হিমের কুয়াশা নাকে

জীবনানন্দ দাশ

হিমের কুয়াশা নাকে—তারপর—মৃত্যু একদিন—
 তবু তার আগে মৃত্যু হানা দেয়
 দিবসের আর্তেরা রাতের বায়ুর শব্দে আসে
 কোনো এক রকপাখি—মসৃণ ডিমের সাথে আতুরকে টেনে নিয়ে যায় গম্ভীর ডানার শৌর্যে—যেখানে সে—যতদূর—যেতে পারে
তারপর নিম্নতম পৃথিবীর পামিরের ছাদে ফিরে এসে
 অবিকল কৃষ্ণসার—গড্ডালিকা জীবনের স্বাদ নয়
 মাংস—মৃত্যু—মৈথুন।

কারও কাছে প্রেম শুধু রমণীর মেধ নয়
 তবু শুক্ল তারা চেয়েছিল
 অন্ধকারে টের পায় লেগুনের জল
 সমুদ্রদ্যুতির থেকে ঢের দূরে—

 কেউ মৃত্তিকাকে স্বর্ণ করে দেবে একদিন
 সকল সৌভ্রাত্র তাই বিষাক্ত শত্রুর মতো তার কাছে
 মৃত্যু—মহামৃত্যু ঋদ্ধি দেবে সকলকে; নবীন জন্মের নগ্নতাকে।

ফেনশীর্ষ সমুদ্রের ছবি চোখ বুজে দেখে লই
 কোনো হৃষ্ট ডুবুরির পিচ্ছিল মগ্নতা
সিন্ধু: প্রেম নয়;—হয়তো অগণ্য বৈদূর্যমণি নব নব প্রভাতের—নক্ষত্রের।
 আমি ভালোবাসি—সমাদৃত হতে চাই—হয়তো বা বরানন
 গভীর বায়ুর শব্দ—অনলোজ্জ্বল লিঙ্গ শরীর
 তরঙ্গের অমোঘ সমিতি
 এইসব শুক্ল সফলতা
ব্যক্তির নিস্পৃহ মৃত্যু দিকে খোড়লের অন্ধকারে
 প্রেম চায়
 সিন্ধু প্রেম নয়—সিন্ধুতীরবাসী পাখি, ধীবরের মতো
 আমিও জীবিকা—লোভ—শিখর—অপ্রেম
 ধীরে ধীরে হয়ে গেছি কঠিন গিজের মূর্তি
 জন্মের দুর্যোগ নাই—মরণের জন্ম নাই আর।

সকল অধ্যায়

১. কোথাও নতুন বুদ্ধের যেন জন্ম হয়
২. জীবনের সাথে আমাদের রূঢ় পরিচয় হয়েছিল
৩. না জানি কী সব মঙ্গলের দিকে চেয়ে
৪. কোথাও অনেক দূর যেতে হবে
৫. হয়তো বা কোনো দূর পিরামিড দেখা যাবে
৬. আবার নতুন করে পৃথিবীরে বানাবার অধিকার আমাদের নেই
৭. আমাদের সাহস হারায়ে গেছে বহুদিন
৮. যদিও রয়েছি বেঁচে
৯. এই এত পুরোনো নগরী
১০. যেন কোনো যাদুঘরে ঘুমায়েছে
১১. ঢের দূর থেকে বন্ধুজনারে চেনা যায়
১২. মনে হয় যেন মূল চাহুনিতে দিনরাতগুলো ছেঁকে
১৩. সময়কে ধরে রাখা মহা দায়
১৪. সূর্যের আলো মেটায় খোরাক কার
১৫. রজনীর অন্ধকার এইরকম
১৬. অমোঘ আঁধার রাতে
১৭. কৃষ্ণ যজুর্বেদ যারা রচেছিল একদিন
১৮. আমার হৃদয়ে প্রেম কার্তিকের বটের মতন
১৯. কালো মখমল দস্তানার মতো ধীরে ধীরে আসে
২০. আমাদের প্রভু বীক্ষণ দাও
২১. অন্ধকারে আমাদের ইন্দ্রনীল খুঁড়িতেই পাওয়া গেল
২২. আমাদের অশ্রু শিশিরিত হলুদ পাতার থেকে নয়
২৩. আমার হৃদয়ে নব নব প্রত্যাশার দূত
২৪. আমার হৃদয়ে রক্ত থেকে কোনো এক প্রদীপকে জ্বালি আমি
২৫. হিমের কুয়াশা নাকে
২৬. আমিও তো মশাল ধরেছি
২৭. তখন সকল প্রেম মরে যাবে
২৮. ওইখানে বনানীর তৃণ
২৯. ঢের কবি মরে গেছে সচকিত হয়ে যেন নিশীথের ভূতের মতন
৩০. সেদিন—সারাটা দিন—অনেক শ্মশানে
৩১. কবে চণ্ডীদাস মরে গেছে
৩২. স্ট্রেচারের ‘পরে শুয়ে কুয়াশা ঘিরিছে বুঝি
৩৩. সান্ত্বনার কথা ঢের ভাবা গেছে আঁধার রভসে
৩৪. এইখানে কাকজ্যোৎস্না
৩৫. প্রথম যৌক্তিক জন্ম নিল
৩৬. যারা মরে গেছে তাহাদের কথা ভেবে
৩৭. প্রেম কি জাগায় সূর্যকে আজ ভোরে
৩৮. অনেক বেসেছি ভালো
৩৯. মনে হয় হেমন্তের জ্যোৎস্নায়
৪০. এই নগরীর সেই সব শতাব্দীর ধূসর পরিখা কই

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন