বাইক রহস্য – দেবব্রত দাশ

বিশ্বরূপ মজুমদার

সন্ধের পর থেকে আমার মনটা এমন অশান্ত-অস্থির হয়ে উঠল, যা কিনা গত দু’বছরে একটা দিনের জন্যেও হয়নি। অথচ, কারণটা আমি বুঝতে পারছি না। পুনে শহরের উপকণ্ঠে এই প্ল্যান্টে আমাকে গড়ে সপ্তাহে দু’দিন আসতে হয় প্রোডাকশনের কাজকর্মের দেখভাল করতে। আজও তেমনই এসেছি সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ। সারাদিন ধরে প্ল্যান্টের সর্বত্র ঘুরে বেড়িয়ে সমস্ত টেকনিশিয়ানদের সমস্যার কথা শুনে সমাধান বাতলেছি এবং শেষমেশ সন্ধের মুখে ফেঁসে গেছি বিকল এক যন্ত্রকে সচল করে তুলতে গিয়ে।

ভেবেছিলাম, আজ অন্যদিনের তুলনায় অনেক আগেই বিকেল বিকেল মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা হব। কিন্তু বিধি বাম! না হলে এ রকম মামুলি এক যান্ত্রিক সমস্যা, যা নাকি আমি বলে বলে মিনিট কয়েকের মধ্যেই সলভ করে ফেলতে পারি, তা কিনা দু’ঘণ্টার চেষ্টাতেও পারলাম না! আর ওই যে শুরুতেই বলেছি, সন্ধের পর থেকে মানসিক অস্থিরতায় জেরবার হচ্ছিলাম… সেটাই বাড়তে বাড়তে আমাকে চরম অবস্থানে পৌঁছে দিল এক সময়।

আমার দোষই হোক বা গুণ, আমি ব্যর্থতা মেনে নিই না সহজে। যাদবপুরে ‘ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড বায়োকেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং’ নিয়ে পড়ার সময় থেকেই আমার এই নাছোড় মনোভাবের দৌলতে সহপাঠী বন্ধুদের কাছ থেকে ‘কাজপাগল’ আখ্যা পেয়েছি আর এখন যে মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে কাজ করছি, সেখানেও অভিন্ন পরিচয় আমার।

রেহানা পরভিন আজ ফেরার সময় গাড়িতে লিফট চেয়েছিল। রেহানা মাইক্রোবায়োলজিস্ট। এই প্ল্যান্টে উৎপাদিত প্রোডাক্টের ‘কোয়ালিটি-কন্ট্রোল’-এর দায়িত্বে আছে।

আমার দেরি দেখে সে জানিয়ে গেল—লোকাল ট্রান্সপোর্টেই বাড়ি ফিরবে।

অনন্যোপায় আমি প্রফেশনাল ভঙ্গিতে রেহানার কাছে দুঃখপ্রকাশ করে অচল যন্ত্রকে সচল করার কাজে মনোনিবেশ করলাম এবং যখন সফল হয়ে আমার গাড়িতে উঠে বসে স্টার্ট দিলাম, তখন ঘড়িতে ন’টা বাজতে পাঁচ।

প্ল্যান্টের গেট দিয়ে বেরোবার মুহূর্তে হঠাৎ ফিরে এল সেই আগের অস্থিরতা। যন্ত্রের মধ্যে ডুবে গিয়ে মুক্ত হয়েছিলাম সাময়িক, আবার যেন আবদ্ধ হলাম এখন। কীসের যে অস্থিরতা! কেমন যেন এক আনক্যানি ফিলিং! বুঝিয়ে বলতে পারব না, কিন্তু সে অনুভূতি আমায় সুস্থিত হতে দিচ্ছে না কিছুতেই।

পুনে-মুম্বই হাইওয়ে ধরে আমাকে ড্রাইভ করতে হবে অনেকখানি পথ। একশো চল্লিশ কিলোমিটার। ঘণ্টা দেড়েকের বেশি লাগার কথা নয়। ‘ফোর বাই ফোর লেন’-এর হাইওয়ে। অনবরত রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলে, তাই তেলের মতো মসৃণ। মাঝে রয়েছে ঘাট-এরিয়া অর্থাৎ, পাহাড়ি পথ… চড়াই-উতরাই আর গোটা পাঁচেক দীর্ঘ টানেল। গত দু’বছরে পশ্চিমঘাট পর্বতমালার এই রাস্তাকে আমি চিনি হাতের তালুর মতন। অথচ, আজ কেন যেন কনফিডেন্সের অভাব বোধ করতে লাগলাম!

বর্ষাকাল। মেঘে ঢাকা আকাশ চুঁইয়ে টিপটিপ করে বৃষ্টি ঝরছে সন্ধের পর থেকেই, এখন বইছে দমকা হাওয়া। প্ল্যান্ট থেকে বেরনোর মিনিট দশেকের মধ্যেই হাইওয়েতে পৌঁছে গেলাম। তারপরেই মিটারের কাঁটা একশো কুড়ি আর তিরিশের মাঝে।

হঠাৎ চোখ চলে গেল আমার বাঁদিকে থাকা মাঝের মিরর-এর দিকে। স্পষ্ট দেখলাম, গাড়ির পেছনের সিটে কেউ, একজন বসে আছে। কী আশ্চর্য! কেমন করে হয়? কেউ তো ওঠেনি আমার গাড়িতে! ভুল দেখলাম নিশ্চয়ই। বৃষ্টিভেজা কাচের মধ্যে দিয়ে রাস্তার আলো গাড়ির ভেতরে ঢুকছে খুবই কম। আলোর সুইচের দিকে হাত বাড়িয়েও সংযত করলাম নিজেকে। নির্ঘাত চোখের ভুল, কাউকে তো আর দেখছি না! পরমুহূর্তেই বাইরের ‘রিয়ার ভিউ-মিরর’-এ ফুটে উঠল এক বাইক-আরোহীর ইমেজ। অস্পষ্ট অবয়ব।

স্পিড একটু একটু করে কমিয়ে এনে একেবারে বাঁদিকের স্লো-লেনে চলে এলাম এবং অবাক কাণ্ড! বাইক আরোহী মিররে একই অবস্থানে রয়ে গেল। এবার অস্থিরতা ছাপিয়ে আমার মেরুদণ্ড বেয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে শিরশির শিহরনের শীতল স্রোত। তবে কি আমাকে কেউ কোনও মতলব নিয়ে অনুসরণ করছে?

হঠাৎ করে বাড়িয়ে দিলাম গতি। স্পিডোমিটারের কাঁটা একশো চল্লিশ ছুঁল। যাক বাবা…! এবার রিয়ার-ভিউ-মিরর থেকে অদৃশ্য হয়েছে বাইক-আরোহীর প্রতিবিম্ব! স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে লো ভলিউম-এ চালু করে দিলাম মিউজিক সিস্টেম। আমার প্রিয় ‘ভেঙ্গা বয়েজ’-এর সুর মুহূর্তে কিছুটা হলেও সুস্থিত করল আমায়। অ্যাকসিলারেটরে চাপ দিতে গিয়ে রাস্তার নির্দেশিকা বোর্ডের দিকে নজর গেল আমার। মাত্র পাঁচশো মিটার দূরত্বে টানেল। স্পিড একশোর নীচে নামিয়ে আনলাম আর একটুক্ষণ পরেই যখন আমার ওয়াগনর ঢুকে পড়ল সে টানেলে, তখনই আয়নায় আবার সেই অবয়ব এবং সুদীর্ঘ টানেলের শেষপ্রান্ত পর্যন্ত তা রয়ে গেল সমদূরত্বে।

নিজের মনকে প্রবোধ দিলাম আমি—কে না কে বাইক চালিয়ে আসছে পেছন পেছন, তাতে আমার কী! কিন্তু টানেলের পর আমি যখন বাঁকের মুখে স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে সঠিক পথে চলার চেষ্টা করছি, তখন অবাক হয়ে অনুভব করলাম, গাড়ি আর আমার নিয়ন্ত্রণে নেই। পুনে-মুম্বই নিউ হাইওয়ে ছেড়ে গাড়ি ঢুকে পড়েছে পুরনো হাইওয়েতে, চলেছে লোনাভালা শহরের দিকে।

আমার মনে পড়ে গেল বছর দেড়েক আগের কথা। স্ত্রী সঞ্চিতা আর মেয়ে বিন্নিসোনাকে নিয়ে বেড়াতে এসেছিলাম লোনাভালায়। চেনা পথ… দোকানপাট… বাড়িঘর।

অল্প কিছুদূর গিয়েই গাড়ি ঢুকে পড়ল খোলা গেট দিয়ে এক রিসর্টের ভেতর আর সঙ্গে সঙ্গেই আমার মনে পড়ে গেল, এই রিসর্টেই আমরা কাটিয়ে গিয়েছিলাম সেবার… বছর দুই আগে তিনদিন দু’রাত্রি। গ্রিনভ্যালি রিসর্ট। বিশাল ক্যাম্পাস। ভেতরে বাগান, পার্ক, পার্কে দোলনা-স্লিপ। একধারে ছোট্ট সুইমিং পুল।

এই সময় আবার বৃষ্টি নামল মুষলধারায়। বড় বড় ফোঁটা চটর পটর শব্দে পড়তে লাগল উইন্ডশিল্ড গ্লাসের ওপর। গাড়ি থেকে নেমে দু’হাত দিয়ে কোনওরকমে মাথা বাঁচিয়ে ছুটলাম রিসেপশন-কাউন্টারের দিকে।

অল্পবয়সি যে ছেলেটি বসে ছিল, তাকে আগের বার দেখেছিলাম কিনা মনে করতে পারলাম না। রুম বুক করার আগে সেলফোনে যোগাযোগ করে সঞ্চিতাকে জানিয়ে দিলাম—প্ল্যান্টের কাজে আটকে গেছি, ফিরব কাল সকালে।

রিসেপশন-কাউন্টারের ছেলেটি বলল, “হমারে পাস কোঈ সিঙ্গল রুম খালী নহী হ্যায় স্যার। আপ ডবল রুম পে রহিয়েঁ, রেন্ট দিজীয়েঁ সিঙ্গল রুম কা।”

‘রুম-সার্ভিস’-এ ফোন করে ঘরে খাবার আনিয়ে খেলাম। জুত করে খেতে পারলাম না, সবই প্রায় পড়ে রইল। একটা আনক্যানি ফিলিং সন্ধে থেকে যা শুরু হয়েছিল, তা কিন্তু রয়েই গেল। কখনও তীব্র, কখনওবা মৃদুভাবে হন্ট করতে লাগল আমায়।

নাইট-ল্যাম্প জ্বালিয়ে শুয়েছিলাম, কিন্তু ঘুম না আসায় সেটাও নিভিয়ে দিলাম। কর্মক্লান্ত দিনগুলোতে বাড়ি ফিরে খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়া মাত্রই গভীর ঘুমে তলিয়ে যাই আমি। আমার ধরনটাই অমন, কিন্তু আজ তো সবকিছুই অন্যরকম। ক্লান্ত শরীর বিশ্রাম চাইছে, তবু ঘুম আসছে না কিছুতেই। হঠাৎ ঘরের অন্যপ্রান্তে অস্পষ্ট ছায়ামূর্তি। গাড়ির আয়নায় যেমন দেখেছিলাম, ঠিক তেমনই অবয়ব। জানলার শার্সি গলে স্ট্রিট-ল্যাম্পের যেটুকু আলো ভেতরে আসছিল, তাতে ধীরে ধীরে চোখ সয়ে এলে মনে হল, মাঝবয়সি এক মানুষ করুণ আর্তি জানিয়ে ডাকছে আমায়। তার চোখমুখ আমি ওই স্বল্প আলোয় দেখতে পাচ্ছি না বটে, কিন্তু সে যে আমাকে তার কাছে যেতে বলছে, তা ভঙ্গিতেই স্পষ্ট।

নিশিতে পাওয়া লোকের মতো আমি আগন্তুকের দিকে পা বাড়াতেই সে-ও নড়ে উঠল, দ্রুতগতিতে দরজার দিকে রওনা হল এবং কী আশ্চর্য! খোলা দরজা দিয়ে ঘরের বাইরে বেরিয়েও পড়ল। তার মানে, আমি দরজা বন্ধ না করেই শুয়ে পড়েছি! হতে পারে। আসলে, যে অস্থিরতার মধ্যে রয়েছি, তাতে ভুল না হওয়াটাই অস্বাভাবিক।

গাড়ির মতোই এখন এই মাঝরাতে আমিও নিয়ন্ত্রণহীন… না না—ভুল বললাম, অন্য কারও নিয়ন্ত্রণে নিজেকে আমি সমর্পণ করেছি।

প্রথমে লন-এ নামলাম, তারপর পার্ক পেরিয়ে বাগান এবং বাগানের দূরতম প্রান্তে এসে তবেই থামলাম। এতক্ষণ চলতে চলতে আলো-আঁধারিতে আগন্তুকের অস্পষ্ট অবয়ব দেখছিলাম, এবার আমার থেকে কিছুটা দূরে হঠাৎই হাওয়ায় মিলিয়ে গেল ছায়ামূর্তি। সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই কপালে প্রচণ্ড জোরে আঘাত লাগল, তারপর… আর কিছু মনে নেই। যখন জ্ঞান ফিরল, তখন আমার চারপাশে অনেক লোকের জটলা। সবাই ঝুঁকে পড়ে আমায় দেখছে। একটা মুখ আমি চিনলাম, রিসেপশনের সেই ছেলেটি। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, “ম্যায় ইধার অ্যায়সে কিউ?”

ছেলেটি জবাবে যা বলল, তার সারমর্ম এরকম : — বেশ ভোরে বাগানের মালি আমাকে বেহুঁশ অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে ছুটে গিয়ে খবর দেয় রিসেপশনে। রিসেপশনের লোকজন এবং রিসর্টের কিছু বোর্ডার এখন ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে।

আমি বললাম, “অভী ম্যায় বিলকুল ঠিক হুঁ, কোঈ তকলীফ নহী হ্যায়…” বলতে বলতে ভূমিশয্যা ছেড়ে নিজেই উঠে বসলাম।

কীভাবে এলাম? কেন এখানে এলাম? কখন এলাম? এমন অসংখ্য প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়ে উপস্থিত মানুষজনকে জানালাম যে, হাঁটতে হাঁটতে বাগানের এই প্রান্তে এসে মাথাটা হঠাৎই ঘুরে গিয়েছিল, এখন আর কোনওরকম অসুবিধে নেই।

|| ২ ||

নভি-মুম্বইয়ের কোপারখাইরানেতে আমার ফ্ল্যাটে ঢোকামাত্রই সঞ্চিতা বলে উঠল, “এ কী!… কী হয়েছে তোমার আরুষ? এরকম দেখাচ্ছে কেন?”

“কী রকম?”

“ক্লান্ত-বিধ্বস্ত একেবারে!” এগিয়ে এসে কপালে হাত ছোঁয়ায় সঞ্চিতা, “গা-টা একটু ছ্যাঁক ছ্যাঁক করছে যেন! বৃষ্টিতে ভিজেছ নাকি কাল রাত্তিরে?”

“গাড়ি থেকে নামার সময় দু’চার ফোঁটা পড়েছে মাথায়।”

“ও মা!” আঁতকে ওঠে সঞ্চিতা, “এটা কী! আলুর মতো ফুলে রয়েছে কপালের মধ্যিখানটা! আর গাড়ি থেকে কাল নামলে কখন? —কেনই বা?”

“আরে—সব বলব তোমায় সঞ্চিতা… আগে অফিসে আমার ওপরওয়ালা রাঘবনকে জানাই যে, আজ আর কাল দু’দিন যেতে পারব না আমি।”

“ঠিক আছে, ফ্রেশ হয়ে নাও, চা বানিয়ে আনছি তোমার জন্যে।” কিঞ্চিৎ উদ্বিগ্ন সঞ্চিতা রান্নাঘরের দিকে যেতে যেতে বলে, “চা খাওয়ার পর ব্রেকফাস্ট সেরে বিশ্রাম নাও খানিক।”

সব শুনে সঞ্চিতা চোখ গোল গোল করে বলল, “তোমাকে আমার বলা উচিত ছিল—কিছুদিন আগে ফেসবুকে ওই ‘গ্রিন ভ্যালি রিসর্ট’ সম্পর্কে একটা পোস্ট দেখেছিলাম, যাতে লেখা ছিল—ওটা এখন ‘হন্টেড হাউস’-এর তালিকায় স্থান পেয়েছে। খবরের কাগজের প্রতিবেদনটাও জুড়ে দিয়েছিল পোস্টটার সঙ্গে।”

“তাই নাকি!” চমকে উঠে বলি আমি, “তবে তো আর দোনামনা করব না, পুলিশকে জানাব কালকের ঘটনাটা।”

“পুলিশের চক্করে যাবে!” দ্বিগুণ বিস্ময় প্রকাশ করে সঞ্চিতা বলল, “বিশ্বাস করবে তোমার কথা?”

“আমার বন্ধু প্রবীর পুরকায়স্থকে তোমার মনে আছে সঞ্চিতা?” জিজ্ঞেস করি আমি।

“প্রবীর… প্রবীর পুরকায়স্থ?—ওই যে মুম্বই-পুলিশের উঁচু পদে রয়েছে?”

“হ্যাঁ হ্যাঁ—আমাদের কোপারখাইরানের এই নতুন ফ্ল্যাটেও এসেছে একবার।”

“তা—ওকে জানাবে ঘটনাটা, তাই ভাবছ?”

“দ্যাখো, লোনাভালা রায়গড় জেলা পুলিশের অধীনস্থ। সেখানে সরাসরি জানালে সহযোগিতা করবে, এমন সম্ভাবনা কম। কিন্তু পুলিশের বড়কর্তার চাপ নিশ্চয়ই উপেক্ষা করতে পারবে না।”

“আমি তো বুঝতেই পারছি না, পুলিশের ভূমিকা কী হবে!” বিস্মিত দৃষ্টি মেলে আমার দিকে চেয়ে থাকে সঞ্চিতা।

“ইনফর্মেশন তো থাকবে পুলিশের কাছে। ‘গ্রিনভ্যালি রিসর্ট’ কেন ‘হন্টেড হাউস’-এর তালিকাভুক্ত হল, সেটা অন্তত জানা যাবে। আসলে, কালকের নাইট মেয়ার তাড়া করে বেড়াচ্ছে আমায়!

সেদিন বিকেলের দিকে প্রবীরের সঙ্গে ‘হোয়াটস অ্যাপ’-এ যোগাযোগ করলাম। সর্বক্ষণ ব্যস্ত থাকে, কাজের চাপ খুব। তাই কথা না বলে চ্যাট। জানালাম—অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে তোর সঙ্গে। আজ রাতে চলে আয় আমার ফ্ল্যাটে। আমি জানি, তোর বেটার হাফ অনেকদিন ধরেই কলকাতায় বাপের বাড়ি, তুই মুম্বইতে একা এখন। অতএব চাইলে রাত্তিরটাও কাটিয়ে যেতে পারিস আমার আস্তানায়।”

প্রবীর লুফে নিল আমার প্রস্তাব।

আমার কাছ থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খ সব বিবরণ শুনে প্রবীর মন্তব্য করল, “তুই তো জানিস আরুষ, আমি ভূতপ্রেতে বিশ্বাস করি না। তোর মনের অস্থিরতার পেছনে হয়তো যুক্তিগ্রাহ্য কারণ লুকিয়ে আছে, যা আমরা কেউই বুঝতে পারছি না… তুইও না। কিন্তু সঞ্চিতা যে বলেছে—ওটা হন্টেড হাউস, সেটা আমিও যেন শুনেছি বা কোথাও পড়ে থাকব। আসলে কী জানিস আরুষ, এরকম হন্টেড হাউস মানে—হানাবাড়ি নিয়ে গল্প শুনতে লোকে খুবই ভালোবাসে আর তাই তিল থেকে তাল তৈরি হয়ে শাখাপ্রশাখা বিস্তার করে ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র এবং এখন তো সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এমন সব নিত্যনতুন অলৌকিক কাহিনি ভাইরাল হতে সময় নেয় না!”

“তুই বলতে চাইছিস, সবই আমার মস্তিষ্ক-প্রসূত?” আমি প্রশ্ন করি, “মানে আসলে, আমার মনের অবচেতন-স্তরে জমে থাকা ভয়ই চোখের সামনে অশরীরী উপস্থিতি ঘটিয়েছে?”

উত্তর এড়িয়ে গিয়ে প্রবীর বলল, “তবে আমি তোকে কথা দিচ্ছি, আমি অবিশ্বাসী হলেও গুরুত্ব দিয়ে ইনভেস্টিগেশনের ব্যবস্থা করব। কেন হানাবাড়ির তকমা পেল ‘গ্রিন ভ্যালি রিসর্ট’, সেটাই জানতে হবে সর্বাগ্রে এবং তাই কালই আমি যোগাযোগ করব লোনাভালার লোকাল থানার ও.সি-র সঙ্গে। তুই নিশ্চিন্ত থাক আরুষ, তুই তো আর দু’দিনের বন্ধু নোস আমার!”

তিনদিন পর শুক্রবার রাতে প্রবীর ফোন করল, “শনি-রবি তো তোর ছুটি…নিশ্চয়ই ফ্রি আছিস। কাল সকাল ন’টা নাগাদ লোনাভালা যাওয়ার পথে তোকে তোর ফ্ল্যাট থেকে আমার গাড়িতে তুলে নেব।”

“লোনাভালা! মানে ওই ‘গ্রিনভ্যালি রিসর্ট’-এর ব্যাপারে কি কিছু খবর পাওয়া গেল?”

“খবর তো বটেই, কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে পড়েছে! এখন কিছু জানতে চাস না, লোনাভালা পৌঁছলেই সব বুঝতে পারবি।” বলেই দুম করে কানেকশন কেটে দিল প্রবীর।

আমি তো প্রবীরের স্বভাব জানি, এখন হাজার খোঁচালেও কিছু বেরোবে না ওর পেট থেকে। তাই রিং ব্যাক করলাম না।

কিন্তু পরের দিন যাওয়ার পথে গাড়ির মধ্যেও যখন মুখ খুলল না প্রবীর, তখন আমি ক্ষোভ প্রকাশ না করে পারলাম না, “কী রে প্রবীর, ব্যাপার কী তোর বল তো! আমাকে অথই জলে ফেলে রেখে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছিস যে! আমি যাচ্ছি কোন্ কাজে, সেটা অন্তত বল!”

“তুই স্রেফ রিসর্টের বাগানের সেই স্পটটা চিনিয়ে দিবি, ব্যস, তারপর দ্যাখ না—কোথাকার জল কোথায় গড়ায়! তোর সামনেই যা ঘটার ঘটবে, একটু ধৈর্য ধর শুধু!”

|| ৩ ||

‘গ্রিন ভ্যালি রিসর্ট’-এর গেটের মুখেই উর্দিধারী জনাকয় পুলিশ-কনস্টেবল দাঁড়িয়ে ছিল, ভেতরে ও. সি. সাহেবের জিপ।

প্রবীরকে দেখতে পেয়েই হন্তদন্ত হয়ে রিসেপশন-কাউন্টারের চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালেন ও.সি। ও.সি-র পাশে সেদিনের সেই অল্পবয়সি ছেলেটি ছাড়া আর একজন ছিল। ও.সি-র কাছ থেকে জানা গেল, ভদ্রলোকের নাম সুদেশ মালহোত্রা। রিসর্টের মালিক। বেশ লম্বা-চওড়া চেহারা। রাশভারী, গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ। ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা টেনে এনে ‘নমস্তে’ বললেও পুলিশের কার্যকলাপে তিনি যে খুবই বিরক্ত, সেটা প্রকাশ করে ফেললেন প্রবীরের সামনে, “ম্যায় সমঝ নহী পা রহা হূঁ কি, ইতনে দিনো বাদ এক পুরানে কেস কে লিয়ে পুলিস মেরে পীছে কিউঁ পড়ী হ্যায়!”

প্রবীর তাঁর কথার জবাব না দিয়ে ও.সি-কে বলল, “চলিয়েঁ ওহ জগহ পর।” আমার সঙ্গে ও.সি-র পরিচয়পর্ব আগেই সারা হয়ে গিয়েছিল। প্রবীর আমাকে দেখিয়ে বলল, “মেরে দোস্ত আরুষ আপ কো ওহ স্পট দিখা দেগা। উসকে বাদ জো করনা, সহী তরীকা সে করনা চাহিয়ে।”

“চিন্তা মত কিজীয়েঁ স্যার,” ও.সি আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে জবাব দিলেন, “জো জো চীজোঁ কে জরুরত হ্যায়, সভী কে ইন্তেজাম খুদ ম্যায়নে কিয়া স্যার।”

বাগানের প্রান্তসীমায় পৌঁছে প্রবীর আমায় জিজ্ঞেস করল, “মনে করার চেষ্টা কর…ঠিক কোন্ জায়গায়, মানে কোন্ দিকটায় ছায়ামূর্তি অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল?—এখানটায় কি? তাড়াহুড়ো করিস না…এই সে জায়গা, যেখানে তুই অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে ছিলি।” বলে প্রবীর চকের গুঁড়ো দিয়ে ঘাসের উপর গোল করে চিহ্নিত একটা স্থানের দিকে আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করল।

আমি বললাম, “এখানটাতেই যে আমি শেষমেশ এসে দাঁড়িয়েছিলাম, তা এখন বলা অসম্ভব। তবে সীমানা প্রাচীরে গুঁতো খেয়ে যে পড়ে গিয়েছিলাম, সে কথা ঠিক।

একটু সময় নিয়ে বললাম, “রাতের আলো-আঁধারিতে কোন্ দিকে যে ছায়ামূর্তি মিলিয়ে গিয়েছিল হাওয়ায়, সেটা আন্দাজ করা খুবই মুশকিল।”

ও.সি-কে উদ্দেশ্য করে প্রবীর বলল, “আপ কাম শুরু কর দিজীয়ে।”

আমি বললাম, “কাজটা কী—সেটা বলবি তো!”

প্রবীর আমাকে কিছু দূরে টেনে নিয়ে গিয়ে নিচু গলায় বলল, “ও.সি-র ধারণা—তুই যাকে দেখেছিলি, তার মৃতদেহ এই বাগানের ভেতরেই কোনও জায়গায় মাটির নীচে রয়েছে।”

“মানে?”

“পরিকল্পনাটা আমার নয়, ও.সি-র। আসলে ও.সি তোর কাহিনি শুনে ধরেই নিয়েছে, মাটির নীচে পুঁতে রাখা লাশের ভূতই তোর সামনে এসে সে রাতে দেখা দিয়েছিল।”

“কিন্তু মাটির নীচে পুঁতে রাখা লাশের ব্যাপারটা আসছে কীভাবে?”

“এখন থেকে মাস ছয়েক আগে থানায় একটা ‘মিসিং ডায়েরি’ করা হয়েছিল। নিরুদ্দিষ্ট মানুষটি ছিল এই রিসর্টের প্রাক্তন ম্যানেজার মোহন পালেকার। অনেক অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গিয়েছিল—মোহন যেদিন নিরুদ্দেশ হয়, সেদিন রাতে মালিক সুদেশ মালহোত্রার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সে তার মোটরবাইকে চেপে বাড়ির পথ ধরে রাত দশটা নাগাদ। কিন্তু সে আর কোনওদিন বাড়ি পৌঁছয়নি! দিন দুই বাদে গভীর খাদ থেকে উদ্ধার হয় তার মোটরবাইক। অথচ, মোহনের লাশের হদিস মেলেনি কোথাও এবং সেই সঙ্গে তার মোবাইল ফোনটিও লা পতা!”

“আশ্চর্য!” আমার মুখ থেকে বেরিয়ে আসে, “পুলিশ আর কোনও অনুসন্ধান চালায়নি?”

“অবশ্যই চালিয়েছে এবং এখন যে আবার নতুন উদ্যমে শুরু করেছে, তা তো দেখতেই পাচ্ছিস।”

ও.সি যে স্নিফার ডগটিকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন, সেটি ঘোরাঘুরি করছে বটে, তবে আশাব্যঞ্জক কোনও মুভমেন্ট নেই তার।

আমি বললাম, “দুর্ঘটনার পর খাদে পড়ে থাকা মোহনের ডেডবডি তো বুনো জন্তুজানোয়ার পুরোপুরি খেয়ে লোপাট করে ফেলতেও পারে।”

“পারে, কিন্তু হাড়গোড় গেল কোথায়?” প্রবীর বলল, “তার চেয়েও বড়ো খটকা একটা রয়েছে।”

“কী সেটা?”

“মোহনের মোবাইল-সেটের হদিস পাওয়া যায়নি। নেটওয়ার্ক ট্র্যাক করেও পুলিশ সেলফোনের সন্ধান পায়নি। ‘সিম’ ফেলে দিয়ে সুইচ অফ করে রাখলেও মডার্ন টেকনোলজির কল্যাণে ডিটেকশন সম্ভব। রহস্য দানাবেঁধে রয়েছে এই ব্যাপারটার মধ্যেই। মোটরবাইক-অ্যাক্সিডেন্টেই যে মোহনের মৃত্যু ঘটেছে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।”

“তার মানে—তুইও তো ভাবছিস, খুন করা হয়েছে মোহন পালেকারকে, অ্যাক্সিডেন্টটা সাজানো…হোয়াক্স, অর্থাৎ মোটরবাইকটাকে খাদে ফেলে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করেছে খুনী আর সেলফোন এবং সিমটাকে ডেস্ট্রয় করেছে… কী?—তাই তো?”

“একদম তাই”, প্রবীরের কণ্ঠস্বরে আত্মবিশ্বাস, “এ ব্যাপারে ও.সি-র সঙ্গে আমার কোনও মতভেদ নেই। কিন্তু বডিটাকে রিসর্টের বাগানের কোথাও কবরস্থ করেছে খুনী, ও.সি-র এই ধারণার সঙ্গে আমি সহমত নই। আমার মনে হয়, খুনটা করা হয়েছে রিসর্টের বাইরে এবং ডেডবডি লোপাট করার সহজতম উপায় যেটা, সেটাই প্রয়োগ করেছে খুনী।”

“কী সে উপায়?”

“পুড়িয়ে ফেলা।” খুব আস্থার সঙ্গে বলে প্রবীর, “এমন একটা কেস সম্প্রতি আমি দেখেছি।”

“তার মানে—তুই বলছিস, রিসর্টের কেউ জড়িত নয়?”

“না—তা বলছি না। বলছি, যদি কেউ জড়িত থাকেও, তবে কাজটা সে ভেতরে না করে বাইরে…” প্রবীরের কথা শেষ হওয়ার আগেই স্নিফার ডগ বিদ্যুৎ গতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ল অসমাপ্ত গর্তের ভেতর।

ও. সি খননকারীদের নির্দেশ দিলেন আরও গভীরে খননকাজ চালাতে। কিছু পরিমাণ মাটি সরিয়ে ফেলতেই ভয়ানক এক কাণ্ড ঘটে গেল। শাবল-সমেত একজন খননকারী হুড়মুড় করে পড়ে গেল খানিক নীচে। ঝুরোমাটি সরে গিয়ে বেরিয়ে পড়ল সুড়ঙ্গ, যা কিনা সীমান্ত-প্রাচীরের নীচ দিয়ে বহির্মুখী।

মোটা দড়ি নামিয়ে টেনে উপরে তোলা হল খননকারীকে আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই স্নিফার ডগ ঝাঁপিয়ে পড়ল সুড়ঙ্গের ভেতর।

প্রাচীরের কিছু অংশ ভেঙে ফেলে খোঁড়াখুড়ি চালাতেই টানেলের যে অংশ বাইরে, সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ল আস্ত এক নরকঙ্কাল।

আমার সঙ্গে চোখাচোখি হতেই প্রবীর সপ্রতিভ ভঙ্গিতে বলে ওঠে, “আমার ধারণাটা তাহলে আংশিক সত্যি।”

“মানে?”

“মানে খুব সহজ। খুনের পর মৃতদেহ টানেলের মধ্যে দিয়ে বাইরে নিয়ে গিয়ে কবরস্থ করা হয়েছে।”

“এত কষ্ট করার তো কোনো দরকার ছিল না!” আমি বলে উঠি, “বডিটা বাইরে নিয়ে গিয়েই তো কাজটা করতে পারত, তাই না?”

“না। খুনী ভাবনাচিন্তা করেই করেছে,” প্রবীর আমাকে উদ্দেশ করে বলল, “তুই বুঝছিস না কেন আরুষ যে, বাইরে লাশ নিয়ে বেরোলে ধরা পড়ে যাওয়ার যথেষ্ট ঝুঁকি থাকত!”

ও. সি উচ্ছ্বসিত ভঙ্গিতে এগিয়ে এসে করমর্দনের জন্যে হাত বাড়িয়ে দিলেন আমার দিকে, “বহুত শুক্রিয়া মিস্টার সেনগুপ্ত। আপ কে লিয়ে সফলতা মিলী, হামলোগ তো সির্ফ ফলো আপ কিয়ে।”

অ্যারেস্ট করে নিয়ে যাওয়ার আগেই পুরোপুরি ভেঙে পড়া সুদেশ মালহোত্রা স্বীকার করলেন—বচসার জেরে সেদিন রিসর্টের বর্তমান ম্যানেজার প্রীতম সিং সজোরে মোহনের কানপাটিতে চড় মেরেছিল আর তাতেই…।

অনিচ্ছাকৃত খুনের ক্ষেত্রে যেটুকু ছাড় মিলতে পারত প্রীতমের, সেটা নষ্ট হয়েছে তার প্রমাণ-লোপের চেষ্টার জন্যে। আর খুনটা যে পূর্বপরিকল্পিত নয়, তা প্রমাণ করার দায়ও এখন তার। সে কাজটা যে বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে, তা বলারই অপেক্ষা রাখে না, কারণ, মোহনের মৃত্যু ঘটেছে বাইক-অ্যাক্সিডেন্টে, এটা বোঝানোর চেষ্টায় যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা জেনে বিচারক ভাবতেই পারেন, মানে কনভিন্সড হতেই পারেন যে, মোহনকে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে। কোল্ডব্লাডেড মার্ডার। এবং প্রীতমকে সহযোগিতার দায়ে ছাড় পাবেন না মালহোত্রাও।

পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সহ্যাদ্রিকে সোনা-রঙে রাঙিয়ে একটু আগে অস্ত গেছে দিনমণি। প্রবীর চুপচাপ গাড়ি চালাচ্ছে। আমি তার পাশে বসে মাঝের আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখছি—কোনও মোটরবাইক-আরোহীর ইমেজ ফুটে উঠছে কিনা।

* সংলাপে ব্যবহৃত হিন্দি শব্দগুলির সঠিক বানান ‘হিন্দি অভিধান’-অনুসারে লেখা হয়েছে, যেমন—‘অভী’, ‘নহী’, ‘কোঈ’, ‘ঊপর’, ‘খালী’ ইত্যাদি। ‘অভী’-র ‘অ’-এর উচ্চারণ ‘অ’ এবং ‘আ’-র মাঝামাঝি।

.

দেবব্রত দাশ

জন্ম ১৯৪৪। পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর। প্রথমে অধ্যাপনা। ১৯৭৭ থেকে কর্মজীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন ডব্লিউ বিসিএস অফিসার। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। লেখালেখির জীবন। লিখেছেন “কিশোর ভারতী”, “শুকতারা”, “নবকল্লোল”, “আনন্দমেলা” প্রভৃতি পত্র-পত্রিকায়। এছাড়া “ম্যাজিক ল্যাম্প, “জয়ঢাক”, “অপার বাংলা”, “ভো-কাট্টা” প্রভৃতি ওয়েব ম্যাগাজিনেও নিয়মিত লেখকের গল্প প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত একক বই – ‘জীবনের জলতরঙ্গ’, ‘জীবনের যত রঙ’, ‘জীবনের ঝরাপাতা’, মহাকাশে হীরকবৃষ্টি’, ‘কেল্লাফতে’ ইত্যাদি।

সকল অধ্যায়

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন