গ্রীষ্ম (ঘন গ্রীষ্মতাপ)

বিষ্ণু দে

ঘন গ্রীষ্মতাপ।
বিশ্বের উত্তপ্ত দাহ আজ বুঝি জমায়েত ভিড়
বেঁধেছে এখানে দানা আমাদের পাশে?
জমেছে গুমোট।

আমবনে ফল আজ পেকে ওঠে সম্পূর্ণ রঙিন
পরিপক্ক ফল আজ পড়তে তো পারে না মাটিতে
গরমে যে নিরেট বাতাস।
শ্রান্তি বয়ে ব’সে দোঁহে বাতাসের স্নিগ্ধ প্রতীক্ষায়।
মরুভূমি আকাশের চোখে স্নিগ্ধ ছায়ার তৃষ্ণায়।
—বাতাস ভুলেছে।
এ গুমোট দেয় না সে ছিন্ন ছিন্ন করে দুই হাতে
চিরে চিরে।
বাতাস গিয়েছে দূর সমুদ্রবীজনস্নিগ্ধ
নারিকেলমর্মরিত প্রবালের দ্বীপে।
অবসন্ন ব’সে দুইজনে।
কর্মহীন অবকাশ কর্কশ কঠিন গুমোটে
কাটে রৌদ্রতাপে।
আকাশ পৃথিবী আমবন
অদৃশ্য অস্পৃশ্য হল বর্ণহীন প্রদাহে রৌদ্রের।
শুধু লিলি, তোমার শরীর
মসৃণ কোমল পাণ্ডু মর্মর শীতল।

১৯৩৩

সকল অধ্যায়

১. পলায়ন (শফরী চোখের সরল চাহনি)
২. কাব্যপ্রেম (তোমাকেই ঘিরে চলে রক্তস্রোত)
৩. উদ্যাপন (স্বপ্নে আজ দেখেছি তোমাকে)
৪. প্রেম (ফিরাও তোমার দৃষ্টি ফিরাও আমার চোখ হতে)
৫. “অর্ধেক কল্পনা” (যেদিন জাগেনি বিশ্বে প্রাণস্পন্দে আদিম উৎসব)
৬. প্রত্যক্ষ (সেইদিন দেখেছি তোমাকে)
৭. বজ্রপাণি (কাল রজনীতে এসেছিল যবে বৈশাখী পূর্ণিমা)
৮. অভীপ্সা (এ আকাশ মুছে দাও আজ)
৯. অর্ধনারীশ্বর (সম্মুখে দুঃস্বপ্নরুক্ষ অসিধার কঠিন আকাশ)
১০. সমুদ্র (ভাসিয়েছি প্রেম আজ নীলিমার অন্ধকার জলে)
১১. সাগর উত্থিতা (সবুজ সমুদ্রে ওঠে অগণন ঢেউ)
১২. উর্বশী (আমি নহি পুরূরবা)
১৩. পর্যাপ্তি (যাক, আজ দূরে যাক তারা)
১৪. সন্ধ্যা (বামদিকে গিরিশৃঙ্গ আকাশকে করেছে আহত)
১৫. উর্বশী ও আর্টেমিস (সন্ধ্যার বর্ণের ছটা রয়েছে তো তবু)
১৬. ছেদ (আমার হৃদয় হিম-অবজ্ঞায় করেছি বিকল)
১৭. রাত্রিশেষে (আকাশের দুর্গে নেই পলাতকা অমাবস্যা আজ)
১৮. অতিক্রম (রাত্রির বিশাল মুখ বাতায়নে উঁকি দেয় কালো)
১৯. প্রত্যাবর্তন (আহা ষড়ঋতু! বনভবন!)
২০. প্রজ্ঞাপারমিতা তাকে করে আশীর্বাদ
২১. ভয় (বট আর অশথের ছায়াঘন কালো ভয়গুলি)
২২. এপ্রিল (শুভ্রকেশ ঢেউ ছেড়ে, সমুদ্রের আলিঙ্গন ছিঁড়ে)
২৩. গ্রীষ্ম (ঘন গ্রীষ্মতাপ)
২৪. আলোক ছড়াও (শীতের উন্মুক্ত রৌদ্র কালো তার কেশে)
২৫. সোহবিভেত্তস্মাদেকাকী বিভেতি

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন