আবু সয়ীদ আইয়ুব
বইখানা প’ড়ে বিশুদ্ধ সাহিত্যরসিক হয়তো ভাববেন— এত তত্ত্বকথা কেন? নিছক নন্দনতাত্ত্বিক তত্ত্বের দিক থেকে অপূর্ণতা লক্ষ্য ক’রে অসন্তুষ্ট হতেই পারেন। তাঁদের দোষ দেব না। দুই বিদ্যাক্ষেত্রের মাঝখানকার আল ধ’রে যে-কৃষ্টিজীবী হাঁটতে চায় তাকে উভয় ক্ষেত্রাধিকারীর বিরাগভাজন হতে হবে বই-কি। উপায় নেই। একেবারে যে নেই তা নয়। মন স্থির ক’রে এক দিকে নেমে প’ড়ে একটিমাত্র ক্ষেতের চাষ করলেই তো সেদিক রক্ষা পেত, অন্য দিককার কোনো দায়-দায়িত্ব থাকতো না। কিন্তু অন্তরে অন্তরে যে দ্বিচারী তার মুশকিল আসান অত সহজে হয় না। এ-ব্যাপারে দ্বৈতা-দ্বৈতচারীও বলতে পারি নিজেকে, কারণ আমার চোখে দর্শন আর কাব্যের মধ্যবর্তী সীমারেখা সর্বত্র খুব স্পষ্ট নয়। দার্শনিক যদিও যুক্তির দাবি অগ্রাহ্য করতে পারেন না, তবু তাঁর চিন্তাধারা মাঝে মাঝে এমন চড়ায় ঠেকে যেখান থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য তাঁকে নির্ভর করতে হয় সমগ্র জীবন ও জগৎ বিষয়ে মৌল উপলব্ধির উপর। এবং এ-কথাও দার্শনিক মাত্রের জানা আছে যে, চরমমূল্য-নিরীক্ষায় শেষ কথা বলতে পারে বুদ্ধি নয়, বোধি। শুধুমাত্র প্রত্যক্ষ ও অনুমানকে ভিত্তি ক’রে কোনো দর্শনই খাড়া করা যায় না; যতটুকু যায় সেটা বিজ্ঞান বিনা বাক্যব্যয়ে কুক্ষিগত ক’রে ফেলে। পক্ষান্তরে, কাব্যরচনা নিছক শব্দের আলিম্পন—এ-কথা আজ সাহিত্যের অভিজাত মহল থেকে শোনা গেলেও আমার কাছে অশ্রদ্ধেয় ঠেকে। কবিকে সংস্কৃত অর্থেও কবি হতে হয়, অর্থাৎ সত্যদ্রষ্টা। সেই কথাটা ভেবে বোধ করি কোরিজ বলেছিলেন-‘No man was ever yet a great poet without being at the same time a profound philosopher.’
সমগ্র আধুনিক সাহিত্যের কিংবা সমগ্র রবীন্দ্র-প্রতিভার দিগদর্শন এ-ক্ষুদ্রকায় মিতাভিলাষ গ্রন্থে খুঁজতে গেলে পাঠক অবশ্যই হতাশ হবেন, আমার প্রতিও কিঞ্চিৎ অবিচার করবেন। আমার আলোচনার ক্ষেত্র সংকীর্ণ। আধুনিক সাহিত্যের বহু বৈশিষ্ট্যের মধ্যে কেবল দুটি বৈশিষ্ট্যের কথা তুলেছি এখানে— স্বভাবতই এই কারণে যে, আমার মনে হয়েছে এ-দুটি আজকের দিনে (বা আজকের দিনেও) প্রণিধানযোগ্য। এক— কাব্যদেহের প্রতি একাগ্র মনোনিবেশ, যার পরিণাম কাব্যরচনায় ও সমালোচনায় দেহাত্মবাদ, ভাষাকে আধার বা প্রতীক জ্ঞান না ক’রে আপনারই দুর্ভেদ্য মহিমায় সুপ্রতিষ্ঠিত স্বয়ংসম্পূর্ণ সত্তা জ্ঞান করা। সার্ত্র-এর উক্তি হয়তো অতিরঞ্জিত, তবু আধুনিক কাব্যপ্রবণতার পরিচয় পাওয়া যায় তাতে : কবিতার ভাষা স্বচ্ছ কাচের মতো মোটেই নয়, নিজেরই অনবদ্য ধ্বনিরূপ ফুটিয়ে তোলা তার কাজ।
দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য— জাগতিক অমঙ্গল বিষয়ে চেতনার অত্যাধিক্য— আমাকে অধিকতর পীড়িত করে। একজন পাশ্চাত্য সাহিত্যবিশারদ বলেছেন, এ-যুগের (বোঁদলেয়র-পরবর্তী যুগের) সাহিত্যের চারিত্র্য হচ্ছে ‘an overwhelming consciousness of evil’; অর্থাৎ আধুনিক সাহিত্যিকরা চারিদিককার দুঃখ ও পাপ সম্বন্ধে শুধু সচেতন নন, এই অমঙ্গলবোধ তাঁদের চেতনাকে অভিভূত ক’রে রেখেছে। জগৎ ও জীবন বিষয়ে আনন্দ, আগ্রহ, শ্রদ্ধা, বিস্ময়, এমনকি কৌতূহল পর্যন্ত বিলুপ্ত হয়ে তার জায়গা জুড়েছে বোরডম, বিরক্তি, বিতৃষ্ণা, বিবমিষা।
এতৎসত্ত্বেও আধুনিক কালে সৎসাহিত্য রচিত হয়েছে, মহৎ সাহিত্যেরও একান্ত অভাব ঘটে নি। প্রথমত, আধুনিক সাহিত্যমাত্রই ঘৃণার, প্রত্যাখ্যানের বা তিরিক্ষি মেজাজের সাহিত্য নয়; দ্বিতীয়ত, প্রত্যাখ্যানবাদীদের মধ্যেও অনেকে প্রতিভার উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখে গেছেন তাঁদের সাহিত্যসৃষ্টিতে। রিল্কের ডুইনো এলেজিস, এলিয়টের ফোর কোয়ার্টেট্স্, মান্-এর ম্যাজিক মাউণ্টেন, কামুর আউটসাইডার, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদ্মানদীর মাঝি, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালি, বুদ্ধদেব বসুর তপস্বী ও তরঙ্গিণী সর্বদেশকালের সৎসাহিত্যে স্থান পাওয়ার যোগ্য। হালের বাঙালী কবিদের মধ্যে অমিয় চক্রবর্তী যদিও আমার প্রিয়তম কবি, তবু বিষ্ণু দে এবং সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক মতবিরোধ আমাকে বাধা দেয় নি তাঁদের কবিতার গুণমুগ্ধ পাঠক হতে; তেমনি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত এবং সম্প্রতিকার বুদ্ধদেব বসুর সঙ্গে সাহিত্যিক মতভেদ সত্ত্বেও আমি মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করি তাঁদের সৃজনী প্রোৎকর্ষ, তাঁদের সাহিত্যকর্মের স্থায়ী ঐতিহাসিক মূল্য; যেমন স্বীকার করি আরো একটু উঁচু স্তরে বোদলেয়র, ভালেরী, ফক্নার এবং কাফ্কার সৃষ্টিপ্রতিভা। এঁরা সবাই আধুনিক (এক বিভূতিভূষণ সম্বন্ধে সন্দেহের অবকাশ আছে যে তিনি কালের বিচারে আধুনিক হলেও মেজাজের দিক দিয়ে পূর্বযুগের)। কাজেই আধুনিক সাহিত্যের বিরুদ্ধে আমি যে-কেস্টি দাঁড় করাতে প্রয়াস পেয়েছি, সেটি উপরের কথাগুলির পটভূমিতে বিচার্য। আমার নালিশ সমগ্র আধুনিক সাহিত্যের বিরুদ্ধে নয়, আধুনিক সাহিত্যের পূর্বোল্লিখিত দুই ধারার বিরুদ্ধেই। নালিশে বিতর্কের সুর লেগেছে হয়তো, আশা করি তিক্ততার আমেজ ঘটে নি কোথাও। বিরূপ মন্তব্য যা করেছি, সঞ্চিত বেদনা থেকে করেছি, সজ্ঞান বা নিজ্ঞান অশ্রদ্ধা থেকে নয়।
অন্যদিকে, সমগ্র রবীন্দ্রসাহিত্যও আমার আলোচ্য নয়। রবীন্দ্রকাব্যের কথাই এখানে বলতে চেয়েছি, এবং তা থেকেও অনেক কিছু বাদ পড়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে বাদ পড়েছে কাব্যদেহের অ্যানাটমির দিকটা। তার প্রধান কারণ, কাব্যের আঙ্গিক বিষয়ে আমার ব্যুৎপত্তির অভাব। কবিতা সম্পর্কে চলতি মত দেহাত্মবাদ—সে-কথা আগেই বলেছি। দেহ না থাকলে আত্মার অস্তিত্ব সম্ভব নয়, এবং নারীদেহের লাবণ্যে যেমন, কাব্যদেহের লাবণ্যেও আমি তদ্রূপ মুগ্ধ। এসব কথা মেনে নিয়েও বলব, নারী ও কবিতা সম্পর্কে শেষ অবধি আমি ভাববাদী। রবীন্দ্রনাথও তাই ছিলেন; বলেছেন, ‘কেবলমাত্র ইন্দ্রিয়দ্বারা আমরা জগতের যে-পরিচয় পাইতেছি তাহা জগৎ-পরিচয়ের সামান্য একাংশমাত্র— সেই পরিচয়কে আমরা ভাবুকদিগের, কবিদিগের, মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষিদিগের চিত্তের ভিতর দিয়া কালে কালে নবতররূপে গভীরতররূপে সম্পূর্ণ করিয়া লইতেছি। কোন্ গীতিকাব্য-রচয়িতার কোন্ কবিতা ভালো, কোন্টা মাঝারি, তাহাই খণ্ড খণ্ড করিয়া দেখানো সমালোচকের কাজ নহে। তাঁহার সমস্ত কাব্যের ভিতর দিয়া বিশ্ব কোন্ বাণীরূপে আপনাকে প্রকাশ করিতেছে তাহাই বুঝিবার যোগ্য।’ য়েট্স্ও কি অনুরূপ অভিমত প্রকাশ করেন নি একটি কবিতায় :
The rhetorician would decieve his neighbours,
The sentimentalist himself; while art
Is but a vision of reality.
ভাবের দিক থেকেও বর্তমান পুস্তকের রবীন্দ্র-কাব্যালোচনা সীমিত; একটি বিশেষ দৃষ্টিকোণ থেকে আমি এখানে দেখতে চেয়েছি রবীন্দ্রনাথকে অমঙ্গলের চেতনা রবীন্দ্রকাব্যের বিভিন্ন পর্যায়ে কীভাবে কখনো সংকুচিত, কখনো সম্প্রসারিত হয়েছে এবং শেষ পর্বের কাব্যরচনায় কত গভীর ও পরিব্যাপ্ত হয়ে উঠেছে— সেটা স্পষ্ট ক’রে তোলা আমার রবীন্দ্র-কাব্যালোচনার একটা পক্ষ। অন্য পক্ষে আমি দেখাতে চেয়েছি যে, প্রধানত এরই পরিণামে কবি রবীন্দ্রনাথের সমগ্র বিশ্বনিরীক্ষা ও জীবনবোধ কেমন ক’রে পর্যায়ক্রমে পরিবর্তিত ও পরিণত হয়েছে, রোম্যান্টিক উদ্বেলতা বিষাদ থেকে ঈশ্বরপ্রেমের সমাহিত প্রশাস্তি, সেখান থেকে দুই ভিন্ন পথে একই কালে এগিয়ে চলেছে পাশ্চাত্য হিউম্যানিজম্-এর দিকে এবং এমন এক ট্র্যাজিক চেতনার দিকে যাতে নক্ষত্রের ভাঙাগড়া, সভ্যতার উত্থান-পতন, মানুষের সেই দুঃখ ‘কোনো কালে যার অন্ত নাই’— সব-কিছুর মধ্যে ‘ভীষণের প্রসন্ন মূর্তি’ দেখতে পাওয়া সম্ভব।
এ-কথা কারও অজানা নেই যে, বর্তমান শতাব্দীর দ্বিতীয় পাদে য়োরোপে এবং তৃতীয় পাদে এদেশে রবীন্দ্রনাথের কাব্যমহিমা প্রতর্কের বিষয় হয়ে উঠেছে। একাধিক আধুনিক কবি ও কাব্য-সমালোচক রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে কয়েকটি আপত্তি তুলেছেন— কখনো স্পষ্ট ভাষায়, কখনো আভাসে-ইঙ্গিতে, কখনো-বা মৌন অভিব্যঞ্জনায়। আপত্তিগুলি মোটামুটি দুই শ্রেণীতে পড়ে। প্রথম শ্রেণীটি ভাষাগত। রবীন্দ্রনাথ যা বলেন— বিশেষত শেষ দশকের কবিতায়— বড়ো সোজাসুজি বলেন, ভাষা প্রায় গদ্যের মতো স্বচ্ছ ও ঋজু, সব-ক’টি শব্দ তার অভিধাযুক্ত, সব-ক’টি বাক্যের মানে বোঝা যায় অনায়াসে বা অল্পায়াসে। সব বোঝার পরেও বোঝার অতীত কিছু, সব কথার শেষেও ‘দূর পারে সেই চুপ-কথা’র ইঙ্গিত কোথাও পাওয়া যায়। কিনা তাঁর শেষ পর্বের কবিতায়, সে-প্রশ্ন তোলেন না এঁরা। যেন ভাষা অতিমাত্রায় দুর্ভেদ্য এবং ভঙ্গি ১৮০ ডিগ্রি তির্যক না হলে কবিতা কবিতাই হয়ে ওঠে না। দ্বিতীয় শ্রেণীর আপত্তি ভাবগত। শোনা যায়, জগতে অশুভ, কদর্য, বীভৎস রূপটা রবীন্দ্রনাথের চোখে ঠিকমতো ধরা দেয় নি, রোম্যান্টিক ভাবালুতায় রাঙা গোলাপী কাচের বেশ পুরু চশমা পরে তিনি সব-কিছুকে— মানুষকে, প্রকৃতিকে, সমগ্র বিশ্বচরাচরকে অত্যন্ত শুভ ও সুন্দর ক’রে দেখেছেন; স্বভাবতই তাঁর মনে হয়েছে ‘ধন্য এই মানবজীবন, ধন্য বিশ্বজগৎ’।
আমার বইখানা প্রধানত এই দ্বিতীয় শ্রেণীর এবং গৌণত প্রথম শ্রেণীর আপত্তির কথা মনে রেখে লেখা।
.
অবশেষে একটি কৈফিয়ত। বর্তমান পুস্তকের কয়েক জায়গায় কয়েক জন বিশিষ্ট সাহিত্যিকের সঙ্গে অল্পবিস্তর মতান্তর প্রকাশ করেছি। তার মানে এই নয় যে, তাঁদের লেখা আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে পাঠ করি নি। শ্রদ্ধা না থাকলে ভিন্ন মতের উল্লেখ নিষ্প্রয়োজন হ’ত। তবে আমি চিন্তার ডায়ালেকটিকে আস্থাবান, বিশ্বাস করি যে, মতসংঘাতের পথেই সত্যের দিকে এগুনো যায়। এই ‘বারে বারে পাওয়া, হারানো নিরন্তর ফিরে ফিরে’-পথ কবির পথ নয়; কবি নির্ভর করেন আপন ঋজু অপরোক্ষ অনুভূতির উপর, হঠাৎ-জ্ব’লে-ওঠা অন্তরের দীপ্তির উপর। যাদের অন্তরে দীপ্তি নেই, কেবল আন্তরিক অনুসন্ধিৎসাই আছে, তাদের কিন্তু অনেক ঘুর-পথে পায়ের কাঁটা তুলতে তুলতে এগোতে হয়। নিজের সঙ্গে সর্বদাই তর্ক করতে হয়, পরের সঙ্গেও মাঝে-মধ্যে। নিজের উপর উৎপাত করা যায় খুশিমতো; প্রয়োজনমতো পরের মতামত নিয়ে প্রশ্ন তুললে কি তাঁরা ক্ষুব্ধ হবেন? তবে পূর্বেই ক্ষমা চেয়ে রাখি।
.
বইয়ের প্রথম অধ্যায়টি প্রেসিডেন্সি কলেজ ম্যাগাজীনের হীরক জয়ন্তী সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল, “সাহিত্যনীতি ও শ্রেয়োনীতি” অমৃত-এর শারদীয়া ১৩৭৩ সংখ্যায়, “গীতাঞ্জলি বিষয়ে একটি ব্যক্তিগত সমস্যা”, “বলাকা”, “শেষ পর্বের কবিতা” ও “কবিতার ভাষা” দেশ-এ শ্রাবণ ১৩৭৩ থেকে শ্রাবণ ১৩৭৪-এর মধ্যে। প্রত্যেকটি পূর্বপ্রকাশিত রচনা অল্পবিস্তর সংশোধিত হয়েছে; অনেকখানি পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত হয়েছে “সাহিত্যনীতি ও শ্রেয়োনীতি” শীর্ষক অধ্যায়। বইখানির বেশির ভাগ খণ্ড খণ্ড ভাবে লিখিত এবং বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত ব’লে দু-চার জায়গায় পুনরাবৃত্তি অনিবার্য ছিল। সংশোধনকালে তার সবটুকু বাদ দেওয়া সম্ভব হয় নি।
শেষ অধ্যায়টি বিশেষ উপলক্ষে রচিত। কবিতা-পরিচয়-এর প্রথম ও দ্বিতীয় সংখ্যায় (বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ ১৩৭৩) প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথের দুটি কবিতার ব্যাখ্যা এবং প্রসঙ্গক্রমে শেষ পর্বের কবিতা সম্বন্ধে কয়েকটি সাধারণ মন্তব্য আমি সম্পূর্ণ মেনে নিতে পারি নি। ভিন্ন মত ব্যক্ত করি কবিতা-পরিচয় ও দেশ-এ, এবং সেই সূত্রে জানাতে হ’ল উক্ত কবিতায় আমার মনে কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। কবিমনের উপলব্ধি ও দৃষ্টি-ভঙ্গির বিশ্লেষণই এ-বইতে প্রাসঙ্গিক, কবিতা-বিশেষের ব্যাখ্যা আকস্মিক। গৌরী, আরতি ও স্বপন নানা ব্যাপারে আমাকে সাহায্য করেছেন। কৃতজ্ঞতা জানাই।
.
পাদটীকায় ‘রবীন্দ্র-রচনাবলী’ সর্বত্রই পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক প্রকাশিত জন্মশতবার্ষিক সংস্করণ বোঝাবে। অন্যান্য পুস্তকের নামের পর সংস্করণের উল্লেখ না থাকলে প্রথম সংস্করণ ধ’রে নিতে হবে।
গ্রন্থের বিভিন্ন অংশের মুদ্রণে দীর্ঘ কালভেদের জন্য রবীন্দ্রকাব্যগ্রন্থের নামের সম্বন্ধপদের বানানে সর্বত্র সমতারক্ষা হয় নি। আশা করি পাঠক এই অসংগতিটুকু মার্জনা করবেন। দুটো-চারটে অন্যপ্রকার ছাপার ভুলও চোখে পড়বে; অর্থবোধে অসুবিধা ঘটায় না ব’লে শুদ্ধিপত্র দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করি নি।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন