অমোঘ আঁধার রাতে

জীবনানন্দ দাশ

অমোঘ আঁধার রাতে
 সাগরের চিতা ঢেউয়ে
ফেনার উপর দিয়ে ভেসে যেতে যেতে লক্ষ লক্ষ মাইল
 পাখিদের প্রাণে মৃত্যু আসে
সূর্যমন্দিরে পাটাতনে লোক কোলাহলে জেগে আমরাও
 আমাদের পাঁজরের তলে সেই নিশিত সমুদ্র আবিষ্কার করি।

কারও সাথে মধ্যাহ্নে ক্ষমাহীন পথে
 বারবার চোখাচোখি হয়
 সেই চোখাচোখি: মৃত্যু।

কোনো এক প্রেম আমার দেহের সাথে নিভে গিয়ে
 রজনীর প্রিয়তম জল হল নাক’
 কিষাণের শস্য ঘরে যাবে— সোনা হবে
 তবুও ঠিকানা তার গোলকধাঁধার পথে
 এই বিমূঢ়তা;
 ঢের দূর থেকে পর্বতকে নীল ব’লে মনে হয়
 নীলিমার এই অসহায়, অনৃত আচার;
 প্রস্তরিত
 এইসব মৃত্যু;
 এই মৃত্যু মহোৎসব
 অবিকল ব্রহ্মপুত্র ঢেউয়ের উপর দিয়ে একপাল বেঘরা পাখির মতো
 আমাদের ধীর বায়ু বিতাড়িত ক’রে চালাতেছে
 আরো দূর অসম্ভব সমুদ্রের হেঁয়ালির দিকে।

 তবুও আহ্নিক কাজ আমাদের
 নিভৃতের তরে নয়—নিখিলের তরে।
 অদম্য অঙ্গার হয়ে যায় সব
 জীবনের মেঝের উপর দিয়ে আগুনের মতো জ্বলে—
 হে পুষা, তোমার নয়—
 মৃত্যুর আমোদে ক্রম স্ফীয়মান স্ফূলিঙ্গের মতো।  যারা পিছে আসিতেছে
 তাহাদের লোক উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে
 আমাদের লীয়মান আলোককে তবু
হে পুষা, তোমার জ্যোতি ব’লে তারা চিনিবে না কোনো দিন।

সকল অধ্যায়

১. কোথাও নতুন বুদ্ধের যেন জন্ম হয়
২. জীবনের সাথে আমাদের রূঢ় পরিচয় হয়েছিল
৩. না জানি কী সব মঙ্গলের দিকে চেয়ে
৪. কোথাও অনেক দূর যেতে হবে
৫. হয়তো বা কোনো দূর পিরামিড দেখা যাবে
৬. আবার নতুন করে পৃথিবীরে বানাবার অধিকার আমাদের নেই
৭. আমাদের সাহস হারায়ে গেছে বহুদিন
৮. যদিও রয়েছি বেঁচে
৯. এই এত পুরোনো নগরী
১০. যেন কোনো যাদুঘরে ঘুমায়েছে
১১. ঢের দূর থেকে বন্ধুজনারে চেনা যায়
১২. মনে হয় যেন মূল চাহুনিতে দিনরাতগুলো ছেঁকে
১৩. সময়কে ধরে রাখা মহা দায়
১৪. সূর্যের আলো মেটায় খোরাক কার
১৫. রজনীর অন্ধকার এইরকম
১৬. অমোঘ আঁধার রাতে
১৭. কৃষ্ণ যজুর্বেদ যারা রচেছিল একদিন
১৮. আমার হৃদয়ে প্রেম কার্তিকের বটের মতন
১৯. কালো মখমল দস্তানার মতো ধীরে ধীরে আসে
২০. আমাদের প্রভু বীক্ষণ দাও
২১. অন্ধকারে আমাদের ইন্দ্রনীল খুঁড়িতেই পাওয়া গেল
২২. আমাদের অশ্রু শিশিরিত হলুদ পাতার থেকে নয়
২৩. আমার হৃদয়ে নব নব প্রত্যাশার দূত
২৪. আমার হৃদয়ে রক্ত থেকে কোনো এক প্রদীপকে জ্বালি আমি
২৫. হিমের কুয়াশা নাকে
২৬. আমিও তো মশাল ধরেছি
২৭. তখন সকল প্রেম মরে যাবে
২৮. ওইখানে বনানীর তৃণ
২৯. ঢের কবি মরে গেছে সচকিত হয়ে যেন নিশীথের ভূতের মতন
৩০. সেদিন—সারাটা দিন—অনেক শ্মশানে
৩১. কবে চণ্ডীদাস মরে গেছে
৩২. স্ট্রেচারের ‘পরে শুয়ে কুয়াশা ঘিরিছে বুঝি
৩৩. সান্ত্বনার কথা ঢের ভাবা গেছে আঁধার রভসে
৩৪. এইখানে কাকজ্যোৎস্না
৩৫. প্রথম যৌক্তিক জন্ম নিল
৩৬. যারা মরে গেছে তাহাদের কথা ভেবে
৩৭. প্রেম কি জাগায় সূর্যকে আজ ভোরে
৩৮. অনেক বেসেছি ভালো
৩৯. মনে হয় হেমন্তের জ্যোৎস্নায়
৪০. এই নগরীর সেই সব শতাব্দীর ধূসর পরিখা কই

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন