দাম্পত্য কলহকথা – স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়

ইমদাদুল হক মিলন

দাম্পত্য কলহকথা – স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়

রোজকার মতো অফিস ছুটির পর অফিস ক্লাবে ঘন্টা দুয়েক বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা আর তাস পিটিয়ে ফেরার পথে এক ঠোঙা বাদাম ভাজা খেতে খেতে চৌরঙ্গির ফুটপাথ ধরে হাঁটছিল শুভময়। উদ্দেশ্য এসপ্ল্যানেড ট্রাম গুমটির কাছে এসে বেহালার ট্রাম ধরে বাড়ি ফিরবে। এ তার নিত্যদিনের রুটিন।

মেট্রোর কাছাকাছি রাস্তাটা পার হবার মুখেই একেবারে মুখোমুখি।

রিয়া শুভময়কে দেখে যাকে বলে কলকল্লোলিত কণ্ঠে বলে উঠলো, —জামাইবাবু। আপনাকে এখানে এসময়ে দেখবো ভাবতেই পারিনি।

রাস্তা পার হওয়া আর হলো না। সেখানেই থমকে দাঁড়িয়ে শুভময় বাদামের ঠোঙাটা শ্যালিকার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো,—অবাক হবার কিছু নেই। এটাই তো আমার বাড়ি ফেরার সময়। তা তুমি এখন কোথা থেকে?

—আজ আমরা দুজনেই ইভনিং শো-এ একটা সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম। মেট্রোর বইটা দেখেছেন জামাইবাবু? দারুণ…….

—আমরা দুজনে মানে? শুভময় শ্যালিকার কথা শেষ হবার আগেই বললো, নিশ্চয়ই তুমি আর বঙ্কিম? একটা বেসরকারি সংস্থার জুনিয়ার কম্পুটার ইঞ্জিনিয়ার বঙ্কিম রায়ের সঙ্গে যে রিয়ার কিছুদিন যাবত ‘ইয়ে’ চলছে তা অবশ্যই ইতিমধ্যেই কানে এসেছে শুভময়ের। তা অস্বাভাবিক কিছু নয়। শুভময়ের স্ত্রী রনিতার চেয়ে বছর দুয়েকের ছোট রিয়া রীতিমত সুন্দরী, বিদুষী। একটা মাঝারি শ্রেণীর কমার্শিয়াল ফার্মের রিসেপসনিষ্ট। তা সে যদি মনোমত পুরুষকে পারমানেন্ট রিসেপসান দিতে চায় আপত্তি কি!

হঠাৎ রিয়া বললে,—আচ্ছা জামাইবাবু। এই যে প্রতিদিন অফিস ফেরত এত রাত অবধি ক্লাবে আড্ডা দিয়ে আপনি ঘরে ফেরেন, এতে দিদি আপত্তি করে না?

—কেন, আপত্তি করবে কেন, শুভময় বাদাম চিবুতে চিবুতে বললো, এটুকু বোঝাপড়া আমাদের মধ্যে আছে। আমরা কেউ কারুর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করি না।

—হুঁ! খুব যে বিশ্বাস দিদির ওপরে, রিয়াজ নাচিয়ে বললো, দাঁড়ান, সবে তো পাঁচ বছর হলো বিয়ে হয়েছে আপনাদের…..

–দেখ রিয়া, শুভময় শ্যলিকার কথা শেষ হবার আগেই বললো, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যা বোঝাপড়া তা প্রথম পাঁচ বছরের মধ্যেই যা হবার তা হয়ে যায়, এবং তোমায় আমি বলতে পারি এ ব্যাপারে আমাদের বোঝাপড়া পুরো ষোল আনা। তুমি জানলে হয়তো অবাক হয়ে যাবে রিয়া, এই পাঁচ বছরের মধ্যে একটি দিনের জন্যেও আমাদের মধ্যে কোন দাম্পত্য কলহ হয়নি। আমাদের প্রতিবেশীরা আমাদের সম্পর্কে কি বলে জান?

—কি?

–একেবারে ‘মেড ফর ইচ আদার’! বলতে বলতে নিজেই হা হা করে হেসে ওঠে শুভময়।

রিয়া এবার কয়েক সেকেন্ড শুভময়ের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে,—আচ্ছা জামাইবাবু, ব্যাপারটা আপনাদের পাসে মনে হয় না?

—পানসে। মানে?

—মানে এই দাম্পত্য কলহহীন জীবন। পাঁচ বছরের মধ্যে একবারও আপনাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ হয় নি। আমি তো ভাবতেই পারি না। এদিকে দেখ, বঙ্কিমের সঙ্গে তো আমার এখনও বিয়ে হয় নি, কিন্তু এরই মধ্যে আমরা দুজনে প্রায়ই কলহ করি। আবার ভাবও হয়ে যায়।

—কিন্তু আমার সে চান্স নেই। বলতে বলতে এবার বোধহয় একটা দীর্ঘশ্বাসই বেরিয়ে এল শুভময়ের বুকের ভেতর থেকে, তোমার দিদির আমার ওপর এতই বিশ্বাস……..

—কিন্তু সে বিশ্বাস যদি আমি টলিয়ে দিতে পারি জামাইবাবু। —তুমি!

—হ্যাঁ। কোন অন্য নারীর পক্ষেই সম্ভব আর একজনের সংসারে দাম্পত্যকলহ সৃষ্টি করা।

রিয়ার কথায় আবার হেসে উঠলো শুভময়। হাসতে হাসতেই বললো, আমার ক্ষেত্রে তোমার কোন থিয়োরিই খাটবে না রিয়া সুন্দরী। চেষ্টা করে দেখতে পার।

—বেশ! চ্যালেঞ্জ নিলাম। রিয়া হঠাৎ যেন সিরিয়াস হয়ে যায়।

—কিসের চ্যালেঞ্জ রিয়া?

—আগামী সাত দিনের মধ্যে আমি আপনার সংসারে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি করবো।

—আমার কাছে এটা বেশ একটা মজার খেলা মনে হচ্ছে। কিন্তু তুমি পারবে না রিয়া।

—ঠিক আছে খেলাটা শুরু করেই দেখি না, রিয়া এবার কটাক্ষ করে,-এবং খেলাটা শুরু হোক আজ থেকেই।

—আজ থেকে!

—হ্যাঁ। বলতে বলতে ভ্যানেটি ব্যাগ খোলে রিয়া, আমার আর বঙ্কিমের সিনেমা টিকিটের কাউন্টার ফয়েল দুটো এখনও আমার কাছে রয়েছে, এই এটা আপনার শার্টের পকেটে ঢুকিয়ে দিলাম। আপনি শুধু বাড়ি ফিরে যেন অন্যমনস্কভাবে এদুটো দিদির ড্রেসিং টেবিলের ওপর রাখবেন। দিদি জিগ্যেস করলে বলবেন,অফিস ফেরত আপনি আমাকে নিয়ে সিনেমায় গিয়েছিলেন। ব্যাস, আপনাকে আর কিছু করতে হবে না।

—ধ্যুস! তাতে কি হবে? শুভময় রিয়ার কথায় গুরুত্ব দেয় না, তুমি আমার শ্যালিকা, তোমায় নিয়ে আমি একদিন সিনেমায় যেতেই পারি। আমি জানি এজন্যে তোমার দিদি কিছু মনে করবে না।

রিয়া মুচকি হেসে বললো,—বেশ তো। আপনি শুধু আমি যা বলবো, তাই করবেন। মনে থাকে যেন সাতদিনের জন্য সময় নিয়েছি।

বলতে বলতেই হাত নেড়ে সামনে একাট ট্যাক্সি ডেকে উঠে পড়লো রিয়া। শুভময়ও হাসতে হাসতে গিয়ে বেহালার ট্রাম ধরলো।

শুভময় ঠিকই ভেবেছিল। ড্রেসিং টেবিলে দুটো সিনেমা টিকিটের ইভনিং শো এর কাউন্টার ফয়েল দেখে রনিতা যখন জানলো শুভময় অফিস ছুটির পর তার ছোটবোন রিয়াকে সঙ্গে নিয়ে সিনেমা গিয়েছিল, তখন শুধু বললো, কই, তোমাদের যাবার কথা ছিল, আগে বলনি তো? শুভময় মাথা চুলকে আমতা আমতা করে বলেছে, ইয়ে…হঠাৎ ঠিক হয়েছে। তোমায় বলার সময় পাইনি। এরপর আর কোন কথা বলেনি রনি। তারপর সব কিছু স্বাভাবিক।

সুতরাং পরের দিন রিয়া যখন শুভময়কে ফোন করে দিদির রিএ্যাকসানটা জানতে চাইলো, শুভময় বললো,-রিয়া সুন্দরী, তোমার চালাকি এক্ষেত্রে ব্যর্থ। তোমার দিদির বিশ্বাস তুমি টলাতে পার নি।

–বটে! বটে! রিয়া টেলিফোনের ওপার থেকে হেসেছে, জামাইবাবু, আপনাদের মতো পুরুষদের সাধ্য নেই মেয়েদের মন এত সহজে বোঝে।

–তার মানে তুমি কি বলেত চাও রিয়া?

-বলছি মশাই, রিয়া ও রফ থেকে হাসতে হাসতে বলে, আপনারা পুরুষরা যখন কোন মেয়েকে ভালবাসেন তখন তার সম্পর্কে একেবারে অন্ধ হয়ে যান। আর এ সুযোগ মেয়েরা কড়ায় গণ্ডায় উসুল করে নেয়।

—তোমার কথা আমি কিছু বুঝতে পারছি না। শুভময় জিভ দিয়ে ঠোঁটটা একবার চেটে নিয়ে বলে।

–তার মানে আপনার বিশ্বাসটাও মাঝে মাঝে যাচাই করে নেয়া উচিত মশাই।

—তুমি কি বলতে চাও?

—আমি বলতে চাই এই যে আপনি প্রতিদিন অফিস ফেরত রাত নটার পর বাড়ি ফেরেন আর দিদি ব্যাপারটা নিয়ে টু শব্দ করে না, এটা কখনও আপনার অস্বাভাবিক মনে হয়নি।

—আমি তো তোমাকে আগেই বলেছি, আমাদের দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া…

কিন্তু এ বার আর কথা শেষ করতে পারে না শুভময়, তার কণ্ঠস্বর রিয়ার বাঁধ ভাঙা হাসির ঢেউ এ ঢাকা পড়ে। হাসি থামিয়ে রিয়া বলে, ওই সময়টা সত্যি সত্যি আপনার স্ত্রী, মানে আমার দিদির কেমন কাটে জানতে চেয়েছেন? এর মধ্যে যদি আপনাদের একটি সন্তান থাকত, তা হলে না হয়….

তা অবশ্য ঠিক। তাদের স্বামী স্ত্রীর দুজনের সংসার। এই পাঁচ বছরেও ওদের সংসারে কোন সন্তান আসেনি, নিতলার সাড়ে ছশ স্কোয়ার ফুট ফ্ল্যাটে শুধু ওরা দুজন। একটি ঠিকে ঝি সকাল সন্ধে কাজ করে চলে যায়। শুভময় অফিস যাবার পর। রনিতা সম্পূর্ণ একা। যতক্ষণ না শুভময় ঘরে ফেরে।

ভাবতে ভাবতে অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল শুভময়, ও রফ থেকে রিয়ার কণ্ঠস্বরে চমক ভাঙলো,—কি জামাইবাবু, কি ভাবছেন?

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে শুভময় বলে,—ঠিকই বলেছ রিয়া, তোমার দিদির সারাদিন বড় নিঃসঙ্গ কাটে। এবার অফিস ফেরত ক্লাবের আড়াটা ধীরে ধীরে ছাড়তে হবে।

—তা অফিস ফেরত সরাসরি বাড়ি ফিরছেন কবে? ও তরফে রিয়ার কণ্ঠে কৌতুকের সুর।

–আজ…না, আজ হবে না, আগামীকালই যাব। রনিতার কথাটাও ভাবা উচিত। সে নিজে অবশ্য কোনদিন আমার ফেরা নিয়ে কোন অভিযোগ জানায়নি, তবু…

—তাহলে আগামীকাল থেকেই আপনি অফিস ফেরত সরাসরি বাড়ি ফিরছেন, তাই তো।

আর দু একটা কথার পর রিয়া লাইন ছাড়ে।

রিয়া টেলিফোনটা ছাড়ার পরও শুভময় রিয়ার কথাগুলো অনেকক্ষণ বসে ভাবে। তার এই শ্যালিকাটি অবশ্য বরাবরই ফাজিল, ওর সব কথা ধরা যায় না, তবে এটা ঠিক, স্ত্রী রনিতাকে তার কিছু সময় দেয়া দরকার।

.

পরদিন অফিস ফেরত আর ক্লাব ঘরে গিয়ে ঢুকলে না শুভময়, বন্ধুদের হাঁক ডাক উপেক্ষা করেই বাড়ির পথ ধরলো। বিয়ের পাঁচ বছর বাদে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটলো শুভময়ের জীবনে।

সন্ধ্যে ছটার মধ্যেই ফ্ল্যাটের দরজা পৌঁছে গেল শুভময়।

বদ্ধ দরজার ডোর বেল বাজালো-একবার…… দুবার…..ফ্ল্যাটের দরজা খুলে দাঁড়ালো রনিতা। সামনে শুভময়কে দেখে রনিতার চক্ষু চড়কগাছ,একি গো, আজ যে এত তাড়াতাড়ি। শরীরটরীর খারাপ হয়নি তো! রনিতার আর একথা ভাবায় দোষ কি? সত্যিই তো, গত পাঁচ বছরে এমনি সে কোনদিনই দেখে নি। অফিস ফেরত তাসের নেশা ছেড়ে ঘরে ফেরা যে দুঃসাধ্য সে কথা নিজেই কবুল করেছে শুভময়।

রনিতা যখন স্বামীকে দেখে এসব কথা ভাবছে, শুভময় তখন দেখছে পাশেই জুতোর জায়গায় একজোড়া অপরিচিত জুতো। এসময়ে বাড়িতে কি কেউ এসেছে? কোন পুরুষ?

—এস। ভেতরে এস।

—হ্যাঁ…ইয়ে, কেউ কি এসেছে? কথাটা প্রথমেই জিগ্যেস না করে পারলো না শুভময়।

—হ্যাঁ গো। আমাদের রিয়ার হবু বর বঙ্কিমের এক বন্ধু তারক। বললো, এই পথ দিয়ে যাচ্ছিল, হঠাৎ আমাদের কথা মনে হওয়ায় দেখা করতে এসেছে।

বলতে বলতে ওরা সামনের ঘরটায় পৌঁছে গেছে। সেখানে সোফায় বসে রয়েছে বস্ত্র ৩০ বয়সি এক সুদর্শন যুবক। ওকে আগে কোনদিন দেখেছে বলে তো মন পড়ছে না শুভময়ের।

শুভময়কে দেখে যুবকটি উঠে দাঁড়িয়ে নমস্কার জানাল, এখানে এসে দিদির কাছে যখন শুনলাম আপনি রাত নটার আগে বাড়ি ফেরেন না সত্যি বলতে কি খুব হতাশ লাগছিল। আপনি এসে পড়েছেন খুব ভাল হলো।

ওর মুখে ওই আদিখ্যেতার মতো কথাগুলো শুনে অজান্তেই শুভময়ের গাটা যেন জ্বলে গেল। দিদি না ছাই! এমন ধান্দাবাজি কথা অনেক শুনেছে শুভময়।

শুভময় সারাক্ষণ কোন কথা বললো না। তারকও বোধকরি শুভময়ের মনোভাব কিছুটা আঁচ করতে পারলো তাই আর বেশিক্ষণ বসলো না। কোন রকমে এক কাপ চা আর দুটো বিস্কুট খেয়ে বিদায় নিল।

রনিতাও তার ভাবভঙ্গি দেখে চুপ মেরে গেছে। রাত দশটা পর্যন্ত স্বামী স্ত্রী কেউ কোন কথা বললো না। তারপর খাওয়ার টেবিলে বসে মুখোমুখি খেতে খেতে রনিতা বললো, সত্যি কথাটা বলতো, তারক আসায় তুমি কি খুশি হও নি?

শুভময় রুটির টুকরো মুখে দিয়ে বললো—ওকি এখানে প্রায়ই আসে?

–তার মানে! রনিতা থমকে গিয়ে বললো, তুমি আমায় সন্দেহ করছ?

—সন্দেহের কোন কারণ আছে কিনা সেটা তুমি নিজেই জান।

সে রাত্রে আর দুজনের মধ্যে কোন কথা হলো না। খাওয়া দাওয়া সেরে দুজনেই বিছানায় শুয়ে পড়লো দুজনের বিপরীত দিকে মুখ করে। গত পাঁচ বছরে এ দৃশ্য এই প্রথম।

.

পরদিন রিয়া আবার শুভময়ের অফিসে ফোন করলো,–কেমন আছেন জামাইবাবু।

–এই চলে যাচ্ছে।

রিয়া স্পষ্ট বুঝলো জামাইবাবুর কণ্ঠস্বরে আজ কেমন যেন বেসুর বাজছে। বুদ্ধিমতী মেয়ে রিয়া কায়দামতো একুট টোকা দিতেই শুভময় গড়গড় করে তার মনের সব অভিমান আর ক্ষোভের কথা উগরে দিয়ে বললো,—রিয়া তুমি ঠিক বলেছিলে, পাঁচ বছর সংসার করলেও স্বামী স্ত্রী পরস্পরকে পুরোপুরি চিনতে পারে না। আমি তো ভাবতেই পারছি না…….

রিয়া মনে মনে হাসে। এর মানে খেলাটা ভালই জমেছে। কিন্তু সে কথা না বলে রিয়া ফোঁস করে একটা নিশ্বাস ফেলে বলে, কি আর করবেন বলুন জামাইবাবু, আজকের দিনে স্বামী স্ত্রী সকলেরই স্বাধীনতা আছে নিজের ইচ্ছেমতো চলা। সতী সাধ্বীর সে দিনতো আর নেই…

শুভময় হঠাৎ কোন কথা বলে না। সে আধুনিক যুগের শিক্ষিত যুবক। রিয়া যা বলেছে তা সে অস্বীকার করে কি করে তার অনুপস্থিতিতে রনিতা যদি তার কোন বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে ফাঁকা ফ্ল্যাটে নিঃসঙ্গতা দূর করতে চায় তার কি করার আছে। কিন্তু তবু………

—জামাইবাবু আপনার মনের ভাবনা আমি টের পাচ্ছি, টেলিফোনের ওদিক থেকে রিয়া বলে,—গুলি মারুন ওসব চিন্তায়, আজ চলুন, ছুটির পর আমরা একটা নাটক দেখে আসি।

–নাটক!

—হ্যাঁ। একাডেমি অফ ফাইন আর্টস। বহুরূপী একটা দারুণ নতুন নাটক নামিয়েছে।

কিছুটা মনের দুঃখ ভুলতে কিছুটা অভিমানের জ্বালায় রাজি হলো শুভময়। অফিস ছুটির পর সেদিন সন্ধ্যায় শ্যালিকার সঙ্গে সে গেল এ্যাকাডেমিতে নাটক দেখতে। শো শেষ হবার পর রিয়ার অনুরোধে একটা হোটেলে ঢুকলো। রাতের খাওয়াটা সেখানেই সেরে শুভময় যখন নিজের ফ্ল্যাটে ফিরলো তখন রাজ এগারটা।

রনিতা খাওয়ার টেবিলে রাতের খাবার সাজিয়ে বসেছিল। শুভময় গম্ভীর ভাবে খেয়ে এসেছি বলে জামাকাপড় ছেড়ে হাত মুখ ধুয়ে শুয়ে পড়লো।

বিস্ফোরণটা ঘটলো পরদিন।

শুভময় অফিস থেকে ফিরে দেখলো ফ্ল্যাটের দরজায় ভেত্র থেকে লক নেই। শুধু ভেজান রয়েছে। ঠেলতেই দরজা খুলে গেল। ফ্ল্যাটের ভেতরে আলো জ্বালানো হয়নি। শঙ্কিত মনে সুইচ টিপে আলো জ্বালাতেই চোখে পড়লো সামনের ডাইনিং স্পেসে ডাইনিং টেবিলের ওপাশে একটা চেয়ারে চুপচাপ বসে রয়েছে রণিতা। উস্কোখুস্কো চেহারা। চোখের কোনে কালি।

–রণিতা! কি হয়েছে তোমার?

রণিতা কোন কথা বলে না। যেমনভাবে বসেছিল, তেমনভাবেই চুপচাপ বসে রইলো।

এবার সত্যিই দূর্ভাবনায় পড়লো শুভময়। হঠাৎ নজর পড়লো রনিতার হারে সামনে পড়ে রয়েছে একটা টুকরো কাগজ। উঁকি মারতেই বুঝলো সেটা একটা চিঠি। শুভময় চিঠিটা হাতে তুলে নিল। তাতে মেয়েলি ছাঁদে কয়েক লাইন লেখা?

“শুভ,

সত্যিই আর পারছিনা গো, তুমি কথা দিয়েছিলে আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না। কিন্তু কবে আসবে সেইদিন, যেদিন সব বাধা ভেঙে তুমি আমায় একেবারে আপন করে নেবে। আর দেরি কোর না লক্ষ্মীটি।

ইতি।
তোমার সেই একজন”

শুভময় অবাক হয়ে চিঠিটা টেবিলের ওর নামিয়ে রাখতেই রনিতা বললো,–তোমার শার্ট লন্ড্রিতে দেবার জন্য পকেট হাতড়াতেই চিঠিটা পেয়েছি। পড়ে ফেলার জন্য দুঃখিত। আজই আমি এখান থেকে চলে যেতে চাই।

—কোথায় যাবে? শুভময় প্রশ্ন করে।

—আমার মতো মেয়েদের শেষ আশ্রয় তো একটাই। বাপের বাড়ি।

—আগামীকাল সকালে গেলে হোত না।

–না। যত শীঘ্র সম্ভব তোমায় আমি মুক্তি দিতে চাই। সুটকেশ আমি গুছিয়েই রেখেছি। শুধু তোমার ফেরার জন্যে অপেক্ষা করছিলাম।

বলতে বলতে উঠে দাঁড়ায় রনিতা। তার সত্যি সত্যি ঘরের ভেতরে ঢুকে সুটকেশটা নিয়ে শুভময়ের সামনে দিয়ে বেরিয়ে যায়।

.

—এ তুমি কি করলে রিয়া! এ ভাবে যে তুমি আমার সংসারটাকে ভেঙে দেবে আমি ভাবতে পারি নি। বলতে বলতে শুভময়ের দুচোখ অশ্রুতে ভরে উঠলো।

রিয়া স্পষ্টতই অস্বস্তিতে পড়েছে। এতটা সে ভাবতে পারে নি। হ্যাঁ, গত পরশু রাতে খাওয়া দাওয়া সেরে জামাইবাবুর সঙ্গে হোটেল থেকে ফেরার পথে চিঠিটা সেই শুভময়ের অজান্তে তার পকেটে ঢুকিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সেই সূত্র ধরে ব্যাপারটা যে এতখানি গড়াবে…….

গতরাতেই তার দিদিভাই রনিতা জামাইবাবুর ফ্ল্যাট ছেড়ে তাদের বাড়িতে চলে এসেছে এবং অনবরত কেঁদে চলেছে। দিদি যে জামাইবাবুকে সত্যিই কতটা ভালবাসে তা রিয়ার চেয়ে বেশি আর কে জানে!

আর আজ জামাইবাবুও অফিসে না গিয়ে সোজা এসেছেন তার অফিসে।

দুজনের পাঁচ বছরের ভালবাসার মধ্যে এই দাম্পত্য কলহের পাঁচিলটাতো সেই তুলেছে। কিন্তু রিয়া তো সত্যি সত্যি চায়নি তার দিদি জামাইবাবুর মধ্যে এই সাতদিনের মধ্যেই এমন একটা বিচ্ছেদ নেমে আসুক। সে তো একটা খেলা খেলতে চেয়েছিল মাত্র। সেদিন তার জামাইবাবু এই শ্যালিকাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলছিল পাঁচ বছরে তাদের স্বামীর স্ত্রী মধ্যে যে বোঝাপড়া গড়ে উঠেছে তা ভাঙার সাধ্য কারুর নেই, বিয়ের পর একদিনের জন্যেও দাম্পত্য কলহ হয় নি তাদের মধ্যে। রিয়া চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল। সে চ্যালেঞ্জারের দিকে তাকাল। আজ সাতদিন পূর্ণ হয়েছে। তার মানে এ খেলায় জিতে গেছে রিয়া।

এবার আবার জোড়া লাগাতে হবে।

.

দিন রাত্রে রিয়া ফোন করলো সরাসরি শুভময়ের ফ্ল্যাটে।

শুভময় সেদিন আর অফিস ফেরত ক্লাবে যায় নি। বলতে কি তার দেহমন সে রাত থেকেই অবসন্ন হয়ে রয়েছে, যে রাতে রনিতা তাকে ভুল বুঝে বাপের বাড়ি চলে গেছে।

রনিতা এভাবে চলে যাওয়ায় শুভময় অবশ্য প্রথমে ক্রুদ্ধই হয়েছিল। তারপর ধীরে ধীরে তার ক্রোধ অভিমানে রূপান্তরিত হয়েছে রনিতা কেন তাকে এভাবে ভুল বুঝলল! সেও তো অনেক কথা শোনাতে পারতো রনিতাকে। বিশেষত তার দুদিন আগে সেই বিকেলে বাড়ি ফিরে একজন অন্য পুরুষকে তার ফ্ল্যাটে দেখার পর।

কথাটা মনে পড়তেই বুকের মধ্যে আবার একাট উথাল পাথাল শুরু হয় শুভময়ের। তার মনে হয় তাহলে কি রনিতার এই চলে যাওয়াটা একটা অজুহাত? আসলে বারে বাড়ি গিয়ে……

ঠিক সেই মুহূর্তে ফোনটা বেজে ওঠে। ওরফে রিয়া।

–জামাইবাবু, কি করছেন?

–এ্যাই…..মানে…….

নিশ্চয়ই কারুর ধ্যান করছে, হয় দিদির, না হয় আমার?

–তুমি থামো তো রিয়া, তোমার জন্যেই আজ……

শুভময় তার কথা শেষ করার আগেই রিয়া বাঁধ ভাঙা হাসিতে ফেটে পড়ে, তারপর হাসতে হাসতে বলে, তাহলে স্বীকার করছেন তো আপনার হার হয়েছে?

–তার মানে?

তার মানে বুঝতে পারছে তো মশাই। আপনি চ্যালেঞ্জ করেছিলেন আপনার আর দিদির বোঝাপড়া কেউ ভাঙতে পারবে না। গত পাঁচবছর আপনাদের মধ্যে কোন দাম্পত্য কলহ হয় নি। আপনার সে গুমোর ভাঙতে পেরেছিলো। জামাইবাবু মাত্র সাতদিনের মধ্যে!

—রিয়া! তুমি…..

—খুব হয়েছে। এবার বাকি কাজটা আমায় করতে দিন। আগামীকাল রবিবার ছুটির দিন আপনার শ্বশুরবাড়িতে একবার আসুন।

-আমি…..মানে…….

–আপনার কোন প্রেসটিজ যাবে না মশাই। দিদিকে আমি সব বলেছি। আগামীকাল আপনি আমাদের বাড়িতে এলে আপনাদের ভাঙা বোঝাপড়া জোড়া লাগাবার দায়িত্ব আমার। ভাল কথা, তারকাকেও আসতে বলেছি।

—তারক! নামটা শুনেই শুভময়ের মেজাজটা কটাং করে উঠলো।

ফোনের ওধার থেকে তা ঠিক বুঝতে পারলো রিয়া। সঙ্গে সঙ্গে আর এক ঝলক হেসে বললো—তারকাকে সেদিন বিকেলে আপনার ফ্ল্যাটে আমিই পাঠিয়ে ছিলাম। কারণ সন্দেহের ধোঁয়াটা দু তরফে না দিলে দাম্পত্য কলহের খেলাটা জমতে না।

—এ্যাঁ! রিয়া…তুমি……তুমি…..

প্রচণ্ড বিস্ময়ে শুভময়ের কথা আটকে যায়। রিয়া হাসতে হাসতে ফোনের রিসিভার রাখে।

.

বোধহয়? এ গল্পের শেষটুকু আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

তবে একটা তথ্য দিতে পারি। পরদিনই শুভময় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে রনিতাকে নিয়ে নিজের ফ্ল্যাটে ফিরেছিল এবং আসার আগে পরের সপ্তাহে তাদের শুভ বিবাহ বার্ষিকীতে রিয়া, বঙ্কিম এবং তারককে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছিল।

অতঃপর শুভময় রনিতার ষষ্ঠ বিবাহ বার্ষিকীর পার্টিটা যা জমেছিল না— দারুণ!

সকল অধ্যায়

১. মণিবালার প্রথম ও পঞ্চম বাবু – শঙ্করলাল ভট্টাচার্য
২. জনৈক কাপুরুষের কাহিনী – প্রেমেন্দ্র মিত্র
৩. নুরবানু – অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
৪. আমি একটা মানুষ নই – আশাপূর্ণা দেবী
৫. ঠগের ঘর – সুবোধ ঘোষ
৬. হরপার্বতী সংবাদ – প্রবোধকুমার সান্যাল
৭. চীনেমাটি – সন্তোষকুমার ঘোষ
৮. বালির ঝড় – সমরেশ বসু
৯. আত্মজা – বিমল কর
১০. সন্ধ্যেবেলা রক্তপাত – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
১১. কীট – শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
১২. আর একবার – প্রফুল্ল রায়
১৩. রাগ অনুরাগ – শক্তিপদ রাজগুরু
১৪. পূর্বক্ষণ – ননী ভৌমিক
১৫. রাজার টুপি – অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়
১৬. ফাঁদ – সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ
১৭. জারিনার প্রেম – তারাপদ রায়
১৮. বলিছে সোনার ঘড়ি – বরেন গঙ্গোপাধ্যায়
১৯. আঁধার ঘর – সঙ্কর্ষণ রায়
২০. টেককা টেককি – কণা বসুমিত্র
২১. মিসেস মেলনির গল্প – সুকুমার ভট্টাচার্য
২২. অঙ্কুর – ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়
২৩. ছায়া গোধূলি – উত্তম ঘোষ
২৪. রোদ বৃষ্টি কুয়াশা – বামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
২৫. দাম্পত্য – অনিশা দত্ত
২৬. বাতাসের রং নেই – কল্যাণ মৈত্র
২৭. বালির ঘর – দিলীপকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
২৮. শ্বশুরবাড়ি নয়— ক্লাব হাউস – বৈদ্যনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
২৯. হেনস্থা – তপনকুমার দাস
৩০. লজ্জা – রবিন দে
৩১. দাম্পত্য কলহ ও নেকলেস – শ্রীজয়দেব রায়
৩২. দাম্পত্য স্মৃতি – লক্ষ্মীদেবী চক্রবর্তী
৩৩. সংঘাত প্রশান্ত – বর্মন রায়
৩৪. শেষের সে বিচার – ডাঃ অরুণকুমার দত্ত
৩৫. আলট্রা মডার্ণ – অসীমানন্দ মহারাজ
৩৬. তুমি আমি দুজনেই – আবদুল জব্বার
৩৭. লোকটা – আশিস সান্যাল
৩৮. ক্ষত ও নিরাময় – তৃণাঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায়
৩৯. নতুন বইয়ের গন্ধ – শুভমানস ঘোষ
৪০. ভুবন চৌধুরী – অলোককৃষ্ণ চক্রবর্তী
৪১. পদ্মাকাঁটা – গৌর মিত্র
৪২. মালাবৌদি – ডাঃ মহাদেব বন্দ্যোপাধ্যায়
৪৩. ধূসর কণ্ঠস্বর – শান্তিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়
৪৪. দাম্পত্য কলহকথা – স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়
৪৫. বাদশা-বেগম ঝমঝমাঝম – সৌমিত্ৰশংকর দাশগুপ্ত
৪৬. দাম্পত্য – সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়
৪৭. বন্ধ্যা – তমাল লাহা
৪৮. অণুবীক্ষণ – কুণালকিশোর ঘোষ
৪৯. শিউলি বনে গন্ধরাজ – গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
৫০. বাঁশফুল – শিবতোষ ঘোষ
৫১. ছোটলোক – শচীন দাশ
৫২. পঞ্চম রিপু – শৈলেন রায়
৫৩. শুধু সমুদ্রের চিত্রনাট্য – অরূপরতন ঘোষ
৫৪. আশ্রয় – নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়
৫৫. কুমারী মাটি – পুলককুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
৫৬. দাম্পত্য কলহের অন্তরালে – বরুণ মজুমদার
৫৭. জলপরী, সুবিমল ও একটি ধর্ষণের গল্প – জগন্নাথ প্রামাণিক
৫৮. পরকীয়া – প্রণব সেন
৫৯. সম্পর্ক – চিন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়
৬০. কালার টি.ভি. – সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
৬১. বন্ধন – ভাগ্যধর হাজারী
৬২. পরকীয়া প্রেম – উজ্জ্বল কুমার দাস
৬৩. অনিকেত – সঞ্জয় ব্রহ্ম
৬৪. ভূমিকা – পঞ্চানন মালাকর
৬৫. বিষাক্ত মদ – পরেশ সরকার
৬৬. দূরের গাড়ি – অগ্নি বসু
৬৭. ধারাবাহিক – মৃণাল বসুচৌধুরী
৬৮. বুমেরাং – তপন বন্দ্যোপাধ্যায়
৬৯. বকম বকম – প্রদীপ আচার্য
৭০. কুয়োতলার কাব্য – অশোককুমার কুণ্ডু
৭১. ধরিত্রী – জীবন সরকার
৭২. পৃথিবী শস্যশালিনী – শৈবাল মিত্র
৭৩. রবিবার ছুটির দিন – আফসার আমেদ (আফসার আহমেদ)
৭৪. চিতা – চণ্ডী মণ্ডল
৭৫. মেঘাবৃত চাঁদ – আবু রুশদ
৭৬. প্রতিষেধক – আবু ইসহাক
৭৭. ফাঁদ – আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
৭৮. পরী – আলাউদ্দিন আল আজাদ
৭৯. প্রেমের গপ্পো – আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
৮০. পানকৌড়ির রক্ত – আল মাহমুদ
৮১. অস্থির অশ্বক্ষুর – আবদুল মান্নান সৈয়দ
৮২. ফুলের বাগানে সাপ – ইমদাদুল হক মিলন
৮৩. আজীবন দিন-রাত্রি – জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত
৮৪. পথ, হে পথ – নাসরীন জাহান
৮৫. ধূসর – বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর
৮৬. বেলী – বুলবুল চৌধুরী
৮৭. অস্পষ্ট মুখ – মঈনুল আহসান সাবের
৮৮. যৌথ একাকিত্ব – মঞ্জু সরকার
৮৯. লা পেরুজের সূর্যাস্ত – রাবেয়া খাতুন
৯০. হে আনন্দ – রাহাত খান
৯১. খাঁচার ভিতর সুচিন পাখি কমনে বাঁইচে রয় – শওকত আলী
৯২. অষুধ – শহীদ আখন্দ
৯৩. মানব-মানবী – শিহাব সরকার
৯৪. মতিনউদ্দিনের প্রেম – সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
৯৫. গন্তব্য, অশোক – সৈয়দ শামসুল হক
৯৬. প্রহসনের মতো – সাইয়িদ আতীকুল্লাহ
৯৭. দুর্নীতি – সেলিনা হোসেন
৯৮. জননী – হাসান আজিজুল হক
৯৯. নিশিকাব্য – হুমায়ূন আহমেদ

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন