জগদীশচন্দ্র বসু
বাহিরের সংবাদ ভিতরে কি করিয়া পৌঁছায়? আমাদের বাহহ্যেন্দ্রিয় চতুর্দিকে প্রসারিত। বিবিধ ধাক্কা অথবা আঘাত তাহাদের উপর পতিত হইতেছে এবং সংবাদ ভিতরে প্রেরিত হইতেছে। আকাশের ঢেউ দ্বারা আহত হইয়া চক্ষু যে বার্তা প্রেরণ করে তাহা আলো বলিয়া মনে করি। বায়ুর ঢেউ কর্ণে আঘাত করিয়া যে সংবাদ প্রেরণ করে তাহা শব্দ বলিয়া উপলব্ধি হয়। বাহিরের আঘাতের মাত্রা মৃদু হইলে সচরাচর তাহা সুখকর বলিয়াই মনে করি। কিন্তু আঘাতের মাত্রা বাড়াইলে অন্যরূপ অনুভূতি হইয়া থাকে। মৃদুস্পর্শ সুখকর, কিন্তু ইষ্টকাঘাত কোনোরূপেই সুখজনক নহে।
টেলিগ্রাফের তার দিয়া বৈদ্যুতিক প্রবাহ স্থান হইতে স্থানান্তরে পৌঁছিয়া থাকে এবং এইরূপ দূরদেশে সংকেত প্রেরিত হয়। তার কাটিয়া দিলে সংবাদ বন্ধ হয়। একই বিদ্যুৎ প্রবাহ বিভিন্ন কলে বিবিধ সংকেত করিয়া থাকে-কাঁটা নাড়ায়, ঘণ্টা বাজায় অথবা আলো জ্বলায়। বিবিধ ইন্দ্রিয় স্নায়ুসুত্র দিয়া যে উত্তেজনা-প্রবাহ প্রেরণ করে তাহা কখনও শব্দ, কখনও আলো এবং কখনও বা স্পর্শ বলিয়া অনুভব করি। উত্তেজনা-প্রবাহ যদি মাংসপেশীতে পতিত হয় তখন পেশী সংকুচিত হয়। তার কাটিলে যেরূপ খবর বন্ধ হয়, স্নায়ুসূত্র কাটিলে সেইরূপ বাহিরের সংবাদ আর ভিতরে পৌঁছায় না।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন