১৩৩. অভিযান পরিচালনাকালে খালিদ ইবনে ওয়ালীদের (রা) হাতে বনু হারিস গোত্রের ইসলাম গ্রহণ

ইবনে ইসহাক বলেন: দশম হিজরীর রবিউস সানী অথবা জামাদিউল আউয়াল মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খালিদ ইবনে ওয়ালীদকে নাজরানের বনু হারিস ইবনে কা’ব গোত্রের কাছে এই নির্দেশদিয়ে পাঠালেন যে, “যুদ্ধে লিপ্ত হওয়অর আগে তাদেরকে ইসলামের দিকে তিন দিন পর্যন্ত দাওয়াত দেবে। তারা যদি দাওয়াত গ্রহণ করে তাহলে তা মেনে নেবে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালাবে।”

খালিদ রওনা হলেন। বনু হারিসের বসতিতে পৌছে খালিদ তাঁর সঙ্গীদের চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ইসলামের দাওয়াত দিতে নির্দেশ দিলেন। তারা বরতে লাগলেন, “হে জনগণ, তোমরা ইসলাম গ্রহণ কর। তাহলে তোমরা নিরপদে থাকবে।” লোকরা ইসরাম গ্রহণ করতে লাগলো, খালিদ তাদের কাছে থেকে গেলেন। তাদেরকে ইসলামের শিক্ষা দিতে লাগলেন এবং কুরআন ও রাসূলের সুন্নাহ সম্পর্কে অবহিত করতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে এ নির্দেশও দিয়েছিলেন যে, নাজরানবাসী যদি যুদ্ধ করার বদলে ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে তিনি যে তাদের কাছে থেকে যান এবং তাদেরকে ইসলামের বিস্তারিত শিক্ষা দিতে থাকেন। খালিদ ইবনে ওয়ালীদ (রা) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট নিম্নরূপ চিঠি লিখলেন,

“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। খালিদ ইবনে ওয়ালীদের তরফ থেকে আল্লাহর প্রেরিত নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট। ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার ওপর শাস্তি, আল্লাহর রহমত ও বরকত নাযিল হোক। আপনার কাছে আমি আল্লাহর প্রশংসা ব্যক্ত করছি, তিনি ছাড়া আর কোন মা’বুদ নেই। ইয়া রাসূলাল্লাহ, আল্লাহর করুণা ও শাস্তি বর্ষিত হোক আপনার ওপর। আপনি আমাকে বনু হারিসের কাছে এই নির্দেশ দিয়ে পাঠিয়েছেন যে, আমি যেন তিন দিন পর্যন্ত যুদ্ধ না করে তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দেই। তারা যদি ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে যেন তা মেনে নেই। তাদের সাথে অবস্থান করি এবং ইসলামের বিস্তৃত বিধান, আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের সুন্নাহ শিক্ষা দিই। আর যদি তার ইসলাম গ্রহণ না করে তাহলে আমি যেন তাদের সাথে যুদ্ধ করি। ইমি তাদের কাছে এসেই তিন দিন ধরে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিয়েছি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ অনুসারে। আমি এখানকার জনগণের কাছে আমার সঙ্গীদেরকে পাঠিয়েছি। তারা এই বলে দাওয়াত দিয়েছে, ‘হে বনু হারিস! ইসরাম গ্রহণ কর্ াতাহলে তোমরা নিরপদে থাকবে।’

ফলে বনু হারিস যুদ্ধ করেনি এবং ইসলাম গ্রহণ করেছে। আমি তাদের মধ্যেই অবস্থান করছি এবং আল্লাহ যে আদেশ করেছেন সেই মুতাবিক তাদেরকে আদেশ দিচ্ছি। আর আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা থেকে তাদেরকে বিরত রাখছি। আর তাদেরকে ইসলামের বিস্তৃত বিধান ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিধান শিক্ষা দিচ্ছি এবং এ কাজ এই চিঠি লেখার সময় পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। ইয়া রাসূলুল্লাহ, আসসালামু আলাইকা ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।”

প্রত্যুত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খালিদের কাছে নিম্নরূপ চিঠি লিখলেন: “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। আল্লাহর প্রেরিত নবী মুহাম্মাদের পক্ষ থেকে খালিদ ইবনে ওয়ালীদের নিকট। তোমার ওপর শান্তি বির্ষত হোক। আমি তোমার কাছে সেই আল্লাহর প্রশংসা ব্যক্ত করছি, যিনি ছাড়া আর কোন মা’বুদ নেই। দূত মারফত তোমার চিঠি পেয়ে জানতে পারলাম যে, যুদ্ধ না করেই বনু হারিস ইসলাম গ্রহণ করেছে এবং তোমাদের দাওয়াতে সাড়া দিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছে যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন মা’বুদ নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। তুমি জানিয়েছ যে, আল্লাহ তাদেরকে তাঁর হিদায়াতের বাণী দ্বারা হিদায়াত করেছেন। অতএব তুমি তাদেরকে সুসংবাদ দাও এবং সেই সাথে সাবধানও করে দাও। এবার তুমি চলে এস এবং বনু হারিসের একটি প্রতিনিধিদলকে আমার কাছে আসতে বলে দাও। ওয়াসাল্লামু আলাইকম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।”

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চিঠি পেয়ে খালিদ মদীনায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লামের কাছে ফিরে এলেন। তাঁর সাথে বনু হারিসের একটি প্রতিনিধিদলও এল। এ প্রতিনিধিদলের উল্লেখযোগ্য সদস্য ছিলেন: কায়েস ইবনুল হুসাইন, ইয়াযীদ ইবনে আবদুল মাদান, ইয়াযীদ ইবনে মুহাজ্জাল, আবদুল্লাহ ইবনে কুরাদ যিয়াদী, শাদ্দাদ ইবনে আবদুল্লাহ কানানী ও আমরইবনে আবদুল্লাহ দিবাবী। তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লামের নিকট এলে তাদের দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “ভারতীয়দের মত দেখতে এরা কারা?” সাহাবীগণ বললেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ, এরা বনু হারিসের লোক।” তাঁরা রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে এসে তাঁকে সালাম দিলেন। তারা বললেন, “আমরা সাক্ষ দিচ্ছি যে, আপনি আল্লাহর রাসূল এবং আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “আমি ও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল।” তিনি আবার বললেন, “আচ্ছা তোমরাই সেই জাতি না যাদেরকে পেছনে হটিয়ে দিলে আরো এগিয়ে আসে?” তিনি চারবার কথাটার পুনরাবৃত্তি করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “খালিদ যদি একথা না জানাতো যে, তোমরা বিনা যুদ্ধে ইসলাম গ্রহণ করেছ তাহলে আমি তোমাদের মস্তক ছেদন করে তোমাদের পায়ের তলায় লুটিয়ে দিতাম।” ইয়াযীদ ইবনে আবদুল মাদান বললেন, “জেনে রাখুন, আমরা আপনার কিংবা খালিদের প্রশংসা করিনি।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তা হলে কার প্রশংসা করেছো?” তাঁরা বললেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমরা সেই মহা প্রতাপন্বিত ও মহাপরাক্রান্ত আল্লাহর প্রশংসা করেছি যিনি আপনার মাধ্যমে আমাদেরকে হিদায়াত দান করেছেন।” তিনি বললেন, “তোমরা সত্যই বলছো।” তিনি আরো বললেন, “তোমরা জাহিলী যুগে কিসের জোরে যুদ্ধ বিগ্রহে প্রতিপক্ষের ওপর জয় লাভ করতো?” তারা বললেন, “কই, আমরা তো কারো ওপর জয়লাভ করতাম না।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “হাঁ। যারা তোমারেদ সাথে যদ্ধে লিপ্ত হতো তাদের ওপরতোমরা জয়লাভ করতে।” প্রতিনিধিগণ বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, প্রতিপক্ষের ওপর আমাদের জয় লাভের কারণ ছিল এই যে, আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতাম, কলহ বিবাদে লিপ্ত হতাম না। আর কখনো কারো ওপর প্রথমে বা অন্যায়ভাবে আক্রমণ চালাতাম না।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তোমরা সত্য বলছো।”

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কায়েস ইবনে হুসাইনকে বনু হারিসের আমীর নিয়োগ করেন।

অতঃপর বনু হারিসের প্রতিনিধিদল শাওয়ালের শেষভাগে অথবা যুলকান্দার প্রথম ভাগে নিজ এলাকায় ফিরে গেল। তাদের যাওয়ার চার মাস পরেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকাল করেন।

প্রতিনিধিদল চলে যাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনু হারিসকে ইসলামের বিস্তৃত বিধান ও তাঁর সুন্নাহ শিক্ষা দেয়া এবং তাদের সাদকা আদায় করার জন্য আমর ইবনে হাযম (রা) কে প্রেরণ করেন। তিনি নিজের নির্দেশাবলী সম্বলিত একটি পত্রও তাঁকে দেন। পত্রটি ছিল নিম্নরূপঃ

“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে এটি একটি ঘোষণাপত্র। হে মুমিনগণ, তোমরা চুক্তি পালন কর। আল্লাহর প্রেরিত নবী মুহাম্মাদের পক্ষ থেকে ইয়ামানে প্রেরিত তাঁর দূত আমর ইবনে হাযমের জন্য এটি একটি নির্দেশনামা। আমরকে তিনি সর্বত্র ও সর্বাস্থায় আল্লাহকে ভয় করে চলার নির্দেশ দিয়েছেন। মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহ তাদের সঙ্গে থাকেন যারা তাঁকে ভয় করে চলে এবং যারা ভাল কাজ করে। তাকে নির্দেশ দেয়া গেল যে, সে যেন সবসময় ন্যায় ও সত্যের পথে অনুসরণ করে, যেভাবে আল্লাহ তাকে আদেশ করেছেন। সে যেন মানুষকে কল্যাণের পথ চলার প্রেরণা দান করে ও আদেশ জারী করে। তাদের মধ্যে কুরাআনের শিক্ষা বিস্তার করে ও কুরাআন সম্পর্কে মানুষকে সূক্ষজ্ঞান বিতরণ করে এবং কেউ যাতে নাপাক অবস্থায় কুরআন স্পর্শ না করে সে ব্যাপারে যেন সাবধান করে দেয়। কিসে মানুষের ভাল হবে এবং কিসে মন্দ হবে, তা যেন জানিয়ে দেয়, হক ও ন্যায়ের ওপর যারা চলে তাদের সাথে নমনীয় আচরণ করে আর যারা যুলুম করে তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোর হয়। কেননা আল্লাহ যুলুমকে র্ঘণা করেন এবং তা থেকে বিরত থাকার আদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন: ‘সাবধান! যালিমদের আল্লাহর লানত!’সে যেন মানুষকে জান্নাতের এবং তার উপযোগী কাজ করার জন্য উৎসাহিত করে আর জাহান্নাম ও তার উপযোগী কাজ থেকে হুঁশিয়ারী করে দেয়। মানুষকে ইসলামের সূক্ষ্ম ও বিস্তৃত জ্ঞঅন দানের জন্য সে যেন তাদের প্রিয় হবার চেষ্টা করে, তাদেরকে বড় হজ্জ ও ছোট হজ্জ তথা উমরার নিয়মকানুন, সুন্নাত, ফরয ও আল্লাহর নির্দেশবলী শিক্ষা দেয়। সে যেন মানুষকে মাত্র একখঅনা ছোট কাপড় পরে নামায পড়তে নিষেধ করে, অবশ্য সেই কাপড়খানা যদি এতটা বড় হয় যে, তার এক প্রান্ত পরে অপর প্রান্ত ঘাড়ের ওপর ঘুরিয়ে দেয়া যায় তাহলে সেটা আলাদা কথা। একটি মাত্র কাপড় পরে ঠ্যাং উচিয়ে এমনভাবে বসতে সে যেন মানুষকে নিষেধ করে যাতে তার লজ্জাস্থান নগ্ন হয়ে যায়। সে যেন পুরুষদের চুল বেণী করে পিঠের ওপর ঝুলিয়ে দিতে নিষেধ করে। উত্তেজনার সময় জনসাধারণকে গোত্র ও আত্মীয়-গোষ্ঠীর দোহাই দিয়ে ডাকতে যেন নিষেধ করে এবং শুধু এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহ তায়ালার নামে ডাকতে আদেশ দেয়। যারা আল্লাহর দিকে না ডেকে গোত্র-গোষ্ঠী বিশেষের দিকে ডাকে তাদেরকে যেন তরবারী দিয়ে উৎখাত করা হয় এবং এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কায়েস ইবনে হুসাইনকে বনু হারিসের আমীর নিয়োগ করেন।

অতঃপর বনু হারিসের প্রতিনিধিদল শাওয়ালের শেষভাগে অথবা যুলকাদার প্রথম ভাগে নিজ এলাকায় ফিরে গেল। তাদের যাওয়ার চার মাস পরেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইনতিকাল করেন।

প্রতিনিধিদল চলে যাওয়ার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনু হারিসকে ইসলামের বিস্তৃত বিধান ও তাঁর সুন্নাহ শিক্ষা দেয় এবং তাদের সাদকা আদায় করার জন্য আমর ইবনে হাযম (রা) কে প্রেরণ করেন। তিনি নিজের নির্দেশাবলী সম্বলিত একটি পত্রও তাঁকে দেন। পত্রটি ছিল নিম্নরূপঃ

“বিমমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে এটি একটি ঘোষণাপত্র। হে মুমিনগণ, তোমরা চুক্তি পালন কর। আল্লাহর প্রেরিত নবী মুহাম্মাদের পক্ষ থেকে ইয়ামানে প্রেরিত তাঁর দূত আমর ইবনে হাযমের জন্য এটি একটি নির্দেশনামা। আমরকে তিনি সর্বত্র ও সর্বাস্থায় আল্লাহকে ভয় করে চলার নির্দেশ দিয়েছেন। মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহ তাদের সঙ্গে থাকেন যারা তাঁকে ভয় করে চলে এবং যারা ভাল কাজ করে। তাকে নির্দেশ দেয়া গেল যে, সে যেন সবসময় ন্যায় ও সত্যের পথে অনুসরণ করে, যেভাবে আল্লাহ তাকে আদেশ করেছেন। সেযেন মানুষকে কল্যাণের পথ চলার প্রেরণা দান করে ও আদেশ জারী করে। তাদের মধ্যে কুরআনের শিক্ষা বিস্তার করে ও কুরআন সম্পর্কে মানুষকে সূক্ষ্মজ্ঞান বিতরণ করে এবং কেউ যাতে নাপাক অবস্থায় কুরআন স্পর্শ না করে সে ব্যাপারে যেন সাবধান করে দেয়। কিসে মানুষের ভাল হবে এবং কিসে মন্দ হবে, তা যেন জানিযে দেয়, হক ও ন্যায়ের ওপর যারা চলে তাদের সাথে নমনীয় আচরণ করে আর যারা যুলুম করে তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোর হয়। কেননা আল্লাহ যুলুমকে ঘৃণা করেন এবং তা থেকে বিরত থাকার আদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন: ‘সাবধান। যালিমদের ওপর আল্লাহর লানত।’ সে যেন মানুষকে জান্নাতের এবং তার উপযোগী কাজ করার জন্য উৎসাহিত করে আর জাহান্নাম ও তার উপযোগী কাজ থেকে হুঁশিয়ারী করে দেয়। মানুষকে ইসলামের সূক্ষ্ম ও বিস্তৃত জ্ঞান দানের জন্য সে যেন তাদের প্রিয় হবার চেষ্টা করে, তাদেরকে বড় হজ্জ ও ছোট হজ্জ তথা উমরার নিয়মকানুন, সুন্নাত, ফরয ও আল্লাহর নির্দেশাবলী শিক্ষা দেয়। সে যেন মানুষকে মাত্র একখানা ছোট কাপড় পরে নামায পড়তে নিষেধ করে, অবশ্য সেই কাপড়খানা যদি এতটা বড় হয় যে, তার এক প্রন্ত পরে অপর প্রান্ত ঘাড়ের ওপর ঘুরিয়ে দেয়া যায় তাহলে সেটা আলাদা কথা। একটি মাত্র কাপড় পরে ঠ্যাং উচিয়ে এমনভাবে বসতে সে যেন মানুষকে নিষেধ করে যাতে তার লজ্জাস্থান নগ্ন হয়ে যায়। সে যেন পুরুষদের চুল বেণী করে পিঠের ওপর ঝুলয়ে দিতে নিষেধ করে। উত্তেজনার সময় জনসাধারণকে গোতও ও আত্মীয়-গোষ্ঠীর দোহাই দিয়ে ডাকতে যেন নিষেধ করে এবং শুধু এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহ তায়ালার নামেডাকতে আদেশ দেয়। যারা আল্লাহর দিকে না ডেকে গোত্র-গোষ্ঠী বিশেষের দিকে ডাকে তাদেরকে যেন তরবারী দিয়ে উৎখাত করা হয় এবং এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর একজন বিশ্বস্ত লোক আবু হুরাইরার (রা) উদ্ধৃতি দিয়ে আমাকে জানিয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কিয়ামতের আগে ত্রিশজন দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে এবং তাদের প্রত্যেকেই নবুওয়াতের দাবীদার হবে।”

সকল অধ্যায়

১. ০০৪. সীরাতে ইবনে ইসহাক
২. ০০৫. সীরাতে ইবনে হিশাম
৩. ০০৬. সীরাতে ইবনে হিশামের মর্যাদা
৪. ০০৭. সীরাতে ইবনে হিশামের বক্ষ্যমাণ সংক্ষিপত রূপ
৫. ০০৮. মুহাম্মদ (সা) থেকে আদম (আ) পর্যন্ত উর্ধতন বংশ পরম্পরা
৬. ০০৯. ইসমাঈর (আ) এর অধস্তন পুরুষদের বংশ পরম্পরা
৭. ০১০. রাবিয়া ইবনে নসরের স্বপ্ন
৮. ০১১. আবু কারব হাসসান ইবনে তুব্বান আস’আদ কর্তৃক ইয়ামতান রাজ্য অধিকার এবং ইয়াসরিব আক্রমণ
৯. ০১২. হাবশীদের দখলে ইয়ামান
১০. ০১৩. আরিয়াত ও আবরাহা দ্বন্দ্ব
১১. ০১৪. আসহাবুল ফীলের ঘটনা
১২. ০১৫. নিযার ইবনে মা’আদের বংশধর
১৩. ০১৬. আবদুল মুত্তালিব বিন হাশিমের সন্তান-সন্ততি
১৪. ০১৭. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিতামাতা
১৫. ০১৮. যমযাম কূপ খনন ও সে বিষয়ে সৃষ্ট মতবিরোধ
১৬. ০১৯. আবদুল মুত্তালিব কর্তৃক তার পুত্রকে কুরবানীর মানত
১৭. ০২০. মহানবীর (সা) আমিনার গর্ভে থাকাকালের ঘটনাবলী
১৮. ০২১. রাসূলুল্লাহর (সা) জন্ম
১৯. ০২২. হালীমার কথা
২০. ০২৩. বক্ষ বিদারণের ঘটনা
২১. ০২৪. দাদার অভিভাবকত্বে
২২. ০২৫. চাচা আবু তালিবের অভিভাবকত্বে
২৩. ০২৬. পাদ্রী বাহীরার ঘটনা
২৪. ০২৭. ফিজারের যুদ্ধ
২৫. ০২৮. খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহার সাথে বিয়ে
২৬. ০২৯. ওয়ারাকা বিন নাওফেলের ভাষ্য
২৭. ০৩০. পবিত্র কাবার পুনর্নির্মাণ
২৮. ০৩১. আরব গণক, ইহুদী পুরেহিত ও খৃস্টান ধর্মযাজকদের ভবিষ্যদ্বাণী
২৯. ০৩২. রাসূলুল্লাহর (সা) দৈহিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য
৩০. ০৩৩. ইনজীলে রাসূল্লাহর বিবরণ
৩১. ০৩৪. নবুওয়াত লাভ
৩২. ০৩৫. কুরআন নাযিলের সূচনা
৩৩. ০৩৬. খাদীজা বিনতে খুয়াইলিদের ইসলাম গ্রহণ
৩৪. ০৩৭. ওহীর বিরতি
৩৫. ০৩৮. প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী
৩৬. ০৩৯. প্রকাশ্য দাওয়াত
৩৭. ০৪০. কুরআন সম্পর্কে ওয়ালীদ ইবনে মুগীরার মন্তব্য
৩৮. ০৪১. রাসূলুল্লাহর (সা) ওপও উৎপীড়নের বিবরণ
৩৯. ০৪২. হামযার ইসলাম গ্রহণ
৪০. ০৪৩. রাসূল্লাহর (সা) আন্দেলন প্রতিরোধে উতবার ফন্দি
৪১. ০৪৪. কুরাইশ নেতাদের সাথে রাসূলুল্লাহর (সা) কথোপকথন
৪২. ০৪৫. আবু জাহলের আচরণ
৪৩. ০৪৬. নাদার ইবনে হারেনের বিবরণ
৪৪. ০৪৭. দুর্বল মুসলমানদের ওপর মুশরিকদের অত্যাচার
৪৫. ০৪৮. আবিসিনিয়ায় মুসলমানদের প্রথম হিজরাত
৪৬. ০৪৯. মুহাজিরদের ফিরিয়ে আনার জন্য আবিসিনিয়ায় কুরাইশদের দূত প্রেরণ
৪৭. ০৫০. উমার ইবনুল খাত্তাবের ইসলাম গ্রহণ
৪৮. ০৫১. চুক্তিনামার বিবরণ
৪৯. ০৫২. রাসূলুল্লাহর (সা) ওপর কুরাইশদের নির্যাতন
৫০. ০৫৩. আবিসিনিয়া থেকে মক্কার লোকদের ইসলাম গ্রহণের খবর শুনে মুহাজিরদের প্রত্যাবর্তন
৫১. ০৫৪. চুক্তি বাতির হওয়ার কাহিনী
৫২. ০৫৫. ইরাশ গোত্রের এক ব্যক্তির আবু জাহলের নিকট উট বিক্রির ঘটনা
৫৩. ০৫৬. ইসরা বা রাত্রীকালীন সফর
৫৪. ০৫৭. মিরাজের ঘটনা
৫৫. ০৫৮. আবু তালিব ও খাদীজার ইন্তিকাল
৫৬. ০৫৯. সাহায্য লাভের আশায় বনু সাকীফ গোত্রের শরণাপন্ন হওয়া
৫৭. ০৬০. নাসীবীনের জ্বীনদের ঘটনা
৫৮. ০৬১. ইসলামের দাওয়াত পৌঁছতে রাসূলুল্লাহ (সা) সব গোত্রের কাছে হাজির হলেন
৫৯. ০৬২. মদীনায় ইসলাম বিস্তারের সূচনা
৬০. ০৬৩. মদীনায় প্রথম বাইয়াত
৬১. ০৬৪. আকাবার দ্বিতীয় বাইয়াত
৬২. ০৬৫. আকাবার শেষ বাইয়াত ও তার শর্তাবলী
৬৩. ০৬৬. সশস্ত্র যুদ্ধের নির্দেশ লাভ
৬৪. ০৬৭. মুসলমানদের মদীনায় হিজরাত করার অনুমতি লাভ
৬৫. ০৬৮. মদীনায় হিজরাতকারী মুসলমানদের বিবরণ
৬৬. ০৬৯. রাসূলুল্লাহর (সা) হিজরাত
৬৭. ০৭০. কুবায় উপস্থিতি
৬৮. ০৭১. মদীনায় উপস্থিতি
৬৯. ০৭২. মদীনাতে ভাষণ দান ও চুক্তি সম্পাদন
৭০. ০৭৩. আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে ভ্রাতৃ সম্পর্ক স্থাপন
৭১. ০৭৪. আযানের সূচনা
৭২. ০৭৫. কতিপয় সাহাবীর রোগাক্রান্ত হওয়ার বিবরণ
৭৩. ০৭৬. হিজরাতের তারিখ
৭৪. ০৭৭. প্রথম যুদ্ধাভিযান
৭৫. ০৭৮. উবাইদা ইবনে হারিসের নেতৃত্বে অভিযান । রাসূলুল্লাহ (সা) নিজে এই যুদ্ধের ঝান্ডা বেঁধেছিলেন
৭৬. ০৭৯. সমুদ্র উপকূলেন দিকে হামযার নেতৃত্বে অভিযান
৭৭. ০৮০. বুয়াত অভিযান
৭৮. ০৮১. উশাইরা অভিযান
৭৯. ০৮২. সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাসের সেতৃত্বে সামরিক অভিযান
৮০. ০৮৩. সাফওয়ান অভিযান : প্রথম বদর অভিযান
৮১. ০৮৪. আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশের নেতৃত্বে সামরিক অভিযান
৮২. ০৮৫. কিবলা পরিবর্তন
৮৩. ০৮৬. বদরের যুদ্ধ
৮৪. ০৮৭. বনু সুলাইম অভিযান
৮৫. ০৮৮. সাওয়ীক অভিযান
৮৬. ০৮৯. যূ-আমার অভিযান
৮৭. ০৯০. বাহরানের ফুরু অভিযান
৮৮. ০৯১. বনু কাইনুকার যুদ্ধ
৮৯. ০৯২. যায়িদ ইবনে হারিসার কারাদা অভিযান
৯০. ০৯৩. উহুদ যুদ্ধ
৯১. ০৯৪. হিজরী তৃতীয় সন : রাজী সফর
৯২. ০৯৫. বীরে মাউনার ঘটনা (৪র্থ হিজরী)
৯৩. ০৯৬. বনু নাবীরের বহিষ্কার (চতুর্থ হিজরী)
৯৪. ০৯৭. যাতুর রিকা অভিযান (৪র্থ হিজরী)
৯৫. ০৯৮. দ্বিতীয় বদর অভিযান (৪র্থ হিজরী সন)
৯৬. ০৯৯. দুমাতুল জান্দাল অভিযান (৫ম হিজরী: রবিউল আউয়াল)
৯৭. ১০০. খন্দক যুদ্ধ (৫ম হিজরী, শাওয়াল)
৯৮. ১০১. বনু কুরাইযা অভিযান (৫ম হিজরী)
৯৯. ১০২. যী কারাদ অভিযান
১০০. ১০৩. বনু মুসতালিক অভিযান
১০১. ১০৪. ৬ষ্ঠ হিজরী সনে বনু মুসতালিক অভিযানকালে অপবাদের ঘটনা
১০২. ১০৫. হুদাইবিয়ার ঘটনা
১০৩. ১০৬. বাইয়াতু রিদওয়ান
১০৪. ১০৭. শান্তিচুক্তি বা হুদাইবিয়ার সন্ধি
১০৫. ১০৮. খাইবার বিজয়: ৭ম হিজরীর মুহাররাম মাস
১০৬. ১০৯. জাফর ইবনে আবু তালিবের আবিসিনিয়া থেকে প্রত্যাবর্তন
১০৭. ১১০. উমরাতুল কাযাঃ ৭ম হিজরী সনঃ জিলকাদ মাস
১০৮. ১১১. মুতার যুদ্ধঃ ৮ম হিজরী সনঃ জামাদিউল উলা
১০৯. ১১২. মক্কা বিজয়ঃ ৮ম হিজরী, রমাযান মাস
১১০. ১১৩. হুনাইনের যুদ্ধ: ৮ম হিজরী
১১১. ১১৪. তায়েফ যুদ্ধ: ৮ম হিজরী সন
১১২. ১১৫. হাওয়াযিনের জমিজমা, যুদ্ধবন্দী, তাদের কিছুসংখ্যক লোককে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য উপঢৌকন দান এবং কিচু লোককে পুরস্কার প্রদানের বিবরণ
১১৩. ১১৬. জি’রানা থেকে রাসূলুল্লাহর (সা) উমরা পালন
১১৪. ১১৭. তায়েফ ত্যাগের পর কা’ব ইবনে যুহাইরের ইসলাম গ্রহণ
১১৫. ১১৮. তাবুক যুদ্ধ
১১৬. ১১৯. দুমার শাসনকর্তা উকায়দের-এর নিকট রাসূলুল্লাহ (সা) কর্তৃক খালিদ ইবনে ওয়ালীদকে প্রেরণ
১১৭. ১২০. নবম হিজরীর রমযান মাসে বনু সাকীফ গোত্রের প্রতিনিধি দলের আগমন ও ইসলাম গ্রহণ
১১৮. ১২১. নবম হিজরী সালকে ‘প্রতিনিধিদল আগমনের বছর’ হিসেবে আখ্যায়িতকরণ। সূরা আন নাছর এই বছরই নাযিল হয়
১১৯. ১২২. বনু তামীমের প্রতিনিধিদলের আগমন ও সূরা হুজুরাত নাযিল
১২০. ১২৩. বনু আমেরের প্রতিনিধি আমের ইবনে তুফাইল ও আরবাদ ইবনে কায়েসের ঘটনা
১২১. ১২৪. জারুদের নেতৃত্বে বনু আবদুল কায়েসের প্রতিনিধিদলের আগমন
১২২. ১২৫. মুসাইলিমা কাযযাবসহ বনু হানীফা প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৩. ১২৬. হাতিম তাঈ-এর আদীর ঘটনা
১২৪. ১২৭. ফারওয়া ইবনে মুসাইক মুরাদীর আগমন
১২৫. ১২৮. আমর ইবনে মা’দী ইয়াকরাবের নেতৃত্বে বনু যুবাইদের প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৬. ১২৯. আশয়াস ইবনে কায়েসের নেতৃত্বে কিন্দার প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৭. ১৩০. সুরাদ ইবনে আবদুল্লাহ আযদীর আগমন
১২৮. ১৩১. হিমইয়ার বংশীয় রাজাদের দূতের আগমন
১২৯. ১৩২. মুয়ায ইবনে জাবালকে ইয়ামানে পাঠানোর সময় রাসূলুল্লাহর (সা) উপদেশ
১৩০. ১৩৩. অভিযান পরিচালনাকালে খালিদ ইবনে ওয়ালীদের (রা) হাতে বনু হারিস গোত্রের ইসলাম গ্রহণ
১৩১. ১৩৪. মিথ্যা নবুওয়াতের দাবীদার মুসইলিমা ও আসওয়াদ আনসীর বিবরণ
১৩২. ১৩৫. রাসূলুল্লাহর (সা) নিযুক্ত কর্মচারী ও আমীরগণের যাকাত আদায়ের অভিযান
১৩৩. ১৩৬. রাসূলুল্লাহর (সা) নিকট মুসাইলিমার চিঠি এবং রাসূলুল্লাহর পক্ষ থেকে তার জবাব
১৩৪. ১৩৭. বিদায় হজ্জ
১৩৫. ১৩৮. উসামা ইবনে যায়িদকে ফিলিস্তীনে প্রেরণ
১৩৬. ১৩৯. রাজা বাদশাহদের কাছে রাসূলুল্লাহর (সা) দূত প্রেরণ
১৩৭. ১৪০. সর্বশেষ অভিযান
১৩৮. ১৪১. রাসূলুল্লাহর (সা) পীড়ার সূচনা
১৩৯. ১৪২. রাসূলুল্লাহর (সা) স্ত্রীগণ বা উম্মুহাতুল মুমিনীনের বিবরণ
১৪০. ১৪৩. রাসূলুল্লাহর (সা) রোগ সংক্রান্ত অবশিষ্ট বিবরণ
১৪১. ১৪৪. নামাযের জামায়াতে আবু বাক্রের (রা) ইমামতি
১৪২. ১৪৫. বনু সায়েদা গোত্রের চত্বরে
১৪৩. ১৪৬. আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) ও ইমার (রা)- এর বর্ণনা
১৪৪. ১৪৭. রাসূলুল্লাহর (সা) কাফন-দাফন

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন