প্রজ্ঞাপারমিতা তাকে করে আশীর্বাদ

বিষ্ণু দে

পাণ্ডু মুখে তার
সূর্যাস্তের বর্ণচ্ছটা ঐশ্বর্যের প্রদীপ্তি ছড়ায় স্পর্শধন্যতায়।
মুখখানি তার
দিশাহারা অস্তরাগ, থমকায় গোলাপের বনে
আর চেয়ে থাকে
মুক্তপক্ষ নভচারী উৎক্রোশের দিকে।

বলি আমি পল্লবমর্মরে,
তোমার নয়নে, লিলি পর্বতের সরোবর
পেয়েছে ব্যঞ্জনা
শিখর প্রশান্ত, স্থির, স্বচ্ছ ও অতল।

মৃদুস্বরে বলি,
তোমার কথায়, লিলি, দেয়ালিমক্ষীরা
প্রেমের গুঞ্জন শত হৃদয়আলোর পাশে ঘোরে বর্ষকাল,
ক্ষণিক তোমার কথা তুমি ভুলে যাও
আমার হৃদয়ে তারা ঘোরে নানা রূপে রূপে নক্ষত্রসভায়।

বাহুটি জড়িয়ে তাকে বলি,
তোমার চিত্তের, লিলি, চামেলিসৌরভ
যে মায়া ছড়ায় চেতনায়
সে মায়ায় ফুটে ফুটে ওঠে
পৃথিবীর পরম আশ্বাস।

বাহুটি শিথিল রেখে আমার কম্পিত কণ্ঠে স্তব্ধ থাকে বসে
জীবনের প্রচ্ছন্ন প্রজ্ঞায়।
আগামী রাত্রির ছায়া নীড় বাঁধে শান্ত নির্নিমেষ
অনন্য সে পাণ্ডু মুখে তার।

১৯৩২

সকল অধ্যায়

১. পলায়ন (শফরী চোখের সরল চাহনি)
২. কাব্যপ্রেম (তোমাকেই ঘিরে চলে রক্তস্রোত)
৩. উদ্যাপন (স্বপ্নে আজ দেখেছি তোমাকে)
৪. প্রেম (ফিরাও তোমার দৃষ্টি ফিরাও আমার চোখ হতে)
৫. “অর্ধেক কল্পনা” (যেদিন জাগেনি বিশ্বে প্রাণস্পন্দে আদিম উৎসব)
৬. প্রত্যক্ষ (সেইদিন দেখেছি তোমাকে)
৭. বজ্রপাণি (কাল রজনীতে এসেছিল যবে বৈশাখী পূর্ণিমা)
৮. অভীপ্সা (এ আকাশ মুছে দাও আজ)
৯. অর্ধনারীশ্বর (সম্মুখে দুঃস্বপ্নরুক্ষ অসিধার কঠিন আকাশ)
১০. সমুদ্র (ভাসিয়েছি প্রেম আজ নীলিমার অন্ধকার জলে)
১১. সাগর উত্থিতা (সবুজ সমুদ্রে ওঠে অগণন ঢেউ)
১২. উর্বশী (আমি নহি পুরূরবা)
১৩. পর্যাপ্তি (যাক, আজ দূরে যাক তারা)
১৪. সন্ধ্যা (বামদিকে গিরিশৃঙ্গ আকাশকে করেছে আহত)
১৫. উর্বশী ও আর্টেমিস (সন্ধ্যার বর্ণের ছটা রয়েছে তো তবু)
১৬. ছেদ (আমার হৃদয় হিম-অবজ্ঞায় করেছি বিকল)
১৭. রাত্রিশেষে (আকাশের দুর্গে নেই পলাতকা অমাবস্যা আজ)
১৮. অতিক্রম (রাত্রির বিশাল মুখ বাতায়নে উঁকি দেয় কালো)
১৯. প্রত্যাবর্তন (আহা ষড়ঋতু! বনভবন!)
২০. প্রজ্ঞাপারমিতা তাকে করে আশীর্বাদ
২১. ভয় (বট আর অশথের ছায়াঘন কালো ভয়গুলি)
২২. এপ্রিল (শুভ্রকেশ ঢেউ ছেড়ে, সমুদ্রের আলিঙ্গন ছিঁড়ে)
২৩. গ্রীষ্ম (ঘন গ্রীষ্মতাপ)
২৪. আলোক ছড়াও (শীতের উন্মুক্ত রৌদ্র কালো তার কেশে)
২৫. সোহবিভেত্তস্মাদেকাকী বিভেতি

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন