১১৩. হুনাইনের যুদ্ধ: ৮ম হিজরী

হাওয়াবিন গোত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মক্কা বিজয়ের কথা শুনে মালিক ইবনে আওফের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ হলো। হাওয়াবিনের সাথে বনু সাকীফ, বনু নাসর, বনু জুশাম ও বনু স’দের সকলে ও বনু হিলালের স্বাল্পসংখ্যক লোকও সংঘবদ্ধ হলো। বনু সা’দ ও বনু হিলালের এই মুষ্টিমেয় লোক ছাড়া বনু কায়েসের আর কেউ এই সেনা সমাবেশে অংশগ্রহন করেনি।

বনু জাশাম গোত্রে দুরাইদ ইবনে সাম্মা একজন প্রবীণ লোক ছিল। সে যুদ্ধ সম্পর্কে অভিজ্ঞ ও পারদর্শী ছিল। যুদ্ধের পরামর্শ দেয়া ছাড়া তার আর কোন কিছু করার ছিল না। বনু সাকীফের দু’জন সরদার ছিল। তাদের মিত্রদের মধ্যে ছিল কারেব ইবনে আসওয়অদ আর বনু মালিকের ছিল যুলখিমার সুবাই ইবনে হারেস এবং তার ভাই আহমার ইবনে হারেস। তবে মালিক ইবনে আওফ নাসারী ছিল গোটা বাহিনীর সর্বোচ্চ অধিনায়ক। মালিক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিলে তার বাহিনীর লোকদের প্র্রত্যেকে নিজ নিজ স্ত্রী সন্তান ও অস্থাবর সম্পদ সঙ্গে নিয়ে যেতে বাধ্য করলো। আমতাস উপত্যকায় পৌছলে তার কাছে দুরাইদ ইবনে সাম্মা সহ বিপুল জনতা সমবেত হলো। দুরাইদ আওতাস ইপত্যকায় পৌছে তার লোকজনকে জিজ্ঞেস করলো, “এটা কোন জায় গা?” সবাই বললো, ‘আওতাস’। সে বললো, ‘হ্যা, এটা যুদ্ধের উপযুক্ত জায়গা বটে। বেশী উচুও না প্রস্তরময়ও না, আবার খুব বেশী নরমও না। তবে উট, ছাগল ও গাধার ডাক, আর শিশুদের কান্নাকাটি শুনতে পাচ্ছি কেন?” সবাই বললো, “মালিক ইবনে আওফ তার বাহিনীর লোকদের সাথে তাদের ধনসম্পদ ও স্ত্রী-পুত্র নিয়ে আসতে বাধ্য করেছে।” সে বললো, “মালিক কোথায়?” মালিককে ডেকে আনা হলো। দুরাইদ বললো, “ওহে মালিক, তুমি নিজ গোত্রের পরিচালক ও নেতা। আজকের দিনের পরেও কত দিন আসবে তার শেষ নেই। এখানে উট, গাধা ও ছাগলের ডাক ও শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি কেন?” মালিক বললো, “আমি লোকজনের সাথে তাদের পরিবার পরিজন ও সহায়-সম্পদও নিয়ে এসেছি।” দুরাইদ বললো, ‘কেন?’ মালিক বললো, “প্রত্যেকের পেছনে তার পরিবার পরিজন ও সহায় সম্পদ থাকবে এবং তাদেরকে রক্ষা করারা জন্য সে প্রাণপণে লড়াই করবে। রণাঙ্গন ছেড়ে কেউ পালবে না।” দুরাইদ মালিকের যুক্তিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে বললো, “আসলে তুমি দেখছি মেষ পালকের মতই (বুদ্ধি রাখ, সেনানায়কের মত নয়)। যে পরাজিত হয়, তার কি আর কোন কিছুতে লাভ হয়? যুদ্ধে যদি পরাজয় ঘটে তাহলে নিজের বিপর্যয়ের সাথে সাথে নিজের পরিবার পরিজন এবং ধন সম্পদও গোল্লায় যাবে।”

দুরাইদ পুনরায় বললো, “বনু কাব ও বনও কিলাবের খবর কি?” মালিক বললো, “তাদের কেউ যুদ্ধে আসেনি।” দুরাইদ বললো, ‘তাহলে তো আসল লড়াকু বীর সিপাহীরাই আসেনি। আজ যদি সত্যিকার বিজয় ও পৌরব লাভের সুযোগ থাকতো তাহলে বনু কাব ও কিলাব অবশ্যই আসতো। আমার মনে হয়, বনু কাব ও কিলাব যেটা করেছে, তোমাদের তা অনুসরণ করা উচিত ছিল। আচ্ছা তোমাদের সাথে উল্লেখযোগ্য যোদ্ধাাদের কে কে এসেছে?” লোকেরা বললো “আমর ইবনে আমের ও আওফ ইবনে আমের।” দুরাইদ বললো, “ওরা দুর্বল যোদ্ধা, ওদের দিয়ে কোন লাভও হবে না, ক্ষতিও হবে না। হে মালিক শোন, হাওয়াযিন গোত্রকে শত্রুর মুখে নিক্ষেপ করে তুমি কোন ভাল কাজ করনি। তাদেরকে তাদের নিজ নিজ নিরাপদ স্থানে পাঠিয়ে দাও। তারপর এই মুসলমানদের সাথে তোমার অশ্বারোহী বাহিনী নিয়ে লাড়াই কর। তুমি যদি জয়লাভ কর তাহলে পরে এস তারা তোমার সাথে যোগ দেবে। আর যদি হেরে যাও তাহলে অন্ততঃ তোমার লোকদের পরিবার পরিজন ও ধনসম্পদ রক্ষা পাবে।” মালিক বললো, “না এটা আমি করবো না। তুমি নিজে যেমন বুড়ো হয়েছ, তোমার বুদ্ধিও তেমনি জরা ব্যধিগ্রস্ত হয়েছে। হে হাওয়াযিন জনতা, তোমারা হয় আমার আনুগত্য করবে নতুবা আমি এই তরবারী নিয়ে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে একাই লড়ে যাবো।” আসলে দুরাইদের কথা মত কাজ করে তার খ্যাতি বা তার বুদ্ধিমত্তার সুনাম হোক এটা মালিকের মনঃপুত ছিল না। সমবেত যোদ্ধারা মালিকের আনুগত্য করার অঙ্গীকার করলো। দুরাইদ বললো, “আমি আজকের এ যুদ্ধে অংশ নিয়ে বিপদের ঝুঁকি নিতে রাজী নই।” সে কবিতার ছন্দে বললোঃ

“হায়! আমি যদি এ যুদ্ধের সময় তরুণ থাকতাম

তাহলে হরেক রকমের রণকৌশল দেখাতাম। বিরাটকায়

পাহাড়ী ছাগল সদৃশ লম্বা চুলওয়ালা বাহিনী পরিচালনা করতাম।”

অতঃপর মালিক বললো, “মুসলিম বাহিনীকে দেখা মাত্রই তরবারী খাপমুক্ত করে একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়বে।”

হাওয়াযিনের এই রণপ্রস্তুতির কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদুল্লাহ ইবনে আবু হাদরাদ আসলামীকে কৌশলে তাদের ভেতরে ঢুকে তথ্য সংগ্রহ করে আনতে পাঠালেন। আবদুল্লাহ তাদের ভেতরে ঢুকে তথ্য সংগ্রহ করে এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানালেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাওয়াযিনের মুকাবিলা করার সিদ্ধান্ত নিলেন। এই সময় তাঁকে জানানো হলো যে, সাফওয়ান ইবনে উমাইয়ার কাছে অনেক অস্ত্র ও যুদ্ধ সরঞ্জাম রয়েছে। সাফওয়ান তখনও মুশরিক। তার কাছে লোক পাঠিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অস্ত্র ও যুদ্ধ সরঞ্জামাদি ধার চাইলেন শত্রর সাথে লড়াই করার জন্য। সাফওয়অন জিজ্ঞেস করলো, “মুহাম্মাদ, তুমি এগুলো কেড়ে নিচ্ছো নাকি?” রাসূরূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “না, ধার নিচ্ছি এবং গ্যারান্টি দিচ্ছি যে,, এগুলো তোমাকে ফেরত দেয়া হবে।” সে বললো, “আমার আপত্তি নেই।” অতঃপর সে একশট বর্ম ও তার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক অস্ত্র ধার দিল। কথিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ঐসব অস্ত্র পরিবহণের ব্যবস্থা করারও অনুরোধ জানান এবং সে যথাযথভাবে তারও ব্যবস্থা করে।

পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কাবাসীদের মধ্য থেকে দুই হাজার এবং মক্কা বিজয়ের সময় তাঁর সাথে মদীনা থেকে আগত দশ হাজার সাহাবীসহ মোট বারো হাজার সৈন্য নিয়ে অভিযানে বের হলেন। এই সময় অবশিষ্ট মক্কাবাসীর জন্য তিনি আত্তাব ইবনে উসাইদকে মক্কার শাসক নিযুক্ত করেন এবং নিজে সসৈন্যে হাওয়াযিনের মুকাবিলায় অগ্রসর হন।

হারেস ইবনে মালিক থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে হুনাইন অভিযানে বের হলাম। আমরা সবেমাত্র জাহিলিয়াত থেকে মুক্ত হয়েছি এবং জাহিলিয়াতের রসম রেওাজকে তখনো পুরোপুরি ছাড়তে পারিনি। যাতু আনওয়াত নামক একটা বিরাটকায় সবুজ পতেজ গাছ ছিল। কুরাইশ কাফিরগণ এবং অন্যান্য আরবরা প্রতিবছর ঐ গাছের কাছে আসতো, গাছের ডালে অস্ত্রশস্ত্র ঝুলিয়ে রেখে একদিন তার ছায়ায় অবস্থান করতো এবং সেখানে জন্তু জবাই করতো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে হুনাইেিন যাওয়অর পথে একটা বড় গাছ দেখে আমরা বললাম, “ইয়া রাসূলুল্লাহ! কাফিরদের যেমন যাতু আনওয়াত আছে, তেমনি আমাদেরও একটা যাতু আনওয়াত গ্রহণ করুন।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “আল্লাহু আকবর, মূসার (আ) জাতি তাঁকে যেমন বলেছিল, কাফিরদের যেমন দেবদেবী আছে আমাদের জন্যও তেমনি একজন দেবতা গ্রহণ করুন,-তোমাদের এ উক্তিটাও তেমনি। এগুলো পুরনো প্রথা। তোমরা প্রচীন প্রথাকে আঁকড়ে ধরে থাকতে চাচ্ছো।”

জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) বলেন, আমরা হুনাইন প্রান্তরের কাছাকাছি এলাম,, এবং তিহামার একটি প্রশস্ত পার্বত্য উপত্যকার মধ্য দিয়ে নেমে চলতে লাগলাম। তখনো ভোরের আলো দেখা দেয়নি। শত্রু সেনারা আমাদের আগেই ঐ উপত্যকায় আশ্রয় নিয়েছিল এবং সংকীর্ন দুর্গম গিরিগুহায় ও তার আশেপাশে লুকিয়ে আমাদের জন্য ওত পেতে ছিল। তারা পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষমান ছিল। আমরা সম্পূন্য নিঃশংকচিত্তে গিরিপথ দিয়ে নেমে চলেছি- এই সময় হঠাৎ তারা একযোগে আমাদের ওপর প্রচন্ড হামলা চালালো। হামলার আকস্মিকতায় হতবুদ্ধি হয়ে আমাদের লোকেরা যে যেদিকে পারলো উঠিপড়ি করে ছুটে পালাতে লাগলো এবং একজন আর একজনের প্রতি কোন ভ্রুক্ষেপই করলো না। কারো দিকে কারো বিন্দুমাত্র লক্ষ্য করার যেন ফুরসত নেই।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডান দিকে সরে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলেন, “হে সৈনিকরা! তোমরা কোথায় যাচ্ছো? আমার কাছে এসো। আমি আল্লাহর রাসূল। আমি আবদুল্লাহর পুত্র মুহাম্মাদ। কিসের জন্য উটের ওপর উপ হুমড়ি খেয়ে পড়েছে?” কিন্তু স্বল্পসংখ্যক মুহাজির, আনসার ও পরিবারভুক্ত লোক ছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাছে কেউ থাকলো না। সবাই চলে গেল।

ইবনে ইসহাক বলেনঃ মুসলিম বাহিনীর লোকেরা নণেভঙ্গ দিয়ে পালিয়ে গেলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়াসাল্লামের কাছে অবস্থানকারী মক্কার কিছু পাষন্ড প্রকৃতির লোক পরাজয় অবশ্যম্ভাবী মনে করে নানা রকম কথাবার্তা চলতে লাগলো। আবু সুফিয়ান ইবনে হারব বললো, “সমুদ্রের উপকূল পর্যন্ত গেলেও এদের পরাজয় শেষ হবে না।” লটারী, ভাগ্য গণণা ও জুয়া খেলার কাজে ব্যবহার্য তীর তখনো আবু সুফিয়ানের কাছেই ছিল।

জাবালা ইবনে হাম্বল চিৎকার করে বললো, আজ মুহাম্মাদের যাদুর ক্ষমতা শেষ হলো।” শাইবা উসমান বললো, “ঐ দিন আমি স্থির করলাম যে, মুহাম্মাদকে হত্যা করে কুরাইশদের সমস্ত খুনের বদলা নেব। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি যেই রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটবর্তী হয়েছি, অমনি কি একটা ভয়ংকর বন্তু আমার সামনে এসে আড় হয়ে দাঁড়ালো, তা আমার মনকে আছন্ন করে ফেললো এবং তাকে হত্যা করতে পারলাম না। আমি উপলদ্ধি করতে পারলাম যে, তাঁকে আঘাত করা আমার সাধ্যাতীত।”

মক্কাবাসীদের একজন আমাকে জানিয়েছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুনাইনের পথে মক্কা ত্যাপ করার পরপরই আল্লাহর সৈনিকদের বিপুল সংখ্যা দেখে তিনি বলেছিলন, “আজকে আর যাই হোক, সংখ্যা স্বল্পতার কারণে আমরা পরজায় বরণ করবো না।”

আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব (রা) বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে তাঁর সাদা খচ্চরটির লাগাম ধরে বলেছিলাম। আমি খুব মোটাসোটা ও বুলন্দ কণ্ঠের অধিকারী ছিলাম। ভীতসন্ত্রত হয়ে মুসলিম সৈনিকদের উর্ধশ্বাসে ছুটতে দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “হে লোকেরা, আমি তোমাদেরকে কারো প্রতি ফিরে তাকাতে দেখছি না!” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, “আব্বাস! চিৎকার করে এভাবে যাক দাওঃ হে আনসারগণ! ওহে বাবুল বৃক্ষের নীচে অংগীকারদাতাগণ!”

আমি আদেশ অনুসারে ডাকতে লাগলে প্রত্যেকে লাব্বায়েক বলে সাড়া দিতে লাগলো। এই সময় অশ্বারোহী সাহাবীদের কেউ কেউ ছুটন্ত ও পলায়নরত উটের গতি ফিরাতে ব্যর্থ হয়ে বর্ম দিয়ে তার ষ্কন্ধে আঘাত করেন। তাতেও ফিরতে না পেরে অস্ত্র িেনয়ে উট থেকে নেমে আসেন এবং উচকে ছেড়ে দেন। অতঃপর যেদিক থেকে আওয়াজ আসছে সেদিকে এগিয়ে যান এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিকট পৌছে যান। এভাবে একশ জনের মত সাহাবী জমায়েত হয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন এবং তুমুল যুদ্ধে লিপ্ত হলেন।

প্রথমে “হে আনসারগণ” বলে ডাকা হতে থাকে। পরে শুধু “হে খাযরাজ” বলে ডাকা শুরু হয়। কেননা খাবরাজ রণাঙ্গনে দৃঢ়চিত্ত বলে আরবদের কাছে সুপরিচিত ছিল। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাযরাজের বহিনী নিয়ে এগুতে থাকেন। তারপর রণাঙ্গনের দিকে তাকিয়ে দেখেন, প্রচন্ড সংঘর্ষ চলছে। তা দেখে বললেন,“এবার রণাঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।”

জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা) বলেনঃ

হাওয়াবিন গোত্রীয় সেনাপতি উটের ওপর সওয়ার হয়ে লাড়াই করছিল। এই সময় আলী ইবনে আবু তালিব (রা) ও জনৈক আনসার তার দিকে ধেয়ে গেলেন এবং তার উটের পায়ে আঘাত করলেন। উট পিছনে ভর করে বসে পড়লো। তখন আনসারী সেনাপতিকে আঘাত হাঁটুর নীচ থেকে তার পা কেটে ফেললেন। সে তৎক্ষনাৎ নীচে পড়ে গেল। এই সময় যুদ্ধ অভংকর রুপ ধারণ করলো এবং এর গতি সম্পূর্ণ পাল্টে গেল। মুসলমানগণ পরাজয়ের অবস্থা থেকে বিজয়ের দিকে এগিয়ে গেলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে সারিবদ্ধ যুদ্ধবন্দী না আসা পর্যন্ত তা শেষ হলো না।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু সুফিয়ারন ইবনে হারেস ইবনে আবদুল মুত্তলিবের দিকে তাকালেন। তিনি সেদিন অথ্যন্ত দৃঢ়তার সাথে যুদ্ধ করেন। তিনি ছিলেন নিষ্ঠাবান মুসলিম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লঅম দেখলেন, তিনি তার খচ্চরের লাগাম ধরে রেখেছেন। তা দেখে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কে?” তিনি জবাব দিলেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমি আপনার ভাই।”

আবদুল্লাহ ইবনে আবু বাক্র বর্ণনা করেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রান্তরের এক দিকে উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহানকে তার স্বামী আবু তালহার সাথে দেখাতে পেলেন। তিনি কোমর পেট একটা চাদর দিয়ে জড়িয়ে রেখেছেন। পুত্র আবদুল্লাহ ইবনে আবু তালহা তখন তাঁর গর্তে। আবু তালহা উট তাঁর সাথে রয়েছে এবং উট ছুটে যাবে এই ভয়ে তার নাকের চুলের রশি শক্ত করে ধরে রেখেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “উম্মে সুলাইম নাকি?” তিনি বললেন, “হ্যা”, হে আল্লাহর রাসুল, আমার পিতামাতা আপনার জন্য কুরবান হোক, আপনি যেভাবে হামলাকারী শত্রুদেরকে হত্যা করছেন সেভাবে যারা আপনাকে ছেড়ে পালিয়ে যায় তাদেরকেও হত্যা করুন। কেননা তারা হত্যার যোগ্য।”

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,, “হে উম্মে সুলাইম। এ জন্য কি আল্লাহই যথেষ্ট নন?” তখন উম্মে সুলাইামের কাছে একটা খনজর ছিল। আবু তালহা বললেন, “হে উম্মে সুলাইম, খনজর কি জন্য।” উম্মে সুলাইম বললেন, “এটা রেখেছি এ জন্য যে, কোন মুশরিক আমার দিকে এগিয়ে আসতে দুঃসাহস দেখাে ল এ দ্বারা তার পেট ফেড়ে ফেলবো।” আবু তালহা বললেন, “ইয়া রাসূলুল্লাহ, চোখের ব্যধি নিয়েও উম্মে সুলাইম কি বলছে শুনেছেন?”

আবু কাতাদাহ (রা) বর্ণনা করেনঃ হুনাইন যুদ্ধের দিন আমি দেখলাম একজন মুশরিক ও একজন মুসলমান পরস্পরের সাথে যুঝছে। এই সময় আর একজন মুশরিক ঐ মুশরিককে সাহায়ের জন্য এগিয়ে এল। তখন আমি তার পওর আক্রমণ চালিয়ে তরবারীর আঘাতে তার হাত কেটে ফেললাম। আর হাত দিয়ে সে আমাকে জাপ্টে ধরলো। সে আমাকে কিছুতেই ছাড়ছিলো না বরং মেরে ফেলার উপক্রম করেছিল। কিছুক্ষনের মধ্যেই সে অধিক রক্তপাতে দুর্বল হয়ে না পড়লে আমাকে সে মেরেই ফেলতো। সে পড়ে গেলে আমি তাকে হত্যা করলাম। অতঃপর চারদিকে যে যুদ্ধ চলছিল সেজন্য তার দিকে আমি আর ভ্রুক্ষেপ করতে পারিনি। এই সময় জনৈক মক্কাবাসী এস তার জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিল। যুদ্ধ থেমে যাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করবে তার যাবতীয় জিনিস হত্যাকারী পাবে।” আমি বললাম, “ইয় রাসূলাল্লাহ, আমি একজনকে হত্যা করেছি। তার অনেক জিনিসপত্র ছিল। পরে যুদ্ধের প্রচন্ডতায় আমি আর তার দিকে লক্ষ্য করতে পারিনি। তার জিনিষপত্র কে নিয়েছে জানি না।” মক্কাবাসী একজন বললো, “ইয়া রাসূলাল্লাহ, আবু কাতাদার কথা সত্য। ঐ নিহত ব্যিক্তির যাবতীয় জিনিসপত্র আমার কাছে রয়েছে। এগুলোর ব্যাপারে ওকে আমার সাথে আপোষ করিয়ে দিন।” আবু বাক্র সিদ্দিক (রা) বললেন, “আল্লাহর কসম এ জিনিসপত্রের ব্যাপারে আপোষ বলবে না। তুমি আল্লাহর এক সিংহের কাছে মতলব স্দি করতে এসেছ- যে আল্লাহর দঈনের জন্য লাগাই করে? আর তুমি কিনা তার যুদ্ধলদ্ধ জিনিসে ভাগ বসাতে চাও?” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “আবু বাক্র ঠিকই বলেছে। তুমি আবু কাতাদাকে জিনিসগুলো ফিরিয়ে দাও।”

আবু কাতাদাহ বলেনঃ অতৎপর আমি ঐ সব জিনিসপত্র সেই মক্কাবাসী লোকটির কাছ থেকে আদায় করে বিক্রি করলাম। আর তার মূল্য দিয়ে ছোট একটা খেজুরের বাগান নিলাম। এটাই ছিল আমার জীবনে আমার মালিকানাভুক্ত প্রথম সম্পদ।

ইবনে ইসহাক বলেন: হাওয়াযিনরা পরাজিত হওয়ার পর হিসাব নিয়ে দেখতে পেল যে, সাকীফের বনু মালিক গোত্রেরই সবাদিক প্রানহানি ঘটেছে। এ গোত্রের সত্তর জন লোক যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে। নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল উসমান ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে রাবীয়া ইবনে হারেস ইবনে হাবীব। এ গোত্রের সেনাপতি ছিল যুলখিমাল। সে নিতহ হলে উসমান ইবনে আবদুল্লাহ সেনাপতি হয় এবং সেও নিহত এয়। এ যুদ্ধে মুশরিকদের শোচনীয় পরাজয় ঘটার পর তারা মালিক ইবনে আওফ সহ তায়েফ চলে যায়। এদের কিছু সৈন্য আওতাসে শিবির স্থাপন করে অবস্থান করতে থাকে। আর কিছু সংখ্যক নাখলার দিকে চলে যায়। নাখলার দিকে যারা গিয়েছিল তাদের মধ্যে সাকীফের বনু গিয়ারা উপগোত্র ছাড়া আর কেউ ছিল না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সৈন্যরা তাদের পিছু ধাওয়া করলো না। মুশরিক বাহিনীর যে অংশটি আওতাসের দিকে যায় তাদের পিছু ধাওয়া করার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু আমের আশয়ারীকে পাঠান। সেখানে তিনি কিচুয পরাজিত সৈন্যকে যুদ্ধের চ্যালেঞ্জ দেন।

একটি তীরে বিদ্ধ হয়ে আবু আমের আশয়ারী শাহাদত বরণ করেন। অতঃপর তাঁর চাচাতো ভাই আবু মূসা আশয়ারী সেনাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি যুদ্ধ পরিচালনা করে বিজয় লাভ করেন এবং মুশরিকরা পরাজিত হয়।

পরাজয়ের মুখে মালিক ইবনে আওফ স্বগোত্রীয় একদল অশ্বারোহী নিয়ে দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী এক উপত্যকায় অবস্থান করেন। তাদেরকে তিনি বলেন, “দুর্বল লোকেরা চলে যাক। অতঃপর শক্তিশালী লোকেরা আসবে। ততক্ষণ তোমরা এখানে অপেক্ষা কর।” দুর্বল পরাজিত সৈন্যরা চলে যাওয়া পর্যন্ত সে সেখানে অবস্থান করলো।

খালিদ ইবনে ওয়ালীদ এক মহিলাকে হত্যা করেন। তার লাশের কাছে উপস্থিত হয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিপুল লোক সমাগম দেখতে পান। তিনি জিজ্ঞেস করেন, “এখানে কি হয়েছে?” সকলে বললো, “খালিদ ইবনে ওয়ালীদ এক মহিলাকে হত্যা করেছেন।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর এক সহচরকে বললেন, “খালিদের সাথে গিয়ে দেখা কর এবং বল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে শিশু, মহিলা, অথবা দিন মজুর ও দাস দাসীকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন।”

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেদিন বলেছিলেন, “বনু সা’দ ইবনে বকরের বিজাদকে যদি পাও তবে তাকে পালাতে দিও না।” সে একটা বড় অপরাধ করেছিল। মুসলমানগণ তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন এবং তাকে সপরিবারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুধবোন শায়মা বিনতে হারেসকেও নিয়ে আসেন। পথিমধ্যে তার সাথে কিছু রূঢ় ব্যবহার করা হয়। তখন সে বললো, “ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমি আপনার দুধবোন।” তিনি বললেন, “তার প্রমাণ কি?” সে বললো, “যখন আমি আপনাকে আমার উরুর ওপর তুলেছিলাম তখন আপনি আমার পিঠে কামড় দিয়েছিলেন। সেই চি‎হ্ন টি এখনো আছে।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কামড়ের চি‎হ্নটি দেখে চিনতে পারলেন। তিনি নিজের চাদর বিছিয়ে তাকে সসম্মানে বসতে দিলেন এবং বললেন, তুমি যদি আমার কাছে থাকা পছন্দ কর তাহলে সসম্মানে থাকতে পার। আর যদি পছন্দ কর যে, তোমাকে কিছু উপঢৌকন দিই এবং তুমি নিজ গোত্রে ফিরে যাবে তাহলে তাও করতে পার।” সে বললো, “আমাকে যা দিতে চান দিয়ে আমার গোত্রের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দিন।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনেক কিছু দিয়ে তার কওমের কাছে পাঠিয়ে দিলেন।

বনু সাদের বর্ণনা অনুসারে তিনি তাকে মাকস্থল নামক একটি দাস এবং তার একটি দাসী উপঢৌকন দিয়ে বিদায় দিলেন। শায়মা পরে ঐ দাসদাসীকে পরস্পরে সাথে বিয়ে দেন এবং তাদের বংশধারা বহুদিন পযন্ত তাদের মধ্যে চলতে থাকে।

ইবনে হিশাম বলেনঃ

আল্লাহ তায়ালা হুনাইন যুদ্ধ সম্পর্কে এ আয়াত কয়টি নাযিল করেন,

“আল্লাহ তোমাদেরকে অনেকগুলো রণাঙ্গনে সাহায্য করেছেন। হুনাইনের যুদ্ধের দিনেও করেছেন-যখন তোমরা নিজ সংখ্যাধিক্যের কারণে গর্বিত হয়েছিলে। কিন্তু সে সাংখ্যাধিক্যে তোমাদের কোন লাভ হয়নি। সেদিন বিশাল পৃথিবী তোমাদের জন্য সংকীর্ণ হয়ে পড়েছিল এবং তোমরা পালিয়েছিলে। তারপর আল্লাহ শান্তি ও স্বস্তি আনেন তাঁর রাসূল ও মু’মিনদের প্রতি। আর তার এমন বাহিনী পাঠান যাদেরকে তোমরা দেখতে পাওনি। আল্লাহ কাফিরদেরকে এভাবে শাস্তি দেন। বস্তুত: কাফিরদের সমুচিত শাস্তি এটাই।” (আত্ তাওবাহ)

ইবনে ইসহাক বলেনঃ অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে হুনাইনের সমস্ত যুদ্ধবন্দী ও যুদ্ধলব্ধ অর্থ এনে রাখা হয়। মাসউদ ইবনে আমও গিফারীকে গণীমত তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশে গনীমত ও যুদ্ধবন্দীদেরকে জি’রানা নামক স্থানে রাখা হয়।

সকল অধ্যায়

১. ০০৪. সীরাতে ইবনে ইসহাক
২. ০০৫. সীরাতে ইবনে হিশাম
৩. ০০৬. সীরাতে ইবনে হিশামের মর্যাদা
৪. ০০৭. সীরাতে ইবনে হিশামের বক্ষ্যমাণ সংক্ষিপত রূপ
৫. ০০৮. মুহাম্মদ (সা) থেকে আদম (আ) পর্যন্ত উর্ধতন বংশ পরম্পরা
৬. ০০৯. ইসমাঈর (আ) এর অধস্তন পুরুষদের বংশ পরম্পরা
৭. ০১০. রাবিয়া ইবনে নসরের স্বপ্ন
৮. ০১১. আবু কারব হাসসান ইবনে তুব্বান আস’আদ কর্তৃক ইয়ামতান রাজ্য অধিকার এবং ইয়াসরিব আক্রমণ
৯. ০১২. হাবশীদের দখলে ইয়ামান
১০. ০১৩. আরিয়াত ও আবরাহা দ্বন্দ্ব
১১. ০১৪. আসহাবুল ফীলের ঘটনা
১২. ০১৫. নিযার ইবনে মা’আদের বংশধর
১৩. ০১৬. আবদুল মুত্তালিব বিন হাশিমের সন্তান-সন্ততি
১৪. ০১৭. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিতামাতা
১৫. ০১৮. যমযাম কূপ খনন ও সে বিষয়ে সৃষ্ট মতবিরোধ
১৬. ০১৯. আবদুল মুত্তালিব কর্তৃক তার পুত্রকে কুরবানীর মানত
১৭. ০২০. মহানবীর (সা) আমিনার গর্ভে থাকাকালের ঘটনাবলী
১৮. ০২১. রাসূলুল্লাহর (সা) জন্ম
১৯. ০২২. হালীমার কথা
২০. ০২৩. বক্ষ বিদারণের ঘটনা
২১. ০২৪. দাদার অভিভাবকত্বে
২২. ০২৫. চাচা আবু তালিবের অভিভাবকত্বে
২৩. ০২৬. পাদ্রী বাহীরার ঘটনা
২৪. ০২৭. ফিজারের যুদ্ধ
২৫. ০২৮. খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহার সাথে বিয়ে
২৬. ০২৯. ওয়ারাকা বিন নাওফেলের ভাষ্য
২৭. ০৩০. পবিত্র কাবার পুনর্নির্মাণ
২৮. ০৩১. আরব গণক, ইহুদী পুরেহিত ও খৃস্টান ধর্মযাজকদের ভবিষ্যদ্বাণী
২৯. ০৩২. রাসূলুল্লাহর (সা) দৈহিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য
৩০. ০৩৩. ইনজীলে রাসূল্লাহর বিবরণ
৩১. ০৩৪. নবুওয়াত লাভ
৩২. ০৩৫. কুরআন নাযিলের সূচনা
৩৩. ০৩৬. খাদীজা বিনতে খুয়াইলিদের ইসলাম গ্রহণ
৩৪. ০৩৭. ওহীর বিরতি
৩৫. ০৩৮. প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী
৩৬. ০৩৯. প্রকাশ্য দাওয়াত
৩৭. ০৪০. কুরআন সম্পর্কে ওয়ালীদ ইবনে মুগীরার মন্তব্য
৩৮. ০৪১. রাসূলুল্লাহর (সা) ওপও উৎপীড়নের বিবরণ
৩৯. ০৪২. হামযার ইসলাম গ্রহণ
৪০. ০৪৩. রাসূল্লাহর (সা) আন্দেলন প্রতিরোধে উতবার ফন্দি
৪১. ০৪৪. কুরাইশ নেতাদের সাথে রাসূলুল্লাহর (সা) কথোপকথন
৪২. ০৪৫. আবু জাহলের আচরণ
৪৩. ০৪৬. নাদার ইবনে হারেনের বিবরণ
৪৪. ০৪৭. দুর্বল মুসলমানদের ওপর মুশরিকদের অত্যাচার
৪৫. ০৪৮. আবিসিনিয়ায় মুসলমানদের প্রথম হিজরাত
৪৬. ০৪৯. মুহাজিরদের ফিরিয়ে আনার জন্য আবিসিনিয়ায় কুরাইশদের দূত প্রেরণ
৪৭. ০৫০. উমার ইবনুল খাত্তাবের ইসলাম গ্রহণ
৪৮. ০৫১. চুক্তিনামার বিবরণ
৪৯. ০৫২. রাসূলুল্লাহর (সা) ওপর কুরাইশদের নির্যাতন
৫০. ০৫৩. আবিসিনিয়া থেকে মক্কার লোকদের ইসলাম গ্রহণের খবর শুনে মুহাজিরদের প্রত্যাবর্তন
৫১. ০৫৪. চুক্তি বাতির হওয়ার কাহিনী
৫২. ০৫৫. ইরাশ গোত্রের এক ব্যক্তির আবু জাহলের নিকট উট বিক্রির ঘটনা
৫৩. ০৫৬. ইসরা বা রাত্রীকালীন সফর
৫৪. ০৫৭. মিরাজের ঘটনা
৫৫. ০৫৮. আবু তালিব ও খাদীজার ইন্তিকাল
৫৬. ০৫৯. সাহায্য লাভের আশায় বনু সাকীফ গোত্রের শরণাপন্ন হওয়া
৫৭. ০৬০. নাসীবীনের জ্বীনদের ঘটনা
৫৮. ০৬১. ইসলামের দাওয়াত পৌঁছতে রাসূলুল্লাহ (সা) সব গোত্রের কাছে হাজির হলেন
৫৯. ০৬২. মদীনায় ইসলাম বিস্তারের সূচনা
৬০. ০৬৩. মদীনায় প্রথম বাইয়াত
৬১. ০৬৪. আকাবার দ্বিতীয় বাইয়াত
৬২. ০৬৫. আকাবার শেষ বাইয়াত ও তার শর্তাবলী
৬৩. ০৬৬. সশস্ত্র যুদ্ধের নির্দেশ লাভ
৬৪. ০৬৭. মুসলমানদের মদীনায় হিজরাত করার অনুমতি লাভ
৬৫. ০৬৮. মদীনায় হিজরাতকারী মুসলমানদের বিবরণ
৬৬. ০৬৯. রাসূলুল্লাহর (সা) হিজরাত
৬৭. ০৭০. কুবায় উপস্থিতি
৬৮. ০৭১. মদীনায় উপস্থিতি
৬৯. ০৭২. মদীনাতে ভাষণ দান ও চুক্তি সম্পাদন
৭০. ০৭৩. আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে ভ্রাতৃ সম্পর্ক স্থাপন
৭১. ০৭৪. আযানের সূচনা
৭২. ০৭৫. কতিপয় সাহাবীর রোগাক্রান্ত হওয়ার বিবরণ
৭৩. ০৭৬. হিজরাতের তারিখ
৭৪. ০৭৭. প্রথম যুদ্ধাভিযান
৭৫. ০৭৮. উবাইদা ইবনে হারিসের নেতৃত্বে অভিযান । রাসূলুল্লাহ (সা) নিজে এই যুদ্ধের ঝান্ডা বেঁধেছিলেন
৭৬. ০৭৯. সমুদ্র উপকূলেন দিকে হামযার নেতৃত্বে অভিযান
৭৭. ০৮০. বুয়াত অভিযান
৭৮. ০৮১. উশাইরা অভিযান
৭৯. ০৮২. সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাসের সেতৃত্বে সামরিক অভিযান
৮০. ০৮৩. সাফওয়ান অভিযান : প্রথম বদর অভিযান
৮১. ০৮৪. আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশের নেতৃত্বে সামরিক অভিযান
৮২. ০৮৫. কিবলা পরিবর্তন
৮৩. ০৮৬. বদরের যুদ্ধ
৮৪. ০৮৭. বনু সুলাইম অভিযান
৮৫. ০৮৮. সাওয়ীক অভিযান
৮৬. ০৮৯. যূ-আমার অভিযান
৮৭. ০৯০. বাহরানের ফুরু অভিযান
৮৮. ০৯১. বনু কাইনুকার যুদ্ধ
৮৯. ০৯২. যায়িদ ইবনে হারিসার কারাদা অভিযান
৯০. ০৯৩. উহুদ যুদ্ধ
৯১. ০৯৪. হিজরী তৃতীয় সন : রাজী সফর
৯২. ০৯৫. বীরে মাউনার ঘটনা (৪র্থ হিজরী)
৯৩. ০৯৬. বনু নাবীরের বহিষ্কার (চতুর্থ হিজরী)
৯৪. ০৯৭. যাতুর রিকা অভিযান (৪র্থ হিজরী)
৯৫. ০৯৮. দ্বিতীয় বদর অভিযান (৪র্থ হিজরী সন)
৯৬. ০৯৯. দুমাতুল জান্দাল অভিযান (৫ম হিজরী: রবিউল আউয়াল)
৯৭. ১০০. খন্দক যুদ্ধ (৫ম হিজরী, শাওয়াল)
৯৮. ১০১. বনু কুরাইযা অভিযান (৫ম হিজরী)
৯৯. ১০২. যী কারাদ অভিযান
১০০. ১০৩. বনু মুসতালিক অভিযান
১০১. ১০৪. ৬ষ্ঠ হিজরী সনে বনু মুসতালিক অভিযানকালে অপবাদের ঘটনা
১০২. ১০৫. হুদাইবিয়ার ঘটনা
১০৩. ১০৬. বাইয়াতু রিদওয়ান
১০৪. ১০৭. শান্তিচুক্তি বা হুদাইবিয়ার সন্ধি
১০৫. ১০৮. খাইবার বিজয়: ৭ম হিজরীর মুহাররাম মাস
১০৬. ১০৯. জাফর ইবনে আবু তালিবের আবিসিনিয়া থেকে প্রত্যাবর্তন
১০৭. ১১০. উমরাতুল কাযাঃ ৭ম হিজরী সনঃ জিলকাদ মাস
১০৮. ১১১. মুতার যুদ্ধঃ ৮ম হিজরী সনঃ জামাদিউল উলা
১০৯. ১১২. মক্কা বিজয়ঃ ৮ম হিজরী, রমাযান মাস
১১০. ১১৩. হুনাইনের যুদ্ধ: ৮ম হিজরী
১১১. ১১৪. তায়েফ যুদ্ধ: ৮ম হিজরী সন
১১২. ১১৫. হাওয়াযিনের জমিজমা, যুদ্ধবন্দী, তাদের কিছুসংখ্যক লোককে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য উপঢৌকন দান এবং কিচু লোককে পুরস্কার প্রদানের বিবরণ
১১৩. ১১৬. জি’রানা থেকে রাসূলুল্লাহর (সা) উমরা পালন
১১৪. ১১৭. তায়েফ ত্যাগের পর কা’ব ইবনে যুহাইরের ইসলাম গ্রহণ
১১৫. ১১৮. তাবুক যুদ্ধ
১১৬. ১১৯. দুমার শাসনকর্তা উকায়দের-এর নিকট রাসূলুল্লাহ (সা) কর্তৃক খালিদ ইবনে ওয়ালীদকে প্রেরণ
১১৭. ১২০. নবম হিজরীর রমযান মাসে বনু সাকীফ গোত্রের প্রতিনিধি দলের আগমন ও ইসলাম গ্রহণ
১১৮. ১২১. নবম হিজরী সালকে ‘প্রতিনিধিদল আগমনের বছর’ হিসেবে আখ্যায়িতকরণ। সূরা আন নাছর এই বছরই নাযিল হয়
১১৯. ১২২. বনু তামীমের প্রতিনিধিদলের আগমন ও সূরা হুজুরাত নাযিল
১২০. ১২৩. বনু আমেরের প্রতিনিধি আমের ইবনে তুফাইল ও আরবাদ ইবনে কায়েসের ঘটনা
১২১. ১২৪. জারুদের নেতৃত্বে বনু আবদুল কায়েসের প্রতিনিধিদলের আগমন
১২২. ১২৫. মুসাইলিমা কাযযাবসহ বনু হানীফা প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৩. ১২৬. হাতিম তাঈ-এর আদীর ঘটনা
১২৪. ১২৭. ফারওয়া ইবনে মুসাইক মুরাদীর আগমন
১২৫. ১২৮. আমর ইবনে মা’দী ইয়াকরাবের নেতৃত্বে বনু যুবাইদের প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৬. ১২৯. আশয়াস ইবনে কায়েসের নেতৃত্বে কিন্দার প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৭. ১৩০. সুরাদ ইবনে আবদুল্লাহ আযদীর আগমন
১২৮. ১৩১. হিমইয়ার বংশীয় রাজাদের দূতের আগমন
১২৯. ১৩২. মুয়ায ইবনে জাবালকে ইয়ামানে পাঠানোর সময় রাসূলুল্লাহর (সা) উপদেশ
১৩০. ১৩৩. অভিযান পরিচালনাকালে খালিদ ইবনে ওয়ালীদের (রা) হাতে বনু হারিস গোত্রের ইসলাম গ্রহণ
১৩১. ১৩৪. মিথ্যা নবুওয়াতের দাবীদার মুসইলিমা ও আসওয়াদ আনসীর বিবরণ
১৩২. ১৩৫. রাসূলুল্লাহর (সা) নিযুক্ত কর্মচারী ও আমীরগণের যাকাত আদায়ের অভিযান
১৩৩. ১৩৬. রাসূলুল্লাহর (সা) নিকট মুসাইলিমার চিঠি এবং রাসূলুল্লাহর পক্ষ থেকে তার জবাব
১৩৪. ১৩৭. বিদায় হজ্জ
১৩৫. ১৩৮. উসামা ইবনে যায়িদকে ফিলিস্তীনে প্রেরণ
১৩৬. ১৩৯. রাজা বাদশাহদের কাছে রাসূলুল্লাহর (সা) দূত প্রেরণ
১৩৭. ১৪০. সর্বশেষ অভিযান
১৩৮. ১৪১. রাসূলুল্লাহর (সা) পীড়ার সূচনা
১৩৯. ১৪২. রাসূলুল্লাহর (সা) স্ত্রীগণ বা উম্মুহাতুল মুমিনীনের বিবরণ
১৪০. ১৪৩. রাসূলুল্লাহর (সা) রোগ সংক্রান্ত অবশিষ্ট বিবরণ
১৪১. ১৪৪. নামাযের জামায়াতে আবু বাক্রের (রা) ইমামতি
১৪২. ১৪৫. বনু সায়েদা গোত্রের চত্বরে
১৪৩. ১৪৬. আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) ও ইমার (রা)- এর বর্ণনা
১৪৪. ১৪৭. রাসূলুল্লাহর (সা) কাফন-দাফন

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন