪. ০৭৭. প্রথম যুদ্ধাভিযান
৭৫. ০৭৮. উবাইদা ইবনে হারিসের নেতৃত্বে অভিযান । রাসূলুল্লাহ (সা) নিজে এই যুদ্ধের ঝান্ডা বেঁধেছিলেন
৭৬. ০৭৯. সমুদ্র উপকূলেন দিকে হামযার নেতৃত্বে অভিযান
৭৭. ০৮০. বুয়াত অভিযান
৭৮. ০৮১. উশাইরা অভিযান
৭৯. ০৮২. সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাসের সেতৃত্বে সামরিক অভিযান
৮০. ০৮৩. সাফওয়ান অভিযান : প্রথম বদর অভিযান
৮১. ০৮৪. আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশের নেতৃত্বে সামরিক অভিযান
৮২. ০৮৫. কিবলা পরিবর্তন
৮৩. ০৮৬. বদরের যুদ্ধ
৮৪. ০৮৭. বনু সুলাইম অভিযান
৮৫. ০৮৮. সাওয়ীক অভিযান
৮৬. ০৮৯. যূ-আমার অভিযান
৮৭. ০৯০. বাহরানের ফুরু অভিযান
৮৮. ০৯১. বনু কাইনুকার যুদ্ধ
৮৯. ০৯২. যায়িদ ইবনে হারিসার কারাদা অভিযান
৯০. ০৯৩. উহুদ যুদ্ধ
৯১. ০৯৪. হিজরী তৃতীয় সন : রাজী সফর
৯২. ০৯৫. বীরে মাউনার ঘটনা (৪র্থ হিজরী)
৯৩. ০৯৬. বনু নাবীরের বহিষ্কার (চতুর্থ হিজরী)
৯৪. ০৯৭. যাতুর রিকা অভিযান (৪র্থ হিজরী)
৯৫. ০৯৮. দ্বিতীয় বদর অভিযান (৪র্থ হিজরী সন)
৯৬. ০৯৯. দুমাতুল জান্দাল অভিযান (৫ম হিজরী: রবিউল আউয়াল)
৯৭. ১০০. খন্দক যুদ্ধ (৫ম হিজরী, শাওয়াল)
৯৮. ১০১. বনু কুরাইযা অভিযান (৫ম হিজরী)
৯৯. ১০২. যী কারাদ অভিযান
১০০. ১০৩. বনু মুসতালিক অভিযান
১০১. ১০৪. ৬ষ্ঠ হিজরী সনে বনু মুসতালিক অভিযানকালে অপবাদের ঘটনা
১০২. ১০৫. হুদাইবিয়ার ঘটনা
১০৩. ১০৬. বাইয়াতু রিদওয়ান
১০৪. ১০৭. শান্তিচুক্তি বা হুদাইবিয়ার সন্ধি
১০৫. ১০৮. খাইবার বিজয়: ৭ম হিজরীর মুহাররাম মাস
১০৬. ১০৯. জাফর ইবনে আবু তালিবের আবিসিনিয়া থেকে প্রত্যাবর্তন
১০৭. ১১০. উমরাতুল কাযাঃ ৭ম হিজরী সনঃ জিলকাদ মাস
১০৮. ১১১. মুতার যুদ্ধঃ ৮ম হিজরী সনঃ জামাদিউল উলা
১০৯. ১১২. মক্কা বিজয়ঃ ৮ম হিজরী, রমাযান মাস
১১০. ১১৩. হুনাইনের যুদ্ধ: ৮ম হিজরী
১১১. ১১৪. তায়েফ যুদ্ধ: ৮ম হিজরী সন
১১২. ১১৫. হাওয়াযিনের জমিজমা, যুদ্ধবন্দী, তাদের কিছুসংখ্যক লোককে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য উপঢৌকন দান এবং কিচু লোককে পুরস্কার প্রদানের বিবরণ
১১৩. ১১৬. জি’রানা থেকে রাসূলুল্লাহর (সা) উমরা পালন
১১৪. ১১৭. তায়েফ ত্যাগের পর কা’ব ইবনে যুহাইরের ইসলাম গ্রহণ
১১৫. ১১৮. তাবুক যুদ্ধ
১১৬. ১১৯. দুমার শাসনকর্তা উকায়দের-এর নিকট রাসূলুল্লাহ (সা) কর্তৃক খালিদ ইবনে ওয়ালীদকে প্রেরণ
১১৭. ১২০. নবম হিজরীর রমযান মাসে বনু সাকীফ গোত্রের প্রতিনিধি দলের আগমন ও ইসলাম গ্রহণ
১১৮. ১২১. নবম হিজরী সালকে ‘প্রতিনিধিদল আগমনের বছর’ হিসেবে আখ্যায়িতকরণ। সূরা আন নাছর এই বছরই নাযিল হয়
১১৯. ১২২. বনু তামীমের প্রতিনিধিদলের আগমন ও সূরা হুজুরাত নাযিল
১২০. ১২৩. বনু আমেরের প্রতিনিধি আমের ইবনে তুফাইল ও আরবাদ ইবনে কায়েসের ঘটনা
১২১. ১২৪. জারুদের নেতৃত্বে বনু আবদুল কায়েসের প্রতিনিধিদলের আগমন
১২২. ১২৫. মুসাইলিমা কাযযাবসহ বনু হানীফা প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৩. ১২৬. হাতিম তাঈ-এর আদীর ঘটনা
১২৪. ১২৭. ফারওয়া ইবনে মুসাইক মুরাদীর আগমন
১২৫. ১২৮. আমর ইবনে মা’দী ইয়াকরাবের নেতৃত্বে বনু যুবাইদের প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৬. ১২৯. আশয়াস ইবনে কায়েসের নেতৃত্বে কিন্দার প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৭. ১৩০. সুরাদ ইবনে আবদুল্লাহ আযদীর আগমন
১২৮. ১৩১. হিমইয়ার বংশীয় রাজাদের দূতের আগমন
১২৯. ১৩২. মুয়ায ইবনে জাবালকে ইয়ামানে পাঠানোর সময় রাসূলুল্লাহর (সা) উপদেশ
১৩০. ১৩৩. অভিযান পরিচালনাকালে খালিদ ইবনে ওয়ালীদের (রা) হাতে বনু হারিস গোত্রের ইসলাম গ্রহণ
১৩১. ১৩৪. মিথ্যা নবুওয়াতের দাবীদার মুসইলিমা ও আসওয়াদ আনসীর বিবরণ
১৩২. ১৩৫. রাসূলুল্লাহর (সা) নিযুক্ত কর্মচারী ও আমীরগণের যাকাত আদায়ের অভিযান
১৩৩. ১৩৬. রাসূলুল্লাহর (সা) নিকট মুসাইলিমার চিঠি এবং রাসূলুল্লাহর পক্ষ থেকে তার জবাব
১৩৪. ১৩৭. বিদায় হজ্জ
১৩৫. ১৩৮. উসামা ইবনে যায়িদকে ফিলিস্তীনে প্রেরণ
১৩৬. ১৩৯. রাজা বাদশাহদের কাছে রাসূলুল্লাহর (সা) দূত প্রেরণ
১৩৭. ১৪০. সর্বশেষ অভিযান
১৩৮. ১৪১. রাসূলুল্লাহর (সা) পীড়ার সূচনা
১৩৯. ১৪২. রাসূলুল্লাহর (সা) স্ত্রীগণ বা উম্মুহাতুল মুমিনীনের বিবরণ
১৪০. ১৪৩. রাসূলুল্লাহর (সা) রোগ সংক্রান্ত অবশিষ্ট বিবরণ
১৪১. ১৪৪. নামাযের জামায়াতে আবু বাক্রের (রা) ইমামতি
১৪২. ১৪৫. বনু সায়েদা গোত্রের চত্বরে
১৪৩. ১৪৬. আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) ও ইমার (রা)- এর বর্ণনা
১৪৪. ১৪৭. রাসূলুল্লাহর (সা) কাফন-দাফন

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন