এই নগরীর সেই সব শতাব্দীর ধূসর পরিখা কই

জীবনানন্দ দাশ

এই নগরীর সেই সব শতাব্দীর ধূসর পরিখা কই
পাণ্ডুলিপি হাতে নিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিকেরা টেবিলের চারপাশে বসে আছে
 নেকটাই—হ্যাট—একসটেনশন লেকচারের ঘ্রাণ
 বিচক্ষণ সদনটিয়ার মতো সচ্ছল; এখন চায়ের অবসর
 মার্থালেন—সিগারেট—
 জ্যৈষ্ঠের দুপুরে হাওয়া
 অই দূর সিন্ধুর দ্যুতির দিকে চলে যায়
 আমাদের শুধু দিকনির্ণয়ের ভুল
 ফুলসাজে তবু মূল নাই—মূল আছে, ফুল
 নাই। নাকের ডগায় মাছি; কণ্ঠার উপরে মৃত আছি; মৃত্যু
কাহারো কাহারো রোমশ কুশলী হাতে—মরুভূর উটের আঘ্রাণ—
 গোবির বালিতে।
 চারিদিকে নগরীর পুনরুজ্জীবনের সুর
 এরপর কারো আর তিলে তিলে মৃত্যু হবে নাক’
 মৃত্যু বিজ্ঞাপিত হবে—সব মৃত্যু
 সকল শবের চুল পরিপারিট করে আঁচড়ায়ে দেওয়া হবে।
সাদা আকাশের প্রান্ত থেকে সাদা মিনারের চূড়ার তরঙ্গ
 এপারের দেয়ালের থেকে ওপারের ধূসর দেয়াল
 লুব্ধ হাত বাড়াতেই শেষ হয়ে যায়
 কুকুর ও বিহঙ্গেরা ছটফট করে তাই
 পথের ভিতরে পথ গোলকধাঁধার মতো চ’লে গেছে—সেই ধূম্র
 যুবনাশ্বের দিন থেকে?
পথে পথে সৃষ্টি সমুদ্রের সুর ভোরের আলোয়? সৃষ্টি সমুদ্রের সুর।
আমাদের ফেলে কেন সৃষ্টি কর?—আর্ত ডান হাত তুলে
 অনেক সেকেলে বর্ম, অনেক বিকট যুদ্ধ, অনেক অনৃত মৃত
 সময়ের কাছে নিষেধ জানাতে ভুলে গেছে।

অধ্যায় ৪০ / ৪০

সকল অধ্যায়

১. কোথাও নতুন বুদ্ধের যেন জন্ম হয়
২. জীবনের সাথে আমাদের রূঢ় পরিচয় হয়েছিল
৩. না জানি কী সব মঙ্গলের দিকে চেয়ে
৪. কোথাও অনেক দূর যেতে হবে
৫. হয়তো বা কোনো দূর পিরামিড দেখা যাবে
৬. আবার নতুন করে পৃথিবীরে বানাবার অধিকার আমাদের নেই
৭. আমাদের সাহস হারায়ে গেছে বহুদিন
৮. যদিও রয়েছি বেঁচে
৯. এই এত পুরোনো নগরী
১০. যেন কোনো যাদুঘরে ঘুমায়েছে
১১. ঢের দূর থেকে বন্ধুজনারে চেনা যায়
১২. মনে হয় যেন মূল চাহুনিতে দিনরাতগুলো ছেঁকে
১৩. সময়কে ধরে রাখা মহা দায়
১৪. সূর্যের আলো মেটায় খোরাক কার
১৫. রজনীর অন্ধকার এইরকম
১৬. অমোঘ আঁধার রাতে
১৭. কৃষ্ণ যজুর্বেদ যারা রচেছিল একদিন
১৮. আমার হৃদয়ে প্রেম কার্তিকের বটের মতন
১৯. কালো মখমল দস্তানার মতো ধীরে ধীরে আসে
২০. আমাদের প্রভু বীক্ষণ দাও
২১. অন্ধকারে আমাদের ইন্দ্রনীল খুঁড়িতেই পাওয়া গেল
২২. আমাদের অশ্রু শিশিরিত হলুদ পাতার থেকে নয়
২৩. আমার হৃদয়ে নব নব প্রত্যাশার দূত
২৪. আমার হৃদয়ে রক্ত থেকে কোনো এক প্রদীপকে জ্বালি আমি
২৫. হিমের কুয়াশা নাকে
২৬. আমিও তো মশাল ধরেছি
২৭. তখন সকল প্রেম মরে যাবে
২৮. ওইখানে বনানীর তৃণ
২৯. ঢের কবি মরে গেছে সচকিত হয়ে যেন নিশীথের ভূতের মতন
৩০. সেদিন—সারাটা দিন—অনেক শ্মশানে
৩১. কবে চণ্ডীদাস মরে গেছে
৩২. স্ট্রেচারের ‘পরে শুয়ে কুয়াশা ঘিরিছে বুঝি
৩৩. সান্ত্বনার কথা ঢের ভাবা গেছে আঁধার রভসে
৩৪. এইখানে কাকজ্যোৎস্না
৩৫. প্রথম যৌক্তিক জন্ম নিল
৩৬. যারা মরে গেছে তাহাদের কথা ভেবে
৩৭. প্রেম কি জাগায় সূর্যকে আজ ভোরে
৩৮. অনেক বেসেছি ভালো
৩৯. মনে হয় হেমন্তের জ্যোৎস্নায়
৪০. এই নগরীর সেই সব শতাব্দীর ধূসর পরিখা কই

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন