বাস্তবিকপক্ষে, সৎ সমাজ গঠনের উদ্দেশ্য হলো মানবজীবনকে সার্থক করার পথ সুগম করা। চরম বিশ্লেষণে দেখা যায় মনুষ্যজীবন পরিপূর্ণতা লাভ করে একমাত্র ঈশ্বরের জন্য আকুতি ও তাঁকে প্রাপ্তির দ্বারা। এ তত্ত্বটি অবশ্য আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে দৃষ্ট এবং আধুনিক যুগে এ তত্ত্বটি ক্রমাগত বহু প্রশ্নের সম্মুখীন। আজকাল ধর্মের বেশ কিছু বিকল্প দেখা যাচ্ছে, যার প্রতি আনুগত্য স্বীকার করছে বিশ্বের শিক্ষিত স্বাধীনচেতা বহু নরনারী, যারা বৈজ্ঞানিক জড়বাদসৃষ্ট ‘অনিচ্ছুক অবিশ্বাসের বলি’ হয়ে উঠেছে।
যেহেতু মানুষ যুক্তি ও বিশ্বাসকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বাঁচতে পারে না, যেহেতু অবিশ্বাসের বিকট গহ্বরে পড়ে জীবন বিকশিত হয় না, সেহেতু সনাতন বিশ্বাস বর্জনকারী এইসব মানুষ বিভিন্ন ‘ইজম্’ (ism) বা মতবাদের অন্তরালে আশ্রয় গ্রহণ করতে আরম্ভ করেছে।
ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ তাঁর ‘Recovery of Faith’ (বিশ্বাসের পুনরুজ্জীবন) গ্রন্থে ধর্মের বিকল্পরূপে গৃহীত বিভিন্ন ‘ইজম্’গুলি নির্দেশ করেছেন। যথা— সাব্-হিউম্যানিজম্, (অব-মানবতাবাদ), প্যাগনিজম্ (পৌত্তলিকতাবাদ), হিউম্যানিজম্ (মানবতাবাদ), ন্যাশানালিজম্ (জাতীয়তাবাদ), কম্যুনিজম্ , অথরিট্যারিয়ানিজম্ (প্রভুত্ববাদ) ইত্যাদি।
(সাম্যবাদ)অতি দক্ষতার সঙ্গে তিনি ধর্মের এই বিকল্পগুলির চুলচেরা বিচার বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন যে জীবনসমস্যার পরিপূর্ণ ও যথার্থ সমাধান করার ক্ষমতা আলোচ্য ‘ইজম্’গুলির কোনটিরই নেই। কেবল জীবন-ধারণের সমস্যাই নয়, মানুষের মনের গভীরে যে উচ্চাকাঙ্ক্ষাসমূহ সুপ্ত রয়েছে, সে সম্পর্কে ‘ইজম’গুলি কোনরূপে অবহিত নয় বলেই মনে হয় ।
নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন
লগইন