০৬৪. আকাবার দ্বিতীয় বাইয়াত

কিছুদিন পর মুস’য়াব ইবনে উমাইর মক্কা ফিরলেন। মদীনার কিছু কিছু নওমুসলিম তাঁদের স্বগোত্রীয় পৌত্তলিকদের সাথে হজ্জ উপলক্ষে মক্কা গেলেন। আইয়ামে তাশরীকের মাঝামাঝি সময়ে তাঁরা সবাই আকাবায় সমবেত হওয়ার জন্য [৩৮. দশই জিলহজ্জের পরবর্তী তিন দিনকে আইয়ামে তাশরিক বলা হয়। তাশরিক অর্থ চামড়া রৌদ্রে শুকানো। আরবরা এই সময় কুরবানীর পশুর চামড়া শুকাতো।] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কথা দিলেন। বলাবাহুল্য আল্লাহর রাসূলের মর্যাদা বৃদ্ধি ও বিজয় দান, ইসলাম মুসলমানদের শক্তিম ব্রদ্ধি এবং অংশীবাদ ও অংশীবাদীদের পতন ঘটাতে আল্লাহর ইপ্সিত মুহূর্তটি সমাগত হলে এই দ্বিতীয় বাইয়াত সম্পন্ন হ।েপ।া।

কা’ব ইবনে মালিক বলেন: আমরা আমাদের গোত্রের মুশরিক হাজীদের সাথে মক্ক অভিমুখে রওনা হলাম। আমরা ততক্ষণে নামায পঢ়তে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি এবং ইসলামের বিধি –বিধান শিখে নিয়েছি। আমাদের প্রবীণ মুরুব্বী ও গোত্রপতি বারা ইবনে মা’রূরও আমাদের সহযাত্রী। আমরা সফরে রওনা হয়ে মদীনা থেকে বেরুতেই রারা বললো, “শোনো, আমি একটা মত স্থির করেছি, জানি না তোমরা তাতে একমত হবে কিনা।

আমরা বললোম, “সেটা কি?” তিনি বললেন, “আমি ঠিক করেছি, কা’বাকে পেছনে রেখে নামায পড়বো না বরং কা’বার দিকে মুখ করেই নামায পড়বো। ” আমরা তাকে বললাম, “আমরা তো জানি, আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিরিয়া অর্থাৎ বাইতুল মাকদাসের দিকে ফিরেই সামায পড়ে থাকেন। আমরা তাঁর বিরোধিতা করতে পারি না।” তিনি বললেন, “তা হলে আমি কা’বা ও বাইতুল

মাকদাস-উভয়ের দিকে মুখ করে নামায পড়বো।” আমরা বললাম, “আমরা কিন্তু তা করবো না।” তাই নামাযের সময় হলে আমরা বাইতুল মাকসাদের দিকে মুখ করে নামায পড়তাম আর তিনি পড়তেন কা’বার দিকে মুখ করে। এভাবে আমরা মক্কায় এসে পৌঁছলাম। তিনি জিদ ধরে এসেছেন তার জন্য আমরা তাকে তিরস্কার করতে করতে এসেছি। কিন্তু তিনি কোনক্রমেই তার জিদ বর্জন করেননি। মক্কায় পৌঁছার পর তিনি আমাকে বললেন, “ভাতিজা, আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে নিয়ে চলো। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করবো, সারাপথ আমি যেভাবে নামায পড়েছি, তা ঠিক হলো কিনা” তোমাদের কে যেভাবে আমার বিরুদ্ধে কাজ করতে দেখলাম, তাতে আমার মনে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে।”

কা’ব ইবনে মালিক বলেন, “অতঃপর আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সন্ধানে বেরুলাম। আমরা তাঁকে চিনতাম না এবং ইতিপূর্বে কথনো তাঁকে দেখিনি। একজন মক্কাবাসীর সাথে দেখা হলে আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, “ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোথায় আছেন?” সে জিজ্ঞেস করলো, “তোমরা কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে চিন?” আমরা বললাম, ‘না।’ সে বললো, “তাঁর চাচা আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবকে কি চেন?” আমরা বললাম, ‘হ্যাঁ।’ আমরা আব্বাসকে আগে থেকেই চিনতাম। তিনি আমাদের এলাকা দিয়ে ব্যবসা উপলক্ষ্যে যাতায়াত করতেন। মক্কাবাসী লোকটি বললো, “মসজিদে হারামে প্রবেশ করে যাঁকে আব্বাসের সাথে বসা দেখবে তিনিই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।” আমরা মসজিদে হারামে প্রবেশ করে দেখলাম, আব্বাস বসে আছেন আর তার সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও বসে আছেন। আমরা সালাম দিয়ে তাঁর কাছে গিয়ে বসলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্বাসকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি এই দুই ব্যক্তিকে চেন?” তিনি বললেন, “হ্যাঁ, আমি তাদেরকে চিনি। ইনি গোত্রপতি বারা ইবনে মা’রূর। আর ইনি কা’ব ইবনে মালিক।” একথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার সম্পর্কে যা বললেন তা আমি ভুলতে পারব না। তিনি বললেন,তিনি বললেন, “কবি কা’ব ইবনে মালিক না কি?” আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন বারা বললেন, “হে আল্লাহর নবী, আমি এই সফরে বের হওার পূর্বেই আল্লাহ আমাকে ইসলাম গ্রহনের তাওফীক দান করেছেন। এরপর আমি কা’বার দিকে মুখ করে নামায পড়তে লাগলাম। কিন্তু আমার সঙ্গীরা আমার মত অগ্রাহ্য করেছে। এজন্য আমি সংশয়াপন্ন হয়ে পড়েছি। হে আল্লাহর রাসূল, আপনি কোনটা সঠিক মনে করেন?” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তুমি একটা কিবলার দিকে নামায পড়তে। ধৈর্য ধরে সেই কিবলার অনুসরণ করলে ভালো হতো।”

এরপর তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কিবলাকে মেনে নিলেন এবং আমাদের সাথে বাইতুল মাকদাসের দিকে মুখ করে নামায পড়তে লাগলেন। পরে আমরা হজ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। আইয়ামে তাশরিকের মাঝামাঝি সময়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আকাবায় সাক্ষাতের ওয়াদা করলাম। যেদিন হজ্জের অনুষ্ঠানাদি শেষ হলো তার পরবর্তী রাতটাই ছিল আমাদের রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মিলিত হবার প্রতিশ্রুত রাত। তখন আমাদের সাথে ছিলেন আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে হারাম আবু জাবির। তিনি ছিলেন অন্যতম সম্মানিত সমাজপতি। তাঁকেও আমরা সাথে নিলাম। কিন্তু আমাদের সাথে কারা আছে আর আমরা কি করতে যাচ্ছি তা আমাদের সহযাত্রী গোত্রীয় মুশরিকদেরকে ঘুণাক্ষরেও জানতে দেইনি। আমরা আবু জাবিরকে বললাম, “হে আবু জাবির, আপনি আমাদের একজন সম্মানিত সরদার। আপনি যে জীবন-পদ্ধতি অনুসরণ করছেন, তা আমাদের দৃষ্টিতে অত্যন্ত গর্বিত ব্যাপার। আপনি পরকালে দোযখের আগুনে নিক্ষিপ্ত হন তা আমরা চাই না।” অতঃপর তাঁকে ইসলামের দাওয়াত দিলাম এবং তাঁকে জানালাম যে, আজ আকাবাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আমাদের মিলিত হবার কথা রয়েছে। আবু জাবির তৎক্ষণাৎ ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং আমাদের সাথে আকাবার বাইয়াতে অংশ গ্রহণ করলেন। এরপর তিনি একজন আহ্বায়কে পরিণত হন।

সেই রাতে আমরা আমাদের কওমের লোকদের সাথে কাফিলার মধ্যেই ঘুমালাম। রাত এক-তৃতীয়াংশ অতিক্রান্ত হওয়ার পর আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেয় ওয়াদা মুতাবিক আকাবার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। নিশাচর পাখীর মত অতি সন্তর্পণে ও অতি গোপনে বেরিয়ে পড়লাম। পথ চলতে চলতে আমরা আকাবার নিকটবর্তী গিরিবর্তে গিয়ে সমবেত হলাম। আমরা সর্বমোট তিহাত্তর জন লোক জমায়েত হলাম। আমাদের সাথে দুইজন মহিলাও ছিলেন। তাঁরা হলেন মুসাইব বিনতে কা’ব ও আসমা বিনতে আমর ইবনে আদী। [৩৯. ইবনে ইসহাক বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন সময় মহিলাদের হাত স্পর্শ করতেন না। তিনি শুধু মৌখিক অঙ্গীকার নিতেন। তাঁরা অঙ্গীকার করলে তিনি বলতেন, ‘তোমরা যেতে পার। তোমাদের বাইয়াত সম্পন্ন হয়েছে।’ ]

কা’ব ইবনে মালিক বলেন, আমরা গিরিবর্তে সমবেত হয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতীক্ষায় রইলাম। অবশেষে তিনি তাঁর চাচা আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবকে সাথে নিয়ে সেখানে পৌঁছেলন। তখনও আব্বাস ইবলাম গ্রহণ করেননি। তিনি কেবল ভ্রাতস্পুত্রের ঐ গুরুত্বপূর কাজটি প্রত্যক্স করা ও তাঁর নিরপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হবার জন্যই এসেছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বৈঠকে বসলেন, তখন সর্বপ্রথম আব্বাস আমাদের সাথে কথা বললেন। তিনি বললেন, “হে খাজরাজ গোত্রের জনম-ণী মুহাম্মাদ আমাদের মধ্যে কিরূপ মর্যাদার অধিকারী,তা আপনাদের নিশ্চয়ই জানা আছে। তাঁকে তাঁর সম্প্রদায়ের লোকদের জুলুম নির্যাতন থেকে আমরা এ যাবত রক্ষ করেছি। তাঁর সম্প্রদাযের মধ্যে তিনি একটা বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ফলে তাঁর সম্প্রদায় ও জন্মভূমিতে তিনি সম্মান ও নিরাপত্তার অধিকারী। তা সত্ত্বেও আপনাদের প্রতি তাঁর অদম্য আগ্রহ এবং আপনাদের মধ্যেই তিনি থাকতে কৃতসংকল্প। এখন আপনারা ভেবে দেখুন, তাঁকে আপনারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন তা রক্ষা করতে পারবেন কিনা এবং তাঁর শত্রুদের হাত থেকে তাঁকে নিরাপদে রাখতে পারবেন কিনা। তা যদি পারেন তা হলে আপনাদের দায়দায়িত্ব ভালো করে বুঝে নিন। আর যি মনে করেন যে, ভবিষ্যতে আপনারা তাঁকে তাঁর শত্রুদের হাতে সমর্পণ করবেন এবং সাথে করে নিয়ে যাওয়ার পরও তাঁকে লাঞ্ছনার মুখে ঠেলে দেবেন, তা হলে এখনই সেই দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। কেননা বর্তমানে তিনি তাঁর স্বজাতির কাছে ও আপর মাতৃভূমিতে সম্মানে ও নিরাপদে আছেন।” আব্বাসের এ কথাগুলো শোনার পর আমরা বললাম, “আপনার কথা আমরা শুনলাম। হে আল্লাহর রাসূল, এখন আপনি বলুন এবং যেমন খুশী অঙ্গীকার নিন!”

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে এবার তাঁর কথা বললেন। প্রথমে তিনি কুরআন তিলাওয়াত করলেন, তারপর সবাইকে ইসলামের দাওয়াত দিলেন এবং ইসলামের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করলেন। অতঃপর বললেন, “আমি তোমাদের কাছ থেকে এই অঙ্গীকার চাই যে, তোমরা তোমাদের স্ত্রী ও সন্তানদেরকে যেভাকে বিপদ থেকে রক্ষা করে থাকো, আমাকেও সেভাবে রক্ষা করবে।”

তৎক্ষণাৎ বারা ইবনে মা’রূর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাত ধরে বললেন, “হ্যাঁ। যে মহান সত্তা আপনাকে নবী করে সত্যদীনসহ পাঠিয়েছে তাঁর শপথ করে বলছে, আমরা স্বজন ও স্ত্রী-সন্তানদের যেভাবে বিপদ থেকে রক্ষা করে থাকি, আপনাকেও সেভাবে রক্ষা করবো। হে আল্লাহর রাসূল, আমরা আপনার আনুগত্য করার শপথ গ্রহণ করলাম। আল্লাহর শপথ, আমরা য্দ্ধু ও অস্ত্রের মধ্যেই লালিত পালিত। আমরা পুরুষানুক্রমে যোদ্ধা জাতি।”

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বারার কথা শেষ না হতেই আবুল হাইসাম ইবনে তাইহান বললেন, “হে আল্লাহর রাসূল, আমাদের সাথে ইহুদীদের মৈত্রী সম্পর্কে রয়েছে এবং আমরা তা ছিন্ন করতে যাচ্ছি। এসব করার পর আল্লাহ আপনাকে বিজয় দান করলে আপনি কি আমভদের ত্যাগ করে নিজ গোত্রে ফিরে যাবেন?” এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকি হেসে বললেন, “আমি বরং তোমাদের জীবন মরণ ও সুখ দুঃখের চিরসঙ্গী হবো, তোমাদের রক্তপাতকে আমি নিজের রক্তপাত বলে গণ্য করবো। আমি চিরকাল তোমাদের থাকবো এবং তোমরা চিরকাল আমার থাকবে। তোমরা যার সাথে যুদ্ধ করবে, আমিও তার সাথে যুদ্ধ করবো।”

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছিলেন, “তোমাদের মধ্য থেকে বারো জন নকীব বা আহ্বায়ক নির্বাচন করে আমার কাছে পাঠাও যাতে তারা নিজ নিজ গোত্রের লোকদের এই অঙ্গীকারে শামিল করে নিতে পারে।” তারা তখন বারো জন আহ্বায়ক নির্বাচন করে। তন্মধ্যে নয় জন ছিল খাজরাজ গোত্রের এবং তিন জন আওস গোত্রের।[৪০. খাজরাজের নয় জন আহ্বায়ক হলেন: আসাদ ইবনে যুরারা, সা’দ ইবনে রাওয়াহা, রাফে’ ইবনে মালিক, বারা ইবনে মা’রূর, আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে হারাম, উবাদা বনে ছামিত, সা’দ ইবনে উবাদা ও মুনযির ইবনে আমর ইবনে খুরাইস। আর আওস গোত্রের তিন জন ছিলেন: উসাইদ ইবনে হুদাইর, সা’দা ইবনে খাইসামা ও রিফায়া ইবনে মুনযির। ইবনে হিশাম বলেন, বিজ্ঞ ঐতিহাসিকগণ রিফায়ার স্থলে আবুল হাইসাম ইবনে তাইহানকে আহ্বায়ক বলে উল্লেখ করেন।]

যিনি সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাতে হাত রেখে বাইয়াত করেন তিনি বারা ইবনে মা’রূর। পরে তিনি নিজ গোত্রকে ঐ বাইয়াতে শামিল করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আমাদের এই বাইয়াত অনুষ্ঠান সমাপ্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শয়তান আকাবার পর্বত শীর্ষ থেকে এমন জোরে চিৎকার করে উঠলো যে, ও রকম বিকট চিৎকার আমি আর কখনো শুনিনি। সে চিৎকার করে বলছিলো, “হে মিনাবাসী, মুজাম্মাম অর্থাৎ নিন্দিত ব্যক্তির সাথে ধর্মদ্রোহীরা যে যোগসাজশ করলো তা কি তোমরা লক্ষ্য করলে না? [৪১.মুজাম্মাম অর্থ ধিকৃত বা নিন্দিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম মুহাম্মাদের (প্রশংসিত) বিপরীত শব্দ। মুশরিকরা তাঁকে এই নামে ডাকতো। আর যারা ইসলাম গ্রহণ করতো তাদেরকে বলতো সাবি অর্থাৎ সাবি অর্থাৎ ধর্মত্যাগী বা বে-দীন।] ওরা তোমাদের সাথে যুদ্ধের পাঁয়তারা করছে। ” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “এ হলো আকাবার শয়তান আযেব ইবনে উযাইবের চিৎকার।”

অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তোমরা নিজ নিজ কাফিলায় বলে যাও।”

‘আব্বাস এবন উবাদা ইবনে নাদালা বললেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ, যে আল্লাহ আপনাকে সত্য বিধানসহ পাঠিয়েছেন তাঁর শপথ করে বলছি, আপনি চাইলে আমরা আগামীকালই মিনায় অবস্থানকারীদের ওপর তরবারী নিয়ে হামলা চালাবো।”

এরপর আমরা গিয়ে শয্যাগ্রহণ করলাম এবং সকাল পর্যন্ত ঘুমালাম। সকাল হতেই কুরাইশদের বিরাট একটি দল আমাদের ঘিরে ধরলো।। তারা বললো, “হে খাজরাজ গোত্রের লোকগণ, আমরা জানতে পেরেছি যে, তোমরা মুহাম্মাদকে আমাদের মধ্য থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছো এবং আমাদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য তার সাথে ষড়যন্ত্র¿ করছো। সত্যি বলতে কি, আরবের আর কোন গোত্রের সাথে যুদ্ধের চেয়ে তোমদের সাথে যুদ্ধ আমাদের কছে সবচেয়ে অপছন্দীয়।” এ কথা শুনে আমাদের যেসব মুশরিক সেখানে ছিল, তারা আল্লাহর শপথ করে করতে লাগলো, “এ ধরনের কোন ষড়যন্ত্রই এখানে হয়নি এবং আমরা তেমন কিছু ঘটেছে বলে জানি না।”

বস্তুত:তারা সত্য কথাই বলছিল। তাঁরা প্রকৃতপক্ষে কিছুই জানতো না। তারা যখন আল্লাহর শপথ করে কুরাইশদের এসব বলে আশ্বস্ত করছিল তখন আমরা একে অপরের মুখের দিকে তাকাচ্ছিলাম। এরপর মিনা থেকে লোকজন চলে গেলে কুরাইশরা ব্যাপারটা আরো গভীরভাবে অনুসন্ধান চালালো। শেষ পর্যন্ত তারা জানতে পারলো যে, ঘটনাটা সত্য। অতঃপর আওস ও খাজরাজ গোত্রের লোকদের সন্ধানে তারা চারদিকে ছুটাছুটি শুরু করলো। মক্কার নিকটবর্তী আযাখের নামক স্থাকে তারা সা’দ ইবনে উবাদা, মুনযির ইবনে আমররে সাক্ষাত পেলো। মুনযিরকে তারা ধরতে পারলো না, কেবল সা’দ ধরা পড়লেন। সা’দের চুল ছিল বেশ লম্বা। তারা তাঁকে ধরে উটের রশি দিয়ে দুই হাত ঘাড়ের সাথে এঁটে বাঁধলো। তারপর তাঁকে পিটাতে পিটাতে চুল ধরে টানতে টানতে মক্কায় নিয়ে গেল।

এ সম্পর্কে সা’দ নিজে যে বর্ণনা দিয়েছেন তা নিম্নরূপ, আমি তাদের হাতে ধৃত ও বন্দী অবস্থায় ছিলাম। এমতাবস্থায কুরাইশদের একটি দল আমার কাছে আসলো। তাদের ভেতরে খুবই উজ্জ্বল ফর্সা, সুন্দর ছিপছিপে লম্বা ও মিষ্টি চেহারার অধিকারী এক সুদর্শন পুরুষকে দেখলাম। আমি মনে মনে বললাম: এই বিপুল জনতার মধ্যে কারো কাছে যদি ভালো ব্যবহার প্রত্যাশা করা যেতে পারে তা হলে এই ব্যক্তির কাছেই। কিন্তু এ লোকটা আমার কাছে এসে প্রথমেই আমাকে প্রচ- এক থাপ্পড় কষে দিলো। তখন আমি মনে মনে বললাম, এই লোকটার কাছ থেকেই যখন এমন ব্যবহার পেলাম, তখন আর কারো কাছ থেকেই ভালো ব্যবহার আশা করা যায় না। এভাবে তারা আমাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে বেড়াচ্ছিল। আমি তখন সম্পূর্ণ অসহায়। সহসা জনতার মধ্য হতে এক ব্যক্তি আমার প্রতি দয়াপরবশ হয়ে বললো, “আহ্! কি দুঃখজনক দশা তোমার। আচ্ছা কুরাইশদের ভেতরে কি তোমার জানাশোনা বা লেনদেন আছে এমন একটা লোকও নেই?” আমি বললাম, “হ্যাঁ, আছে। আমি এক সময় যুবাইর ইবনে মুতয়িম ইবনে আদীর বাণিজ্য প্রতিনিধিদের আশ্রয় দিতাম এবং আমাদের অঞ্চলে কেউ তাদের ওপর যুলুম করতে চাইলে তাদেরকে রক্ষা করতাম। তা ছাড়া হারেস ইবনে হারব ইবনে উমাইয়ার বাণিজ্য প্রতিনিধিদেরকেও সাহায্য করতাম। ”লোকটি বললো, ‘তা হলে ঐ দু’জনের সাম উল্লেখ করে খুব উচ্চস্বরে ধ্বনি দাও। তাদের সাথে তোমার যে সম্পর্ক রয়েছে তার উল্লেখ কর।” আমি সঙ্গে সঙ্গে ঐ দু’জরের নামে ধ্বনি দিলাম। আর ঐ লোকটি তৎক্ষণাৎ যুাবাইর ও হারেসের সন্ধানে ছুটে গেলো এবং কা’বার সন্নিকটে মসজিদুল হারামের মধ্যে তাদেরকে পেলো।

অতঃপর সে তাদেরকে বললে, “মক্কার অদূরের সমভূমিতে খাজরারের একটা লোককে এই মুহূর্ত ভীষণভাবে পিটানো হচ্ছে। সো মার খাচ্ছে আর তোমরদের দু’জনের নামোল্লেখ করে বলছে যে, তার সাথে নাকি তোমাদের জানাশোনা আছে।”যুবাইর ও হারেস বললো, “লোকটি কে?” সে বললো, ‘সা’দ ইবনে উবাদা।” তারা বললো, “ঠিকই বলেছে। সে আমাদের ব্যবসায়ীদেরকে তাদের এলাকায় গেলে আশ্রয় দিতো এবং যুলুম থেকে রক্ষা করতো।” অতঃপর উভয়ে এসে সা’দকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করলো। তারপর সা’দ চলে গেলেন।

সকল অধ্যায়

১. ০০৪. সীরাতে ইবনে ইসহাক
২. ০০৫. সীরাতে ইবনে হিশাম
৩. ০০৬. সীরাতে ইবনে হিশামের মর্যাদা
৪. ০০৭. সীরাতে ইবনে হিশামের বক্ষ্যমাণ সংক্ষিপত রূপ
৫. ০০৮. মুহাম্মদ (সা) থেকে আদম (আ) পর্যন্ত উর্ধতন বংশ পরম্পরা
৬. ০০৯. ইসমাঈর (আ) এর অধস্তন পুরুষদের বংশ পরম্পরা
৭. ০১০. রাবিয়া ইবনে নসরের স্বপ্ন
৮. ০১১. আবু কারব হাসসান ইবনে তুব্বান আস’আদ কর্তৃক ইয়ামতান রাজ্য অধিকার এবং ইয়াসরিব আক্রমণ
৯. ০১২. হাবশীদের দখলে ইয়ামান
১০. ০১৩. আরিয়াত ও আবরাহা দ্বন্দ্ব
১১. ০১৪. আসহাবুল ফীলের ঘটনা
১২. ০১৫. নিযার ইবনে মা’আদের বংশধর
১৩. ০১৬. আবদুল মুত্তালিব বিন হাশিমের সন্তান-সন্ততি
১৪. ০১৭. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিতামাতা
১৫. ০১৮. যমযাম কূপ খনন ও সে বিষয়ে সৃষ্ট মতবিরোধ
১৬. ০১৯. আবদুল মুত্তালিব কর্তৃক তার পুত্রকে কুরবানীর মানত
১৭. ০২০. মহানবীর (সা) আমিনার গর্ভে থাকাকালের ঘটনাবলী
১৮. ০২১. রাসূলুল্লাহর (সা) জন্ম
১৯. ০২২. হালীমার কথা
২০. ০২৩. বক্ষ বিদারণের ঘটনা
২১. ০২৪. দাদার অভিভাবকত্বে
২২. ০২৫. চাচা আবু তালিবের অভিভাবকত্বে
২৩. ০২৬. পাদ্রী বাহীরার ঘটনা
২৪. ০২৭. ফিজারের যুদ্ধ
২৫. ০২৮. খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহার সাথে বিয়ে
২৬. ০২৯. ওয়ারাকা বিন নাওফেলের ভাষ্য
২৭. ০৩০. পবিত্র কাবার পুনর্নির্মাণ
২৮. ০৩১. আরব গণক, ইহুদী পুরেহিত ও খৃস্টান ধর্মযাজকদের ভবিষ্যদ্বাণী
২৯. ০৩২. রাসূলুল্লাহর (সা) দৈহিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য
৩০. ০৩৩. ইনজীলে রাসূল্লাহর বিবরণ
৩১. ০৩৪. নবুওয়াত লাভ
৩২. ০৩৫. কুরআন নাযিলের সূচনা
৩৩. ০৩৬. খাদীজা বিনতে খুয়াইলিদের ইসলাম গ্রহণ
৩৪. ০৩৭. ওহীর বিরতি
৩৫. ০৩৮. প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী
৩৬. ০৩৯. প্রকাশ্য দাওয়াত
৩৭. ০৪০. কুরআন সম্পর্কে ওয়ালীদ ইবনে মুগীরার মন্তব্য
৩৮. ০৪১. রাসূলুল্লাহর (সা) ওপও উৎপীড়নের বিবরণ
৩৯. ০৪২. হামযার ইসলাম গ্রহণ
৪০. ০৪৩. রাসূল্লাহর (সা) আন্দেলন প্রতিরোধে উতবার ফন্দি
৪১. ০৪৪. কুরাইশ নেতাদের সাথে রাসূলুল্লাহর (সা) কথোপকথন
৪২. ০৪৫. আবু জাহলের আচরণ
৪৩. ০৪৬. নাদার ইবনে হারেনের বিবরণ
৪৪. ০৪৭. দুর্বল মুসলমানদের ওপর মুশরিকদের অত্যাচার
৪৫. ০৪৮. আবিসিনিয়ায় মুসলমানদের প্রথম হিজরাত
৪৬. ০৪৯. মুহাজিরদের ফিরিয়ে আনার জন্য আবিসিনিয়ায় কুরাইশদের দূত প্রেরণ
৪৭. ০৫০. উমার ইবনুল খাত্তাবের ইসলাম গ্রহণ
৪৮. ০৫১. চুক্তিনামার বিবরণ
৪৯. ০৫২. রাসূলুল্লাহর (সা) ওপর কুরাইশদের নির্যাতন
৫০. ০৫৩. আবিসিনিয়া থেকে মক্কার লোকদের ইসলাম গ্রহণের খবর শুনে মুহাজিরদের প্রত্যাবর্তন
৫১. ০৫৪. চুক্তি বাতির হওয়ার কাহিনী
৫২. ০৫৫. ইরাশ গোত্রের এক ব্যক্তির আবু জাহলের নিকট উট বিক্রির ঘটনা
৫৩. ০৫৬. ইসরা বা রাত্রীকালীন সফর
৫৪. ০৫৭. মিরাজের ঘটনা
৫৫. ০৫৮. আবু তালিব ও খাদীজার ইন্তিকাল
৫৬. ০৫৯. সাহায্য লাভের আশায় বনু সাকীফ গোত্রের শরণাপন্ন হওয়া
৫৭. ০৬০. নাসীবীনের জ্বীনদের ঘটনা
৫৮. ০৬১. ইসলামের দাওয়াত পৌঁছতে রাসূলুল্লাহ (সা) সব গোত্রের কাছে হাজির হলেন
৫৯. ০৬২. মদীনায় ইসলাম বিস্তারের সূচনা
৬০. ০৬৩. মদীনায় প্রথম বাইয়াত
৬১. ০৬৪. আকাবার দ্বিতীয় বাইয়াত
৬২. ০৬৫. আকাবার শেষ বাইয়াত ও তার শর্তাবলী
৬৩. ০৬৬. সশস্ত্র যুদ্ধের নির্দেশ লাভ
৬৪. ০৬৭. মুসলমানদের মদীনায় হিজরাত করার অনুমতি লাভ
৬৫. ০৬৮. মদীনায় হিজরাতকারী মুসলমানদের বিবরণ
৬৬. ০৬৯. রাসূলুল্লাহর (সা) হিজরাত
৬৭. ০৭০. কুবায় উপস্থিতি
৬৮. ০৭১. মদীনায় উপস্থিতি
৬৯. ০৭২. মদীনাতে ভাষণ দান ও চুক্তি সম্পাদন
৭০. ০৭৩. আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে ভ্রাতৃ সম্পর্ক স্থাপন
৭১. ০৭৪. আযানের সূচনা
৭২. ০৭৫. কতিপয় সাহাবীর রোগাক্রান্ত হওয়ার বিবরণ
৭৩. ০৭৬. হিজরাতের তারিখ
৭৪. ০৭৭. প্রথম যুদ্ধাভিযান
৭৫. ০৭৮. উবাইদা ইবনে হারিসের নেতৃত্বে অভিযান । রাসূলুল্লাহ (সা) নিজে এই যুদ্ধের ঝান্ডা বেঁধেছিলেন
৭৬. ০৭৯. সমুদ্র উপকূলেন দিকে হামযার নেতৃত্বে অভিযান
৭৭. ০৮০. বুয়াত অভিযান
৭৮. ০৮১. উশাইরা অভিযান
৭৯. ০৮২. সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাসের সেতৃত্বে সামরিক অভিযান
৮০. ০৮৩. সাফওয়ান অভিযান : প্রথম বদর অভিযান
৮১. ০৮৪. আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশের নেতৃত্বে সামরিক অভিযান
৮২. ০৮৫. কিবলা পরিবর্তন
৮৩. ০৮৬. বদরের যুদ্ধ
৮৪. ০৮৭. বনু সুলাইম অভিযান
৮৫. ০৮৮. সাওয়ীক অভিযান
৮৬. ০৮৯. যূ-আমার অভিযান
৮৭. ০৯০. বাহরানের ফুরু অভিযান
৮৮. ০৯১. বনু কাইনুকার যুদ্ধ
৮৯. ০৯২. যায়িদ ইবনে হারিসার কারাদা অভিযান
৯০. ০৯৩. উহুদ যুদ্ধ
৯১. ০৯৪. হিজরী তৃতীয় সন : রাজী সফর
৯২. ০৯৫. বীরে মাউনার ঘটনা (৪র্থ হিজরী)
৯৩. ০৯৬. বনু নাবীরের বহিষ্কার (চতুর্থ হিজরী)
৯৪. ০৯৭. যাতুর রিকা অভিযান (৪র্থ হিজরী)
৯৫. ০৯৮. দ্বিতীয় বদর অভিযান (৪র্থ হিজরী সন)
৯৬. ০৯৯. দুমাতুল জান্দাল অভিযান (৫ম হিজরী: রবিউল আউয়াল)
৯৭. ১০০. খন্দক যুদ্ধ (৫ম হিজরী, শাওয়াল)
৯৮. ১০১. বনু কুরাইযা অভিযান (৫ম হিজরী)
৯৯. ১০২. যী কারাদ অভিযান
১০০. ১০৩. বনু মুসতালিক অভিযান
১০১. ১০৪. ৬ষ্ঠ হিজরী সনে বনু মুসতালিক অভিযানকালে অপবাদের ঘটনা
১০২. ১০৫. হুদাইবিয়ার ঘটনা
১০৩. ১০৬. বাইয়াতু রিদওয়ান
১০৪. ১০৭. শান্তিচুক্তি বা হুদাইবিয়ার সন্ধি
১০৫. ১০৮. খাইবার বিজয়: ৭ম হিজরীর মুহাররাম মাস
১০৬. ১০৯. জাফর ইবনে আবু তালিবের আবিসিনিয়া থেকে প্রত্যাবর্তন
১০৭. ১১০. উমরাতুল কাযাঃ ৭ম হিজরী সনঃ জিলকাদ মাস
১০৮. ১১১. মুতার যুদ্ধঃ ৮ম হিজরী সনঃ জামাদিউল উলা
১০৯. ১১২. মক্কা বিজয়ঃ ৮ম হিজরী, রমাযান মাস
১১০. ১১৩. হুনাইনের যুদ্ধ: ৮ম হিজরী
১১১. ১১৪. তায়েফ যুদ্ধ: ৮ম হিজরী সন
১১২. ১১৫. হাওয়াযিনের জমিজমা, যুদ্ধবন্দী, তাদের কিছুসংখ্যক লোককে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য উপঢৌকন দান এবং কিচু লোককে পুরস্কার প্রদানের বিবরণ
১১৩. ১১৬. জি’রানা থেকে রাসূলুল্লাহর (সা) উমরা পালন
১১৪. ১১৭. তায়েফ ত্যাগের পর কা’ব ইবনে যুহাইরের ইসলাম গ্রহণ
১১৫. ১১৮. তাবুক যুদ্ধ
১১৬. ১১৯. দুমার শাসনকর্তা উকায়দের-এর নিকট রাসূলুল্লাহ (সা) কর্তৃক খালিদ ইবনে ওয়ালীদকে প্রেরণ
১১৭. ১২০. নবম হিজরীর রমযান মাসে বনু সাকীফ গোত্রের প্রতিনিধি দলের আগমন ও ইসলাম গ্রহণ
১১৮. ১২১. নবম হিজরী সালকে ‘প্রতিনিধিদল আগমনের বছর’ হিসেবে আখ্যায়িতকরণ। সূরা আন নাছর এই বছরই নাযিল হয়
১১৯. ১২২. বনু তামীমের প্রতিনিধিদলের আগমন ও সূরা হুজুরাত নাযিল
১২০. ১২৩. বনু আমেরের প্রতিনিধি আমের ইবনে তুফাইল ও আরবাদ ইবনে কায়েসের ঘটনা
১২১. ১২৪. জারুদের নেতৃত্বে বনু আবদুল কায়েসের প্রতিনিধিদলের আগমন
১২২. ১২৫. মুসাইলিমা কাযযাবসহ বনু হানীফা প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৩. ১২৬. হাতিম তাঈ-এর আদীর ঘটনা
১২৪. ১২৭. ফারওয়া ইবনে মুসাইক মুরাদীর আগমন
১২৫. ১২৮. আমর ইবনে মা’দী ইয়াকরাবের নেতৃত্বে বনু যুবাইদের প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৬. ১২৯. আশয়াস ইবনে কায়েসের নেতৃত্বে কিন্দার প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৭. ১৩০. সুরাদ ইবনে আবদুল্লাহ আযদীর আগমন
১২৮. ১৩১. হিমইয়ার বংশীয় রাজাদের দূতের আগমন
১২৯. ১৩২. মুয়ায ইবনে জাবালকে ইয়ামানে পাঠানোর সময় রাসূলুল্লাহর (সা) উপদেশ
১৩০. ১৩৩. অভিযান পরিচালনাকালে খালিদ ইবনে ওয়ালীদের (রা) হাতে বনু হারিস গোত্রের ইসলাম গ্রহণ
১৩১. ১৩৪. মিথ্যা নবুওয়াতের দাবীদার মুসইলিমা ও আসওয়াদ আনসীর বিবরণ
১৩২. ১৩৫. রাসূলুল্লাহর (সা) নিযুক্ত কর্মচারী ও আমীরগণের যাকাত আদায়ের অভিযান
১৩৩. ১৩৬. রাসূলুল্লাহর (সা) নিকট মুসাইলিমার চিঠি এবং রাসূলুল্লাহর পক্ষ থেকে তার জবাব
১৩৪. ১৩৭. বিদায় হজ্জ
১৩৫. ১৩৮. উসামা ইবনে যায়িদকে ফিলিস্তীনে প্রেরণ
১৩৬. ১৩৯. রাজা বাদশাহদের কাছে রাসূলুল্লাহর (সা) দূত প্রেরণ
১৩৭. ১৪০. সর্বশেষ অভিযান
১৩৮. ১৪১. রাসূলুল্লাহর (সা) পীড়ার সূচনা
১৩৯. ১৪২. রাসূলুল্লাহর (সা) স্ত্রীগণ বা উম্মুহাতুল মুমিনীনের বিবরণ
১৪০. ১৪৩. রাসূলুল্লাহর (সা) রোগ সংক্রান্ত অবশিষ্ট বিবরণ
১৪১. ১৪৪. নামাযের জামায়াতে আবু বাক্রের (রা) ইমামতি
১৪২. ১৪৫. বনু সায়েদা গোত্রের চত্বরে
১৪৩. ১৪৬. আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) ও ইমার (রা)- এর বর্ণনা
১৪৪. ১৪৭. রাসূলুল্লাহর (সা) কাফন-দাফন

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন