সিয়াম – ১

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

প্রথম দর্শনে
                       ত্রিশরণ মহামন্ত্র যবে
                             বজ্রমন্দ্ররবে
           আকাশে ধ্বনিতেছিল পশ্চিমে পুরবে,
           মরুপারে, শৈলতটে, সমুদ্রের কূলে উপকূলে,
           দেশে দেশে চিত্তদ্বার দিল যবে খুলে
                 আনন্দমুখর উদ্‌বোধন, —
           উদ্দাম ভাবের ভার ধরিতে নারিল যবে মন,
                 বেগ তার ব্যাপ্ত হল চারিভিতে,
           দুঃসাধ্য কীর্তিতে, কর্মে চিত্রপটে মন্দিরে মূর্তিতে,
                 আত্মদানসাধনস্ফূর্তিতে
                       উচ্ছ্বসিত উদার উক্তিতে,
           স্বার্থধন দীনতার বন্ধনমুক্তিতে, —
           সে-মন্ত্র অমৃতবাণী হে সিয়াম, তব কানে
                   কবে এল কেহ নাহি জানে
           অভাবিত অলক্ষিত আপনাবিস্মৃত শুভক্ষণে
                   দূরাগত পান্থসমীরণে।
                 সে-মন্ত্র তোমার প্রাণে লভি প্রাণ
           বহুশাখাপ্রসারিত কল্যাণে করেছে ছায়াদান।
                       সে-মন্ত্রভারতী
                     দিল অস্খলিত গতি
           কত শত শতাব্দীর সংসারযাত্রারে —
                       শুভ আকর্ষণে বাঁধি তারে
                       এক ধ্রুব কেন্দ্র-সাথে
                       চরম মুক্তির সাধনাতে, —
           সর্বজনগণে তব এক করি একাগ্র ভক্তিতে,
                 এক ধর্ম, এক সংঘ, এক মহাগুরুর শক্তিতে।
           সে বাণীর সৃষ্টিক্রিয়া নাহি জানে শেষ,
           নবযুগ-যাত্রাপথে দিবে নিত্য নূতন উদ্দেশ;
                 সে বাণীর ধ্যান
           দীপ্যমান করি দিবে নব নব জ্ঞান
                 দীপ্তির ছটায় আপনার,
           এক সূত্রে গাঁথি দিবে তোমার মানসরত্নহার।
                 হৃদয়ে হৃদয়ে মিল করি
                       বহু যুগ ধরি
           রচিয়া তুলেছ তুমি সুমহৎ জীবনমন্দির,-
                       পদ্মাসন আছে স্থির,
           ভগবান বুদ্ধ সেথা সমাসীন
                   চিরদিন —
           মৌন যাঁর শান্তি অন্তহারা,
           বাণী যাঁর সকরুণ সান্ত্বনার ধারা।
      আমি সেথা হতে এনু যেথা ভগ্নস্তূপে
      বুদ্ধের বচন রুদ্ধ দীর্ণকীর্ণ মূক শিলারূপে,
           ছিল যেথা সমাচ্ছন্ন করি
                 বহু যুগ ধরি
                       বিস্মৃতকুয়াশা
           ভক্তির বিজয়স্তম্ভে সমুৎকীর্ণ অর্চনার ভাষা|
                 সে-অর্চনা সেই বাণী
                       আপন সজীব মূর্তিখানি
           রাখিয়াছে ধ্রুব করি শ্যামল সরস বক্ষে তব,-
                 আজি আমি তারে দেখি লব, —
                       ভারতের যে মহিমা
           ত্যাগ করি আসিয়াছে আপন অঙ্গনসীমা
                 অর্ঘ্য দিব তারে
           ভারত-বাহিরে তব দ্বারে।
                 স্নিগ্ধ করি প্রাণ
               তীর্থ জলে করি যাব স্নান
                     তোমার জীবনধারাস্রোতে,
               যে নদী এসেছে বহি ভারতের পুণ্যযুগ হতে —
                      যে যুগের গিরিশৃঙ্গ-‘পর
                 একদা উদিয়াছিল প্রেমের মঙ্গলদিনকর।

সকল অধ্যায়

১. প্রশ্ন
২. প্রণাম
৩. বিচিত্রা
৪. জন্মদিন
৫. পান্থ
৬. অপূর্ণ
৭. আমি
৮. তুমি
৯. আছি
১০. বালক
১১. বর্ষশেষ
১২. মুক্তি
১৩. আহ্বান
১৪. দুয়ার
১৫. দীপিকা
১৬. লেখা
১৭. নূতন শ্রোতা
১৮. আশীর্বাদ
১৯. মোহানা
২০. বক্‌সাদুর্গস্থ রাজবন্দীদের প্রতি
২১. দুর্দিনে
২২. ধর্মমোহ
২৩. ভিক্ষু
২৪. আশীর্বাদী
২৫. অবুঝ মন
২৬. পরিণয়
২৭. চিরন্তন
২৮. কণ্টিকারি
২৯. আরেক দিন
৩০. তে হি নো দিবসাঃ
৩১. দীপশিল্পী
৩২. মানী
৩৩. রাজপুত্র
৩৪. অগ্রদূত
৩৫. প্রতীক্ষা
৩৬. নির্বাক্‌
৩৭. প্রণাম
৩৮. শূন্যঘর
৩৯. দিনাবসান
৪০. পথসঙ্গী
৪১. অন্তর্হিতা
৪২. আশ্রমবালিকা
৪৩. বধূ
৪৪. মিলন
৪৫. স্পাই
৪৬. ধাবমান
৪৭. ভীরু
৪৮. বিচার
৪৯. পুরানো বই
৫০. বিস্ময়
৫১. অগোচর
৫২. সান্ত্বনা
৫৩. ছোটো প্রাণ
৫৪. নিরাবৃত
৫৫. মৃত্যুঞ্জয়
৫৬. অবাধ
৫৭. যাত্রী
৫৮. মিলন
৫৯. আগন্তুক
৬০. জরতী
৬১. প্রাণ
৬২. সাথী
৬৩. বোবার বাণী
৬৪. আঘাত
৬৫. শান্ত
৬৬. জলপাত্র
৬৭. আতঙ্ক
৬৮. আলেখ্য
৬৯. সান্ত্বনা
৭০. শ্রীবিজয়লক্ষ্মী
৭১. বোরোবুদুর
৭২. সিয়াম – ১
৭৩. সিয়াম – ২
৭৪. বুদ্ধদেবের প্রতি
৭৫. পারস্যে জন্মদিনে
৭৬. প্রাচী
৭৭. আশীর্বাদ
৭৮. আশীর্বাদ – ২
৭৯. লক্ষ্যশূন্য
৮০. প্রবাসী
৮১. বুদ্ধজন্মোৎসব
৮২. প্রথম পাতায়
৮৩. নূতন
৮৪. শুকসারী
৮৫. সুসময়
৮৬. নূতন কাল
৮৭. পরিণয়মঙ্গল
৮৮. জীবনমরণ
৮৯. গৃহলক্ষ্মী
৯০. রঙিন
৯১. আশীর্বাদী – ২
৯২. বসন্ত উৎসব
৯৩. আশীর্বাদ – ৩
৯৪. আশীর্বাদ – ৪
৯৫. উত্তিষ্ঠত নিবোধত
৯৬. প্রার্থনা
৯৭. অতুলপ্রসাদ সেন

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন