সেদিন—সারাটা দিন—অনেক শ্মশানে

জীবনানন্দ দাশ

সেদিন—সারাটা দিন—অনেক শ্মশানে
 কাটায়েছি—অনেক গম্ভীর কথা নির্জন পেঁচার মতো
 মেধায় ভাবিব ব’লে—জন্ম আর মৃত্যুর তারিখে সব ফাটল, ফলক,
 ঘাস।
 অগণন মুদ্রা, ছবি—তবু যেন—মিছিলের মতো
শরীরে শব্দের মতো লেগে থাকে যেন কোন দূর প্রান্তরের
 হয় আর নবীদের।
 কোথাও ভাঁড়ারে ঢুকে কবে যেন অতি শীত পুরানো মদিরা
একবার খেয়ে গেছি;—চামচিকা দেখেছে তা—হয়তো পণিরখেকো
 আরশোলা
 আঁধারকে দ্বিধা ভিন্ন ক’রে উড়ে গেছে প্রাচীন বিস্ময়ে।

অর্ধেন্দু গিয়েছে ম’রে—সান্যাল গিয়েছে—নূরন্নবী—নবনীতা
মক্ষিকার নীড় থেকে হৃত মোম ছিল যার তামাসার সঙ্গে লেগে
 দুরূহ—গভীর নাভি ঘিরে মধু ছিল
 এসব বৈদূর্যমণি লোষ্ট্র ভেবে বৈতরণী ফেলেছে ডুবায়ে।
 আলোকের প্রয়োজন নাই আর—একদিন আমিও নদীর তলে গিয়ে
 সেইখানে
পাথরের ভিড়ে আরও ঘন সঙ্গীহীন অস্পষ্টতা হয়ে রব
 নেউলের মতো হিম ধূসর জলের চোখ ধুলো দিয়ে
 মৃতদের ভালোবাসা (হয়তো বা) ক্রয় করা যায় নাক’ আর;
 অনন্তের ভাঁড় তবু আমি
 তুমিও জানিতে, নবনীতা, সজারুর মতো ক্ষিপ্র অমোঘ কাঁটায়
জেগে ওঠে।
 তোমাদের কালো জলে আমার মৃত্যুর লোষ্ট্র—তাই
 শনৈশ্চর গ্রহের মতন ঘুরে ঘুরে ঘুরে
 নয়টি রসিক চাঁদ সঙ্গে লয়ে
 তবুও অনন্তকাল ঘুরিয়ে কেবল।

সকল অধ্যায়

১. কোথাও নতুন বুদ্ধের যেন জন্ম হয়
২. জীবনের সাথে আমাদের রূঢ় পরিচয় হয়েছিল
৩. না জানি কী সব মঙ্গলের দিকে চেয়ে
৪. কোথাও অনেক দূর যেতে হবে
৫. হয়তো বা কোনো দূর পিরামিড দেখা যাবে
৬. আবার নতুন করে পৃথিবীরে বানাবার অধিকার আমাদের নেই
৭. আমাদের সাহস হারায়ে গেছে বহুদিন
৮. যদিও রয়েছি বেঁচে
৯. এই এত পুরোনো নগরী
১০. যেন কোনো যাদুঘরে ঘুমায়েছে
১১. ঢের দূর থেকে বন্ধুজনারে চেনা যায়
১২. মনে হয় যেন মূল চাহুনিতে দিনরাতগুলো ছেঁকে
১৩. সময়কে ধরে রাখা মহা দায়
১৪. সূর্যের আলো মেটায় খোরাক কার
১৫. রজনীর অন্ধকার এইরকম
১৬. অমোঘ আঁধার রাতে
১৭. কৃষ্ণ যজুর্বেদ যারা রচেছিল একদিন
১৮. আমার হৃদয়ে প্রেম কার্তিকের বটের মতন
১৯. কালো মখমল দস্তানার মতো ধীরে ধীরে আসে
২০. আমাদের প্রভু বীক্ষণ দাও
২১. অন্ধকারে আমাদের ইন্দ্রনীল খুঁড়িতেই পাওয়া গেল
২২. আমাদের অশ্রু শিশিরিত হলুদ পাতার থেকে নয়
২৩. আমার হৃদয়ে নব নব প্রত্যাশার দূত
২৪. আমার হৃদয়ে রক্ত থেকে কোনো এক প্রদীপকে জ্বালি আমি
২৫. হিমের কুয়াশা নাকে
২৬. আমিও তো মশাল ধরেছি
২৭. তখন সকল প্রেম মরে যাবে
২৮. ওইখানে বনানীর তৃণ
২৯. ঢের কবি মরে গেছে সচকিত হয়ে যেন নিশীথের ভূতের মতন
৩০. সেদিন—সারাটা দিন—অনেক শ্মশানে
৩১. কবে চণ্ডীদাস মরে গেছে
৩২. স্ট্রেচারের ‘পরে শুয়ে কুয়াশা ঘিরিছে বুঝি
৩৩. সান্ত্বনার কথা ঢের ভাবা গেছে আঁধার রভসে
৩৪. এইখানে কাকজ্যোৎস্না
৩৫. প্রথম যৌক্তিক জন্ম নিল
৩৬. যারা মরে গেছে তাহাদের কথা ভেবে
৩৭. প্রেম কি জাগায় সূর্যকে আজ ভোরে
৩৮. অনেক বেসেছি ভালো
৩৯. মনে হয় হেমন্তের জ্যোৎস্নায়
৪০. এই নগরীর সেই সব শতাব্দীর ধূসর পরিখা কই

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন