১৪৪. নামাযের জামায়াতে আবু বাক্রের (রা) ইমামতি

যুহরী বলেন: হামযা ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে উমারের কাছ থেকে আমি শুনেছি। আয়িশা (রা) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পীড়া অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেলে তিনি বললেন, “তোমরা আবু বাক্রকে নামায পড়িয়ে দিতে বল।” আমি বললাম, “ইয়া রাসূলাল্লাহ, আবু বকর অত্যন্ত কোমল হৃদয় মানুষ। তাঁর কন্ঠস্বর অত্যন্ত নীচু। কুরআন পড়তে গেলে প্রায়ই তাঁর কান্না পায়।” তিনি বললেন, “তাঁকে বল, নামায পড়িয়ে দিক।” আমি আবারও আমার কথার পুনরাবৃত্তি করলাম। তিনি বললেন, “তোমরা ইউসুফ আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে আচরণকারী মহিলাদের মত। যাও আবু বাক্রকে জামায়াতের ইমামতি করতে বল।” সত্য বলতে কি আমি আবু বাক্রকে (রা) ইমামতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছিলাম বলেই ঐ কথা বলেছিলাম। কারণ আমি জানতাম, যে কোন অঘটন ঘটলে লোকেরা আবু বাক্রকে (রা) দায়ী করবে এবং তাঁর ঘাড়েই দোষ চাপাবে। আমি জানতাম, লোকেরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্থলাভিষিক্ত লোককে কখনো পছন্দ করবে না। এসব কারণেই আমি তাঁকে এ দায়িত্ব থেকে দূরে রাখতে আগ্রহী ছিলাম।

আবদুল্লাহ ইবনে যামআ বলেন:

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোগ আশংকাজনক অবস্থায় পৌছার সময় আমি মুসলমানদের একটি দল সহ তাঁর কাছে উপস্থিত ছিলাম। এই সময় বিলাল (রা) তাঁকে নামায পড়তে ডাকলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “নামায পড়াতে পারে এমন একজনকে ইমামতি করতে বল।” প্রথমে আমার দেখা হলো উমার ইবনুল খাত্তাবের (রা) সাথে। আমি “হে উমার, আসুন নামায পড়ান।” উমার (রা) নামাযের ইমামতিতে দাঁড়িয়ে গেলেন। উমার ছিলেন উচ্চ কণ্ঠের অধিকারী। তিনি তাকবীর বললে তা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “আবু বাক্র কোথায়? এটা আল্লাহ ও মুসলমানগণের মনঃপূত নয়।” আবু বাক্রকে (রা) ডাকা হলো। উমার (রা) তাঁর আরম্ভ করা নামায শেষ করলে তিনি এলন। তারপর থেকে তিনিই নামায পড়াতে লাগলেন।

আবদুল্লাহ ইবনে যামআ বলেন: উমার (রা) আমাকে বললেন, “হে ইবনে যামআ, ধিক্ তোমাকে! তুমি আমার সাথে এ কি আচরণ করলে? তুমি যখন আমাকে নামায পড়তে বলেছিলে তখন আমি ভেবেছিলাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে নামায পড়াতে বলেছেন। তা না হলে আমি পড়াতাম না।” আমি বললাম, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে নির্দেশ দেননি আপনাকে নামায পড়াতে বলতে। তবে আবু বাক্রকে (রা) যখন পেলাম না তখন আমি উপস্থিত মুসলমানদের মধ্যে আপনাকেই নামায পড়ানোর জন্য সবচাইতে যোগ্য মনে করেছি।”

ইবনে ইসহাক বলেন: আনাস ইবনে মালিকের উদ্ধৃতি দিয়ে যুহরী আরো জানিয়েছেন যে, আল্লাহ যেদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে চিরদিনের জন্য আপন সান্নিধ্যে ডেকে নেন কেদিন ছিল সোমবার। মুসলমানগণ জামায়াতে ফজরের নামায আদায় করছিলেন ঠিক সে সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্দা তুলে এবং দরজা খুলে বেরিয়ে আয়িশার (রা) গৃহ সংলগ্ন দরজার চৌকাঠের ওপর দাঁড়ালেন। নামায আদায়কারী মুসলমানগণ তাঁকে এক নজর দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলেন। এ সময় খুশীতে তাঁরা নামাযই ভেঙ্গে ফেলার উপক্রম করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কারো সাহায্য ছাড়া একাকী দাঁড়ানো দেখে তাদের মন থেকে সকল দুশ্চিন্তা ও আশংকা মুহুর্তের মধ্যে দূর হয়ে গেল। তিনি তাদের নামায আদায়ের শৃংখলা দেখে খুশীতে মুচকি হাসলেন এবং ইংগিতে বললেন, “নামায ছেড়ে দিও না বরং শেষ কর।” সেদিন সেই মুহুর্তে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লামকে যেরূপ মনোহর ভঙ্গীতে দেখেছিলাম, তেমন আর কখনো দেখিনি। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে গেলেন। লোকেরা তাঁকে রোগতুক্ত দেখে যে যার কাজে চলে গেল্ আবু বাক্র (রা) ও ‘সুনাহ’ এলাকায় তাঁর পরিবারের কাছে ফিরে গেলেন। [৯৮. এই স্থানটিতে আবু বাকরের (রা) জমি ও বাড়ী ছিল এবং সেখানে তিনি সপরিবারে থাকতেন।]

মুহাম্মাদ ইবনে ইবরাহীম আমাকে কাসিম ইবনে মাহাম্মাদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন উমারের (রা) নামায পড়ানো তাকবীর শুনলেন তখন বললেন, “আবু বাক্র কোথায়? আল্লাহ ও মুসলমানগণের নিকট আবু বাক্র (রা) ছাড়া অন্যের ইমামতি গ্রহণযোগ্য নয়।” বস্তুতঃ উমার (রা) যদি তাঁর ইনতিকালের প্রাক্কালে একটি কথা না বলতেন তাহলে মুসলমানগণ সন্দেহাতীতভাবে বিশ্বাস করতো যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বাক্রকে (রা) খলীফা নিয়োগ করে গেছেন। কিন্তু উমার (রা) মৃত্যুর পূর্বে এ ধারণা বাতিল করে দিয়ে যান। তিনি বলেন, “আমি যদি খলিফা নিয়োগ করে যাই তাহলে (বুঝে নিও যে) যিনি আমার চেয়ে শ্রেষ্ঠতর ছিরেন তিনিও ওটা তাদের স্বাধীন বিবেচনার ওপর সোপর্দ করে গিয়েছিলেন।” অতঃপর উমার (রা) খলিফা নিয়োগ না করে মারা যাওয়ায় মুসলমানগণরা বুঝলো যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবু বাক্রকে খলিফা নিয়োগ কেের যাননি।

আবু বাক্র ইবনে আবদুল্লাহ আমাকে (ইবনে ইসহাককে) বলেছেন: সোমবার আুব বাক্র (রা) যখন ফজরের নামায পড়াচ্ছিলেন তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথায় ব্যন্ডেজ বেঁধে সেখানে ইপনীত হলেন। লোকেরা খুশী হয়ে কাতার থেকে সরে গেল। আবু বাক্র (রা) বুঝতে পারলেন যে, লোকজন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্যই এরূপ করেছে। তাই তিনি তাঁর স্থান থেকে পিছিয়ে আসলেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পিঠে হাত হাত দিয়ে সামনে ঠেলে দিয়ে বললেন, “তুমিই নামায পড়াও।” তারপর তিনি আবু বাক্রের (রা) ডান পাশে বসে নামায পড়লেন। নামায শেষে তিনি মুসল্লীদের দিকে মুখ ফিরিয়ে এত উচ্চস্বরে ভাষণ দিলেন যে, মসজিদের বাইরে থেকেও তা শোনা গিয়েছিল। তিনি বললেন, “হে জনমন্ডলী, জাহান্নামের আগুনকে উত্তপ্ত করা হয়েছে। আর দুর্যোগসমূহ অন্ধাকরা রাতের মত ঘনিয়ে এসেছে। মনে রেখ, আমার নিজস্ব কোন জিনিস তোমাধের মেনে চলতে হচ্ছে না। আমি কুরআনের জিনিস নিষিদ্ধ করিনি।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ভাষণ শেষ করলে আবু বাক্র (রা) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্বাস্থ্য স্বাভাবিক হয়ে এসেছে ভেবে এবং দিনটি স্ত্রী বিনতে খারেজার পালার দিন বলে তাঁর অনুমতি নিয়ে স্বীয় পরিবারের কাছে ‘সুনাহে’ চলে গেলেন। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গ্রহে প্রবেশ করলেন।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) বলেন, সেদিন আলী ইবনে আবু তালিব (রা) রাসূলুল্লাহ সাল্লøাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট থেকে বাইরে এলে মুসলমান জনতা তাঁকে জিজ্ঞেস করলো, “হে আবুল হাসান, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেমন আছেন?” তিনি বললেন, “আলহামদুল্লিাহ”। তিনি সেরে উঠেছেন।” তখন আব্বাস (রা) তাঁর হাত ধরে বললেন, “আল্লাহর কসম, কয়েকদিন পর তোমাকে নেতৃত্ব নিতে হবে। আল্লহর কসম, আবুদল মুত্তালিবের ছেলেদের মুখে মৃত্যুর লক্ষ করতাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখেও তা দেখতে পেয়েছি। চল, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে যাই। যদি তাঁর অবর্তমানে ইসলাম ও মুসলমানদের দায়িত্ব আমাদের ওপর বর্তে তাহলে আমরা তা বুঝে নেব। আর যদি তা অন্যদের হাতে যায় তাহলে তাঁকে বলবো, আমাদের দিকে নজর দেয়ার জন্য তিনি যেন সবাইবে নির্দেশ দেন।” আলী (রা) বললেন, “আমি যাবো না। তিনি যদি এ দায়িত্ব আমাদেরকে দিতে অস্বীকার করেন তাহলে তাঁর পরে আর কেউ দেবে না।” অতঃপর সেইদিনই দুপুরের কাছাকাছি সময়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইনতিকাল করলেন।

আয়িশা (রা) বলেনঃ

সেদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদ থেকে সরাসরি আমার কাছে এলেন এবং আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লেন। এ অব্যবহিত পর আবু বকরের (রা) পরিবারের এক ব্যক্তি একটা সবুজ মিসওয়াক নিয়ে আমার কাছে এল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাতের দিকে এমনভাবে তাকালেন যে, মনে হলো তিনি ওটা চাইলেন। আমি বললাম, “ইয়া রাসূলাল্লাহ, আপনাকে কি মিসওয়াকটা দেবো?” তিনি বললেন, “হাঁ।” অতঃপর তাঁকে দিলাম। তখন তিনি তা নিয়ে খুব বেশী করে মিসওয়াক কররেন এবং তারপর তা রেখে দিলেন। এরপর রাসূলুল।লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দেহ আমার কোলের ওপর ক্রমেই ভারী হয়ে উঠতে লাগলো। তাঁর মুখের দিকে তাকালাম। দেখলাম, তাঁর চোখ বিস্ফারিত হয়ে আসছে। তিনি বলছিলেন, “জান্নাতের চেয়েও শ্রেষ্ঠ যে বন্ধু, তাঁকে চাই?” আমি বললাম, “আপনাকে নিজের মনের মত জিনিস চাইতে বলা হয়েছে। আপনিও উপযুক্ত জিনিস চেয়ে নিয়েছেন।”

এরপর তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। ইবনে ইসহাক বলেন: আয়িশা (রা) বলেছেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার গৃহে অবস্থানের পালার সময়ে আমার বুকের ওপর মাথা রেখে ইনতিকাল করেছেন। আমি এক্ষেত্রে কারো ওপর যুলুম করিনি। আমি যে ইনতিকালের সময় তাঁকে কোলে ধরে রেখেছিলাম তারপর তাঁকে বালিশে শুইয়ে দিয়ে অন্যান্য মহিলাদের সাথে মুখ ও বুক চাপড়াতে আরম্ভ করেছিলাম – সে সব আমর বোকামী, তারুণ্যসুলভ সরলতা ছাড়া কিছু নয়।”

আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, যে সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইনতিকাল করলেন, তখন উমার ইবনুল খাত্তাব (রা) দাঁড়িয়ে বলতে লাগলেন, “কতকগুলো মুনাফিক বলে বেড়াচ্ছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মারা গেছেন। আল্লাহর কসম, তিনি মারা যাননি। তিনি কেবল মূসা আলাইহিস সালামের সত সাময়িকভাবে আল্লাহর কাছে গিয়েছেন। মূসা (আ) চল্লিশ দিনের জন্য আল্লাহর কাছে গিয়েছিলেন। তখন প্রচার করা হয়েছিল যে, তিনি মারা গেছেন। অথচ তার পরে তিনি ফিরে এসেছিলেন। আল্লাহর কসম, মূসার (আ) মত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবার ফিরে আসবেন। এখন যার বলছে যে তিনি মারা গেছেন তাদের হাত পা কেটে দেয়া হবে।”

আবু বাক্র (রা) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইনতিকালেরর খবর জানতে পেরে ছুটে এলেন্ উমার (রা) থকনও ঐ কথা বলে চলেছেন। সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে তিনি আয়িশার (রা) ঘরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে চলে গেলেন। তখন তাঁকে ইয়ামনী কাপড় দিয়ে ঘরের এক কোণে ঢেকে রাখা হয়েছিল। এগিয়ে গিয়ে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখের কাপড় সরিয়ে চুমু খেলেন। অতঃপর বললেন, “আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক। আল্লাহ আপনার জন্য যে মৃত্যু নির্ধারিত করে রেখেছিলেন তা আপনি আস্বাদন করেছেন। এরপর আপনার কাছে আর কখনো মৃত্যু আসবে না।” অতঃপর মুখ ঢেকে দিলেন। তারপর বাহিরে বেরিয়ে দেখেন উমার (রা) সেই একই কথা বলে চলেছেন। তিনি বললেন, “উমার। তুমি ক্ষান্ত হও। চুপ কর।” উমার (রা) কছিুতেই থামতে রাজী হচ্ছিলেন না। এ অবস্থা দেখে আবু বাক্র (রা) জনগণকে লক্ষ্য করে কথা বলতে শুরু করলেন। তাঁর কথা শুনে জনতা উমারকে (রা) রেখে তাঁর দিকে এগিয়ে এল। তিনি আল্লাহর প্রশংসা করার পর বললেন,

“হে জনমন্ডলী, যে ব্যক্তি মুহাম্মাদের পূজা করতো সে জেনে রাখুক যে, মুহাম্মাদ মারা গেছেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদাত করতো সে জেনে রাখুক যে, আল্লাহ চিরঞ্জীব ও অবিনশ্বর।” তারপর তিনি এই আয়াত তিলাওয়াত করলেন-

[আআরবী ******]

“মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল বৈ আর কিছুই নন। তার পূর্বে বহু রাসূলস অতিবাহিত হয়েছেন। তিনি যদি মারা যান কিংবা নিহত হন তাহলে কি তোমরা ইসলাম থেকে ফিরে যাবে? যে ফিরে যাবে সে আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবে না। কৃতজ্ঞ লোকদের আল্লাহ যথোচিত পুরস্কার দেবেন।” (আলে ইমরান)

এরপর মানুষের মধ্যে এমন বাবান্তর ঘটলো যে, মনে হচ্ছিল তারা যেন আবু বাকরের মুখে শোনার আগে এ আয়াত কখনো শোনেইনি। তার আয়াতটি আবু বাকরের কাছ থেকে মুখস্থ করে নিল এবং অনবরত তা আবৃত্তি করতে লাগলো। আবু হুরাইরা বলেন,, উমার (রা) বলেছেন, “আবু বাকরের মুখে এ আয়াত শোনার পর আমি হতবাক ও হতবুদ্ধি হয়ে পড়ে গেলাম। পায়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না। আমি তখনই অনুভব করলাম যে,, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াাসল্লাম সত্যিই ইনতিকাল করেছেন।”

সকল অধ্যায়

১. ০০৪. সীরাতে ইবনে ইসহাক
২. ০০৫. সীরাতে ইবনে হিশাম
৩. ০০৬. সীরাতে ইবনে হিশামের মর্যাদা
৪. ০০৭. সীরাতে ইবনে হিশামের বক্ষ্যমাণ সংক্ষিপত রূপ
৫. ০০৮. মুহাম্মদ (সা) থেকে আদম (আ) পর্যন্ত উর্ধতন বংশ পরম্পরা
৬. ০০৯. ইসমাঈর (আ) এর অধস্তন পুরুষদের বংশ পরম্পরা
৭. ০১০. রাবিয়া ইবনে নসরের স্বপ্ন
৮. ০১১. আবু কারব হাসসান ইবনে তুব্বান আস’আদ কর্তৃক ইয়ামতান রাজ্য অধিকার এবং ইয়াসরিব আক্রমণ
৯. ০১২. হাবশীদের দখলে ইয়ামান
১০. ০১৩. আরিয়াত ও আবরাহা দ্বন্দ্ব
১১. ০১৪. আসহাবুল ফীলের ঘটনা
১২. ০১৫. নিযার ইবনে মা’আদের বংশধর
১৩. ০১৬. আবদুল মুত্তালিব বিন হাশিমের সন্তান-সন্ততি
১৪. ০১৭. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পিতামাতা
১৫. ০১৮. যমযাম কূপ খনন ও সে বিষয়ে সৃষ্ট মতবিরোধ
১৬. ০১৯. আবদুল মুত্তালিব কর্তৃক তার পুত্রকে কুরবানীর মানত
১৭. ০২০. মহানবীর (সা) আমিনার গর্ভে থাকাকালের ঘটনাবলী
১৮. ০২১. রাসূলুল্লাহর (সা) জন্ম
১৯. ০২২. হালীমার কথা
২০. ০২৩. বক্ষ বিদারণের ঘটনা
২১. ০২৪. দাদার অভিভাবকত্বে
২২. ০২৫. চাচা আবু তালিবের অভিভাবকত্বে
২৩. ০২৬. পাদ্রী বাহীরার ঘটনা
২৪. ০২৭. ফিজারের যুদ্ধ
২৫. ০২৮. খাদীজা রাদিয়াল্লাহু আনহার সাথে বিয়ে
২৬. ০২৯. ওয়ারাকা বিন নাওফেলের ভাষ্য
২৭. ০৩০. পবিত্র কাবার পুনর্নির্মাণ
২৮. ০৩১. আরব গণক, ইহুদী পুরেহিত ও খৃস্টান ধর্মযাজকদের ভবিষ্যদ্বাণী
২৯. ০৩২. রাসূলুল্লাহর (সা) দৈহিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য
৩০. ০৩৩. ইনজীলে রাসূল্লাহর বিবরণ
৩১. ০৩৪. নবুওয়াত লাভ
৩২. ০৩৫. কুরআন নাযিলের সূচনা
৩৩. ০৩৬. খাদীজা বিনতে খুয়াইলিদের ইসলাম গ্রহণ
৩৪. ০৩৭. ওহীর বিরতি
৩৫. ০৩৮. প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী
৩৬. ০৩৯. প্রকাশ্য দাওয়াত
৩৭. ০৪০. কুরআন সম্পর্কে ওয়ালীদ ইবনে মুগীরার মন্তব্য
৩৮. ০৪১. রাসূলুল্লাহর (সা) ওপও উৎপীড়নের বিবরণ
৩৯. ০৪২. হামযার ইসলাম গ্রহণ
৪০. ০৪৩. রাসূল্লাহর (সা) আন্দেলন প্রতিরোধে উতবার ফন্দি
৪১. ০৪৪. কুরাইশ নেতাদের সাথে রাসূলুল্লাহর (সা) কথোপকথন
৪২. ০৪৫. আবু জাহলের আচরণ
৪৩. ০৪৬. নাদার ইবনে হারেনের বিবরণ
৪৪. ০৪৭. দুর্বল মুসলমানদের ওপর মুশরিকদের অত্যাচার
৪৫. ০৪৮. আবিসিনিয়ায় মুসলমানদের প্রথম হিজরাত
৪৬. ০৪৯. মুহাজিরদের ফিরিয়ে আনার জন্য আবিসিনিয়ায় কুরাইশদের দূত প্রেরণ
৪৭. ০৫০. উমার ইবনুল খাত্তাবের ইসলাম গ্রহণ
৪৮. ০৫১. চুক্তিনামার বিবরণ
৪৯. ০৫২. রাসূলুল্লাহর (সা) ওপর কুরাইশদের নির্যাতন
৫০. ০৫৩. আবিসিনিয়া থেকে মক্কার লোকদের ইসলাম গ্রহণের খবর শুনে মুহাজিরদের প্রত্যাবর্তন
৫১. ০৫৪. চুক্তি বাতির হওয়ার কাহিনী
৫২. ০৫৫. ইরাশ গোত্রের এক ব্যক্তির আবু জাহলের নিকট উট বিক্রির ঘটনা
৫৩. ০৫৬. ইসরা বা রাত্রীকালীন সফর
৫৪. ০৫৭. মিরাজের ঘটনা
৫৫. ০৫৮. আবু তালিব ও খাদীজার ইন্তিকাল
৫৬. ০৫৯. সাহায্য লাভের আশায় বনু সাকীফ গোত্রের শরণাপন্ন হওয়া
৫৭. ০৬০. নাসীবীনের জ্বীনদের ঘটনা
৫৮. ০৬১. ইসলামের দাওয়াত পৌঁছতে রাসূলুল্লাহ (সা) সব গোত্রের কাছে হাজির হলেন
৫৯. ০৬২. মদীনায় ইসলাম বিস্তারের সূচনা
৬০. ০৬৩. মদীনায় প্রথম বাইয়াত
৬১. ০৬৪. আকাবার দ্বিতীয় বাইয়াত
৬২. ০৬৫. আকাবার শেষ বাইয়াত ও তার শর্তাবলী
৬৩. ০৬৬. সশস্ত্র যুদ্ধের নির্দেশ লাভ
৬৪. ০৬৭. মুসলমানদের মদীনায় হিজরাত করার অনুমতি লাভ
৬৫. ০৬৮. মদীনায় হিজরাতকারী মুসলমানদের বিবরণ
৬৬. ০৬৯. রাসূলুল্লাহর (সা) হিজরাত
৬৭. ০৭০. কুবায় উপস্থিতি
৬৮. ০৭১. মদীনায় উপস্থিতি
৬৯. ০৭২. মদীনাতে ভাষণ দান ও চুক্তি সম্পাদন
৭০. ০৭৩. আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে ভ্রাতৃ সম্পর্ক স্থাপন
৭১. ০৭৪. আযানের সূচনা
৭২. ০৭৫. কতিপয় সাহাবীর রোগাক্রান্ত হওয়ার বিবরণ
৭৩. ০৭৬. হিজরাতের তারিখ
৭৪. ০৭৭. প্রথম যুদ্ধাভিযান
৭৫. ০৭৮. উবাইদা ইবনে হারিসের নেতৃত্বে অভিযান । রাসূলুল্লাহ (সা) নিজে এই যুদ্ধের ঝান্ডা বেঁধেছিলেন
৭৬. ০৭৯. সমুদ্র উপকূলেন দিকে হামযার নেতৃত্বে অভিযান
৭৭. ০৮০. বুয়াত অভিযান
৭৮. ০৮১. উশাইরা অভিযান
৭৯. ০৮২. সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাসের সেতৃত্বে সামরিক অভিযান
৮০. ০৮৩. সাফওয়ান অভিযান : প্রথম বদর অভিযান
৮১. ০৮৪. আবদুল্লাহ ইবনে জাহাশের নেতৃত্বে সামরিক অভিযান
৮২. ০৮৫. কিবলা পরিবর্তন
৮৩. ০৮৬. বদরের যুদ্ধ
৮৪. ০৮৭. বনু সুলাইম অভিযান
৮৫. ০৮৮. সাওয়ীক অভিযান
৮৬. ০৮৯. যূ-আমার অভিযান
৮৭. ০৯০. বাহরানের ফুরু অভিযান
৮৮. ০৯১. বনু কাইনুকার যুদ্ধ
৮৯. ০৯২. যায়িদ ইবনে হারিসার কারাদা অভিযান
৯০. ০৯৩. উহুদ যুদ্ধ
৯১. ০৯৪. হিজরী তৃতীয় সন : রাজী সফর
৯২. ০৯৫. বীরে মাউনার ঘটনা (৪র্থ হিজরী)
৯৩. ০৯৬. বনু নাবীরের বহিষ্কার (চতুর্থ হিজরী)
৯৪. ০৯৭. যাতুর রিকা অভিযান (৪র্থ হিজরী)
৯৫. ০৯৮. দ্বিতীয় বদর অভিযান (৪র্থ হিজরী সন)
৯৬. ০৯৯. দুমাতুল জান্দাল অভিযান (৫ম হিজরী: রবিউল আউয়াল)
৯৭. ১০০. খন্দক যুদ্ধ (৫ম হিজরী, শাওয়াল)
৯৮. ১০১. বনু কুরাইযা অভিযান (৫ম হিজরী)
৯৯. ১০২. যী কারাদ অভিযান
১০০. ১০৩. বনু মুসতালিক অভিযান
১০১. ১০৪. ৬ষ্ঠ হিজরী সনে বনু মুসতালিক অভিযানকালে অপবাদের ঘটনা
১০২. ১০৫. হুদাইবিয়ার ঘটনা
১০৩. ১০৬. বাইয়াতু রিদওয়ান
১০৪. ১০৭. শান্তিচুক্তি বা হুদাইবিয়ার সন্ধি
১০৫. ১০৮. খাইবার বিজয়: ৭ম হিজরীর মুহাররাম মাস
১০৬. ১০৯. জাফর ইবনে আবু তালিবের আবিসিনিয়া থেকে প্রত্যাবর্তন
১০৭. ১১০. উমরাতুল কাযাঃ ৭ম হিজরী সনঃ জিলকাদ মাস
১০৮. ১১১. মুতার যুদ্ধঃ ৮ম হিজরী সনঃ জামাদিউল উলা
১০৯. ১১২. মক্কা বিজয়ঃ ৮ম হিজরী, রমাযান মাস
১১০. ১১৩. হুনাইনের যুদ্ধ: ৮ম হিজরী
১১১. ১১৪. তায়েফ যুদ্ধ: ৮ম হিজরী সন
১১২. ১১৫. হাওয়াযিনের জমিজমা, যুদ্ধবন্দী, তাদের কিছুসংখ্যক লোককে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য উপঢৌকন দান এবং কিচু লোককে পুরস্কার প্রদানের বিবরণ
১১৩. ১১৬. জি’রানা থেকে রাসূলুল্লাহর (সা) উমরা পালন
১১৪. ১১৭. তায়েফ ত্যাগের পর কা’ব ইবনে যুহাইরের ইসলাম গ্রহণ
১১৫. ১১৮. তাবুক যুদ্ধ
১১৬. ১১৯. দুমার শাসনকর্তা উকায়দের-এর নিকট রাসূলুল্লাহ (সা) কর্তৃক খালিদ ইবনে ওয়ালীদকে প্রেরণ
১১৭. ১২০. নবম হিজরীর রমযান মাসে বনু সাকীফ গোত্রের প্রতিনিধি দলের আগমন ও ইসলাম গ্রহণ
১১৮. ১২১. নবম হিজরী সালকে ‘প্রতিনিধিদল আগমনের বছর’ হিসেবে আখ্যায়িতকরণ। সূরা আন নাছর এই বছরই নাযিল হয়
১১৯. ১২২. বনু তামীমের প্রতিনিধিদলের আগমন ও সূরা হুজুরাত নাযিল
১২০. ১২৩. বনু আমেরের প্রতিনিধি আমের ইবনে তুফাইল ও আরবাদ ইবনে কায়েসের ঘটনা
১২১. ১২৪. জারুদের নেতৃত্বে বনু আবদুল কায়েসের প্রতিনিধিদলের আগমন
১২২. ১২৫. মুসাইলিমা কাযযাবসহ বনু হানীফা প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৩. ১২৬. হাতিম তাঈ-এর আদীর ঘটনা
১২৪. ১২৭. ফারওয়া ইবনে মুসাইক মুরাদীর আগমন
১২৫. ১২৮. আমর ইবনে মা’দী ইয়াকরাবের নেতৃত্বে বনু যুবাইদের প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৬. ১২৯. আশয়াস ইবনে কায়েসের নেতৃত্বে কিন্দার প্রতিনিধিদলের আগমন
১২৭. ১৩০. সুরাদ ইবনে আবদুল্লাহ আযদীর আগমন
১২৮. ১৩১. হিমইয়ার বংশীয় রাজাদের দূতের আগমন
১২৯. ১৩২. মুয়ায ইবনে জাবালকে ইয়ামানে পাঠানোর সময় রাসূলুল্লাহর (সা) উপদেশ
১৩০. ১৩৩. অভিযান পরিচালনাকালে খালিদ ইবনে ওয়ালীদের (রা) হাতে বনু হারিস গোত্রের ইসলাম গ্রহণ
১৩১. ১৩৪. মিথ্যা নবুওয়াতের দাবীদার মুসইলিমা ও আসওয়াদ আনসীর বিবরণ
১৩২. ১৩৫. রাসূলুল্লাহর (সা) নিযুক্ত কর্মচারী ও আমীরগণের যাকাত আদায়ের অভিযান
১৩৩. ১৩৬. রাসূলুল্লাহর (সা) নিকট মুসাইলিমার চিঠি এবং রাসূলুল্লাহর পক্ষ থেকে তার জবাব
১৩৪. ১৩৭. বিদায় হজ্জ
১৩৫. ১৩৮. উসামা ইবনে যায়িদকে ফিলিস্তীনে প্রেরণ
১৩৬. ১৩৯. রাজা বাদশাহদের কাছে রাসূলুল্লাহর (সা) দূত প্রেরণ
১৩৭. ১৪০. সর্বশেষ অভিযান
১৩৮. ১৪১. রাসূলুল্লাহর (সা) পীড়ার সূচনা
১৩৯. ১৪২. রাসূলুল্লাহর (সা) স্ত্রীগণ বা উম্মুহাতুল মুমিনীনের বিবরণ
১৪০. ১৪৩. রাসূলুল্লাহর (সা) রোগ সংক্রান্ত অবশিষ্ট বিবরণ
১৪১. ১৪৪. নামাযের জামায়াতে আবু বাক্রের (রা) ইমামতি
১৪২. ১৪৫. বনু সায়েদা গোত্রের চত্বরে
১৪৩. ১৪৬. আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) ও ইমার (রা)- এর বর্ণনা
১৪৪. ১৪৭. রাসূলুল্লাহর (সা) কাফন-দাফন

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন