মাইকেল মধুসূদন দত্ত
দ্বিতীয় গর্ভাঙ্ক
পর্ব্বতশিখরস্থ গহন কানন।
(কলির প্রবেশ।)
কলি। (স্বগত) এই ত হরণ করি আনিনু রাণীরে
এ ঘোর কাননে। এবে কোথায় ইন্দ্রাণী?
যে প্রতিজ্ঞা তাঁর কাছে করেছিনু আমি,
রক্ষা করিয়াছি তাহা পরম কৌশলে,—
(কলির কৌশল কভু হয় কি বিফল?)
যাই এবে স্বর্গে (অবলোকন করিয়া)
অহো! এই যে পৌলোমী
মুরজার সঙ্গে—
(শচী এবং মুরজার প্রবেশ।)
(প্রকাশে) দেবি, আশীর্ব্বাদ করি।
শচী। প্রণাম। হে দেববর, কি করেছ, বল?
কলি। পালিনু তোমার আজ্ঞা যতনে, ইন্দ্রাণী,
বিদায় করহ এবে যাই স্বর্গপুরে।
শচী। (ব্যগ্রভাবে) কোথায় রেখেছ তারে?
কলি। এই ঘোর বনে
সখী সহ আনি তারে রেখেছি, মহিষি। (সহাস্য বদনে।)
রথে যবে তুলি দোঁহে উঠিনু আকাশে,
কত যে কাঁদিল ধনী, করিল মিনতি,
সে সকল মনে হলে—হাসি আসে মুখে!
মুর। (স্বগত) হেন দুরাচার আর আছে কি জগতে?
(প্রকাশে) ভাল কলিদেব,—
কিছু কি হলো না দয়া তোমার হৃদয়ে?
কলি। সে কি, দেবি? হরিণীরে মৃগেন্দ্র কেশরী
ধরে যবে, শুনি তার ক্রন্দনের ধ্বনি,
সদয় হইয়া সে কি ছাড়ি দেয় তারে?
শচী। কলিদেব,—
শত ধন্যবাদ আমি করি গো তোমারে!
শতকোটি প্রণাম তোমার ও চরণে!
বাঁচালে আমারে তুমি। তোমার প্রসাদে
রহিল আমার মান। অপ্সরীর দলে
যাহে প্রাণ চাহে তব, পাইবে তাহারে—
পাঠাইব তারে আমি তোমার আলয়ে,
রবিরে প্রদান যথা করয়ে সরসী
নব কমলিনী হাসি—নিশি অবসানে।
যত রত্নরাজী আছে বৈজয়ন্ত-ধামে
তোমার সে সব। দেখ, আজি হতে শচী—
ত্রিদিবের দেবী—দেব, হলো তব দাসী।
যাও চলি স্বর্গে এবে। শীঘ্র আসি আমি
যথোচিত পুরস্কারে তুষিব তোমারে।
কলি। যে আজ্ঞা! বিদায় তবে হই আমি, সতি।
[ প্রস্থান।
মুর। সখি, আমাদের কি এ ভাল কর্ম্ম হলো?
শচী। কেন? মন্দ কর্ম্মই বা কি?
মুর। দেখ, আমরা পরের অপরাধে এ সরলা মেয়েটিকে যাতনা দিতে প্রবৃত্ত হলেম।
শচী। আঃ, আর মিছে বকো কেন? তোমাকে আমি না হবে তো প্রায় এক শত বার বলেছি যে স্বয়ং সৃষ্টিকর্ত্তা বিধাতার দুষ্ট দমন করবার জন্যে সময় বিশেষে ভগবতী বসুমতীকেও জলমগ্ন করেন। তা ভগবতী বসুন্ধরা কি স্বদোষে সে যন্ত্রণা ভোগ করেন?
মুর। তা আমি কেমন কর্যে বল্বো? (চতুর্দ্দিক্ অবলোকন করিয়া) একবার ঐ দিকে চেয়ে দেখ দেখি, সখি।
শচী। কি?
মুর। সখি, ঐ পর্ব্বতশৃঙ্গের অন্তরাল থেকে এদিকে কে আস্চে দেখ তো? আহা! এ কি ভগবতী ভাগীরথী হরিদ্বার হতে বেরুচ্যেন? এমন অপরূপ রূপ লাবণ্য ত আমি কোথাও দেখি নাই।
শচী। ঐ সেই পদ্মাবতী।
মুর। সখি, ওর মুখখানি দেখ্লে বোধ হয় যেন আমি ওকে আরও কোথাও দেখেছি। (স্বগত) এ কি? আমার স্তনদ্বয় যে সহসা দুগ্ধে পরিপূর্ণ হলো? হে হৃদয়, তুমি এত চঞ্চল হলে কেন?
শচী। সখি, চল আমরা পুনরায় কলিদেবের নিকটে যাই।
মুর। কেন?
শচী। চল না কেন? আমার মনস্কামনা এখনও সম্পূর্ণরূপে সফল হয় নাই।
মুর। সখি, আমার মন কলিদেবের নিকটে আর কোন মতেই যেতে চায় না। আমি অলকায় চল্যেম।
[ প্রস্থান।
শচী। (স্বগত) তুমি গেলেই বা! তোমার দ্বারা যত উপকার হতে পার্বে, তা আমি বিশেষরূপে জানি। তা যাই—আমি একলাই কলিদেবের নিকটে যাই। ইন্দ্রনীল যেন স্বয়ম্বর সংগ্রামে হত হয়েছে, এইরূপ একটা মিথ্যাঘোষণা রটিয়ে দিলে আরও ভাল হবে।
[ প্রস্থান।
(পদ্মাবতীর প্রবেশ।)
পদ্মা। (স্বগত) হায়! এ বিপজ্জাল হতে আমাকে কে রক্ষণ কর্বে! এ কি কোন দেব, না দেবী, এ হতভাগিনীর প্রতি বাম হয়ে একে এত যন্ত্রণা দিতে প্রবৃত্ত হলেন? (চতুর্দ্দিক্ অবলোকন করিয়া) কি ভয়ঙ্কর স্থান! বোধ হয় যেন যামিনীদেবী দিবাভাগে এই নিভৃত স্থলেই বিরাজ করেন। (দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ করিয়া) হে প্রাণেশ্বর, যেমন রঘুনাথ ভগবতী জানকীকে বিনা দোষে বনবাস দিয়েছিলেন, আপনিও কি এ দাসীর প্রতি প্রতিকূল হয়ে তাই কল্যেন। হে জীবিতেশ্বর, আপনি যে আমাকে পৃথিবীর সুখভোগে নিরাশ কল্যেন, তাতে আমার কিছুই মনোবেদনা হয় না, তবে যাবজ্জীবন আমার এই একটা দুঃখ রৈলো, যে আপনাকে আমি বিপদ্সাগর থেকে উত্তীর্ণ হতে দেখ্তে পেলেম না। (রোদন।) হায়! আমার কি হবে? আমাকে কে রক্ষা করবে? (পরিক্রমণ ও পর্ব্বতের প্রতি লক্ষ্য করিয়া) হে গিরিবর, এ অনাথা আপনার নিকট আশ্রয় চায়, তা আপনার কি আজ্ঞা হয়? (চিন্তা করিয়া) আপনি যে নিস্তব্ধ হয়ে রৈলেন? তা থাক্বেন বৈ আর কি? হে নগরাজ, এ পৃথিবীতে যে ব্যক্তি মহান হয়, তার ক্ষুদ্র লোকের প্রতি এইরূপই ব্যবহার বটে। আপনি সিংহের নিনাদ শুন্লে তৎক্ষণাৎ তার প্রত্যুত্তর দেন, মেঘের গর্জ্জনে পুনর্গর্জ্জন করেন,—বজ্রের শব্দে অস্থির হয়ে হুহুঙ্কার ধ্বনি করেন;—আমি অবলা মানবী, তা আপনি আমার প্রতি কৃপাদৃষ্টি কর্বেন কেন? (রোদন।) কি আশ্চর্য্য! এ এমনি গহন বন, যে এখানে আমার আপনার শব্দ শুন্লেও ভয় হয়। হায়! আমি এখন কোথায় যাব? বসুমতী যে এখনও আস্চে না।
(কদলীপত্রে জল লইয়া সখীর প্রবেশ।)
সখী। প্রিয়সখি, এই নাও। এই নাও। আঃ। এ জলের অন্বেষণে যে আমি কত দূর ঘুরেছি তার আর কি বল্বো?
পদ্মা। (জল পান করিয়া) সখি, আমি তোমাকে বৃথা ক্লেশ দিলেম বৈ ত নয়। হায়! এ জলে কি এ পাপপ্রাণের তৃষ্ণা দূর হবে? (রোদন।)
সখী। প্রিয়সখি, এ পর্ব্বতপ্রদেশ কি ভয়ঙ্কর স্থান।
পদ্মা। কেন? কেন?
সখী। উঃ! আমি যে কত সিংহ, কত বাঘ, কত মহিষ, কত ভালুক, আর কত যে বরাহের পায়ের চিহ্ন দেখেছি, তা মনে হলে বুক শুকিয়ে উঠে! প্রিয়সখি, এ ঘোর গহন বনে আমাদের আর কে রক্ষা কর্বে। (রোদন।)
পদ্মা। (সঙ্গীর হস্ত ধারণ করিয়া) সখি, আমি যে প্রাণনাথের নিকট কি অপরাধ করেছি, তা আমার এখনও স্মরণ হচ্যে না। কিন্তু তিনি কি আমার প্রতি একেবারে এত নির্দ্দয় হলেন, যে এ হতভাগিনীকে যারা ভালবাসে, তাদের উপরও তাঁর রাগ হলো? (রোদন।)
সখী। প্রিয়সখি, তুমি আমার জন্যে কেঁদো না।
পদ্মা। সখি, তুমিও কি আমার দোষে মারা পড়বে? (রোদন।)
সখী। (সজল নয়নে পদ্মাবতীকে আলিঙ্গন করিয়া) প্রিয়সখি, আমি কি তোমার জন্যে মরতে ডরাই! আমি যদি আমার প্রাণ দিয়ে তোমাকে এ বিপজ্জাল হতে উদ্ধার কত্যে পারি, তবে আমি তা এখনই দিতে প্রস্তুত আছি। (রোদন।)
পদ্মা। (দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ করিয়া) হে বিধাতঃ, তুমি যদি এ তরণীকে অকূল সমুদ্রমধ্যে মগ্ন করবার নিমিত্তেই নির্মাণ করেছিলে, তবে তুমি একে জলপূর্ণ করে। ভাসালে কেন? (রোদন।)
সখী। প্রিয়সখি, তুমি আমার জন্যে কেঁদো না। (রোদন।)
পদ্মা। সখি, এসো, আমরা এখানে বসি। আমাদের কপালে যদি মরণ থাকে, তবে আমরা একত্রই মরবো। (শিলাতলে উভয়ের উপবেশন।)
সখী। প্রিয়সখি, এ দুষ্ট সারথি যে আমাদের সঙ্গে এমন অসৎ ব্যবহার করবে, তা আমি স্বপ্নেও জানতেম না।
পদ্মা। (দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ করিয়া) সখি, তার দোষ কি? সে এক জন ভৃত্য বই ত নয়।
নেপথ্যে। রে অবোধ প্রাণ! তুই যদি এ ভগ্ন কারাগারস্বরূপ দেহ রণভূমিতেই পরিত্যাগ কত্তিস্, তা হলে ত তোকে আর এ যন্ত্রণা সহ্য কত্যে হতো না। হায়!—
পদ্মা। (সত্রাসে) এ কি? (উভয়ের গাত্রোত্থান।)
সখী। (নেপথ্যাভিমুখে অবলোকন করিয়া সত্রাসে) তাই ত প্রিয়সখি, বোধ করি, এ কোন মায়াবী রাক্ষস হবে। হে জগদীশ্বর, আমাদের এখন কে রক্ষা করবে?
(ক্ষত যোদ্ধার বেশে কলির পুনঃপ্রবেশ।)
কলি। আপনারা দেবকন্যাই হউন কি মানবীই হউন, আমার এ স্থলে সহসা প্রবেশে বিরক্ত হবেন না। হায়! যেমন হস্তী সিংহের প্রচণ্ড আঘাতে ব্যথিত হয়ে কোন পর্ব্বতগহ্বরে ত্রাসে পলায়ন করে, আমিও তদ্রূপ এই স্থলে এসে উপস্থিত হলেম।
সখী। (ব্যগ্রভাবে) কেন? আপনার কি হয়েছে।
কলি। আমি বীরচূড়ামণি রাজা ইন্দ্রনীলের এক জন যোদ্ধা। তাঁর শত্রুদলের সঙ্গে ঘোরতর সমর করে এই দুরবস্থায় পড়েছি।
পদ্মা। (ব্যগ্রভাবে) মহাশয়, রণক্ষেত্রের সংবাদ কি?
কলি। (দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ করিয়া) হায়! দেবি, আপনি ও কথা আর আমাকে কেন জিজ্ঞাসা করেন? প্রবল শত্রুদল মহারাজকে সসৈন্যে নিপাত কর্যে, বিদর্ভনগরীকে ভস্মরাশি করেছে।
পদ্মা। অ্যাঁ। আপনি কি বল্যেন?
সখী। এ কি! প্রিয়সখী যে সহসা পাণ্ডুবর্ণা হয়ে উঠ্লেন?
পদ্মা। (অচেতন হইয়া ভূতলে পতন।)
সখী। (পদ্মাবতীকে ক্রোড়ে ধারণ করিয়া) হায়! প্রিয়সখী যে অচেতন হয়ে পড়লেন। মহাশয়, ঐ পর্ব্বতশৃঙ্গের ঐ দিকে একটা নির্ঝর আছে, আপনি অনুগ্রহ কর্যে ওখান থেকে একটু জল আনলে বড় উপকার হয়। ইনি একজন সামান্যা স্ত্রী নন! ইনি রাজমহিষী পদ্মাবতী।
কলি। (স্বগত) যেমন কালসর্প আপন শত্রুকে দংশন কর্যে বিবরে প্রবেশ করে, আমিও তদ্রূপ আপন অভীষ্ট সিদ্ধি করে স্বস্থানে প্রস্থান করি। (প্রকাশে) এই আমি চললেম।
[ প্রস্থান।
সখী। (স্বগত) হায়, এ কি হলো? (আকাশে কোমল বাদ্য।) এ কি? আকাশে।
(গীত)
[ লুম-যৎ ]
আর কি কব তোমারে?
যে জন পীরিতে রত,সুখ দুঃখ সহে কত
পরেরি তরে।
সুধাকর প্রেমাধীনী,অতি সুখী চকোরিণী;
কভু হয় বিষাদিনী, বিরহ-শরে!
নলিনী তাহুর বশে,মগন প্রণয়-রসে,
তথাপি কখন ভাসে, বিষাদ-নীরে।
প্রেম সমভাব নহে,কভু সুখভোগে রহে,
কভু বা বিরহ দহে, নয়ন ঝুরে॥
(কাষ্ঠচ্ছেদিকা-বেশে রতি দেবীর প্রবেশ।)
রতি। (স্বগত) হায়! দেবকুলে শচীর মতন চণ্ডালিনী কি আর আছে? আহা! সে যে দুষ্ট কলির সহকারে রাজমহিষী পদ্মাবতীকে কত ক্লেশ দিতে আরম্ভ করেছে, তা মনে হলে হৃদয় বিদীর্ণ হয়। আমার এখন কি করা উচিত? (চিন্তা করিয়া) এই চিত্রকূট পর্ব্বতের নিকটে তমসা নদীতীরে অনেক মহর্ষিরা সপরিবারে বাস করেন, তা পদ্মাবতী আর বসুমতীকে কোন মুনির আশ্রমে লয়ে যাওয়াই উচিত। তার পরে আমি কৈলাসপুরীতে ভগবতী পার্ব্বতীর নিকট এ সকল বৃত্তান্ত নিবেদন কর্বো। তিনি এ বিষয়ে মনোযোগ কল্যে আর কোন ভয়ই থাক্বে না। যে দেশ গঙ্গাদেবীর স্পর্শে পবিত্র হয়েছে, সে দেশে কি কেউ তৃষ্ণাপীড়া ভোগ করে? (অগ্রসর হইয়া প্রকাশে) ওগো, তোমরা কারা গা?
সখী। তুমি কে?
রতি। আমি এই পর্ব্বতে কাট কুড়ুতে এসেছি, তোমরা এখানে কি কচ্যো?
সখি। দেখ, আমার প্রিয়সখী অচেতন হয়ে রয়েছেন, তা তুমি একটু জল এনে দিতে পার?
রতি। অচেতন হয়েছেন? তা জলে কাজ কি? আমি ওঁকে এখনই ভাল করে দিচ্ছি। (পদ্মাবতীর গাত্রে হস্ত প্রদান।)
পদ্মা। (চেতন পাইয়া দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ।)
রতি। দেখ, এই তোমার সখী চেতন পেলেন।
পদ্মা। (গাত্রোত্থান করিয়া) সখি, আমি যে এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেছি তার কথা আর কি বল্বো?
সখী। প্রিয়সখি, কি স্বপ্ন?
পদ্মা। আমার বোধ হলো যেন একটি পরমসুন্দরী দেবকন্যা আমার মস্তকে তাঁর পদ্মহস্ত বুলিয়ে বল্যেন, বৎসে, তুমি শান্ত হও। তোমার প্রাণনাথের সঙ্গে শীঘ্রই তোমার মিলন হবে। (রতিকে অবলোকন করিয়া সখীর প্রতি) সখি, এ স্ত্রীলোকটি কে?
সখী। প্রিয়সখি, এ এক জন কাটুরিয়াদের মেয়ে।
রতি। হ্যাঁ গা, তোমাদের কি এখানে থাক্তে ভয় হয় না? পদ্মা। কেন?
রতি। এ পাহাড়ে যে কত সিংহ, কত বাঘ, কত ভালুক, আর কত যে সাপ থাকে, তা কি তোমরা জান না?
সখী। (সত্রাসে) কি নর্ব্বনাশ! এ পাহাড়ের নাম কি গা!
রতি। এর নাম চিত্রকূট।
পদ্মা। এখান থেকে বিদর্ভনগর কত দূর, তা তুমি জান?
রতি। বিদর্ভনগর এখান থেকে অনেক দিনের পথ। কেন, তোমরা কি সেখানে যেতে চাও?
পদ্মা। (স্বগত) হায়! সে বিদর্ভনগর কি আর আছে! হে প্রাণেশ্বর, তুমি এ হতভাগিনীকে কেন সঙ্গে করে নিলে না? (রোদন।)
রতি। (সখীর প্রতি) তোমার প্রিয়সখী কাঁদেন কেন? ওর যদি এখানে থাক্তে ভয় হয়, তবে তোমরা আমার সঙ্গে এসো।
সখী। তুমি আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে?
রতি। এই পাহাড়ের কাছে অনেক তপস্বীরা বসতি করেন, তা তাঁদের কারো আশ্রমে গেলে তোমাদের আর কোন ক্লেশই থাক্বে না।
সখী। (পদ্মাবতীর প্রতি) প্রিয়সখী, তুমি কি বল? আমার বিবেচনায় এখানে আর এক মুহূর্ত্তের জন্যেও থাকা উচিত হয় না।
পদ্মা। সখি, তোমার যা ইচ্ছা।
সণী। তবে চল। ওগো কাটুরেদের মেয়ে, তুমি আমাদের পথ দেখিয়ে দাও ত?
রতি। এই দিকে এসো।
[ সকলের প্রস্থান।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন