২.৬৪ ট্রেন সাড়ে চার ঘণ্টা লেট

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

ট্রেন সাড়ে চার ঘণ্টা লেট, তবু অতক্ষণ স্টেশনের প্লাটফর্মে ঠায় বসেছিলেন মানিকদা। মুখে একটুও বিরক্তির চিহ্ন নেই, অতীন ও কৌশিককে তিনি জড়িয়ে ধরলেন দু’হাতে। মানিকদার স্বাস্থ্য এখন অনেকটা ভালো হয়েছে, খাঁকি প্যান্টের ওপর জমকালো একটা সবুজ রঙের কোট পরেছেন।

কৌশিক প্রথমেই হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করলো, মানিকদা, আপনি এই অদ্ভুত কোটটা কোথা থেকে পেলেন?

মানিকদা বললেন, একজন নেপালী ড্রাইভারের কাছ থেকে খুব সস্তায় কিনেছি রে! কেন, খারাপ হয়েছে? এখানে গ্রামের দিকে খুব শীত পড়ে। অতীন, তুই গরম জামা-টামা এনেছিস তো?

অতীন আর কৌশিক দু’জনেই পাজামা-পাঞ্জাবির ওপর শাল জড়িয়ে এসেছে, কৌশিকের সঙ্গে শুধু কাঁধে ঝোলানো একটা ব্যাগ। অতীনের সঙ্গে টিনের সুটকেশ ও বেডিং, মা জোর করে বেডিংটা সঙ্গে দিয়ে দিয়েছেন। প্রথমে ওরা এক রাউণ্ড চা খেয়ে নিল, তারপর স্টেশনের বাইরে এসে দুটো সাইকেল রিকশা ধরলো।

মানিকদা অতীনের পাশে বসে বললেন, কি রে, প্রথম বাড়ি ছেড়ে বাইরে চাকরি করতে এসেছিস, মন কেমন করছে না তো?

অতীন কয়েক মুহূর্তের জন্য অন্যমনস্ক হয়ে গেল। বাড়ির কথা মনে পড়লো না, মনে পড়লো অলির মুখ। আসবার আগে সে অলির সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে এসেছে। আজই অলিকে একটা চিঠি লিখতে হবে।

অতীন বললো, এ চাকরিটা না পেলেও আমি এদিকে চলে আসতুম। নর্থ বেঙ্গল আমাকে টানছিল।

–বেশির ভাগ বাঙালী ছেলেদেরই কলকাতা-রোগ আছে। কলকাতায় চাকরি চাই। কলকাতা ছেড়ে কোথাও যেতে চায় না। এমনকি আমি শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ির ছেলেদেরও দেখেছি, কোনো রকমে কলকাতায় যে-কোনো একটা চাকরি পেলেই যেন বর্তে যায়! কলকাতাটা তো দিন দিন একেবারে জঘন্য হয়ে যাচ্ছে। এখানে কী টাটকা হাওয়া!

–মানিকদা, আমার জয়েনিং ডেট কালকে, আমরা কি এখন কোনো হোটেলে উঠবো? মানিকদা হা-হা করে হেসে উঠে বললেন, হ্যাঁরে, হোটেলেই উঠবি, মানিক ঠাকুরের হোটেল। চল না, গিয়ে দেখবি। এই রিক্শা, ডাইনে, ডাইনে, অত জোরে নয়, একটু আস্তে আস্তে চলো ভাই–।

অনেকগুলো গলি ঘুরে ঘুরে রিকশা থামলো একটা ফাঁকা মতন জায়গায়। একটা এঁদো  পুকুরের ধারে একতলা বাড়িতে ঢুকলেন মানিকদা। সে বাড়িটাতে টিনের চাল। সামনে কয়েকটা জবা ফুলের গাছ, এক পাশে একটা বেশ বড় চালতা গাছ, তাতে চালতা ফলেও আছে।

মানিকদা হাঁকডাক করতেই বাড়ির ভেতর থেকে যে দু’জন বেরিয়ে এলো, তাদের দেখে অতীন অবাক। তপন আর পমপম! তপনের মুখে একগাল হাসি আর পমপম ভুরু নাচিয়ে বললো, কীরে, কীরকম সারপ্রাইজ দিলুম!

মানিকদা বললেন, এই বাড়িটাতে তিনখানা মোটামুটি বড় রুম আছে, ভাড়া মাত্র এইট্টি ফাইভ রুপিস। নিজেরা রান্না করে খাই, খুব সস্তা পড়ে। অতীন, তোরা এখানে থাকতে পারবি না?

অতীন দারুণ উৎফুল্ল হয়ে উঠলো। তাদের কলকাতার স্টাডি সার্কেল উঠে গেছে, মানিকদা কি এখানে আবার সেই স্টাডি সার্কল বসাতে চান? মানিকদার সঙ্গে এক বাড়িতে থাকা হবে, এটাই তো দারুণ আনন্দের ব্যাপার।

মানিকদা বললেন, দ্যাখ না, একে একে আরও অনেককে টেনে আনবো এদিকে। তপন এখানে ইনসিওরেন্স অফিসে কাজ পেয়েছে, ওর হিল্লে হয়ে গেছে। পমপমের জন্যও যদি একটা মাস্টারি-ফাস্টারি জোগাড় করা যায়।

পমপম বললো, আমার জন্য তোমায় চাকরি খুঁজতে হবে না, মানিকদা। আমি আমার থাকা-খাওয়ার খরচ এমনিই দিতে পারবো।

কৌশিক বললো, ইস আমারও যে লোভ হচ্ছে মানিকদা। কিন্তু আমাকে ফিরে যেতে হবে।

পমপম বললো, আমাকেও ফিরতে হবে। কিন্তু মাঝে মাঝেই আসা যেতে পারে। মোটে এক রাতের জার্নি।

বাড়ির ভেতর দিকে একটা ঢাকা বারান্দা, তারই এক পাশে রান্না ঘর। সামনের উঠোনে লঙ্কা ও বেগুন গাছ অনেকগুলো। সেখানে নেমে মানিকদা গাছগুলোতে সস্নেহে হাত বুলিয়ে বললেন, দেখেছিস, আমাদের ভেজিটেবিল গার্ডেন? লঙ্কা তো কিনতেই হয় না, বেগুনগুলোও কিছুদিনের মধ্যেই বড় হয়ে যাবে। তপন গ্রামের ছেলে, ও এসব পারে ভালো। তপন রাঁধেও চমৎকার। আমিও খারাপ রান্না শিখিনি, কী বল পমপম? কাল তোদের কেমন আলুর দম খাওয়ালুম?

পমপম চায়ের জল বসিয়ে দিল। তপন বললো, আজ তাহলে বাজার থেকে মাছ নিয়ে আসি? নতুন গেস্টদের অনারে …

মানিকদা বললেন, এখানে গেস্ট কেউ না। সবাইকে পয়সা দিয়ে খেতে হবে। আগেই ওদের বলে দিয়েছি, এটা মানিক ঠাকুরের হোটেল। আমরা এখানে মাছ-মাংস বিশেষ খাই না, বুঝলি অতীন, তাতে খরচ অনেক কম পড়ে। তবে, আজ একটু মাছ খাওয়া যেতে পারে। শীতকালে এখানে ভালো রুই ওঠে।

কৌশিক বললো, আমি মাছ কেনার পয়সা দিচ্ছি। আজ ভালো করে মাছ খাওয়া হোক।

অতীনের মনে হলো, সে যেন একটা পিকনিকের মধ্যে এসে পড়েছে। বারান্দায় বসে গল্প করতে করতে সবাই নানারকম কাজ করতে লাগলো। অতীনকেও দেওয়া হলো আলু ও পেঁয়াজের খোসা ছাড়াবার ভার। এইরকম কাজ অতী জীবনে কখনো করেনি। পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে তার চোখ একেবারে কান্নায় মাখামাখি!

দুপুরবেলা খাওয়ার পর কিছু কাজের কথা হলো। মানিকদা বললেন, স্টাডি সার্কেলের আর দরকার নেই। এবারে নেমে পড়তে হবে মাঠে, দেশের সত্যিকারের মানুষের মধ্যে। এখানকার মহকুমার কিষাণ সভার সেক্রেটারি জঙ্গল সাঁওতালের সঙ্গে মানিকদার অনেক আলোচনা হয়েছে। চারুবাবুর সঙ্গেও দেখা হয় প্রায়ই। শিগগিরই ভূমি দখলের লড়াই শুরু হবে। মার্কসবাদী কমুনিস্ট পার্টি জোতদারের জমি কেড়ে নেবার প্রোগ্রাম নিয়েছে, আপাতত কাজ চলবে সেই প্রোগ্রাম অনুসারে। দিকে দিকে কিষাণ সভার ঝাণ্ডা উড়িয়ে নাস্তানাবুদ করে দিতে হবে কংগ্রেস সরকারকে।

রাত্রে ট্রেনে ভালো করে ঘুম হয়নি, অতীনের চোখ ঢুলে আসছে, পমপম চিমটি কেটে জাগাবার চেষ্টা করছে তাকে। তবু সে চোখ খুলে রাখতে পারছে না। মানিকদা দেখতে পেয়ে বললেন, অতীন, তুই একটু ঘুমিয়ে নে বরং। কৌশিক, তুই-ও যা।

কৌশিক বললো, আমার ঘুম পায়নি।

সঙ্গে সঙ্গে অতীনের শরীরে যেন বিদ্যুতের শক্ লাগলো। কৌশিক আর সে একই সঙ্গে রাত জেগে এসেছে, অথচ কৌশিকের এখন ঘুমের দরকার নেই, তার ঘুম পাচ্ছে? সে কি কৌশিকের থেকে দুর্বল? বাইরে গিয়ে অতীন দু’চোখে জলের ঝাঁপটা দিল তো বটেই, দশবার ওঠ-বোস করে নিল ঘুম তাড়াবার জন্য।

সন্ধেবেলা রান্নার ট্রেনিং দেওয়া হলো অতীনকে। সে কোনোদিন এক কাপ চা-ও বানায়নি, কী করে ডিম সেদ্ধ করতে হয়, তাও জানে না। কেমিস্ট্রির ভালো ছাত্র হলেও কোন রান্নায় কী কী মশলা লাগে সে সম্পর্কে তার ধারণা নেই বিন্দুমাত্র।

পমপম হাতে ধরে ধরে ভাতের ফ্যান গালা শেখাতে লাগলো অতীনকে। তার কানে ফিসফিস করে বললো, বিপ্লবীকে সব কিছু শিখতে হয়!

পমপম সচরাচর হাসে না, সব কথাই ধ্রুব সত্য হিসেবে বলে। বিপ্লবী শব্দটা শোনামাত্র রোমাঞ্চ হলো অতীনের, পর পর দৃশ্য মনে পড়ে গেল অনেকগুলো। ফিনল্যাণ্ডে আত্মগোপনকারী লেনিন…অরোরা জাহাজ থেকে কামান গর্জন…মাও সে তুঙ, ফিদেল কাস্ট্রো…। এতদিন তারা ছিল রাজনৈতিক কর্মী, এই প্রথম বিপ্লবী কথাটা উচ্চারণ করল পমপম। সত্যি শুরু হবে বিপ্লব? অতীনের একটু একটু গ্লানি বোধ হচ্ছে, সে যেন ঠিক খাঁটি বিপ্লবী নয়। আজ সারাদিনই বারবার তার মনে পড়ছে অলির কথা, অলির মনে সে ব্যথা দিয়ে এসেছে, অলির সেই বিহ্বল দুটি চোখ…। প্রকৃত বিপ্লবীর কি এইসব দুর্বলতা থাকা উচিত?

পমপমকে সে জিজ্ঞেস করলো, হ্যাঁরে আমাদের আর্মসের ট্রেনিং নেবার দরকার নেই? আমি জীবনে কোনোদিন কোনো বন্দুক রিভলভার ছুঁয়েই দেখিনি। তুই তো তবু ওসব চালাতে জানিস?

পমপম বলল, আর্মড স্ট্রাগল ছাড়া কোনো বিপ্লবই হতে পারে না। তবে সেটা আর একটু পরের স্টেজ। এখন জমি দখলের লড়াইয়ে গ্রামের লোকের যে সব ট্রাডিশনাল ওয়েপনস্ থাকে, লাঠি টাঙ্গি দা কুড়োল সেই সবই কাজে লাগাতে হবে। মানিকদা বললেন, এটাই চারুবাবুর থিয়োরি!

–পমপম, তুই কি সঙ্গে পিস্তলটিস্তল কিছু এনেছিস? একবার আমাকে দিবি, একটু ধরে দেখব?

যেন সে অতীনের চেয়ে বয়েসে বড়, এরকম একটা ভাব করে পমপম। তার কাছে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র আছে কি নেই তা খোলাখুলি স্বীকার না করে সে অতীনের পিঠ চাপড়ে দিয়ে বলল, হবে, হবে! সময় মতন সব কিছু পাবি।

তারপরই সে জিজ্ঞেস করলো, হ্যাঁরে অতীন, মনে কর তুই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেলি। তারপর অন্য সবার নাম-ধাম খবরাখবর তোর পেট থেকে বার করবার জন্য পুলিশ তোকে টচার করবে, তখন তুই তা সহ্য করতে পারবি? প্রত্যেক বিপ্লবীর এটা একটা কঠিন পরীক্ষা।

–ওরা গায়ে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা দেয়, তাই না?

–শুধু কি ঐ একরকম! আমাদের বাড়িতে তো অনেক পলিটিক্যাল সাফারার আসে, এমনকি ফর্টি সেভেনের আগে ব্রিটিশের হাতে যারা টচারড হয়েছে তাদের অনেককে দেখেছি ছেলেবেলা থেকে, তাদের মুখে জেলের গল্প শুনেছি, এক একটা পুলিশ অফিসার হয় চূড়ান্ত সেডিস্ট, আসামীকে যন্ত্রণা পেতে দেখে হা-হা করে হাসে। আর যন্ত্রণা দেবার কত যে কৌশল… তোর ওপর দু’একটা ট্রাই করবো, দেখবি তুই সহ্য করতে পারিস কি না?

অতীন সম্মতি জানাবার আগেই পমপম তার একদিকের জুলপি ধরে এমন জোরে টান মারলো যে অতীন আঁতকে উঠে আ-আ-আ চিৎকার করে উঠলো। সেই চিৎকার শুনে মানিকদারা বেরিয়ে এলেন ঘর থেকে। মানিকদা জিজ্ঞেস করলেন, কী হলো, কী হলো?

অতীন বললো, এই পমপমটা কি সাংঘাতিক নিষ্ঠুর, আর একটু হলে মেরে ফেলেছিল আর কি!

পমপম বলল, বাচ্চা ছেলে একটা! একটু জুলপি ধরে টেনেছি, তাতেই এত চিৎকার। পুলিশ যখন আসল টচার করবে, তখন জুলপি পটপট করে ওপড়াবে, তখন কী করে সহ্য করবি?

–সে তখন দেখা যাবে। সত্যি সত্যি কিছু গোপন করার কথা থাকলে তবে তো সহ্য করার প্রশ্ন ওঠে! এখন কী আছে!

মানিকদা বললেন, আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলুম চিৎকার শুনে। ভাবলুম কাঁকড়া বিছে-টিছে কামড়ালো নাকি! একবার একটা বিছে বেরিয়েছিল, সাবধানে থাকিস!

আড্ডা চললো অনেক রাত পর্যন্ত। অতীন শুধু ভাত রান্না করেছে। প্রথম দিনের পক্ষে সে ভাত একেবারে আদর্শ বলা যায়। খাওয়া শেষ হলো পৌনে বারোটায়, তারপর শুতে শুতে রাত দুটো। কৌশিক আর সে এক ঘরে শুয়েছে, কৌশিক ঘুমিয়ে পড়ার পরেও তার ঘুম আসছে না। ঘুম চটে যাওয়া বলে একে। দুপুরের ঘুম পাওয়াটাকে সে সম্মান করেনি বলে রাত্তিরেও আর ঘুম আসবে না সহজে।

অন্ধকারে ভাসছে অলির মুখ। সারাদিনে এক মুহূর্ত নিরিবিলি সময় পাওয়া যায়নি, তাই অলিকে চিঠি লেখা হয়নি। এখন লেখা যায়। কিন্তু আলো জ্বেলে চিঠি লিখতে গেলে কৌশিক জেগে যেতে পারে, সে ঠাট্টা করবে।

সত্যি সারা রাত আর ঘন ঘুম হল না অতীনের, ভোরের আলো ফুটতেই সকলের আগে সে জেগে উঠলো। তাড়াতাড়ি সে চোখ ধুয়ে এসে বসে গেল চিঠি লিখতে।

প্রথম চিঠিখানা লিখলো মাকে। মোটামুটি এই জায়গাটার বর্ণনা দিল, মানিকদার কথা, পমপমের কথা, এমনকি তার ভাত রান্নার বিরাট সার্থকতাও বাদ গেল না। খাওয়া-থাকার সত্যিই কোনো অসুবিধে নেই এখানে, সে বিষয়ে মিথ্যে কথা বলতে হলো না। মা যে মশারি কিনে দিয়েছে, সেটা খুব কাজে লেগে গেল। কলকাতায় বাবলু কখনো মশারির নিচে শোয়নি।

মায়ের চিঠি হলো দু পাতা। তারপর দ্বিতীয় চিঠি :

আলি,

বদমেজাজী মানুষেরা নিজেদের যেমন ক্ষতি করে, অন্যদেরও তেমন ক্ষতি করে। অনেক ভুল বোঝাবুঝি হয়। এসব আমি জানি, কিন্তু এক এক সময় জ্ঞান থাকে না। সেদিন তোর বাবার…

একটু থেমে, চিন্তা করে অতীন তোর বাবার কেটে লিখলো, জ্যাঠামশাই।

সেদিন জ্যাঠামশাই আমাকে যে-সব কথা বললেন, তা আমি মোটেই পছন্দ করিনি, যদিও তাঁর মুখে মুখে কোনো উত্তর দিইনি। আমি ছেলেমানুষ নই, আমার ভবিষ্যৎ আমি নিজেই ঠিক করবো। আমার বাবা আমার কোনো কাজে বাধা দেন না। যাই হোক, সেদিন তোর সঙ্গে যেরকম ব্যবহার করেছি, সেজন্য পরে খুব লজ্জা পেয়েছি। তোর সঙ্গে অনেক কথা ছিল, কিন্তু আসবার আগে আর দেখাই হলো না।

এখানে একটু গুছিয়ে বসি, তারপর তোকে আবার লিখবো।

ইতি–

বাবলুদা

চিঠিখানা দু’বার পড়লো সে। খুব ছোট হয়ে গেল। নিজেই বুঝতে পারলো, চিঠিটা বড়ই সাদামাটা আর রসকষহীন। কিন্তু আর কী লেখা যায়? মাকে যে-সব কথা লিখেছে, সেগুলোই আবার অলিকে লিখতে ইচ্ছে করছে না। কার যেন পায়ের শব্দ শোনা যাচ্ছে, আর একজন জেগে উঠেছে।

তাড়াতাড়ি পুনশ্চ দিয়ে লিখলো, অলি, তোর বিষণ্ণ মুখখানা প্রায় সব সময়েই মনে পড়ছে।

চিঠির কাগজ একটা বই দিয়ে চাপা দিতেই পমপম এসে দাঁড়ালো সেখানে। ঘুমের পর মানুষের মুখখানা বোধ হয় একটু ফোলা ফোলা দেখায়। পমপমের মাথার চুল সব খোলা, শাড়িটা আলগা ভাবে শরীরে জড়ানো। অন্য সময় পমপম যে মেয়ে তা সব সময় খেয়াল থাকে না। এখন তাকে নারী বলে মনে হচ্ছে। মুখখানা বেশ কোমল।

–এত ভোরে উঠে কী করছিস রে, অতীন? পড়ছিস?

–চিঠি লিখছি। মাকে কথা দিয়েছিলাম—

–অলিকে লিখবি না?

এ প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে পমপমের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো অতীন। পমপমের কোমরের খাঁজ যে এত সুন্দর, তা আগে কোনোদিন চোখে পড়েনি। সে পম্‌পমকে কখনো এই। ভাবে দেখেনি। পমপমের নাভিটা যেন কুয়াশার মধ্যে একটু একটু দেখা চাঁদের মতন।

আশ্চর্য, অলিকেই ভালোবাসে অতীন, অলিকেই সে চায়, তবু পপমের নাভি ও কোমরের খাঁজের দিকে তার বারবার তাকাতে ইচ্ছে করছে কেন? কেন সে টুনটুনির বুকে হাত রেখেছিল? এগুলো কি সত্যিই অন্যায়? এ বিষয়ে কারুর সঙ্গে আলোচনা করা দরকার। কৌশিককে জানিয়ে কোনো লাভ হয়নি, কৌশিক বড্ড থিয়োরিটিক্যাল কথা বলে।

হয়তো পপমের সঙ্গেই এ সম্পর্কে খোলাখুলি আলোচনা করা যেতে পারে। অতীন আর একবার মুগ্ধ চোখে পপমের কোমরের দিকে তাকালো।

পমপম তার চুল হাতে জড়িয়ে একটা গিট বাঁধছে। মুখের নরম ভাব কমে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। এবার সে সারাদিনের জন্য তৈরি হবে। সে অন্যমনস্ক ভাবে বললো, অলি মেয়েটা বেশ ভালো। তবে বাবা-মায়ের বড় আদুরে। একটু স্পয়েল্ট!

বাথরুমের দিকে চলে গেল পম্‌পম। কেন যেন একটা অপরাধ বোধ জেগেছে অতীনের মনে, সে ঝিম মেরে একই জায়গায় বসে রইলো অনেকক্ষণ।

খানিকটা বেলা হতে কলেজে গিয়ে জয়েনিং রিপোর্ট দিয়ে এলো অতীন। কলেজ এখন ছুটি। আমাগীকাল জেনারাল ইলেকশান। শিলিগুড়ি শহরে ইলেকশানের কোনো টেম্পোই নেই। দেয়ালে দেয়ালে পোস্টারে দ্বিপাক্ষিক গলাবাজি আছে ঠিকই, কিন্তু সবই যেন নিয়মরক্ষা। কংগ্রেসের বুড়োগুলো আবার এসে বসবে গদি আঁকড়ে, অপোজিশানের শুধু গলাবাজিই সম্বল। বড়জোর মাঝে মাঝে বন্ধ ডাকবে। রাবিশ!

তাড়াতাড়ি খাওয়া দাওয়া সেরে নিয়ে মানিকদা সবাইকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। শিলিগুড়ি শহরটা লম্বাটে, এত দোকানপাট আর কোনো মফস্বল শহরে দেখা যায় না। সাইকেল রিকশা ও লরিতে সব সময় রাস্তা জ্যাম। শহর ছাড়িয়ে জলপাইগুড়ির রাস্তায় এসে পড়ার পর বেশ ভালো লাগলো অতীনের। শীতের ফিনফিনে হাওয়া বইছে, পরিষ্কার আকাশ।

ওরা রিকশা নেয়নি, হাঁটছে পাশাপাশি। পপমের শরীরটা এখন আবার সরলরেখার মতন, মুখে বুদ্ধির দীপ্তি। হাঁটাতে তার ক্লান্তি নেই, হাঁটতে হাঁটতে সে মানিকদার সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছে। অনর্গল। তপনকে কিছু একটা বোঝাচ্ছে কৌশিক, অতীন একা একটু পেছনে।

জোরে ছুটে আসা একটা লরি একটা ধুলোর ঝড় ছুঁড়ে দিয়ে গেল ওদের ওপরে। ওদের রাস্তার পাশে নেমে পড়তে হলো। লরিটার গতি দেখে ভয় পেয়ে একটা গরুর গাড়িও নেমে পড়েছে মাঠে। সে জায়গাটা অনেকটা ঢালু, গাড়োয়ান ছপটি মেরে মেরেও গরুদুটোকে তুলতে পারছে না। কৌশিক বললো, আয়, আমরা হাত লাগিয়ে গাড়িটাকে তুলে দিই।

গাড়িটার মাঝখানে বসে আছে একটি মাঝবয়েসী লোক, গায়ে একটা শাল জড়ানো। ওর হাতের আঙুলে অনেকগুলো আংটি, ডান বাহুতে একটি রূপোর তাগা, মুখে মিটিমিটি হাসি। এতগুলি ভদ্রলোকের ছেলেমেয়ে একটা গরুর গাড়ি ঠেলায় হাত লাগিয়েছে দেখে সে যেন বেশ মজা পেয়েছে।

জোরে দু’বার ধাক্কা দিতেই গাড়িটা উঠে গেল রাস্তায়, তারপর তড়বড়িয়ে ছুটতে লাগলো।

পমপম বললো, ঐ লোকটা কী অসভ্য! আমরা গাড়ি ঠেলছি, তবু ও ওপরে বসে রইলো, নামলো না?

তপন বললো, ঐ লোকটা একাই তো গাড়িটাকে ঠেলে তুলতে পারতো, তা না, ওজন বাড়িয়ে বসে রইলো!

মানিকদা বললো, আমরা সাহায্য করেছি, গরুদুটো আর গাড়োয়ানের জন্য। ঐ লোকটাকে আগে লক্ষ করিনি, ওকে চিনি আমি, ব্যাটা এক জোতদার। নামে-বেনামে অনেক জমি। ওর জমি দখল করবার কথা আছে, দাঁড়াও না, মার্চ মাসটা পড়ক, ঠ্যালা বুঝবে! মোটামুটি ঠিক আছে যে থার্ড মার্চ থেকে অ্যাকশান শুরু হবে।

তপন বললো, মানিকদা, জমি দখল করতে গেলে পুলিশ বাধা দেবে না? জোতদারদের তো নিজস্ব লাঠিয়াল থাকে।

মানিকদা বললেন, আমরাও তৈরি হয়ে যাবো। ভূমিহীন কৃষকরা এখন মরীয়া হয়ে উঠেছে! সাঁওতালরা তাদের হাতিয়ার নিয়ে যাবে, তাদের বলাই হয়েছে যে দরকার হলে মারতে হবে, মরতে হবে। পুলিশ তো জোতদারদের হেল্প করতে আসবেই, এবারে সরাসরি কনফ্রনটেশান হবে পুলিশের সঙ্গে।

অতীন যেন চোখের সামনে দেখতে পেল দৃশ্যটা। মাঠের মধ্যে ছুটছে দলে দলে মানুষ,, লাঠি নিয়ে তাড়া করছে পুলিশ, পুলিশের মাথাতেও ইট-পাথর পড়ছে, এবার পুলিস বন্দুক তুলেছে, কোথাও একটা বোমা ফাটলো, অতীনের হাতে ফ্ল্যাগ, একটা গুলি লাগলো তার কাঁধে, মাটিতে পড়ে যাবার আগে সে ঝাণ্ডাটা তুলে দিচ্ছে কৌশিকের হাতে…।

একটা সিগারেট ধরাতে ধরাতে অতীন ভাবলো, তার মা বাবা ঘুণাক্ষরেও জানেন না, অতীন, কোন উদ্দেশ্য নিয়ে শিলিগুড়ি এসেছে। এখানে পুলিশের গুলিতে যদি সে সত্যিই একদিন মরে যায়? সে এই আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ছে কেন? কলেজের চাকরি নিয়েই খুশী থাকতে পারতো, হাজার হাজার ছেলে এম এসসি পাশ করে যা করে, সেও যেতে পারতো সেই লাইনে। তা না গিয়ে সে যে বিপদের ঝুঁকি নিতে যাচ্ছে, তার কারণ সে কি সত্যিই বিপ্লবী হতে চায়? সে কি দেশটাকে বদলাতে চায়, শ্রমিক-কৃষকের রাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য যে কোনো মূল্য দিতে রাজি আছে? অথবা সে এসব কিছু করছে শুধু মানিকদার কথা শুনে, মানিকদার মুখ রক্ষা করার জন্য? মানিকদাকে সে নিজের দাদার মতন মনে করে, এতদিন মিশেও সে মানিকদার চরিত্রে কোনো খাদ দেখতে পায়নি, মানিকদার কথায় সে অনায়াসে প্রাণ দিয়ে দিতে পারে।

কিন্তু তার প্রাণ কি সম্পূর্ণ তার নিজের? তার দাদা আগে চলে গিয়ে তাকে এমন একটা বন্ধনে জড়িয়ে গেছে, সেটা থেকে সে বেরুবে কী করে?

সকল অধ্যায়

১. ১.০১ একটা ঘোড়ার গাড়ি ডাকা হয়েছে
২. ১.০২ বৈদ্যনাথধাম স্টেশনে দাঁড়িয়ে
৩. ১.০৩ ভবদেব মজুমদারের আমলে
৪. ১.০৪ বাড়ির দারোয়ানের সঙ্গে তুতুলকে
৫. ১.০৫ দেশ বিভাগের পর দুটি নতুন দেশ
৬. ১.০৬ ছাত্র বয়েসে প্রতাপের ঘনিষ্ঠ বন্ধু
৭. ১.০৭ মেঘনা নদী পার হয়ে দায়ুদকান্দি
৮. ১.০৮ মালখানগরে প্রতাপদের বাড়ির সামনে
৯. ১.০৯ সত্যেন ভাদুড়ীর গায়ের পাঞ্জাবী
১০. ১.১০ দুটো সাইকেল ভাড়া করা হয়েছে
১১. ১.১২ জেল থেকে ফেরার পর
১২. ১.১১ দুপুরবেলা নানা গল্পের মধ্যে
১৩. ১.১৩ বাগানে নতুন গোলাপ চারা
১৪. ১.১৪ ওপরতলায় নিজেদের অংশটায়
১৫. ১.১৫ ঐ ছেলেটা মুসলমান বুঝি
১৬. ১.১৬ বন্যা হবার দরকার হয় না
১৭. ১.১৮ বিমানবিহারীদের আদি বাড়ি
১৮. ১.১৭ কলকাতার তালতলা অঞ্চল
১৯. ১.১৯ পিকলু আর বাবলু এক স্কুলে পড়তো
২০. ১.২০ তুতুল বাগবাজারের একটি স্কুলে
২১. ১.৪৩ পাড়ার কয়েকটি ছেলে ধরাধরি করে
২২. ১.৪৪ আর্মানিটোলার পিকচার প্যালেস
২৩. ১.৪৫ পাড়াটির নাম বাগবাজার
২৪. ১.৪৬ একটা নড়বড়ে কাঠের টেবিল
২৫. ১.৪৭ আগের দিনই খবর দিয়ে
২৬. ১.৪৮ নতুন বাড়ি ঠিক হলো কালীঘাটে
২৭. ১.২১ সরকারি কর্মচারির চাকরি
২৮. ১.২২ বঙ্কুবিহারীর স্ত্রী এলিজাবেথ
২৯. ১.২৩ একটা মোটরবাইক চেপে হাজির
৩০. ১.২৪ হারীত মণ্ডলকে নিয়ে ত্রিদিব
৩১. ১.২৫ বাড়িতে অসময়ে কোনো অতিথি এসে
৩২. ১.২৬ প্রতাপ সিগারেট খেতে খেতে
৩৩. ১.২৭ ভোর রাতে ঘুম ভেঙে গেল প্রতাপের
৩৪. ১.২৮ কলকাতার ভদ্রলোকদের বাড়িতে ঝি-চাকর
৩৫. ১.২৯ প্রীতিলতার হাঁপানির টান বেড়েছে
৩৬. ১.৩০ ট্রেনে আসবার সময়ে
৩৭. ১.৩১ স্বাধীনতার কয়েক বছর পর
৩৮. ১.৩২ ঢাকার সেগুনবাগানে মামুনের এক দিদির বাড়ি
৩৯. ১.৩৩ বেশ তাড়াতাড়িই শীত পড়ে গেছে
৪০. ১.৩৪ দেওঘরে প্রতাপকে থেকে যেতে হলো
৪১. ১.৩৫ মোহনবাগান লেনে চন্দ্রাদের বাড়ি
৪২. ১.৩৬ মোটর বাইকের গর্জনে পাড়া কাঁপিয়ে
৪৩. ১.৩৭ অল ওয়েভ রেডিও
৪৪. ১.৩৮ কানু যে ব্যাঙ্কে কাজ করে
৪৫. ১.৩৯ কলেজের গেট দিয়ে বেরিয়ে
৪৬. ১.৪০ দেওঘরে এসে উপস্থিত হলেন সত্যেন
৪৭. ১.৪১ পাতিপুকুরের বাড়ির ভিত তৈরির কাজ
৪৮. ১.৪২ কানুর বাড়ির ছাদের আলসেতে
৪৯. ২.০২ শেষ পরীক্ষার শেষ ঘণ্টা
৫০. ২.০৩ দুপুরবেলা প্রবল ঝড় হয়ে গেছে
৫১. ২.০৪ বাড়ির সামনে যে গেট ছিল
৫২. ২.০৬ খবরের কাগজ পড়ে যাচ্ছেন প্রতাপ
৫৩. ২.০৫ বাবুল বুঝতে পারেনি
৫৪. ২.০৭ পাতিপুকুর স্টপে বাস থেকে নেমে
৫৫. ২.০৮ গাড়ি ভাড়া করেছে আলতাফ
৫৬. ২.০৯ প্রেসিডেন্সি কলেজের গেট দিয়ে
৫৭. ২.১০ কেমিস্ট্রিতে ফার্স্ট ক্লাস
৫৮. ২.১১ রেল লাইনের ধারে
৫৯. ২.১২ টেলিফোনটা নামিয়ে রেখে
৬০. ২.১৩ সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে
৬১. ২.১৪ কয়েকদিন এড়িয়ে এড়িয়ে চলার পর
৬২. ২.১৫ মুড়ি ও তেলেভাজা খাওয়া
৬৩. ২.১৭ টেবিলের ওপর জোর একটা চাপড় মেরে
৬৪. ২.১৬ অসুখ-বিসুখের ব্যাপার
৬৫. ২.১৮ কফি হাউসে ঢোকার মুখে
৬৬. ২.১৯ তিন তিনটে সাধারণ নির্বাচন
৬৭. ২.২০ ভিত নেই তবু বাসস্থান গড়ে উঠেছে
৬৮. ২.২১ বৃষ্টির ছাঁট আসছে খুব
৬৯. ২.২২ আদালতে প্রতাপ
৭০. ২.২৩ সীট রিজার্ভেশানের সুযোগ
৭১. ২.২৪ লোদি গার্ডেনসে ত্রিদিব আর সুলেখা
৭২. ২.২৫ পত্রিকার নাম নিয়ে আলাপ-আলোচনা
৭৩. ২.২৬ নোয়াখালিতে বসিরের বাড়ি
৭৪. ২.২৭ থার্ড ইয়ার থেকে ফোর্থ ইয়ারে
৭৫. ২.২৮ কবি জসিমউদ্দিনের বাড়িতে
৭৬. ২.২৯ অতীনদের স্টাডি সার্কল
৭৭. ২.৩০ আজকালকার যুদ্ধে
৭৮. ২.৩১ রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে
৭৯. ২.৩২ কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউস
৮০. ২.৩৩ টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোর কাছে
৮১. ২.৩৫ নোয়াখালিতে সিরাজুল
৮২. ২.৩৪ মেডিক্যাল কলেজ থেকে বাড়ি
৮৩. ২.৩৬ স্টাডি সার্কল থেকে
৮৪. ২.৩৭ তিনতলার এই ঘরখানি
৮৫. ২.৩৮ আলপথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে
৮৬. ২.৩৯ কয়েকদিনের জ্বরেই একেবারে কাবু
৮৭. ২.৪০ একটা ভিড়ের বাসে চেপে
৮৮. ২.৪১ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ এলাকা ছাড়িয়ে
৮৯. ২.৪২ মামুনের মেজাজ খারাপ
৯০. ২.৪৩ তুতুল একা একা
৯১. ২.৪৪ ঝোঁকের মাথায় প্রতাপ
৯২. ২.৪৫ সন্ধ্যারতির সময় ভক্ত ও দর্শক
৯৩. ২.৪৬ দোতলা থেকে কল্যাণী ডাকছেন
৯৪. ২.৪৭ অ্যালুমিনিয়ামের বাটি
৯৫. ২.৪৮ বড় তেঁতুল গাছ
৯৬. ২.৪৯ স্টাডি সার্কেল শেষ হয়ে যাওয়ার পর
৯৭. ২.৫০ জানলায় পিঠ দিয়ে দাঁড়িয়ে
৯৮. ২.৫২ আকাশে জোরে বিদ্যুৎ চমকালে
৯৯. ২.৫১ চায়ের কাপ তুলে একটা চুমুক
১০০. ২.৫৩ দিনের পর দিন কেটে যায়
১০১. ২.৫৪ করোনেশান ব্রীজের কাছে
১০২. ২.৫৫ তিনবার সিটি দিয়ে থেমে গেল ট্রেনটা
১০৩. ২.৫৬ সিনেমা হল থেকে বেরিয়ে
১০৪. ২.৫৭ তুতুলের খুব অস্বস্তি হয়
১০৫. ২.৫৮ বছরের প্রথম দিনটি
১০৬. ২.৫৯ পুরোনো গাড়িটার বদলে
১০৭. ২.৬০ অকস্মাৎ মামুনকে গ্রেফতার
১০৮. ২.৬২ সারারাত ঘুমোতে পারেনি তুতুল
১০৯. ২.৬১ লণ্ডন শহরে পা দিয়ে
১১০. ২.৬৩ ট্রাম ধর্মঘট মিটলো
১১১. ২.৬৪ ট্রেন সাড়ে চার ঘণ্টা লেট
১১২. ২.৬৫ শহরের সমস্ত লোক
১১৩. ২.৬৬ সিঁড়ির মুখে ল্যান্ডলেডি
১১৪. ২.৬৭ তুতুল যে সার্জারিতে কাজ করে
১১৫. ২.৬৮ পমপম একটা রেডিও রেখে গেছে

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন