দ্য রাইট পারসন

দ্য রাইট পারসন

বিজ্ঞানের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো সংগঠন হলো (ইংল্যান্ডের রয়েল সোসাইটি। সে সংগঠনের আদতে, প্রায় কাছাকাছি সময়ে আর দুটি সংগঠন দাঁড়িয়েছিল। একটি হলো ফ্রান্সে, অন্যটি সুইডেনে। সুইডেনের রয়েল একাডেমি অব সায়েন্স প্রতিষ্ঠায় অন্যতম ভূমিকা রেখেছিলেন বিজ্ঞানী (ক্যারোলাস লিনিয়াস) তাকে বলা হয় সুইডিশ বিজ্ঞানীদের বিজ্ঞানী। সুইডেনের রয়েল একাডেমি ১০০ বছর ধরে পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানজনক নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করে আসছে।

এদিকে ইংল্যান্ডের রয়েল সোসাইটির বর্তমান চেয়ারম্যান হলেন ভেঙ্কট রামকৃষ্ণান। ২০০৯ সালে তিনি রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। সে বছরই আমি স্টকহোম ইউনিভার্সিটিতে গেলাম। ডিসেম্বরে নোবেল বিজয়ীরা এলেন লেকচার দিতে। প্রফেসর রামাকৃষ্ণানের লেকচার শুনলাম সেবার। স্টকহোম ইউনিভার্সিটিতে গবেষণাকালীন প্রতিবছর নোবেল বিজয়ীদের লেকচার শোনার সুযোগটা ছিল সবচেয়ে উপভোগ্যে।

রামকৃষ্ণান হলেন অসাধারণ এক ব্যক্তিত্ব। জন্ম ভারতে। পড়েছেন আমেরিকায়। গবেষণা করেছেন আমেরিকা ও ইংল্যান্ডে। ভারত ছাড়াও জাতীয়তা পেয়েছেন দুই দেশেরই। য়েক বছর আগে তাঁকে করা হয়েছে রয়েল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট। এই পদে আসীন ছিলেন বিজ্ঞানী নিউটন। বিজ্ঞানী। রবার্ট বয়েল, বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড এবং আরও কত কত দুনিয়া কাঁপানো লোকেরা। তবে রামকৃষ্ণানের এই পদাসীন ঐতিহাসিকভাবেও ভিন্ন। তিনিই প্রথম নন-ইউরোপিয়ান বংশোদ্ভূত, যাকে এই পদে বসানো হয়েছে। ব্রিটিশরা তাকে না। বসিয়ে রাজনীতিবিদকে বসাতে পারত। কোনো ধনাঢ্যকে বসাতে পারত। কিন্তু সেটা করেনি। কারণ ওরা জানে, প্রকৃত অভিভাবকত্ব ছাড়া সংসার, সংগঠন, সমাজ ও রাষ্ট্র কোনোটিই গড়ে ওঠে না। বিকশিত হয় না। টিকে থাকে না। একজন যোগ্য মানুষ, তিনি যে দেশেরই বংশোদ্ভূত হোন না কেন, তাঁকে তাঁর জায়গাতেই রাখতে হয়।

আমেরিকার ন্যাশনাল সায়েন্স একাডেমির (NAS) প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখলাম একজন মানুষের ভাস্কর্য করে রাখা হয়েছে। তিনি হলেন আলবার্ট আইনস্টাইন। অথচ এই লোকটি ছিলেন আমেরিকায় শরণার্থী। তাঁর ভাস্কর্য না রেখে সেখানে ওয়াশিংটন কিংবা লিংকনের ভাস্কর্য রাখতে পারত। তারা সেটা করেনি। যাকে যেখানে শোভা পায়, তাকে সেখানে না রাখাটাই হলো মূর্খতা। সেটাকেই আমরা বলি কেইয়স বা বিশৃঙ্খলা। যে দেশের বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানে শুধু রাজনীতিবিদদের ছবি ঝোলে, সেখানে বিজ্ঞানচর্চা হয় না। যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাগারে শুধু জীবিত ও মৃত নেতা-নেত্রীর ছবি ঝোলে, সেখানে বিজ্ঞানী তৈরি হয় না। সৃষ্টির নেশা জাগানোর কোন পরিবেশ সেখানে থাকে না। যে সমাজের বিজ্ঞানীরা রাজনৈতিক প্যানেল নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তাঁরা বিজ্ঞানের খবর রাখেন না। রাখার মতো ধ্যান-ধৈর্য থাকে না। যে সমাজের বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হন রাজনৈতিক কিংবা সরকারি আমলা, সে প্রতিষ্ঠান অভিভাবকহীনতায় ভোগে। কেইয়স সেখানে অনিবার্য হয়ে পড়ে। নেট প্রডাক্টিভিটি বা উৎপাদনশীলতার বিষয় কেউ আমলে নেয় না। দেশের মানুষের করের টাকার অপচয় বৈ কোনো লাভ হয় না। অভিভাবকহীনতায় নেতিয়ে পড়ে প্রতিষ্ঠান। খান থেকে স্বপ্নবান মানুষ বের হয় না। ফি বছর শুধু বেতনভক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীই তৈরি হয়।

সকল অধ্যায়

১. একটি সাবমেরিন বনাম পাঁচ হাজার জানালা
২. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘশ্বাসটুকু শুনুন
৩. চিত্ত যেথা ভয়যুক্ত, নিচু যেথা শির
৪. একটা দেশ যেভাবে দাঁড়ায়
৫. কোটা নাকি মেধা? জন্ম নাকি কর্ম?
৬. কর্মে হোক জন্ম জয়
৭. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষ্পাপ প্রাণগুলো
৮. দেশটা যেভাবে হেরে যায়
৯. সজাগ হও, হে তারুণ্য!
১০. সেশনজটে ক্ষয়ে যায় সমাজ
১১. থেমে থেকো না
১২. সম্ভাবনাকে জাগতে দিন
১৩. উন্নত সমাজের মূলমন্ত্র
১৪. লক্ষ্য হোক দক্ষতা অর্জন
১৫. কোথায় ছুড়ছ তোমার সোনালি যৌবন?
১৬. দয়া করে ওদের ঠকাবেন না
১৭. বাংলাদেশ কি মেধাবীদের ফিরিয়ে নেবে?
১৮. নেতায় নেতাচ্ছন্ন এক দেশ
১৯. সহজাত মেধা যেন ক্ষয়ে না যায়
২০. মগজের ধ্বংসযজ্ঞ
২১. দাঁড়াতে হলে শিখতে হয়
২২. প্যারালাইজড মাইন্ড!
২৩. সম্ভাবনা খুন হয়ে যায়
২৪. অন্তরে বাহিরে দাসত্বের রজ্জু
২৫. মেধাবীদের কত দিন দূরে রাখবে সমাজ?
২৬. ব্রেইন ড্রেইন নাকি ব্রেইন গেইন?
২৭. শিক্ষার আলোয় জাগুক স্বদেশ
২৮. সম্ভাবনার দুয়ারে আছ দাঁড়িয়ে
২৯. আলোকিত সমাজের মূলমন্ত্র
৩০. দ্য রাইট পারসন
৩১. নিজেকে আবিষ্কার করো
৩২. সত্যিকারের নায়ক
৩৩. যা আছে তা-ই দিয়ে করো সংগ্রাম
৩৪. চুরি বিদ্যা ও বিদ্যা চুরি
৩৫. অনন্য, অপ্রতিরোধ্য দক্ষিণ কোরিয়া
৩৬. একটা বিপ্লব হচ্ছে নীরবে
৩৭. জাগরণের কাল
৩৮. একজন ভিসি ও দীর্ঘশ্বাস
৩৯. কিশোর-কিশোরীর জ্ঞানানন্দ
৪০. ভারত কেন পারছে?
৪১. জাপান থেকে শেখো
৪২. অধিকারবঞ্চিত হতভাগ্য শিক্ষার্থীরা
৪৩. স্ট্যানফোর্ডের আকাশ
৪৪. প্রস্তুতির শ্রেষ্ঠ সময়
৪৫. ডিজিটাল ইগনোরেন্স
৪৬. প্রিয় অভিভাবকগণ, একটু শুনুন
৪৭. মাত্র এক শ কোটি টাকা
৪৮. ফড়িংয়ের চোখ তৈরি করো
৪৯. ছোট দেশের বড় স্বপ্ন
৫০. মনিরুল ইসলামেরা কেন ফিরতে পারেন না?
৫১. ড্রাইভিং ফোর্স
৫২. অন্তরালের নায়ক
৫৩. উদ্ভাবনে আমরা কেন পিছিয়ে?
৫৪. আত্মঘাতী নীতিমালা
৫৫. এমন যদি হতো
৫৬. চারিত্রিক সনদ
৫৭. চাপিয়ে দেওয়ার সংস্কৃতি
৫৮. আত্মহনন কোরো না হে প্রাণ
৫৯. আমাদের সম্ভাবনাময়ী মেয়েরা
৬০. উপাচার্যদের উপাচার্য
৬১. কেমন হয় একটা বিশ্ববিদ্যালয়?
৬২. হৃত কৌতূহলী মগজ
৬৩. জিনিয়াস মাইন্ড

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন