৩৩১
খালি হাতে পুলসেরাতে, কেমনে হবি পার?
না চিনিলে আল্লা-নবি,
ভরসা তুই করবি কার?
শান্তি-সুখের ঘর বেন্ধে,
কাটাইলি মহা আনন্দে,
একদিন মন তুই পড়বি ফান্দে,
কান্দিলে সারবে না আর।
ভবের আশা, কাম-বাসনা,
লোভ-লালসা ফুরাইলো না।
ভাবলি না শেষের ভাবনা,
পারের কড়ি নাই জোগাড়।
চাও যদি আখেরে শান্তি,
মুছে ফেলো ভুলভ্রান্তি,
মনসুর কয়, হও রাসুলপন্থী,
অশান্তি থাকবে না আর।
[রচনাকাল: ০৩.০২.১৯৬১; প্রথম কণ্ঠশিল্পী: সৈয়দ গোলাম আম্বিয়া]
৩৩২
জ্ঞানে আর ধ্যানেতে আল্লাহ্-নবি,
খুঁজলে পরে দুই জনারে,
এক জায়গায় পাবি।
আল্লা-নবি এ দুইজন এক সুতায় বন্ধন,
আশুকের মাশুক ধন, হায়াতুন্নবী।
কালেমা তৈয়বেতে,
আল্লা-নবি একসাথে,
নবিকে চিনলে তাতে আল্লাহকে পাবি।
আল্লাহ্ কোন রূপ নাই, সর্ব রূপে আছেন তাই,
খুঁজিলে না পাই তার নিজস্ব ছবি।
একেশ্বর আপন সুরতে,
বিরাজ করে এই জগতে,
মনসুর কয়, কি কুদরতে ঘুরায় মনের চাবি?
[রচনাকাল: ১১-১১-১৯৮৯; প্রথম কণ্ঠশিল্পী: রথীন্দ্রনাথ রায়]
৩৩৩
লা-ই-লাহা ইল্লাল্লাহু মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্,
এই কালেমা সদায় পড়ো,
দূর করো মনের ময়লা।
আল্লাহ্-রাসূল নামে মগুল থাইকো রে নিরবধি,
শেষের দিনে সেই নিদানে ক্ষমা পাইতে চাও যদি।
তরিকতে হইয়া দাখিল,
মোহাম্মদ নাম করো হাসিল,
পড়বে দেহে উম্মতের সিল,
সুরত হবে উজালা।
মেনে চলো খোদার হুকুম, হবি রে মন জান্নাতি,
রাসুলুল্লার নীতি ধরো, আদায় করো সুন্নতি।
খোদা প্রাপ্তি মূল সাধনা,
রাসুল বিনে কেউ জানে না,
রোজা-নামাজ পাঞ্জেগানা,
ছাইড়ো না রে মন ভোলা।
কোরআন ও হাদিসে বলে, জন্মিলে আছে মরণ,
সময় থাকতে কামাই করো আখেরাতের মূলধন।
মনসুর কেঁদে আরজ করে,
দেখা দিও নবি রোজ হাশরে,
এই তোমার দেখা পাইলে পরে,
ভয় কি রে পারের বেলা?
[রচনাকাল: ০৮-০৭-১৯৬৭; প্রথম কণ্ঠশিল্পী: নীনা হামিদ]
৩৩৪
রাসুলুল্লার যুগে যদি জন্ম লইতাম,
সামনে রেখে সেই নবিকে,
সালাম জানাইতাম।
জীবন ধন্য করিতাম।
আল্লাহর দোস্ত রাসুলুল্লাহ্ আছে সত্য জানা,
নাম শুনে তার ভক্ত হইলাম, চোখে দেখলাম না।
দেখলে পরে এই অন্তরে ভইরা রাখিতাম,
প্রাণের জ্বালা জুড়াইতাম।
আল্লাহ্ ওহি নাজেল করতেন জীবরাইলের তরে,
সেই ওহি সহি জেনে নবি প্রচার করে।
আল্লার বাণী নবির মুখে মধুর শুনিতাম,
শুনে দরূদ পড়িতাম।
এমন নবির উম্মত হইয়া পাইলাম না তার দেখা,
মনসুর বলে, মনের দুঃখে কান্দি বসে একা।
তাই হরদমে দম জপো রে মন, আল্লাহ্-নবির নাম,
পূর্ণ হবে মনস্কাম।
[রচনাকাল: ০৭-০১-১৯৮২; প্রথম কণ্ঠশিল্পী: নীনা হামিদ]
৩৩৫
আমার দয়াল আল্লা রে,
আমার মাবুদ মাওলা রে,
কেউ বোঝে না এই তোমার কুদরতের খেলা রে।
ইউনুসে রে মাছের পেটে জিন্দা যে রাখিলা,
কুয়া হইতে ইউসুফেরে উদ্ধার কইরা নিলা।
ইব্রাহিমকে অগ্নি হইতে কি মতে বাঁচাইলা?
নমরুদে রে মশার হাতে ধ্বংস কইরা দিলা রে।
কেউ বোঝে না এই তোমার কুদরতের খেলা রে।
কেউরে হাসাও, কেউরে কান্দাও, কেউরে ফালাও ফান্দে,
কত পাপি-তাপি মুক্তির আশায় এই তোমার তরে কান্দে।
সাদ্দাতে রে বেহেস্তেতে যাইতে নাহি দিলা,
ফেরাউনের সৈন্য-সেনা নীল দরিয়ায় ভাসাইলা রে।
কেউ বোঝে না এই তোমার কুদরতের খেলা রে।
দয়াল আল্লাহ্ দয়ার সাগর, মহিমা অপার,
এই তোমার লীলা বুঝতে পারে সাধ্য আছে কার?
মনসুর বলে, আল্লাহ্ তুমি কুদরতি দেখাইলা,
কত কুদরতি দেখাইলা,
এই তোমার কুদরত তুমি বোঝ, কোরআনে জানাইলা রে।
কেউ বোঝে না এই তোমার কুদরতের খেলা রে।
[রচনাকাল: ০৭-০৫-১৯৬৬; কণ্ঠশিল্পী: আব্দুল আলীম]
৩৩৬
নামাজের ফল পাইবা রে একদিন
শোন রে মুমিন,
নামাজের ফল পাইবা রে একদিন।
ঈমান এনে দিলের ঘরে,
খোদাকে যে বিশ্বাস করে,
অন্তরে করিয়া একিন।
নামাজ পড়ে পাঁচ ওয়াক্ত,
হইতে পারলে খোদাভক্ত,
কঠিন আজাব হবে মুক্ত কেয়ামতের দিন।
বারো সূর্যের তাপ লাগিবে,
মাটি পুড়ে তামা হবে,
ছায়া দিবে নামাজে সেদিন।
ফজরের নামাজ আসিবে,
খড়ম হইয়া পায় লাগিবে,
মুমিন বান্দা শান্তি পাবে আখেরাতের দিন।
মাগরিবের ওয়াক্তে পাখা হাতে,
আরাম দিবে এশার ওয়াক্তে,
বেহেস্তে নিবে রাব্বুল আলামিন।
মনসুর বলে দিবানিশি
নামাজ আমার সঙ্গের সাথী,
দিনের নবি হবেন উম্মতের জামিন।
[রচনাকাল: ১৭-০৫-১৯৮৫; কণ্ঠশিল্পী: নীনা হামিদ]
৩৩৭
মন মসজিদে নামাজ পড়া চাই রে মুমিন ভাই,
দিল মসজিদে নামাজ পড়া চাই।
নামাজেতে দাড়াও যখন,
অন্য দিকে দিও না মন,
ধ্যানে-জ্ঞানে রেখো স্মরণ, এক বিনে দ্বিতীয় নাই।
খাস নিয়ত রেখো অন্তরে,
সেজদা কর কাবা ঘরে,
সালাত কায়েম হইলে পরে, মন তুমি পাবে রেহাই।
আলেপ হইয়া খাড়া হও,
লাম হইয়া রুকু দাও,
মিম হইয়া সেজদায় যাইয়া, সহি সেজদা করা চাই।
মুর্শিদেরি সঙ্গ ধরো,
জেনে শুনে নামাজ পড়ো,
মনসুর বলে, পরকালে মুর্শিদ ছাড়া গতি নাই।
[রচনাকাল: ২৭-১১-১৯৯৫]
৩৩৮
শোন মুমিন ভাই,
রোজা-নামাজ কায়েম করা চাই,
পুলসেরাতে পার হইতে
উপায় তো আর নাই।
মুখের রোজা মিথ্যা কথা বলবে না কেউ মুখে,
চোখের রোজা কুনজরে চাইবে না কেউ চোখে।
আত্মশুদ্ধি করতে হবে, মনে প্রাণে রোজা রবে,
তা না হলে নিদানকালে পাবে না রেহাই।
পায়ের রোজা খারাপ পথে চলবে না দিনরাতে,
হাতের রোজা পরের জিনিস ধরবে না কেউ হাতে।
পঞ্চ অঙ্গে করবে রোজা, আখেরে পাবে না সাজা,
মনসুর বলে, নামাজ-রোজা কায়েম করো ভাই।
[রচনাকাল: ১২-০৭-২০০৩]
৩৩৯
জ্ঞানে আল্লাহ্, ধ্যানে রাসুল,
এক জায়গাতে রয়,
কালেমা তৈয়বেতে প্রমাণিত হয়।
লা-ইলাহা ইল্লাহু মুহাম্মাদ রাসুল,
এই কালেমা সদায় পড়ো, না হয় যেন ভুল
দম জিকিরে ডাকো তারে বসে নিরালায়।
জিকিরেতে সামিল হয়ে হুকুম তামিল করো।
চুপে চুপে মুর্শিদ রূপে দোয়া-দরুদ পড়ো,
আল্লাহ্-নবি দিলে ভাবি করো পরিচয়।
[রচনাকাল: ২৫-০৭-২০০৩]
৩৪০
আল্লাহ্র নূরে মোহাম্মদী নূর,
জাত-সেফাতে মিশে রয়,
নূর হতে নূর সৃষ্টি হয়ে,
নীরে-নূরে মিলন হয়।
জাতি নূরে আলোকিত আল্লাহ্ পাক জাত,
মোহাম্মদী নূরে সৃষ্টি সকল মাখলুকাত।
আল্লাহ্ আর মোহাম্মদ-আদম,
নূর হতে নূর পরিচয়।
নূরের জ্যোতি কি কুদরতি শোনো মুমিন বান্দা,
দেখলে সে নূর থাকবে না ঘোর, কেটে যাবে ধান্ধা।
নূরে ফুটলো জ্ঞানের আলো সারা বিশ্বময়।
[রচনাকাল: ২৬-০৭-২০০৩]
৩৪১
প্রাণ সঁপেছি দয়াল আমি এই তোমার চরণে,
তবে কেন এত দুঃখ আমার জীবনে।
এই তোমার প্রেমে মন মজাইয়া এই বিপদে পড়ি,
দুঃখের আগুন বুকে লইয়া জইলা জইলা মরি।
কিঞ্চিৎ দয়া দান করিলে,
শান্ত্বনা পাই মনে।
যে পথে দয়াল এই তোমার সন্ধান পাওয়া যায়,
কোথায় পাবো পথের দিশা, বলে দাও আমায়।
পাইলে এই তোমায় হৃদয় ভরে,
রাখতাম যতনে।
[রচনাকাল: ০৫-১১-১৯৮৬]
৩৪২
আমি বুঝাইয়া কই মন এই তোরে,
মনের মানুষ বিরাজ করে অন্তরে।
কাছের মানুষ দেখলি না রে, খুঁজলি পথে প্রান্তরে।
মনে প্রাণে এক হইয়া, গুরু নামের তসবি লইয়া,
ঐ নাম জপলে প্রাণ ভরিয়া,
দেখবি স্বরূপ নজরে।
নিরিখ ছাড়া রূপ চেহারা কেউ দেখতে পায় না,
পলক দিলে রূপের ঝলক দেখা তো আর যায় না।
বাঁকা তনু কইরা ফানা, চাইয়া দ্যাখো দেহের আয়না,
দেখা দিবে অচিন জনা,
কল্পনা যার ভিতরে।
[রচনাকাল: ১৫-০২-১৯৮৯]
৩৪৩
আল্লাহ্-মোহাম্মদ-আদম
তিন জনা এক নূরেতে
তিন হতেই দীন-দুনিয়া
সৃষ্টি নানান সুরতে।
বিশ্বভুবন সৃষ্টি জীবন, অসীম শক্তি দিয়া,
ছয় হাজার বৃক্ষ সৃষ্টি মাটিতে শিকড় নিয়া।
আরো ছয় হাজার জীব সৃষ্টি হয়,
বাচ্চার আকারেতে।
ডিমের ভিতর ছয় হাজার পদ জীবের সৃষ্টি হয়,
এই তো তিন ছয় আঠারো হাজার মাখলুকাত কয়।
কুটি মনসুর বলে হাসান-মতি,
বিশ্বাস কর অন্তরেতে।
[রচনাকাল: ১৫-০৯-২০০৩]
৩৪৪
ওরে ও মুমিন বান্দা,
হুঁশিয়ার থাইকো হুঁশিয়ার,
পিছে পিছে দুশমন আছে,
ঈমান নষ্ট করিবার।
হুঁশিয়ার থাইকো হুঁশিয়ার।
আল্লার বাণী কোরান পড়ো,
রাসুলুল্লার তরিকা ধরো,
আল্লাহ্-নবিকে বিশ্বাস করো,
হইতে চাও যদি ভব পার।
রোজা-নামাজ কায়েম করো ওরে খোদার বান্দা,
তা না হলে আখেরাতে হইতে হবে নান্দা।
মনসুর কয়, হাশরের মাঠে
পড়বি রে বিষম সংকটে,
নিক্তির কাঁটায় ওজন করবে
পাপ-পুণ্যের হবে বিচার।
[রচনাকাল: ০৬.০৯.১৯৫৯; প্রথম কণ্ঠশিল্পী: কুটি মনসুর]
৩৪৫
ও এই তোমরা শোনো মুমিন ভাই,
জাইনা রাখো সবে,
পঞ্চ অঙ্গে রোজা করলে,
সেই রোজা হবে।
মুখের রোজা মিথ্যা কথা কইও না কেউ মুখে,
চোখের রোজা খারাপ নজরে চাইও না কারো দিকে।
ছয় রিপুকে বাধ্য রেখে, ঈমান খাঁটি করলে ভবে,
সেই রোজা হবে।
লোভ-লালসা পাপের বোঝা লইও না কেউ মাথে,
হাতের রোজা পরের জিনিস ধইরো না এই হাতে।
মনসুর বলে, একিন দেলে যেজন রোজা রবে,
সেই রোজা হবে।
৩৪৬
আল্লাহ্র নূরে প্রিয় নবি,
নবির নূরে সৃষ্টি সবই,
নূরের ফুল ফুটাইলেন নবি
সারা দুনিয়ায় রে, সারা দুনিয়ায়।
রবিউল চান্দের বারো তারিখে
মা আমেনার গর্ভে থেকে রে,
নবি জন্ম নিলেন সুবহে সাদেকে
নগরী মক্কায় রে।
আরশ-কুরসি, লওহো-কালাম, চন্দ্র-সূর্য-তারা,
কুল মাখলুকাত আনন্দেতে হইলো মাতোয়ারা।
মহামানব, মহাজ্ঞানী,
উম্মতের ভার পেলেন তিনি রে,
সাফায়াত করিবেন যিনি,
মনসুর কয়, হাশরের বেলায় রে।
৩৪৭
দয়া চাই এই তোমার,
আল্লাহ্, দয়া চাই এই তোমার।
দয়ার কাঙাল হইয়া এই তোমায়,
ডাকি যে বারবার।
দুঃখী মনের দুঃখ ঘুচাও,
ঝরা চোখের পানি মুছাও,
পাপী-তাপীরে মুক্তি দাও,
তুমি পরওয়ারদিগার।
অজ্ঞানীকে জ্ঞান দিও,
সুপথে চালাইয়া নিও,
বিপদে তুমি ত্বরাইও,
দয়াল হইয়া কর্ণধার।
এই তোমার নামটি এই অন্তরে
জপি যেন জীবন ভরে,
মনসুর কয়, এশকের পাগল বানাও মোরে,
পাই যেন এই তোমার দিদার।
৩৪৮
তুমি এই তো সবার বন্ধু, রহমতেওয়ালা,
সৃষ্টি করো, রাখো, মারো,
করণেওয়ালা।
ভুলভ্রান্তি ক্ষমা করে সুখ-শান্তি দিও,
নিদানের কাণ্ডারি হয়ে পার করিয়ে নিও।
হাশরের মিজানে তুমি,
তরানেওয়ালা।
তুমি ছাড়া ভবসিন্ধু পারের বন্ধু নাই,
দয়ার কাঙাল হইয়া দয়াল এই তোমার দয়া চাই।
জগত স্বামী দয়াল তুমি,
মাবুদও মাওলা।
এই তোমার নামের গুণে কত পাপী ত্বইরা যায়,
মনসুর বলে, আমি রইলাম এই তোমারই আশায়,
এই তোমার নামে ভাসাই আমার
এই জীবনভেলা।
৩৪৯
ওরে ও মন, মুসুল্লি তুই নামাজ পড়লি না,
সময় গেলো হেলায় হেলায়,
খেয়াল করলি না।
দুনিয়াদারির খেয়ালে তুই খুয়াইলি রে আখেরাত,
করলি না মন রোজা-নামাজ, ভুইলা রইলি হজ্ব-জাকাত।
দিন থাকিতে একদিনও তুই,
দিনের পথে চললি না।
পুলসিরাতে শূন্য হাতে কেমনে হবি পার
সেদিন এই তোরে কেউ আসিয়া করবে না উদ্ধার।
আমলনামা হাতে নিয়া জিজ্ঞাসিবে যখন রব,
কি আইনাছো সাথে কইরা, কি দিবি রে তার জবাব?
কাইন্দা কাইন্দা হবি আকুল,
মনসুর কয়, কূল পাবি না।
৩৫০
বান্দা এই তোমার হইয়া গুনাহগার,
হাত তুলেছি দরবারে,
দিও না ফিরাইয়া, নিও গো ত্বরাইয়া,
নতশিরে ডাকি এই তোমারে।
দয়াল, তুমি বসে আছো দয়ার ভাণ্ডার লইয়া,
পাপ না করলে মাফ করবে কি তুমি দয়াল হইয়া?
এই তোমার দয়া অসীম, রহমান-রহীম,
রহম করো বান্দা রে।
দরদিয়া, রহমতিয়া, তুমি মালেক সাঁই,
এই তোমার মতো দয়াল বন্ধু আর এই তো কেহ নাই।
তুমি আত্মার আত্মা, মনসুর কয়, সৃষ্টিকর্তা,
মুক্তিদাতা সংসারে।
৩৫১
হর দমে দম জপো রে মন আল্লাহ্-নবির নাম,
ঐ নাম জপিলে পরকালে,
পাবি সুখ শান্তি-আরাম।
আল্লার-রসুল নামের সুধা,
খাইলে রয় না তৃষ্ণা-ক্ষুধা,
রহমত নাজিল করবেন খোদা,
পূরণ হবে মনস্কাম।
দাখিল হইয়া তরিকতে,
জপো ঐ নাম দিনে রাতে,
মনসুর কয়, নামের গুণে আখেরাতে
হবে রে দোজখ হারাম।
[রচনাকাল: ১৫.০৩.১৯৬৩]
৩৫২
নামাজ-রোজা আল্লার হুকুম,
পালন করো ভাই,
আখেরে ত্বরাইয়া নিবে
দয়াল মালেক সাঁই।
এক নিয়তে করবে রোজা,
ঈমানকে রাখিবে তাজা,
রবে না আর পাপের বোঝা,
বেহেস্তে পাবে ঠাঁই।
মুমিনের জ্বলবে খোদা কোরানে জাহেরি,
আত্মশুদ্ধি হইলে রে মন, পাবে তখন আখেরি।
স্মরণ রেখো আল্লাহ্র বাণী,
ঘুচে যাবে পেরেশানি,
মুছে যাবে মনের গ্লানি,
দিল হবে রোশনাই।
[রচনাকাল: ০৭.০১.১৯৮২]
৩৫৩
হায়, নবিজির প্রেমের প্রেমিক,
হইলো ভবে যে জনা,
নবিজিরে এ সংসারে,
চিনতে পারে কয়জনা?
আবু বকর সিদ্দিক নবির প্রেমেতে মজিলো,
পাও দিয়া সে সাপের গর্ত বন্ধ করে ছিলো।
গর্তের সাপ গর্তে রইলো,
নবিরে কামড় দিতে দিলো না।
ওয়াসকরনী পাগলায় নবির আরেক ভক্ত ছিলো,
ভক্তির জোরে পাগলা রে নবি গায়ের জামা দিলো।
পাগলা ব্যাটা নবির লাইগা,
হইয়াছিলো দিউয়ানা।
ওহুদ যুদ্ধে রাসুলুল্লার দত্ত শহীদ হইলো,
ওয়াসকরনী খবর পাইয়া কি কর্ম করিলো?
পাগলায় নিজের মুখের বত্রিশ দত্ত,
একটাও এই তো রাখলো না।
নবিজির আশেকী ছিলেন বিবি খাদিজায়,
বাদশাহী ছাইড়া দিয়া পরে নবির দেখা পায়।
মনসুর বলে, পরকালে নবি
দেখা দিও মোরে, ভুইলো না।
[রচনাকাল: ১০-০৭-১৯৬২]
৩৫৪
বিশ্বাসে আল্লাহ্, নিঃশ্বাসে রাসুল,
মনে-প্রাণে দুটি নাম করিও কবুল।
কালেমা তৈয়বেতে আল্লাহ-নবি রয়,
নামের সাথে নাম মিশাইয়া দিলেন পরিচয়।
স্মরণ রাখো সেই কালেমা,
হয় না যেন ভুল।
আল্লাহ্র বান্দা, নবির উম্মত হইয়া দুনিয়ায়,
সত্য পথে থাকলে দোযখ হারাম হইয়া যায়।
মনের আয়নায় দেখতে পাবে,
বেহেস্তেরই ফুল।
এই জগতে শোনো যত মুমিন মুসলমান,
সেরা নবির উম্মত যারা তারাই ভাগ্যবান।
মনসুর বলে, পরকালে,
তরাইবেন রাসুল।
[রচনাকাল: ১০-১১-১৯৯৫]
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন