১৪৭. রাসূলুল্লাহর (সা) কাফন-দাফন

ইবনে ইসহাক বলেন: আবু বাকরের (রা) বাইয়াত সুসম্পন্ন হওয়ার পর মঙ্গলবার দিন জনগণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাফনের আয়োজন করলো।

আবদুল্লাহ ইবনে আবু বাক্র ও হুসাইন ইবনে আবদুল্লাহ প্রমুখ আমাকে বলেছেন, আলী ইবনে আবু তালিব, আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব, ফযল ইবনে আব্বাস, কুসাম ইবনে আব্বাস, উসামা ইবনে যায়িদ ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুক্ত গোলাম শাকরান (রাদিয়াল্লাহু আনহুম) তাঁকে গোসল দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত হলেন। বনু খাযরাজ গোত্রের বনু আওফ পরিবারের আওস ইবনে খাওলী (রা) আলী ইবনে আবু তালিবকে (রা) বললেন, “হে আলী, আল্লাহর দোহাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাফন-দাফন আমাদের অংশ নিতে দেয়ার ব্যবস্থা করুন।” আওস (রা) বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাব ছিরেন। আরী (রা) বললেন, “এসো।” তিনি এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গোসলে অংশগ্রহণ করলেন। আলী (রা) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিজের বুকের সাথে হেলান দিকে ধরে রাখলেন। আর আব্বাস, ফযল ও কুসাম (রা) তাঁকে আলীর (রা) সাথে সাথে প্রয়োজন মত ঘুরাতে লাগলেন। উসামা ইবনে যায়িত ও শাকরান (রা) তাঁর ওপর পানি ঢালতে লাগলেন আর আলী (রা) নিজের বুকের ওপর হেলান দিয়ে তাঁকে ধোয়াতে লাগলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামা গায়েই ছিল। সেই জামার ওপর দিয়েই মৃদুভাবে কচলিয়ে ধুয়ে দিতে লাগলেন আলী (রা)। সরাসরি গায়ের চামড়ায় হাত লাগাননি। ধোয়ার সময় আলী (রা) বলছিলেন, “আমার মাতাপিতা আপনার ওপর কুরবান হোক। জীবিত বা মৃত উভয় অবস্থাতেই আপনার গোয়ে কত সুগন্ধ।” গোসলের সময় অন্যান্য মৃতের দেহ থেকে যেসব নাপাক বস্তু বের হয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দেহ থেকে তার কিছুই বের হয়নি।

আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত: গোসলের আয়োজন করতে গিয়ে গোসলের দায়িত্বে নিয়োজিত লোকেরা মতবিরোধের শিকার হলেন। প্রশ্ন ছিল এই যে, অন্যান্য মৃতের মত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাপড় খুলে ফেলে গোসল দেয়া হবে, না কাপড় গায়ে রেখেই গোসল দেয়া হবে। এই মতভেদ চলাকালে সহসা আল্লাহ তাদের ওপর ঘুম চাপিয়ে দিলেন। ঘুমের কারণে সকলেরই মুখ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বুকের ওপর এসে পড়লো। সেই অবস্থায় ঘরের একপাশ থেকে এক অচেনা ব্যক্তি তাদেরকে বললো, “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কাপড় গায়ে রেখেই গোসল দাও।” অতঃপর জামা গায়ে রেখেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গোসল দেয়া হলো এবং কাপড়ের ওপর দিয়েই গা কচলানো হলো।

ইবনে ইসহাক বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়অসাল্লামের গোসল সম্পন্ন হলে তিনটি কাপড় দিয়ে কাফন পরানো হলো, দুইখানা সুহারী এবং একখানা ইয়ামনী চাদর যা কয়েক ভাঁজ দিয়ে পরানো হলো।

ইবনে আব্বাস (রা): যখন কবর খননের প্রস্তুতি শুরু হলো তখন জানা গেল যে, আবু উবাইদা ইবনুল জারারাহ মাক্কাবাসীদের মত ‘দারীহ’ কবর খননেস পারদর্শী, আর আবু তালহা মদীনা ‘লাহাদ’ কবনর খননে পটু। আব্বাস (রা) দু’জনাকেই ডেকে পাঠালেন। বললেন, “ইয়া আল্লাহ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য যেটা ভাল হয় তার ব্যবস্থা করে দাও। শেসে পর্যন্ত আবু তালহাকেই পাওয়া গেল এবং তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের লাহাদ কবর খনন করে দিলেন।

মঙ্গলবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কাফন ও গোসল দিয়ে তাঁর বাড়ীতে তাঁর খাটে শুইয়ে রাখা হলো। এরপর দাফন নিয়ে সাহাবীদের মধ্যে আবার মাতান্তর ঘটলো। কেউ বললেন, মসজিদে নববীতে দাফন করবো।” কেউ বললেন, “অন্যান্য সাহাবীদের কবরের পার্শ্বে দাফন করবো।” আবু বাক্র (রা) মীমাংসা করে দিলেন এই বলে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওায়াসাল্লামকে আমি বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক নবীকে তার ইনতিকালের জায়গাতে দাফন করা হয়েছে।

তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে বিছানার শুয়ে ইনতিকাল করেছিলেন তা তুলে ফেলে তার নীচেই কবর খনন করে হলো। লোকজন দলে দলে এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জানাযা পড়তে লাগলো। পুরুষদের পড়া শেষ হলে মহিলার পড়লেন। তারপরে শিশু কিশোররা। অতঃপর বুধবারের মধ্যরাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াাসল্লামকে দাফন করা হলো।

আয়িশা (রা) বলেন: বুধবারের মধ্যরাতে কোদাল মারার শব্দ শুনেই আমরা জানতে পেরেছিলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দাফন করা হচ্ছে।

ইবনে ইসহাক বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শোয়ানের জন্য কবরে নেমেছিলেন আলী, ফযল, কুসাম ও শাকরান (রাদিয়াল্লাহু আনহুম)।

আওস ইবনে খাওলী এবারও আলীর (রা) নিকট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কবরস্থ করার কাজে আনসারদের অংশ দেয়ার দাবী জানালে আলী (রা) তাঁকে কবরে নামতে বললেন এবং তিনি সকলের সাথে নেমে ঐ কাজে অংশ নিলেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে কম্বলটি ব্যবহার করতেন শাকরান রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কবরে শোয়ানের সময় সেটিও তাঁর সাথেই দাফন করে দিয়েছিলেন। সেই সময় তিনি বলেন, “আপনার পরে এ কম্বল আর কাউকে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।”

মুগীরা ইবনে শু’বা (রা) দাবী করতেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সর্বশেষ সাহচর্য লাভ করেছেন। কেননা তিনি তাঁর আংটিটি ইচ্ছা করে কবরে ফেলে রেখে উঠে আসেন। তারপর আংটি পড়ে গেছে এই অজুহাত দিয়ে সবার শেষে কবরে নেমে আংটি তুলে আনেন এবং রাসূলুল্লাহ সর্বশেষে স্পর্শ করেন। এভাবে তিনি সর্বশেষ সাহচর্যের দাবীদার হন।

আবদুল্লাহ ইবনে হারিসের মুক্ত গোলাম মুকাসসাম আবুল কাসিম বর্ণনা করেন যে, উমার (রা) কিংবা উসমানের (রা) খিলাফতকালে আমি আলীর (রা) সাথে উমরাহ করি। তিনি তাঁর বোন উম্মে হানীর বাড়ীতে থাকেন। উমরাহ শেষে যখন গোসর সম্পন্ন করলেন তখন ইরাক থেকে একদল মুসলমান তাঁর সাথে এসে দেখঅ করেন। তাঁরা জিজ্ঞেস করেন যে, মুগীরা ইবনে শু’বার এ দাবী সত্য কিনা যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সর্বশেষ সাহচর্য লাভ করেছেণ। আলী (রা) বললেন, “সর্বশেষ সাহচর্য লাভ করেছেন কুসাম ইবনে আব্বাস (রা)।”

উবাইদুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে উতবা জানান যে, আয়িশা (রা) তাঁকে বলেছেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রোগ বৃদ্ধির সময় তাঁর গায়ে একটি চতুস্কোণ কালো কম্বল ছিল। সেটা দিয়ে তিনি একবার শুখ ঢাকছিলেন আর একবার খুলছিলেন। আর বলছিলেন, “সেই জাতির ওপর আল্লাহর অভিশাপ যারা নবীর কবরকে সিজদার জায়গায় পরিণত করে।” এ কথা বলে তিনি নিজের উম্মাতকে সাবধান করে দিচ্ছিলেন।

আয়িশা (রা) বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সর্বশেষ অছীয়ত ছিল এই, “আরব উপদ্বীপে যেন ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দীন না থাকে।”

ইবনে ইসহাক বলেন:

রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তিকালের অব্যবহিত পর মুসলমানদেরকে ভয়াবহ দুর্যোগ ঘিরে ধরে। আয়িশা (রা) জানান যে, এই সময় আরবরা মুরতাদ হতে আরম্ভ করে, ইহুদী ও খৃস্টানরা মাথা তুলতে শুরু করে এবং মুনাফেকী ব্যাপক আকার ধারণ কলে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হারানোর দারুন মুসলমানদের অবস্থা হয়ে দাঁড়ায় শীতের রাতে বর্ষণসিক্ত মেঘ পালের মত। আবু বাকরের (রা) নেতৃত্বে সংগঠিত হওয়ার র্পূব পর্যন্ত এই অবস্থা অব্যাহত থাকে। ইবনে হিশাম বলেন: আবু উবাইদা প্রমুখ বিজ্ঞ লোকেরা আমাকে জানিয়েছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইনতিকালের সঙ্গে সঙ্গে অধিকাংশ মক্কাবাসী ইসলাম ত্যাগ করা মনোভাব গ্রহণ করে। তা দেখে মক্কার তৎকালীন শাসনকর্তা আত্তাব ইবনে উসাইদ ভয়ে আত্মগোপন করেন। এরপর সুহাইল ইবনে আমের মক্কাবীদেরকে সমবেত করে ভাষণ দেন। তিনি আল্লাহর প্রশংসা করার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইনতিকালের কথা জানিয়ে বলেন, “তাঁর ইনতিকালে ইসলাম আরো শক্তিশালী হয়েছে। যে ব্যক্তি সংশয় ও বিভ্রান্তি ছড়াবে আমরা তার শিরচ্ছেদ করবো।”

এরপর লোকজন মত পাল্টালো এবং আত্তাব ইবনে উসাইদ আত্মপ্রকাশ করলেন।

এই অবস্থার কথাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমার ইবনুল খাত্তাবকে (রা) বলেছিলেন, “এমন এক অবস্থায় সে পড়াবে যখন তুমি তাকে খারাপ বলতে পারবো না।”

হাসসান ইবনে সাবিত (রা) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইনতিকালে নিম্নলিখিত শোকগাথা রচনা ও আবৃত্তি করেন:

“মদীনাতে রাসূলের উজ্জ্বল নিদর্শন ও স্মৃতি রয়েছে।

সাধারন নিদর্শন ও স্মৃতিসমূহ বিলীন ও নিশ্চি‎হ্ন হয়ে যায়।

কিন্তু সেই পবিত্র স্থানের চি‎হ্নসমূহ অক্ষয় ও অমর, যেখানে মহান পথ প্রদর্শকের আরোহণের স্মৃতি বিজড়িত মিম্বার বর্তমান।

সেখানে সেই সব ঘর রয়েছে যার মধ্যে আল্লাহর তরফ থেকে জাজ্বল্যমান জ্যোতি নাযিল হতো সেখানে তত্ত্বজ্ঞানের এমন সব কালজয়ী নিদর্শন বিদ্যমান যা যুগ যুগ কালের অবর্তনেও বিকৃত হয় ন।

তা যতই প্রাচীন হয় ততই তা থেকে নতুন তত্ত্ব উদগত হয়।

সেখানে আমি চিনতে পেরেছি রাসূলের (সা) চি‎হ্ন ও আদর্শকে, আরও চিনেছি তাঁর কবরকে যাতে তিনি হয়েছেন সমাহিত।

সেখানে বসে আমি রাসূলের জন্য অশ্রুপাত করছি যার কারণে অনেক চক্ষু অশ্রুপাত করে সৌভাগ্যবান হচ্ছে।

চক্ষুগুলো অশ্রুপাত করে প্রকৃতপক্ষে রাসূলের (সা) অবদানগুলোই স্মরণ করছে- যার সংখ্যা নির্ণয় করা আমার অসাধ্য।

আহমাদকে (সা) হারানোর বেদনায় রিক্ত ও ভারাক্রান্ত আমার মন তাঁর অবদান স্মরণ করার কাজে নিয়োজিত হয়েছে।

কিন্তু তাঁর কোন অবদানের দশ ভাগের এক ভাগও স্মরণ করতে পারিনি।

কেবল দুঃ ভারাক্রান্ত মনে মুহাম্মাদ (সা) যে কবরে শুয়ে আছেন তার পাশে দীর্ঘ সময় অবস্থান করা এবং অশ্রুপাত করা ছাড়া আমার আর কিছু করার নেই।

হে রাসূলের কবর, তুমি অশেষ বরকত ও কল্যাণের আধারে পরিণত হয়েছো।

যেমন হয়েছে নির্ভুল পথের দিশারী পদছোঁয়া এই গোটা অঞ্চল।

হে কবর, তোমার ভেতর ভেতর বরকাতে পরিপূর্ণ হয়েছে যা এক পূতঃপবিত্র সত্তাকে ধারণ করে রেখেছে এবং আমার অতি প্রিয়জনকে।

প্রশস্ত ও স্তরে স্তরে সুবিন্যস্ত করে তৈরী করা হয়েছে।

সেই কবরের ওপর অনেকে অনেকে মকাটি ফেলেছে এবং চিরসবুজ ‘সুদ’ বৃক্ষ তাতে প্রোথিত হয়েছে।

রাত্রে লোকেরা (রাসূলুল্লাহকে (সা) সমাহিত করার মাধ্যমে জ্ঞান, দয়া ও সহিষ্ণুতাকে সমাহিত করেছে এবং তাঁর ওপর মাটি চড়িয়ে দিয়েছে যদিও তিনি মাটিতে শোয়ানোর মত লোক নন।

সমাহিত করার পর তারা নবীকে (সা) হারিয়ে ব্যথিত মনে ফিরে গেছে এবং তারেদ পিঠ ও হাত দুর্বল হয়ে গেছে।

সেই মহামনবের শোকে কাঁদতে কাঁদতে গেছে- যার শোকে তাঁর মৃত্যুর দিন আকাশ আর পৃথিবীও কেঁদেছে

তাই তাঁর জন্য মানুষ আরো বেশী শোকাহত। কোনদিন কি কোন মৃত ব্যক্তির শোক মুহাম্মাদের মৃত্যুশোকের সমতুল্য হয়েছে?

এই মৃত্যুর কারণে মানুষ ওহীর অবতরণক্ষেত্রে হারালো যিনি ওহীর অবতরণক্ষত্রে ছিলেন তিনি আল্লাহর জ্যেতিতে উদ্ভাসিত ছিলেন এবং সেই জ্যোতি তিনি ইয়ামান ও নাজদে পর্যন্ত বিতরণ করতেন।

যারা তাঁকে অনুসরণ করতো তাদেরকে তিনি দয়াময় আল্লাহর পথ দেখাতেন, রক্ষা করতেন লাঞ্ছনা গঞ্জনা থেকে এবং ন্যায়ের পথ দেখাতেন।

তিনি তাদের এমন এক নেতা যিনি তাদেরকে হকের দিকে চাীরত করতেন এবং তার জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করতেন।

তিনি সত্যের এমন এক শিক্ষক ও দিশারী যার অনুসরণ করলেই পরিশুদ্ধি অর্জন করা যায়।

তিনি মু’মিনদের ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতেন এবং তাদের ওজর মেনে নিতেন।

যদি তারা ভালো ও নির্ভুল কাজ করতো তাহলে তো তাদের কল্যাণে স্বয়ং আল্লাহই উদারহস্ত ছিলেন।

আর যদি তাদের ওপর এমন কোন কাজের দায়িত্ব অর্পণ করা হতো- যা তাদের পক্ষে দুঃসাধ্য, তাহলে একমাত্র তিনিই তা সহজ করে দিতেন।

মুহাম্মাদের (সা) অনুসরীরা যতদিন আল্লাহর নিয়ামতের মধ্যে থাকবে ততদিন তিনি তাদের কাছে এমন এক দলীল হয়ে থাকবেন যা দিয়ে তারা সকল ব্যাপারে সঠিক কর্মপন্থা নির্ণয় করতে পারবে।

মানুষের গুমরাহ হয়ে যাওয়া তাঁর কাছে অসহনীয় এবং তাদের হিদায়াত প্রাপ্তি ও হিদায়াতের ওপর বহাল থাকা তাঁর একান্ত কাম্য।

(সমাপ্ত )

অধ্যায় ১৪৪ / ১৪৪

সকল অধ্যায়

১. ০০৪. সীরাতে ইবনে ইসহাক
২. ০০৫. সীরাতে ইবনে হিশাম
৩. ০০৬. সীরাতে ইবনে হিশামের মর্যাদা
৪. ০০৭. সীরাতে ইবনে হিশামের বক্ষ্যমাণ সংক্ষিপত রূপ
৫. ০০৮. মুহাম্মদ (সা) থেকে আদম (আ) পর্যন্ত উর্ধতন বংশ পরম্পরা
৬. ০০৯. ইসমাঈর (আ) এর অধস্তন পুরুষদের বংশ পরম্পরা
৭. ০১০. রাবিয়া ইবনে নসরের স্বপ্ন
৮. ০১১. আবু কারব হাসসান ইবনে তুব্বান আস’আদ কর্তৃক ইয়ামতান রাজ্য অধিকার এবং ইয়াসরিব আক্রমণ
৯. ০১২. হাবশীদের দখলে ইয়ামান
১০. ০১৩. আরিয়াত ও আবরাহা দ্বন্দ্ব
১১. ০১৪. আসহাবুল ফীলের ঘটনা
১২. ০১৫. নিযার ইবনে মা’আদের বংশধর
১৩. ০১৬. আবদুল মুত্তালিব বিন হাশিমের সন্তান-সন্ততি
১৪. ০১৭. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিতামাতা
১৫. ০১৮. যমযাম কূপ খনন ও সে বিষয়ে সৃষ্ট মতবিরোধ
১৬. ০১৯. আবদুল মুত্তালিব কর্তৃক তার পুত্রকে কুরবানীর মানত
১৭. ০২০. মহানবীর (সা) আমিনার গর্ভে থাকাকালের ঘটনাবলী
১৮. ০২১. রাসূলুল্লাহর (সা) জন্ম
১৯. ০২২. হালীমার কথা
২০. ০২৩. বক্ষ বিদারণের ঘটনা
২১. ০২৪. দাদার অভিভাবকত্বে
২২. ০২৫. চাচা আবু তালিবের অভিভাবকত্বে
২৩. ০২৬. পাদ্রী বাহীরার ঘটনা
২৪. ০২৭. ফিজারের যুদ্ধ
২৫. ০২৮. খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহার সাথে বিয়ে
২৬. ০২৯. ওয়ারাকা বিন নাওফেলের ভাষ্য
২৭. ০৩০. পবিত্র কাবার পুনর্নির্মাণ
২৮. ০৩১. আরব গণক, ইহুদী পুরেহিত ও খৃস্টান ধর্মযাজকদের ভবিষ্যদ্বাণী
২৯. ০৩২. রাসূলুল্লাহর (সা) দৈহিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য
৩০. ০৩৩. ইনজীলে রাসূল্লাহর বিবরণ
৩১. ০৩৪. নবুওয়াত লাভ
৩২. ০৩৫. কুরআন নাযিলের সূচনা
৩৩. ০৩৬. খাদীজা বিনতে খুয়াইলিদের ইসলাম গ্রহণ
৩৪. ০৩৭. ওহীর বিরতি
৩৫. ০৩৮. প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী
৩৬. ০৩৯. প্রকাশ্য দাওয়াত
৩৭. ০৪০. কুরআন সম্পর্কে ওয়ালীদ ইবনে মুগীরার মন্তব্য
৩৮. ০৪১. রাসূলুল্লাহর (সা) ওপও উৎপীড়নের বিবরণ
৩৯. ০৪২. হামযার ইসলাম গ্রহণ
৪০. ০৪৩. রাসূল্লাহর (সা) আন্দেলন প্রতিরোধে উতবার ফন্দি
৪১. ০৪৪. কুরাইশ নেতাদের সাথে রাসূলুল্লাহর (সা) কথোপকথন
৪২. ০৪৫. আবু জাহলের আচরণ
৪৩. ০৪৬. নাদার ইবনে হারেনের বিবরণ
৪৪. ০৪৭. দুর্বল মুসলমানদের ওপর মুশরিকদের অত্যাচার
৪৫. ০৪৮. আবিসিনিয়ায় মুসলমানদের প্রথম হিজরাত
৪৬. ০৪৯. মুহাজিরদের ফিরিয়ে আনার জন্য আবিসিনিয়ায় কুরাইশদের দূত প্রেরণ
৪৭. ০৫০. উমার ইবনুল খাত্তাবের ইসলাম গ্রহণ
৪৮. ০৫১. চুক্তিনামার বিবরণ
৪৯. ০৫২. রাসূলুল্লাহর (সা) ওপর কুরাইশদের নির্যাতন
৫০. ০৫৩. আবিসিনিয়া থেকে মক্কার লোকদের ইসলাম গ্রহণের খবর শুনে মুহাজিরদের প্রত্যাবর্তন
৫১. ০৫৪. চুক্তি বাতির হওয়ার কাহিনী
৫২. ০৫৫. ইরাশ গোত্রের এক ব্যক্তির আবু জাহলের নিকট উট বিক্রির ঘটনা
৫৩. ০৫৬. ইসরা বা রাত্রীকালীন সফর
৫৪. ০৫৭. মিরাজের ঘটনা
৫৫. ০৫৮. আবু তালিব ও খাদীজার ইন্তিকাল
৫৬. ০৫৯. সাহায্য লাভের আশায় বনু সাকীফ গোত্রের শরণাপন্ন হওয়া
৫৭. ০৬০. নাসীবীনের জ্বীনদের ঘটনা
৫৮. ০৬১. ইসলামের দাওয়াত পৌঁছতে রাসূলুল্লাহ (সা) সব গোত্রের কাছে হাজির হলেন
৫৯. ০৬২. মদীনায় ইসলাম বিস্তারের সূচনা
৬০. ০৬৩. মদীনায় প্রথম বাইয়াত
৬১. ০৬৪. আকাবার দ্বিতীয় বাইয়াত
৬২. ০৬৫. আকাবার শেষ বাইয়াত ও তার শর্তাবলী
৬৩. ০৬৬. সশস্ত্র যুদ্ধের নির্দেশ লাভ
৬৪. ০৬৭. মুসলমানদের মদীনায় হিজরাত করার অনুমতি লাভ
৬৫. ০৬৮. মদীনায় হিজরাতকারী মুসলমানদের বিবরণ
৬৬. ০৬৯. রাসূলুল্লাহর (সা) হিজরাত
৬৭. ০৭০. কুবায় উপস্থিতি
৬৮. ০৭১. মদীনায় উপস্থিতি
৬৯. ০৭২. মদীনাতে ভাষণ দান ও চুক্তি সম্পাদন
৭০. ০৭৩. আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে ভ্রাতৃ সম্পর্ক স্থাপন
৭১. ০৭৪. আযানের সূচনা
৭২. ০৭৫. কতিপয় সাহাবীর রোগাক্রান্ত হওয়ার বিবরণ
৭৩. ০৭৬. হিজরাতের তারিখ
৭৪. ০৭৭. প্রথম যুদ্ধাভিযান
৭৫. ০৭৮. উবাইদা ইবনে হারিসের নেতৃত্বে অভিযান । রাসূলুল্লাহ (সা) নিজে এই যুদ্ধের ঝান্ডা বেঁধেছিলেন
৭৬. ০৭৯. সমুদ্র উপকূলেন দিকে হামযার নেতৃত্বে অভিযান
৭৭. ০৮০. বুয়াত অভিযান
৭৮. ০৮১. উশাইরা অভিযান
৭৯. ০৮২. সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাসের সেতৃত্বে সামরিক অভিযান
৮০. ০৮৩. সাফওয়ান অভিযান : প্রথম বদর অভিযান
৮১. ০৮৪. আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশের নেতৃত্বে সামরিক অভিযান
৮২. ০৮৫. কিবলা পরিবর্তন
৮৩. ০৮৬. বদরের যুদ্ধ
৮৪. ০৮৭. বনু সুলাইম অভিযান
৮৫. ০৮৮. সাওয়ীক অভিযান
৮৬. ০৮৯. যূ-আমার অভিযান
৮৭. ০৯০. বাহরানের ফুরু অভিযান
৮৮. ০৯১. বনু কাইনুকার যুদ্ধ
৮৯. ০৯২. যায়িদ ইবনে হারিসার কারাদা অভিযান
৯০. ০৯৩. উহুদ যুদ্ধ
৯১. ০৯৪. হিজরী তৃতীয় সন : রাজী সফর
৯২. ০৯৫. বীরে মাউনার ঘটনা (৪র্থ হিজরী)
৯৩. ০৯৬. বনু নাবীরের বহিষ্কার (চতুর্থ হিজরী)
৯৪. ০৯৭. যাতুর রিকা অভিযান (৪র্থ হিজরী)
৯৫. ০৯৮. দ্বিতীয় বদর অভিযান (৪র্থ হিজরী সন)
৯৬. ০৯৯. দুমাতুল জান্দাল অভিযান (৫ম হিজরী: রবিউল আউয়াল)
৯৭. ১০০. খন্দক যুদ্ধ (৫ম হিজরী, শাওয়াল)
৯৮. ১০১. বনু কুরাইযা অভিযান (৫ম হিজরী)
৯৯. ১০২. যী কারাদ অভিযান
১০০. ১০৩. বনু মুসতালিক অভিযান
১০১. ১০৪. ৬ষ্ঠ হিজরী সনে বনু মুসতালিক অভিযানকালে অপবাদের ঘটনা
১০২. ১০৫. হুদাইবিয়ার ঘটনা
১০৩. ১০৬. বাইয়াতু রিদওয়ান
১০৪. ১০৭. শান্তিচুক্তি বা হুদাইবিয়ার সন্ধি
১০৫. ১০৮. খাইবার বিজয়: ৭ম হিজরীর মুহাররাম মাস
১০৬. ১০৯. জাফর ইবনে আবু তালিবের আবিসিনিয়া থেকে প্রত্যাবর্তন
১০৭. ১১০. উমরাতুল কাযাঃ ৭ম হিজরী সনঃ জিলকাদ মাস
১০৮. ১১১. মুতার যুদ্ধঃ ৮ম হিজরী সনঃ জামাদিউল উলা
১০৯. ১১২. মক্কা বিজয়ঃ ৮ম হিজরী, রমাযান মাস
১১০. ১১৩. হুনাইনের যুদ্ধ: ৮ম হিজরী
১১১. ১১৪. তায়েফ যুদ্ধ: ৮ম হিজরী সন
১১২. ১১৫. হাওয়াযিনের জমিজমা, যুদ্ধবন্দী, তাদের কিছুসংখ্যক লোককে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য উপঢৌকন দান এবং কিচু লোককে পুরস্কার প্রদানের বিবরণ
১১৩. ১১৬. জি’রানা থেকে রাসূলুল্লাহর (সা) উমরা পালন
১১৪. ১১৭. তায়েফ ত্যাগের পর কা’ব ইবনে যুহাইরের ইসলাম গ্রহণ
১১৫. ১১৮. তাবুক যুদ্ধ
১১৬. ১১৯. দুমার শাসনকর্তা উকায়দের-এর নিকট রাসূলুল্লাহ (সা) কর্তৃক খালিদ ইবনে ওয়ালীদকে প্রেরণ
১১৭. ১২০. নবম হিজরীর রমযান মাসে বনু সাকীফ গোত্রের প্রতিনিধি দলের আগমন ও ইসলাম গ্রহণ
১১৮. ১২১. নবম হিজরী সালকে ‘প্রতিনিধিদল আগমনের বছর’ হিসেবে আখ্যায়িতকরণ। সূরা আন নাছর এই বছরই নাযিল হয়
১১৯. ১২২. বনু তামীমের প্রতিনিধিদলের আগমন ও সূরা হুজুরাত নাযিল
১২০. ১২৩. বনু আমেরের প্রতিনিধি আমের ইবনে তুফাইল ও আরবাদ ইবনে কায়েসের ঘটনা
১২১. ১২৪. জারুদের নেতৃত্বে বনু আবদুল কায়েসের প্রতিনিধিদলের আগমন
১২২. ১২৫. মুসাইলিমা কাযযাবসহ বনু হানীফা প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৩. ১২৬. হাতিম তাঈ-এর আদীর ঘটনা
১২৪. ১২৭. ফারওয়া ইবনে মুসাইক মুরাদীর আগমন
১২৫. ১২৮. আমর ইবনে মা’দী ইয়াকরাবের নেতৃত্বে বনু যুবাইদের প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৬. ১২৯. আশয়াস ইবনে কায়েসের নেতৃত্বে কিন্দার প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৭. ১৩০. সুরাদ ইবনে আবদুল্লাহ আযদীর আগমন
১২৮. ১৩১. হিমইয়ার বংশীয় রাজাদের দূতের আগমন
১২৯. ১৩২. মুয়ায ইবনে জাবালকে ইয়ামানে পাঠানোর সময় রাসূলুল্লাহর (সা) উপদেশ
১৩০. ১৩৩. অভিযান পরিচালনাকালে খালিদ ইবনে ওয়ালীদের (রা) হাতে বনু হারিস গোত্রের ইসলাম গ্রহণ
১৩১. ১৩৪. মিথ্যা নবুওয়াতের দাবীদার মুসইলিমা ও আসওয়াদ আনসীর বিবরণ
১৩২. ১৩৫. রাসূলুল্লাহর (সা) নিযুক্ত কর্মচারী ও আমীরগণের যাকাত আদায়ের অভিযান
১৩৩. ১৩৬. রাসূলুল্লাহর (সা) নিকট মুসাইলিমার চিঠি এবং রাসূলুল্লাহর পক্ষ থেকে তার জবাব
১৩৪. ১৩৭. বিদায় হজ্জ
১৩৫. ১৩৮. উসামা ইবনে যায়িদকে ফিলিস্তীনে প্রেরণ
১৩৬. ১৩৯. রাজা বাদশাহদের কাছে রাসূলুল্লাহর (সা) দূত প্রেরণ
১৩৭. ১৪০. সর্বশেষ অভিযান
১৩৮. ১৪১. রাসূলুল্লাহর (সা) পীড়ার সূচনা
১৩৯. ১৪২. রাসূলুল্লাহর (সা) স্ত্রীগণ বা উম্মুহাতুল মুমিনীনের বিবরণ
১৪০. ১৪৩. রাসূলুল্লাহর (সা) রোগ সংক্রান্ত অবশিষ্ট বিবরণ
১৪১. ১৪৪. নামাযের জামায়াতে আবু বাক্রের (রা) ইমামতি
১৪২. ১৪৫. বনু সায়েদা গোত্রের চত্বরে
১৪৩. ১৪৬. আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) ও ইমার (রা)- এর বর্ণনা
১৪৪. ১৪৭. রাসূলুল্লাহর (সা) কাফন-দাফন

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন