ভাটিবাংলার ভৈরব কপোতাক্ষতীরে মানুষের বসতি যেমন প্রাচীন তেমনি বিচিত্র। এক এক সময় মানুষ গড়ে তুলেছে সুন্দর সুন্দর গ্রাম জনপদ, তুলেছে ফসলে ফসলে মাঠ। দু’কূল ধরে সৃষ্টি হয়েছে কত রাজপাট আর বাণিজ্য বন্দর। এভাবে চলেছে কিছুদিন। তারপর আকস্মিক কোন প্রাকৃতিক বা রাজনৈতিক বিপ্লবে ধ্বংস হয়েছে মানুষের স্বপ্ন সাধ আর রাজপাট। সরে গেছে মানুষ নিরাপদ জায়গায়। আবার একদল মানুষ এসেছে, গড়ে তুলেছে নতুন জনপদ। এভাবে ভাঙ্গা গড়ার মধ্যদিয়ে এগিয়ে গেছে এ-দু নদীর তীরবর্তী মানুষের ইতিবৃত্ত, সৃষ্টি হয়েছে আগ্রা-কপিলমুনি, বার বাজার, ব্রাহ্মণ্য নগর, খলিফাতাবাদ।
সুপ্রাচীন কাল থেকে ভৈরব-তীরের জনপদগুলোর একটা ঐতিহাসিক গতিধারা ছিল যা যুগ বিবর্তনে তলিয়ে গেছে পরবর্তী যুগে। এর মধ্যে যেটুকু কিংবদন্তী লোকগাঁথা—পুরাকীতি-মূদ্রা-শিলালিপি ইত্যাদির মধ্যে উদ্ধার করা গেছে তাও বিতর্ক মুক্ত নয়। বোধগম্য কারণে এসব ইতিবৃত্তে যৌক্তিকতা হারিয়ে অনেক ক্ষেত্রে হয়ে গেছে একপেশে। ইংরেজ আমলের গোড়ার দিকে প্রশাসনের সুবিধার্থে প্রত্যেক প্রশাসনিক এলাকায় একটা পুরাকালীন ইতিবৃত্তে পরিচয় (গেজেটিয়ার) তৈরী করলেও সার্বিক ইতিহাস বিবেচনায় ক্রটিমুক্ত নয়। এমতাবস্থায় আঞ্চলিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিবৃত্তে অনুসন্ধিৎসু পাঠক নানা মতের ভারাক্রান্তে বিব্রত।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন