মাত্র এক শ কোটি টাকা

মাত্র এক শ কোটি টাকা

দক্ষিণ এশিয়া থেকে শুধু বাংলাদেশই ২০১৮ সালের গণিত অলিম্পিয়াডে গোল্ড মেডেল পেয়েছে। এই বিষয়টা একবার। ভেবে দেখুন! ১২০ কোটি মানুষের দেশ ভারতে কি মেধাবী কম। আছে? সে ভারত থেকে সে বছর কেউ সোনা অর্জন করতে। পারেনি। পাকিস্তান, নেপাল বা অন্য দেশগুলো থেকে পায়নি। কিন্তু বাংলাদেশ পেরেছে। এটা প্রমাণ করে, আমাদের তরুণদের মধ্যে জগঞ্জয়ীরা লুকিয়ে আছেন। তাদের মেধাকে পরিচর্যার মাধ্যমে বের করার জন্য দরকার সঠিক মানুষ ও সঠিক পরিবেশ। বাংলাদেশের গণিত অলিম্পিয়াডের জন্য অনেক বেশি প্রশিক্ষক (Instructor) নেই। যারা আছেন, তাদের জন্য কোনো নির্দিষ্ট বেতন নেই। তাদের কি খেতে হয় না? তাদের কি পেট নেই? তাদের কি সংসার নেই? মাত্র ৭০-৮০ হাজার টাকা বেতন দিলেই হয়তো বাংলাদেশি অনেক মেধাবী প্রশিক্ষক হতে চাইতেন। কিন্তু সে টাকাটা দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রের কোন মাথাব্যথা নেই। এসব। অলিম্পিয়াডে আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষক ও এক্সপার্টদের আনতে হয়। ছেলেমেয়েদের নানান বিষয়ে টিপস, পরামর্শ দিয়ে প্রস্তুত করতে হয়। ছেলেমেয়েদের ক্যাম্পিংয়ের জন্য টাকা লাগে। রোদের। মধ্যে শামিয়ানা টানিয়ে হাজারো ছেলেমেয়েকে একসঙ্গে বসিয়ে তাকিয়া আর নামতা শেখানো যায়, অলিম্পিয়াডের গণিত খানো যায় না। কিন্তু আমাদের সেটাই করতে হচ্ছে। ১৪ বছর। ধরে গাঁটের পয়সা খরচ করে, টেনে-টুনে হাত পেতে এই জাতীয় অলিম্পিয়াডগুলো চালানো হয়েছে–সেই কষ্টের কথা একমাত্র আয়োজকেরা ছাড়া কেউ জানেন না।

সারা দুনিয়ায় ফিজিকস, কেমেস্ট্রি, ম্যাথ, বায়োলজি অলিম্পিয়াড হয়। আয়োজন করা হয় জুনিয়র অলিম্পিয়াডের। এইসব অলিম্পিয়াড থেকে বেরিয়ে আসেন পৃথিবী সেরা তরুণ মেধাবীরা। তাঁদের কাজে লাগানো যায় দেশের জন্য, দশের জন্য, মানবসভ্যতার জন্য। আমাদের দেশের ধনীরা শুধু তাবিজের পেছনে কোটি কোটি টাকা খরচ করেন। মাজার-দরগার পেছনে। কোটি কোটি টাকা খরচ করেন। উপাসনালয়গুলোতে মানুষ না। থাকলেও কোটি কোটি টাকার দানের পয়সা ওঠে। কিন্তু দেশের কোনো অলিম্পিয়াডের জন্য ধনীরা টাকা দেবেন না। দেশের ব্যাংকগুলো থেকে হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়। সড়ক উন্নয়ন, সেতু, ফ্লাইওভার এসব নাম দিয়ে ৫০ বছর পর্যন্ত প্রতিটা সরকার কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছে। অথচ শিক্ষা, জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রয়োজন হলেই দেশে টাকার অভাব দেখা দেয়। দেশ তখন গরিব দেশ হয়ে যায়।

একটা দেশে এমনি এমনি মেধাবী তৈরি হয় না। একটা সমাজে এমনি এমনি নায়ক তৈরি হয় না। সেটার জন্য তো পরিচর্যা লাগে। সেই পরিচর্যা আমরা করি না। দেড় শ কোটি মানুষের দেশ চীন কী করে মানুষকে সম্পদে পরিণত করেছে, সেটা কি আমাদের চোখে পড়ে না? ১২০ কোটি মানুষের দেশ ভারত কী করে তরুণদের মেধাকে কাজে লাগাচ্ছে, সেটা কি আমরা দেখছি? দেখছি না। বছরে যদি শুধু ১০০ কোটি টাকাও সরকার এই অলিম্পিয়াডগুলোর জন্য বরাদ্দ করত, তাহলে কুড়ি বছরের মধ্যে তরুণ সমাজে একটা বিপ্লব হতো। আমাদের এই দেশটা থেকে বেরিয়ে আসতেন কুড়ি হাজার জগৎ-সেরা মেধাবী। তাঁদের ছোঁয়ায় সমাজটা এক অন্যরকম রূপ পেত। রূপকথার দেশে পরিণত হতো। কি আমাদের সরকার কি কোনো দিন এই সামান্য বরাদ্দটুকু দেবে?

সকল অধ্যায়

১. একটি সাবমেরিন বনাম পাঁচ হাজার জানালা
২. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘশ্বাসটুকু শুনুন
৩. চিত্ত যেথা ভয়যুক্ত, নিচু যেথা শির
৪. একটা দেশ যেভাবে দাঁড়ায়
৫. কোটা নাকি মেধা? জন্ম নাকি কর্ম?
৬. কর্মে হোক জন্ম জয়
৭. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষ্পাপ প্রাণগুলো
৮. দেশটা যেভাবে হেরে যায়
৯. সজাগ হও, হে তারুণ্য!
১০. সেশনজটে ক্ষয়ে যায় সমাজ
১১. থেমে থেকো না
১২. সম্ভাবনাকে জাগতে দিন
১৩. উন্নত সমাজের মূলমন্ত্র
১৪. লক্ষ্য হোক দক্ষতা অর্জন
১৫. কোথায় ছুড়ছ তোমার সোনালি যৌবন?
১৬. দয়া করে ওদের ঠকাবেন না
১৭. বাংলাদেশ কি মেধাবীদের ফিরিয়ে নেবে?
১৮. নেতায় নেতাচ্ছন্ন এক দেশ
১৯. সহজাত মেধা যেন ক্ষয়ে না যায়
২০. মগজের ধ্বংসযজ্ঞ
২১. দাঁড়াতে হলে শিখতে হয়
২২. প্যারালাইজড মাইন্ড!
২৩. সম্ভাবনা খুন হয়ে যায়
২৪. অন্তরে বাহিরে দাসত্বের রজ্জু
২৫. মেধাবীদের কত দিন দূরে রাখবে সমাজ?
২৬. ব্রেইন ড্রেইন নাকি ব্রেইন গেইন?
২৭. শিক্ষার আলোয় জাগুক স্বদেশ
২৮. সম্ভাবনার দুয়ারে আছ দাঁড়িয়ে
২৯. আলোকিত সমাজের মূলমন্ত্র
৩০. দ্য রাইট পারসন
৩১. নিজেকে আবিষ্কার করো
৩২. সত্যিকারের নায়ক
৩৩. যা আছে তা-ই দিয়ে করো সংগ্রাম
৩৪. চুরি বিদ্যা ও বিদ্যা চুরি
৩৫. অনন্য, অপ্রতিরোধ্য দক্ষিণ কোরিয়া
৩৬. একটা বিপ্লব হচ্ছে নীরবে
৩৭. জাগরণের কাল
৩৮. একজন ভিসি ও দীর্ঘশ্বাস
৩৯. কিশোর-কিশোরীর জ্ঞানানন্দ
৪০. ভারত কেন পারছে?
৪১. জাপান থেকে শেখো
৪২. অধিকারবঞ্চিত হতভাগ্য শিক্ষার্থীরা
৪৩. স্ট্যানফোর্ডের আকাশ
৪৪. প্রস্তুতির শ্রেষ্ঠ সময়
৪৫. ডিজিটাল ইগনোরেন্স
৪৬. প্রিয় অভিভাবকগণ, একটু শুনুন
৪৭. মাত্র এক শ কোটি টাকা
৪৮. ফড়িংয়ের চোখ তৈরি করো
৪৯. ছোট দেশের বড় স্বপ্ন
৫০. মনিরুল ইসলামেরা কেন ফিরতে পারেন না?
৫১. ড্রাইভিং ফোর্স
৫২. অন্তরালের নায়ক
৫৩. উদ্ভাবনে আমরা কেন পিছিয়ে?
৫৪. আত্মঘাতী নীতিমালা
৫৫. এমন যদি হতো
৫৬. চারিত্রিক সনদ
৫৭. চাপিয়ে দেওয়ার সংস্কৃতি
৫৮. আত্মহনন কোরো না হে প্রাণ
৫৯. আমাদের সম্ভাবনাময়ী মেয়েরা
৬০. উপাচার্যদের উপাচার্য
৬১. কেমন হয় একটা বিশ্ববিদ্যালয়?
৬২. হৃত কৌতূহলী মগজ
৬৩. জিনিয়াস মাইন্ড

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন