অধ্যায় ৪৬ : নতুন করে দেখা – জ্যাক ডেরিডা

কাজী মাহবুব হাসান

অধ্যায় ৪৬ : নতুন করে দেখা – জ্যাক ডেরিডা

জ্যাক ডেরিডা আধুনিক সময়ের ফরাসি বুদ্ধিজীবী সমাজে সবচেয়ে প্রখ্যাত, বিতর্কিত এবং প্রাজ্ঞ একজন চরিত্র। তিনি দর্শনচর্চা করার একটি নতুন উপায় আবিষ্কার করেছিলেন, যার নাম দিয়েছিলেন deconstruction, যা বহু অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্র বোঝার ক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তন এনেছিল, বিশেষ করে লিটারেরি স্টাডিস। ডেরিডা ১৯৩০ সালে এল-বিয়ারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এল-বিয়ার আলজেরিয়ার (তখন সেটি ছিল ফরাসি উপনিবেশ) রাজধানী আলজিয়ার্সের উপকণ্ঠের একটি শহরতলী। তার পরিবার ছিল ইহুদি-ধর্মাবলম্বী। স্থানীয় একটি মদ তৈরির কারখানার সেলসম্যান ছিলেন তাঁর বাবা। স্কুলে শুরুতে তিনি তার মেধার চিহ্ন দেখাতে পারেননি, পেশাজীবী ফুটবল খেলোয়াড় হবার স্বপ্ন ছিল তার। ১৯৪২ সালে নাৎসিদের সহযোগিতাকারী ফরাসি ভিচি সরকারের প্রণয়ন করা নতুন আইনের কারণে ডেরিডার মতো সব ইহুদি ছেলেমেয়েদের স্কুল থেকে জোর করে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সেই সময়ের বেশিরভাগটাই তার কেটেছিল বাড়িতে তাঁর মায়ের সাথে। নাৎসি আইন ছাড়াও আলজেরিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগোষ্ঠির ইহুদিবিদ্বেষের কারণে তাকে বেশ দুর্ভোগও সহ্য করতে হয়েছিল। ইহুদিবাদ, খ্রিস্টান ও ইসলাম, পরস্পর সংযুক্ত অথচ ভিন্ন তিনটি ধর্মের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানটি তাঁর অভিজ্ঞতায় গভীরভাবে ছাপ রেখেছিল। তিনি পর্যবেক্ষণ করেছিলেন যে এই ভিন্নধর্মগুলো প্রত্যেকটি দাবি করে তারা সত্য বলছে, কিন্তু কোনোটি জানেনা কীভাবে অন্য ধর্মের সাথে বিশেষভাবে সম্মানের সাথে আচরণ করতে হয়।

১৯৪৯ সালে, ১৯ বছর বয়সে প্যারিসে আসেন ফ্রান্সের অত্যন্ত সম্মানজনক স্কুল একোল নরমাল সুপেরিয়রে (ecole normal superior) পড়ার জন্যে। তিনি অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্র ছিলেন, কিন্তু তার সেই অদ্ভুত পরিস্থিতিও ছিল, পড়াশুনার সুযোগ হিসাবে খুবই সুবিধাজনক অবস্থা কিন্তু আলজেরীয় ইহুদি হবার কারণে যার অবস্থান ছিল মেট্রোপলিটান প্যারিসের প্রান্তে। যদিও ডেরিডা আত্মজীবনীমূলক লেখক ছিলেন না, তবে তাঁর কাজগুলো ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, সংস্কার আর বর্জন, বিদ্বেষের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাগুলোর প্রতি অতিবিমূর্ত প্ৰতিক্ৰিয়া হিসাবে অনেক ভাবেন। ডেরিডা যদিও বিষয়টিকে কখনোই মেনে নেননি। ১৯৬০-এর দশকের শেষ থেকে জ্যাক ডেরিডা সেই ধারণাগুলোর প্রস্তাব করা শুরু করেন যা তাঁর নাম সুপরিচিত করেছিল। একপর্যায়ে তিনি একজন সেলিব্রিটি বুদ্ধিজীবীতে পরিণত হন ইউরোপ ও আমেরিকায়। তিনি বেশ সুদর্শন ছিলেন, তাঁর চুলকাটার শৈলী ছিল লক্ষ্য করার মতো। তার ভালোবাসার জীবনও বেশ বিচিত্র আর সমৃদ্ধ ছিল। ১৯৮০ সালে তাকে পুরোপুরি মিথ্যা মাদকপাচারের কেসে আটক করা হয়, তাকে সমর্থন করেছিলেন তৎকালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট, ডান ও বামের রাজনীতিবিদরা। তিনি সুকার খেলতে ভালোবাসতেন। ২০০৪ সালে অগ্নাশয়ের ক্যান্সারে তিনি মারা যান ৭৪ বছর বয়সে। ডেরিডা প্রায় ৪০টি বই লিখেছিলেন, যাদের প্রত্যেকটি দুর্বোধ্য, এবং সূক্ষ্ম। কিন্তু তাঁর লেখার গুরুত্ব আমাদের জন্যে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে তিনটি প্রাথমিকভাবে অদ্ভুত শব্দ বোঝার মাধ্যমে, যা তিনি প্রায়শই ব্যবহার করেছিলেন: deconstruction, aporia এবং logocentrism-এই শব্দগুলোর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু ধারণা আছে।

ডিকনস্ট্রাকশন (deconstruction) শব্দটি মূলত ডেরিডার সাথে সংশ্লিষ্ট একটি শব্দ, তিনি শব্দটি দিয়ে বোঝাতে চেয়েছিলেন তাঁর চিন্তার প্রক্রিয়াটিকে, যদিও যখন অন্যরা তাঁর এই শব্দটি ব্যবহার করতে শুরু করেছিলেন, তিনি প্রায়শই অনুভব করেছেন শব্দটি দিয়ে যা বোঝাতে চেয়েছিলেন সেটি তারা বোঝাতে পারেননি, মূলত deconstruction মানে কোনো একটি ধারণার প্রতি অতিমাত্রায় আনুগত্যকে ভাঙা এবং দেখতে শেখা যে সত্যের কিছু অংশ এর বিপরীতে লুকিয়ে থাকতে পারে। ১৯৬৭ সালে তিনি তাঁর প্রথম বিখ্যাত বই of grammatology প্রকাশ করেছিলেন। এখানে ডেরিডা প্রস্তাব করেছিলেন পশ্চিমা দর্শনে সেই সক্রেটিসের সময় থেকে পদ্ধতিগতভাবে কথা বলা বা বক্তৃতা বা স্পিচের উপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, যাকে মনে করা হয় অকৃত্রিম যোগাযোগ, লিখিত কিছুকে মনে করা হয় শুধুমাত্র মানুষ কী বলতে পারে তারই একটি প্রতিলিপি। একটি সেকেন্ড হ্যান্ড রিপোর্ট, যার মধ্যে সেই ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া আর সত্যতা নেই যা থাকে কথোপকথনের মধ্যে, এবং কদাচিৎ মনে হয় যে, কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখক কিছু বলছেন। কিন্তু ডেরিডার কাজের নাটকীয়তা এসেছিল যে তিনি এই দাবি থেকে আরো বড় একটি দাবি করেছিলেন, তার আরো সর্বব্যাপী লক্ষ্য ছিল আরো বেশি অস্বস্তিকর প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা, কিন্তু যখন একবার বিষয়টি নিয়ে আমরা ভালোভাবে লক্ষ করব দেখব আমাদের সব চিন্তাই আক্রান্ত সেই শক্তি দিয়ে যা অযৌক্তিক, কোনোকিছুকে অন্যকিছুর চেয়ে সুবিধা দেবার ক্ষেত্রে সহায়ক। লেখার চেয়ে কথাকে প্রাধান্য দেয়া, আবেগের চেয়ে যুক্তিকে প্রাধান্য দেয়া, নারীদের চেয়ে অন্তত বেশ দীর্ঘসময় ধরে পুরুষদের প্রাধান্য দেয়া, ছবির চেয়ে শব্দকে, স্পর্শের চেয়ে দৃষ্টিকে। তঁর মূল বক্তব্যটি ছিল এই সুবিধা দেবার প্রবণতাটিকে এই সমীকরণের অপেক্ষাকৃত তথাকথিত কম মূল্যবান ও অবহেলিত অংশটি গুণ ও মূল্য যাচাই করার ব্যর্থতা। তিনি অবশ্যই এমন কিছু দাবি করেননি যে সবকিছুই অর্থহীন। তিনি বলতে চেয়েছিলেন যে আমাদের মৌলিক কিছু বিরোধিতার অবহেলিত বিপরীত অংশটি ভালোবাসা ও নজর পাবার যোগ্যতা রাখে। ডেরিডা তাঁর প্রায় ৪০টিরও বেশি বইতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বাইনারি শব্দকে ডিকনস্ট্রাক্ট করেছিলেন, যুক্তি বনাম আবেগ, পুরুষত্ব বনাম নারীত্ব, লাভ বনাম দয়াশীলতা, উচ্চসংস্কৃতি বনাম নিম্নসংস্কৃতি। তিনি আশা করেছিলেন, আমরা আরো বুদ্ধিমত্তার সাথে বাঁচতে শিখব, এই শব্দগুলোর অন্তরালে থাকা কিছু দ্বন্দ্ব নিয়ে, এবং আমরা বুঝতে শিখব যে উভয়পাশেই অর্থবহ কিছু আছে, এবং উভয়পাশে কিছু ভ্রান্তি আছে, এবং উভয়ের পরস্পরকে প্রয়োজন। এই মধ্যবর্তী টানাপড়েন আবশ্যিকভাবেই অপরিবর্তনযোগ্য প্রমাণিত হতে পারে। মনে হতে পারে ডেরিডা সবসময়ই ডিকনস্ট্রাকশন ব্যবহার করেছিলেন প্রথাগত ভাবনা আর মুক্তবাজার অর্থনীতিকে আক্রমণ করা ও তার মাধ্যমে বামপন্থী সাম্যবাদী ধারণাকে সমর্থন করার জন্যে। কিন্তু তিনি অনেক বেশি সূক্ষ্ম ছিলেন তার চিন্তার প্রক্রিয়ায়। যেমন তিনি সমতার ধারণাটিকে ডিকনস্ট্রাকশন করার সময় প্রস্তাব করেছিলেন যে, অসমতার চেয়ে সমতা সবসময়ে ভালো এমন দাবিহয়তো আধুনিক উদারনীতিবাদের মূলমন্ত্র হতে পারে কিন্তু বাস্তবিতভাবে অস্থিতিশীল ও অস্পষ্ট। তিনি দেখান যে কিছু শ্রেষ্ঠতম মানবিক পরিস্থিতি যা আমরা জানি স্পষ্টতই সেগুলো ক্রিয়াশীল সাম্যের উদাহরণ নয়।

কোনো ধারণাকে বিনির্মাণ করা মানে দেখানো এটি নানাধরনের যৌক্তিক ত্রুটি দ্বারা পূর্ণ ও সংশয়াচ্ছন্ন, আমরা এই ধারণাগুলোর অপরিচ্ছন্নতা যেন সবসময় স্মরণে রাখি। ডেরিডা আমাদের কল্পনা করার প্রবণতাকে সমালোচনা করেছিলেন, যে কল্পনাটি হচ্ছে প্রতিটি সমস্যার পেছনে কোথাও-না-কোথাও ভালো সুস্পষ্ট কোনো সমাধান আছে। তিনি ভাবতেন আমরা হচ্ছি সেই প্রাণী, যাদের নিয়তি হচ্ছে সুস্পষ্ট কোনো উত্তর ছাড়াই জীবন কাটানো, আর সেই সুস্পষ্টতার জন্য আমাদের কামনাই হচ্ছে সব সমস্যার মূলে। তিনি স্থূল সরলতার প্রতি আমাদের ভালোবাসাকে নিরাময় করতে চেয়েছিলেন, জ্ঞানের একটি স্থায়ী দোদুল্যমান পরিস্থিতির সাথে যেন আমরা স্বস্তিতে বসবাস করতে পারি সেটি তিনি চেয়েছিলেন। যেমন, তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন আমরা সঙ্গতকারণেই পুঁজিবাদ আর সমাজতন্ত্রের সুবিধা নিয়ে সংশয়গ্রস্থ, যেমন আমরা সংশয়গ্রস্থ ভালোবাসা আর যৌনতাকে নিয়ে। এই বিষয়গুলো নিয়ে কখনোই আমরা সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারি না, সমীকরণের দুইপাশে উপযোগী উপাদান আছে, পুঁজিবাদ হয়তো খুবই চমৎকার অথবা পাপপূর্ণ অথবা ভালোবাসা আর যৌনতা পরস্পরভাবে খুবই ঘনিষ্ঠ এমন কিছু বা কোনো সম্পর্ক নেই এমন উপসংহারে দ্রুত পৌঁছে যাওয়া মানে বাস্তবতার বর্ণিল বিচিত্র রূপটাকে এড়িয়ে চলা। এইসব বিষয় নিয়ে সংশয়গ্রস্থ হওয়া আর অনিশ্চয়তায় ভোগা দুর্বলতার অথবা নির্বুদ্ধিতার কোনো প্ৰকাশ নয়, ডেরিডার মতে এটাই প্রাপ্তবয়স্কতার কেন্দ্রীয় চিহ্ন।

ডেরিডার কৌশল ছিল এই পরিস্থিতিগুলোই গ্ল্যামারাইজ বা আকর্ষণীয় করে তোলা, এটিকে ইতিবাচকরূপে উপস্থাপন করা, একারণে তিনি সেই সুন্দর গ্রিক শব্দটি ফিরিয়ে নিয়ে এনেছিলেন, aporia, যার মানে impasse অচলাবস্থা অথবা puzzlement বা বিভ্রান্তিকর একটি অবস্থা; তিনি প্রস্তাব করেছিলেন যে অ্যাপোরিয়া এমন একটি পরিস্থিতি যেখানে আমাদের গর্ব করা উচিত, নিয়মিতভাবেই সংশয়ের এই পরিস্থিতিটি অনুভব করা উচিত। ডেরিডার বিশ্বভাবনায় সন্দেহ বিব্রতকর অসমাপ্ত কোনো পরিস্থিতি নয়, বরং শুধুমাত্র সেটি প্রাপ্তবয়স্ক মনকেই নির্দেশ করে। ডেরিডার একটি প্রধান সমালোচনার লক্ষ্য ছিল চিন্তা করার সেই পদ্ধতি যার নাম তিনি দিয়েছিলেন লোগোসেন্ট্রিজম (logocentrism), যার মাধ্যমে তিনি বুঝিয়েছিলেন দ্রুত অতিমাত্রায় তৎপর যুক্তি আর সুস্পষ্ট সংজ্ঞার প্রতি আত্মনিবেদন, যার ভিত্তি ভাষার উপর সেই অন্ধবিশ্বাস যে, যোগাযোগের জন্যে সেটি প্রাকৃতিক ও সেরা উপায়। ডেরিডা সংগীত আর শিল্পকলার অনুরাগী ছিলেন, এবং তিনি দাবি করেছিলেন যে বহু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আমরা অনুভব করতে পারি যা কখনোই সুস্পষ্টভাবে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না, মৌখিক বা লিখিত শব্দ দিয়ে যা logocentricরা প্রায়শই ভুলে যান। লোগোসেন্ট্রিজমের একটি উদাহরণ তাকে বিশেষভাবে নাড়া দিয়েছিল। সেটি হচ্ছে আইকিউ ধারণাটির বিশেষ গুরুত্ব, যা মূলত পরিমাপ করে যৌক্তিক কিছু ধাঁধা সমাধান করার কারো যোগ্যতাকে, মোটাদাগে যা উপেক্ষা করে মনের অন্যান্য গুণাবলিকে, যেমন এটি খুবই সামান্য আমাদের তথ্য দেয় মানুষটির বন্ধুত্ব সৃষ্টি করার ক্ষমতা কতটুকু বা বাবা-মা হবার যোগ্যতা কতটুকু, অথবা আনন্দ করা কিংবা তাদের আবেগগুলো নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাই বা কেমন। কিছু মানুষ হয়তো দক্ষ নয় কোনো জ্যামিতিক ধারাবাহিকতার ধাঁধা সমাধানে, কিন্তু কোনো বিবাহিত জীবনকে, ব্যবসা আর ছুটি কিংবা কোনো উৎসব আর জীবনকে অন্যভাবে সফল করতে তার দক্ষতা কতটুকুসে-বিষয়ে আইকিউ আমাদের কোনো তথ্য দেয় না, যার প্রত্যেকটি গুরুত্ব তিনি বুঝেছিলেন।

পৃথিবীর সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করা ডেরিডা ফুটবল আর সুকারপ্রেমী আলজেরীয় ইহুদি ছিলেন। তিনি আধুনিক বুদ্ধিবৃত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির দিকে সন্দেহের আঙুল তুলেছিলেন। অনেক বিখ্যাত চিন্তাবিদের মতো ডেরিডাকে আমাদের মনে রাখা দরকার কিছু অতিমাত্রাপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির সংশোধনী হিসাবে, তাঁর ক্ষেত্রে সেটি ছিল যুক্তি আর সুস্পষ্ট উত্তরের প্রতি অতিমাত্রায় আনুগত্য। ডেরিডা সব প্রাধান্য- পরম্পরাকে বিলোপ করতে চাননি, তিনি জানতেন নিষ্ঠুরতাকে কোনো সময় দয়াশীলতার উপর, বুদ্ধিমত্তাকে নির্বুদ্ধিতার উপর সুযোগ দেয়া যাবেনা, কিন্তু তিনি একইভাবে বুঝতে পেরেছিলেন যে কতকিছু আমরা অজান্তে বাতিল করে দিই শুধু এর বিপরীত ধারণাগুলো সমীকরণের ওপাশে থাকে বলে। ডেরিডা আমাদের ধৈর্য আর নম্রতার সাথে মনে করিয়ে দেন সেই ধারণাগুলোর গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো আমাদের দেখা উচিত, এবং কৌতূহলী হওয়া উচিত কেন ভালো হতে পারে, যখন খুব অল্প সময়ের জন্যে হলেও আমরা যে-কোনো বিতর্কের অন্যপাশে থাকি।

সকল অধ্যায়

১. অধ্যায় ১ : যে মানুষটি প্রশ্ন করেছিলেন – সক্রেটিস এবং প্লেটো
২. অধ্যায় ২ : ইউডাইমোনিয়া – আরেকটু প্লেটো
৩. অধ্যায় ৩ : প্ৰকৃত সুখ – অ্যারিস্টোটল
৪. অধ্যায় ৪ : দার্শনিকদের থেকে সাবধান – ডায়োজেনিস ও প্রাচীন সিনিক দর্শন
৫. অধ্যায় ৫ : তাৎক্ষণিক সুখ – আরিস্টিপপাস ও সাইরেনাইক দর্শন
৬. অধ্যায় ৬ : আমরা কিছু জানিনা – পিরো এবং প্রাচীন সংশয়বাদী দর্শন
৭. অধ্যায় ৭ : বাগানের পথ – এপিকিউরাস
৮. অধ্যায় ৮ : স্টয়িসিজম, কোনোকিছু গ্রাহ্য না করার শিক্ষা – এপিকটিটাস, সিসেরো, সেনেকা
৯. অধ্যায় ৯ : কার হাতের পুতুল আমরা? – অগাস্টিন
১০. অধ্যায় ১০ : দর্শনের সান্ত্বনা – বোয়েথিয়াস
১১. অধ্যায় ১১ : ত্রুটিহীন একটি দ্বীপ – আনসেল্ম ও অ্যাকোয়াইনাস
১২. অধ্যায় ১২ : শিয়াল এবং সিংহ – নিকোলো মাকিয়াভেলি
১৩. অধ্যায় ১৩ : সাধারণের দর্শন – মিশেল দো মনতাইন
১৪. অধ্যায় ১৪ : নোংরা, পাশবিক এবং সংক্ষিপ্ত – থমাস হবস
১৫. অধ্যায় ১৫ : প্রবচনে দর্শন – ফ্রাঁসোয়া দ্য লা রোশফুকো
১৬. অধ্যায় ১৬ : আপনি স্বপ্ন দেখছেন না তো? – রেনে দেকার্ত
১৭. অধ্যায় ১৭ : বাজির দান রাখুন – ব্লেইজ পাসকাল
১৮. অধ্যায় ১৮ : কাঁচ ঘষে লেন্স যিনি বানাতেন – বারুখ স্পিনোজা
১৯. অধ্যায় ১৯ : রাজকুমার ও মুচি – জন লক ও টমাস রিড
২০. অধ্যায় ২০ : ঘরের মধ্যে হাতি – জর্জ বার্কলি (এবং জন লক)
২১. অধ্যায় ২১ : সম্ভাব্য সব পৃথিবীর সেরা? – ভলতেয়ার এবং গটফ্রিয়েড লাইবনিজ
২২. অধ্যায় ২২ : কাল্পনিক ঘড়িনির্মাতা – ডেভিড হিউম
২৩. অধ্যায় ২৩ : জন্মগতভাবে স্বাধীন – জ্যাঁ-জাক রুসো
২৪. অধ্যায় ২৪ : রঙিন চশমায় দেখা বাস্তবতা – ইমানুয়েল কান্ট
২৫. অধ্যায় ২৫ : প্রায়োগিক সুখ – জেরেমি বেনথাম
২৬. অধ্যায় ২৬ : মিনার্ভার পেঁচা – জর্জ ডাবলিউ. এফ. হেগেল
২৭. অধ্যায় ২৭ : বাস্তবতার ক্ষণিক দর্শন – আর্থার শোপেনহাউয়ার
২৮. অধ্যায় ২৮ : বেড়ে ওঠার জন্যে পরিসর – জন স্টুয়ার্ট মিল
২৯. অধ্যায় ২৯ : অবুদ্ধিমত্তাপূর্ণ ডিজাইন – চার্লস ডারউইন
৩০. অধ্যায় ৩০ : জীবনের বিসর্জন – সোরেন কিয়ের্কেগার্ড
৩১. অধ্যায় ৩১ : দুনিয়ার মজদুর এক হও – কার্ল মার্ক্স
৩২. অধ্যায় ৩২ : তাতে কী এসে যায়? – সি. এস. পার্স ও উইলিয়াম জেমস
৩৩. অধ্যায় ৩৩ : ঈশ্বরের মৃত্যু – ফ্রিয়েডরিখ নিচাহ
৩৪. অধ্যায় ৩৪ : ছদ্মবেশী চিন্তা – সিগমন্ড ফ্রয়েড
৩৫. অধ্যায় ৩৫ : ফ্রান্সের বর্তমান রাজার মাথায় কি টাক আছে? – বার্ট্রান্ড রাসেল
৩৬. অধ্যায় ৩৬ : বুহ!/ হুররে! – আলফ্রেড জুল (ফ্রেডি) আয়ার
৩৭. অধ্যায় ৩৭ : স্বাধীনতার যন্ত্রণা – জ্যাঁ-পল সার্ত্র, সিমোন দ্য বুভোয়া, আলবেয়ার্ট কামু
৩৮. অধ্যায় ৩৮ : সিসিফাসের সুখ – আলবেয়ার্ট কামু
৩৯. অধ্যায় ৩৯ : অস্তিত্ববাদের ধাত্রী – সিমোন দ্য বুভোয়া
৪০. অধ্যায় ৪০ : ভাষার সম্মোহন – লুদভিগ ভিটগেনস্টাইন
৪১. অধ্যায় ৪১ : মনের দর্শন – এডমন্ড হুসেরেল
৪২. অধ্যায় ৪২ : বেঁচে থাকার রহস্যময়তা – মার্টিন হাইডেগার
৪৩. অধ্যায় ৪৩ : বিষণ্ণতার রাজপুত্র – এমিল চিওরান
৪৪. অধ্যায় ৪৪ : ইতিহাসের ময়নাতদন্ত – মিশেল ফুকো
৪৫. অধ্যায় ৪৫ : যেমন মানুষটি কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেননি – হানা আরেন্ট
৪৬. অধ্যায় ৪৬ : নতুন করে দেখা – জ্যাক ডেরিডা
৪৭. অধ্যায় ৪৭ : ভুল থেকে শেখা – কার্ল পপার ও থমাস কুন
৪৮. অধ্যায় ৪৮ : লাগামহীন রেলগাড়ি আর অনাকাঙ্ক্ষিত ভায়োলিনবাদক – ফিলিপ্পা রুথ ফুট আর জুডিথ জার্ভিস থমসন
৪৯. অধ্যায় ৪৯ : অজ্ঞতার মাধ্যমে ন্যায়বিচার – জন রলজ
৫০. অধ্যায় ৫০ : কম্পিউটার কি চিন্তা করতে পারে? – অ্যালান ট্যুরিং এবং জন সার্ল
৫১. অধ্যায় ৫১ : একজন আধুনিক গোমাছি – পিটার সিংগার

নোট নিতে এবং টেক্সট হাইলাইট করতে লগইন করুন

লগইন