একটা বিপ্লব হচ্ছে নীরবে

একটা বিপ্লব হচ্ছে নীরবে

দুনিয়ার কোনো বড় বড় শহর ও ইউনিভার্সিটিতে গেলেই প্রচুর। চাইনিজ ছেলেমেয়ে চোখে পড়ে। সারা দুনিয়ার প্রায় কুড়ি ভাগ। তরুণ গবেষক শুধু চীন থেকে আসেন। আমেরিকায় যদি আজ চীনের ছেলেমেয়েদের ঢুকতে দেওয়া না হয়, তাহলে তাদের। গবেষণাকাজের প্রায় ৪০-৫০ ভাগ ধসে পড়বে। চীনের ছেলেমেয়েরা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছেন। তাঁদের থামানো যাচ্ছে। না। যাবে না। চীনের পরেই আছে ভারতের অবস্থান। আজ যদি চীন-ভারতের ছেলেমেয়েরা তাদের দেশ থেকে বের না হন, তাহলে পুরো দুনিয়ার জ্ঞান-গবেষণা, আবিষ্কার-উদ্ভাবনের দৃশ্য। পাল্টে যাবে।

বাংলাদেশেও একটা সুবাতাস লেগেছে। দেশের ছেলেমেয়েদের ভেতর পৃথিবী দেখার, পৃথিবী জয়ের নেশা। জেগেছে। এই নেশার আগুন বাড়বেই। এই আগুন দাবানলের মতো ছড়িয়ে যাবে। তরুণেরা তাদের শাণিত করতে দিগ্‌বিদিক ছুটছেন, ছুটবেনই। বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা যখন পৃথিবীর নানান প্রান্ত থেকে তাদের সফলতার কথা জানান, তখনই সে আগুনের উত্তাপ টের পাই। খুবই আনন্দ বোধ করি। তারা। নাগাযোগ করেন। বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করেন। জ্ঞান গবেষণায় তাদের আগ্রহ, সাফল্য ও প্রচেষ্টার কথা বলেন। সলাপরামর্শ করেন। আমাদের তরুণেরা এখন না গবেষণা করছেন। দুনিয়াখ্যাত জার্নালগুলোতে গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে। আমার কত একটা বিপ্লবের ইঙ্গিত। দুনিয়ার এমন কোনো সেরা প্রতিষ্ঠান নেই, যেখানে বাঙালি ছেলেমেয়ে নেই। তারা মাথা খাঁটিয়ে উঠেছেন। পাঁচজন চাইনিজ, তিনজন ভারতীয়র জ দজন বাংলাদেশি খুঁজে পাওয়া যায়। ২০১৬-১৭ সেল সাত হাজার বাংলাদেশি ছেলেমেয়ে শুধু আমেরিকায় গিয়েছেন উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা করতে। অথচ ট্রাম্প সরকার আসার পর ইমিগ্রেশন অনেক কঠোর হয়েছে, কঠিন হয়েছে। অথচ স্বাধীন বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি ছেলেমেয়ে গিয়েছেন গত সেশনে।

চীন, জাপান ও কোরিয়াতে ছড়িয়ে পড়তে হবে। হাজার। হাজার স্কলারশিপ দিচ্ছে সেসব দেশের ইউনিভার্সিটিগুলো। তরুণদের সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে। ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইট ঘাটাঘাটি করো। যে সময়টুকু অপ্রয়োজনে নষ্ট করছ, ঠিক সে সময়টুকু দিয়ে এসব ঘাঁটাঘাঁটি করে তোমার পাশের কেউ ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের স্কলারশিপ নিয়ে সেখানে গবেষণা করছেন। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে চলে। যাচ্ছেন তোমারই কোনো বন্ধু। চীনা ভাষা শেখো। জাপানিজ, জার্মান, ফ্রেঞ্চ শেখো। সামান্যতম ভাষাজ্ঞান অনেক স্কলারশিপ পেতে সাহায্য করে। কাজ শেখার নেশায় কোথাও শুরু করে। দাও। বছরের পর বছর একটি দেশে যাওয়ার জন্য বসে না থেকে সময়টাকে বাঁচাও। এক দেশে কাজ শিখে অন্য। যাও।

চলমান সময়টা হলো জ্ঞান-গবেষণায় বাংলাদেশি তারুণ্যের অংশগ্রহণের বিপ্লব। প্রতিবছর অন্তত ৪০-৫০ হাজাম ছেলেমেয়েকে সারা দুনিয়ার সেরা সেরা ইউনিভার্সিটিতে ২৭ পড়তে হবে। সেসব ছেলেমেয়ে জগতের সেরা সেরা প্রতিষ্ঠানে জায়গা করে নেবেন। তাদের জ্ঞান, চিন্তা, আইডিয়াগুলো ছড়িয়ে পড়বে নিজ দেশেও। প্রতিফলিত হবে নিজের সমাজে। তাদের মেধার হুংকারে চুরমার হয়ে যাবে বাংলাদেশের দুর্বল, অযোগ্য ও বিনাশী সব কর্মকাণ্ড। দেশটা দাঁড়াবে একটা নতুন ফ্রেমে, নতুন লক্ষ্যে। সে লক্ষ্য হলো দুনিয়ার বুকে সেরা হওয়ার লক্ষ্য! সে বিপ্লবে বাংলাদেশ থেকে মুছে যাবে মূর্খতা ও ভণ্ডামি। সে বিপ্লবে। টপ টপ করে ঝরে পড়বে দেশের মাকাল ফলগুলো। আমি স্পষ্টত দেখছি, সে বিপ্লব শুরু হয়েছে নীরবে!

সকল অধ্যায়

১. একটি সাবমেরিন বনাম পাঁচ হাজার জানালা
২. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘশ্বাসটুকু শুনুন
৩. চিত্ত যেথা ভয়যুক্ত, নিচু যেথা শির
৪. একটা দেশ যেভাবে দাঁড়ায়
৫. কোটা নাকি মেধা? জন্ম নাকি কর্ম?
৬. কর্মে হোক জন্ম জয়
৭. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষ্পাপ প্রাণগুলো
৮. দেশটা যেভাবে হেরে যায়
৯. সজাগ হও, হে তারুণ্য!
১০. সেশনজটে ক্ষয়ে যায় সমাজ
১১. থেমে থেকো না
১২. সম্ভাবনাকে জাগতে দিন
১৩. উন্নত সমাজের মূলমন্ত্র
১৪. লক্ষ্য হোক দক্ষতা অর্জন
১৫. কোথায় ছুড়ছ তোমার সোনালি যৌবন?
১৬. দয়া করে ওদের ঠকাবেন না
১৭. বাংলাদেশ কি মেধাবীদের ফিরিয়ে নেবে?
১৮. নেতায় নেতাচ্ছন্ন এক দেশ
১৯. সহজাত মেধা যেন ক্ষয়ে না যায়
২০. মগজের ধ্বংসযজ্ঞ
২১. দাঁড়াতে হলে শিখতে হয়
২২. প্যারালাইজড মাইন্ড!
২৩. সম্ভাবনা খুন হয়ে যায়
২৪. অন্তরে বাহিরে দাসত্বের রজ্জু
২৫. মেধাবীদের কত দিন দূরে রাখবে সমাজ?
২৬. ব্রেইন ড্রেইন নাকি ব্রেইন গেইন?
২৭. শিক্ষার আলোয় জাগুক স্বদেশ
২৮. সম্ভাবনার দুয়ারে আছ দাঁড়িয়ে
২৯. আলোকিত সমাজের মূলমন্ত্র
৩০. দ্য রাইট পারসন
৩১. নিজেকে আবিষ্কার করো
৩২. সত্যিকারের নায়ক
৩৩. যা আছে তা-ই দিয়ে করো সংগ্রাম
৩৪. চুরি বিদ্যা ও বিদ্যা চুরি
৩৫. অনন্য, অপ্রতিরোধ্য দক্ষিণ কোরিয়া
৩৬. একটা বিপ্লব হচ্ছে নীরবে
৩৭. জাগরণের কাল
৩৮. একজন ভিসি ও দীর্ঘশ্বাস
৩৯. কিশোর-কিশোরীর জ্ঞানানন্দ
৪০. ভারত কেন পারছে?
৪১. জাপান থেকে শেখো
৪২. অধিকারবঞ্চিত হতভাগ্য শিক্ষার্থীরা
৪৩. স্ট্যানফোর্ডের আকাশ
৪৪. প্রস্তুতির শ্রেষ্ঠ সময়
৪৫. ডিজিটাল ইগনোরেন্স
৪৬. প্রিয় অভিভাবকগণ, একটু শুনুন
৪৭. মাত্র এক শ কোটি টাকা
৪৮. ফড়িংয়ের চোখ তৈরি করো
৪৯. ছোট দেশের বড় স্বপ্ন
৫০. মনিরুল ইসলামেরা কেন ফিরতে পারেন না?
৫১. ড্রাইভিং ফোর্স
৫২. অন্তরালের নায়ক
৫৩. উদ্ভাবনে আমরা কেন পিছিয়ে?
৫৪. আত্মঘাতী নীতিমালা
৫৫. এমন যদি হতো
৫৬. চারিত্রিক সনদ
৫৭. চাপিয়ে দেওয়ার সংস্কৃতি
৫৮. আত্মহনন কোরো না হে প্রাণ
৫৯. আমাদের সম্ভাবনাময়ী মেয়েরা
৬০. উপাচার্যদের উপাচার্য
৬১. কেমন হয় একটা বিশ্ববিদ্যালয়?
৬২. হৃত কৌতূহলী মগজ
৬৩. জিনিয়াস মাইন্ড

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন